প্রাণেশ্বরী পর্ব ২৮

প্রাণেশ্বরী পর্ব ২৮
Writer Asfiya Islam Jannat

ঘড়ির কাটা তখন একের ঘরে পদার্পণ করেছে। বাহিরে নেমেছে ধ্বং’স’লী’লা ঝড়, বায়ুমন্ডলের চাপ ঊর্ধ্বশ্বাসে। রাস্তার ধারে পানি জমেছে গোড়ালি সমান। কয়েকটি গাছ-পালা ইতোমধ্যে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। প্র’ল’য়’ঙ্কা’রী পরিবেশ অথচ কেমন নিস্তব্ধ, নির্জীব, অসাড় লাগছে। তিমির ঘনিয়ে এসেছে, জনমানবশূন্য চারদিক। কেবিনের ভিতর রাখা ছোট সোফায় বসে আছে ছন্দ। তার কাধেই নিষ্প্রাণ অবস্থায় শুয়ে আছে প্রাণ।

ডান পায়ে মোটা ব্যান্ডেজ, নিচে দিকে হালকা ভিজে। শুভ্র কাপড়ের ওপর র’ক্ত রেণুর গাঢ় ছাপ। রুমের বাতি নিভানো। দরজার মধ্যস্থলে চতুর্ভুজ আকৃতির ছোট কাঁচ, সেখান হতে মিছে মিছে আলো এসে ঠিকড়ে পড়ছে মেঝেতে। দৃষ্টির সামনে হসপিটাল বেডে শুয়ে আছেন আশা বেগম। মুখে অক্সিজেন মাক্স ঝুলানো, হাতে কেনোলা পড়ানো। ছন্দ এক হাত দিয়ে কপালে পড়ে থাকা চুলগুলো পিছনে ঠেলে দিল। অর্ধনিদ্রিত নয়নে তাকালো প্রাণের ক্লান্তি ভরা মুখের দিকে। মসৃণ গালে ক্রন্দনের দাগ স্পষ্ট। দীর্ঘ সময় ধরে কান্না করার ফলে আঁখিপল্লবের কোণে ছোট ছোট অশ্রুকণা জমে আছে। ধূসর আলোয় চিকচিক করছে। ছন্দ হাতের তর্জনী উঁচিয়ে খুব সন্তর্পণে তা মুছে দিল। একহাতে প্রাণকে আগলে সোফার পিছে মাথা হেলিয়ে আঁখিপল্লব দুটো এক করে নিল। আকস্মিক মনের মাঝে হানা দেয় ঘন্টাখানেক আগের ঘটনা।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ছন্দ তখন টিভিতে তার বিগত ম্যাচগুলো অবজার্ভ করছিল। কোথায় কে কোন ভুল করেছে, তার এবং সকলের মধ্যে কি কি ইম্প্রুভমেন্ট দরকার এসব দেখার জন্য৷ তিনদিন আগেই নিউজিল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচ খেলে দেশে ফিরেছে সে, কয়েকটা ম্যাচে পারফর্মেন্স তাদের একবারেই খারাপ ছিল। যার জন্য ছন্দ ভুল সব পরিলক্ষিত করতেই বসেছিল, যাতে পরবর্তীতে সেগুলো আর না হয়। ঠিক সেসময় প্রাণের কল আসে তার ফোনে।

ছন্দ খানিকটা ভড়কায়, কেন না প্রাণ বিনাকারণে তাকে কখনোই কল করে না। তাদের পরিচয়ের এতদিনে প্রাণ নিজ থেকে শুধু একবারই ফোন করেছিল। তাই তার ভয় হলো, খারাপ কিছু ঘটেনি তো? সে ফোন রিসিভ করতেই প্রাণ তাকে সব খুলে বলে এবং সাহায্য চায়। কথা বলার সময় তার কন্ঠ বারবার জড়িয়ে আসছিল। প্রাণের কথা শুনে সে কোনপ্রকার দ্বিরুক্তি না করে কোনরকম গায়ে টি-শার্ট জড়িয়ে বিশ মিনিটের মধ্যেই তার বাসায় গিয়ে হাজির হলো। ছন্দ পুরো রুমে রক্ত জানতে চাইলো অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়নি কেন? তখন প্রাণ জানায়, ঝড় বৃষ্টির জন্য তারা এখন আসতে পারবে না, দেরি হবে।

