প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩
Zannat Xhowdury

সবার চোখ এখন একজায়গায় সীমাবদ্ধ বাইক রেসিং। দুই রাউন্ড বাইক রাইড করার পর তিনবারে মাথায় যখন রেসিং শেষ হবে ঠিক তখনি নির্ণয়ের বাইকের ছাড়া তেলে স্পিপ কাটে মার্কো বাইক।
তার একটু পরেই নির্ণয় চ্যাম্পিয়ন হ‌ইলো ।চারপাশে সবাই সবাই নীর নীর বলে জয়ধ্বনি দিতে লাগলো ।
আয়ান ,অর্ণব ,তৃধা একসাথে নির্ণয়ে কাছে দাড়ালো ।

নীর কুঞ্জ
রোজা রুমে এসে তার নতুন ফোন দেখছিল
বাহ! ভাইয়া তো সব ঠিক করেই দিয়েছে
ফেসবুক আইডি ও আছে দেখছি ।
দেখি তো কে কে এড আছে
বলেই রোজা প্রোফাইল চেক করতে করতে লাগলো ।
এমা এতো তিনজন শুধু ভাইয়া আর রিধিমা আপু ছাড়া তো কেউ নেই
বলেই ভাবতে লাগলো কাকে কাকে এড করবে ।
ঠিক তখনি রোজার ফোনে নীর চৌধুরী নামে মেসেজ এলো রোজার কাছে

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নির্ণয় বাইক রাইড শেষ করে ফ্রেশ হয়ে মাত্র রুমে প্রবেশ করে ফোন হাতে নিয়েছিল,,, সে খেয়াল করে রোজা অনলাইনে।
ঠিক তখনি মাথায় তার দুষ্টু বুদ্ধি চাপে সে রোজাকে মেসেজ দেয় ,
রোজা মেসেজ দেখে সাথে সাথে তাকে ব্লক করে করে দেয় ।
এতে নির্ণয় খানিকটা রাগ করলেও মনে মনে ভীষণ আনন্দ পায়
সেদিনের পর নির্ণয় আর যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি
কেটে গেলো প্রায় ৩ মাস ……..
রোজার জার্মানি আসার ভিসা পাসপোর্ট সব রেডি সাথে রিধিমার ও ।
রিয়ান , রিধিমা ও রোজা তিনজন একসাথে জার্মানি যাবে ।যেহেতু রিয়ান আগে থেকেই জার্মানি থাকতো তাই সে এখন রিধিমা আর রোজাকে নিয়ে যাবে ।

আজ তাদের যাওয়ার দিন পরিবার সকলের মনে মেঘ জমেছে , তবে কেউ কান্না করছে না রোজার জন্য
মেয়েটা বড্ড অবুঝ । ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার কান্না করে বলছে সে যেতে চায়না পরিবার ছেড়ে
রিয়ান আর রিধিমার‌ ও যে মন ভীষণ খারাপ। পরিবার ছেড়ে দূরে থাকার যে অনেক কষ্টের ।
হঠাৎ রিয়ানের মনের মধ্যে নাড়া দিলো নির্ণয়ের কথা তার ভাই ও তো আজ কতগুলো বছর ধরে পরিবার ছাড়া শুধু তার বোনের জন্য ।
বার্লিন ব্র্যান্ডেনবার্গ বিমান বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন
অপেক্ষা করছে গাড়ির জন্য ,
ঠিক ৫ মিনিটের মাথায় একটি কালো মার্সিডিজ এসে থামলো তাদের সামনে গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলো আয়ান । এসেই রিয়ান কে জড়িয়ে ধরলো ,,,,
আয়ান : কিরে শালা কেমন আছিস ?

রিয়ান ছ্যাত করে উঠে বললো আমি তোর কোন কালের শালা রে
আয়ান এবার বেশ মজা করেই বললো আরে তুই আমার এই কালেরই শালা রে।
তোর কাছে আমার বোন দিব কখনোই না !
তা পরে দেখা যাবে
পরে কে এখনি দেখবো খুল তুই😌😉
ওদের দুজনের ঝগড়া দেখে মুখ টিপে হাসছে রোজা আর রিধিমা ।
বোনদের হাসি দেখে ঝগড়া থামানো রিয়ান
ভাই ওদের সাথে পরিচয় করাবি না 🙂
রিয়ালের সোজা উত্তর দেখলি তো পরিচয় হ‌ওয়ার কি আছে তাও যখন চাইসি ,, তাহলে আয় রিয়ান রোজা আর রিধিমার কাছে আসলো ওরা , প্রথমে রোজার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো রিয়ান
রোজাকে আয়ান খুশিতে বলে ফেলছে কেমন আছো ভাবি , না মানে বোন ।
ভাবি শুনে রিধিমা আর রোজা যেন আকাশ‌ থেকে পড়লো ।
আয়ানের চোখ রিয়ানের উপড় পড়তেই দেখলো রিয়ান কটমট করে‌ তাকিয়ে আছে ।
এবার রোজা বললো ভাবি মানে

