প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১৯
Zannat Xhowdury
সকাল সাতটা .…
ঘুম ঘুম চোখ ডোলে বিছানায় উঠে বসে নির্ণয় । মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে তার । হঠাৎ এমন হওয়ার কারণ ঠাওরে আসছে না তার । পুরো শরীরে জমে আছে ক্লান্তি , আলতো হাতে মাথা চাপড়াতে লাগলো সে হয়তো মনে করতে চাইছে কি হয়েছিল তার সাথে ।
তবে মস্তিষ্কো বেইমানি করছে তার সাথে । বেশ কিছুক্ষণ মাথা চেপে বসে রইলো সে ।
ওহ ফা**ক ।
না মাথা ভীষণ যন্ত্রণা করছে তার। এভাবে থাকা যাচ্ছে না আর, এখনি শাওয়ারে যেতে হবে তাকে ।
ঢুলু ঢুলু চোখে উঠে দাঁড়ালো বিছানা ছেড়ে । তবে কিছুদূর গিয়ে পড়ে যেতে নিয়েই আবারো সামলে নিলো নিজেকে । হাতে সাদা রঙের রং টাওয়াল কাধে ঝুলিয়ে এগিয়ে গেলো ওয়াস রুমের দিকে । দরজার ছিটকিনি না লাগিয়েই শাওয়ার অন করে দিলো । এক টানে খুলে দিলো নিজের পরনের টি শার্ট । উন্মুক্ত শরীর বেয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো পানি । শাওয়ারের মাঝে বারংবার হাতের সাহায্যে চুল গুলো বেক ব্রাশ করছে সে।
লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে এসে আবারও গা এলিয়ে দিলো নমর তুলতুলে বিছানায় । মুহূর্তেই আবারো তলিয়ে গেলো ঘুমের দেশে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কালো রঙের একটি গাড়ি এসে থামলো । সাভারে আশুলিয়ায় থানার অধিনে থাকা ৫তালা এক ফ্ল্যাটের সামনে ।
গাড়ি থামতেই দারোয়ান দরজা খুলে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এসে ব্যাস্ত হাতে খুল তে লাগলো গাড়ির দরজা ।
ড্রাইভিং সিট থেকে নেমে এলো ইরফাজ । রোজার প্রতি দারোয়ানে খাতির দারি দেখে ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিলো সে কপালে সৃষ্টি হলো ভাঁজ। সামান্য একটা মেয়ের এতো খাতির দাড়ি । ঠিক হজম করতে পারছে না সে ।
রোজা গাড়ি থেকে নামতেই দারোয়ানের মুখে খুশির আভা দেখা গেলো।
আম্মাজান আপনি আইছেন ? এতগুলি দিন আহেন না কে আম্মা।
দারোয়ানের কৌতুহলের হাসি মুখেই উত্তর দিলো রোজা ।
কাজের জন্যে বাহিরে গিয়েছিলাম চাচা । আপনি ভালো আছেন তো ?
হো আম্মাজান ভালা আছি !
চাচি শরীর এখন সুস্থ তো চাচা ।
হো আম্মাজান সেও ভালা আছে ।
দোরোয়ানে সাথে কথা শেষে ভেতরের দিকে পা বাড়ালো রোজা । প্রেম ইরফাজ দু’জনে রয়েছে তার পিছনের ।
মনে এতো প্রশ্নের ঝুড়ি থাকা সত্ত্বেও উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না সে ?
আচ্ছা স্যার এই মাইয়া কি কোনো ভি আই পি কেউ । আপনার আন্ডারে কাজ করবে সে তবে আপনাকেই পাত্তা দিচ্ছে না।
মনে হচ্ছে সে আপনার আন্ডারে নয় আপনি তার আন্ডারে কাজ করবেন।
ইরফাজের বাচ্চা চাকরি বাঁচাতে চাইলে যা হচ্ছে চুপ চাপ সহ্য করো ।
কিন্তু স্যার।
জাস্ট কিপ ইয়োর মাউথ সাট মিস্টার ইরফাজ ।
ওকে স্যার ।
দুজনের কথার মাঝে যেতে গিয়েও আবার ফিরে তাকালো রোজা ।
আপনারা এখন আসতে পারেন স্যার ।
কথাটুকু শেষ করে আবার চলে যেতে উল্টো দিকে ঘুরে পা বাড়াবে এমন সময় মেয়েলি ভয়েস এর ডাকে পা থেমে যায় তার
মেহরিন !