ছন্দ একবার প্রাণের মুখপানে তাকায়। কতটা করুণ দেখাচ্ছে তাকে। কাঁদার ফলে চোখ দুটো ফুলে আ’র’ক্ত দেখাচ্ছে। সে আর কথা না বাড়িয়ে দ্রুত আশা বেগমকে কোলে তুলে নিয়ে বেরিয়ে পরে। তার পিছে পিছে প্রাণও ছুটে। অতঃপর দুইজনে মিলে আশা বেগমকে সবচেয়ে নিকটবর্তী যে প্রাইভেট হসপিটাল পায় সেটাতেই এডমিট করে ফেলে। এরপর সম্পূর্ণ চেকাপ করা শেষে ডাক্তার জানায়, আশা বেগম মেজর হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব ও সময়মতো ঔষধ সেবন না করায় অবস্থা আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। আপাতত তিনি বিপদমুক্ত, বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে আজ তাকে আনতে আরেকটু দেরি করলে হয়তো বিষয়টা হাতের বাহিরে চলে যেত।

কথাটা শোনার পর ছন্দ একটু শান্ত হয়। প্রাণও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু পরমুহূর্তেই মাত্রাতিরিক্ত ব্লিডিং-এর কারণে মাথা চক্কর দিয়ে উঠে তার, দূর্বল হয়ে পড়ে শরীর। সে বেসামাল হাত ছন্দের হাত শক্ত করে ধরে, নিজেকে সামলে উঠার পূর্বেই ঢলে পড়ে ছন্দের বুকে। ছন্দ দ্রুত তাকে সামলে নেয়, বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকায় প্রাণের দিকে। হঠাৎ নিচের দিকে নজর যেতেই সরু র’ক্তে’র ধারা দেখতে পায় সে। ক্ষণেই চমকে উঠে। বক্ষপট দুমড়ে মুচড়ে উঠে যেন। গলা শুকিয়ে আসে বারংবার। প্রাণ যে এতটা সময় ধরে আ’হ’ত অবস্থায় ছিল খেয়ালই করেনি সে।

মুহূর্তেই অপ্রীতিকর ভাবনা ভর করে মস্তিষ্ক জুড়ে। তৎক্ষনাৎ বিমর্ষচিত্তে নার্সকে ডেকে উঠে সে, যথাক্রমে তার চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থাও করে। অতঃপর প্রাণের জ্ঞান ফিরার পর সে স্থির থাকতে চাইলো না, আশা বেগমের নিকট যাওয়ার জন্য পাগলামি করতে থাকলো। ছন্দ তখন বাধ্য হয়েই তাকে ধরে কেবিনে নিয়ে আসে। প্রাণ আশা বেগমকে পলক ভরে দেখে ক্ষান্ত হয় যেন। ছন্দ এরপর তাকে ধরে সোফায় বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়ে। এদিকে প্রাণ অপেক্ষা করে কখন তার আশামায়ের ঘুম ভাঙবে। কিন্তু তার শরীর প্রচন্ড দূর্বল থাকায় সে ছন্দেত কাঁধে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়ে। ছন্দ প্রথমে ইতস্তত করলেও পরবর্তীতে প্রাণকে আগলে নেয়। তার মধ্যকার ঝড় ততক্ষণে শান্ত হলো যেন।

