প্রেমঘোর পর্ব ৯৭+৯৮+৯৯
নার্গিস সুলতানা রিপা
“ব্যথা পাবে তো………”
“পেলে পাবো…..তাতে তোমার কি???আমাকে কত কিছু না বলে ছিলে……”
“স……..”
সরি বলতে চাচ্ছিলাম সাদাদ।নৌশিন যেটা একদম নিতে পারে না।
আটকে দিলো সাদাদকে।
উমহু….হাত দিয়ে না….সাদাদের ঘাড়ের পেছনে দুহাত বেঁধে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
সাদাদ একটু অবাক হলেও পরক্ষণেই নৌশিনের সাথে তাল মিলাতে শুরু করে।
নৌশিন যেনো বেশি উতলা হয়ে উঠেছে।সাদাদের খেয়াল হয় ওরা হসপিটালে আছে।কিন্তু!!নৌশিনকে তো সরানোর উপায় নেই,সে যে পাগলের মতো তার সাদাদের ঠোঁটে ভালোবাসার উষ্মতা দিচ্ছে।
সাদাদও কম যায় না,নারীকে কি করে কেমন চালে চালতে হয় জানা আছে ওর।নৌশিন তো যে কোনো সময় সাদাদকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে পারে।
তাই বলে কি সাদাদও ধাক্কা দিবে নাকি নৌশিনকে????
সাদাদ নৌশিনের কমল ঠোঁটজোড়াতে কমড় বসিয়ে দিলো যে,আর নরমদেহী নৌশিন নিজের ব্যথা সামলাতে ব্যস্ত…….
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“উহুুহুহুহুহু……..”
দু হাতে ঠোঁট চেঁপে ধরেছে।
সাদাদ তো ইচ্ছা করেই এতো জোড়ে কামড় দিলো।
“দেখি,কি হয়েছে??
আহা রে কেঁটে গেছে আমার বউয়ের ঠোঁট টা…..ওকে যা রাগ করিস না……সব ঠিক করে দিচ্ছি…..”
সাদাদ কামড়ের জায়গায় ছোট্ট করে একটু উষ্মতা ছুঁইয়ে দিলো।
“ব্যথা লাগে না বুঝি আমার??”
সাদাদ নৌশিনের দু গালে হাত রেখে বললো,
“হসপিটালে যে তাই তো….”
“তো??”
“যদি কেউ এসে যায়??”
“তাতে কি??আমার বরের সাথে আমি রোমান্স করবো….এতে কার কি??”
“আচ্ছা!!!তাহলে শুরু করি…..”
“এই নাআাআআআ…….”
“হুম??????”
“বাসায় যাবো….”
“ডক্টর দেখুক…..তারপর….”
“না না না না না না…..যাবো যাবো যাবো যাবো……”
“নৌশিন,জান লাঁফায় না এভাবে।ব্যথা লাগবে তো তোমার…..”
“তাহলে বলো,বাসায় নিয়ে যাবে???তাহলে একদম চুপচাপ থাকবো…..”
“ওকে ওকে নিয়ে যাবো……কাল বিকেলের মধ্যেই…..”
“কেনো??সকালে যাই না??”
“আর একটা কথা বললে….মাইর খাবা…..”
“ঢং……..”
“পিচ্চি….”
“বাচ্চার মা হতে চলেছি……আম নট পিচ্চি…..”
“আচ্ছা!!!!!……”
“হুমমমম…..”
“ওকে,এবার আমার কথা শোনো….চুপচাপ শুয়ে থাকবে…..আমি বাকী সবাইকে বাসায় যাওয়ার জন্য বলছি…..”
“সাদাদ……”
“বলো……”
“সরি…..”
“নৌশিন!!!!!!”
“সত্যিই গো……তুই করে ডেকে ফেলেছিলাম তখন…..আমার যে কি হয়েছিলো……”
“জানি তো বোকা মেয়ে…..ভালোবাসো যে খুব….”
“আমিও জানি,আমি মারা গেলে তুমি আমার বাচ্চাকে কোনো কষ্ট দিবে না।সে বিশ্বাস আছে আমার….তবুও পাগলের মতো উল্টা পাল্টা বলছিলাআআআআ……”
নৌশিন সাদাদের দিকে না তাঁকিয়ে কথাগুলো বলছিলো….আর যখন সাদাদের দিকে চোখ পড়ে,
নৌশিন তো শেষ।
সাদাদের চোখে যে আগুন…..
“বল কি যেনো বলছিলি??থামলি কেনো??”
“……….”
মাথা নিঁচু করে আছে নৌশিন….
“কতবার বলেছি,আমার সামনে…….”
সাদাদ বেডে ঘুষি দিয়ে উঠে যাচ্ছিলো রাগে…..নৌশিন সাদাদের হাতটা ধরে ফললো।
“কে বলেছে??আমি চলে যাবো….আল্লাহ আমার এতো সুখ কেড়ে নিবে না আমার থেকে……..তোমার দোয়া আছে তো আমার সাথে……আমাদের বাচ্চা আর তোমাকে খুব ভালোবাসি যে…….”
সাদাদ নিজের রাগ কন্ট্রোলে এনে নৌশিনের পাশে বসে,
“খুব ভালোবাসি……হারাতে পারবো না….আর শোনতেও পারবো না এসব……তোমার কথা ভেবেই বেবীটাকে কাল ডক্টর বলা সত্বেও কোনো ডিসিশন দিই নি…..তাহলে তো বেবীর সাথে সাথে তোমাকেও যে হারিয়ে ফেলতাম……”
নৌশিন সাদাদ জড়িয়ে ধরে…
“সাদাদ,আমরা আমাদের বাচ্চাকে বাঁচাতে পারবো না???দুজনে মিলে বাঁচানো যাবে না???”
কাঁদছে নৌশিন….বাচ্চা টা ওর পেটে থাকলেও তার জীবন যে বড় হওয়ার সাথে সাথে অনিশ্চিত;সেটা তো সবাই জানে।তবুও আশা করতে ক্ষতি কি???আল্লাহ্ তো মহান……সে কি একটা মায়ের আকুতি শুনবেন না!!!!!!!
সাদাদের চোখও ভিজে আসছে……সে ও চায় তার নৌশিনের কুল জোড়ে একটা ছোট্ট পাখি আসুক।যে সাদাদ বাড়ি ফেরা মাত্রই”পাপা””পাপা”বলে ছোটে আসবে।নরম দুটো হাত বাড়িয়ে কান্না করবে।
“ধুর,পাগলী….কিচ্ছু হবে না আমাদের বাচ্চার…..আমরা দুজনে সামলে নিবো ওকে,আল্লাহ্ তো আছে….আমাদের নিরাশ করবে না ওনি…….”
“আমার কোনো কষ্ট হবে না যদি তুমি আমার পাশে থাকো…..”
“আছি তো…..আর থাকবো ইনশাল্লাহ্……”
পরশ রিদিকে নিয়ে বাসায় পা রাখে।
পরশের মা বরণ করে নি একমাত্র ছেলের বউকে।
পরশের জেঠি বরণ করেছে।
বসার ঘরে বসে আছে রিদি।
ভাইবোনরা সবাই মজা করছে।
পরশ ওর মায়ের ঘরে যায়।
পরশকে দেখা মাত্রই ওর মা বলে উঠে,
“বউ এনেছিস??”
“যাবে না??? ”
“কেনো যাবো বলতে পারিস???নিজের ছেলের বউ বাড়িতে আসার আগের দিন….ছিঃ….ছিঃ….পারবি তো বাবু মেয়েটার সাথে সুখী হতে???আমি আর তোর বাবা আর কয়দিন…..বাকী টা জীবন তোর কি করে কাঁটবে???এই মেয়ে কি আসলেই তোকে ভালোবাসে???”
“মা তুমি তোমার ছেলেকে চিনো না??তোমার ছেলে জীবনে কখনো হারে নি আর হারবেও না…..ওকে তো ভালোবাসতেই হবে……ও কার সাথে কি করেছে সেটা আমার দেখার বিষয় না…..যখন একবার খাঁচায় বন্দি করেছি ওকে তো আমি ছাড়ছি না…..তুমি শুধু দেখে যাও মা….”
“বাবু,মেয়েটাকে আমি নিজেও যে পচ্ছন্দ করেছিলাম….সে মেয়ে যে এমন কাজ করবে ভাবতে পারি নি আমি…..”
“মা,বাদ দাও…… চলো যাবে ওখানে…..বাবা,জেঠি ওকে দোয়া করেছে তুমিও আসো….”
পরশ ওর মাকে জোর করে রিদির সামনে নিয়ে যায়।
পরশের বাড়ির লোকরা ঘটনা টা জানলেও,আত্মীয়-স্বজন রা কেউ ই জানেন না।
পরশের মা সবার সামনে রিদির সাথে যতটা ব্যবহার ভালো করা উচিত করলো।
দোয়াও করলো মনে মনে যেনো রিদি পরশের সাথে কাঁটাতে পারে বাকী টা জীবন।
কোন মা চায় তাঁর ছেলে কষ্টে কাঁটাক!!!!তাই তো মন প্রাণ দিয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেছেন,যেনো সব কিছু ঠিক হয়ে যায়।
রাতের সব অনুষ্ঠান-আয়োজন শেষ করে রিদিকে পরশের ঘরে রেখে আসে পরশের কাজিনরা………
রোম টা বেশ সুন্দর করে সাজানো……ছোট ছোট লাইটিং,বাহারী রকম ফুলের মৌ মৌ গন্ধে সৌরভ ছড়াচ্ছে চারপাশে……………………….
নানা রকমের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে রিদির মাথায়।
ডেড কেমন আছে!!!পরশের সাথে পথ চলা টা……..
এমন সময় দরজা ঢেলে ভেতরে প্রবেশ করে পরশ।
চমকে উঠে রিদি।
ভয় লাগছে খুব…..
পরশ কোনো কথা বলছে না…
রিদির ঘোমটা একটা ভাবী যাওয়ার সময় একটু বড় করে দিয়ে গেছে।
রিদির ঘোমটার একপাশ সরিয়ে দেখার চেষ্ঠা করছে পরশ কি করছে……
পরশ একটা টি শার্ট হাত ওয়াশরোমে ডুকলো।
রিদি তো থ…..
পরশ যে পাণ্জাবী ছেড়ে খালি গায়ে ছিলো……কেমন জানি শিহরণ জেগে উঠলো রিদির বুকে পরশের খালি শরীর টা দেখা মাত্রই।
পরশ ওয়াশরোম থেকে বেরুতেই রিদির মনের ঝড় আরও তীব্র হয়ে উঠে।
পরশ গ্লাস হাত নিয়ে ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলো।বুঝতে পেরেছে রিদি যে পরশ পানি খাচ্ছে।
খাটের উপর দু হাত রেখে বসে পরশ।রিদির দিকে একবার তাঁকিয়ে আবারও চোখ সরিয়ে নিলো।
রোম টা বেশ সুন্দর করে সাজানো….. তবে রোমের সৌন্দর্য তো রিদির সৌন্দর্যের কাছে কিচ্ছু না…..ভাবতেই মুঁচকি হাঁসি ফুটে ওঠে পরশের ঠোঁটে।
আবারও মনে পড়ে যায়,পরশকে ভালোবাসার কথা বলার পরও যে রিদি সাদাদের কথা ভেবেছিলো সেটা।
রাগে চোখ বন্ধ করে ফেলে পরশ।রিদির বাবা সেদিন অসুস্থ হওয়ায় রিদিকে কোনো কিছু বলা বা করার কোনো সুযোগ পায় নি পরশ।
আর সত্যি বলতে রিদির মায়াবী মুখে অসহায়ত্বেরর ছাপ টা দেখে বলতে ইচ্ছাও করে নি।
কিন্তু আজ!!!
ঘাড়ের রগ দুটো ফুলে উঠছে পরশের।
আবারও পুরনো পরশের ভয়ঙ্কর চোখ…….
পরশ রিদির ঘোম এক টানে সরিয়ে দিলো।রিদি পরশের চোখের দিকে তাঁকিয়েই ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম।চোখ বন্ধ করে ফেললো সাথে সাথে।
পরশের রাগ টা কেনো জানি মায়া বদলে যায় রিদির মুখ দেকামাত্রই।মানুষ এতো সুন্দর হয় কি করে?????….ভেবে পাচ্ছে না পরশ।
ধুকপুক করছে পরশের বুক।
নজর যায় রিদির পায়ের দিকে।
সাদা ধবধবে দুটো পা দু….
সাজানো বিছানার উপর কিভাবে ছাপিয়ে আছে….
নুপুর জোড়া পায়ের সৌন্দর্য আরও বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরশ আটকে যাচ্ছে।
কি প্রতিশোধ নিবে??কিসের শাস্তি দিবে???
কোনো কিছু ভাবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে পরশ….মুমের আলোতে যে অপসরী লাগছে তার বধুকে।
মায়ায় বাঁধা পড়ে গেছে পরশ।
ভালোবাসায় ডুব দিতে চাইছে সে……শাস্তি টা না হয় ভালোবেসেই দিক………..
পরশ রিদির পা থেকে নুপুর জোড়া খোলে,গভীর ভাবে চুমু খায়…..আঁতকে যায় রিদি।
পয় বয়ে কমশ্র শরীরের উপরেরও রক্ত বোধহয় চলাচল থামিয়ে দিচ্ছে এমন মনে হচ্ছে রিদির।
চাদর আকড়ে ধরে দুহাতে…….
পরশ রিদির লজ্জায় লাল হওয়া মুখটা দেখছে………
কি মায়াবী লাগছে!!!!
ঠোঁট জোড়া কাঁপছে রিদির।
মাথার ওড়না ফেলে দিলো পরশ,কান দুটো লাল হয়ে গেছে রিদির।
অনেক ভারী ভারী গহনা যে রিদির গায়ে,পরশের একদম ভালো লাগছে না……গহনাগুলো কেমন গায়ে চেঁপে বসে আছে…..না পরশ তা হতে দিবে না ওর বউয়ের গায়ে ও ছাড়া আর কাউকে থাকতে দিবে না সে…………..
তাই করলো পরশ,প্রতিটি গহনা নিজ হাতে খুলে দিলো।
রিদির কম্পিত শরীর আরও বেশি করে টানছে পরশকে।
রিদিকে টেনে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো পরশ।
হাঁপাচ্ছে রিদি…….চুলের বাঁধা খোপা টা পরশ খোলার চেষ্ঠা করেও পারে নি….তাই আর চেষ্ঠাও করলো না…….মাথার পেছনে হাত দিয়ে মুখ তুলে দেখে নিলে একনজর….না লোভ আর সামলানো যাচ্ছে না।
ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো…….
রিদির নিজের মাঝে নেই……
এ কোন অজানা আবেশ!!!!
পরশ রিদিকে ধীরে ধীরে শুইয়ে দিচ্ছে……নরম দেহী এক নারীর উপর নিজেও শুয়ে পড়লো।
ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে ভালোবাসার আদান প্রদাণ করছে দুটি মানব-মানবী।
হঠাৎ কি ভেবে পরশ রিদির ঠোঁট জোড়ায় সর্বশক্তি দিয়ে কামড় লাগিয়ে দিলো।
নাহ্ কামড় টা ভালোবাসার ছিলো না।স্পষ্ট জেদ ফুটে উঠেছে কামড় টা তে……..
কুঁকিয়ে উঠে রিদি………..
না চাইতেও চোখে পানি এসে যায়…….এতক্ষণে পরশ রিদির উপর থেকে উঠে গেছে……….
রিদি দু হাতে নিজের ঠোঁট চেপে ধরছে…..হাত টা চোখের সামনে ধরে,আরও কান্না পাচ্ছে রিদির।হাতে যে রক্ত…..
পরশ জেদের বসে এতো জোরপ কামড় দিবে ভাবতে পারে নি রিদি,পরশ কি তাহলে ভালোবাসবে না ওকে????
ভাবতেই দুনিয়া উল্টে যাচ্ছে রিদির।
ঠোঁটের ব্যথায় জ্বলে যাচ্ছে মুখটা…..উপরের ঠোঁট দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে……..
রিদি অসহায় দৃষ্টি নিয়ে পরশের দিকে তাঁকিয়ে আছে।
কিন্তু পরশ!!ও তো ফিরেও তাঁকাচ্ছে না রিদির দিকে।
রিদির ফুঁপানো কান্নার আওয়াজে ফিরে তাঁকায় রিদির দিকে।
রিদি এমনিতেই ননীর পুতুল।
একটু ব্যথা পেলেই আহাজারি শুরু করে।আর আজকে বেচারীর সারা মনে কষ্ঠের ভীর,তার উপর নিজের স্বামী ভালোবাসার বদলে জেদ করছে।কি করে সইবে এসব সে!!!
পরশ রিদির ঠোঁটে রক্ত দেখে,নিজের করা ভুলটা অনুভব করলো।
সুখ দিতে আবারও রিদির ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
বাঁধা দেয় নি রিদি…..হাজার ব্যথার মাঝেও পরশকে আকড়ে নিলো।যদি আমার জেদ দেখিয়ে কষ্ট দেয়,তো দিক….সব সহ্য করে নিবে সে।
রিদি যখন পরশের আবেশে ব্যস্ত,পরশ তখন রিদিকে ছেড়ে
উঠে যাচ্ছে……….
রিদি ধরে ফেলে পরশের হাত টা…..পরশ অগ্নিমুর্তি হয়ল রিদির দিকে তাঁকায়।
কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে রিদি পরশকে বললো,
“ভালোবাসুন না পরশ……..
আমি আপনার মাঝে হারাতে চাই……প্লিজ পরশ,আমায় এমন শাস্তি দিবেন না……আপন করে নিন আমায়…..যত কষ্ট দিবেন আমি সব সহ্য করে নিবো…..তবুও কাছে নিন আমায়……আমার সব কিছু আপনার হাতে সপে দিতে চাই পরশ প্লিজ…….আমি আমার সবটা দিতে চাই আপনাকে…..নিয়ে নিন পরশ…..প্লিজ……শাস্তি দিতে হলে দিন….যত খুশি ব্যথা দিন….কিচ্ছু বলবো না আমি তবুও আজ প্লিজ আমাকে নিঃস্ব করে দিন…….আমি তো সব হারিয়ে আপনার পায়ে ই এসে পড়েছি।পায়ে ঠাঁই দিন…..কাছে আসুন না……..
কি হলে পরশ??ভালোবাসবেন না আমায়????আমি ভালোবাসা চাই পরশ……
আমার মধুরাত পূর্ণ করতে চাই…..আমি পুরানো কোনো কথা আনবো না মাথায়….আপনি আমার স্বামী,আমাকে ভুলিয়ে দিন সব…..বাধ্য করুন না আপনার দাসী হতে….অনুগত করে নিন আপনার…….প্লিজ…….”
পরশ রিদির সব কথা শুনছে।
কি করবে সে!!!সব যে ওরও গুলিয়ে যাচ্ছে।
পরশকে কোনো কিছু ভাবার সুযোগ দিলো না রিদি আর।
হেঁচকা টান বিছানার উপর ফেলে দিলো।
ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে পাগলের মতো চুম্বন করছে।
না পরশও ভালোবাসবে,আয়ত্বে আনবে রিদিকে ভালোবেসে।
রিদিকে ধাক্কা দিয়ে নিজের শরীরের উপর থেকে বিছানায় ফেলে দিলো পরশ।
হামলে পড়ে রিদির উপর।
দু হাত বিছানায় চেঁপে ধরে।
প্রতিটি আঙ্গুলের ভাঁঝে আঙুল ডুকিয়ে নিয়েছে।
ঠোঁট,গলা,ঘাড় এমন কি কানের লতিতেও ভালোবাসার ছোঁয়ায় মাধিত করছে রিদিকে।
লাভ বিটগুলো শেষ করে দিচ্ছে রিদিকে।
পায়ে পায়ে ঘর্ষণে মাতোয়ারা হচ্ছে দুটি আত্মা।
বেচারী রিদি,কোনো ভাবেই পারছে না পরশের সাথে।
পরশ নিজের টি শার্ট ছুড়ে ফেলে,শাড়ির ভাঁজগুলোও খুলে নিলো।
ভালোবাসা আরও গভীর হচ্ছে।রিদির শ্বাসগুলে আরও মোহিত করছে পরশকে।
তবে প্রথম হওয়ায় রিদি যে বারবার পরশের কঠোর শরীরের ভালোবাসায় ব্যথা পাচ্ছে সেটা পরশ খুব ভালে করে বুঝতে পেরেছে।
সে ও ব্যথা দিচ্ছে,পাক না একটু ব্যথা….হোক না কিছু দাগ……ভালোবাসায় এইটুকুতো পেতেই হয়!!!!
ভালোবাসার সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে দুজনে………
রিদির হাত দুটো খোলা এখন…
খাঁমচে ধরে পরশের পিঠ…..
বাধ্য করে পরশ পিঠে আঁচড় দিতে।
পরশ রিদির সারা শরীরে বিট দিচ্ছে,আর রিদি নিজেকে সামলে নিতে পরশের পিঠে আঁচড় কাটছে…………….
পরশ কি করছে??এটাই কি জান্নাতের সুখ…..আহ….থামুক না সময় টা……….থেমে যাক না………..
“আহ……….”
ব্যথায় আঁতকে উঠে রিদি।
বুঝতে পারে পরশ………
আজ নিঃস্ব হয়ে গেলো রিদি।
নিজের যৌবন সপে দিলো ভোমরের কাছে।সমস্ত মধু উজাড় করে দিলে আজ…….
আজ থেকে পরশ মিশে গেলো রিদির অস্বিত্বে…….সব ভুলতে পারলেও আজকের পর থেকে পরশকে ভুলতে পারবে রিদি।
কখনো না…..আজ থেকে পরশের মাঝেই ডুবে রবে জীবনের বাকীটা সময়………..
ভালোবাসতেই হবে দুজনের দুজনকে…….হার মানতে হবে সমস্ত জেদ আর মিথ্যা মৌহের কাছে……জয়ী হবে শুধু দুজনের পবিত্র ভালোবাসা।
সকালে সূর্যের আলো কাঁচ ভেদ করে আচড় কাঁটে রিদির চোখে।
চোখ না খোলেও মাথার নিঁচে শক্ত কিছু অনুভব করলো সে।
প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরক্ষণেই বুঝতে পারলো;
সে পরশের বুকের উপর শুয়ে আছে।
চোখ খোলে রিদি।
পরশের বুকে থুতনী রেখে চেয়ে আছে পরশের মুখের দিকে।কি শান্ত লাগছে!!!!!
আর জাগ্রত অবস্থায়,কি রাগী!!!!
রিদি পরশের খোঁচা খোঁচা চাঁপা দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে দিলো আলতো করে।
“সাদাদেরও না এমন চাঁপা দাঁড়ি।আল্লাহ্ সত্যিই মহান।
কখনো কাউকে ঠকায় না।
যেমন আমাকে আমার ভালোবাসা দিয়ে দিলো,সাদাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় পরশ,ঠিক আমার মনের মতো,আমি তো শুধু ওকেই চাই এখন…..কখনো ছাড়তে চাই না…….আল্লাহ তুমি আমার পরশকে প্লিজ আমার করে রেখো….প্লিজ”
রিদি শরীরে হাত দিতেই চমকে গেলো।একটা চাদরে আবৃত ওরা।ধুক করলো উঠে রিদির বুকটা।
“ইসসসস!!!!পরশ কি করলো এসব…………”
জোর ছিলো পরশের ভালোবাসায়।মাতিয়ে নিয়েছিলো রিদিকে।
কাল রাতে পরশের প্রতিটা ছোঁয়ায় হাঁরিয়ে গিয়েছিলো রিদি।জীবন এতো সুন্দর হয় পরশের ছোঁয়া না পেলে হয়তো বা বুঝতে পারতো না সে।ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়ে গেছে সারা জীবনের জন্য এই শক্তদেহী রাগী মানুষটার কাছে।
পাশে থাকা শাড়িটা নিজের শরীরে পেঁচিয়ে উঠে আসতে চায়।কিন্তু পরশ আটকে নিলো।
“আপনি,ঘুমান নি??”
“কোথায় যাচ্ছো???”
“সাওয়ার নিবো…..”
“কেনো??”
“কিহ্???”
“সাওয়ার নিতে হবে কেনো???”
“কি বলছেন এসব???”
পরশ আর কোনো কথা বললো না।কথার চেয়ে সব সময় কাজ করতে বেশি ভালো লাগে তার।রিদির ক্ষেত্রেও যে একই নীতি অবলম্বন করা হয়ে রিদি সেটা ভাবতে পারে নি।
পরশ রিদিকে একটানে বিছানায় ফেলে দিয়ে,রিদির শরীরের উপর নিজের ভর জোরে দেয়।
“পরশ……ছাড়ুন……”
পরশের চাহনী রিদিকে মাতাল করে দিচ্ছে।মানুষটার চোখে এতো নেশা!!!কি করে সম্ভব!!
এতো ভালোবাসা!!!!
পরশ রিদির তীক্ষ্ণ সুরু ঠোঁটে আঙ্গুল ছোঁইয়ে দিচ্ছে।
আবেশে চোখ বন্ধ করে রেখছে রিদি।
“কাল রাতে খুব কষ্ট হয়েছে??”
কি বলবে রিদি??
প্রথমবার তো সব মেয়ের ই একটু কষ্ট হয়।কিন্তু সে ছোঁয়া যদি ভালোবাসার মানুষের হয়;তাহলে তো সেখানে কষ্ট টাকেই মহাসুখ মনে হয়।
“কি হলো??উত্তর কোথায়…..”
রিদি চোখ চোখে কোনো রকম বললো,
“আ….না তো……”
“সত্যি??”
“হুম……”
“তাহলে চোখে পানি কেনো ছিলো??”
“আপনার সুখে পরশ…..আপনি আমায় যে ভাবে ভালোবাসছিলেন,মনে হচ্ছিলো আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ……..বাসবেন তো ভালো আমাকে???এভাবেই সারা জীবন????কখনো ছেড়ে যাবেন না তো আমাকে???”
“হুসসসসস…….কখনো না।
আর তুই চাইলেও আমার খাঁচা থেকে বের হতে পারবি না……”
“আমিও তাই চাই পরশ।আমাকে আপনি যেমন ভাবে চাইবেন,আমি তেমন ভাবেই আপনার হাত ধরে চলবো….তবুও আমাকে কখনো একা করে যাবেন না….. তাহলে আমি মরেই…..উমমমমমমমমম…..”
শেষ করতে দেয় নি রিদির কথা।ঠোঁট জোড়া নিজের দেখলে নিয়ে নিলো।
কমশ্র নিজের ভালোবাসা বিলিয়ে রিদিকে বাকরুদ্ধ করে দিলো।
মুহুর্তেই মাতিয়ে নিলো রিদিকে নিজের ভালোবাসার নেশার।
দুজনে আবারও হারিয়ে গেলো সুখের সাগরে…….ভেসে যেতে লাগলো গভীর ভালোবাসার স্রোতে।
প্রায় এক ঘন্টা পর………………
পরশ রিদির গলায় মুখ গুছে শুয়ে আছে।ক্লান্ত সে…….তবুও ভালোবাসতে চায়…………
“পরশ,ছাড়ুন,সাড়ে সাত টা বাজে……”
“বাজুক…..”
“সবাই কি ভাববে???আমি জানি নতুন বউদের এতো সকাল বেলা করে উঠতে নেই…….তাতে অনেকে অনেক কিছু মনে করতে পারে……..”
“আচ্ছা!!!অনেক বুঝো দেখছি…..”
“আপনার কি মনে হয়??আমি জানি না??”
“তাই তো মনে হয়…..রাতে যা….. ”
পরশ রিদির ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে আটকে দিলো”চুপপপ….”
পরশও কম যায় না আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দিলো সে….
“আহওওওও……”
“ব্যথা রে….এতো ব্যথা কিভাবে সহ্য করছো তুমি??কাল রাত থেকে শুধু ব্যথা…..ব্যথা….ইসসসসস নাগিনী যেনো অবশেষে পরশ চৌধুরীর কাছে পরাজিত…..নাগিনীর সারা শরীরে পরশের ভালোবাসার ছুবল……আচ্ছা সব নাগিনী কি তোমার মতো হট হয় নাকি??”
“পরশ!!!!!……”
“হুসসস….এতো জোরে ধমক দিলে আওয়াজ বাইরে যাবে সোনা……”
“সরুন তো……..”
“উমমমমমমমম……..”
“জানেন পরশ……আমি না খুব ভয় পাচ্ছিলাম……”
“কেনো??”
“আপনি যদি আমায় না মানতেন তাহলে আমি মরেই যেতাম….আমি তো ভেবেছিলাম আপনি আমাকে আনবেন না এ বাড়ীতে…ক্ষমা করবেন না কোনোদিন……..আপনাকে হারানোর ভয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম আমি……আপনি আমাকে কখনো ছেড়ে চলে যাবেন না তো??তাহলে হয়তো আমি মরে যাবো…..আমার ভুল হলে আপনি আমাকে মারুন কাটুন তবুও আপনার কাছেই রাখবেন আমায়……”
“হ্যায় লেডি…..বলেছিলাম না তুমি পরশের চয়েস…..সো পরশেরর কোনো জিনিস কখনো কম দামী হয় না।আর তুমি তো বউ আমার।সব চেয়ে বেস্ট চয়েস…..তুমি ভালো না বাসলেও বাকী টা জীবন আমার সাথে পাড় করতে হবে তোমায়….যখন ভালোবেসেই ফেলেছো ভালো করেছো….না হলে বাধ্য করতাম…..আর ভুল বুঝার কথা বলছিলে তো???”
পরশ একটু বিরতি নিয়ে নিলো,রিদি চেয়ে আছে পরশের মুখের দিকে।
পরশ রিদির কপাল থেকে নাক থেকে ঠোঁট থেকে গলা কমশ্র নিঁচের দিকে একটা আঙ্গুল দিয়ে রেখা টানছে,শিউরে উঠছে রিদি………….পরশের আঙ্গুল টা বুকে নামতেই খপ করে ধরে ফেলে রিদি………
“কি করছেন কি…….”
পরশ রিদির কান্ডে মুঁচকি হেঁসে বেচারীর কানের লতিতে কুট করে একটা কামড় বসিয়ে দিলো………..
“আউচচচচ…….”
“আমার ভুল বুঝার কোনো চান্স নেই বাবু।কাল রাতে তোর শরীরে যৌবনের যা টান দেখলাম না রে……তাতে ঠিক বুঝে গেছি তোর শরীরের মধুর মালিক আমি ছাড়া আর কেউ হতে পারে নি…….ইসসসস রিদি…….. ”
পরশের কথায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে রিদি।এমন অসভ্য বরও কারও হয়।
রিদি পরশকে ধাক্কা দিয়ে উঠতে চাইলো কিন্তু ব্যর্থ সে।
“আরে কোথায় যাচ্ছিস???”
“ছাড়ুন না……”
“আচ্ছা!!!তোমার এজ কত??”
“মানে??? আপনি কি জানেন না??”
“আরে বলো না…..”
“২৯…..”
“আমার দুই বছরের ছোট তুমি…..আচ্ছা!!!তুমি এতো দিন থাকলে কিভাবে??”
“থাকলাম কিভাবে মানে???”
“মানে এতো রূপ যৌবন সামলে নিয়ে একা একা ঘুমানো যায় নাকি??কোনো পুরুষের ছোঁয়া তো…….”
“পরশ!!!!!!!কি সব বলছেন আপনি…..শোনোন আপনি তো সব টা জানেন।আবারও বলি,আমারর সাদাদের প্রতি একটা টান ছিলো বাট বউ হতে চাইতাম আমার শরীর দিয়ে ওর বেডপাটনার হওয়ার ইচ্ছা কোনো দিন ছিলো না আমার।আর আমি কোনো ছেলেকে আমার শরীরে হাত তো দূরের কথা কোনো বসের সাথেও হাত মিলাই নি…..সো কোনো প্রশ্ন ই আসে……আর চাহিদা তো সবার ই থাকে পরশ….সেটা ঠিক সময়ে মিটিয়ে নিতে হয়…তার আগে নিজেকে সামলাতে হয়……আর আমিও তাই করেছি….এতো দিন সামলেছি আর কাল আপনার কাছে সব বিসর্জন দিয়েছি……
আমি হারতে চাই পরশ…প্রতিটা মুহুর্তে আপনার কাছে হারতে চাই…..ভালোবাসায় হারাবেন আমায় আপনি…..যেভাবে….”
“কাল রাত আর সকাল…..”
“ধুর…..”
“হারাবো হারাবো……সারা দিন অফিসেই কেটে যাবে…..বাট রাতে……”
“থামন না প্লিজ….আট টা বাজতে চললো উঠবো….”
“সাওয়ার নিবে???”
“হুম…..”
“পড়ে নিলেও সমস্যা নেই….বাসায় কেউ নেই….”
“মানে???মা-বাবা??”
“ওরা সবাই রাতে বেরিয়ে গেছে….”
“কিহ??”
“হ্যাঁ…..তুমি আমি ছাড়া এ বাসায় আর কেউ নেই…..ওরা সবাই আমাদের ধানমন্ডির বাসায়……”
রিদির মনটা মুহুর্তেই খারাপ হয়ে যায়।কাল বিদায়ের সময় নিজের বাবা-মা,ভাই,ভাবীকে পাশে পায় নি।আর আজ!!প্রথম সকাল শশুড় বাড়িতে ওদেরও দেখা পেলো না।
কাল রাতেই পরেশর মায়ের ব্যবহার দেখে বুঝতে পেরেছিলে রিদি,পরশের মা তাঁকে মানতে পারে নি।
আর এখন তো সব টা ক্লিয়ার।
হ্যাঁ একটা জটলা করেছে পরশের মা।
পরশের মা মানতে পারে নি রিদিকে।তবে পরশের বাবা,দাদী,জেঠি ওরা মেনে নিলেও পরশের মা জোর খাটিয়ে সবাইকে নিয়ে রাতেই অন্য বাড়িতে চলে যান।
আত্মীয়দের বুঝিয়েছেন যে ছেলে আী ছেলের বউকে আলাদা সময় দেওয়ার জন্য অন্য বাসায় যাচ্ছেন ওনারা।
কিন্তু আসল কাহিনী যে অন্য।
পরশের মুখে এমন কথা শোনে রিদির বুক ফেঁটে কান্না আসছিলো।কিন্তু পারছিলো না কাঁদতে।পরশে করুণ কন্ঠে জিঙ্গাসা করলো,
“মা আমাকে মানতে পারে নি তাই না??”
পরশও সোজা কথার মানুষ….সোজাসাপ্টা ভাবে বলে দেয়;
“হ্যাঁ……”
রিদি আর কিছু বললো না।
পরশের বুকেই শরীর ছেড় দিয়ে শুয়ে পড়লো।
চোখ দুটো ভিজে আসছে বারবার তবুও পানি ঝড়তে দিলো না।
মনে মনে ভাবলো হয়তো এটাই ওর প্রাপ্য।
বিকালের দিকে নৌশিনকে হসপিটাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।
নৌশিনের বাবার বাড়ীর সবাই খুব করে সাদাদের বাবাকে বললো,মেয়েকে কিছুদিন ওরা নিজেদের বাসায় রাখতে চায়,সাথে সাদাদকেও।
নৌশিনের পাশে যে এখন প্রতিটা মুহুর্তেই সাদাদকে চাই।
তাই হলো।সবার কথা তো আর ফেলে দেওয়া যায় না।
কিন্তু বিপত্তি তো এখানেই….তুবা আর অরূপ কিছুতেই নৌশিনকে যেতে দিবে না।
নৌশিনের ভাবী চালাকি করে বাচ্চা দুটোকে বুঝিয়ে শোনে ওদের সাথে নিয়ে আসে।
নৌশিনের মা মেয়েকে এমন অবস্থায় নিজের কাছে পেয়ে শান্তি পেয়েছেন অনেক।
বাসায় আসা মাত্রই মেয়েকে গরম পানি করে নিজে গোসল করিয়ে দিলেন।
নৌশিনের এমন অবস্থা শোনে ওর মামা-মামীও সিলেট থেকে এসেছে।কিন্তু ওর মামাতো ভাইটা আসতে পারে নি।
ফাইনাল এক্সাম চলে যে তাই।
সাদাদও এসে ফ্রেস হয়েছে।
নৌশিনের মামী সাদাদকে জোর করে খাইয়েছেন।
সাদাদ চাইছিলো না খেতে,নৌশিনের জন্য ওয়েট করতে চাচ্ছিলো কিন্তু মামী শাশুড়ী তা করতে দেয় নি।
হসপিটালে দু দিন তেমন কিছু খায় নি সাদাদ।তাই জোর করে ভালো ভালো খাবারগুলো খাইয়ে জামাই আদর সারলেন আরকি💜💜💜💜💜💜💜
রাতের বেলা নৌশিনকে নিয়ে নিজের বুকের উপর শুইয়ে রেখে ঘুম পাড়ানোর জন্য মাথায়হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সাদাদ।
“জান,এতো ভালোবাসো কি করে???”
“কি??”
“হুম…..”
নৌশিন সাদাদের বুক থেকে মাথা তুলে চোখে চোখ রেখে বলল,
“ভালোবাসি,ভালোবাসি,ভালোবাসি………তাই বিশ্বাসও করি…..না হলে পরিপূর্ণ হবে না তো আমার ভালোবাসা……”
“পাগলী……”
“হুম….তোমার পাগলী।জানো সাদাদ শুধু ভালোবাসলেই হয় না ভালোবাসায় শুধু বিশ্বাস না থাকে তাহলে তো সেটার কোনো সম্মান ই থাকে না।।জীবনে চলার পথে অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে হয় তাই বলে কি ভালোবাসার মানুষটাকে সন্দেহ করতে হবে??আর যদি সে কোনো ভুল করেই ফেলে তাহলে কি তাঁকে ক্ষমা করা যাবে না???জীবন তো একটাই এক জীবনে ভালোবাসা পেয়ে আবারও হারিয়ে ফেলোর কোনো মানে হয় না।ভালোবাসা টিকাতে হলে বিশ্বাস করতে হবে,যেমন টা আমি তোমাকে করি।আর বিশ্বাসের পাশাপাশি ক্ষমাও করতে হবে যেমনটা পরশ ভাইয়া রিদি আপুর সবটা ভুল ক্ষমা করে নতুনভাবে বাঁচার মানে দেখালো ওনাকে।আর আমার সাদাদ তো,তার ভালোবাসার জন্য এত্ত কেয়ার,এত্ত আদর,এত্ত সময়,এত্ত শাসন-বাড়ন এত্ত এত্ত জিনিা তো আমার ভালোবাসাকে দিন দিন মধুময় থেকে মধুময় করে তুলছে।ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে হলে আমার সাদাদের কাছে সবার এটা শেখা উচিত……তাহলে সবার ভালোবাসা টিকে যাবে বৈকী দিন দিন এতে আল্লাহর রহমত বাড়তেই থাকবে………”
সাদাদ অপলক নৌশিনকে দেখে যাচ্ছে।আসলেই ভালোবাসা বাঁচাতে হলে নৌশিন যা যা বলছে সেসব থাকা দরকার।তা না হলে ভালোবাসার মাধুর্যটাই টিকে না।
সাদাদ জড়িয়ে ধরলো নৌশিনকে।
নৌশিনও পরয় শান্তিতে সাদাদের বুকে মাথা রাখলো।
কিছুক্ষণ পর নৌশিন মায়াবী সুরে বলে উঠলো,
“সাদাদ……..”
“হুমমম…..”
“একটু আদর করো না…….”
“কিহ??”
“এতো অবাক হওয়ার কি আছে???একটু আদর করো না প্লিজ…….”
“চুপপপপ……বারো টা বাজে ঘুমাও……”
“প্লিজ…..একটু……প্লিজ…..”
“নৌশিন।ঘুম দরকার তোমার…..”
নৌশিন নিজের ঠোঁট দুটো সাদাদকে দেখিয়ে বললো,
“দেখো না কেমন শুকিয়ে গেছে…..প্লিজ জান…….”
নৌশিনের চোখে সাদাদ আজ ওকে পাওয়ার নেশা দেখতে পাচ্ছে।কিন্তু নৌশিনের শরীর যে খারাপ।ঘুম দরকার।
“জান,কাল খুব আদর করবো…..আজ না….আজ ঘুমাও…….”
“আমার তো আজ আদর পেতে ইচ্ছা করছে……….তুমি জানো রিদি আপু বিকালে ফোন করেছিলো,আপুর কথা শোনে মনে হলো কাল রাতে পরশ ভাইয়া খুব আদর করেছল আপুকে……..আমাকেও করো না তুমি…….যেমন ফুলশয্যার রাতে করেছিলে………..”
সাদাদেরও যে নেশা লেগে আসছে।কিন্তু সাদাদের খটকা লাগছে নৌশিন কেনো এমন মাতলামো করছে।ওর কথাগুলো এমন কেনো শোনাচ্ছে।কেমন নেশাতুরের মতো।একটু আগে তো গলা টা এমন শোনাচ্ছিলো না।নামায পড়ে আসলো তখন তো ভয়েস এমন হয় নি।
সাদাদ ভাবতে ভাবতেই নৌশিন ওর গা থেকে উড়না টা ফেলে দিলো,
“এই ছেলে,তুমি একদিন কি বলেছিলে???আমাকে জামা পড়লে বাচ্চা বাচ্চা লাগে তাই না??এখন তো আমি জামা পড়ে আছি,আর দেখো তো ওড়না নেই…….এখনও কি বাচ্চা বাচ্চা লাগে?????কি সুন্দর ফিগার???তাই না????
এই বলো না??”
সাদাদ তো অবাক কি হলো নৌশিনের।নৌশিন তো এমনভাবে কখনো বলে না।
সাদাদ নৌশিনের কপালে হাত দিয়ে দেখলো।কিন্তু কোনো জ্বর নেই।তাহলে???
“এই ছেলে কি ভাবছো??বলে না??ফিগার রা সুন্দর না আমার।জানো আগে আশা বলতো আমার নাকি জিরো ফিগার,বেশ লাগে দেখতে।
আমার বর নাকি খুব ভাগ্যবান হবে,আর বলতো বরকে খুশি করার জন্য আমি যনো বত্রিশ থেকে চৌত্রিশে আশি……বিয়ের পর তো তাই হলো…..নাও আই আম থার্টি ফর……. দেখবে আর কিছু দিন পর থার্টি সিক্স হবো……হাউ ইমাজিং!!!!এই দেখো না থার্টি ফরে আমায় কেমন লাগছে???ভালো না???”
“নৌশিন…..দেখি শুও তুমি আগে…..আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি ঘুমাও…….”
নৌশিন সাদাদের হাত জোরে খামচি বসিয়ে দিলো……
“আদর করো আগে……আর বলো আমায় দেখতে কেমন লাগছে???ক্লিভেজ টা দেখার মতো তো???সাদাদ!!!কাম……”
সাদাদ নৌশিনকে খেয়াল করছে।আজ যেনো বেশি উতলা হয়ে আছে এই মেয়ে।
তবে ওকে আসলেই বেশ লাগছে।যা সাদাদকে ওর কাছে টানতে বাধ্য করছে।যে কোনো হাসবেন্ডই তাঁর স্ত্রীর এমন ফিগার দেখে আসলেই আকর্ষিত হবে।যেমন টা সাদাদ হচ্ছে নৌশিনকে দেখে।
“ঐ……তোমার কি ভালো লাগছে না আমাকে দেখতে???ওয়েট……”
নৌশিন জামার পেছনের হুকগুলো খোলা শুরু করলো।
সাদাদ রীতিমতো শকড এবার।
নৌশিনের হলো টা কি।
সাদাদ নৌশিনকে হুক খোলতে দিলো না।নৌশিন এতে রাগ করে হাত পা ছুড়ছে বিছানার উপর।
“এ্যঁ……এ্যঁ…..আমি এক্ষণি বাবাকে গিয়ে বলছি,তোমাদের জামাই আমাকে আদর করছে না…….”
“ঐ….চুপ চুপ…..আস্তে কি হয়েছে তোমার……”
নৌশিন জোরে জোরে চেঁচাতে শুরু করলো,
“আমি ভাইয়া কে বলছি…..সাদাদ আমাকে আদর করে না…..ভাইয়া….ভাইয়া…..”
সাদাদ থামাতে পারছে না নৌশিনকে।কিছু তো উল্টা পাল্টা হয়েছে।না হলে এমন করবে কেনো??
“চুপ,চুপ…..একদম চুপ……আদর করবো……”
“সত্যি?????”
“হ্যাঁ…..সত্যি……”
“আচ্ছা দাঁড়াও….তাহলে বাবাকে বলে আসি,যে তাঁদের জামাই আমাকে আদর করবে এখন……..”
“ঐ…কই যাও…..বসো এখানে….”
“বাবাকে বলবো না??”
“না……চুপ করে বসো….”
“বাবা কে বলি একটু…..”
“আর ইউ মেড??কিসব বলছো??”
“ওকে বলবো না…..আদর শুরু করো…..”
ঢুলছে নৌশিন।কি হচ্ছে সাদাদ বুঝতে পারছে না।
সাদাদ দেরী করছে বলে নৌশিন চোখ খুলে।
“এই ছেলে আদর করো না……তোমার আদর করতে ইচ্ছা হচ্ছে না তো???দাঁড়াও….এটা খাও দেখো ঠিক আদর করতে ইচ্ছা করবে…….”
সাদাদ পুরো হাআআআ…
নৌশিন করেছে টা কি!!!!!
তারজন্যই এতোকিছু????
হায় আল্লাহ্!!!!কি হবে এখন!!!!সাদাদের মাথায় হাত😂😂😂😂😂😂😂
!
“কি হলো???মাথায় হাত দিয়েছো কেনো???খাও……উমমমমমম খাও এটা……”
“হপপপপ…..চুপ করে বসো……”
“এ্যাঁ এ্যাঁ….এ্যাঁ…….ভাইয়া সাদাদ বকছে আমায়….এ্যাঁ……”
“জান জান,প্লিজ এমন করে না।উমমমমমম্মা…..আই লাভ ইউ না??হ্যাঁ???লাভ ইউ তো…….”
“উমমমমম…..বকবে না আর??”
“একদম না…..”
“তাহলে খাও এটা??”
“না ওটা খেতে হবে না….আমি এমনিতেই তোমাকে আদর করছি…..”
“না এতক্ষণ করতে বললাম করলে না কেনো???এখন এটা খাবে তারপর মন ভরে আদর করবে……”
“হ্যাঁ হ্যাঁ…খাবো।।।।।আগে বেডে চলে তুমি।তোমার বেবীর কষ্ট হবে তো…..”
“উমমমমহু….হবে না…..আমি জানি,আমার ব্বাবু ওর বাবার মতোই শক্ত…..জিম করা বডি ওর…….”
“কি আজব!!!তোমার বেবী কি পেটে জিম করে নাকি??”
“বিশ্বাস করছো না আমার কথা???তাই তো???দাঁড়াও….বাবা……বা…..”
নৌশিন হেলেদুলে দরজার কাছে যাচ্ছিলো।
যে ভাবে চিল্লাচ্ছে-থামাতে তো হবে।তাই সাদাদ ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।
আর নৌশিন তো রেগে মেগে আরও ভ্যাম্পায়ার।
ইচ্ছা মতো সাদাদের ঘাড়ে আঁচড় কাটছে।
এলকোহল খেয়ে নিয়েছে এক শিশি।
তাই এই অবস্থা😆😆😆।
নৌশিনের বাবা হোমোপ্যাথির দুটো শিশিতে বাতের ব্যাথা সারানোর জন্য।
আর নৌশিনেরর ছোট বেলার অভ্যাস হোমোপ্যাথির বোতল খালি করা।সেটা হোক তরল বা মিষ্টি গুটি।সামনে পেলেই খায়,যার ই হোক না কেনো।
নৌশিনের বাবা সাদাদের সামনেই এলকোহল টা ঢেলে শিশি দুটোতে কালো দাগ করে রেখেছিলো।তাই নৌশিনের হাতে শিশি টা দেখামাত্র ই চিনে ফেলেছে।
সাদাদ নৌশিনকে,কিস দিয়ে ভুলানোর চেষ্ঠা করছে।তাতে তো বেচারী আরও রেগে যাচ্ছে।সাদাদ ভুলিয়ে ভালিয়ে নৌশিনকে বিছানায় বসালো।
নৌশিন দিকবিদ্বিক শুন্য হয়ে কাঁন্না শুরু করেছে,সাদাদের গালেও খামচি দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
“নৌশিন!!!!!মাইর দিবো কিন্ত এবার….চুপ করে বসো…..”
“এ্যাঁ……এ্যাঁ……….এ্যাঁ……ভাইয়া………এ্যাঁ…..বাবা…..”
এবার কাজ সেরেছে।যা জোরে চিৎকার করেছে নৌশিন,বাসার সবার কানে পৌঁছে গেছে।
“এই চুপ চুপ……আর একটু আওয়াজ করলে…..”
তখনি,দরজার বাইরে কড়া নড়ে………
সাদাদ তো থ….এখন কি হবে।
সাদাদ উঠার আগেই।
নৌশিন দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খোলে দেয়।ওর ভাবীকে দেখা হাউমাউ করে কাঁন্না শুরু করে।
সাদাদ তো অসহায়ভাবে তাঁকিয়ে আছে;কি বলবে সে।
নৌশিনের কান্নায় ওর মামা,মামী,বাবা-মা আর ভাইও ছোটে আসে।
সাদাদের মাথায় পুরো আকাশ ভেঙে পড়েছে।
“কি হয়েছে???”
নৌশিন কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাদাদ নৌশিনের মুখ চেপে ধরে,
“না বাবা,কিচ্ছু হয় নি…..কিচ্ছু না…….”
নৌশিনও কম যায় না।আজকে যে পাউরফুর সে।সাদাদের হাতে জোরে কামড় বসিয়ে দিলো একটা।
“আউচচচচ…….”
সবাই তো নৌশিনের কান্ড দেখে অবাক।কি করছে এই মেয়ে!!!!হাসবেন্ডকে কাঁমড়!
সাদাদ হাত সরানো মাত্রই নৌশিন ছোটে ওর ভাইয়ের কাছে যায়।
নৌশিন ওর ভাইয়ের কাছে যাওয়া মাত্রই ওর ভাই নৌশিনের মুখে কোনো কিছুর গন্ধ পায়।কিন্তু সে রকম ভাবে খেয়াল না করে,জানতে চায়,
“কি হয়েছে বোন???”
সাদাদ কি করবে??ভেবে পাচ্ছে না….শেষমেষ শশুড় বাড়িতে লজ্জায় পড়তে হবে আরকি!!!!
ভাই জিঙ্গাসা করা মাত্রই নৌশিন ভাইয়ের গলা জড়িয়ে বললো,
“ভাইয়া!!!……সাদাদকে কখন থেকে বলছি একটু আদর করতে ও কিছুতেই করছে না…….”
নৌশিনের ভাই ৪৮০ ভোল্টের শক খেয়েছে।নৌশিনের ভাবী তো লজ্জায় কুকড়ে যাচ্ছে শশুড় শাশুড়ীর সামনে,সাদাদেরও একি অবস্থা।নৌশিনের গলার আওয়াজ শোনে কারো আর বুঝার বাকী রইলো না,যে নৌশিন নেশা করেছে।
নৌশিনের বাবা বিষয় টা আন্দাজ করতে পেরে দ্রুত ওনার রোমে যান।যা সন্দেহ করেছে,তাই হয়েছে।
ওনার মেয়ে এ্যালকোহল খেয়ে নিয়েছে।😂😂😂😂
আাবারও ছোটে আসেন।
“বউ মা ওকে ভেতরে নিয়ে যাও……”
“না আমি যাবো না….ছোট সময় যেমন ভাইয়ার সাথে থাকতাম,আজকেও থাকবো……ভাইয়া চলো…..”
“না না বোন,সাদাদ এসেছে যে।সাদাদ একা ভয় পায় তো….”
“ওওও…..তুমি ভাবীর জন্য আমাকে পর করে দিচ্ছো তাই না????এই ভাবী,সাদাদ তো একা ভয় পায়….তুমি আর সাদাদ এক সাথে থাকো যাও…..”
নৌশিনের ভাবীর চোখ ছানাবড়া।
“কি হলো কি গিন্নি…..যাও মেয়েকে সামলাও….মেয়ে হোমোপ্যাথির শিশি থেকে এলকোহল খেয়ে নিয়েছে….”
এতক্ষণে বাকীরা পরিষ্কার করে বুঝলো ঘটনা কি।
নৌশনের বাবা আর কিছু শোনার আগে কেঁটে পড়েন শেখান থেকে।জামাই আর ছেলের বউয়ের সামনে লজ্জায় তো মাথা কাঁটা যাওয়ার উপক্রম;আর লজ্জায় পড়তে চান না।
ওর মামা- মামীও চলে যায়।
নৌশিন ওর ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।
“চল মা…..”
“না আমি যাবো না….”
সাদাদ আর নৌশিনের ভাবী মিলে নৌশিনকে জোর করে ঘরে নিয়ে যায়।
নিজদের সম্মান রক্ষার্থে নৌশিনের মা আর ভাই দ্রুত যার যার রোমে চলে যায়।😂.
“সাদাদ, তুমি একে ধরে বসো….আমি লেবু পানি আনছি……তেঁতুল তো খাওয়া নিষেধ ওর…..”
“হ্যাঁ….তেঁতুলে প্রব….লেবু ই আনো……”
নৌশিনের ভাবী দৌঁড়ে লেবুর পানি আনতে যায়।
সাদাদ নৌশিনকে আটকে রেখেছে কোনো মতো।
নৌশিন তো ছুটার জন্য ইচ্ছামতো পাড়াপাড়ি করছে।
“আহ্….নৌশিন!!!!!”
সাদাদের একটু ধমক শোনেই নৌশিন ঠোঁট উল্টিয়ে কান্না শুরু করলো।এই দৃশ্য টা দেখে সাদাদের হাঁসি পেলো খুব।
“এ্যাঁ……এ্যাঁ……..”
“হা হা হা…….কাঁদে না সোনা……একদম বাবু বাবু লাগছে তোমায়…….”
“উমমমমম….এ্যাঁ…..কি বললি তুই???আমি বাবু????বাইশ বছরের যুবতী আমি….হুম????তুই আমার বর…..”
ঢুলতে ঢুলতে সাদাদের দিকে আঙ্গুল তুলে কথাগুলো বললো নৌশিন।আর কথা বলার মাঝেই আস্তে আস্তে হেলে পড়লো সাদাদের বুকে।
চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলেছে।
“এই,নৌশিন???ঐ……নৌশিন????”
ঘুমিয়ে গেছে বেচারী।
মুঁচকি হাঁসলো সাদাদ।
ঘুমের ঘোরেও সাদাদকে শক্ত করে খাঁচমে ধরে রেখেছে।
নৌশিনের ভাবী আসছে।
পাগলীটার গাঁয়ে উড়না নেই।
সাদাদ উড়না পেঁচিয়ে দিয়ে,ঘুমন্ত রাণীটাকে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে রাখলো।
“হায়!!!ঘুমিয়ে গেলো নাকি???”
“হ্যাঁ…..তুমি রেখে যাও….আমি খাইয়ে দিবো…..”
“আচ্ছা…..আর ভাই কিছু মনে করো না।কিসব বলে ফেলেছে সবার সামনে……কি আর করার……”
“আরে না না ভাবী….ব্যাপার না……”
“আচ্ছা,ঠিক আছে,কোনো দরকার পড়লে ডেকো কেমন??”
“সিউর……”
!
সাদাদ নৌশিনকে ঠিক করে শুইয়ে দিলো।দুটো বালিশ দিয়ে মাথাটা একটু উঁচু করে চামচ দিয়ে একটু একটু করে লেবুর পানি মুখে দিচ্ছে।
বেশ কয়েকবার খাওয়ানোর পর,কাঁশতে কাঁশতে উঠে বসে নৌশিন।
এমনিই খেতে পারে না।তার উপর শরীর খারাপ!!আর তার মাঝে পেটে পড়েছে এক শিশি এলকোহল…..কি অবস্থা!!!!
সাদাদ ধরে ঠিক করে বসাতে বসাতেই সাদাদের শরীরে থরথরীয়ে বমি করে দেয় নৌশিন।অথচ বেচারী কিন্তু এখনও সর্ম্পূণ সজাগ না।
বমি করে শরীর আরও ক্লান্ত হয়ে গেলো নৌশিনের।
সাদাদের পোশাক তো নষ্ট করেছেই সাথে নিজের জামাও।
সাদাদের মুখে বিন্দু মাত্র বিরক্তের ছাপ নেই।
অথচ মুঁচকি হাঁসলো নৌশিনের কান্ড কারখানা দেখে।
নৌশিনকে শুইয়ে দিয়ে,কার্বাড থেকে নৌশিনের একটা জামা এনে চেন্স করিয়ে দিলো মেয়েটাকে।বার্রোমে নেবার তো আর উপায় নেই,বাথরোমের মগে করে পানি এনে মুখ পরিস্কার করে দিলো।
নিজের শার্ট টাও চেন্জ করে নিলো বেচারা।
বিছানাতে বেশি না হলেও একটু একটু ময়লা লেগেছে।
নৌশিন যা খুতখুতে মেয়ে;যদি সকালে উঠে দেখে এরকম নোংরা বিছানায় শুয়েছিলো সে তাহলে এই চাদরকে আর চাদর রাখবে না গরম পানিতে চুবিয়ে মারবে!!!
আর এরকম একটা চাদরে রাখার কারণে সাদাদেরও কথা শোনতে হবে যদিও চাদরটার সাইডে একটু ময়লা লেগেছে।
সাদাদ এবার বহু কষ্টে একটা চাদর খুজে পেলো কার্বাডে।
নৌশিনকে কোলে নিয়ে এক হাতে বিছানার চাদর টা শরিয়ে,নতুন চাদর টা বিছানায় রাখলো কোনো মতো।
নৌশিনকে সাইডে শুইয়ে দিয়ে কোনোমতো ঠিকঠাক করে নৌশিনকে নিজের বুকের উপর নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকালের আলো চোখে আসতেই ঘুম ভাঙে রিদির।
চোখ খুলতেই নিজেকে পরশের বুকে আবিষ্কার করলো।
নিজেকে খুব সাবধানে পরশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে ওয়াশরোমে চলে গেলো সে।
আয়নায় নিজেকে দেখছে আর নিজেই যেনো লজ্জা পাচ্ছে।
“পরশ টা না সত্যিই☺☺☺….”
সাওয়ার নিয়ে কালো রঙের একটা শাড়ি পড়ে বের হয়ে আসে।
পরশ ঘুমাচ্ছে।মুঁচকি হেঁসে গুনগুন করে গান গাইছে আর চুল ঝাড়ছে।
পেছন থেকে পরশ এসে জড়িয়ে ধরলে,প্রথমে তো চমকে উঠে।
“একি,আপনি উঠে গেলেন??”
“হুম…..”
“যান ফ্রেস হয়ে নিন তাহলে…..”
“এতো আগে উঠেছো কেনো??”
“আগে কোথায় উঠলাম??সাত টা বাজে তো…..”
“তুমি তো আগে আট টার আহে উঠতে না কখনো….তাহলে??”
“বারে তখন কি কেউ……”
থেমে গেলে রিদি।কি বলতে যাচ্ছিলো😂😂😂………
পরশ রিদিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো,লজ্জায় রিদি মাথা নিঁচু করে রেখছে।
“কেউ???কি???”
“কিছু না যান তো…..”
“বলো….”
“পরশ!!।।।।।”
“বলতে হবে……না হলে তো ছাড়বোই না…..ইউ নো না??পরশ যা চায় তাই সে করে….সো একবার যেহেতু বলেছি তোমার মুখ থেকে শোনবো তার মানে শোনবো….”
রিদি অফ মোডে গিয়ে বললো,
“আপনি না….সব সময় জোর দেখান আমার সাথে……”
“সারা জীবন দেখাবে…..আর তোমাকে সেটা মেনে নিতে হবে।এটাই আমার ভালোবাসা….সো তাড়াতাড়ি বলো……”
“আপনি কি বুঝতে পারছেন না?? আমি কি বলতে যাচ্ছিলাম???”
“নো…..”
“কেনো মিথ্যা বলছেন??”
“বলো…..এন্ড হারিআপ….”
কি করার!!যা রাগ এই পরশের…এখন যদি না বলে তাহলে হয়তো রেগে মেগে বাড়ী ভাঙচুর শুরু করবে।
তাই কোনো রকম বলল,
“তখন আগে উঠতাম না কারণ তখন তো আর বিবাহিত ছিলাম না…..এখন আগে উঠি কজ নাউ আই আম মেরিড……”
“মেরিড????এর সাথে সকাল সকাল উঠার কি রিলেশন??”
রিদি,পরশকে একটা কুনুই মেরে বললো,
“ছোট খোকা জানেনে না বুঝি???”
“কিহ্????”
“কিছু না।অসভ্য একটা…..”
“খুব……”
“সরুন তো…..”
“যদি না সরি??”
“আহ্….পরশ যান তো সাওয়ার নিন…..আমাকে চুল মুছতে দিন।শাড়ি ভিজে যাচ্ছে…..”
“ভিজুক না…..ভেজা শাড়িতে তো তোমায় খুব…..”
“শিসসস…..একদম না।খালি অসভ্য কথাবার্তা।যান সাওয়ার নিন….”
রিদি যে আঙ্গুল দিয়ে পরশের ঠোঁট আঁটকে রেখেছে সেটাতে পরশ কুট করে কামড় বসিয়ে দিলো।
“আহহহহহ্………”
“হা হা হা হা হা হা……”
“ওহু মা গো।কি রাক্ষস আপনি????ওফফ…..ব্যথা পাই না বুঝি???”
“কই দেখি???”
বলেই পরশ রিদির যে আঙ্গুলে কামড় দিয়েছে সেটা নিজের মুখে ঢুকিয়ে নিলো।
দুজন দুজানার দিকে অপলক তাঁকিয়ে আছে।পরশ আনমনে রিদির আঙ্গুল টা চুষে নিচ্ছে।
রিদি আবেশে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে,ধুকপুকানি বেড়ে যাচ্ছে।
আর সহ্য করতে পারলো না রিদি,ঝাপটে পড়লো পরশের বুকে।দু হাতে টি শার্ট খামচে ধরছে।
পরশ কি এমন সুযোগ মিস করবে না কি!!!
সে ও রিদির ভেজা চুলগুলো সরিয়ে উন্মুক্ত ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে আদর করতে শুরু করে।গলায় মুখ দেওয়া মাত্র পরশকে ধাক্কা দিয়ে সরে যায় রিদি।
“কিচ্ছু হবে না যান বলছি সাওয়ারে…….”
“আচ্ছা!!!আমার সাথে বাড়াবাড়ি তাই না???”
“দেখুন পরশ,ভালো হবে না কিন্তু……সব সময় বেশি বেশি তাই না???ভয় পান না বুঝি????”
“কিহ্????”
“হ্যাঁ……ভয় পান না???আপনার যেমন রাগ তেমন আমরাও……”
পরশ এগিয়ে যাচ্ছে রিদির দিকে।সেটা দেখেই রিদি দৌঁড়ে রিদি বের হয়ে যেতে চাইলো,কিন্তু পারলো না তার আগেই পরশ ধরে ফেলে।
“ওহুহুহু……ছাড়ুন….লাগছে তো……”
“তো????লাগুক……কি যেনো বলছিলে???”
“কি ছু…. নাআআআ……”
“কে কাকে ভয় পায়???”
“কেউ না…..”
“তাই???”
“না…..আ ম…আমি পাই…..ছাড়ুন এবার….লাগছে….”
“শাস্তি তো পেতেই হবে….”
“নাআআআআ……”
“চুপপপ…….”
“উমমমম না…..প্লিজ ছেড়ে দিন…..”
“আজকে শরীরে ঘ্রাণ টা কিন্তু অন্য রকম লাগছে……”
“নতুন বডি ওয়াশ ছিলো তাই……”
“কেনো নতুন??আমাকে কাছে টানার জন্য তাই না??”
“হুমমম নাআআ…..”
মুঁচকি হাঁসলো পরশ।রিদি কিছহ বুঝে উঠার আগেই পাঁজা কোলে তুলে নিলো তাঁকে।
“আহহ….পরশ কি করছেন??ছাড়ুন…….”
“হুসসসস…….শাস্তি পেতে হবে…..”
“নাআআ….প্লিজ…..”
“আমাকে রেখে সাওয়ার নেওয়ার শাস্তি,আমি নাকি তোমাকে ভয় পাই…..দুটো উল্টাপাল্টা করে ফেলেছো…..”
“আর হবে না প্লিজ….রোজ রোজ আপনার সাথেই সাওয়ার করবো….আমি তো আপনাকে ভয় পাই……এটাই সত্যি…..প্লিজজজজজ…..”
পরশ রিদিকে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজের সমস্ত ভর রিদির উপর দিয়ে দিলো।
দেরী করলো না এক মুহুর্তও ঠোঁট ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
গলায় মুখ দিতে যাবে বাঁধা দিলো রিদি………
“প্লিজ….সাওয়ার নিয়ে নিন না…..”
“শাস্তি কিন্তু বাকী….বাঁধা দিলে আরও বেশি পেতে হবে……”
“আমিও কিন্তু শাস্তি দিবো….”
“কিহ্???”
“হ্যাঁ….আপনি পরশ চৌধুরী হলে আমি কিন্তু কাল থেকে রিদি চৌধুরী হয়ে গেছি মাথায় রাখবেন……”
“আচ্ছা!!!”
“হুমমমম…..নামুন না উপর থেকে…..কত ভারী আপনি….”
“কি??”
“হ্যাঁএএএ……”
“হুপপপপপ….আস্তে চিল্লাও…..”
রিদি পরশের ঘাড়ের পেছনে দু হাত বেঁধে মায়াবী চোখে তাঁকালো পরশের চোখের দিকে।পরশ এ চাহনীতে মাতিয়ে যাচ্ছে একদম।
ছেলেরা নাকি বশ হয় মেয়েদের কাছে।হয়তো রিদি তাই করলো,চাহনীতে বশ করে নিচ্ছে পরশকে।
“আচ্ছা,ডান….আস্তেই বলছি…আর চিল্লাবো না….”
খুব মিষ্টি কন্ঠে বলল রিদি।
পরশের ঘোর কাজ করছে রিদির উপর।যেনো কোনো সাপ সাপুরের কাছে বশিত হচ্ছে।
“আমার উপরেই থাকুন উঠতে হবে না আপনাকে……”
“আচ্ছা????”
“হুম……”
রিদি হয়তো বুঝতে পারে নি।এ সাপ যে সে সাপ না।এ সাপ বিষে ভরা নাগ।
তাই তো নাগ বশে হলো তো হলোই সাথে নেশাও লেগে গেলো।কোনো শাসন বারণ ছাড়াই নাগিনীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।
“পরশ,কি করছেন??ছাড়ুন….”
আর কোনো কথা হলো না।
হারিয়ে গেছে পরশ রিদির মাঝে।
রিদিও আর নিজেকে সামলাতে পারছে না।
সারা দিতে হলো পরশের ভালোবাসায়।
আকড়ে ধরলো পরশকে।
দুজনেই আবারও নতুন করে ডুব দিলো ভালোবাসার অথৈ সাগরে।
এদিকে ফযরের আযানে আজ নৌশিনের ঘুম ভাঙে নি।
তবে রোজকার অভ্যাসে সাদাদেরর ঘুম ভেঙে গেছে সাড়ে পাঁচটার দিকে।
আগে অবশ্য একা একা এতো সকালে উঠতে পারতো না।
নৌশিন আসার পর থেকে নৌশিন তো সব সময় ডেকে উঠায় এই সময়ে তাই আজ এমনিতেই ঘুম ভেঙে গেছে।
সাদাদ নামায পড়ে শুয়েছে আবার নৌশিনের পাশে।
আট টা বাজার পথে অথচ এখনো নৌশিনের ঘুম ভাঙলো না।
সাদাদও ডাকছে না,বরং মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আর মাঝে মাঝে জামার উপর দিয়ে পেটে হাত রেখে অনাগত ভবিষ্যৎ টাকে আদর করে দিচ্ছে।
কিচ্ছুক্ষণ পরই মিটমিট করে তাঁকায় নৌশিন।ভালো করে চোখ খোলতে পারছে না তবুও বুঝতে পারলো;যে সে সাদাদের বুকে শুয়ে আছে।
“সাদাদ………”
ঘুম কন্ঠে বলে উঠলো নৌশিন।
সাদাদ দ্রুত আরও জোরে ঝাপটে ধরে নৌশিনকে……..
“উঠে গেছো জান???”
“হুমমমমম……”
“গুড তো…..”
“কেমন জানি চোখ মেলতে পারছি না।কটা বাজে???”
“আট টা দশ…..কেমন লাগছে???”
“কিহ্???…..”
দ্রুত উঠার চেষ্ঠা করলো নৌশিন।কিন্তু মাথা ভার লাগার কারণে আর পারলো না।
“আস্তে….অসুস্থ তো…..”
“আট টা বাজে আর আমি এখনো ঘুমাচ্ছি।নামায মিস হয়ে গেছে আমার…….”
আবারও উঠতে চাইলো….
“ওহহহহহ…..মাথা এমন ঝিমঝিম করছে কেনো…..ওহহহ…..”
“ঝিমঝিম করাটাই তো স্বাভাবিক……..হেয়য়য় আমি হেল্প করছি তো উঠতে নাকি????…..”
সাদাদ নৌশিনকে বুকে নিয়েই উঠে বসলো।
নৌশিন ভালো ভাবে মাথা তুলতেই পারছে না।
সাদাদের বুকে মাথা রেখেই বলল,
“মাথা টা কেমন জানি লাগছে……মনে হচ্ছে ওজন হয়ে গেছে খুব……”
“এটাই তো হবে…….লুকিয়ে লুকিয়ে উল্টাপাল্টা জিনিস খাবে…..আর এমন হবে না…..”
“আমি আবার কি করলাম??”
“কি করলাম তাই না??”
অসহায় দৃষ্টিতে সাদাদের দিকে তাঁকিয়ে বলল,
“কি??”
“কি খেয়েছিলে কাল রাতে???”
“মানে???”
“বাবার হোমোপ্যাথি ঔষধের শিশি চুরি করে এনেছিলে না???”
এই যা।এতো দিনের অভ্যাস এবার সাদাদের সামনে চলে এলো!!!নৌশিন কি বলবে এখন???
“কি চুপ হয়ে গেলে তো।কত দিনের অভ্যাস??”
“আ……আমি…..”
“হ্যাঁ তুমি,জানো তুমি ঐ শিশিতে কি ছিলো??”
“কি??”
“এলকোহল……”
নৌশিন তো পুরো থ!!!এটা কি করে সম্ভব???কিছুতেই তো বুঝতে পারছে না সে।
“কিহ্???এলকোহল মানে??”
“হ্যাঁ……পাগলী…… ”
“কিসব বলো??এলকোহল আসবে কোথা থেকে??”
“বাবা আমার সামনেই বাত ব্যাথার ঔষধ করার জন্য ঐ শিশি গুলোতে এলকোহল ভর্তি করে এনেছিলো।আজ হোমোপ্যাথি ডক্টর কাছে যাওয়ার কথা ছিলো ওনার।
সব হোমোপ্যাথি ঔষধে এলকোহল তো দেওয়া থাকেই তাই না….বাবা ঔষধ তৈরী করে আনবে বলে নিজেই এলকোহল নিয়ে যেতে চেয়েছেন….আর তুমি সেটাকে হোমোপ্যাথি ঔষধ ভেবে খেয়ে নিয়েছো…………”
“আল্লাহ্!!!!”
“এখন অবাক হচ্ছো???আরও কি করেছো তুমি,মনে আছে??”
“আরও!!!মানে কি করেছি???”
“আস্তে,দেখছো যখন মাথা তুলতে পারছো না তবুও বারবার মাথায় বল কেনো দিচ্ছো??ব্যথা লাগবে না…..”
“আচ্ছা,সরি😞😞।।।।তোমার বুকেই আছি তো এখন……বলো….”
“বাইরে কি করে যাবো আমি তাই ভাবছি……”
“কেনো???বাইরে যেতে কি সমস্যা???”
“তুমি যা সব বলেছো রাতের বলা তারপর বাসার সবার সামনে কি করে যাবো??
মান সম্মানের বারোটা বাজিয়ে দিছো নেশায় পড়ে……”
“আমি কি করেছ বলবে তো আগে……”
করুণসুরে বললো নৌশিন।
তারপর সাদাদ নৌশিনকে রাতের সমস্ত কাহিনী খুলে বলে।নৌশিনের মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।কিসব করেছে বেচারী!!!!
“উমমমমমম…..আমি ভাইয়ার সামনে কি করে যাবো??ছিঃ ছিঃ।।।।।শেষে ভাইয়াকে এসব বললাম??আর ভাবীকে তোমার সাথে……ও নো……”
নৌশিনের মুখটা দেখে সাদাদের হাঁসি পাচ্ছে খুব।
অবশেষে হেঁসেই ফেললো।
“এই….তুমি হাঁসছো??তারমানে তুমি আমার সাথে মজা করছো না তো???আমার তো কিচ্ছু মনে নেই……জাস্ট এটা মনে আছে যখন ঔষধ টা খাচ্ছিলাম কেমন জানি একটা বাজে স্মেল আসছিলো….”
“শোনো….যা করেছো করেছো….আরর যদি কোনো দিন ঔষধ খেয়েছো,তাহলে কি করবো যে তোমাকে….আমি নিজেও জানি না।নিজের ঔষধের তো খোঁজ থাকে না,জোর করে মুখে ঢুকিয়ে দিতে হয়।আর হোমোপ্যাথি হলে,ইসসস!!যেনো কি না কি…কত রকমের সাইড ইফেক্ট হতে পারে…..ভাবতে পারছো…নেক্সট টাইম যদি এমন করেছো তাহলে পিটনা(মাইর😂) হবে জাস্ট…….”
সাদাদের বুকে মাথা রেখেই চুপসে আছে নৌশিন।
“কি মাথায় ডুকেছে তো???নাকি??”
“ওয়াশরোমে যাবো……”
“নিয়ে তো যাবো….বাট আমার কথাগুলো যেনো মনে থাকে…”
সাদাদ নৌশিনকে কোলে তোলে নিলো।
“আরে কি করো??হাঁটতে তো পারতাম,জাস্ট ধরলেই হতো….”
সাদাদ কোনো কথা না বলে নৌশিনকে ওয়াশরোমে নিয়ে টুলের উপর বসিয়ে দিলো একদম।নিজেই দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিলো।
নৌশিন এতক্ষণে খেয়াল করলো ওর জামা চেন্জ।
“সাদাদ,এসব কি??”
“কি আবার??লেবু পানি খাওয়ানোর পর বমি করেছিলে,যদিও বেশির ভাগ আমার শরীরে..তোমার জামায় আর চাদরেও লেগেছিলো তাই চেন্জ করতে হয়েছে……”
নৌশিনের চোখে পানি চিকচিক করছে।এই বুঝি তা গড়িয়ে পড়লো।
চোখ এড়ায় নি সাদাদের।
“এই….কি সমস্যা কি হ্যাঁ??চোখে পানি কেনো??”
“কত কষ্ট দিয়েছি তোমাকে…..”
বলেই সাদাদকে জড়িয়ে ধরলো সাথে সাথে কেঁদেও দিয়েছে।
“ওই পাগলী।সত্যি সত্যি মাইর খাবি কিন্তু এবার।ভালোবাসি যে তাই কোনো কষ্ট হয় নি….”
“আর হবে না এমন…..”
“হুমমম…..সব হবে নো ব্যাপার,জাস্ট আপনি অন্যের ঔষধ মুখে দিবেন না…..এবার চোখটা মুছে দিলাম যেনো পানি না দেখি আর…….”
“হুমমমম……ওকে…..”
“সাওয়ার করিয়ে দিই….আই থিঙ্ক মাথাটা হালকা হবে।এলকোহলের ঝাঁচ টা কমে যাবে…….”
“এখন??”
“হ্যাঁ……”
“একটু একটু শীত তো…”
“তো??বাথরোমের গীর্জার আছে কিসের জন্য???”
নৌশিনকে আর কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সাদাদ জোর করে সাওয়ার করাতে শুরএ করলো।যেনো ফ্রেসনেস বেশি হয় তাই লম্বা চুলগুলোতেও বেশ যত্ন করে শ্যাম্পু করে দিলো।
চেন্জটাও নিজেই করিয়ে দিয়েছে।
এখন নৌশিন এক একা দাঁড়াতে পারছে।গোসল করার ফলে এলকোহলের যতটুকু প্রভাব ছিলো কেঁটে গেছে যে,তাই।
সাদাদ নৌশিনকে ওয়াশরোমের দরজায় দিয়ে বলল,
“এখন,সাবধানে হেঁটে যাবে….আমি তো ভিঁজে গেছি…..সাওয়ার নিয়েই আসি একেবারে……আর চুলগুলো শুকিয়ে নাও……সুন্দর চুলের চিন্তা করো না…..আমার সুন্দর লম্বা চুল না হলেও চলবে,বাট তুমি অসুস্থ থাকলে হবে না…..”
মুঁচকি হাঁসলো নৌশিন।
এতো ভালোবাসা কজনের কপালে আছে!!!
সাদাদের কথাই রাখলো সে।
সাদাদ সাওয়ার নিচ্ছে। আর বিছনায় বসে চুল শুকাচ্ছে।
নিজেকে নিজের কাছেই আজ বাচ্চা বাচ্চা লাগছে।
প্রেমঘোর পর্ব ৯৫+৯৬
আগে যেমন ওর মা এমন করে শ্যাম্পু করিয়ে,পুরো শরীর সাবান দিয়ে মেজে মেজে গোসল করিয়ে নরমাল কামিজ-প্লাজো পড়িয়ে দিতো;তেমন ফিলিংস হচ্ছে নৌশিনের কাছে।
এতো ভালোবাসা পেয়ে নৌশিন আসলেই নিজেকে ধন্য মনে করছে।
আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করছে সে।