প্রেমতৃষা পর্ব ২৬
ইশরাত জাহান জেরিন
বাংলাবাজার। বইয়ের অদ্ভুত নগরকেন্দ্র। যেখানে বইয়ের পাহাড় মানুষ-গড়া নগরের কোলাহলকে ম্লান করে দেয়। সরু গলিপথগুলোতে ধূলিমলিন কাঠের তাক গিজগিজ করে বইয়ে ঠাসা। যেন শতাব্দীর জ্ঞানভাণ্ডার একত্রিত হয়ে এখানে বসত গেড়েছে। দোকানের সাইনবোর্ডগুলো বিবর্ণ, তবু অক্ষরগুলোয় লেগে আছে অমোঘ টান। কালির গন্ধ আর মলাটের গন্ধে ভরে উঠেছে বাতাস। বই বিক্রেতারা সিংহাসনবিহীন রাজা। এই যে তাঁদের কণ্ঠে বাজে দরকষাকষির সুর, পাঠকজনেরা যেন ধন-শিকারি, খুঁজে বেড়াচ্ছে হারানো কোনো মহাগ্রন্থ বা দুর্লভ সংস্করণ এসব তো কোনো রুপকথার থেকে কম যায় না।
দিনের প্রখর রোদে ধাতব ছাদের নীচে উষ্ণতা জমে ওঠেছে। তৃষা বই দেখছে। দাম দরকষাকষি করছে। প্রেম তাকিয়ে আছে তার দিকে। কে ভাবছে কে জানে? কিন্তু তৃষার এখন সেই সব দেখার সময় নেই। প্রেম ভাই বলেছে বই কিনে দিবে। টাকা তো আর তার পকেট থেকে যাচ্ছে না। যাচ্ছে প্রেম নেওয়াজের পকেট থেকে। তৃষার তাতে কি? তবে একটু পর পর আবার অনেক কিছু মনে হচ্ছে। এই যেমন প্রেম ভাইয়ের টাকা ইন ফিউচার তো তারও টাকা হতে পারে। হতে পারবে এটা ঠিক হবে হওয়ার রাস্তাটা বড্ড বেশি কঠিন। যেই শক্ত মনের মানুষ! তৃষা এক হাতে নীল শাড়ির আঁচল সামলে, অন্য হাতে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছে। দোকানির সাথে দরকষাকষিতে তার কণ্ঠ দৃঢ়,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“না ভাই, এই দামে বই বিক্রি চলবে না। দেখেন না মলাট তো প্রায় ছিঁড়েই গেছে।”
প্রেম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে, ঠোঁটের কোণে অদৃশ্য হাসি। দোকানি বিরক্ত হয়ে তাকায়, কিন্তু শেষমেশ কিছুটা কম দামেই বইটা এগিয়ে দেয়। তৃষা বইটা হাতে নিয়ে ফিসফিস করল,”প্রেম ভাই, জানেন? বই কেনা আসলে প্রেমের মতো। দরকষাকষি আছে, জেদ আছে, শেষে যদি মনের মতো পাওয়া যায়, তাহলে আনন্দের শেষ নেই।”
প্রেম তাকিয়ে থাকে তার চোখে। “কিন্তু সব প্রেমের দাম দেওয়া যায়? কিছু তো এমন আছে, যেটার দাম চুকানো অসম্ভব।”
তৃষা হেসে ওঠে, বইটা বুকের কাছে টেনে ধরল, “আপনি বলতে চাইছেন, কিছু বই বা কিছু মানুষ অমূল্য?”
“হুম। কিছু বই যেমন বারবার পড়লেও পুরোনো লাগে না, কিছু মানুষও আছে যাদের কাছে ফিরে আসতে ইচ্ছে করে প্রতিদিন। বার বার, শতবার। তারা কখনো পুরোনো হয় না।”
তৃষার হাত কেঁপে ওঠে বইয়ের পাতায়। সে চোখ সরিয়ে তাকায় মলাটের দিকে। “তাহলে কি আমি এমন একটা বই খুঁজছি? যেটা প্রতিদিন পড়লেও মনে হবে নতুন?”
প্রেম কাছে এসে দাঁড়ায়, কণ্ঠ নরম হয়। “তুমি শুধু বই খুঁজো না, সঙ্গে খুঁজো একটা গল্প। এই ধরো যেমন মানুষ পেলেই হয় না। মানুষটার থাকতে হয় একটা মন। সুন্দর মন না হলে সুন্দর চেহারা, সুন্দর মানুষের কোনো মূল্য আছে? বই ও ঠিক তেমন। মলাট কিংবা প্রচ্ছেদ সুন্দর হলেই যে বইয়ের গল্প সুন্দর হবে তেমনটা নয়।”
তৃষা ঠোঁট চেপে হাসে।” জানেন কি গল্পের নায়িকা হওয়া এত সহজ না, প্রেম ভাই। বইয়ে যত সহজ লাগে, বাস্তবে রাস্তাটা অনেক কঠিন।”
“তবু না পড়া যায়, না ফেলে দেওয়া যায়।”
তাদের চোখ এক মুহূর্তের জন্য আটকে যায়। বাংলাবাজারের মতো শহরে হঠাৎ নেমে আসে প্রবল বৃষ্টি। গলির সরু পথগুলো মুহূর্তেই কাদামাটির স্রোতে ভরে উঠল। ধুলোমলিন কাঠের তাক, বিবর্ণ সাইনবোর্ড, আর বইয়ের দোকানগুলোর সামনে দ্রুত টাঙানো হচ্ছে নীল-সবুজ ত্রিপল। বিক্রেতাদের চিৎকারে ভরে গেল চারদিক, “এই দিকটা ঢাকো, বই ভিজে যাবে!”
তবু বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ সব কোলাহল ঢেকে দিল। টিনের চালায় পড়া ফোঁটার আওয়াজ যেন অসংখ্য ঢোল একসাথে বাজছে। বাতাসে মিশে গেল ভেজা কাগজের গন্ধ। কালির সাথে মিশ্রিত এক অদ্ভুত মাদকতা। রাস্তার কোণে জমে উঠল পানির ছোট ছোট গর্ত, যেখান দিয়ে ছুটে চলল কাগজের টুকরো, পুরনো পোস্টার, ভিজে যাওয়া বুকলেট। চারদিকে ছাতা নিয়ে হুড়োহুড়ি, কেউবা ছুটে যাচ্ছে দোকানের ভেতর, কেউবা ভিজে যাওয়াকে মেনে নিয়েছে অবধারিত নিয়তির মতো।
আকাশ ঝুলে আছে নেমে আসা মেঘের ভারে, কোথাও বিদ্যুতের ঝলকানি, কোথাও বজ্রের গর্জন। অথচ সেই ভিজে যাওয়া বাংলাবাজার যেন আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছে। দোকানের ছাউনির নিচে এতক্ষণ তৃষা আর প্রেম দাঁড়িয়ে ছিল। মনটা ভীষণ খুশি। আপাতত উইশলিস্টে ২৭৮ টা বই জমা করেছিল। সব গুলো প্রেম ভাই তাকে তাকে এমনি গিফট হিসেবে দিবে বলেছে। বইয়ের দাম দেওয়া শেষ। তবে বাসায় নিয়ে যাওয়ার অবস্থায় নেই। শেষে প্রেম বাড়ির ঠিকানা দিলো। হোম ডেলিভারি হবে। পরবর্তীতে এক হাজারের যেন বইয়ের লিস্ট ছাড়া তৃষা এখানে আসে না তাও খুব করে শাসিয়ে বলল প্রেম ভাই। ছাউনির নিচে তৃষা বার বার হাত ছুঁয়ে বৃষ্টির স্পর্শতায় ডুবে যাচ্ছিলো। শেষে না পেরে প্রেম কে বলল, ‘একটা অনুরোধ রাখবেন কি?’
‘শুনি।’
‘বৃষ্টি পড়ছে প্রেম ভাই।’
‘কেন তুমি কি চাও বৃষ্টির বদলে হিসু পড়ুক?’
‘আরে তা কোথায় বললাম। এই প্রেম ভাই চলুন না ভিজি। আপনার সমস্যা হলে বলুন। আমি একাই ভিজব।’
‘গায়ে এক ফোঁটা পানি তো লাগুক একবার ম্যাডাম আপনার।’
‘স্যার দয়া করে এত কঠোর হবেন না।’
প্রেম তৃষার মুখের দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে শেষে বলল, ‘আচ্ছা ভিজো। কিন্তু শরীর যেন না ভিজে।’
‘মানে কি? আমি ভিজলে শরীর কি না ভিজে থাকবে নাকি?’
‘শাড়ি ভালো পড়েছো কিন্তু ভিজে গেলে তো গায়ের সঙ্গে লেগে যাবে। পুরুষ মানুষের নজর কেমন আইডিয়া আছে?’
‘আপনিও তো পুরুষ মানুষ।’
‘আমি আর আর দশটা পুরুষ এক হলাম কি? সবার সব জায়গায়, সব কিছুতে অধিকার খাটেনা। আর তুমি হচ্ছো তোমার ফিউচার স্বামীর সম্পদ। তোমার শরীর কেন অন্য পুরুষ দেখবে?’
‘আপনি যে দেখছেন।’
‘আমি যে অন্য পুরুষ নই বোকা মেয়ে। আমি তো তোর ব্যক্তিগত পুরুষ।’ ধীরে বলল প্রেম। তৃষা সেই কথা বুঝতে পারল না। বলল, ‘কিছু বললেন নাকি? মনে মনে গালি দিচ্ছেন না তো আবার?’
‘যাও ভিজো গিয়ে।’ বলেই প্রেম ওপরের শার্টটা খুলে রাখতেই তৃষা বলল, ‘নেংটু হচ্ছেন কেন?’
‘আরে শার্টটা ভিজলে সমস্যা।’
‘কিসের?’
‘তোমার তো গা ভিজে যাবে। ভিজা যা নিয়ে মানুষ দেখিয়ে তো বাড়ি নিয়ে যেতে পারি না? শার্টটা পরে গায়ে জড়িয়ে নিবে।’
তৃষার ভেতরে কেমন অনুভূতি হচ্ছে তা সে নিজেও ব্যাখ্যা করতে পারবে না। এই লোকটা বদ থেকে ভালো কি করে হয়ে যাচ্ছে। আর তৃষা কেন বার বার তার মোহে অন্ধ হচ্ছে। তৃষা আকাশের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলল, “জানেন প্রেম ভাই, বৃষ্টি আমার কাছে সবসময় একধরনের মায়া। কি মনে হয় জানেন? মনে হয় আকাশ মানুষকে ছুঁয়ে দিতে চায়, কিন্তু পারে না, তাই অশ্রুর মতো ঝরে পড়ে।”
প্রেম হেসে বলল, “তবে আমার কাছে বৃষ্টি মানে স্মৃতি। যতবার ভিজি, ততবার মনে হয় আগের কোনো দিন আবার ফিরে এসেছে।”
“হয়তো এ কারণেই মানুষ বৃষ্টিকে এত ভালোবাসে। এতে যেমন ভিজে যাওয়া আছে, তেমনি হারানো দিনের গন্ধও আছে।”
প্রেম চোখ নামিয়ে, “তুমি কি জানো ভালোবাসাও অনেকটা বৃষ্টির মতো? যতই আটকাতে চাই, ততই ছুঁয়ে যায়।”
তৃষা মৃদু কাঁপা গলায় বলল, “কিন্তু প্রেম ভাই, বৃষ্টি তো সবসময় শান্তি আনে না। কখনো সে ঝড় হয়ে আসে, ভেঙে দেয় আশ্রয়। ঠিক ভালোবাসার মতো… যা আনন্দও দিতে পারে, আবার বিচ্ছেদের কষ্টও।”
প্রেম তৃষার দিকে গভীর দৃষ্টিতে বলল,”হয়তো ভালোবাসার আসল সৌন্দর্যই এখানেই—তার ভেতরে আনন্দও আছে, কষ্টও আছে। যেমন কোনো গল্প শেষ হয়ে গেলেও তার স্মৃতি বেঁচে থাকে।”
“তাহলে… যদি কোনোদিন এসব গল্প যদি শেষ হয়ে যায়?”
প্রেমের চোখে বৃষ্টির ফোঁটা আর না-বলা কথার মিশ্রণ, “শেষ হলেও গল্পটা মুছে যাবে না, তৃষা। তখনও মায়া থাকবে, স্মৃতি থাকবে… আর হয়তো বৃষ্টির মতোই ভালোবাসা ফিরে আসবে অন্য কোনো রূপে।”
তৃষা তখনো দাঁড়িয়ে আছে ভিজে যাওয়া রাস্তায়। নীল শাড়ি ভিজে গা বেয়ে ঝরে পড়ছে ফোঁটাগুলো। প্রেম তার পাশে। দু’জনেই চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। চারপাশে বইয়ের দোকানদাররা ছুটছে। হঠাৎ প্রেমে টেনে তৃষাকে নিজের কাছে নিয়ে আসতেই তৃষার বুকটা কেমন ভার হয়ে গেল। তৃষা আশপাশে কেউ আছে নাকি দেখার জন্য এপাশ-ওপাশে তাকাতেই প্রেম তার থুতনি ধরে তাকে নিজের দিকে ফেরালো। তৃষার শ্বাস-প্রশ্বাস যেন আরো তীব্র হয়ে উঠল। শরীরে সৃষ্টি হলো একটা ভয়ানক শিহরণ।
প্রেম তার কোমরে হাত রাখতেই যেন শিহরণ হলো আরো তীব্র। আশপাশে তখন কোনো মানুষ নেই। ফাঁকা বাংলাবাজার। দূর থেকে ভেজা বুড়িগঙ্গার কালো জলের ওই কেমন যেন একটা গন্ধ এসে শহরকে অন্যরকম সৌন্দর্যে ভরিয়ে তুলেছে। প্রেম তৃষার চোখে চোখ রেখে বলল,”আমি মানুষটা জানি না কি করে ভালোবাসতে হয়। তবে এই টুকু বলতে পারব যেই জিনিস অন্যের মনের শান্তি নিবারণ করে তাতে আমার বিন্দুমাত্র আকর্ষণ জন্মায় না। ওই জিনিসের প্রতি তখন আমার তীব্র ঘৃণার জন্ম হয়। হিমালয় পাহাড়ের কথা শুনেছো না? তার থেকেও উঁচু সেই আমার সেই ঘৃণার পাহাড়।”
তৃষা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে, নীল শাড়ির আঁচল বুকের সাথে লেপ্টে আছে। বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যেন আর গায়ের উপর পড়ছে না, পড়ছে কেবল ভেতরের অস্থিরতার উপর। প্রেমের চোখের দিকে তাকিয়ে সে মুহূর্তে মনে হলো। এই দৃষ্টি ভেদ করে ফেলবে তাকে। তৃষা কাঁপা গলায় বলল,“প্রেম ভাই… আপনি জানেন না আপনার কথা আমার বুকের ভেতর কীভাবে ঢেউ তুলছে। ঘৃণার পাহাড়ের কথা বলছেন? ভালোবাসার মানুষকে ঘৃণা করা যায় বলুন তো? আচ্ছা প্রেম ভাই ভালোবাসা কি দেনাপাওনার মতো?