আয়ান : না মানে আসলে ভুলে বলে ফেলছি…….. এরি মধ্যে আয়ানের খেয়াল করলো রিধিমা কে , জিন্স -টপ , সাথে ডেনিম জ্যাকেট পরিহিত এক কন্যা ,চুল গুলো কাঁধ ছাড়ানো বয়স ২২ কিংবা ২৩ হবে , উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ গাঁয়ের রঙ্গ । চোখ গুলো টানা টানা নিঃসন্দেহে বলা যায় মায়াবতী কিযে মায়া ওই চোখ দুটোয় ।যে কেউ এই মায়ায় পড়তে বাধ্য ।অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে আয়ান ।
হঠাৎ রিয়ানে কথায় ধ্যান ভাঙলো তার ,
কিরে আজকে কি এখানে থাকার প্লান করছিল ? থাক তাহলে গেলাম আমি ।
ওরা তিনজন গিয়ে গাড়িতে বসলো আয়ান ড্রাইভ করবে করবে গাড়ি , আয়ানের পাশে রিয়ান , রোজা আর‌ রিধিমা পিছনে

গাড়ি এসে থামলো একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে , আয়ান পাসওয়ার্ড দিয়ে গেট খুলে দিলো , এক এক করে ভিতরে প্রবেশ করলো রোজা , রিয়ান, রিধিমা ,
রোজা তোরা ডান পাশে রুম গুলোতে গিয়ে ফ্রেশ হো ।
বলেই রোজাকে ভিতরে যেতে তাড়া দিলো রিয়ান ।
রোজা আর‌ রিধিমাও বাধ্য মেয়ের মতো ভিতরে চলে গেলো
রোজা যেতে রিয়ান হাটা দিলো বাম পাশে রুমের দিকে
সেই অন্ধকার রুমের সামনে এসে দারালো রিয়ান
দরজায় নক করতেই ভিতর থেকে কারো গম্ভীর কণ্ঠোস্বর শোনা গেলো।
কে ?
ভাই আসবো‌ আমি রিয়ান ।
আয় ।

অনুমতি পাওয়ার সাথে সাথে ভেতরে প্রবেশ করলো রিয়ান তবে অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছিলো না সে
ভাই কোথায় তুমি ?
একটুখানি খেয়াল করতেই তার চোখ পড়লো নীল চোখ জোড়ার উপর।
ভয়ে জোড়োসরো হয়ে পড়লো রিয়ান ।
ঠিক তার একটু পড়েই কুকুরের আওয়াজ শুনা গেলো।
কে..কে … কেমন আছো ভাই ?
যেমন দেখেছিস ।
ব…. বলছিলাম কি ভাই টাইগার কে রোজার সামনে বেশি যেতে দিওনা ও কুকুর খুব ভয় পায় ।
আর কিছু বলবি ?
না ভাই । এতটুকু বলেই রিয়ান বাহিরে চলে গেলো ।
বুঝলি রে টাইগার আমার সুইটহার্ট তোকে ভয় পাবে একদম ওর সামনে যাবিনা বুঝেছিস
আমার পাখি আমার খাঁচায় ধরা দিতে চলে এসেছে এবার খেলা হবে সমানে সমানে বলে পৈশাচিক হাসতে শুরু করলো
কুকুরটি কি বুঝলো কে জানে মনিবের খুশিতে তার চোখ জোড়া ও খুশিতে চক চক করছে।

__________ মাত্র ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো রোজা বড্ড ক্লান্ত লাগছে তার ভীষণ খুদাও পেয়েছে ।
মা খাবার‌ দেও খুদা পেয়েছে আমার বলেই মাকে ডাকতে শুরু করলো সে , কিন্তু কোথায় মা আর কথায় খাবার
পরক্ষণেই মনে পড়লো সে তো জার্মানিতে মা কথা থেকে আসবে । মায়ের কথা মনে হতেই কান্নায় ভেঙে পড়লো সে ।
রিধিমা এসেছিলো রোজা কে ডাকতে বোন কে কান্না করতে দেখে তার বুকের ভিতর ধুক করে উঠলো ।
দৌড়ে এসে বোন কে জড়িয়ে ধরলো সে মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে সুরে বললো
কি হয়েছে সোনা কাঁদছিস কেন ?
সোনা বোন আমার কাঁদেনা আপু কে বল ?

