প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬২

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬২
জান্নাত নুসরাত

আরশ নুসরাতকে খোঁজতে লাগলো একসাথে সূর্য অস্ত দেখার জন্য। চারিদিকে চোখ বুলালো নুসরাতকে পাওয়ার আশায়। আশা বিফলে গেল,নুসরাতের ছায়া ও খুঁজে পেল না আরশ আশে-পাশে। রাগ লাগলো আরশের! রাগে নাকের পাটা ফুলে উঠলো। রাগ সামলে কোনোরকম গাড়িতে গিয়ে চুপচাপ বসে গেল মুখ ফুলিয়ে।
যে যার স্বামী-স্ত্রীর সাথে সূর্য অস্ত দেখতে লাগলো। সূর্য পশ্চিম আকশে ডুবে গিয়ে যখন লাল রঙ ছড়িয়ে পড়ল পুরো আকাশে তখন হেলাল সাহেব তাড়া দিলেন রিসোর্টে ফিরে যাওয়ার জন্য।

গাড়ির দিকে অগ্রসর হতে হতে আরশকে কল দিলেন। কল রিং হয়ে কেটে গেল। আরশ কল ধরলো না। নুসরাত কে কল দিয়ে বললেন তাড়াতাড়ি আসার জন্য। আরশকে কল দিয়ে গাড়ির কাছে আসতেই রিং হতে লাগলো। হেলাল সাহেব ভ্রু কুঁচকে গাড়ির ভিতরে তাকালেন। অন্ধকারের জন্য গাড়ির ভিতর কাউকে দেখা গেল না। হাতে থাকা ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট অন করতেই চোখে ভেসে উঠলো আরশের লাল হয়ে থাকা মুখ।
হেলাল সাহেব কপালে ভাঁজ ফেলে চিন্তাগ্রস্থ গলায় বললেন,”কি হয়েছে তোর? মুখ ফুলিয়ে গাড়িতে বসে আছিস কেন? আর কল দিচ্ছি কল ধরছিস না কেন?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আরশ এতো কথার জবাবে ভিন্ন উত্তর দিল। গম্ভীর গলায় বলল,”মাথা ব্যাথা করছে। ফ্ল্যাশ অফ করুন!
হেলাল সাহেব কথা বাড়ালেন না। কল লিস্টে ঢুকে নুসরাতের কাছে কল দিলেন। উল্টো দিকে ফিরে কানে মোবাইল চেপে ধরলেন। আরশ ধ্যান দিল না! তার বিতৃষ্ণা চলে এসেছে নিজের প্রতি, নিজের এই জীবনের প্রতি। সামান্য ভুলের জন্য এতো মাশুল দিতে হবে জানলে জীবনে এই ভুল করতো না। কেন যে করতে গেল?

আরশ সামনের সিটে মাথা হেলান দিয়ে বসে রইলো। মাথা যন্ত্রণায় কপালের রগগুলো ধপধপ করছে। নুসরাতের চিন্তায় তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। আর উনার অবস্থা দেখো, কী রকম গলাগলি করে সবার সাথে ঘুরছে, ফিরছে, আনন্দ করছে?আজ তো সারাদিনের মাঝে তার দেখা নেই! যা খাবার খাওয়ার সময় ওই পাটকাঠির সাথে আসলো। শালা পাটকাঠি টা ও আটার মতো লেগে আছে। আমার বউয়ের পিছু করে করে এখানে চলে আসলো। একটু ফ্যামেলি গেট টু গেদার ও করা যাচ্ছে না। পাটকাঠি টার জন্য সমূদ্রে এসে ও বউয়ের সাথে একটু রোমান্স করতে পারলাম না। আমার জীবন টা কি এভাবে যাবে? এই সম্পর্কের কি কোনো ভবিষ্যৎ নেই? এতো এতো চিন্তা আরশের মাথা ব্যথা আরো বাড়িয়ে দিল। মাথা ব্যথায় চোখের কোণে জল জমা হলো। আরশ তা মুছল না। থাকুক না, একটু সময়! একটু দীর্ঘআয়ু হোক জলগুলো।

আরশ হাত দিয়ে কপাল চেপে ধরলো মাথা ব্যথার জন্য। কপাল চেপে ধরতেই লোমশ হীন হাতের রগগুলো ফুলে ফেপে উঠলো। মনে হলো চামড়া বেদ করে এক্ষুণি বাইরে চলে আসবে।
হেলাল সাহেব কথা না বাড়িয়ে নুসরাত কে কল করলেন। কল করতেই ও-পাশ থেকে কল পিক হলো। হেলাল সাহেব ফোন লাউডে দিয়ে হ্যালো বললেন। নুসরাত ও হ্যালো বলল। তারপরই আরশের কানে এসে বিধলো নুসরাতের উচ্ছাসিত গলার স্বর। নুসরাত কিছুটা অনুরোধের স্বরে বলল,”বড় আব্বু, আমি কি আবিরকে নিয়ে আসতে পারি?
হেলাল সাহেবের স্ট্রেট ফরোয়ার্ড কথা। গলার স্বরে কিছুটা ঝাঁঝ মিশে আছে,”ও এসে কি করবে? ওর নিজের বাসা নেই!
নুসরাত কিছুটা ফিসফিস করে বলল,

” আরে বড় আব্বু ধীরে কথা বলুন। আবির শুনতে পেলে মাইন্ড করবে।
হেলাল সাহেবের কপালের ভাঁজ গাঢ় হলো। ভ্রু কুঞ্চিত করে বললেন,”তোর আবির,
হেলাল সাহেবের বলতে দেরি হলো—তোর আবির, গাড়ির ভিতর থেকে আরশের বজ্র কন্ঠের চিৎকার আসতে দেরি হলো না।

” পাপা ওর আবির কি? বলো ওর এসিস্ট্যান্ট আবির!
হেলাল সাহেব চোখ ছোট ছোট করে তাকালেন।
“ওর সমস্যা নেই! তোর কেন সমস্যা হচ্ছে?
” তুমি বলো আবিরকে না নিয়ে আসার জন্য।
হেলাল সাহেব ফোন কানে ধরলেন। নুসরাত ফোনের অপাশ থেকে চুপচাপ আরশের কথা শুনছিল। ঠোঁটের কোণ ঘেঁষে ভেসে উঠলো শয়তানি হাসি।
হেলাল সাহেব গলা পরিস্কার করে নিলেন। আরশের কথা কোনোপ্রকার পাত্তা না দিয়ে বললেন,”ও আসলে কোথায় থাকবে?
“কেন? আরশ ভাইয়ের সাথে!