প্রেম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। ভেজা রাস্তায় তাদের দুজনের নিঃশ্বাস যেন বৃষ্টির শব্দের সাথে মিশে যাচ্ছে।
“ভালোবাসা যদি শুধু পাওয়া আর দেওয়ার হিসাব হয়, তবে সেটা ব্যবসা হয়ে যাবে। দু’টো ভিন্ন শব্দকে এক করলে নতুন শব্দ জন্মায় তবে দু’টো শব্দ একে অন্যের সঙ্গে মিলতে পারে না।’
তৃষা চোখ নামিয়ে ফেলে, আঙুল দিয়ে ভিজে আঁচল মুঠো করে ধরে। প্রেম তার থুতনিটা ধরে আরো কাছে টেনে নেয়। কানের কাছে সুধায়,
“বৃষ্টির ফোঁটায় কাঁপে প্রেয়শীর ঠোঁট, হৃদয়ে জমে প্রেমময় কথা।
যে সে বুঝে না আমায়, বুঝেনা ভালোবাসা
তাকে বোঝাই কেমন করে আমার লুকোনো সকল
ব্যকুলতা?”
তৃষা অস্থির হয়ে যায়, বুক ধড়ফড় করে ওঠে। হঠাৎ সে মুখ ফুসকে বলল,
“তাহলে কেন এড়িয়ে যাচ্ছেন? কেন বলছেন না যে আপনি আমায় চান? আমি তো অন্ধকারে ভিজে যাওয়া বইয়ের মতো আপনার অপেক্ষায় আছি। কাগজ যেমন শব্দ খোঁজে, আমিও তেমন আপনার হৃদয়ের শব্দ খুঁজচ্ছি।”
প্রেম নিঃশ্বাস ফেলে, কপাল ঠেকিয়ে দেয় তৃষার কপালে। “ কেউ একজন বলেছিল চাওয়া মানে নাকি হারানো তাই আমি চাইতে ভয় পাই।
বৃষ্টির ফোঁটাগুলো এবার আরো জোরে ঝরতে থাকে। ফাঁকা বাংলাবাজার, দোকানের সাইনবোর্ডগুলো কাঁপতে কাঁপতে টপটপ করে পানি ফেলছে। দূরের কালো বুড়িগঙ্গার গন্ধ আরও তীব্র হয়ে আসছে।
তৃষার শ্বাস কাঁপছে। প্রেমের আঙুল এবার তৃষার ভিজে গাল বেয়ে নেমে আসে। প্রেম পুনরায় বল, “হারিয়ে যাওয়ার ভয়টাই আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। আমি ভাঙতে ভালোবাসি, ধ্বংস করতে ভালোবাসি। আর তুমি কিনা চাইছো ধ্বংসকারীর ভাঙন জুড়ে দিতে?
তৃষা থরথর করে কেঁপে ওঠে, তারপর ভেজা চোখ তুলে তাকায়। ‘ দুই একটা চাওয়ায় কোনো ক্ষতি দেখছি না।’
প্রেম হঠাৎ তাকে আরো শক্ত করে নিজের বুকে টেনে নেয়। চারপাশে তখন শুধু ঝরঝর বৃষ্টি আর শূন্য রাস্তা। শহর থমকে আছে, কিন্তু তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে উঠছে। ‘ হঠাৎ প্রেম তৃষার হাতে হাত রেখে চোখ চোখ রেখে গলা ছেড়ে নেশালো কণ্ঠে গান ধরে,
~চোখে চোখে চেয়ে থাকা
কবে হবে বলো কথা বলা
আবেগী মন বাঁধা মানে না
তুমি ছাড়া কিছু চায় না……
কি নেশা ছড়ালে? কি মায়ায় জড়ালে?
রাতেরই এ আঁধারে
অজানা ছোঁয়া
মায়াবী চোখে কি মায়া
যেন গোধূলি আবীর মাখা
কি নেশা ছড়ালে!
কি মায়ায় জড়ালে?
কি নেশা ছড়ালে!
কি মায়ায় জড়ালে?~
প্রেমতৃষা পর্ব ২৫
প্রেম হঠাৎ থমকে গিয়ে নিজের সবটা উজার করে দু’টো ওষ্ঠ একে অন্যের মাঝে হারিয়ে গেল। মিলিয়ে গেলো দু’টো বিপরীত টেউ একে অন্যের সঙ্গে। হারিয়ে গেল দু’টো আত্মা শত ভিন্নতাতেও একত্র হয়ে।