প্রেমঘোর পর্ব ১১

প্রেমঘোর পর্ব ১১
নার্গিস সুলতানা রিপা

“Listen,আমাদের দুজনকে বেশ মানিয়েছে..লোকে সেটাই বলবে আজ”(সাদাদ)
“ইশ….দেখবো কেমন বলে??”(নৌশিন)
…সাদাদ নৌশনের কমড়টা আরও একটু ঝাকিয়ে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে দাঁড় করায়….”দেখো….”(সাদাদ)
“আচ্ছা…মেইন পোগ্রাম তো সন্ধ্যায় তাহলে আমাকে এতো আগে কেনো রেডি হতে হলো??এখন তো ৪.৩০ কেবল??আরও ২.৩০ ঘন্টা আমি কি এই সাজে বসে থাকবো নাকি??”(নৌশিন)
“গুড কোয়েশ্চেন…..তুমি এমনি এমনি রেডি হও নি…মেইন পোগ্রাম তো বাবা কাকার গেস্টদের জন্য সন্ধ্যায়…বাট তোমার আমার অলরেডি শুরু হয়ে গেছে..”(সাদাদ)
“মানে???এইভাবে ধরে রাখবে বলে সাজানো হয়েছে আমায়??”

“নারে বোকা…আমি তো সাজ ছাড়াই তোকে কত ধরতে পারি বল….বাট তোর যে বিচ্ছু ফ্রেন্ডগুলো আছে ওরা সবাই এখন সেন্টারে গান গাইতেছে তোর জন্য ত্রিশ মিনিট যাবত ওয়েট করছে ওরা…কিন্তু তোর তো সাজতেই কত্ত টাইম লাগলো…আর আমার কলিগরা কেউ সন্ধ্যার পর থাকছে না ওয়ার্কিং ডে আজ এবং সন্ধ্যায় অফিসে কাজের লোড পড়েছে আজ বেশি সো কেউ ছুটি পায় নি একমাত্র আমি ছাড়া….বস সহ সবাই আসবে কিন্তু ওরা সবাই ডিনার না করেই চলে যাবে আট টার আগে…তাই বুঝলি??”(সাদাদ)
“ও….আচ্ছা….বুঝলাম”
“হুম বোকা…বুঝালে বুজো না বুজালে না…”(সাদাদ)
“আর আমার খুব খুশি খুশি লাগছে তুমি ফ্রেন্ডসদের এতো আগে আসতে বলেছো বলে….তোমার ফ্রেন্ডরা কেউ আসবে না?”(নৌশিন)

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“তোমার ডিপার্টমেন্টেরর সবাই এসেছে….আসবে কিন্তু সবাই আসতে পারবে না জবে ডুকে গেছে না সবাই..আর মেয়েগুলোর তো বিয়ে হয় বর+বেবিও হয়ে গেছে তাই কেউ কেউ আসবে আবার কেউ কেউ না…..সিউর নই আমিও কে আসবে আর কে আসবে না-সবাই কে বলা হয়েছে অবশ্য”(সাদাদ)
“আর তোমার বস আর কলিগ রা ডিনার না করেই চলে যাবে….কেমন বাজে দেখায় না??”(নৌশিন)
“আমি কি ওদের না করেছি ডিনার করতে নাকি…বাট ওরা করতে পারবে না বস শুধু পনেরো মিনিট সময় নিয়ে আসবে ওনার ডিল করতে হবে আজ একটা-অনলি তোমাকে একটু দেখবে বলে আসছেন….আর বাকীরাও কম সময় নিয়ে আসবে….তাই ডিনার করা হবে না ওদের….তবে না খেয়ে তো যাচ্ছে না-আলাদা করে সন্ধ্যার সেন্কসের আয়োজন করা আছে ওদের জন্য..”(সাদাদ)

“তাহলে ঠিক আছে….তবে তুমি কিন্তু ওদের অন্য কোনো দিন ডিনার করিয়ে নিবে”(নৌশিন)
“কিহ্..??”(সাদাদ)
“হুম…সন্ধ্যায় সবাই খাবে সাদাদ শুধু ওরা তো না??”(নৌশিন)
“হুম।।।খাবে যারা আসবে তারা….বাবা কাকার গেস্টরা সন্ধ্যার পরে আসবে তো ওরা তো এইসব মিস করবে।।।।ওরা তো মেইনলি ডিনার করবে…”(সাদাদ)
“হুম সে যাই হোক….অফিসের সবাই তো ডিনার টা মিস করবে…তুমি ওদের এই সপ্তাহে না হলেও পরের সপ্তাহে ডিনার ব্রাউন্জ করবে”(নৌশিন)