হেলাল সাহেব আরশের দিকে একবার তাকালেন। চোখ মুখ অন্ধকারে ডুবিয়ে চেয়ে আছে তার দিকে। মনে হচ্ছে যদি পারতো তাহলে ফোন টা ছিনিয়ে নিতো—তারপর এর দফা রফা করতো। হেলাল সাহেবের জন্য শুধু দাঁত চেপে বসে আছে।
হেলাল সাহেব হেসে উঠলেন শব্দ করে। নুসরাতকে নিয়ে মজা করে বললেন,” তোর জামাই যে চিজ রাখবে তার সাথে। এখন তো যে মুখ বানাচ্ছে কাছে পেলে তো আবিরকে আস্তো রাখবে না।
“ও আপনি চিন্তা করবেন না। আপনার এই বয়সে চিন্তা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে। আপনার চিন্তা গুলো আমি নিচ্ছি। আপনি গিয়ে আপনার গাড়িতে উঠুন ততক্ষণে আমি আসছি। আমি সবটা সামলে নিব।
হেলাল সাহেব ঠোঁট চেপে হেসে বললেন,

” আচ্ছা তুই আয়!
আরশ হেলাল সাহেবের দিকে তাকিয়ে ছিল প্রশ্নাত্মক দৃষ্টি। নুসরাতের সাথে এতক্ষণ কি কথা হয়েছিল জানার জন্য? হেলাল সাহেব এরকম ভাব ভঙ্গি করলেন যেন আরশের কোনো অস্তিত্ব এখানে নেই। সম্পূর্ণ আরশকে ইগনোর করে পা চালিয়ে চলে গেলেন অন্য গাড়ির দিকে। আরশ ভ্রু তোলে, বসে রইলো।

জায়িন, ইসরাত, মমো গাড়িতে উঠতে চাইলো আরশ উঠতে দিল না। গাড়ির বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখলো। সমূদ্র থেকে কিছুটা দূরে গাড়ি পার্ক করে রাখার জন্য ঠান্ডা শীতল বাতাস ছুঁয়ে দিয়ে গেল সবাইকে। ইসরাত শীতে থরথর করে কেঁপে উঠলো। জায়িন ইসরাতের কাঁধ চেপে ধরে টেনে নিজের কাছে এনে দাঁড় করালো। হাত দিয়ে ইসরাতের বাহু ঘষে দিতে লাগলো যাতে ঠান্ডা না লাগে। ইসরাত জায়িনের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার হাসি হাসল। জায়িন ও হাসল ইসরাতের সাথে অধর বাঁকিয়ে।

নুসরাত আর আবির আসলো চারিদিক যখন অন্ধকার হয়ে গেল। সমূদ্রের গর্জন যখন তীব্র থেকে তীব্র হলো। নুসরাত সামনে উঠে বসতে চাইলো,আরশ শীতল গলায় বলল, “আমার পাশে এসে বস!
নুসরাত কথা বাড়ালো না। ওভারসাইজড কাপড় পরায় ঠান্ডা লাগছে। কাপড়ের ভিতরে মনে হচ্ছে সব বাতাস ঢুকে গিয়ে শরীর অবস হয়ে গিয়েছে। নুসরাত লাফ দিয়ে উঠে আরশের পাশ ঘেঁষে বসলো।
নুসরাত কর্কশ গলায় বলল,
“তোমাকে কি ইনভিটিশন দিয়ে এখানে আনতে হবে? তাড়াতাড়ি উঠো! শীতে মানুষ জমে যাচ্ছে একবার তাকিয়ে দেখো।
আবির মুখ গোমড়া করে পিছনে উঠতে যাবে আরশ ধমকে উঠল মমোকে।

” কি এখানে হা করে দাঁড়িয়ে মুখ দেখছিস কেন? তাড়াতাড়ি এসে গাড়িতে উঠ।
মমো হঠাৎ এমন ধমকের স্বীকার হয়ে বোকা বনে গেল। কিছু বুঝতে না পেরে হা করে আরশের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
আরশ চোখ রাঙিয়ে বলল,
“তুই উঠবি না কি দুটো থাপ্পড় লাগাবো?
মমো পা চালিয়ে এসে আবিরকে একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে সামনে থেকে গাড়িতে উঠে বসলো। আবির ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে রইলো। ইরহাম সামনের সিটে উঠে বসলো। তার কোনো জামেলা নেই! সে সিঙ্গেল মানুষ ভালোই আছে। জীবনে কোনো চিন্তা নেই, শুধু চিল আর চিল! বসা নিয়ে ও কোনো চিন্তা নেই।
ইসরাতকে ধাক্কিয়ে একপ্রকার জায়িন গাড়িতে তুলল। ইসরাত চোখ বাঁকা করে তাকাতেই জায়িন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল,”চোখ ত্যাড়া করে তাকাবে না।

ইসরাত চোখ ফিরিয়ে নিল। আবির এসে সবার শেষে গাড়িতে উঠলো৷ দরজার টেনে লাগিয়ে দিল। ইরহাম গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলল। গাড়ি স্টার্ট করা হলো! সে তার নিজ গতিতে চলতে লাগলো রিসোর্টের দিকে।
আরশ মাথা ব্যথার জন্য চোখ বন্ধ করে সিটে মাথা এলিয়ে দিল। নুসরাত পকেট থেকে ফোন বের করে গ্যালারি চেক করতে লাগলো। আজ কি কি সে ক্যামেরা বন্দী করেছে দেখার জন্য!
মমো ফিসফিস করে বলল,
“কি দেখছিস,আমায় দেখা!

নুসরাত মোবাইল ঠিকভাবে ধরলো যাতে মমো দেখতে পারে। আরশের কানে লাগলো কথা, তবুও তাকালো না। মাথা ব্যথার সাথে এখন চোখ ব্যথা ও করছে তার।
নুসরাত মোবাইল নিয়ে নড়াচড়া করতেই আরশের চোখে তীর্যক আলোক রশ্মি পড়ল মোবাইলের। আলোর রশ্মির উৎস দেখার জনে নিভু চোখে তাকালো। চোখ গেল মোবাইলের দিকে।
গ্যালারি ফাইল ভর্তি হাবিজাবি পিক। আরশের চোখে হঠাৎ কিছু দেখে চেনা চেনা মনে হলো। ভ্রু কুঁচকে চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু মাথা ব্যথার জন্য ঝাপসা দৃষ্টি হওয়ায় কিছু দেখতে পারল না।
চোখ বন্ধ করে আরশ নিজের মাথা নিয়ে রাখলো নুসরাতের কাঁধে। কাঁধে মাথা রেখেই শ্বাস ফেলল ঘাড়ের দিকে মুখ করে।

নুসরাতের শরীরের ভিতর কম্পন হলো তবুও নড়লো না। অনড় হয়ে বসে মোবাইল স্ক্রল করতে লাগলো। এর কিছুক্ষণ পর চোখ ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখলো আরশ কি করছে? যখন নিশ্চিত হলো আরশ ঘুমিয়ে আছে টেনে শ্বাস নিল।
শ্বাস নিতে পারল কই? তার আগেই আরশ নিজের নাক দাবিয়ে দিল নুসরাতের গলার ভাঁজে। মুখ থেকে গরম নিঃশ্বাস বের করে নুসরাতের ঘাড়ে ইচ্ছেকৃত ভাবে ছেড়ে দিল। নাক টেনে টেনে শ্বাস নিতে লাগলো। নুসরাতের কানে কানে ফিসফিস করে বলল,” কতবার না করেছি এই পারফিউম ইউজ করবি না। কুস্তুরির ঘ্রাণটা আমায় পাগল করে দে। উফ এতো মিষ্টি স্বাদের পারফিউম তুই কোথা থেকে কিনেছিস?

