প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬৭

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬৭
জান্নাত নুসরাত

জুলাই মাস হওয়ায় ফ্রান্সে অন্য মাসের তুলনায় এ মাসে অনেক বেশি গরম পড়ে। তাপমাত্রা কখনো কখনো ২৫° সেলসিয়াস এর উপরে চলে যায়। আজ সেই রকম একটি দিন। সূর্য কিরণ চারিদিকে ছড়িয়ে পরেছে।
সারাবছর সূর্য লম্বভাবে কিরণ ছড়ায় বলে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে সারা বছর ঠান্ডা লেগে থাকে। এই সময় মধ্য তাপমাত্রা থাকায় দিনের বেলে উষ্ণ ও রাতের বেলা ঠান্ডা আবহাওয়া হয়।

জুলাই মাসের চৌদ্দ তারিখে বাস্টিল ডে পালনের জন্য পুরো শহর মেতে উঠছে। আজ তেরো জুলাই! বড় বড় এপার্টমেন্টের রুফটপে আতশবাজি ফোটানো হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকার আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো শহর।
থাই গ্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে এই সব লক্ষ্য করছিল নুসরাত। রাস্তার পাশ দিয়ে দল দল করে মানুষ হেঁটে যাচ্ছে। এক অপরের সাথে হাত নাড়িয়ে কথা বলছে। চারিদিকে এক প্রকার উৎসব উৎসব রবো। ইসরাত আর জায়িন এপার্টমেন্টে নেই! আজ ও বাহিরে ডিনার করতে গিয়েছে।
নুসরাত দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। হঠাৎ করে পেট গুলিয়ে উঠতেই পেট চেপে ধরে ওয়াশরুমে দৌড়ে গেল।হড়হড় করে বমি করে ভাসিয়ে দিল পুরো ওয়াশরুমের বেসিন।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

মুখে পানি দিয়ে সব পরিস্কার করে পিছন ঘুরে তাকাতেই ইসরাতের সাথে চোখা-চোখি হলো।
ইসরাত সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নুসরাতের দিকে। নুসরাত ইসরাতের দৃষ্টি পাত্তা দিল না। পাশ কাটিয়ে চলে আসার সময় ইসরাত শক্ত করে হাত চেপে ধরল। দু-জন দু-দিকে তাকিয়ে। এক সাথে তাকাল দু-বোন দুজনের চোখের দিকে। ইসরাত কয়েক মিনিট নুসরাতের দিকে তাকিয়ে অতি শীতল গলায় বলল,”কয় মাস চলছে?
নুসরাত নাক মুখ বিকৃতি ঘটিয়ে ফেলল। কপালে ঘাঢ় ভাঁজ ফেলে জিজ্ঞেস করল,” কিসের কয়মাস?
নুসরাত বুঝে না বুঝার ভাব করল। ইসরাতের গলা গম্ভীর। মুখ দেখে বুঝার উপায় নেই মনের ভিতর কী ভাবনা চলছে ইসরাতের? ঢোক গিলে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল অনেকক্ষণ। হাত আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরল। দু-জন দু-জনের সামনা-সামনি হলো না! যেভাবে ছিল ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকল। থাইগ্লাস খোলা থাকার জন্য রাতের বেতালা বাতাসের সাথে আতশবাজি পোড়ানোর গন্ধ নাকে এসে লাগলো।

“প্রেগন্যান্সির কয় মাস চলছে?
নুসরাত ঠোঁট কামড়ে দাঁড়িয়ে রইল। ইসরাত নুসরাতের মুখ দেখে বুঝল এই মুহুর্তে নুসরাত বানিয়ে কথা বলবে। প্রয়োজন হলে একশত মিথ্যা বলবে কিন্তু সত্যি বলবে না।
ইসরাত শীতল গলায় নুসরাত কে সতর্ক করে বলল,
” মিথ্যা বলার চেষ্টা করবি না! থাপড়ে গাল ফাটিয়ে ফেলব নুসরাত। ভালোয় ভালোয় আসল কথা বল।
নুসরাত ইসরাতের চোখ অন্য ধরনের শীতলতা অনুভব করল। এক্ষুণি মিথ্যা বলে সে ইসরাতকে কাটিয়ে দিতে চাইছিল। কিন্তু, ইসরাতের সাবধান করে দেওয়া কথা শোনে মিথ্যা বলতে ইচ্ছে হলো না।
নুসরাত অবেহেলা নিয়ে বলল,

