প্রিয় ইরাবতী পর্ব ৩১

প্রিয় ইরাবতী পর্ব ৩১
রাজিয়া রহমান

রাতটা অদ্ভুত শান্ত। চারদিকের নিস্তব্ধতা এমন যে, নিজের নিঃশ্বাসের শব্দও ভারী লাগে। নিজের রুমের বারান্দায় বসে আছে হাসিব শেখ, হাতে এক কাপ চা,ডিনার শেষ করে রুমে আসার পর ইরা দিয়ে গেছে।
কিন্তু অনেক আগেই ঠান্ডা হয়ে গেছে। দূরে কোথাও কুকুর ডেকে উঠছে মাঝে মাঝে, সেই আওয়াজও যেন আজ তার মন খারাপের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাঁদছে।
চাঁদ উঠেছে অনেকক্ষণ আগেই। চারপাশে রূপালি আলো, গাছের ছায়াগুলো কেমন লম্বা আর বিষণ্ণ। অন্যদিন এই আলো তাকে শান্তি দিত, মনে হতো পৃথিবীটা এখনো সুন্দর। বেঁচে থাকার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট।
কিন্তু আজ সবকিছুই উল্টো। এই আলোও কেমন বিরক্তিকর লাগে, মনে হয় যেন তার অপরাধকে প্রকাশ করে দিচ্ছে সবার সামনে।

চা ঠান্ডা হয়ে গেছে, বাতাসে ভেসে এসেছে ফুলের গন্ধ, অথচ সেই ঘ্রাণেও আজ তার কোনো প্রশান্তি নেই। মনে হয়, পৃথিবীটা এমনই সবকিছু আগের মতোই থাকে, শুধু মানুষ বদলে যায়, অনুভূতি বদলে যায়।
চাঁদের আলো তার মুখে পড়ছে, আর সে তাকিয়ে আছে শূন্যে। নিঃশব্দ, নিঃসঙ্গ, ক্লান্ত।
জোছনার আলোয় ডুবে থাকা পৃথিবীটা আজ তার কাছে কেবল এক নির্দয়, সাদা শূন্যতা,মৃত্যুপুরীর মতো লাগছে।
বেডরুমের দরজাটা মৃদু শব্দ তুলে খুলে গেলো মনে হচ্ছে। হাসিব শেখ কান পাতলেন।
কোনো শব্দ হচ্ছে না। চোয়াল শক্ত হয়ে উঠে হাসিব শেখের।
শায়লা এসেছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

একমাত্র শায়লা-ই পারে এরকম নিঃশব্দে হাঁটাচলা করতে চতুষ্পদের মতো।
রকিং চেয়ারটা টেনে বসে শায়লা। হাসিব শেখের মুখোমুখি।
শায়লার চোখের কোণে ভেজা ভাব।
হাসিব শেখ এক দলা থুতু নিক্ষেপ করেন শায়লার পায়ের সামনে। শায়লা মুচকি হেসে বললো, “এরকম জোছনা রাতে আমার ভীষণ কষ্ট হয় হাসিব।ভীষণ রকম কষ্ট। মনে হয় এই পৃথিবীতে আমার কিছুই নেই।আমি ভীষণ একা একজন মানুষ। ইচ্ছে করে তখন কেউ একজন আমাকে বুকে টেনে নিক,কেউ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলুক আমি আছি তোমার জন্য।
এই জোছনার সাথে আমি ভেসে যাই,এলোমেলো হয়ে যাই আমি,হারিয়ে যাই আমি।
আমি আমার পাশে কাউকে পাই না হাসিব।কাউকে না।”
হাসিব শেখ নিজের চেয়ারটা ঘুরিয়ে ভেতরে চলে আসতে নিলেন।এই ছলনাময়ীর এসব ছলনায় তিনি আর ভুলবেন না।কিছুতেই না।

