প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩৪

প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩৪
প্রজ্ঞা জামান তৃণ

সন্ধ‍্যার আজানের আগমুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে যায় দর্শিনী। কিন্তু তার বিন্দুমাত্র নড়াচড়া করার উপায় নেই যেন। আবিদ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে তাকে। গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে আবিদ। দর্শিনী অনেকবার তাকে সরিয়ে দিতে চাইল কিন্তু তেমন বিশেষ লাভ হলোনা। শেষে আবিদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে, আবিদ এইবার একটু নড়েচড়ে উঠে। দর্শিনী জেনে গেছে আবিদকে ঘুম থেকে উঠানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে মাথায় হাত বুলিয়ে মৃদু স্বরে ডাকতে হয়। আবিদ তখন ঘুমের মাঝেই হুমম বলে জবাব দেয়। দর্শিনী মৃদু হেসে বলে,

‘সন্ধ‍্যা হয়ে গেছে, ফ্রেশ হয়ে নিন নিচে যেতে হবে তো।’
আবিদের হঠাৎ ফুপিআম্মুর কথা মনে পড়ে। আজ তো বাড়িতে অনুষ্ঠান আছে। খুব বেশি দেরী হয়ে গেছে কী? তড়িৎ গতিতে ঘুম কেটে যায় আবিদের। সে আলতো করে দর্শিনীর উপর থেকে সরে আসে। তারপর জিগ্যেস করে,
‘ঠিক আছো, তুমি?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আবিদ তার বলিষ্ঠ শরীরে, দর্শিনীর উপর সামান‍্যতম ভর দিলে সর্বদা জিগ্যেস করে ঠিক আছো তুমি? দর্শিনী কয়েকদিনেই আবিদের কর্মকাণ্ডে অভ‍্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই আবিদের কথায় তেমন ভাবাবেগ হলোনা তার। আসলে আবিদ দর্শিনীর উপর পুরোটা ভর দেয়নি! তবুও যতটুকু দিয়েছে কম কোথায়? কিন্তু দর্শিনী ব‍্যাথা পায়নি। আবিদ সাধারণ ভাবে জড়িয়ে ধরেছিল তাকে। দর্শিনী বিছানা ছেড়ে উঠেই বুকের কাছে শাড়িটা ঠিকমতো জড়িয়ে, চুলটা হাত খোঁপা করে নেয়। অতঃপর আবিদের উদ্দেশ্যে বলে,

‘ঠিক আছি, আপনি সেইভাবে ভর দেননি সমস্যা নেই।’
আবিদ যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। দর্শিনীর ওয়েট অনেক কম আবিদের মাঝে মাঝে দুশ্চিন্তা হয়। হাত ধরলে কিংবা জড়িয়ে ধরলে হাড্ডি ছাড়া কিছু নেই। আবিদ দ্রুত কার্বাড খুলে শার্ট প‍্যান্ট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। দর্শিনী নিজেও চেন্জ করবে বলে শাড়ি বের করে রাখে।

আবিদ দর্শিনী দুজনে একসঙ্গে রেডি হয়ে নিচে নামে। আদিবা এসেছিল তাদেরকে ডেকে গেছে। দুজনে সন্ধ‍্যার নামাজ পড়ে তৈরি হয়েছে। তাদের দুজনের পরনেই কালো ড্রেস। আবিদ কালো রঙের সুট-বুট পড়েছে। দর্শিনী কালো রঙের শাড়িতে নিজেকে আবৃত করেছে। তাদেরকে প্রচন্ড মানিয়েছে একসঙ্গে। আবিদের উজ্জ্বল শ‍্যামবর্ণ ত্বকে কালো রঙটা ফুটে উঠেছে। বত্রিশ বছরের সুপুরুষ আবিদকে মারাত্মক সুদর্শন লাগে।