“তিন মাস!
কথাটা বলতে দেরি হয়েছে নুসরাতের গালে থাপ্পড় পড়তে দেরি হলো না। থাপ্পড়ের আওয়াজে পাশে রুম থেকে জায়িন এ-রুমে উল্কার গতিতে চলে আসলো। জায়িনের গলার আওয়াজ উঁচু! সে মনে করেছিল নুসরাত থাপ্পড় মেরে দিয়েছে ইসরাতের গালে! এখন চোখের সামনে যা দেখল জায়িনের কাছে মনে হলো সপ্তম আশ্চর্য এটা।
ইসরাতের হাতের দাবাং মার্কা থাপ্পড় খেয়ে নুসরাত গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। জায়িন একবার ইসরাতের দিকে তাকাল একবার নুসরাতের দিকে। তার চোখ রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে গিয়েছে! ইসরাত রাগী চোখে নুসরাতের দিকে তাকিয়ে আছে।

” কি হয়েছে? থাপ্পড় মেরেছ কেন ওকে?
জায়িনের কথা শেষ হওয়ার আগেই ইসরাত বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে আসলো জায়িনের দিকে। জায়িন উত্তরের আশায় তাকিয়ে ছিল! ইসরাত জায়িনের আশায় পানি ঢেলে মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিল।
জায়িন হতবম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। রাগ করে দরজার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে লাথ মেরে চলে গেল। আবার ফিরে আসলো দু-মিনিটের মাথায়। কান লাগিয়ে দরজার মধ্যে শোনার চেষ্টা করল ভিতরে কি কথা হচ্ছে?
কিছু তো শোনতে পেল না জায়িন। পাঁচ মিনিট অতিক্রম হতেই ইসরাত দরজা খুলল। ধাক্কা দিতেই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা জায়িন ছিটকে পিছনে সরে গেল। ইসরাত জায়িনের দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বড় বড় পা ফেলে কিচেনে চলে গেল। জায়িন ইসরাতের দৃষ্টির তোড়ে পড়ে লজ্জায় চোখ নিচের দিকে নামিয়ে নিল।
ইসরাত চলে যেতেই জায়িন রুমের ভিতর উঁকি মারল। নুসরাত রুমে নেই! গেল কই? হঠাৎ মনে হলো এটা তো ফড়িং এর মতো এদিক থেকে ওদিক সারাদিন শুধু লাফা-লাফি করতে থাকে। এক জায়গায় বসে থাকতে দেখা এটা বিলাসিতা।
জায়িন দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কিচেনে গেল, ইসরাত কে মানানোর জন্য। কিছুক্ষণ পর কিচেনের ভিতর থেকে ইসরাতের মৃদু হাসির শব্দ সাথে জায়িনের গম্ভীর গলার হাসির শব্দ ভেসে আসলো! দম্পত্তির হাসি দেখে আকাশের রুপালি চাঁদটা ও হেসে উঠল।