“কতগুলো লোক অফিসে…ওদের ডিনার করাতে গেলে আমার কত টাকা লাগবে তুমি জানো?”(সাদাদ)
“সে যাই লাগুক….তোমার কি টাকার অভাব নাকি??”(নৌশিন)
“ইশ-যেমন ভাবে বললা….মনে হয় কোটিপতি বিয়ে করছো”(সাদাদ)
“তা নয় তো কি??”(নৌশিন)
“এইগুলো আপনার শশুড়ের টাকা-আপনার বরের এত টাকা নাই রে…একটা চাকরি শুরু করলাম কেবল ছয় মাস হলো..☺☺”(সাদাদ)
“তুমি এতো কিপটুশ কবে থেকে হলে.???এই যে বিয়ের এতো কিছু সেটা কার খরচে???নিশ্চয় তোমার না বাবার???তো তোমার কলিগদের টাকা টাও বাবার কিছে নিয়ে নিবে”(নৌশিন)

“কিসের কিপটুশ….এক বিয়ে করে দু বার খাওয়াবো নাকি???যখন আর একটা বিয়ে করবো তখন না হয় আবার কলিগদের তিন বেলা খাইয়ে দিবো….যদিও তখন জব ছেড়ে ইনভেস্টমেন্টের দিকে চলে আসবো….”(সাদাদ)
“কিহ্…..আর একটা বিয়ে করবে মানে.???😡😡তাহলে আমায় এভাবে ধরে আছো কেন???ছাড়ো আমায়(সাদাদের বুকে ঘুসি দেওয়া শুরু করলো যেন সাদাদ ছেড়ে দেয় ওকে)….ছাড়ো যাও এখনি আর একটা কর….আমি চলে যাই বাবার বাড়ি”(নৌশিন)
….সাদাদ মুচকি হেঁসে আরও শক্ত করে ধরে রাখে নৌশিনকে….
“এখনি এতো রাগ করলে হবে??যখন বিয়ে করে আনবো তখন কি হবে তাহলে??☺”(সাদাদ)
…..নৌশিন এবার জুড়ে একটা ঘুসি বসিয়ে দিলো সাদাদের বুকে….কিন্তু সাদাদের তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ হলো না বরং নৌশিনকে আরও চেপে ধরলো….

“ছাড়ো না কেন???বিয়ে করবা না???যাও আজকে ই করে আনো…..😞😞😡😡…..বউ দেখবো তোমার….আমার সামনে বউ নিয়ে আসবে তাই না???….সেটা কেন??যদি অন্য কোনো মেয়ের সাথে তোমাকে নেগিটিভ ভাবে দেখি না তবে আমি ঐ দিন ই এই বাড়ি ছেড়ে তো যাবো ই দুনিয়াও ত্যাগ করবো”(নৌশিন)
….ইশ কি বলে পাগলী মেয়েটা….সাদাদ তো মজা করছিলো সেটা কি বুঝে না…রাগ করলো ঠিক আছে তাই বলে সাদাদের সামনে এমন কথা বলবে….সাদাদ নিশ্চয় রাগ করবে…..ভালোবাসার মানুষের মুখে এমন কথা শুনতে কার ভালো লাগে!….

….কথাটা শোনে সাদাদ ভিমরি খায়…এটা আশা করে নি….
…..সাদাদ নৌশিনকে ছেড়ে দেয়….কমড় থেকে হাত সরিয়ে নৌশিনের দু গালে দু হাত দিয়ে….”কি বললে??!এমন কথা যদি দ্বিতীয় দিন শুনি খবর খারাপ আছে তোমার???কম ভালোবাসি নাকি যে পালাবা আমায় ফেলে?”(সাদাদ)(চোখগুলো নিমিষেই লাল হয়ে গেলো সাদাদের…নৌশিন চোখের দিকে তাকিয়ে সেটা বুঝতে পারলো…বাট রাগ নাকি কষ্টতে এমন হলো বুজলো না নৌশিন…তাই ভয় পেয়ে যায়..যদি সাদাদ রাগ করে সেটা ভেবে)
“সরি😒।।।আর বলবো না…আমার কি দোষ তুমি ই তো বললা বিয়ের কথা…😞”(নৌশিন)
“হুম করবো তো…তোকে ই প্রতি বছর বিয়ে করবো তোর আপত্তি আছে কোথায়??”(সাদাদ)(রেগে আছে সাদাদ…নৌশিন বুঝে গেলো এবার ওর চোখ মুখ দেখে..)
“না…”(মাথা নাড়িয়ে না করলো নৌশিন)