হঠাৎ কিছু শব্দ পেয়ে ছন্দ চোখ খুলে তাকালো। আশা বেগমকে নড়াচড়া করতে দেখে ছন্দ প্রাণকে নিজের কাছ থেকে আলতো করে সরিয়ে নিল। আলগোছে শুয়ে দিল সোফাতে, খেয়াল রাখলো তার ঘুমে যাতে সামান্যটুকু ব্যাঘাত না ঘটে। প্রাণকে ঠিকমতো শুয়ে দিয়ে ছুটে যায় নার্স ডাকতে। আবছা দৃষ্টিতে আশা বেগম সম্পূর্ণ বিষয়টাই খেয়াল করলেন। অকারণেই শান্তি অনুভব করলেন বক্ষে। কিছুক্ষণের মধ্যেই একজন নার্স এসে চেকাপ করতে, সব নরমাল আছে দেখে নার্সটি ছন্দকে চিন্তামুক্ত থাকতে বলে বেরিয়ে গেল। ছন্দ পাশেে পড়েে থাকাা টুলটাা টেনেে আশাা বেগমেরর সামনেে বসেে বলল, “এখন ভালো লাগছে আন্টি?”

আশা বেগম মাথা দুলালেন। ছন্দ বলল, “যাক আলহামদুলিল্লাহ! আচ্ছা, আমি প্রাণকে ডেকে দিচ্ছি৷ তিনি অনেকক্ষণ ধরে আপনার জাগার অপেক্ষায় ছিলেন।”
আশা বেগম ধীরগতিতে হাত উঁচিয়ে ছন্দকে থামালেন। অক্সিজেন মাস্কটা খুলে বললেন, “জাগিও না। ঘুমাক ও।”
ছন্দ চিন্তিত কন্ঠে বলল, “আপনি মাস্ক খুলবেন না। এতে সমস্যা হতে পারে।”
আশা বেগম দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বললেন, “কিছু হবে না। এমনেও আমার কিছু জানানোর আছে তোমায়।”
ছন্দ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, “কি আন্টি?”

আশা বেগম একটু থেমে জিগ্যেস করলেন, “প্রাণকে পছন্দ কর তুমি?”
আশা বেগমের প্রশ্ন শুনে ছন্দ কিংকর্তব্যবিমূঢ় দৃষ্টিতে তাকালো। বাক্যহারা হলো যেন। নিজের দৃষ্টি লুকাতে এদিক-সেদিক তাকাতে থাকলো। গ্রীবাদেশে হাত গলিয়ে ইতস্তত কন্ঠে বলল, “না মানে আন্টি……হ্যাঁ।”
এনিয়ে-বিনিয়ে হলেও শেষ পর্যন্ত স্বীকার করলো ছন্দ। আশা বেগম কিঞ্চিৎ হেসে বললেন, “আগলে রাখতে পারবে ওকে আজীবন?”
ছন্দ মাথা নত করে বলল, “চেষ্টা করবো।”

আশা বেগম নিদ্রাবিষ্ট প্রাণকে একবার পরোক্ষ করে বললেন, “প্রাণকে আগলে রাখা কোন মুখের কথা না। ওকে দেখতে স্বাভাবিক লাগলেও আদৌ কিন্তু ও স্বাভাবিক না।”
ছন্দের কপালে ভাঁজ পড়লো এবার, “মানে?”
“বলছি। তবে তার আগে তোমায় ওর সম্পর্কে জানতে হবে। হয়তো এর মাঝেই তুমি তোমার মনের সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।”
“আমি শুনছি আপনি বলুন।”
আশা বেগম দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলেন, “একটা ফুল কিন্তু এভাবেই ম’রে যায় না। দীর্ঘদিন অযত্ন,অবজ্ঞা,অবহেলা করার ফলেই কিন্তু সে একসময় ঝরে পড়ে৷ ত্যাগ করে দেয় জীবনের মায়া। প্রাণের জীবনটাও ঠিক তেমনই। ছোট ফুল ছিল সে, যার সুবাসে ঘর-বাড়ি মুখরিত থাকতো। তবে অনাদর, উপেক্ষার সাগরে তলিয়ে সেও হয়ে যায় মৃ’ত।”

ছন্দ ভ্রু কুঁচকে তাকালো, “একটু পরিষ্কার করে বলবেন বিষয়টা?”
“হুম! গল্পটা শুরু হয় আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে। বড় সাহেব মানে নিহাল শিকদার তখন টগবগে যুবক। ডিরেক্টর হওয়ার তার স্বপ্ন ছিল ছোট থেকেই, তাই সে সময়টা তিনি রাত-দিন জেগে নিজের স্বপ্নের পিছনেই ছুটছিলেন। তার বাবা শিমুল শিকদার ছিলেন তখনকার আমলের প্রভাবশালী লোক। যার জন্য নিজের বাবার পরিচয় ব্যবহার করেই বড় সাহেব সফলতার সিড়ি চড়ছিলেন।

এমন সময় শিমুল শিকদার মানে বড় কর্তা হুমায়রা নামের একটা মেয়ে পুত্রবধূ হিসাবে খুব পছন্দ হয়। তার বন্ধুর মেয়ে ছিল সে। যাওয়ার-আসার সময় দেখেছিলেন কয়েকবার তিনি। হুমায়রা আপা ছিলেন রূপে-গুণে অনন্যা, সে সাথে তাদের অবস্থাও বড় কর্তাদের মতই ছিল। তাই বড় কর্তা দেরি না করে কথা পাকাপাকি করে ফেলেন। বড় সাহেবকে এ বিষয়ে জানালে তিনি প্রথমে নাকচ করে দেন কিন্তু হুমায়রা আপার ছবি দেখার পর মন বদলে যায় তার। তিনি রাজি হয়ে যান বিয়েতে। তবে শর্ত দেন যে, বিয়ের কথা বাহিরের মানুষ যাতে না জানে।

বিয়ের কথা জানাজানি হলে নাকি তার ক্যারিয়ারে প্রভাব পড়বে। সময় হলে তিনি নিজ থেকেই সবাইকে সবটা জানিয়ে দিবেন। বড় কর্তা প্রথমে রাজি হন না, একমাত্র ছেলের বিয়ে তিনি বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবেই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষে বড় সাহেবের জেদ দেখে তিনি তার কথায় রাজি হয়ে যান। হাতেগণা কয়েকজন আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে ঘরোয়াভাবেই বিয়ে হয় বড় সাহেব আর হুমায়রা আপার। বিয়ের কয়েকমাস পর বড় সাহেব কাজের জন্য হুমায়রা আপাকে নিয়ে অন্য জায়গায় বাড়ি নেন। এরপর সেখানেই তারা থাকতে শুরু করেন।

তাদের বিয়ের তিন বছরের মাথায় প্রাণের জন্ম হয়। এই পর্যন্ত সব ভালোই যাচ্ছিল। বড় সাহেব প্রচন্ড ভালোবাসতেন নিজের স্ত্রী ও সন্তানকে। জা’ন দিয়ে দেন এমন। কিন্তু প্রাণের যখন চার বছর তখন চিত্রটা বদলে যায়। কোন এক কারণে বড় সাহেব ও হুমায়রা আপার মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। নিত্যদিনই ঝগড়া লেগে থাকতো তাদের মাঝখানে। মাঝে মধ্যে বড় সাহেব হাত তুলতেন হুমায়রা আপার উপর। এসবই প্রাণ পর্দার আড়ালে দেখতো। প্রাণ ছোট থেকেই প্রচন্ড চঞ্চল ছিল, এদিক-সেদিক ঘুরে বেরানো ওর অভ্যাস ছিল। তবে বাবা-মায়ের মাঝে মনোমালিন্য তাকে গুটিয়ে যেতে বাধ্য করে। হুমায়রা আপা তখন একটু শান্তি পেতে প্রাণকে নিয়ে ঢাকার বাহিরে চলে যেতেন। ঘুরে ফিরে আবার চলে আসতেন। যদিও মেয়েরা বাবার ভক্ত বেশি হয়ে থাকে তবে প্রাণ ছিল মা ভক্ত। মায়ের আঁচল সে কোনভাবেই ছাড়তে চাইতো না। সবসময় তার পিছু পিছুই ঘুরতো। তাই হুমায়রা আপাও কখনো ওকে একা ফেলে যেতেন না।