শায়লা আটকায়।
মোহনীয় সুরে বললো, “আমার অনেক কষ্ট হাসিব।তুমি আমাকে একটু ভালোবাসা দাও আজ।কতো বছর পার হয়ে গেছে তোমার এই ঠোঁটের স্পর্শ, তোমার দুই হাতের স্পর্শ, তোমার উন্মাদনা কিছুই আমি পাই না।আমাকে আজ একটু তোমার করে নিবে?”
“যার সাথে আমার মনের সম্পর্ক ভেস্তে গেছে বহুকাল আগে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক আমার কাছে হারাম।”
“হিহিহি! আজকে হারাম লাগছে?প্রথম দিন কী বেশ আরাম লেগেছিলো?”
“মানুষ মাত্রই ভুল শায়লা। সেই ভুলের উর্ধ্বে কেউ নাই।”
“তাহলে আমারটা ও তো ভুল হাসিব।কেনো ক্ষমা করতে পারছো না?”
“তোমাকে আমার কাছে কেঁচোর চাইতেও ঘৃণ্য লাগে।আমার রুম থেকে বের হয়ে যাও আর পারলে আমার জীবন থেকেও।আমি একটা দিন শান্তিতে বাঁচতে চাই তোমার চিন্তা ছাড়া।”
“বলেছি না?তোমার গলার কাঁটা হয়ে থাকবো আমি আজীবন। এটাই যে তোমার শাস্তি। প্রিয়তম।তুমি কী করবে?তোমার এই অসহায়ত্বই আমার প্রতিশোধ।”
হাসিব শেখ কিছু বলতে যাবেন তার আগেই শুনতে পেলেন উপর থেকে কোমল গলায় গান ভেসে আসছে।

“চাঁদনি পসরে কে আমারে স্মরন করে,
কে আইসা দাড়াইছে গো আমার দুয়ারে।
তাহারে চিনি না আমি,সে আমারে চিনে।….”
ইরার গানের গলা মিষ্টি। ইশতিয়াকের মনে হয় শুধু মিষ্টি না বরং মিষ্টতা বোধহয় অনেক বেশি।
নিজের এই ভাবনায় ইশতিয়াকের ভীষণ হাসি পায়। কাউকে ভালোবাসলে মানুষ বোধহয় এরকম পাগল হয়ে যায়। না-কি ইশতিয়াক -ই এরকম পাগল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
তা না হলে কেনো একটা মানুষের সবকিছুতেই সে এতো মুগ্ধ হয়!
গান গাইতে গাইতে ইরার দুই চোখ ভিজে উঠলো। বুকের ভেতর সব স্মৃতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।
সব যন্ত্রণার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে একে একে।
বাবার কথা, আপার কথা।

আব্বা মারা গেলো বড় আপা মারা যাওয়ার কয়েক মাস পরেই।আপা মারা যাওয়ার শোক আব্বা সামলাতে পারে নি।
ইরার মনে আছে,আব্বা চাকরি বাকরি সবকিছু ছেড়ে দিলো।সারাদিন শুধু হাহুতাশ করতো কেনো কোনো কিছু না ভেবে এই বিয়ে দিলো।
একটা বিয়েতেই মেয়েকে বাড়িছাড়া করলো এরপর দুনিয়া ছাড়া।
ইরার চিৎকার করে আব্বাকে ডেকে বলতে ইচ্ছে করে, “আব্বা দেখো,একটা বিয়েতে তোমার ইরাকেও বাড়িছাড়া হতে হলো।মেয়েদের বিয়ের পর নাকি মায়েরা সবসময় চায় মেয়েরা বাবার বাড়ি আসুক।অথচ আমার কপাল দেখো,আমার মা জানতে ও চায় না আমি বেঁচে আছি কি-না!কেনো এমন অভাগা হলাম আমি আব্বা?”
আলগোছে ইরার চোখ মুছে ইশতিয়াক জিজ্ঞেস করলো, “কী হয়েছে ইরাবতী? এরকম কাঁদছো কেনো?”
“আমার আব্বার কথা মনে পড়ছে অনেক।নিজের বলতে আমার যে কেউ নেই আপনি ছাড়া।”
“আমি থাকলে তোমার এই দুনিয়ায় আর কাউকে দরকার হবে না ইরা।কাউকে না।তোমার সব দুঃখ আমি ভুলিয়ে দিবো।”

ইরাকে নিজের বুকে টেনে নেয় ইশতিয়াক। ইরা মন খুলে কাঁদে।
রিমিকে কল দিলো শায়লা। হনুফাকে দিয়ে পুরো শরীর ম্যাসাজ নিতে নিতে আরামে চোখ বুঁজে শায়লা বললো, “কী ব্যাপার? কোনো খবর নেই কেনো তোমাদের?”
রিমি আতংকিত হয়ে গেলো শায়লার কথা শুনে।নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে এতো বড় অন্যায় করতে মন টানছে না।কিন্তু যেখানে জান বাঁচানো ফরজ সেখানে করণীয় কী?
আগে নিজে বাঁচলে বাপের নাম।
“জি আন্টি,আপনি যেদিন বলবেন সেদিনই কাজ হয়ে যাবে।”
“বেশ, ভালো কথা।আমি চাই ইকবালের বাসর রাতটা তারিনের সাথে না।ইরার সাথে হবে আগে।ভেন্যু ঠিক করে আমি জানিয়ে দিবো।তোমরা শুধু ওকে সেই জায়গায় নিয়ে যাবে।”
“জি আন্টি।আপনি যেমন বলবেন তেমনই হবে।”
“আগামী রাতে তুমি চলে আসবে।”