আবিদ বরাবরই ফিটনেস প্রিয়। দর্শিনীর আবার এই বিষয়টি খুবই ভালো লাগে। আবিদকে কোট, টাই পড়িয়ে দেওয়ার সময় দর্শিনী মুগ্ধ চোখে তার সুদর্শন স্বামীকে দেখে। আবিদ এদিকে সময় সুযোগ পেলেই দুষ্টুমি শুরু করে। সেটা যেমন তেমন দুষ্টুমি নয়। আবিদ হুট করে কখনো ঠোঁটে চুম্বন করে বসে, তো কখনো অর্নিমেষ গালে চুমু দিতেই থাকে, কখনো চুল এলোমেলো করে দেয়, আবার কখনো যত্ন সহকারে কানের পাশে গুজে দেয়। কখনো বা ললাটে গভীর চুম্বন এঁকে দেয়। আবিদ অতিরিক্ত করলে দর্শিনী বিরক্ত বোধ করেনা সেইভাবে; তবে ঠোঁট টিপে দুষ্টুমি সহ‍্য করে নেওয়ার প্রচেষ্টা করে। আবিদ তখন বিষয়টি উপভোগ করে মিষ্টিমধুর হাসে।

আবিদ দর্শিনীকে একসঙ্গে পরিপাটি হয়ে নিচে নামতে দেখে, সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। বিশেষ করে অনুসা বেগম আর শবনম চৌধুরী। শবনম চৌধুরীর কাছে দুজনকে একসঙ্গে দারুণ লাগছে। আজকে তার পুরোনো বেশ কিছু বান্ধবী উপস্থিত আছেন এখানে। তিনি আবিদ দর্শিনীকে তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পার্টিতে উপস্থিত অনেকেই তাদের প্রশংসা করে। অনুসা বেগম এবং শাহরিয়ার চৌধুরী ছেলে, ছেলের লক্ষ্মীমন্তর বউকে দেখে গর্ববোধ করেন। তারা বরাবরই প্রিয়দর্শিনীর মতো বউমা পাওয়ার আশা করতেন। তাদের ইচ্ছে কবুল হয়েছে। অনুসা বেগম এইটা ভেবে মৃদু হাসলেন।

অনেকে উপস্থিত আছে আজকের সন্ধ্যায়। কয়েকজন ওয়েটার মেহমানদের জুস, হালকা খাবার সামগ্রী সার্ভ করছে। দর্শিনীর বাবা-মার আসার কথা ছিল এখনো পযর্ন্ত আসেনি তারা। দর্শিনী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের। বারবার সেই উদ্দেশ্যে করিডোরের দিকে তাকাচ্ছে। আবিদ বিষয়টি লক্ষ‍্য করেছে। সে মৃদু হেসে দর্শিনীর কাঁধে হাত রেখে বলে,

‘বারবার গেটের দিকে তাকাচ্ছো কেনো, বউ? প্রচন্ড অস্থির দেখাচ্ছে তোমাকে। বাবা-মা একটু পরেই চলে আসবেন। চিন্তা করোনা এখন ঐদিকে চলো সবাই ওখানে আছে।’
আবিদের কথায় দর্শিনী স্ফীত হেসে বলে,
‘হুম চলুন।’

আবিদ তার হাত ধরে সবার মাঝে এগিয়ে গেলো। আরহান হঠাৎ কী একটা প্রয়োজনে আবিদকে ডেকে নেয়। আবিদ অন‍্যসাইডে কথা বলতে গেলে দর্শিনী একা হয়ে যায়। এখানে আবিদের কয়েকজন প্রতিবেশী আন্টি আছে যারা দর্শিনীকে তীর্যকভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সহজ কথায় খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করে দেখছে।

কিন্তু আফসোস তারা তাদের ভিতরে বিকৃত মনোভাব ছাড়া দর্শিনীর তেমন কিছু দেখতে পায়নি। দর্শিনী বিষয়টি উপলব্দি করে অসস্থিতে পড়ে যায়। তার মহিলা গুলোকে প্রচন্ড অস্বাভাবিক লাগছে। তাছাড়া মহিলা গুলো সবার অগোচরে তাকে নিয়ে কথা বলছে, ব‍্যাপারটা তার কাছে দৃষ্টিকটু লাগছে। দর্শিনী দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবিদের কাছে যাওয়ার সময় শুনতে পায় তাদের মধ‍্যে একজন বলেছে,