বিশ জুলাই ইসরাত আর জায়িনের বিবাহ বার্ষিকীর এক বছর পূর্ণ হলো। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে জায়িন ইসরাত কে শুভেচ্ছা জানাতে চাইল কিন্তু ইসরাত তখন ঘুমে কাদা। তাই ভাবল রাতে শুভেচ্ছা জানাবে। এখনো কিছু এরেঞ্জমেন্ট বাকি সেগুলো করে না হয় ইসরাতকে সারপ্রাইজ দিবে এক সাথে।
জায়িন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে এপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে গেল। আজ কাল জায়িন একটা গ্রুপের সাথে মিলে প্রজেক্ট তৈরি করছে কানাডার এক ডিলারের জন্য। যদি সাকসেসফুল হয় তাহলে মোটা অংকের ডলার পাবে। তাই নিজের সর্বোচ্চ ধ্যান এখন প্রজেক্টের দিকে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ইসরাত সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখল জায়িন যে পাশে শুয়ে থাকে ওই পাশ খালি। ব্যথিত নয়নে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। জায়িনের রুটিন হয়ে গিয়েছে এই কয়েক দিন ধরে রাতে দেরি করে এপার্টমেন্টে ফিরা আর সকাল হতেই উধাও হয়ে যাওয়া।

ইসরাত উঠে দাঁড়াল। আজ নুসরাতকে নিয়ে চেকআপে যাবে। নুসরাত তাকে না করে যাওয়ার জন্য তবুও ইসরাত সাথে যায় জোর করে! কখন কি প্রয়োজন হয় এক আল্লাহ ভালো জানে?
নুসরাত কে নিয়ে চেকআপ করে হসপিটাল থেকে বের হলো! রিপোর্ট সব ঠিকঠাক।
রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ইসরাত নুসরাতকে জিজ্ঞেস করল,”আরশকে জানাবি না?
নুসরাত মাথা নাড়িয়ে না করল। ইসরাত ঠোঁটে ঠোঁট চাপল। দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। ইসরাত চাইলে আরশকে কল দিয়ে জানাতে পারে, জায়িন ও বলেছিল জানানোর জন্য। নুসরাত কঠোর নিষেধ করেছে! যদি জানানোর চেষ্টা করে তার যে দিকে দু-চোখ যাবে সে চলে যাবে। স্বামীর-স্ত্রীর নিজস্ব ব্যাপার তারা নিজেরাই সামলাক। এখানে ইসরাত কি বা করতে পারে? যার ভাগ্যে এমন ঘাড় ত্যাড়া মেয়ে মানুষ পড়বে তার এইরকম হয়রানি হওয়া স্বাভাবিক।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে জায়িন হন্তদন্ত হয়ে এপার্রমেন্টে আসলো। আজ সারাদিনে সে ইসরাত কে ২০০+ মিসকল দিয়েছে তারপর ও ইসরাত কল পিক করেনি। রিং হয়ে কেটে গেছে।
জায়িন এপার্টমেন্টে কলিং বেল দিতেই নুসরাত দরজা খুলে দিল। জায়িন ফিসফিস কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
“ইসরাত কোথায়?
” রুমে!
নুসরাত আগের তুলনায় কথা কমিয়ে দিয়েছে। জরুরি কথা ছাড়া একটা কথা বলে না। যে নুসরাত আগে এক কথার একশত মিনিং বের করতো আজ কাল সে এতো ঠান্ডা কীভাবে জায়িন বুঝে উঠতে পারে না? সারাদিন রুমে বসে থাকে, সকালের দিকে এপার্টমেন্টের পাশের পার্কে হাঁটতে বের হয় এই যা। নাহলে নুসরাতের ছায়া ও খুঁজে পাওয়া যায় না।

“ভিতরে আসবেন না ভাইয়া?
জায়িনের নুসরাতের কথায় ধ্যান ফিরল। মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে ভিতরে প্রবেশ করল। জুতো পা থেকে না খুলে জায়িন পা বাড়াল রুমের দিকে। নুসরাত আস্তে ধীরে দরজা লাগিয়ে অগ্রসর হলো নিজের রুমের দিকে। এতোটুকু হাঁটতেই হাপিয়ে উঠেছে সে।