“আমি কিনিনি!
আরশ গলায় আরেকটু মুখ ঢুবিয়ে দিল। নুসরাত কোনো প্রকার শব্দ করলো না।
” তাহলে!
“আব্বা কিনে দিয়েছে!
আরশ ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল,
” তুই এই ব্রান্ডের পারফিউম সবসময় ইউজ করিস!
নুসরাত মাথা নাড়ালো। আরশ রাগী গলায় বলল,
“আজ থেকে এই পারফিউম ব্যবহার করা তোর জন্য নিষিদ্ধ। এই জন্য বলি ওই পাটকাঠি কীভাবে পটলো?
এই পারফিউমের ঘ্রাণের কারণে তাই না!
নুসরাত বিরক্ত হয়ে বলল,

” হ্যাঁ তাই! আপনি সব বুঝে গিয়েছেন।
“তুই পুরুষ মানুষ পটানোর জন্য কুস্তুরির ঘ্রাণ বিশিষ্ট পারফিউম ব্যবহার করিস।
” হ্যাঁ করি আপনার কোনো সমস্যা!
আরশ নুসরাতের গলায় নিজের ঠোঁট চেপে কিছু বলল যা বোঝা গেল না। নুসরাত সেদিকে ধ্যান না দিয়ে মোবাইল স্ক্রল করতে লাগলো।
আরশ চোখ বুজে বিড়বিড় করল,

“এই পারফিউম ব্যবহার করে আমাকে পটিয়েছে। আমি এটা মানি না! কুস্তুরির ঘ্রাণ থাকার জন্য আমি পাগল হয়েছি নাহলে আমি আরশ কোনোদিন প্রেম, ভালোবাসায় পরতাম না। সব দোষ পারফিউমের আর পারফিউম ইউজ কারী এই ষড়যন্ত্রকারী মহিলার। সব এই মহিলার চক্রান্ত। আমি বুঝি না মনে করছে!
আরশ মুখ ও চোখ অন্ধকার করে নিল। নিজের স্বভাবের বাইরে গিয়ে নিজের সাথেই কথা বলল,
“সব দোষ তোর! কে বলেছে তোকে এই পাগল মহিলাকে বাজিয়ে দেখতে? এই মহিলার সাথে পাঙ্গা নিয়েছিস, এবার ঠেলা সামলাও! নিজে নিজের জালে আটকা পড়েছিস, রে আরশ। বাঁচার কোনো পথ নেই! তোর জীবন আজ থেকে শেষ, ইতি! তুই কেন এই মেয়ের মায়ায় পরলি? নির্ঘাত এই মহিলা আমাকে জাদু করেছে। নইলে আমার মতো একজন বীর পুরুষ কোনোভাবে প্রেমে পড়তে পারে না।

আরশের ভেতরের এতো হাই হুতাশ কেউ শুনতে পেল না। তা রয়ে গেল একান্ত আরশের মনে! নিজের ভিতর চেপে রাখলো অদম্য সেই অনুভূতি। কিন্তু, যাকে নিয়ে এতো কিছু সে কি করছে? সে তো নিশ্চিন্তে ফেসবুক স্ক্রল করছে। আর কিছুক্ষণ পর পর সামনে আসা বেবি হেয়ার গুলো সযত্নে নিজের কানের পিঠে গুজে যাচ্ছে।

গড়ির কাটা আটটা বেজে সাতান্ন মিনিটের ঘরে। আরশ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়ার পর থেকে পুরো রুমে নুসরাত কে খোঁজল। তারপর খুঁজে না পেয়ে বারান্দায় গেল। সেখানে ও দেখলো নেই! রুম থেকে চিন্তিত চোখ মুখ নিয়ে বেরিয়ে গেল। পরণে অফ হোয়াইট কালার টাউজার আর টি শার্ট। ইরহামের রুমে নক করতেই ইরহাম রুমের ভিতর থেকে চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো, “কে?
আরশ গলার স্বর যথা সম্ভব গম্ভীর করে বলল,
“আমি!
ইরহাম গটগট করে আসতে আসতে বিরক্তি নিয়ে বলল,
” আমি টা কে জানতে চাচ্ছি!

আরশ কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই ইরহাম দরজা খুলে ফেলল। ইরহাম বাহিরে তাকানোর আগে কপালে গাঢ় ভাঁজ ফেলল। দরজার বাহিরে আরশকে দেখেই না চাইতে ঠোঁটে টেনে হাসি আনলো। আরশ এক হাত পকেটে পুরে ইরহামের দিকে বিরক্তির চোখে তাকিয়ে আছে। নাক মুখ বিকৃত করে ধমক দিতে যাবে ইরহাম বলে উঠলো,”ভাইয়া এতো রাতে এখানে কি?
আরশ সে কথার উত্তর দিল না। চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,”ওইটা এখানে নেই!
ইরহাম অবাক হয়ে বলল,
“কোনটা?
আরশ গম্ভীর গলায় বলল,
“তোর সাথের টা।
ইরহাম বোঝার ভঙ্গিতে মাথা নাড়ালো। গুরুতর বিষয়। হুউউ….!
“নুসরাত এখানে নেই!

নুসরাত নেই শুনে হতাশ হলো। শ্বাস ফেলে জিজ্ঞেস করলো,”তাহলে কোথায়?
ইরহাম থুতনিতে হাত রেখে অভিনয় করলো ভাবার। কোথায় নুসরাত থাকতে পারে? ভাবার অভিনয় শেষে দাঁত বের করে হাসল আরশের দিকে তাকিয়ে।
“আবির ভাইয়ের সাথে গিয়েছে!
আরশ বিকট গলায় চিৎকার করে বলল,
” কি?

“আপনাকে ও দেখছি এক কথা দুইবার বলতে হয়। বলছি আবির ভাইয়ের সাথে নাইট আউটে গিয়েছে।
আরশের মুখ লাল হয়ে গেল এই কথা শুনে। চোখ-মুখ কুঁচকে, বাহিরে যাওয়ার পথের দিকে অগ্রসর হলো বড় বড় পা ফেলে। আজ নুসরাতের একদিন কি আরশের একদিন? দিনের বেলা ছেলেটার সাথে ঘোরা-ঘুরি ঠিক আছে। কিন্তু, রাতের বেলা…..! আজ এই মেয়েকে সে ছাড়বে না।
আরশ হন্তদন্ত হয়ে ছুটে গেল। ইরহাম বুঝলো না এতো রাগের কি হয়েছে?
” আরে ভাই কথাটা তো শুনে যাও!