রোজা এবার বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উলটে বলতে লাগলো বাসার কথা মনে পড়ছে খুব ,,,পাপা ,মা ওদের কথা
রিধিমা বুঝলো বোনের কষ্ট . তারো কি কম কষ্ট হচ্ছে ।
এবার বোনে মুখ টা বুক থেকে তুলে চুমু দিয়ে বললো শুধু মন খারাপ করে থাকলেই কি চলবে খেতে হবে না ‌।
নাকি আমি সব খাবার খেয়ে ফেলবো ।
এবার রোজা হেসে বললো
খা আর কত খাবি ,, দুইদিন পর আলুর বস্তা বলবে তোকে
কেউ বিয়ে করবে না মোটি বোনের কথায় হেসে রিধিমা রোজা কে নিয়ে নিচে খেতে গেলো।
রিধিমা রোজা কে খাইয়ে দিয়ে বললো তুই উপরে ঘরে গিয়ে রেস্ট কর আমার কিছু জিনিস লাগবে তাই বাহিরে যাব।

রোজা বোনের কথায় সায় জানিয়ে নিজে জন্যে বরাদ্দকৃত ঘরে ঘুমতে চলে গেলো ।
শরীর ক্লান্ত তাই বিছানায় শোয়া মাত্র ঘুমিয়ে গেছে রোজা ।
সময় কতো জানা নেই তার তবে ঘুমের মধ্যে নিজের উপর ভাবি কিছু অনুভব করতেই চোখ খুলে রোজা তবে চোখ খুলে কিছু দেখতে পায় না
মনের ভুল ভেবে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায় ভীষণ পিপাসা পেয়েছে তার । হল রুমে যাওয়ার ‌উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করে
গুটি গুটি পায়ে নিচে এসে রান্না ঘরের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই কারো কন্ঠস্বরে থেমে যায় রোজা ।
কে ওখানে ?
আমি রোজা চৌধুরী ।
আপনি কে এখানে কি করছেন ?
এই আপনি চোর নাকি ।
আমাকে মেরে ফেলার চিন্তা করছেন নাকি।
দেখুন আমাকে মারতে হবেনা আপনি চুরি করে নিয়ে যান আমি আটকাবোনা
আচ্ছা আপনার…….

বাকি কথা আর বলতে পারলোনা তার আগে এক শক্তপোক্ত হাত এসে রোজার মুখ চেপে ধরলো ।
নির্ণয়ের ক্ষুদা পেয়েছিল তাই সে হল রুমে আসছিল ।
রান্না ঘরে কারো ছায়া দেখে প্রশ্ন করেছিলো নির্ণয়। তবে এক প্রশ্নের এত উত্তর হবে ভাবতে পারেনি সে ‌।
মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে নির্ণয় অষ্টাদশীর পানে , সাদা চুড়িদার সেট পরিহিত এক পরি , লম্বায় ৫ ফিট ২হবে ,হলুদ ফর্সা গায়ের রঙ্গ , হরিণী চোখ জোড়া , গোলাপি ঠোঁট সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে ঠোঁটের নিচে কালো তিল । মুখে নেই কোনো প্রকার সাজগোজ ,, ঘুম থেকে উঠার কারনে এলোমেলো পাখির বাসার মতো চুল গুলো কোমর ছাড়িয়ে হাঁটু পর্যন্ত গেছে ,, একে নিঃসন্দেহে রূপবতী বলে । শুধু রূপবতী বললেও কম বলা হবে ।

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২

অষ্টাদশীর এই রুপ যে হাজার পুরুষের সর্বনাশে কারণ সেকি তা জানে। কে বলেছিল এত সুন্দর হতে । একটু খুঁত থাকালে কি এমন হতো ।
হাতের ব্যথায় ধ্যান ভাঙল নির্ণয়ের । খেয়াল করলো যে হাত দিয়ে রোজার মুখ চেপে ধরছিল সে হাতে কামড়ের দাগ

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৪