জায়িন চুপিচুপি রুমে ঢুকে ইসরাতকে জড়িয়ে ধরল। ইসরাত চুপ করে বসে রইল জায়িনের উপর রাগ করে।
জায়িন গম্ভীর গলায় বলল,”রাগ করেছ রেই?
ইসরাত নিশ্চুপ। জায়িন ইসরাতের চুলের ভাঁজে চুমু খেল। ইসরাত জায়িনের কাছ থেকে সরতে চাইল জায়িন কাঁধ চেপে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিল। ইসরাত অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখল। জায়িনের দিকে তাকাল না।
” কি হয়েছে? রাগ করেছ রেই?
ইসরাত কথা বলল না।
“কেন রাগ করেছ?
জায়িন এমনি বলল। ইসরাত কে একটু বাজিয়ে দেখতে চাইল। রাগে ইসরাতের চোখের কোণে জল জমা হলো।
ইসরাত রাগী কন্ঠে বলল,
” আজ কয় তারিখ?
“কেন বিশ জুলাই?
” আপনার কিছু মনে নেই?
“কি মনে থাকবে রেই? আজ কি কোনো বিশেষ দিন?

ইসরাতের রাগে ইচ্ছে করল নিজের চুল ছিঁড়তে। রাগ করে উঠে রুম থেকে চলে যেতে চাইল। জায়িন পিছন থেকে এসে দৌড়ে জড়িয়ে ধরল। ফিসফিসিয়ে কানের কাছে বলল,”প্রথম বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা আমার সহধর্মিণী।
ইসরাত রাগ করে ফিরে তাকাল না। জায়িন ইসরাতের কাঁধ চেপে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিল। ইসরাত মুখ ঘুরিয়ে রাখল। জায়িন দু-হাত দিয়ে ইসরাতের গাল চেপে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিল।
” রাগ করো না! আমি কিছু এরেঞ্জ করে তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম ইসরাত।

ইসরাত কাঁদো কাঁদো চোখে জায়িনের দিকে তাকাল। রাগী গলায় বলল,”একটা মেয়ে যতোই সারপ্রাইজ দেওয়া হোক সে খুশি হয় না জায়িন। সে দেখবে আপনি বিশেষ দিনে ঠিক সময়ে তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন কি না? সে বড় বড় গিফট দেখবে না, সে দেখবে আপনি কতটুকু তার জন্য এফোর্ট করছেন। তার প্রতি কতটুকু কেয়ারিং? এতোটুকু! এর থেকে বেশি কিছু সে দেখবে না। আমি আশা করে বসেছিলাম আপনি গতকাল রাতে উইশ করবেন কিন্তু করেননি। পরে ভাবলাম সকালে করবেন তা ও করলেন না। চলে গেলেন অফিসে! এখন সময় শেষ হওয়ার পথে আপনি এখন এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এই শুভেচ্ছা আমি চাই না! আপনার শুভেচ্ছা আপনার কাছে রাখুন!
ইসরাতের চোখ দিয়ে অনবরত জল গড়িয়ে পরছে। কথা গুলো বলতে গিয়ে বার বার আটকে গিয়েছিল। জায়িন ইসরাতের নাকে নাক ঘষল। চোখের পানি জায়িন হাত দিয়ে মুছে দিতে চাইল ইসরাত হাত ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিল। জায়িন স্পর্শ করতে গেলেই ইসরাত সরে গেল। ইসরাতকে অনেক ভাবে মানানোর চেষ্টা করল জায়িন ইসরাত মানল না। জায়িন শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না পেয়ে শক্ত হাতে ইসরাতকে জড়িয়ে ধরল।

“সামনের দিন থেকে সব দিকে খেয়াল রাখব। ঠিক সময় শুভেচ্ছা করব আর জীবনে এমন ভুল করব না। স্যরি আর রাগ করে থেকো না। প্লিজ কান্না করে আজকের এই সুন্দর দিনটা মাটি কর না। যাও রেডি হয়ে আসো! বাহিরে তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।
ইসরাত নাক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। জায়িন গালে চুমু খেল।
” ইসরাত আমি তোমাকে আদেশ করছি যাও! সময় নষ্ট কর না। এমনি অনেক সময় নষ্ট হয়েছে।
ইসরাত নাক টানতে টানতে রেডি হতে গেল। জায়িন আবার ডাক দিল পিছন থেকে।
“শুনো!
“জি!
বিছানার দিকে ইশারা করল জায়িন।