“তোমাকে আমি না করেছিলাম খেও না, খেয়েছো এবার মাথা ঘুরাচ্ছে।
নুসরাত আঙুল আকাশের দিকে তুলল। তারপর আবিরের দিকে আঙুল তোলে নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে বলল,” এই তোমার মাথার উপর কাক বসে আছে।
আবির থতমত খেয়ে মাথায় হাত দিল। কোথাও কিছু খুঁজে না পেয়ে নুসরাতের দিকে প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতে তাকালো। নুসরাত চোখের পাতা ঝাপটে মুখ কাঁদো কাঁদো করে বলল,”যাহ বাবা! উড়ে গেল। তোমাকে কে বলেছিল মাথায় হাত দিতে।
আবির বিমূর্ত নয়নে তাকিয়ে রইলো। নুসরাত যে পুরো মাল খেয়ে টাল হয়ে গিয়েছে, তা তার কথা দ্বারা প্রকাশ করছে।
নুসরাত সামনের দিকে অগোছালো পায়ে হাঁটতে লাগলো। পায়ে সকালের পেন্সিল হিল থাকায় পাথরের সাথে উস্টা খেয়ে পা বেঁকে গেল। নিজেকে সামলে ঠিক হতেই হে হে করে হেসে উঠলো আকাশের দিকে তাকিয়ে।
আবির হঠাৎ হাসির মানে কি বুঝতে পারল না? জিজ্ঞেস করতে নিবে নুসরাত আঙুল আকাশের দিকে তোলে বলল,

“ওই যে আকাশে নৌকা বৈঠা দিয়ে ঠানা হচ্ছে।
আবির বোকার মতো তাকালো আকাশের দিকে। কিছু খুঁজে না পেয়ে নিজেই নিজের মাথায় আঘাত করলো। এই মাতালের কথা সে বিশ্বাস করছে। তার মতো গাঁধা আর এই পৃথিবী তে দুটো নেই।
নুসরাত ততক্ষণে হেলতে দুলতে এগিয়ে গিয়েছে অনেক জায়গা। আবির দৌড়ে গিয়ে নুসরাতের হাত চেপে ধরতেই নুসরাত ছিটকে সরে গেল। আবিরের দিকে আতঙ্ক নিয়ে তাকিয়ে লাফ শুরু করলো,”ও মাই গস, ও মাই গস! ও আমার আল্লাহ, এই পেট মোটা দাদু কোথায় থেকে আসলো?
কথাটা বলেই তর্জনী আঙুল তুলে আবিরের পেটে খোঁচা দিল। আবিরের যখন বোধগম্য হলো, ততক্ষণে নুসরাত পেটের চামড়া টেনে চিমটি কাটলো।

চোখ ঝাপটে তাকালো আবিরের দিকে। চোখে ঝাপসা ভাসল আরশের মুখ। চোখ ছোট ছোট করে তাকালো। হাত তুলে নিজের চোখ কচলে এগিয়ে গেল।
আবির চিমটি কাটা স্থান ঢলে সামনে তাকাতেই দেখে নুসরাত পালিয়েছে। আবির পেট ঢলতে ঢলতে এগিয়ে গেল নুসরাতের পিছনে।
নুসরাত মাঝ রাস্তায় গিয়ে উল্টে পড়ল। একে তো মাতাল, তার মধ্যে আবার পায়ে পেন্সিল হিল। আবির দৌড়ে গিয়ে টেনে ধরলো নুসরাতের হাত। নুসরাত দু-হাতের নিচে হাত ঢুকিয়ে তুলতে নিবে আরশ দূর থেকে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠলো।
“এই এই একদম ধরবি না! ছাড় আমার বউকে!
আবির শুনল না,নুসরাত কে টেনে তুলল। ঝুঁকে পা থেকে জুতো খুলতে নিবে, এমন সময় আরশ এসে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল।

আবিরের শার্টের কলার চেপে ধরলো আরশ। হাত মুঠ করে নাক বরাবর ঘুষি মারল। এক ঘুষিতেই আবিরের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে গেল। আবির পাল্টা বার করলো না। আরশের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য করে হাসল।
নুসরাত ওদের থেকে দু হাত দূরে দাঁড়িয়ে পা হাত তুলে বক্সিং করার মতো করছে। আবিরকে হাসতে দেখে বিরক্ত হলো। ফাইটিং টা তো জমছে না! এই ছেলে ওই সুঠাম দেহের ছেলেকে মারছে না কেন? উফ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে কেন?
নুসরাতের তর সইলো না। আবিরের নাম মনে করার চেষ্টা করলো কিন্তু মনে পড়ল না। মাথায় চাপ দিয়ে তর্জনী আঙুল ঠোঁটে চেপে ভাবলো,না, মনে পড়ছে না! কী জেনো নাম ছিল? নুসরাত নাম মনে করতে না পেরে নিজে একটা নাম দিয়ে দিল।

” এই রোগা পাতলা, তুমি ওকে ঢুস ঢুস করে পেটে দিতে পারছো না! হা করে তাকিয়ে থেকে মার গিলছো কেন?
আবির হা হয়ে তাকিয়ে থাকল। তাকে রোগা পাতলা বানিয়ে দিল। আরশ আবিরের কলার ছেড়ে দিয়ে ঠোঁট চেপে হেসে উঠলো। আরশের হাসি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। নুসরাত নাক ফুলিয়ে বলল,”দাঁড়াও! আমি তোমার বদলে ঘুষি মেরে ওর নাক ফাটিয়ে দিচ্ছি।

নুসরাত নিজের পরণের হুডি টেনে মাথায় তুলল। হুডির হাত গুটিয়ে হাত মুঠ করে আরশের দিকে এগিয়ে আসলো। আবিরকে এক প্রকার ঠেলে সামনে থেকে সরিয়ে দিল। আরশের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো কোমরে হাত রেখে। ঝাপসা চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চেনার চেষ্টা করলো। কিন্তু মুখটা ঠিক চিনতে পারল না। আরশের মুখের দিকে চোখ ছোট ছোট করে এগিয়ে গেল। আরশের মুখ থেকে দু-ইঞ্চি দূরত্বে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
আরশ ও তাকালো চোখ ছোট ছোট করে। বুঝতে চাইলো নুসরাতের মাথায় চলছে টা কি? বোঝার আগেই নুসরাত হাত পিছন থেকে এনে আরশের নাক বরাবর মেরে দিল।

