প্রেমতৃষা পর্ব ৪
ইশরাত জাহান জেরিন
প্রেম নেওয়াজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে। গলায় গিটারের একটা লকেট পড়ল। হাতে সে ঘড়ি পড়ে না। ওই যে সময় দেখার সময় নেই বলেই। অদ্ভুত ঋষি বাবাদের মতো কতগুলো ব্রেসলাইট হাতে দিলো। চুলগুলোতে তার চিরুনী চালানো লাগে না। সব সময় হাত বুলিয়ে ঠিক করে নেয়। তাতেই তো তাকে দেখতে মেয়েদের প্রেম প্রেম একটা ভাব চলে আসে। কিন্তু ওই মেয়ে মানুষ? ইয়াক! যত দূরে থাকা যায় বাবা। মানুষ ভাবে প্রেম বোধহয় বখাটে। তবে তাকে ভালো করে যারা চেনে-জানে তারা বলতে পারবে মেয়ে মানুষের সঙ্গে তার কী পরিমান এলার্জি। আর গায়ে পড়া মেয়ে হলে তো কথাই নেই।
যেদিন ওমন মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ওইদিন বাসায় এসে একসঙ্গে তিনটে এলাটন খেতে হয়। মানুষের ইলিশ,চিংড়ি, বেগুনে এলার্জি এই জনাবের মেয়ে মানুষে। গায়ে পড়া মেয়েদের প্রেম নিজের তরিকায় ঠিক করে। ওদের সঙ্গে পিরিতের আলাপ জমে না ঠিক। তবে দুষ্টু আলাপের মাধ্যমে অন্তত এদেরকে নিজের থেকে মেপে মেপে দশ হাত দূরে তো রাখা যায়। প্রেমের কানের নিচ বরাবর ঘাড়ের কাছে একটা ছুরির ট্যাটু আছে। সে ট্যাটুটা ভালো করে দেখে খালি গায়েই সাদা রঙের প্যান্টটা পড়ে বিছানায় বসে পড়ে। তার এন্টিক জিনিসের প্রতি আর্কষন কাজ করে। ঘরটা সেসব জিনিস দিয়েই সাজানো। সঙ্গে পুরো ঘর জুড়ে তো প্রেমের তোলা অহরহ ছবি তো আছেই। সারাবছর এদিক-ওদিক ঘুরে ছবি তুলতেই থাকে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
শেষবার সুইজারল্যান্ড গিয়ে ৬ মাস থাকা হয়েছে। শেষে দাদু হার্ট এর্টাকের নাটক করে বাড়ি আনিয়েছে তাকে। তবে এই কাঠের বাড়ি আর তার ডেকোরেশন দাদুভাইয়ের নাকি ভাল্লাগে না। দাদুভাই বলে এটা তো বাড়ি নয় একেবারে চিড়িয়াখানা। দাদুভাই ছাড়া প্রেমের আপন বলতে কেউ নেই। প্রেম আপন করতেও চায় না কাউকে। মানুষ বিশ্বাসঘাতক। জন্ম দেওয়া মায়েরা যেখানে সন্তান ছেড়ে দেয় সেখানে দুনিয়ায় নিজের খেয়ে অন্য কাউকে বিশ্বাস করাও মুশকিল। নিজের মতো আছে এই তো বেশ চলছে দিন কাল। আর কী লাগে? প্রেম গিটারটা হাতে নিয়ে বিছানায় বসে সিগারেট ধরায়। পাশেই টেবিলের ওপর কাঁচের গ্লাসটা ছিল। তাতে মদ ঢালা। প্রেম হাতের সিগারেটটা গ্লাসের মধ্যে ফেলে গিটারটা এবার আরো শক্ত করে কোলে নিয়ে নিজেকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘প্রেম ভালোবাসা তোর জন্য না প্রেম। প্রেমে পরবি তো মরবি। ওপথে যাওয়ার রাস্তাটা তো আছে তবে ফেরার পথ নেই। প্রেমেরা ভালোবাসার জন্য তৈরি হয়নি। তারা ধ্বংস, ধ্বংস থেকে প্রেম সৃষ্টি হয়না।’
