প্রেমঘোর পর্ব ২০
নার্গিস সুলতানা রিপা
“নৌশিন আপা,………নৌশিন আপা…”(দরজার বাইরে)
“আপা…..”(দরজার বাইরে)
…..সাদাদ আর নৌশিন এখনও একে অপরে জড়িয়ে ধরে আছে…….নীরব ভালোবাসায় আচ্ছন্ন দুজনেই……………..
“নৌশিন আপা…দোলাবাইয়ের ব্যাগটা আনছি….”(দরজায় নক করে)
….নৌশিনের ইন্দ্রিয় শক্তি সবসময় যেন সাদাদের আগে কাজ করে…এই মুহুর্তেও তার ব্যতিক্রম হয় নি……….
“সাদাদ ছাড়ো….কেউ নক করছে মনে হয়”(নৌশিন)
…….সাদাদ নিশ্চুপ হয়ে তখনও নৌশিনকে শক্ত করে ধরে আছে…….নৌশিন আবার ডাকে সাদাদকে…….”সাদাদ…….”(নৌশিন)
“হুম….”(অস্ফটস্বরে)(সাদাদ)
“ছাড়ো…দরজায় কেউ নক করছে”(নৌশিন)
……সাদাদ আরও শক্ত করে আকড়ে ধরে নৌশিন….
“কি হলো…….?”(নৌশিন)
…..সাদাদ এবারও নিশ্চুপ…..
“ছাড়ো একটু…..দরজায় কেউ নক করছে…..আছি তো আমি নাহয় পরে আবার……..”(নৌশিন)
“ছাড়ো প্লিজ……”(নৌশিন)
…….দরজায় আবার নকের আওয়াজ হয়…সাদাদও শোনতে পায় এবার….তাই অনিচ্ছা সত্বেও নৌশিনকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হয়………সাদাদ ছাড়া মাত্রই নৌশিন তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলে………….
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ও…সালাম…..কিছু বলবি???”(নৌশিন)
“আপা…দোলাভাইয়ের ব্যাগ টা বসার ঘরে আছিলো….ভাবী পাডাইলো”(সালাম)
“ওহ্…..আচ্ছা দে আমায়….”
……সালাম ব্যাগ নৌশিনের হাতে দেয়……
“ভর্তি হয়েছিস তুই???”(নৌশিন)
“হ আপা…খালুজান(নৌশিনের বাবা)টেহা দিছিল কালকা ভর্তি হয়ছি”(সালাম)
“আচ্ছা….আবার কিন্তু এমন ভালো রেজাল্ট করতে হবে তোকে…আর যে কোনো কিছু লাগলে বলবি তোর মাকে যেন আমাদের বাসায় জানায়…”
“আইচ্ছা আপা”(সালাম মুচকি হাঁসে)
“আচ্ছা….আয় তাহলে!”(নৌশিন)
….সালাম চলে গেলে নৌশিন আবার দরজা লাগিয়ে দেয়….যদিও লাগানোর দরকার ছিলো না এখন তবুও ‘সাবধানের মার নেই’ বলে কথা-সাদাদ কখন কি করে বসে………….দরজা বন্ধ না করলে আবার লজ্জায় পড়তে হবে কারও সামনে……..এইসব ভেবেই নৌশিন দরজাটা লক করে ভেতরে আসে…….সাদাদ ততক্ষণে সোফায় বসে নৌশিনের রোম টা ভালো করে দেখে নেয়…বেশ পরিপাটি একটা রোম-নন্দনিকও বটে….কিন্তু আনকমন…….সাদাদ একটু অবাক হয়েও হয় না কারন এই মেয়েটার কোনো কিছুই যে কারও সাথে মিলে না,সেটা ও এতোদিনে অনেকটাই বুজে গেছে……..
বারান্দার দিকে দেয়াল টা দেখে মনে হয় না এটা কোনো রোম….পুরোটাই গ্লাস আর বারান্দায় এতো সবুজ ঘাস আর লতিকা বাহার গাছ উপর থেকে বেয়ে আছে রোমে হঠাৎ করে কেউ রোমে ঢুকে সেদিকে চোখ রাখলে মনে হবে কোনো খোলা মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে আছে…..আর সেই কাঁচের দেয়ালের পাশেই বিশাল বুক স্লেভ-অনেক বইয়ের সমাহার…পাশেই একটা বড় পড়ার টেবিল সেখানেও বই….তার পাশে আবার ছোট একটা পড়ার টেবিল….এসব থেকে একটু দূরে একটা মাঝারি সাইজের বেড…….তারপাশেই একটা আলমারি…..আর বেডের ঠিক সামনা সামনি ড্রেসিং টেবিল-বেড থেকে উঠে প্রথমে ড্রসিং এ নিজের মুখটাই দেখতে হবে,এমন করেই রাখা সেটা………..নাহ্ আর কিছু নেই……….অন্য রকম একটা রোম সাধাড়ণত এমন রোম কম হয় এই বয়সী মেয়েদের…….স্টাডি রোম টা আলাদা থাকে আর ঘরে ড্রসিং এর পাশে সাজগুজুের জিনিসে ভরপুর-যেটা নৌশিনের রোমে নেই………………..
“সাদাদ ফ্রেস হয়ে নাও….”(নৌশিন)
……সাদাদ রোম ছেড়ে নৌশিনের দিকে খেলায় করে…..
“কি হলো????আমি ব্যাগ থেকে জিনিস গুলো নামিয়ে রাখছি তুমি ফ্রেস হয়ে এসো….”(নৌশিন)
“ওহ্….ব্যাগ তো আমি গাড়ি থেকে নামাতেই ভূলে গেছি….কে নামালো??”(সাদাদ)
“তুমি নেমে যখন বাবার সাথে কথা বলছিলে আমিই নামিয়েছিলাম……পরে সালাম কে হাত থেকে নিয়েছে আমিও খেয়াল করি নি….এখন সালাম দিয়ে গেলো……”(নৌশিন)
“এই মেয়ে…গাড়ি থেকে নামালে আর কে তোমার হাত থেকে নিলো টের পেলে না???আমার ব্যাগটা হারালে কি হতো???”(সাদাদ)
“আহা রে….এমন একটা ভাব করছো-যেন কি দামী জিনিস আছে তোমার এখানে????আছে তো ঐ কিছু শার্ট আর পেন্ট……আর সেখানে তো বাবা,দাড়োয়ানই ছিলো পরে তো ভাইয়া আসলো…বাবা তো নেয় নি কারণ আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম তো তখন ব্যাগটা হয় ভাইয়া না হয় দারোয়ান নিয়েছে হাত থেকে আমি বুঝতে পেরেছি যে কেউ ব্যাগটা নিলো বাট কে নিলো সেটা দেখি নি…..”(নৌশিন)
“তাহলে তো হলোই….আর দামী জিনিস নেই মানে….বহুত দামী জিনিস আছে……”(সাদাদ)
“আচ্ছা…..কি এমন দামী জিনিস,শুনি??”(নৌশিন)
…..সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে…কানের কাছে মুখ নিয়ে…..”আন্ডার ওয়্যার”(দুষ্টুমিষ্টি হেঁসে)
“সা……দাদ….”(ধাক্কা দিয়ে সাদাদকে সরিয়ো)
“এতো লজ্জার কি আছে….আমি যেখানেই যাই,ব্যাগ তো ভাবীই গুছায় বাট এটা দিতে ভুলে না….আর তুমি আমার মিসেস হয়ে এটা শুনেই লজ্জা পাও……..নট এক্সপেক্টড…….”(সাদাদ)
“আমি জানি না কিছু…..লজ্জা লাগলে আমার কি দোষ???”(নৌশিন)
“নেক্স টাইম আমার সব ব্যাগ তো তুমি গুছাবে,ভাবী তো আজ লাস্ট দিনের মতো গুছিয়ে দিলো এখন থেকে তো আর দিবে না নিশ্চয় কজ আমার মিসেস এসে গেছে জীবনে….সো ব্যাগ গুছানোর সময় কাইন্ডলি এটা দিতে ভুলো না…..ভুলে গেলে আবার আমারি প্রব…….”(সাদাদ)
“পারবো না আমি…..তুমি যাও এখন ওয়াশরোমে…”(সাদাদকে ওয়াশরোমে দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে)
…..সাদাদ আবার নৌশিনের দিকে ঘুরে….
“আগে এগুলো তো চেন্স করতে দাও……..”(সাদাদ)
“হুম তাড়াতাড়ি করো সাদাদ না হলে আজ রাত টা কখন সকাল হয়ে যাবে-বুঝতে পারবে না তুমি”(নৌশিন)
“এমনিও বুঝবো না…..”(সাদাদ)(দুষ্টু হেঁসে)
“সাদাদ…..তুমি না বেশি বেশি”(ব্লাশিং হয়ে)
…..ওকে।।।।কোর্ট টা খুলে নৌশিনের মুখে ছুড়ে দেয়……..”উম……হু…..খোলার কি ধরণ…..”
“আমি এভাবেই খুলি…….”(আয়নার সামনে গিয়ে ঘড়ি টা খুলতে খুলতে)
….”তাই বলে মুখের উপর….পারোও তুমি”(নৌশিন)
“আরে মিসেস আপনার তো আমার ছোঁয়া পেতে খুব ভালো লাগে….তাই দিলাম….”(সাদাদ)
…..নৌশিন আবারও ব্লাশিং হয়….সাদাদের কোর্ট ছুড়ে দেওয়ায় নৌশিন আসলেই মনে মনে অনেক খুশি হয়-সাদাদ সেটা নৌশিনের মুখ দেখে ভালো করে উপলদ্ধি করতে পারে…….
“আচ্ছা ঠিক আছে…মানলাম সব…..তুমি আমার ওয়াশরোম টা ব্যবহার করো আমি ভাবীর টা করছি…আর তোমার সব কিছু আমার কার্বাডে রাখলাম ”
…..নৌশিন কার্বাড বন্ধ করতে গিয়ে কথাটা বলে তখন সাদাদ ঘড়ি খুলে পকেট থেকে ওয়ালেট বের করতে নিয়ে চমকে যায়…..
“এই মেয়ে!!!!!”(চেঁচিয়ে)
….নৌশিনও চমকে যায় সাদাদের এমন করে ডাকায়….তড়িঘড়ি করে সাদাদের দিকে তাঁকায়….
“কি হয়েছে?????”(নৌশিন)
……সাদাদ নৌশিনের কাছে গিয়ে-পকেটে হাত দিয়ে মাফলার টা বের করে ওকে দেখায়………….নৌশিন বুঝতে পারে সাদাদ কেন ওভাবে তাকে ডাকলো…..
তাই মুচকি হেঁসে জানতে চায়….”কি????”
“কি মানে….আমার তো মনে ছিলো না…..তুমি তো বলেছিলে এক….”(সাদাদ)
….সাদাদ কথাটা সর্ম্পূণ করার আগেই নোশিন ওর এলোমেললো চুল গুলো সরিয়ে সাদাদ কে গলার দিকে ইশারা করে….সাদাদ খেয়াল করে গলায় আলাদা একটা হার দেখতে পায় যেটা নৌশিন বাসা থেকে পড়ে আসে নি আর গলার দাগ টাও দেখা যাচ্ছে না………………
সাদাদ বিষ্ময় হয়ে জানতে চায়”কেস টা কি হলো???”
নৌশিন মুচকি হেঁসে জবাব দেয়”কেস টা হলো ‘মা এই গয়না টা পড়িয়ে দিয়েছে যাতে করে দাগ টা দেখা না যায়'”
“ম মানে…..কোন মা???”(সাদাদ)
“তোমার শাশুড়ি মা☺”(নৌশিন)
“এই কি বলো???মা কে বলছো তুমি??আর কি বললা??”
“তো না বলে কি করতাম তুমি তো বন্ধুদের সাথে গল্প করছিলে,আর আমার দাগ টা ভেসে উঠছিলো ভেবে আমি মাকে ইশারা করে ডেকে আনি,সেখানে মা ছাড়া কথাটা বলার মতো আর কাউকে পায় নি…..”
“তার মানে তখন যে মা কে নিয়ে ওয়াশ রোমের দিকে গেলে????”
“হুম…..”
“কি বলছো তুমি???”
“কি আর বলবো…মা এমনিতেই সব বুঝে গেছে…তাই মায়ের গলার এই হার খুলে পড়িয়ে দিয়েছে….আর বলছে আমি নাকি গাধী”
“বুজে গেছে মানে কি?”
“কি মানে কি,মানে কি করছো…..মাকে আমি ডেকে নিয়ে জাস্ট গলা টা দেখালাম,মা রুমাল দিয়ে একটু মুছেই হেঁসে দিলো আমি আর কিছু বলার আগেই মা আমায় বলে”গাঁধী মেয়ে,ঠিক করে আসবি তো”আর হার টা খুলে গলায় ঝুলিয়ে দিলো…..আসলেই কত কি ভাবলাম দুজনে বাট আর একটা হার পড়ার কথা মাথায় আসলো না,মায়ের সামনে কি যে লজ্জা লাগছিলো….”
“তোমার আর কি মায়ের সামনে গেলে আমার এখন কেমন লাগবে তা তো তুমি বুঝবে না…..ভাববে ওনার মেয়েকে আমি কত কি না করি…..”
“ইশ…..সাদাদ…..তুমি না আসলেই….মা এসব কিছু ভাববে না….”
“হুম হতে পারে….আর ভাবারও তো তেমন কিছু নেই….যেহেতু মা একবার দেখেই কেস টা বুজে গেলো তারমানে মায়েরও এইসব বিষয়ে অনেক অভিঙ্গতা রয়েছে…..এট লিস্ট তোমার চেয়ে বেশি আছে তা না হলে এতো সহজে এতো দূরন্ত সমাধান দিতে পারতেন না…..”(মুচকি হেঁসে){যেটাকে শয়তানী হাঁসি বলা যায়}
“সাদাদ(চেঁচিয়ে)…..তোমার মাথা ঠিক আছে???কাকে নিয়ে কি বলছো???”
“ভুল কি বললাম……???তাছাড়া আমার শশুড়কে কিন্তু দেখেই বুজা যায় যুবক বয়সে তিনি আমার চেয়েও ডেসিং প্লাস হেন্ডসাম ছিলো…..সো এটা নরমাল…….”
“সাদাদ……”(আবারও চেঁচিয়ে ওঠে)
“হা হা হা হা……যাহা সত্যি তাহাই বলিয়াছি সোনা…..”
“কি বাজে তুমি….ছিঃ…..শশুড় শাশুরির কথাও বলো…..লজ্জা নাই তোমার একফোঁটা…”(নৌশিন)
“হা হা হা”(সাদাদ)
“আবার হাসছো?????”(নৌশিন)
“না না…..তুমি একদম বলছিলে না,’বাবা-মা য়ের যখন বিয়ে হয়,মা খুব ছোট ছিলো’?”
“হ্যাঁ…..ক্লাস নাইনে পড়তো….তো??”
“তার মানে…একটা কথা ভেবে দেখো…..(নৌশিনের ঘাড়ের পেছনে দু হাত বেধেঁ দাঁড়িয়ে)….মিনিমাম চার পাঁচ বছর পর ভাইয়া হেয়েছিলো কারণ আমার শশুড় মশাই যথেষ্ঠ সচেতন ছিলেন তাই নিশ্চয় এতো আগে আমার শাশুড়ি মাকে এতো কষ্ট দেন নি….তো সেখানে ধরো ফাইভ ইয়ারস…দেন ভাইয়া আর তারও নয় বছর পর আমার জান টা এসেছে….তার মানে বিয়ের পনেরো ষোল বছর পর তোমার আগমান……ভাবতে পারছো বিষয় টা……শশুড়ের বিয়ের সময় তিনি নাকি বি.এ কমল্পিট করেছিলেন তার মানে ২৩/২৪,বছর আগের দিনে তো এমন সময়ই লাগতো….তো ২৪+১৫…. আ আ আ তো মোটমাট ৩৯ বছর বয়সে তিনি আমার শাশুড়ি মায়ের সাথে সামথিং সামথিং করেছেন….যার ফলস্বরূপ তুমি আমার মিসেস আজকে…..কি পরিমাণ একটিভ ছিলো আমার শশুড়….চিন্তা করতে পারছো তুমি???”…..আাবার সেই শয়তানী হাঁসি শুরু হয় সাদাদের……নৌশিন হা করে সাদাদের কথা গিলছে……
“আল্লাহ…..সাদাদ কি চিন্তা করবো….বাবা আমার তিনি……তুমি নিজের শশুড় শাশুড়ি কে নিয়ে কি বলছো…..ধ্যাত….এটা ঠিক না…”(মন খারাপ করে উত্তর দিলো নৌশিন)
“ছাড়ো….আর যাও ওয়াশরোমে…একটা বেজে গেলো….”(নৌশিন)
“এই তুমি মুখ টা এমন করেছো কেন???আমি কি এমন বললাম…….(আরও দুষ্টামির সাদ হচ্ছে সাদাদের)….ঊনচল্লিশ বছরে তোমার আগমনের কারণ হয়ে চল্লিশ বছর বয়সে তিনি তোমার মতো পরীর মুখ দেখেন এটা তো ওনার সৌভাগ্য….”(সাদাদ)
“এই তুমি কি ঊনচল্লিশ-চল্লিশ করছো।।।।এই সময়েও ছেলেরা অনেক একটিভ থাকে….এটা কোনে ব্যাপার না…… সো বেবি হতেই পারে…….পঁয়তাল্লিশ পঞ্চাশ বছরেও অনেক পুরুষ বাচ্চা প্রদাণ কারণ হয়…..ইভেন আমাদের ধর্মমন্ত্রী সিক্সটি আপ হয়েও দু দুটো ছেলের বাবা হলেন….আর তুমি নিজের শশুড়কে নিয়ে কি বলছো….”(নৌশিন)
“বাহ্….বউ আমার অনেক কিছু জানে দেখছি…তার মানে আমি আরও ত্রিশ বছরের মতো তোমাকে ব্যাথাতে সুখ দিতো পারবো….”(অট্ট হেঁসে)
……নৌশিন ভ্যাঁবাচোকা খেয়ে যায়……কথাটা প্রথমে মাথার উপর দিয়ে গেলেও বুজতে বেশি দেরি লাগে নি….তাই লজ্জায় পরে যায়…….”সাদাদ…….শয়তান….)(বলেই সাদাদের হাতের নিচ দিয়ে পালিয়ে অন্য পাশে চলে যায়)
……সাদাদ হাঁসতে থাকে……
“পালালে কি হবে মেরি জান,ধরা তো দিতেই হবে????(নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে)
“সাদাদ প্লিজ…..ফ্রেস হও…….”(সাদাদের দিকে না ফিরেই কথা বলে নৌশিন…..ফিরবেই বা করে সাদাদ যা বলছে)
….সাদাদ শুধু শার্টের বোতাম গুলো খুলছে…….নৌশিনের সামনে গিয়ে শার্ট খুলে কোর্টের মতো সেটাও ওর মুখে ছুড়ে দেয়……………..
“উম…….সাদাদ…এটাও…???”(নৌশিন)
শার্ট মুখ থেকে সরিয়ে হাতে নেয় নৌশিন….মুখে ছুড়ে মারায় নকে শার্টের গন্ধ লেগেছে….আর ছেলেদের শার্টের গন্ধ যে একবার পেয়েছে বিশেষ করে এপ্রিল মাসে তার নিশ্চয় ছেলেদের শার্ট ধরতে ইচ্ছে করবে না……তার উপর সেই বিকেল থেকে রাত একটা পর্যন্ত সাদাদ একটা শার্ট পড়ে ছিলো…যতই এসিতে থাকুক আর পারফিউম লাগাক একটু হলেও গন্ধ হবেই………..