আরশ হতবম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো। আবির শব্দ করে হেসে উঠলো। হা হা করে হাসতে হাসতে পেট চেপে রাস্তার ধারে বসে গেল। আরশ এখনো একইভাবে তাকিয়ে আছে। নুসরাত মুখ চোখ হাত দিয়ে কচলে আবার আরশের দিকে তাকালো। চোখের সামনে দৈত্যের মতো বড় এক লোক ভেসে উঠলো। যার নাকের ডগা লাল হয়ে আছে।
নুসরাত হাসল হা হা করে। আরশের নাক চেপে ধরলো হাতের তালু দিয়ে।
” এই দৈত্যের নাকে এরকম লাল জোকারের মতো কি লাগানো? কি বিশ্রী লাগছে? নাক থেকে ওটা খুলো।
নুসরাত নাক টেনে খুলতে চাইলো, খুলতে পারল না। রাগে আরশের নাক ছেড়ে দিয়ে এক পায়ের জুতো ছুঁড়ে ফেলল দূরে। আরেক পায়ে জুতো না খুলেই খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলে গেল সামনের দিকে। আবির দৌড়ে যেতে চাইলো! আরশ পিছন থেকে আবিরের কাঁধের কাছের শার্ট মুঠো করে ধরে রাখলো। গম্ভীর গলায় বলল,”আমি আমার বউকে সামলাতে পারবো। তোমার এই বিষয়ে ইন্টাফেয়ার না করলেই ভালো।
আবির মাথা নাড়ালল। ঠোঁট উল্টে বলল,

“ওকে যাও! তোমার বউ এতক্ষণে এই জায়গা ছেড়ে চলে গিয়েছে।
আরশ আবিরের কাঁধ ছেড়ে দিয়ে দৌড়ে চলে গেল সামনের দিকে। আবির শ্বাস ফেলে রাস্তার ধারে বসে গেল।
নুসরাত রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে তর্জনী আঙুল তুলে রাস্তা মাপছে কোন রাস্তা দিয়ে যাবে। এক বার ডান পাশে আঙুল নিয়ে বলছে এদিকে, একবার বাম দিকে আঙুল নিয়ে বলছে এদিকে। রাস্তা ঠিক করতে না পেরে মাটিতে বসে পড়ল।

আরশ নুসরাতের পাশে এসে দাঁড়ালো। দৌড়ে আসায় হাপিয়ে গিয়েছে। আরশ হাঁটুতে হাত ভর দিয়ে শ্বাস ফেলতে লাগলো। নুসরাত আবার উঠে দাঁড়ালো। এক পায়ে জুতো থাকায় খুঁড়িয়ে হাঁটছে।
আরশ নুসরাতের হাত চেপে ধরলো। নুসরাত ঢুলু ঢুলু হয়ে চেয়ে আবার সামনে যাওয়ার জন্য তৎপর হলো। আরশ নুসরাতের হাত চেপে ধরে নিচে বসলো। নুসরাতের পা থেকে আলগোছে পেন্সিল হিল খুলে নিয়ে রাস্তার পাশে রাখলো। নুসরাত মুচড়া-মুচড়ি করলো হাত ছাড়িয়ে সামনে যাওয়ার জন্য। আরশ ছাড়লো না। জুতো নুসরাতের হাতে দিয়ে নুসরাতকে কাঁধে তুলে নিল।
নুসরাত খুশিতে বাক বাকুম হয়ে হা হা করে হাসল। আরশের গলা চেপে ধরে দু-পা দিয়ে পেট চেপে ধরলো। আরশের ঘাড়ে মাথা রেখে হি হি করে হেসে বলল,”আমরা কি এখন আকাশে উড়বো?
আরশ সামনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বলল,

“হ্যাঁ!
” তাহলে বিমান কোথায়?
“আসছে!
” বিমান এসে আকাশে এখনো ল্যান্ড করেনি?
আরশ শ্বাস ফেলল। রাশভারী গলায় বলল,
“নাহ!
নুসরাত কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,
” বিমান না আসলে তো আমরা দু-জন পড়ে যাব!
আরশ নির্লিপ্ত গলায় বলল,
“হুম!

নুসরাত ধুম ধুম করে আরশের মাথার মধ্যে কপাল দিয়ে মারল। আরশ তো ব্যথা পেল না উল্টো নিজে ব্যথা পেল। আরশের টি-শার্টের মধ্যে নুসরাত নিজের মাথা ঢলতে লাগলো ব্যথা পাওয়ার জন্য। নাক টেনে কেঁদে উঠলো হাউ মাউ করে।
আরশকে চুপচাপ হাঁটতে দেখে রাগে আরশের ঘাড়ে দাঁত বসিয়ে কামড় মারল। আরশ নড়লো না দাঁতে দাঁত চেপে সামনে এগিয়ে গেল। নুসরাত আবার একই জায়গায় দাঁত চেপে বসলো। বিড়বিড় করে বলল,
“কিটকাট! আমার কিটকাট!
তারপর আবার ধুম ধুম করে আরশের মাথায় মারল। পা দিয়ে আরেকটু শক্ত করে পেট চেপে ধরে চোখ বুজে মাথা এলিয়ে দিল আরশের ঘাড়ে।
কিছুক্ষণ পর পর একবার কাঁদল, আরেকবার হাসল, আরেকবার আরশকে মাথা দিয়ে মারল।
আরশ শুধু মুখে বুজে সহ্য করে এগিয়ে গেল সামনের দিকে। ঠোঁট কামড়ে নিজেকে সামলালো। এই মেয়ে তাকে উস্কানি দিচ্ছে। যেদিন ধরবে সেদিন ছাড়বে না সে। সুদে আসলে সব নিবে। সব…..

পরেরদিন সকাল বেলা,
নুসরাত ঘুম থেকে উঠে ঘুমে ঢুলু ঢুলু হয়ে রুম থেকে বের হলো। চোখের সাদা রঙের অংশ লাল হয়ে আছে। খিদের জন্য পেট চু চু করছে। পেটে হাত বুলালো। গায়ে নাক স্পর্শ করতেই ঘামের গন্ধে পেট ঠেলে বমি আসলো। নুসরাত নাক মুখ উল্টে আবার রুমের ভিতর আসলো। নিজের শরীরের গন্ধে মনে হলো নিজের বমি চলে আসবে। চোখ মুখ উল্টে ওয়াশরুমে ঢুকলো।

ওয়াশরুম থেকে বের হলো একদম গোসল নিয়ে। পরনে বাথরোব। বাথরোবের উপর থেকে নাক টেনে শ্বাস নিল। হ্যাঁ এবার ঠিক আছে! কাপড় পরে প্যান্টের বেল্ট লাগাবে এমন সময় নুসরাতের মোবাইলে কল আসলো।
নুসরাত অলস চোখে তাকালো ফোনের দিকে। আরাম করে হেঁটে এগিয়ে গেল বিছানার দিকে! ফোন হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। ফোন কাটার শেষ মুহুর্তে ফোন কানে চেপে হ্যালো বলল।
ওপাশ থেকে তাড়া দিয়ে বললেন নাজমিন বেগম, “তাড়াতাড়ি আয়! নাস্তা করবি!