” এই শাড়িটা পড়ে আসো!
ইসরাত অবাক হয়ে তাকাল। সে এতোক্ষণ ধরে এটা খেয়াল করেনি। মাত্র বিছানার উপর জায়িনের কথায় খেয়াল করল। শাড়িটা হাতে নিয়ে বিস্ময়ে ইসরাতের মুখ হা হয়ে গেল। গোল্ডেন কালার শাড়ি সাথে গোল্ডেন কালার পাথরের কাজ করা। ইসরাত ঝটপট শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে চাইল। জায়িন আবার পিছন থেকে ডেকে উঠল,”শোনো ইসরাত!
ইসরাত পিছন ফিরে তাকাল। ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করবে তার আগেই জায়িন বলল,”আজ আমি শাড়ি পরিয়ে দেই?
ইসরাত অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,

“আপনি পারবেন?
জায়িন শব্দ করে হেসে বলল,
” কেন নয়?
“আপনি কীভাবে পারবেন? কোনো দিন কাউকে পড়িয়েছেন শাড়ি?
জায়িন ইসরাতের দিকে এগিয়ে গেল। নিজ থেকে বলল,”আম্মুর শাড়ি পরার সময় আমি আর আরশ উনার কুচি ধরে হ্যাল্প করতাম। কোনো কোনো সময় জায়ান ও হ্যাল্প করতো! যাও ওই গুলো পড়ে আসো!
ইসরাত ব্লাউজ আর ছায়া নিয়ে চলে গেল ওয়াশরুমে। ওয়াশরুম থেকে বের হতেই জায়িন ধীরে ধীরে শাড়ি পরিয়ে দিতে লাগলো। ইসরাত অবাক চোখে তাকিয়ে তাকল জায়িনের শাড়ি পরানোর দিকে। ইসরাতের চোখে মুখে বিস্ময়!

” রেই পিন?
ইসরাত হা করে তাকিয়ে আছে তখনো জায়িনের দিকে। হালকা হাতে জায়িন ধাক্কা দিতেই নড়ে উঠল ইসরাত।
“কি?
” পিন দাও?
ইসরাত পিন এগিয়ে দিল। জায়িন যত্ন সহকারে পিন মেরে ইসরাতকে শাড়ি পরিয়ে দিল। আয়নার সামনে ইসরাতকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে পিছনের চুলগুলো সামনের দিকে এনে রাখল। দু-হাত দিয়ে উদর চেপে ধরে বলল,”সুন্দর লাগছে!
জায়িনের ছোট্ট একটা প্রশংসায় ইসরাতের গাল লাল হয়ে গেল। দু-হাত দিয়ে মুখ ঢেকে নিল। জায়িন মুখ গম্ভীর করে আয়নার দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে ইসরাতে কানে বলল,”আমি এটা ও চাই না তোমাকে আয়না ও দেখুক! তোমাকে শুধু আমি দেখবো আর আমার খোদা তায়ালা দেখবে।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬৬

ইসরাত লজ্জায় লাল হয়ে গেল। জায়িন ঠোঁট কামড়ে হেসে উঠল। এই যে সামান্য প্রশংসায় তার আত্মা খুশি হয়ে গেল। জীবনে সে এইটুকু শান্তি চেয়েছিল! যা সে পেয়ে গিয়েছে! আল্লাহ তায়ালার কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। এতো দিন মরিচীকার পিছনে ছুটে সে কিছু পায়নি মরিচীকা ছাড়া। হালাল সম্পর্কে কতটুকু রহমত আল্লাহ দেন তা সে জানতে পারতো না যদি হালাল সম্পর্কে না জড়াতো।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৬৭ (২)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here