‘এই মেয়েটাকেই বিয়ে করার জন‍্য এতোগুলো বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল আবিদ? এই মেয়েটাকে কী আহামরি সুন্দরী লাগছে তোমাদের? আমার কিন্তু সাধারণ-ই লেগেছে। আবার বয়স কম মনে হচ্ছে।’
আরেকজন তাল মিলিয়ে বলে,

‘কী বলো মেয়েটা সুন্দরী আছে। সুন্দরী ছাড়া এমনি এমনি কী আবিদ বিয়ে করেছে? মেয়েটার বয়সও কম। কিছু ছেলে আছে যারা নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সী মেয়েদের পছন্দ করে। দেখো আবিদ হয়তো বয়স কম, সুন্দরী দেখেই বিয়ে করেছে। ম‍্যাজিস্ট্রেট মানুষ বাবা! যোগ‍্যতা আছে বলে এতোসব কিছু করতে পারে।’

মহিলাটি আবিদকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলায় দর্শিনীর মৃদু রাগ হয়। কিন্তু সে কিছু বলতে পারছেনা। কারণ ঝামেলা করা ওর স্বভাবে নেই। কিছু মহিলা থাকেই যারা অন‍্যেদের নিয়ে সবসময় পড়ে থাকে। তাদের আবার মানসম্মান কম ঝামেলা শুরু করে দেয়। এদেরকে জবাব দিয়ে বিশৃঙ্খলা করতে চায়না দর্শিনী। তাদেরকে তাদের মতো থাকতে দেওয়া উচিত। তাদের কথায় আবিদ দর্শিনীর কিছুই আসবে যাবে না।

প্রতিবেশি মহিলাদের মাঝে একজন মধ‍্যবয়স্ক মহিলা উপস্থিত ছিল। যার চোখের তীক্ষ্ম চাহনী ছিল দর্শিনীর উপর নিবদ্ধ। মহিলাটি বাকি দুজনের কথা মন দিয়ে শুনছিল। এই মহিলাটির সঙ্গে শবনম চৌধুরীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে মনে হয়। দর্শিনী কিছুক্ষণ আগেই তাদেরকে হাস‍্যরসাত্মক কথাবার্তা বলতে শুনেছে। তাছাড়া সম্পর্কে প্রতিবেশী হওয়ার দরুণ উনার সঙ্গে অনুসা বেগমের সুসম্পর্ক আছে।

উনার একটা মেয়ে আছে যে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে, সম্ভবত রুজবা তাইরাত। মেয়েটি দেখতে যথেষ্ট সুন্দর। দর্শিনী মেয়েটিকে একবার দেখেছে শুধু। এই মেয়েটির সঙ্গে একবার আবিদের বিয়ের কথা উঠেছিল। আবিদ নাকি সরাসরি মানা করে দিয়েছিল। এজন্যই তাদের পরিবার বহুদিন চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে কথা বলেনি। তবে আবিদ দর্শিনীর বিয়ে তাছাড়া শবনম চৌধুরী ফিরে আসার সুবাদে দাওয়াত পাঠানো হয়েছিল তাদেরকে।

তারা আবিদের বিয়েতে উপস্থিত নাহলেও শবনম চৌধুরীর জন‍্য উপস্থিত হয়েছেন। তাছাড়া আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল সেটা হলো আবিদের বউকে দেখার প্রবল ইচ্ছে। আবিদ ঠিক কোন অপ্সরা কন‍্যাকে বিয়ে করেছে স্বচক্ষে দেখবে। অবশ‍্য সবাই দর্শিনীকে দেখে বুঝে গেছে আসলেই প্রশংসনীয় মেয়ে। কিন্তু মহিলাটি সেটা মানতে চাইছে না।

