প্রেমঘোর পর্ব ১৮

প্রেমঘোর পর্ব ১৮
নার্গিস সুলতানা রিপা

“মা নৌশিনের মুখ টা দেখো শুকিয়ে গেছে একদম….ওর খারাপ লাগছে খুব মে বি,বাট বলছে না…আমি ওদেরকে ডিনার করে নিতে বলি??গেস্টরা তো সব চলে যাচ্ছে…বাবা,তুমি,কাকা তো আছো বাকীদের বিদায় জানাও…”(সাদাদের ভাবী)
“হুম…শুকিবে না মুখ….সেই কখন থেকে বসে আছে এখন প্রায় এগারো টা বাজে আমারি তো খারাপ লাগছে……তুমি যাও,নীলয়,নীলা আর জামাইকে সাথে নিয়ে ডিনার করে নাও সাদাদ আর নৌশিনেরর সাথে…”(সাদাদের মা)

“ওকে…মা,অরূপ কিন্তু ছোট কাকাইয়ের সাথে দেখো ওকে…আমি যাচ্ছি”
“হুম…যাও…..আর ওদের ডিনার শেষে কি সরাসরি নৌশিনের বাড়িতে পাঠাবে না কি বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে তারপর??আমি তো চেয়েছিলাম যপন কাল সকালে পাঠাতে…নৌশিনের বাবা এত করে বললো তাই আজি রাজি হলাম…মেয়েকে বিয়ে দিয়ে নৌশিনের বাবা একদম দিশেহারা হওয়ার মতো-একমাত্র মেয়ে বলে কথা…”
“ঠিক বলছো ভদ্রলোক মেয়েকে এখানে এসে না দেখতে পেয়ে মুখ টা কালো করে ফেলেছিলো-পরে মেয়েকে আসতে দেখে যা খুশি হলো!….আর এখান থেকেই যাবে….এখন ডিনার করে বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে-নৌশিনের বাসায় পৌঁছাতে একটার মতো বাজবে….”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আচ্ছা যা ভালো মনে করে তুমি…”
…….সাদাদের মায়ের খুব ভরসা নিজের বড় বউয়ের উপর…তাই তোতো সব দায়িত্ব বড় বউয়েরর নির্বিঘ্নে দিতে পারেন…বড় বউও কম যায় না……..সব কিছু ঠল সামলে নেয়…..
“সাদাদ…নৌশিনকে নিয়ে ডিনার করবি চল…এখানে আর বসার দরকার নেই…”(ভাবী)
“হুম….আমার পেটে চুচু দৌঁড়াচ্ছে….এগারোটা বাজে প্রায়….নৌশিন চলো”(সাদাদ)
“এখন আবার ডিনারও করতে হবে???বাট আমার তো ক্ষুদা লাগে নি…”(নৌশিন)
“তিন দিন না খেয়ে রইলেও তোমার ক্ষুদা লাগবে না..সেজন্য তো আর না খেয়ে থাকবে না…সো চল এখন”(সাদাদ)
…নৌশিনকে এক রকম জোড় করেই সাদাদ আর ওর ভাবী ডিনার করতে নিয়ে যায়…..সাদাদ,নৌশিন,নীলা,নীলার বর,সাদাদের বড় ভাই আর ভাবী একসাথে বসেছেন ডিনার করার জন্য…ওয়েটার খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে……
“কি ব্যাপার নৌশিন…তোমাকে তো খুব ক্লান্ত লাগছে”(নীলার হাজবেন্ড)
“ভাইয়া তুমিও বলছো এই কথা…তবে আমি একটা সত্যি কথা বলি??”(নৌশিন)
“সিউর…”(নীলার হাজবেন্ড)

“আমার এতক্ষণ বসে থাকতে থাকতে কমড় তো ব্যাথা হয়েছে তার সাথে মেরুদন্ডও ব্যাথা করছে..”
“হা হা হা…..”(সাদাদের বড় ভাই)
“দাদাভাই তুমি হাঁসছো???সাদাদ তো দাঁড়িয়ে তো এদিক ওদিক যাচ্ছিলো-গল্প করছিলো…আর আমি সেই কখন থেকে বসে…কান্না এসে গিয়েছিলো প্রায়….”(নৌশিন)
“সেটাই কি স্বাভাবিক না।।।এতক্ষণ ধরে রিশেপশন হয় নাকি….বাবা আর কাকা যে কি না….এতো লোক দাওয়াত করে মানুষ…অফিসের পিয়নের মেয়ে আর মেয়ে জামাইও আসছে….আর ব্যবসার সব লোক তো আছেই…”(নীলা)
“আরে…আমারি তো বিরক্ত লাগছে।।।আর নৌশিন যে ভারী ভারী গয়না আর শাড়ি পড়ে ঠাঁই বসে ছিলো কান্না আসাটাই নরমাল”(ভাবী)
“হুম…আসলেই নৌশিনের আজ প্যারা টা বেশি হয়ে গেলো”(দাদাভাই)
“নো টেনশন…সব যে ভালোই ভালোই শেষ হলো তাতেই আলহামদুলিল্লাহ… এরপর তো আর প্যারায় পরতে হবে না…”(ভাবী)

“হুম…ডিনার টা করেই ওদের পাঠিয়ে দিচ্ছি ঔ বাড়িতে…সেখানে গিয়ে ফ্রেস হয়ে লম্বা একটা ঘুম দিলে সব ঠিক হয়ে যাবা…বুঝলে নৌশিন??”(নীলার বর)
“হ্যাঁ তাই করা হবে..ডিনারের পরেই রওনা দিবি…গাড়ী রেডি আছে তোদের টা…কাকী বাসায় গেলো আবার ড্রাইভার দিয়ে গেছে গাড়ি…আমি ড্রাইভারকে ডিনার করিয়ে বিদায় দিয়েছি…যেহেতু সাদাদ ই ড্রাইভ করে”(ভাবী)
“এখান থেকে যাবো নাকি??”(সাদাদ)
“হুম….আর বাসায় গিয়ে কি করবি…লেট হবে বাসায় গেলে…তার চেয়ে সরাসরি ঔ বাড়িতে চলে যাবি”(ভাবী)
“বাট আমি তো দরকারী কিছুই আনি নি……ঐ বাড়ীতে ব্যবহার করবো কি??”(সাদাদ)
“তোর সে চিন্তা করতে হবে না….আমি ব্যাগ রেডি করে রেখেছি-তোর যা যা লাগে সব দেওয়া আছে…তোর গাড়িতেই ব্যাগ রাখা…”(ভাবী)

“ভাবী তুমি আসলেই পারো…এতো কিছুর মাঝেও সাদাদের ব্যাগ গুছিয়ে আনতে ভুলো নি…”(নীলা)
“আমি তো জানতাম…বাবা কোনো অনষ্ঠান কি কম লোকে করছে নাকি???জানা ছিলো আমার যে এত লোক আসবে তাই সময় টাও বেশি লাগবে…তাই আগে থেকেই সব রেডি করে রেখেছি”(ভাবী)
…..সবার সামনে খাবার দেওয়া হয়ে গেছে এতক্ষনে…

“এ এরপর আমার বাসায় যাবো☺☺….তাহলে বাসায় গিয়ে খেয়ে নিবো…তাহলেই তো হয়…তাই না??”(নৌশিন)
“কিহ্????পাগল তুই…এখান থেকে না খেয়ে যাবি নাকি???এখন খা পরে বাসায় গিয়ে আবার খেয়ে নিস…”(ভাবী)
“এখানে খেয় আবার বাসায়….কিভাবে সম্ভব!!আসলেই আমার না এই হাই ফুড খেতে একদম ভালো লাগে না…তাই বললাম…যদি বাসায় গিয়ে একটু সাদা ভাত খেয়ে নেই তবে খুব ভালো লাগবে আমার…..”(নৌশিন)
“কি বলিসস তুই??নিজের রিশেপশেনের খাবার না খেয়ে বাসায় গিয়ে সাদা ভাত খাবি???এটা যদি মা শোনে রাগ করবে….তাছাড়া আমরা সবাই তোর সাথে খেতে বসলাম অত্যন্ত আমাদের জন্য খা…..”(ভাবী)
“চুপচাপ খাবার টা খাও….”(সাদাদ)

…..সবার কথা শোনে নৌশিন এক প্রকার অনিচ্ছা সত্বেও এক চামচ জর্দা মুখে তুলে…..আর সবাই খাওয়া শুরু করেছে….এক চামচ মুখে দিয়েছে নৌশিন বাট পাশে সাদাদ বসেছে বিফ নিয়ে সেটার ঘার্ণ যেন নৌশিনের ভেতরে ডুকে গেছে…..তাই তো এক চামচ জর্দা মুখে নিয়েই বিষম খায়……..জোর করে খেলে যা হয় আর কি……………..
নৌশিন কাঁসতে শুরু করে…

“এই কি হলো???সাদাদ পানি দে ওকে…”(নীলা)
…সাদাদ হাতে গ্লাস দিলে পানি দিয়ে কোনো রকম জর্দা গিলে ফেলে…..
“আমি পারবো না আর….সাদাদ বিফ খাচ্ছে.. কেমন একটা গন্ধ আসছে…সেই গন্ধ আমার খাবারের সাথে মিশে গেছে…সে জন্য আমি বিষম খেলাম-এখন আর ডুকবে না খাবার আমার ভেতরে”(নৌশিন)
“আল্লাহ্…সাদাদের প্লেটের গরুর গন্ধ ওর খাবারে গেছে কি কথা!!এর চেয়ে ভালো করে তো অরূপ খেতে পারে…”(নীলা)

“সাদাদ এতো কথার কি দরকার আছে???”(নীলার বর)(চোখ দিয়ে কিছু মিন করেন-সাদাদ বুঝতে পারে সেটা)
“আরে ঠিক বলেছো দোলাভাই কোনো কথার দরকার নাই…..”!!!কথাটা বলেই বাম হাতে নৌশিনের মুখ চেপে ধরে নিজের চামচ টা সাইডে রাখে…আর ইচ্ছা করেই ওর প্লেট থেকে পোলাও আর গরুর তেহরী নিয়ে নৌশিনকে খাইয়ে দেয়….নৌশিন ফেলে দেওয়ার চেষ্ঠা করেও পারে না সাদাদ যে ভাবে গাল চেপে ধরছে খাবার গেলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই…তাই বাধ্য হয়েই খাবার টা গিলে নেয় নৌশিন…এখানেই শেষ নয়-সাদাদ মুখ চেপে ধরে রেখে একি ভাবে সাত আট বার নৌশিনের মুখে খাবার দেয়…গিলতে বাধ্য নৌশিন..নৌশিনের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে-গায়ে কাটা দিয়েছে….যেই সাদাদ আবার খাবার দিতে যাবে…হাত দিয়ে পানি ইশারা করে….”আরে সাদাদ থাম…আটকে যাবে খাবার পানি দে ওকে….”(ভাবী)

সাদাদ মুখটা ছেড়ে দিয়ে পানি এগিয়ে দেয়…নৌশিন গ্লাস হাতে নিয়ে এক ডুকে পুরো পানি খেয়ে নেয়…আবর আরেক গ্লাস নিয়ে গবগব করে পানি খায়…বেচারীর বমি আসছে তাই এভাবে পানি খাচ্ছে-একবার ওর বাবা কোরবানী ঈদে এমন জোড় করে গুরুর গোসত খাইয়ে দিয়েছিলো,তারপর বমি করতে করতে বিফ তো বের হয়েই গেছে সাথে পেটের বাকী খাবারও…বাট এখানে বমি করে দিলে সবার ডিনার টা নষ্ট হয়ে যাবে তাই পানি খেয়ে কনট্রোল করার চেষ্ঠা করছে….আড়াই গ্লাস পানি খেয়ে থামে নৌশিন….পাশে বসে সবাই সাদাদের খাওয়ানোর স্টাইল আর নৌশিনের অবস্থা দেখে হাঁসতে হাঁসতে শেষ…..
নৌশিন সাদাদের দিকে তাঁকায়-সাদাদ কিছু হয় নি এমন একটা ভাব নিয়ে হাতে চামচ তুলে নিয়ে আবার খেতে শুরু করে…

“সাদাদ…তুমি এতো খারাপ… আর কোনো দিন তোমার পাশে খেতে বসবো না আমি…আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে একদম….গায়ে কাটা দিচ্ছে….তুমি জানো না বিফ খাই না আমি?দিলেই যখন পাশে তো মাটান আর চিকেনও ছিলো…বিফ টাই দিলে??তোমার সাথে আমি আর কোনো খেতে বসবো না আমি…..জীবনেও না…আস্ত খারাপ তুমি…”(নৌশিন)
…সবাই হাঁসতে হাঁসতে শেষ পুরো..পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়েটারও না হেঁসে পারছে না….
“তোমার বসার দরকার নেই,আমি বসে যাবো..”(সাদাদ)

“আল্লাহ্…এভাবে মানুষকে গালে চেপে ধরে কেউ খাওয়ায়…গাল ব্যথ্যা করতেছে…এভাবে মুখে পুরে গরুর বাচ্চা-বাছুরকে মেডিসিন খাওয়ানো হয়…কোনো মানুষ আরেক টা মানুষকে এভাবে খাওয়ায় না”(নৌশিন)
“তার মানে???তুমি কি??? সেটা বললে আবার খারাপ দেখায়…শুশুরকে বলা হয়ে যাবে তাই বললাম না….এখন চুপ চাপ বসে আমার খাওয়া দেখো..কথা বলো না…আমার খেতে প্রবলেম হবে কথা বললে”(সাদাদ)
“খাও খাও…রাক্ষস একটা…” কথাটা বলেই নৌশিন পাশে থাকা এক বাটি মাটান সাদাদের প্লেটে ঢেলে দেয়..”নাও এটাও খাও…বিফ ওইথ মাটান..খুব টেস্টি”(অট্ট হাঁসিতে মেতে উঠে নৌশিন…এই মেয়ে টার রাগ নাই একদম-অন্য কাউকে এভাবে জোড় করে খাওয়ালে রাগে ফুলে যেতো বাট ও হাঁসতে হাঁসতে সাদাদের প্লেটে মাটান টা দিয়ে দেয়।।।সাদাদ কম যায় না…..সব একটা একটা করে খেতে থাকে….)

“আহ্।।।দারুণ খেতে….মাটান টা তুলে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ…”(সাদাদ)
“হুম…রাক্ষস খাও তুমি..☺☺”(নৌশিন)
…নৌশিনেরর মুখের সামনে এক চামচ পোলাও তুলে নিয়ে যায় আবার সাদাদ…”আর একটু খেয়ে দেখো এবার মাটান দেওয়া…”
“উম……সাদাদ”(মুখ টা সরিয়ে নেয় নৌশিন)
“এমন করলে উঠে যাব কিন্তু আমি…”(নৌশিন)
“সাদাদ থাম এবার….তাড়াতাড়ি শেষ কর ….তুই বস এখানেই কোথায় যেতে হবে না তোর”(ভাবী)
“ওকে।।।আমিই খাই…”(সাদাদ)
“আমি উঠলাম…আমার হয়ে গেছে”(সাদাদের বড় ভাই)
“হুম…এই ঐ দিকে অরূপকে একটু খেয়াল করো.. ছোট কাকাইয়ের কাছে আছে মনে হয়…”(ভাবী)
“ঠিক আছে…দেখে যাবো….তারপর আমাকে ভেতরে পাবে না-আমি পার্কিং এর দিকে যাচ্ছি….পরে আসছি আবার ভেতরে”

“কেন???পার্কিং এ কেন??গাড়ি তে সব গুলোই রাখা… ড্রাইভারও তো আছে আমি তো শুধু সাদাদের ড্রাইভারকে ছেড়ে দিলাম….”(ভাবী)
“না…সবগুলো নাই।।।একটা প্রাপ্তি নিয়ে গেলো বাসায়…..দেখি ড্রাইভার আনলো কিনা সেটা…..আনলে তুমি আর অরূপ চলে যাও বাসায়…তাই দেখে আসি”
“ও…মা সে কি.??প্রাপ্তি বাসায় চলে গেলো,কেন??দেখাও করলো না আমার সাথে যাওয়ার সময়??”(নৌশিন)
“আমি বাইরের দিকে গেলাম…তো দেখি গাড়িতে একা একা বসে আছে…মুখটা শুকনো লাগছে…জানতে চাইলে বলে’দাদা ভাই আমার মাথা ব্যথা করছে তাই বাইরে এসে বসেছি ভেতরে তো অনেক লোক সাউন্ড অনেক’…তাই পরে ড্রাইভারকে বললাম ওকে ছেড়ে দিয়ে আসতে”
“ওহ্…হঠাৎ মাথা ব্যথা কেন হলো আবার…..”(নৌশিন)

“হবে না কেন…কাল ও গ্লাস পড়ে নি আজও পড়ে আসে নি…কাকী কত করে বললো চশমা পড় বাট ও শোনলে তো..তাই নিশ্চয় মাথা ব্যথা হয়েছে…..কবে যে বড় হবে গাধী টা……”(নীলা)
……সবাই খাওয়া শেষ করে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়..গেস্টরা সব চলে গেছে….নৌশিন আর সাদাদকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে তারপর সবাই অন্য দুই গাড়িতে উঠে যায়….”সাদাদ,সাবধানে চালাস গাড়ী….”(সাদাদের মা)
“বাই বাই টেডি বেয়ার….”(অরূপ…নৌশিনকে)
“বাই সোনা☺☺☺”(নৌশিন)
……”আচ্ছা…আমি ছাড়লাম গাড়ি তাহলে নাকি???”(সাদাদ)…..
“হুম…রাওনা দে তুই…”(সাদাদের বাবা)
….”মা আসছি…ভাবী..আপু…আসছি…”(নৌশিন)….