সাদাদ নৌশিনের মুখ থেকে হাত সরিয়ে দূরে চলে যায় একটু…খুব রাগ হচ্ছে নৌশিনের উপর…নৌশিনও বুঝে গেছে কথাটা বলা ঠিক হয় নি কারণ সাদাদ আর যাই করুক এমন কথা মোটেও সহ্য করবে না…আগেও একদিন বলেছিলো নৌশিন যখন সাদাদ ওর উপর রাগ করে দুদিন কথা বলে নি…বাট যখন নৌশিন মরে যাওয়ার কথা বলেছিলো সাদাদ পাগলামি করেছিলো সেই লেভেলের….সাদাদ সরে যাওয়ায় আজ সেই দিনটার কথা মনে পড়লো নৌশিনের….

সাত-আট মাস আগের কাহিনী সেটা….সাদাদের লাস্ট ক্লাস ছিলো ভার্সিটিতে সেদিন…তার আগের দু দিন থেকে সাদাদ নৌশিনের সাথে রাগ করে কথা বলে নি……নৌশিনের পুরো পাগল অবস্থা-সাদাদের সাথে কথা না বলে ওর দুনিয়াটাই কেমন হয়ে গিয়েছিলো…সাদাদ দু দিন আগে রাতের বেলা টানা দুঘন্টা ওয়েট পেয়ে এমন রাগ করেছিলো…….নৌশিন সাদাদকে পড়ে অনেক বার কল করেছে বাট সাদাদ ধরে নাই….উল্টে সাদাদ একটা এসএমএস দিয়েছে”Don’t cl me….এতক্ষণ যার সাথে কথা হচ্ছিলো তার কাছে কল করা হোক…আমি এই টাইমে রোজ ফোন দেই সেটা মাথায় রাখা উচিত ছিলো”….তারপর নৌশিন আরও কতবার ফোন করলো বাট সাদাদ ধরে নি…পরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে সাদাদকে পায় নি…তাই পরের দিন বিকেল বেলা-সাদাদের ডিপার্টমেন্টেরর সামনে বসে আছে-সাদাদ আসলেই কথা বলবে….

ঠিক এক ঘন্টা পরে সাদাদ ক্লাস শেষে বের হয়…নৌশিন পিছু ডাকে সাদাদ শোনেও শোনে নি…তাই নৌশিন পিছু নেয় সাদাদের…ভাসানী চত্বর পর্যন্ত দৌড়ে আসে সাদাদের পেছন পেছন..তবু সাদাদ যখন থামছিলো না…তখন নৌশিন পেছন থেকে বলে উঠছিলো….
“তুমি যদি আর এক পা ও সামনে আাগও তবে আমার মরা মুখ দেখবে…যদি কথা না বলো এখন আমি আর কোনো দিন ট্রাই করবো না কথা বলার…বাসায় যাব সরাসরি গলায় দড়ি দিবো…তোমায় ছাড়া জীবন চাই না আমার…”
…সাদাদ তো এমনি রেগে ছিলো কথাটা শুনে আরও রেগে যায়….পেছনে ফিরে নৌশিনের কাছে এসে…
“কি বললি??”(সাদাদ)

“হুম…যা বলছি ঠিক বলছি…তুমি আমার সাথে দুদিন হলো কথা বলো না।।।আমি কি করেছি??ফোন ওয়েটিং ছিলো আমার কি দোষ কেউ বার বার কল করলে ওপর পাশে বিজি দেখাবে না?সেটাই হয়েছে ঐ দিন রাফিন ভাইয়া বার বার কল করেছে আমি ধরি নি…সে সময় তুমি দিয়ে ওয়েটিং পেয়েছো…তাই এতো রাগ…এখনও যদি রাগ করে থাকো না আমি সত্যি সত্যিই মরবো…দু দিনে আমার মরার মতোই অবস্থা করে ফেলছো তুমি”(নৌশিন)
…কথা বলা শেষ হলো বাট সাদাদের চড় বসাতে দেরি হলো না….সেখানে যারা ছিল সবাই ওদের কথা গুলো শুনছিলো…সাদাদ এমন থাপ্পর দেওয়াতে সবাই হা করে তাঁকিয়ে ছিলো….কিন্তু তাতে ওদের দুজনের কিছু আসে যায় নি…