প্রতি উত্তরে কিছুই বলেনা রোজা ।
সন্ধ্যায় অফিসে যেতে হবে তোমাকে আজকের
রাতের মিশনের জন্য প্রস্তুত তো তুমি ।
এবারে কোনো প্রতি উত্তর এলো না তবে ঠোঁটে কোনে খেলে গেলো অদ্ভুত এক বাকা হাসি ।
হাতের সাহায্যে কিছুর ইশারা করেই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করলো রোজা।
রোজার ইশারা পেয়ে প্রেম। নিজেও বাকা হেসে গাড়িতে গিয়ে বসলো । সবকিছুই যেন ইরফাজের মাথার তলানিতে গিয়ে বিঁধছে ।এই মেয়ে বেশ রহস্য ময়ী ,ভয়ংকর তার চোখের দৃষ্টি । যার চোখ জোড়া এতো সুন্দর মুখ না জানি কত সুন্দর হবে ।
এই বাইনচো”*””
কারো হুংকারে ভাবনার ছেদ ঘটে ইরফাজের । খেয়াল করলেই চোখে পড়ে রাগে জ্বলতে থাকা প্রেমের ফর্সা মুখশ্রী । যে কিনা এক আগুন চোখে তাকিয়ে আছে বেচারা ভোলা ভালা ইরফাজের দিকে।
কি বে বিটকেল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি কলকাতা হারবালের কথা ভাবছিস ?
লাভ নেই লাভ তোর মেশিন পচে গেছে । যাবে না আমাকে রেখে একা বিয়ে করলে তো পচেই যাবে ।
প্রেমে এমন কথায় মাথায় হাত দিলো ইরফাজ কোন কুলক্ষণে যে
বিয়েটা করেছিলাম আল্লাহ জানে ।
এবার কি যাবি নাকি এখানেই ফেলে যাবো তোকে। থাক আমি বরং মিলিকে কল করছি ।
ইরফাজ কোনো কথা না বলে সোজা গিয়ে বসে ড্রাইভিং সিটে । এই লোকে সাথে কথা বলে তার কাজ নেই মুখ ফসকে কিছু বললেই আবার ছুটি বন্ধ করবে
অবাক করা এক সময় কিছু ক্ষণ আগেই যে ঘর ছিলো বেশ পরিপাটি সাজানো এখন সে জায়গা ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয়েছে
ডিভেনে একা পাশে রাগে লাল হয়ে বসে রয়েছে নির্ণয় । হাত থেকে ঝড়েছে ফোটা ফোটা রক্ত ।
ভয়ে দরজার পাশে কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে । রিধিমা তৃধা রিয়ান কারো বিন্দু মাত্র সাহস কুলোচ্ছে না নির্ণয়ের মুখোমুখি হতে ।
এই মাত্র কিছুক্ষণ আগের কথা , বেশ নিশ্চিন্তেই নরম বিছানায় পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছিলো রিয়ান । তবে হঠাৎ অনুভব করলো ঘুমের মধ্যেই যে হাওয়ায় ভাসছে সে । স্বপ্ন ভেবে যেই না আবারো ঘুমের দেশে পাড়ি জমাবে ঠিক তখনি । গালের উপর সজোরে এ ঘুসি পরে তার ।
তোর বোন কই ?
ভাই বিলিভ মি ! আমি জানি না রোজা কই ।
ফা** বিলিভ ।
আমি সত্যি বলছি ভাই ।
ওর লাগেজ , ফোন কোথাও কিছু নেই ।
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১৮
হঠাৎ রিয়ানকে ছেড়ে মাথা চেপে ধরে নির্ণয় । পাগলের মতো চিৎকার করতে লাগে ।
ভাই ভাই প্লিজ শান্ত হও ।ও হয়তো আশে পাশে কোথাও আছে ।
কথা শেষ করেই গলা ছেড়ে চেঁচিয়ে ওঠে রিয়ান