রিমির গলা শুকিয়ে গেলো। দুই চোখ ভিজে উঠলো। নিজেকে সামলে বললো, “ঠিক আছে।”
শায়লার ভীষণ আনন্দ লাগে। এই মেয়েটার সব অহংকার শেষ করে দিবে সে।এরপর ওর এমন হাল করবে যে চাইলেও সে এই সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না।
রিমি গ্রুপ কল করে বাকিদের।কলে চারজন মিলে দীর্ঘ সময় ধরে প্ল্যান করে প্ল্যান ফাইনাল করে নেয়।
ইকবাল ড্রিঙ্ক করতে বসেছে বেশ আয়োজন করে। হরেক রকমের কালেকশন আছে তার।সবকিছু নিয়ে আয়েশ করে বসেছে ছাদে।
এরকম জোছনা রাতে ইরা মেয়েটা যদি পাশে থাকতো!

ইকবালের ভ্রম জন্মে।মনে হয় তার পাশে ইরা এসে বসেছে।ইকবাল প্রবল আবেগে স্পর্শ করতে যায় ইরাকে।বাতাসের সাথে মিলিয়ে যায় ইরা।বুকের ভেতর যন্ত্রণা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে দ্বিগুন বেগে।
নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি ঝোঁক যেনো আরো বেড়ে যাচ্ছে ইকবালের।
রাগ সামলাতে না পেরে বোতল একটা আছড়ে ভেঙে ফেলে ইকবাল।মুহূর্তেই পুরো ছাদ কাঁচের টুকরো দিয়ে ভরে যায়।
ফোনের শব্দে ইকবালের ঘোর কাটে।ক্লারা কল দিয়েছে।
খুব নোংরা একটা গালি দিয়ে ইকবাল সম্বোধন করে ক্লারাকে।
ক্লারার দুই চোখ ভেজা।
মিষ্টি হেসে ক্লারা বললো, “একটা গুড নিউজ আছে ইকবাল।”
“কোন বালের খবর দিবি তুই?”
ক্লারা বুঝতে পারলো না এই কথার মানে।তবে যা দেখালো তাতে ইকবালের নেশার ঘোর কেটে গেলো এক মুহূর্তের জন্য।

ক্লারা আহ্লাদী হয়ে বললো, “ইউ আর গোয়িং টু বি আ ড্যাড।”
“হোয়াট দ্য হেল আর ইউ টকিং অ্যাবাউট?”
ক্লারা নিভু প্রদীপের শিখার মতো দপ করে নিভে গেলো।সে বুঝতে পারছে ইকবালের কথার মানে।কিন্তু ইকবাল নিজেই তাকে বলেছিলো যদি কখনো তাদের বেবি চলে আসে তাহলে ইকবাল সানন্দে তাকে গ্রহণ করবে।ক্লারা ইকবালকে হারাতে চায় না।কিছুতেই না।
ক্লারার অবশ্য প্ল্যান ইকবাল বিডিতে যাওয়ার পর থেকেই চলছিলো।
ইকবাল জঘন্য গালাগালি করে কল কেটে দিলো।

দুই দিন পর বিয়ে। অথচ ওর মাথায় ইরা ছাড়া আর কিছু নেই।শায়লাকে কল দিলো ইকবাল।
চিবিয়ে চিবিয়ে বললো, “আমার বাসর ঘরে আমি যদি ইরাকে না পাই তবে আমি ইশতিয়াকের বেডরুম থেকে ওকে তুলে নিয়ে আসবো সেই রাতে।আই প্রমিস ইউ।”
“রিল্যাক্স। আর দুই রাত মাত্র।সব ঠিক করে ফেলেছি আমি।আর একটু অপেক্ষা করো।”
ইকবাল কল রেখে অস্থির হয়ে ছাদে হাটতে থাকে।

ইকবালের গায়ে হলুদ আজকে।গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে বাসার ছাদে।
চারদিক থেকে অতিথি আর অতিথি এসে ভীড় জমিয়েছে শেখ বাড়িতে।
ইশতিয়াক কারো সাথে ফোনে কথা বলছে।ইরা চুপচাপ শোনার চেষ্টা করছে,বুঝার চেষ্টা করছে।
কিন্তু এতো দ্রুত কথা বলছে ব্রিটিশ এ্যাকসেন্টে যে ইরার কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না।
গায়ে হলুদের আয়োজন কেমন হয়েছে তা ইশতিয়াক, ইরা দুজনের কেউ-ই জানে না।
ইশতিয়াকের কথায় আর কান না দিয়ে ইরা হনুফা আর রেনুকে ডেকে পাঠালো।
কাজ করতে করতে দুজনেরই অবস্থা খারাপ। বিশেষ করে বড় ম্যাডামের দুই বোইন এতো ঝামেলা করে সবকিছুতে যে ভীষণ ধকল যায়।

ইরার ডাক শুনে দু’জনেই আসে ইরার রুমে।
দুজনের হাতে ইরা দুটো প্যাকেট তুলে দিলো।হনুফা,রেনু একে অন্যের মুখের দিকে তাকিয়ে ইরাকে জিজ্ঞেস করলো, “এখানে কী আছে ম্যাডাম?”
“খুলে দেখো নিচে গিয়ে।”
দুজনেই নিচে নেমে এলো ব্যাগটা নিয়ে। নিচে এসে খুলে দেখে দুজনের ব্যাগেই দুটো করে চারটা শাড়ি।
আনন্দে হনুফার কান্না এসে গেলো।
এই বাড়িতে কাজ করে অনেক বছর ধরেই কিন্তু এই ম্যাডামের মতো এরকম আদর কেউ করে নাই ওদের।
ছোট ম্যাডাম আসছে কয়দিন হলো অথচ তার ব্যবহারে,কথায় ওদের প্রতি আন্তরিকতা অনুভব করে দু’জনেই। হনুফার মনে হলো ছোট ম্যাডামকে একটা ধন্যবাদ বলে আসা উচিত।
ইশতিয়াকের কথা শেষ হতেই ইরা বললো, “আপনি কী সুন্দর করে ইংরেজি বলেন!”
“তুমি ও শিখে যাবে ওখানে থাকতে থাকতে। আমি তোমাকে নিয়ে যাবো ওখানে।আমার চোখের সামনে ছাড়া তুমি কোথাও সেইফ না।”
“আপনি ভীষণ পজেসিভ মানুষ!”
“কারণ আমার বউ একটাই।আর তার জন্য আমি সব করতে পারি।”
ইশতিয়াক ইরাকে কাছে টেনে নিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বললো, “আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাবো ইরা।আমি বুঝতেছি না আমি কেনো এরকম উন্মাদনায় ডুবে যাচ্ছি। তোমাকে এক সেকেন্ডের জন্য চোখের আড়াল করতে ইচ্ছে করছে না আমার।”

ইরা ইশতিয়াকের বুকে মাথা রেখে বললো, “আমি কখনো আপনার চোখের আড়াল হতে ও চাই না বেবি হাল্ক।আপনার এই উন্মাদনা, আপনার এই ভালোবাসাটুকু যে আমার পরম আকাঙ্ক্ষিত বস্তু।এর অভাবে যে আমি ও বাঁচবো না।আপনার সামান্যতম বিরহ ও এই অন্তর সহ্য করতে পারবে না।”
ইশতিয়াক ইরার গালে হাত রেখে কিছুক্ষণ ইরার দিকে তাকিয়ে রইলো। এই প্রথম ইরা তার সাথে এমন আন্তরিক হয়ে কথা বলেছে।আনন্দে ইশতিয়াকের দুই চোখ ভিজে উঠলো।
ইরার দুই ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নিলো ইশতিয়াক।
ইরা বাঁধা দিলো না।এই ভালোবাসাটুকু,এই সুখটুকু উপভোগ করার জন্য সে নিজেকে প্রস্তুত করেছে।আজ আর কোনো ভয় নেই এই মানুষটার কাছে আত্মসমর্পণ করতে ইরার।
রুমের লাইট বন্ধ হয়ে দিলো ইশতিয়াক।

প্রিয় ইরাবতী পর্ব ৩০

ইরাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ইরার গায়ের ওড়নাটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো বিছানার নিচে।তারপর একে একে দুজনের গায়ের সব কাপড় জড়ো হতে থাকলো নিচে।
ইশতিয়াকের মনে হচ্ছে সে যে কোনো এক স্বর্গরাজ্যে চলে এসেছে।চাতকের মতো তুমুল বর্ষণের যেই অপেক্ষা ইশতিয়াক করেছিলো আজ সেই অপেক্ষার অবসান হলো।
ইরাবতীর খামচিতে ইশতিয়াকের পিঠ জ্বালাপোড়া করছে অথচ সেই জ্বালাপোড়াতেও ইশতিয়াক আজ সুখ খুঁজে পাচ্ছে।

প্রিয় ইরাবতী পর্ব ৩২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here