অনুষ্ঠানে, সবশেষে উপস্থিত হোন আশরাফ মুহতাসিম প্রিয়মা বেগম। তারা চৌধুরী ভিলাতে উপস্থিত হতেই দর্শিনী বাবা-মায়ের কাছে ছুটে যায়। আশরাফ মুহতাসিম মেয়ের মাথায় পরম আদরে হাত বুলিয়ে দেন। আবিদ শ্বশুর শাশুড়িকে দেখে নিজেও এগিয়ে যায়। আশরাফ মুহতাসিম ফলমূল-মিষ্টির প‍্যাকেট কাজের লোকের হাতে এগিয়ে দেয়। আবিদ আর আশরাফ মুহতাসিম কুশল বিনিময় করে। তারপর সবার মাঝে এগিয়ে যায়।

সবাই কথা বলায় ব‍্যাস্ত ছিল। তবে দূর থেকে শবনম চৌধুরী ঘটনাটা লক্ষ‍্য করেছে। অকস্মাৎ আশরাফ মুহতাসিমকে চিনতে পেরে, ইতিমধ্যে তিনি ঈষদুষ্ণ কাঁপতে শুরু করেছেন। হঠাৎ তার নিঃশ্বাস নেওয়াটা কষ্টদায়ক অনুভূত হচ্ছে। প্রেমিক পুরষটিকে আজ এতো বছর পর আবারো দেখছেন। খুব প্রয়োজন ছিল কী এমনটা হওয়ার? তিনি তো দিব‍্যি ভালো ছিলেন। এখন ভিষণ কষ্ট হচ্ছে শবনম চৌধুরীর।

মনে হচ্ছে এইমুহূর্তে সবার আড়ালে লুকিয়ে যেতে পারলে ভালো হতো। সবার অগোচরে দুফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল শবনম চৌধুরীর গাল বেয়ে। তিনি প্রথম দিনই দর্শিনীকে দেখে সন্দেহ করেছিল এমন কিছু হতে পারে। এজন্য বারবার চাইইছিলেন উনার সন্দেহ যেন মিথ্যা হয়। বড্ড ভীত হয়ে পড়েছিলেন সেইসময়। আর এখন ভয়টা সত্যি হয়ে গেছে। তিনি কীভাবে মোকাবেলা করবেন এতোবড় বিদঘুটে অবস্থাকে।

আদেও কী তিনি রক্ষা পাবেন এই ভয়ংকর অতীত থেকে। তিনি এখনো ভীত হয়ে আশরাফ মুহতাসিমের দিকে তাকিয়ে আছেন। অন‍্যদিকে শবনম চৌধুরীকে দেখে আশরাফ মুহতাসিম অগোচরে চমকে উঠেন। তিনি কী সঠিক দেখছেন? আশরাফ সাহেব বারদুয়েক চোট পিটপিট করে চাইলেন। নাহ তিনি ভুল দেখেননি এখানে স্বয়ং শবনম চৌধুরী উপস্থিত। এটা ভ্রম নয় কিন্তু কীভাবে সম্ভব?

এতোগুলো বছরপর কোনো প্রিয় মানুষকে দেখলে যেমন দূর্বোধ‍্য কষ্ট অনুভব হয়। কাঁদতে ইচ্ছে করে, ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে, আসলেই নাকি ভ্রম সব জানতে ইচ্ছে করে। আশরাফ সাহেবর এখন এমন অনুভব হচ্ছে। আশরাফ সাহেব হঠাৎ বুকে ব‍্যাথা উপলব্দি করলেন। শবনম চৌধুরী আশরাফ সাহেবের হৃদয়ে এক কোণায় হয়তো থেকে গেছিলেন। এমন নয় তিনি কখনো শবনম চৌধুরীকে মনে করেননি।