এর মাঝে প্রাণের যখন পাঁচ বছর তখন হুমায়রা আপার ক্যান্সার ধরা পড়ে। থার্ড স্টেজে ছিলেন তিনি তখন। ব্যাপারটা জানাজানি হতেই বড় সাহেব সকল ব্যবস্থা করেন তার চিকিৎসার। এমনকি ইন্ডিয়াও নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। কিন্তু লাভ হয় না। এদিকে প্রাণ সবই নীরবদর্শকের ন্যায় দেখছিল। ওর তখনও বোধ হয়নি আসলে হচ্ছিলটা কি? সে ভেবেছিল তার মা সাময়িকভাবে অসুস্থ, দ্রুত ঠিক হয়ে যাবেন।

কিন্তু তার ধারণা ভুল প্রমাণিত করে হুমায়রা আপার শরীর আরও খারাপ করতে থাকে। দেখতেই দেখতে তিনি চলে যান লাস্ট স্টেজে৷ একদম বিছানায় পড়ে যান। তার দেখা শোনার জন্যই বড় সাহেব একটি নার্স রাখেন। কিন্তু ধীরে ধীরে বড় সাহেব হুমায়রা আপার খোঁজ নেওয়া বন্ধ করে দেন। বাসায় খুব কম থাকতে শুরু করেন। প্রাণকেও কাছে টানতেন না আর তেমন। তাই প্রাণও সবসময় মায়ের পাশে বসে খেলা করতো আর কথা বলতো। তো এমনই একদিন প্রাণ হুমায়রা আপার পাশেই বসে কথা বলছিল, খেলছিল।

ঠিক সময়টাতেই হুমায়রা আপা ই’ন্তে’কা’ল করেন। হুমায়রা আপার চোখ তখন উল্টে ছিল, মুখ খোলা, ঠোঁট দুটো জী’র্ণ’শী’র্ণ। মায়ের এমন অবস্থা দেখে প্রাণ ভয় পেয়ে যায়, তাকে অনেক ডাকে কিন্তু সাড়া পায় না। নার্সটাও সেদিন ছুটিতে ছিল তাই প্রাণ বাধ্য হয়ে ছুটে যায় বাবার কাছে সাহায্য চাইতে। বড়সাহেব সচরাচর বাসায় থাকলে স্টাডিরুমে থাকতেন তাই প্রাণও সেদিকেই যায়। তবে সেখানে গিয়ে বড় সাহেবকে অন্য এক নারীর সাথে দেখে ও থমকে যায়।

প্রাণেশ্বরী পর্ব ২৭

কোনরকম নিজেকে সামলে নিম্নস্বরে ডাকে তাকে, বড় সাহেব সেই আওয়াজ শুনে দ্রুত সরে আসেন সেই নারীটির কাছ থেকে। ধমকে উঠেন প্রাণের উপর, সে কেন এসেছে এখানে? প্রাণ তখন কেঁদে সবটা বলতে চায় ঠিক কিন্তু বড় সাহেব শুনেন না। তাকে জোর করেই বের করে দেন রুম থেকে। প্রাণ কোন উপায়ন্তর না পেয়ে পুনরায় চলে যায় হুমায়রা বেগমের রুমে। তাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে। কখন তার বুকেই ঘুমিয়ে পড়ে জানা নেই। কিন্তু যখন ঘুম থেকে উঠে তখন আর কোথাও নিজের মাকে খুঁজে পায় না সে।”

প্রাণেশ্বরী পর্ব ২৯