“থাপ্পর দিয়ে না দাঁত সব কয়টা ফেলে দিবো ফাজিল মেয়ে…😡😡”(সাদাদ)
“(নৌশিন গালে হাত দিয়ে কান্না শুরু করে দেয়)…এখন রাগ দেখায়😰😰😰।।।কথা বলো না কেন তাহলে??”(নৌশিন)
….সাদাদ নৌশিনের কান্না সহ্য করতে পারে না….নৌশিন ঐ দিন যেভাবে কান্না শুরু করেছিলো সাদাদ সেটা দেখে ঠিক থাকতে পারে নি…সহ্য হচ্ছিলো না ওর….পরে সাদাদ খেয়াল করলো সবাই ওদের দেখছে তাই নৌশিনকে হাত ধরে টেনে সেখান থেকে জাবি কনটেসের পেছনে নিয়ে যায়…

“চোখ মুছো”(সাদাদ)
“😭😭😭😭😭😭”(নৌশিন)
“চোখ মুছতে বলছি আমি…”(সাদাদ)
“😭😭😭😭😭”(নৌশিন)
….সাদাদ তখন আবার রেগে যায়….
“এভাবে কান্না করার কি আছে???কথা তো বলতেই আসছি…আর রাগ করে নেই…কান্না থামাও”(সাদাদ)
…নৌশিন দৌড়ে এসে সাদাদকে জড়িয়ে ধরে খুব শক্ত করে….
“আই লাভ ইউ😰”(নৌশিন)
“হুম…আই এম সরি”(সাদাদ)
“আর কোনো দিন এমন করলে না…😰😰”(নৌশিন)

“করবো না।।।সরি….আর তুমি যদি এমন কথা বলছো তো ভালো হবে না”(সাদাদ)
“রাফিন ভাইয়া আবার জ্বালানো শুরু করেছে…ঐ দিন বিকেলে তুমি আমি একসাথে বের হলাম না ভার্সিটি থেকে তো রাতে বার বার ফোন দিচ্ছিলো ওর নাম্বার থেকে তো দিয়েছেই অন্যনম্বর থেকেও… তাই ওয়েটিং পেয়েছো হয়তো…আমি কার সাথে কথা বলবো???বলো??”(নৌশিন)
“কার সাথে কথা বলবে এর জন্য রাগ হয় নি…রাগ হয়েছিল কারণ তোমাকে তো আমি কল করি রোজ তো ঐ সময় ওয়েটিং পেয়েছি তাই মাথা গরম হয়ে গিয়েছিলো”(সাদাদ)
“বিশ্বাস করো তো আমায়?”(নৌশিন)

“তোকে বিশ্বাস না করলে যে দুনিয়াটা অন্ধকার হয়ে যাবে আমার।।।আমি জানি তুই শুধু আমার বাট ঐ সময় টা তো শুধু তোর আর আমার ছিলো তাই রাগ ওঠে গেছে”(সাদাদ)
“হুম…তোমার ক্লাসমেট এমন করলে আমি কি করতাম?”(নৌশিন)
“হুম…সরি।।।কষ্ট দেওয়ার জন্য..আমারও কিন্তু অনেক কষ্ট হয়েছে আর কোন সাহসে মরে যাওয়ার কথা বলো?”(সাদাদ)

“আর বলবো না…”(নৌশিন)
“ব্যাথা বেশি লাগছে??”(সাদাদ)
“তোমার কি শক্ত হাত লাগবে না…আর আমায় এতো জোড়ে কেউ মেরেছে কিনা মনে পড়ে না আমার…”(নৌশিন)
…দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কথাগুলো বলে চলেছিল……
।।।সাদাদ নৌশিনকে বুক থেকে সরিয়ে…দু গালে হাত দিয়ে…”সরি…এমন কথা শোনে ঠিক থাকতে পারি নি”।।
“সরি বলতে হবে না…এখন তো মারলে বিয়ের পরপ আদর করে দিবা…শুধবোধ হয়ে যাবে…”(নৌশিন)
“এখন কি করবো তবে??”(সাদাদ)
“আজকে তোমার লাস্ট ক্লাস তো..এর পর তো এক্সাম-আমায় ফুচকা খাওয়াও…”(নৌশিন)
“এই আমাকে ফুচকার দোকানের সামনে নিয়ে দাঁড় করাতে খুব মজা লাগে তোমার তাই না?”সাদাদ)
“আচ্ছা খাওয়াতে হবে না”(বলে-নৌশিন হাটা শুরু করে রাগে)
….সাদাদ পেছন পেছন দৌড়ে এসে হাত টা ধরে ফেলে…”কি হলো?”(সাদাদ)
“কিছু না..আমার ক্লাস নেই বাসায় যাব।”(নৌশিন)