সাদাদ শশুড় বাড়ির উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়ে…ঘড়ির কাটায় তখন রাত সাড়ে এগারো টা,সাদাদের বাবা ফোন করে নৌশিনের বাবা কে ওদের রওনা দেওয়ার খবর জানায়…আর নিজেরাও বাসার উদ্দশ্যে বের হয়…..
দশ মিনিটের মধ্যেই সাদাদের বাসার সবাই বাড়িতে ডুকে যায়…সেন্টার টা বাসা থেকে কাছেই ছিলো একদম..সবাই খুব ট্রায়াড তাই যে যার রোমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে…আর প্রাপ্তি অনেক আগে এসেছে অথচ ফ্রেস হয়ি নি আর জামা টাও চেন্স করে নি…ওমনি শুয়ে ঘুমাচ্ছে……ওর মা রোমে গিয়ে ঘুমাচ্ছে দেখে আর ডাকে নি লাইট টা বন্ধ করে দিয়ে নিজের রোমে শুয়ে পড়েন তিনি…আর পাশের রোমে মহারানী রিদি নৌশিনের বিয়ের একটা ছবিতে কলম দিয়ে ইচ্ছামতো দাগাচ্ছে-এমন ভাবে শ্বাস নিচ্ছে রেগে কেউ দেখলে ভাববে বিষাক্ত সাপ ফনা তুলছে……কিন্তু সাদাদ আর নৌশিন এখনো রাস্তায়…শ্যামলী টু উত্তরা পৌঁছাতে প্রায় এক ঘন্টা তো লাগবেই এমন সময়……আরও বিশ মিনিটের মতো লাগবে প্রায় ওদের পৌঁছাতে….সাদাদের ভাবী ফোন করে অবশ্য খবর নিয়েছে ওদের………….

“তুমি আজকে কি করলে সাদাদ এটা???”(নৌশিন)
“কোথায়??কি করলাম…..??”(সাদাদ)
“কি খারাপ তুমি…আমার তো এখনো পেটে উল্টা পাল্টা করতেছে এই বাজে খাবার গুলো…আমি লাইফে সেকেন্ড বার বিফ মুখে দিলাম বাট খেলাম প্রথম বার…কারণ প্রথম যেদিন বাবা জোড় করে মুখে পুরে দিয়েছিলো তোমার মতো সে দিন খেতে পারি নি বমি হয়ে গেছে সব..বাট আজ সবার সামনে কোনো মতো পানি দিয়ে সামলে নিলাম…”(নৌশিন)
“আরও দিতাম মুখে…বাট আটকে যাওয়ার ভয়ে দিই নি…”(সাদাদ)
“রাক্ষস কোথাকার…”
“রাক্ষসী.. ☺☺”
“এটা কি বললে…আমি মোটেই তোমার মতে এত খাই না…তাই আমি রাক্ষসী নই”
“আরে…খাও আর না খাও আমি রাক্ষস হলে আমার বউ তো রাক্ষসী ই হবে…তাই আমি রাক্ষস হলে সিমপ্লি তুমিও রাক্ষসী……

“তোমার সাথে আমি পাড়বো না কোনো দিনও..তাই কথা না বাড়ানোই বেটার হবে…”(নৌশিন)
…”যাই বলো তোমার মুখটা দেখারর মতে হয়ে গিয়েছিলো লাস্টের দিকে….”(সাদাদ)
“তুমি তো বলবেই…আমার খুব খারাপ লাগতেছিলো লাস্টের দিকে)
“আর একটু ওয়েট করো এসে গেছি প্রায়-রেস্ট নিলেই সব ঠওক হয়ে যাবে…তবে আমি রেস্ট নিতে দিই কি না সন্দেহ আছে☺☺”(সাদাদ)
“সাদাদ…..থাম তুমি…চুপচাপ সামনে তাঁকিয়ে ড্রাইভ করো…”(নৌশিন)

প্রেমঘোর পর্ব ১৭

……..সাদাদ আর নৌশিন পৌঁছে যায় নৌশিনের এপারমেন্টের সামনে…..নৌশিনের বাবা আগে থেকেই নিচে দাঁড়িয়ে ছিলো….ওদের দেখা মাত্রই নিয়ে চলে আসে নিজেদের ফ্যাল্টে….নৌশিন রা আবার থাকে বারো তুলার উপরে….তাই লিফ্টেই শেষ এন্ত ভরসা……………………….
নৌশিনের বাসার তো সবাই তো মেয়ে আর মেয়ে জামাইকে দেখে আনন্দে আত্মহারা…..বিশেষ করে নৌশিনের বাবার খুশি যেন আর ধরে না মেয়েকে বাসায় এনে….

প্রেমঘোর পর্ব ১৯