“উননননননহু……ছিঃ…..কি বাজে গন্ধ……. “…..সহ্য করতে না পেরে নৌশিনও শার্ট টাকে খাটে ছুড়ে মারে…
“এইটুকু সহ্য হয় না….এবার গেন্জি ছুড়ে দিলে কেমন হয়।।।তার পর পেন্ট তার পর……”….নৌশিনের দিকে এগিয়ে যায় সাদাদ আর নৌশিন পিছনে যেতে থাকে…
“এই পেন্টের পর আবার কি!একদম নির্লজ্জের মতো কথা বলবে না..আর আগাবে না বলছি আগে ফ্রেস নাও…তারপর কাছে আসবে…..”(নৌশিন)
“তারপর তারপর……..”সাদাদ নৌশিনকে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে দেয়….শার্ট টার পাশেই…….আর সাদাদও নৌশিনের উপর….এমন ভাবে সাদাদ শুয়েছে-ওর বগল টা নৌশিনের মুখের কাছে একদম…..সাদাদ অবশ্য ইচ্ছে করে এটা করছে নৌশিনকে ঘামের গন্ধ দেওয়ার জন্য আর পাশে তো শার্টের গন্ধ আছেই…….সাদাদ নৌশিনের আরও কাছে যায়…….নৌশিন নিতে পারছে না-কোনো ছেলের ঘামের গন্ধ জীবনে প্রথম এতটা কাছ থেকে পেলে যা হয় আর কি………………
“সাদাদ প্লিজ……উঠো….তোমার ঘাম…..প্লিজ প্লিজ…..”
……নৌশিন নিতে পারছে না আর,চোখ বন্ধ করে ফেলেছে মুখ সরাতে চাইছে কিন্তু সাদাদ সরাতে দিলে তো!………”যদি সারা রাত এভাবে রাখি????”(সাদাদ)
নৌশিন চোখ খুলে”একদম না”।।।।।উঠার জন্য জোড়াজোড়ি করে ব্যর্থ হয়…….
“আরে বাপ….জোড়াজোড়ি করে কি লাভ….আমার বডির দিকে একটু দেখো….রোজ সকালে কি জিম করি তোমার মতো চড়ই পাখির ধাক্কায় পড়ে যাওয়ার জন্য???আচ্ছা বাদ দাও,গন্ধটা কেমন লাগছে?”
“বিশ্বাস করো বমি আসছে আমার…..উঠো প্লিজ।।।।”
…….সাদাদ জানে ওর ঘাম সবসময় বেশি হয় আর নৌশিন প্রথম বারের মতো কোনো ছেলের গন্ধ এভাবে পাচ্ছে বলে সেটা ওর সহ্য করতে খারাপ লাগছে এটাও ভালোভাবে বুজতে পারছে………….তবুও সব বিষয়ে নৌশিনকে জ্বালানো ওর চার বছরের অভ্যাস……
“কি???আমার শরীরের ঘাম তুমি নিতে পারছো না….ওকে আমি ফ্রেস হচ্ছি না…এভাবেই শুরু করবো।।।।”{গলার দিকে মুখ এগিয়ে নিয়ে যায়}
{আর নৌশিন পাশে থাকা শার্ট নিয়ে সাদাদের মুখে চেপে ধরে}….নৌশিন খুব ভালো করে জানে সাদাদ চাইলে শার্ট সরাতে ওর এক মিনিটও লাগবে না-তাই এক রকম বাঁচার জন্য বলে উঠে “প্লিজ জান….এখন না-ফ্রেস হয়ে আসো…তারপর যা করার করো”………..
……নৌশিনের এমন কথায় সাদাদ হেঁসে ফেলে কারণ সাদাদ বুজেছে যে নৌশিন ঘামের গন্ধ থেকে বাঁচার জন্য কথাটা বলে ফেলেছে….যাক সাদাদে তাতে সুবিধাই হবে……….
সাদাদ শার্ট টা নৌশিনের হাত থেকে নিয়ে”সত্যি তো???যা করতে চাইবো তাই পাবো??”
“হুম…..এখন উঠো”
“মনে থাকে যেন নাহলে কাল কিন্তু সারাদিন গোসল না-করে সারা রাত…………”
“বললাম তো দিবো…..যা চাও তাই……..”
“বাহ্……”
প্রেমঘোর পর্ব ১৯
“এখন উঠো না…..পারছি না আর এতো ঘাম….”
সাদাদ সরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে আর নৌশিন দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খুলে…..আর দরজার একটু সামনে ওর ভাবী আর একটা সার্ভেন্টকে খাবার নিয়ে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে যায়…….”কি ব্যাপার এখন চেন্স করিস নি???”(ভাবী)