শবনম চৌধুরীকে তার বড় অদ্ভুত অদ্ভুত সময়ে মনে পড়তো। যেমন, হয়তো আশরাফ মুহতাসিম পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটাচ্ছেন ঠিক এমন সময় বুকে আলাদা একটা ব‍্যাথা অনুভব করেন। সেই ব‍্যাথার সাথে আশরাফ সাহেবের হঠাৎ করে শবনম চৌধুরীর কথা মনে পড়ল। কিন্তু নিজেকে সামলে নেওয়ার মতো শক্ত কঠোর ব‍্যাক্তিত্বের আশরাফ মুহতাসিম।

এজন্য শবনম চৌধুরী এখনো রয়ে গেছেন তার মনের এক কোণে। আশরাফ সাহেবের ইচ্ছে করছে শবনম চৌধুরীর সঙ্গে একটু কথা বলতে। জানতে ইচ্ছে করছে কেনো সেইদিন না জানিয়ে ভার্সিটির হোস্টেল থেকে চলে গেছিলো। আশরাফ মুহতাসিম তো হোস্টেলে খোঁজ করেছিলেন কিন্তু কোনো খোঁজখবর পাননি।

আবিদ শ্বশুর-শাশুড়িকে তার ফুপিআম্মুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে। এজন্য তাদেরকে নিয়ে ফুপিআম্মুর কাছে যায়। এইটা দেখে শবনম চৌধুরী নিঃশ্বাস আটঁকে ভাবতে থাকেন কীভাবে তিনি নিজেকে আড়াল করবেন? শবনম চৌধুরী একদমই আশরাফ সাহেবের মুখোমুখি হতে চাননা, কখনো না। আশরাফ মুহতাসিমকে সহধর্মিনী সন্তানসহ দেখার হিম্মত নেই শবনম চৌধুরীর। তিনি নিজেকে বড্ড হেল্পলেস অনুভব করছেন।

এদিকে আশরাফ মুহতাসিম তিনি এখনো বুঝতে পারেননি আবিদের ফুপি আর কেউ নয় স্বয়ং শবনম চৌধুরী। হ‍্যাঁ, সেই শবনম চৌধুরী তার কয়েকদিনের প্রাক্তন প্রেমিকা। পরিস্থিতির কারণে এখন প্রেমিকার সঙ্গে প্রাক্তন শব্দটি উল্লেখ করতে হচ্ছে। অথচ এমনটা তিনি কখনো চাননি।

আবিদ তার ফুপিআম্মুর সঙ্গে শ্বশুরের পরিচয় করিয়ে দিলো। আশরাফ মুহতাসিম যখন শবনম চৌধুরীর মুখোমুখি হলেন। আশরাফ মুহতাসিমকে আতঙ্ক ঘিরে ধরল। বিপরীত নয় শবনম চৌধুরীও। তিনি নিজেও আতঙ্কিত হয়ে আছেন। শবনম চৌধুরী ঠোঁটে মিথ্যা হাসি ঝুলিয়ে পরিচিত হলেন প্রিয়মা বেগমের সঙ্গে। বুকে নিদারুণ কষ্ট লুকিয়ে হাসি-খুশি থাকার সামান্য প্রচেষ্টা কর‍ে যাচ্ছেন ক্রমাগত।

প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩৩

আশরাফ মুহতাসিমের প্রচণ্ড খারাপ লাগছে। হোক কয়েকদিনের তবুও প্রেমিকা ছিল। তার সঙ্গে এতোবছর পর বিদঘুটে পরিস্থিতিতে দেখা হবে ভাবতে পারেননি আশরাফ সাহেব। আচ্ছা, তার কী উচিত নয় শবনম চৌধুরীর কাছে ক্ষমা চাওয়া? কৈফিয়ত নেওয়া কেনো হারিয়ে গেছিলো সেদিন? তারা দুজনে এমনটা কখনো চাননি, তবে কেনো এরকম সিচুয়েশন আসলো তাদের মাঝে?

প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩৫