প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ১৬
মারশিয়া জাহান মেঘ
“এই আঁধার, দরজা খু’ল। কিরে, শুনছিস না?”
ঘুম ঘুম ঘোরে দরজা মেললো আঁধারীনি। ধ্রুবকে দেখে হামি ছাড়তে ছাড়তে বললো,
“হবু বউকে না দেখে একটা রাতও কা’টা’তে পারছেন না?”
ধ্রুব আঁধারীনির হাত ধরে টা’ন দিয়ে আঁধারীনিকে নিজের বক্ষঃস্থলে আনলো। তারপর আঁধারীনির ঠোঁ/টে আঙ্গুল চে’পে বললো,
“এত কথা বলিস কেন তুই? এত বকবক শুনতে ভালো লাগে না।”
“ছাড়ুন, হবু বউ দেখলে আমার চুলের মুঠি ধরে ফেলবে।”
“তার আগেই, ওর হাতের কব্জ কে/টে ফেলব। এখন মাথাটা টি/পে দে।”
“বাইরে দাঁড়িয়ে? আপনি কি ঘুমে আছেন? মানে, ঘুমে ঘুমে কথা বলছেন?”
“আমিতে ভূত, তাই না? যে ঘুমে ঘুমে সব করি।”
“হতেওতো পারেন তাই না?”
“মাথাটা টি’পে দেতো।”
“মাথার বদলে গ’লা টি’পে দিব? দিই?”
“কি!”
“না না কিছু না। আচ্ছা টি’পে দিচ্ছি।”
“আঁধার, সদ্য ঘুম থেকে জেগে উঠা তুই অপ্সরীর মতো সুন্দর।”
“ওইরকম সুন্দর হয়ে কি লাভ হলো ধ্রুব ভাই? আপনাকেতো এই সৌন্দর্যের মাঝে ঘায়েল করতে পারলাম না।”
ধ্রুবকে রুমে ঢু’ক’তে দেখে শায়ান চোখ মেললো। ধ্রুবর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকতে দেখে ধ্রুব বললো,
“কিছু বলবি?”
“ধ্রুব, আমার মনে হচ্ছে তুই অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেছিস। তুই কথা দিয়েছিলি, আঁধারের সাথে আমার বিয়েটা তুই যেভাবেই হোক করাবি। কিন্তু, আমার বিয়ে করানোর ব্যবস্থা না করে, উল্টো তুই ফাঁ’দ পেতে আছিস? আঁধারকে তোর করার জন্য?”
“ভালোবাসা অজান্তে হয় শায়ান। একবার ভালোবাসার বেড়াজালে আ’ট’কে গেলে ছু’টে আসা কঠিন হয়ে যায়। আমার জন্য কঠিন নয়, অসম্ভব। কারণ, আমি আঁধারের মাঝে নিজেকে পুরোপুরি মিশিয়ে ফেলেছি।”
“আর আমি ম’রে যাব, ওকে না পেলে। আমি ওকে কখনো কারোর হতে দিব না। কারণ, আমি ওকে ভালোবাসি। ঠিক কতটা ভালোবাসলে? একটা ছেলে কোটি কোটি টাকার ডিল ফেলে এই দেশে পা রেখেছে, আশা করি তোকে এক্সপ্লেইন করে আমার বুঝিয়ে দিতে হবে না?”
“তোকেতো অপশন দেওয়াই আছে। জিতে নে আঁধারকে।”
“অপশন একটাই, আমারই আঁধার।”
“দেখা যাক…”
কথাটি বলেই ধ্রুব গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। শায়ান ওপাশ ফিরে চোখ বন্ধ করলো। চোখ বন্ধ করতেই ভেসে উঠলো আঁধারের চেহারা। সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলে তাকালো সে। লম্বা শ্বাস নিয়ে মনে মনে বললো,
“না, এইবার আমি ধ্রুবকে আর এগুতে দিব না।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেছে আঁধারীনি। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখতে পেলো ধ্রুব আর স্মিতা একে অপরের হাত ধরে কথা বলছে আর হাসছে। বিরক্তিতে এক প্রকার অ’তি’ষ্ঠ হয়ে উঠলো আঁধারীনি। ধ্রুবকে দেখেও না দেখার ভান ধরে, ঠা’শ ঠু’শ তোয়ালে ছুঁ’ড়ে ফেললো বিছানায়। কিছুটা উচ্চস্বরেই বললো,
“সকাল সকাল সার্কাস দেখতে ইচ্ছে করে না। কি আশ্চর্য ব্যাপার-স্যাপার।”
ধ্রুবর কানে গেল আঁধারীনির কথা। আঁধারীনিকে দেখিয়ে দেখিয়ে ধ্রুবর দেখানো নাটক আরও বেশি যেন শুরু হয়ে গেল। সে স্মিতাকে বললো,
“স্মিতা, কাছে আসো একটু।”
আঁধারীনি আঁড়চোখে তাকালো ওদের দিকে। ধ্রুব যেই কি’স দিতে যাবে স্মিতাকে আঁধারীনি চি’ৎ’কার দিয়ে উঠে। রাগান্বিত স্বরে বললো,
“এইসব ডা’র্টি কাজ বাইরে গিয়ে করুন ধ্রুব ভাই। আপনারা ভুলে যাচ্ছেন বোধহয়, এই রুমে আমিও আছি। সব জায়গায় সবকিছু করা মানায় না।”
“আমরা কি খারাপ কিছু করছি নাকি?”
ধ্রুবর এই প্রশ্নে আঁধারীনির রাগ বেড়ে গেল। বললো,
“লি’প কি’স করা কি ভালো কিছু?”
“কেন ভালো কিছু না? একটা ছেলে হিসেবে আমার কি দেখার অধিকার নেই? এইটা তিতা নাকি মিঠা? তাও মিঙ্গেল থেকেও….”
“হুয়াট ননসেন্স ধ্রুব ভাই, আপনিতো এমন ছিলেন না। ইদানীং যা দেখাচ্ছেন, আমারতো মনে হয়…”
ধ্রুব ভ্রু কুঁচকে বললো,
“কি মনে হয় তোর?”
“জীবনে মেয়ে মানুষ দেখেননি।”
“দেখেছি, দেখেছি। আমার স্মিতার মতো সুন্দরী মেয়ে দেখিনি।”
আঁধারীনি মিনমিন করে বললো,
‘ন্যাকা ষষ্টী।’
তখনি রুমে আসে শায়ান। সাদা শার্ট পরেছে সে। হাতে ঘড়ি পরতে পরতে বললো,
“গুড মর্ণিং আঁধার।”
আঁধারীনি ধ্রুবকে দেখাতে, শায়ানের অনেক কাছে গিয়ে শায়ানের হাত ধরলো। তারপর দেখানো হাসি হেসে বললো,
“শুভ সকাল শায়ান ভাইয়া। আপনাকে আজকে অনেক বেশি হ্যান্ডসাম লাগছে।”
শায়ান ঝটকা খেলো। আঁধারীনি তার এত কাছে! আঁধারীনির মুখে প্রশংসা পেয়ে শায়ানের মনে ভালোবাসার লাড্ডু ফোটে উঠল। আঁধারীনির দিকে তাকিয়ে বললো,
“থেঙ্কস আঁধার। ইউ নো? তোমাকে ন্যাচরাল লুকে অনেক বেশি কিউট লাগে।”
সৌজন্য মূলক হাসলো আঁধারীনি। তারপর বললো,
“যাক, তবুও আপনি বললেন। অনেকের কাছেতো ময়দা সুন্দরী আবার৷ বিশ্ব সুন্দরী।”
ধ্রুবর দিকে তাকিয়েই শেষ কথাটা আঁধারীনি বললো। ধ্রুব বুঝতে পেরে স্মিতাকে অনেকটা কাছে টে’নে নেয়৷ তারপর বলে,
“ভালোবাসার মানুষ আটা-ময়দা সুন্দরী হলেও চলে।”
“এইটাতে সবগুলো ট্যাবলেট মিশিয়ে দেন।”
স্মিতা ওয়েটারকে কথাটি বলেই হাতে ১ হাজার টাকার ৫ টা নোট ধরিয়ে দিলো। তারপর লুকোচুরি করে দ্রুত গতিতে খাবারের টেবিলে ধ্রুবর পাশে বসে পড়লো। আঁধারীনি স্মিতাকে দেখতেই বললো,
“খেতে এসেও এত সাজতে হয় কেন বুঝি না। আচ্ছা, তারা কি খাবার খায়? নাকি লি’প’স্টি’ক খায়।”
ধ্রুব জবাবে বললো,
“স্মিতা লি’প’স্টি’ক খাবে কেন? এইটাতো আমি খাব। এজ আ বয়ফ্রেন্ড হিসেবে।”
“মানুষের আজকাল ল’জ্জা-শরম বলতে নেই।”
“বোনের সামনে আবার কিসের ল’জ্জা।”
আঁধারীনি চুপসে গেল। তারপর কিছু একটা ভেবে বললো,
“শায়ান ভাইয়া, আপনার কেমন মেয়ে পছন্দ?”
“তোমার মতো আঁধার।”
আঁধারীনি শায়ানের হাত ধরলো। ধ্রুবর দৃষ্টি সেদিকেই। আঁধারীনি বললো,
“বিয়ে কখন করছেন শায়ান ভাইয়া?”
“যখন তোমার মতো কাউকে পেয়ে যাব।”
“শায়ান ভা…”
প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ১৫
আঁধারীনি অর্ধেক কথায় থেমে গেল। ওয়েটার এসেছে খাবার নিয়ে। তাই এই মুহুর্তে সে আর কিছু বললো না। সবার দিকে ওয়েটার খাবার এগিয়ে দিচ্ছে। আঁধারীনি কোল্ড ড্রিংকসটা খেতে যাবে এমন সময় ধ্রুব বললো,
“এইটা খাস না আঁধার, এতে বি’ষ আছে।”