“ফুচকা??”(সাদাদ)
“লাগবে না..”(নৌশিন)
….”লাগবে”(সাদাদ নৌশিনেরর হাত ধরে টেনে ফুচকার স্টলের সামনে নিয়ে যায়)…..নৌশিন এতক্ষণ মুখ ঘুমড়া করে রাখলেও এখন একটা হাঁসি দিয়ে দেয়……
“বাপ রে…মুখে হাঁসি আসছে☺☺”(সাদাদ)
“আমার চেয়ে দেখি ফুচকার প্রতি প্রেম বেশি”(সাদাদ)
“একটু বেশি…অল্প”(মজা করে)
“কিহ্???”(সাদাদ)
“না না…(সাদাদের কানের কাছে মুখটা নিয়ে)…আপনার প্রেম তো আমার অস্তিত্ব-আর ফুচকা তো আমার পেটের অস্তিত্ব কারণ আমার পেটে যে পরিমাণ ফুচকা আছে সে পরিমাণ ভাত/পানিও নেই”(নৌশিন)
“😃😃😃😃😃”(সাদাদ)

“মামা…দু প্লেট দাও…”(নৌশিন)
“এই মেয়ে..আমি এই কুখাদ্য খাই না-তুই খা..”(সাদাদ)
“তোমাকে কে খেতে বলছে??”(নৌশিন)
“তাহলে..দু প্লেট আর একটা কার??”(সাদাদ)
“কেন??আমি খাবো…মামা ঝাল বেশি করে দাও…”(নৌশিন)
“হায় রে….”(সাদাদ)
“চুপ….আমি খাই আর তুমি দেখো”
“মামা ঝাল কম দিও”(সাদাদ)
“এই মামা না ঝাল বেশি দাও”(নৌশিন)
“ঐ গ্যাস্ট্রিক কিন্তু তোমার এতো ঝাল খাওয়া ঠিক না”(সাদাদ)
“প্লিজ একটু ঝাল খেলে কিছু হবে না..প্লিজ প্লিজ”(নৌশিন)
“যা খুশি কর…”(সাদাদ)
..”থ্যাঙ্ক ইউ…☺☺”(নৌশিন)
“আজকেই লাস্ট”(সাদাদ)
“মামা তাড়াতাড়ি দাও”(নৌশিন)

….নৌশিন দু প্লেট ফুচকা খুব দ্রুত খেয়ে ফেলেছিল……যে ভাবে খাচ্ছিলো সাদাদ হা করে চেয়েছিল….খাওয়া শেষে….
“আহ্….প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো…”(নৌশিন)
“পারোও বটে☺☺☺…আর কিছু না খেতে পারো ফুচকা টা খাওয়া শিখছো একদম 😃😃😃”(সাদাদ)….সাদাদ বিল পে করে….”গাড়ী কই তোমার??দেখছি না তো”(আশে পাশে তাকিয়ে)
“সকালেই পাঠিয়ে দিয়েছি…কারণ মনে মনে এটা ভেবেই এসছি তোমার সাথে যাবো…আর যদি তুমি রেগে থাকো তবে বাস😞😞…বাট আশা টা পূরণ হয়ে গেলো☺☺”(নৌশিন)
“বাহ্…সরাসরি বাসায় যাবা নাকি অন্য কোথাও বসবে??লান্স করো নি তো চলো রেস্টুরেন্টে ডুকা যাক…”(সাদাদ)
“না না।।।আমি আর খাবো না…তুমি করো নি লান্স??”(নৌশিন)