নুসরাত আচ্ছা বলে ফোন রাখলো। বারান্দার দিকে তাকাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। দরজার সামনে টানা পর্দার মধ্যে আরশের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকার অবয়ব দেখা যাচ্ছে। নুসরাত পর্দা সরাতেই দেখলো তার দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পকেটে অগোছালো ভঙ্গিতে কিছু খুঁজে চলেছে। হাত থরথর করে কাঁপছে। পকেট হাতরে চুইংগাম বের করে তাড়াতাড়ি প্যাকেট খুলে মুখে ঢুকালো। ঠোঁট চেপে সামনের দিকে তাকিয়ে কপালে হাত চেপে ধরলো।
নুসরাত আরশের এমন অস্বাভাবিক আচরণের মানে খুঁজে পেল না৷ পর্দার বাহিরের দিকে মাথা দিয়ে বলল,

” এমন অস্বাভাবিক আচরণ করার মানে কি?
আরশ কেঁপে উঠলো। নুসরাতের দিকে চোখ তুলে চাইলো না। অগোছালো চোখে আশে পাশে তাকিয়ে বলল,”কিছু না!
নুসরাত কপালে ভাঁজ ফেলল। আরশ কে টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিল। আরশ নুসরাতের দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে চোখ রাখলো। নুসরাত দু-হাতের মধ্যে আরশের মুখ চেপে ধরলো। হাতের চাপে পুরুষালি গাল আর ঠোঁট ফুলে উঠলো। আরশ তাকালো না সামনের দিকে,চোখ স্থির রাখলো সামনের জনমানবহীন জায়গার দিএ।

“কি হয়েছে? পর্দা এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিলেন?
আরশ ঢোক গিলে বলল,
” কিছু করছিলাম না!
“কিছু তো করেছেন! নাহলে এমন অস্বাভাবিক আচরণের মানে কি?
নুসরাত ভ্রু কুঁচকাল। তারপরের সেকেন্ডে ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে উঠলো। মাথা নাড়িয়ে বলল,” ওওওওও বুঝেছি! আপনি এখানে দাঁড়িয়ে আমাকে স্টক করছিলেন।
আরশ গম্ভীর গলায় বলল,

“তেমন কিছু করিনি!
নুসরাত চোখ ছোট ছোট করে হাসল। আরশের কাঁধে থাপ্পড় মেরে বলল,” আপনি আমাকে গাঁধা পেয়েছেন। এখানে দাঁড়িয়ে যে আমার কাপড় চেঞ্জ করা দেখছিলেন তা কি আমি জানি না, মনে করছেন? আমাকে কানা পেয়েছেন!
আরশ নুসরাতের কথার উত্তর দিল না। নিজের অস্থিরতা লুকিয়ে রুমের ভিতর আসলো। নুসরাত বকবক করতে করতে আরশের পিছন পিছন আসলো। আরশ নুসরাতের কোনো কথার উত্তর দিল না। পকেটে হাত ঢুকিয়ে এগিয়ে গেল।

“চ্যাহ চ্যাহ চ্যাহ আমি একজন পার্ভাটের সাথে সংসার করছি। যে বউয়ের কাপড় চেঞ্জ করা লুকিয়ে দেখে। লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। দেখতে চাইলে সরাসরি দেখবেন, এভাবে লুকিয়ে দেখে নিজেকে চোর প্রমাণ করার মানে আছে! ভালো মানুষ হয়ে যান এখনো সময় আছে।
আরশ কথা না বলে পা চালিয়ে এগিয়ে গেল ডায়নিং হলের দিকে। নুসরাত আবোল তাবোল বকতে বকতে যেতে লাগলো আরশের পেছন পেছন। নুসরাতের এসব লিমিট লেস কথা শুনে আরশের লজ্জায় গাল লাল হয়ে গেল।

আজ দুই টেবিল একসাথে করে ফ্যামেলির সবাই বসেছে। আরশ খাবার খাওয়ার মাঝখানে হেলাল সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো।
” পাপা আগামীকাল আমার একটা বিজনেস মিটিং আছে।
হেলাল সাহেব খেতে খেতে বললেন,
“ক্যান্সেল করে দাও!
“ক্যান্সেল করা সম্ভব না।
“ডেইট পিছনে নাও!
” আগামীকাল করা জরুরি! তাই আজই আমি রওনা দিয়ে দিব সিলেটের উদ্দেশ্যে।
“ক্যান্সেল করে দাও!
” এটা করলে বিজনেসে লস হবে।
“হলে হোক। ক্যান্সেল করে দাও!
“করা সম্ভব না।

হেলাল সাহেব আর আরশের মধ্যে অনেকক্ষণ ক্যান্সেল করা আর না করা নিয়ে তর্ক বিতর্ক হলো। জায়িন অবস্থা ব্যগতিক দেখে গলা ঝেড়ে কাঁশল। হেলাল সাহেব কথা বলা বাঁধ দিয়ে জায়িনের দিকে তাকালেন। জায়িন পানি খেয়ে হেলাল সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলল,” আমার ও সিলেট কিছু কাজ আছে। আমাকে ও আজ রাতে রওনা দিতে হবে। আপনারা আরো দু-তিন দিন থেকে ইনজয় করে ফিরে আসুন ততদিনে।
জায়িনের কথাগুলো আগুণে কেরোসিন ঢালার মতো হলো। হেলাল সাহেব চ্যাঁত করে জ্বলে উঠলেন। হাতে থাকা বাটার নাইফ ছুঁড়ে দূরে ফেললেন।
“হ্যাঁ হ্যাঁ যার যা ইচ্ছা করো! আমি তো বুড়ো হয়ে গিয়েছে এখন আমার দাম দেবে নাকি? যাও যাও নিজেদের কাজে যাও! কষ্ট করে আমাকে জিজ্ঞেস করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। চলে যেতে সেখানে। আমার কি? আমি তো মরে গেছি।
মেহেরুন নেছা বললেন,

” এই তুই এতোদিন সত্যি কডা টা কইলি! সত্যিডা হইল গিয়া তুই বুইড়া হইয়া গেছস।
জায়িন মুখের ভিতর গোস্ত ঢুকিয়ে নির্লিপ্ত গলায় বলল,” জি, সামনের দিন থেকে তাহলে আর জিজ্ঞেস করবো না।
“হ্যাঁ হ্যাঁ করো না! যে যার কাজে যাও! আমার কি? আমরা আমাদের সময় হলে এমনি ফিরে আসবো।
আরশ উঠে দাঁড়িয়ে মুখ মুছল টিস্যু দিয়ে। হাত মুছে নিয়ে বলল,”তাহলে আজ বিকেলে বেরিয়ে যাব। ভাইয়া লাগেজ গুছিয়ে নিও।
আরশ বড় বড় পা ফেলে হেঁটে গেল। যেতে যেতে বলল,” সে লাগেজ গোছা! নাহলে পরে গুছানোর সুযোগ পাবি না।
নুসরাত ব্রেড মুখে দিয়েছিল। চোখ মুখ উল্টে বলল,
“আমি যাব নাকি, যে লাগেজ গুছাবো?
” চুপচাপ আয়!
নুসরাত মুখ ফুলিয়ে বলতে নিল আমি যাব না নাছির সাহেবের দিকে চোখ পড়তেই দেখলো কপালে ভাঁজ ফেলে তাকিয়ে আছেন তার দিকে। ঠোঁটে হাসির লেশমাত্র বিদ্ধামান নেই। নিজের কথা গলায় আটকে ব্রেড খেতে লাগলো। মিনমিন করে বলল,”নাস্তা করে আসছি।

সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল বাড়ির উদ্দেশ্যে। এখান থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাবে।সেখান থেকে ফ্লাইটে যাবে সিলেট। একঘন্টা পনেরো মিনিট পার হওয়ার পর ফ্লাইট এসে ল্যান্ড হলো সিলেটে। তখন চারিদিকে মাগরিবের আজানের প্রতিধ্বনি। নিজ নিজ লাগেজ নিয়ে সকল প্রসেস শেষ করে বেরিয়ে আসলো। তারপর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল।

সকাল বেলা,
ইসরাত জায়িনের রুমে যাচ্ছিল। করিডোর পাস দিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসলো। চোখে চেনা পরিচিত কারোর মুখ ভেসে উঠল। যখন দেখল মেয়েটা ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরেছে ইসরাত ঝড়ের গতিতে এগিয়ে গেল। চোখ মুখ ছোট ছোট করে গিয়ে ছেলেটার পাশে দাঁড়ালো।
ছেলেটা ততক্ষণে থেমে গিয়েছে মেয়েটাক কে ধাক্কা দেওয়া থেকে, ইসরাতকে দৌড় দিয়ে আসতে দেখে। ইসরাত ঝড়ের গতিতে এসে মেয়েটাকে ধাক্কা মেরে দূরে সরালো। মেয়েটা ছিটকে গিয়ে পড়ল পিচঢালা কংক্রিটের মাঝে।
ইসরাত মেয়েটার চুল টেনে ধরলো। ঠাস ঠাস করে থাপ্পড় মারল। একেক থাপ্পড়ে মেয়েটা উল্টে গিয়ে পড়ল কংক্রিটের মাঝে। নাক মুখ ছেচে গিয়ে অবস্থা যাতা হলো। ইসরাতের তবুও মায়া হলো না। চুল টেনে ধরে বলল,”তুই বিদেশ থেকে এখানে চলে এসেছিস।
ইসরাতের কথার উত্তর দিল না। জায়িনের দিকে তাকিয়ে বলল,”বেইবি আমাকে বাঁচাও! এই পাগল আমাকে মেরে ফেলবে।
জায়িন পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো আরাম করে। ঠোঁট বাঁকা করে হাসল। ঠোঁট কামড়ে বলল,

“যে জিতবে সে আমাকে পাবে!
ইসরাত বেইবি বলায় আরো রেগে গেল। এমেলিকে থাপড়াতে থাপড়াতে গাল লাল করে ফেলল। চুল টেনে ধরে বলল,” এই দামড়া বেডাকে তোর কাছে বেবি মনে হচ্ছে। এতো যদি বাচ্চা লাগছে তাহলে ফিডিং করিয়ে দে।
জায়িন চোখ মুখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো। এটা কি বলে তার বউ? চ্যাহ কি অশ্লীল বউ তার?
ইসরাতকে ধাক্কা দিতে চাইলো এমেলি। ইসরাত ঢুস ঢুস করে আরো কয়েকটা দিল। সেদিনের সেই সুদ সব আজ তোলে নিল। একটা থাপ্পড় মেরেছিল আজ দশটা ফিরিয়ে দিল।
“বেবি দেখো না! এ আমাকে কীভাবে মারছো?
ইসরাত গাল চেপে ধরে বলল,

” এই একদম আমার জামাইয়ের দিকে নজর দিবি না। চোখ তুলে কাবাডি খেলবো। চোখ নামা! আর বেইবি কে? তুই ওর মা লাগিস যে বেবি লাগিয়ে রেখেছিস।
এমেলিকে চোখ নামাতে না দেখে ইসরাত চোখে থাপ্পড় মেরে বসলো। জায়িনের থেকে চোখ ফিরিয়ে ইসরাতের চুল চেপে ধরলো এমেলি। ইসরাত ও টেনে ধরলো! জায়িন আতঙ্কিত চোখে তাকিয়ে দৌড়ে গিয়ে এমেলি হাত ছাড়িয়ে নিল ইসরাতের চুল থেকে। দু হাত দিয়ে চেপে ধরলো ইসরাত এমেলিকে। মাথা দিয়ে ধুম ধুম করে এমেলির নাকে মারল।

“এই আমার বউকে মারবে না! নাহলে আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কীভাবে আসবে?
ইসরাত হাপিয়ে গিয়ে উঠে গেল। শ্বাস নিতে যাবে আবার দেখলো এমেলি গিয়ে জায়িনকে জড়িয়ে ধরেছে।
“জাইন আমি আর তুমি মিলে সুন্দর একটা সংসার সাজাবো। ওই পিশাচ কে তুমি ডিভোর্স দিয়ে দাও! আমরা ফ্রান্স সেটেল হয়ে যাব। আমার সব সম্পত্তি তোমার নামে করে দিব।
ইসরাত হা করে তাকিয়ে রইলো। জায়িন ধাক্কা দিয়ে এমেলিকে নিজের থেকে সরালো সাথে একটা থাপ্পড় মারল। থাপ্পড় খেয়ে উল্টে গিয়ে পড়ল দূরে। নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হলো এমেলির।
নুসরাত ঘুমে ছিল। এতো হইচই শুনে সবার শেষে এসে হাজির হলো বাগানে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রাখা পাথর ইসরাত হাতে তুলে নিল। নুসরাত কোনো কিছু জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন বোধ করলো না।
ফ্যাকাশে কালার একটা মেয়েকে রক্তাক্ত দেখে মেয়েটার দিকে এগিয়ে গেল। ইসরাতকে পাথর নিয়ে আসতে দেখে রক্তাক্ত মেয়েটাকে গিয়ে পিছন থেকে চেপে ধরলে।

ইসরাত পাথর টা নিয়ে আসলো এমেলির মাথা ফাটানোর জন্য। নুসরাত পিছন থেকে চেপে ধরতেই এমেলি আতঙ্ক নিয়ে তাকালো। ইসরাত পাথর এমেলির দিকে ছুঁড়ে মারার আগেই জায়িন ইসরাতের দুই হাত চেপে ধরে কাঁধে তুলে নিল। ইসরাত ছটফট করলো পাথর মারার জন্য। জায়িন ছাড়লো না। মাথা ফাটিয়ে দিলে আরো সমস্যা বাড়বে। ভিতরে যেতে যেতে বলল,
“আরশ এটাকে হ্যান্ডেল কর।
ইসরাত তবু্ও পাথর টা ছুঁড়ে মারল। একটু দূরে গিয়ে পড়ল পাথরটা।
আরশ মাথা নাড়ালো জায়িনের কথায়।এমেলি চোখ মুখ কুঁচকে বলল,”হ্যাল্প এনি ওয়ান হ্যাল্প মি! এই পাগল মেয়েটা আমাকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে। বাঁচাউ বাঁচাউ।
নুসরাত মাথায় গাট্টা মারল এমেলির। চোখ মুখ বিরক্তির রেশ এনে বলল,” বাঁচাউ কি?
বাঁচাও বল!

আরশ হতভম্ব। এটা এতো সিরিয়াস মমোন্টে দাঁড়িয়ে স্পেলিং শেখাচ্ছে। আরশ মাথায় হাত দিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল।
নুসরাত সুযোগ পেয়ে এমেলিকে ধুম ধাম করে মারল। তারপর ইসরাতের হাতে নেওয়া পাথর টা নিয়ে আসলো, মাথা ফাটানোর জন্য। অনেক দিন হয়েছে হাড্ডা হাড্ডির লড়াই হয় না। আজ নুসরাত সুযোগ পেয়েছে এমেলিকে পিটিয়ে ছাল তুলবে।
আরশ চোখ বড় বড় করে দৌড়ে এগিয়ে গেল নুসরাতের দিকে। হাত থেকে একপ্রকার ছিনিয়ে নিল পাথরটা।
“বোন ভাগো নইলে এই দুই বোন আজ তোমাকে মেরে তোমার গডের কাছে পাঠিয়ে দিবে।
এমেলি আরশের দিকে তাকিয়ে বলল,
” হাউ নাইস অফ ইউ! ইউ আর সো বিউটিফুল ব্রাদার।
“এই শালি আমার জামাইয়ের দিকে নজর দিস। ডাইনির ঘরের ডাইনি!
নুসরাত আরশের হাত থেকে পাথর টান মেরে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলল এমেলির দিকে। নিশানা চুকে গেল। এমেলি ভাগল। কোন পাগলদের বাড়ি সে এসে গেছে? গড হ্যাল্প মি! আমি আর জীবনে এসব বাঙ্গালি মানুষের দিকে নজর দিব না। আজকের মতো বাঁচিয়ে নাও!

“জায়িনের বাচ্চা ছাড় আমাকে আজ আমি ওই এমেলিকে দেখে নেব। ওর একদিন কি আমার একদিন?
জায়িন ইসরাতকে রুমে এনে সোফায় বসালো। ইসরাত ছুটাছুটির চেষ্টা করলো। জায়িন হাত দিয়ে চেপে ধরলো ইসরাতের দুই হাত।
” ইসরাত তুমি এইরকম বিহেভ করছো কেন?
ইসরাত রাগে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে বলল,
“এই তুই আমার কাছ থেকে কি রকম বিহেভিয়ার আশা করছিস? আমার সামনে আমার হাজবেন্ডকে জড়িয়ে ধরবে, চুমু খাবে, আর আমি দাঁড়িয়ে তামাশা দেখবো।
জায়িন বলল,

” চুমু খায়নি!
ইসরাত হাত ছাড়িয়ে নিয়ে জায়িনের কলার টেনে ধরে নিজের দিকে নিয়ে আসলো।
“তুই চাচ্ছিস ও তোকে চুমু খাবে। listen m’r jayin, its your mistake, you made me fall in love with you so,just shut up and handle me.

ইসরাত আর কিছু বলতে নিবে মুখ খুলল জায়িন ইসরাতের ওষ্ঠদ্বয় নিজের ওষ্টদ্বারা চেপে ধরলো। ইসরাত হঠাৎ এমন আক্রমণে তাল হারিয়ে পিছনে সরে গেল। জায়িন ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরালো না। ইসরাতের ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে সমান তালে পিছনের দিকে গেল। ইসরাত হাত দিয়ে জায়িনের পিঠ খামচে ধরলো। জায়িন খামচির জন্য ইসরাতের দু-হাত চেপে ধরলো সোফার সাথে। জায়িন চুমু থামিয়ে ইসরাতের চোখের দিকে তাকালো।
“তোমার সৌন্দর্য প্রকাশের কোন সংজ্ঞা আমার জানা নেই, তুমি পরির চেয়েও সুন্দর”।
জায়িনের কথা শেষ করে প্যান্টের বেল্ট খুলতে লাগলো। ইসরাতের হাত বেল্ট দিয়ে বাঁধতে বাঁধতে ইসরাতের দিকে তাকালো।

“ক্যান আই ডু ইট, তুমি যদি সম্মতি দাও, তাহলে আমার ঠোঁটে চুমু খাও।
ইসরাত মাথা নামিয়ে চুমু খেল। জায়িন নিজের উত্তর পেয়ে গিয়ে ইসরাতের কাছে এগিয়ে গেল। আবার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে নিল। শরীরের ভাঁজে একত্রিত হলো দুটো নারী দেহ ও পুরুষ দেহ।
ইসরাত ফিসফিস করে বলল,
” বিছানায় চলুন!
“অতোটুকু যাওয়ার সাধ্য নেই বউ!
ইসরাত লজ্জায় অন্যদিকে তাকাতে নিবে জায়িন ইসরাতের কানে বিড়বিড় করে বলল,”Focus on this.
” hold my shirt baby.
ইসরাত জায়িনের শার্ট চেপে ধরলো। জায়িনের কানে ফিসফিস করে বলল,”আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। ঠোঁট ছাড়ুন….

জায়িন ঠোঁট ছাড়ল না। আরো শক্ত করে চেপে ধরলো আঙুলের সাহায্যে।
কিছুক্ষণ পর জায়িনের চাপা গোঙ্গানির স্বর আসলো ইসরাতের কানে। জায়িন ফিসফিস করে বলল, “You are about to end today.
ইসরাত রাগান্বিত গলায় বলল,
“Fuck you.
জায়িন ফিসফিস করে বলল,

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬১ (২)

” এটা তুমি বলছো কেন? এটা আমি বলবো।
“সাট আপ!
জায়িন হেসে উঠলো। ইসরাত জায়িনের পিঠে মারতে চাইল কিন্তু হাত বাঁধা থাকার জন্য মারতে পারল না।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here