“হুম..লাস্ট ক্লাস না লাইভের তো ডিপার্টমেন্টেই করতে হয়েছে যদিও ইচ্ছা ছিলো না-তোমার জন্য মোড টা অফ ছিলো তারপরও ফ্রেন্ডসদের কথা ভেবে করেছি আর তো করা হবে না..”(সাদাদ)
“তাহলে।।ঠিক আছে☺☺..বাসায় দিয়ে আসো আমায়”(নৌশিন)
…”ওকে চলো”(সাদাদ)….
……গাড়িতে বসেই নৌশিন কাঁচ উঠিয়ে দিলো….
“কি হলো তুমি তো গাড়িতে জানালা খোলা রাখো..আজ বন্ধ করলে?? “(সাদাদ)
“ড্রাইভ করো..☺”(নৌশিন)
…সাদাদ ড্রাইভ করা শুরু করে…

“একটা প্রশ্ন করেছিলাম উত্তর পায় নি এখনও”(সামনের দিকে তাকিয়ে)
…..নৌশিন তখনও কিছু বলে নি..শুধু মুচকি হেসেছিলো…
…সাদাদও আর কথা বলে নি…

কিছুক্ষণ পর নৌশিন গাড়ির আয়নাটা নিজের দিকে ঘুরায়…সাদাদ দেখেও কোনো প্রশ্ন করে নি এবার-কেন আয়না ঘুরালো?? কারণ আগের প্রশ্নটার উত্তর পায় নি সে,তাই আর কোনো প্রশ্ন করবে না(এটাই সাদাদের স্বভাব)….নৌশিন আয়নাটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে হিজাবের পিন গুলো এক এক করে খুলতে থাকে(সাদাদ খেলায় করে নি)….হিজাবটা খুলে চুলের ব্যানটাও খুলে দেয়….চুল গুলো মাথা নাড়িয়ে মেলে দেয়….কমড় ছাড়িয়ে যায় নৌশিনের চুল…আর যেমন ঘন তেমন শাইনি…চুল গুলো ওর সৌর্ন্দয দশগুণ বাড়ায়…চুলগুলো পেছনে ভাজ হয়ে থাকবে বেসে আছে বলে…তাই চুলগুলো সামনে আনে একদম হাটু পর্যন্ত হয়ে যায়…সাদাদ এবার খেয়াল করে আর নিজের করা প্রশ্নটার উত্তর পেয়ে যায়…..সাদাদ নৌশিনের কান্ডে মুচকি হাঁসে…
“এবার বুঝলে কেন জানালা লাগালাম…আমার চুল যার দেখার তাঁকে দেখানোর জন্য…বাইরের মানুষকে দেখাবো না তাই..উত্তর পেয়েছো??”(নৌশিন)

“হুম….☺☺☺”(নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে)
…সাদাদ ড্রাইভ করছে…নৌশিনের বাসা উত্তরাতে…সেখান থেকে রোজ আসে…হলে উঠে নি ওর নাকি ভয় লাগে তাই গাড়ি নিয়ে রোজ আসা যাওয়া করে….প্রায় দু ঘন্টার পথ(সাভার টু উত্তরা)-ঢাকার দু প্রান্ত…..
….নৌশিন চুলগুলো সাদাদ যে সাইডে সেদিকেই রেখেছিলো…চুলগুলো পেছনের খোলা বাতাসে সাদাদের উরুতে যাচ্ছে বারবার..আর নৌশিন বারবার সরাচ্ছে….”থাক বার বার সরিয়ো না…সবার গার্ল ফেন্ডের চুল ওদের মুখে পড়ে আর আমার টার চুল আমার উরুতে☺☺☺”(সাদাদ)

“কেন??তুমি কি চাও মুখে পড়ুক??আমার চুলগুলো ভালো লাগে না??”(নৌশিন)
“হপপপ…তোমার চুলের জন্য তোমার প্রেমে বার বার পড়ি আমি…আর এই যে উরুতে তোমার চুল এটার যে কি ফিলিংস তুমি ছেলে হতে বুঝতে”(সাদাদ)
…সে দিনের কথা ভাবতে ভাবতে নৌশিন কোথায় হারিয়ে যায়….ঘোর কাটে সাদাদের কথায়…
“কি হলো??বের হও…”(সাদাদ)

প্রেমঘোর পর্ব ৯+১০

নৌশিন চমকে ওঠে…কোথায় হারিয়ে গেছিলো ও……
…সাদাদের দিকে তাঁকাতেই দেখে সাদাদ অলরেডি রেডি হয়ে গেছে….

প্রেমঘোর পর্ব ১২