প্রেম গিটার টুংটাং করে বাজালো। সুরে সুর মিলিয়ে গান ধরল, ~প্রেম আমার ওওওওও প্রেম আমার~
হেতিজা নেওয়াজ ভাত খাওয়া থেকে সব কিছুই বন্ধ করে দিয়েছেন। একে তো ছেলের জন্য এতগুলো মেয়ে দেখল তার মধ্য থেকে একটাও পছন্দ হয়নি। উল্টো নাকে একটা ব্রণ উঠেছে। কী যে ব্যথা। মুখে কিছু উঠলে হেতিজা সেটাকে যতক্ষণ পারে খোঁচাতে থাকে। কেন খোঁচায় নিজেও জানে না। আবার সে এটাও জানে এই খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দাগটা যে বসে যাবে। তখন সে ডিপ্রেশনে চলে যাবে। কিন্তু তাতে কী আপাতত খুঁচিয়ে তো আরাম আরামই লাগছে। প্রেমা মায়ের ঘরে ঢুকতেই হেতিজা তাকে বলল, ‘প্রত্যুষ আসেনি?’
‘না আসেনি।’
‘ইশ কী ঘোড়ার ডিমের চাকরি। বিয়ে দিলে যদি এত রাত পর্যন্ত ডিউটি করতে হয় তাহলে কী বউ টিকবে? আর আমারও কী নায়-নাতকুর দেখার সৌভাগ্য হবে?’
‘কেন মা আমি আছি না? আমাকে বিয়ে দিয়ে দাও তোমার স্বপ্ন পূরণ করে দেব।’
‘ছি কিসব কথাবার্তা। ঝাঁটা দিয়া বারি মারব সর সামনে থেকে।’
প্রেমা মুখ ভেংচি দিয়ে বলল, ‘গেলাম প্রেম ভাইয়ার কাছে।’
‘যা খালি। আমি তো মুখে বললাম প্রেম দেবেনি একটা বারি তখন খুশি হব।’
প্রেমা মনে মনে আরেকবার মুখ ভেংচি কেটে বলল, ‘আল্লাহ জানে এটা আমার টোকানো মা নাকি আমি নিজেই টোকানো?’
সিদ্দিক নেওয়াজ রাতের খাবার খেয়ে রুমে এসে বসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তার বাম হাত কালুর বাপ ওরফে মোখলেস হোসেন বদরুদ্দোজা রুমে উপস্থিত হলেন। এই বুড়োটা লুঙ্গি একটা পড়ে পুরো অলি-গলি চক্কর দিয়ে বেড়ায়। একেবারে সিদ্দিক নেওয়াজের খাশ লোক বলা চলে। কোন বাড়িতে কী খবর চলছে তা ওই বাড়ি ঘটার আগেই কালুর বাপের কানে চলে আসে। এই তো চিকনচাকন লোক। মুখে দাড়ি নেই। এই বয়সেও ক্লিন সেইভ। কালোমতো গায়ের রঙ। সারাদিন পান খেয়ে মুখ ঠোঁট লাল করে রাখেন। তার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে গেলে অবশ্যই একটা ছাতা খুলে ধরা আবশ্যক। নইলে তো আবার পানের পিক দিয়ে সামনের মানুষটিকে পিকবিলাশ করিয়ে দেবে।
কালুর বাপের ঘিন্নি মরেছে তাও দশ-বারো বছর হবে কিংবা তারও বেশি। খেয়াল নেই তার। কিন্তু পৃথিবীর সব সুন্দরীদের সে বউয়ের চোখে দেখে। ইয়ে মানে সবাইকেই তার মৃত বউ নার্গিসের চোখে দেখে। বউকে এতই ভালো বাসে যে যেখানে সেখানে লুঙ্গি পড়ে নার্গিসের গানে কষ্টে মাজা ঢুলানো নাচ করে বেড়ায়। এই তো কিছুদিন হলো সিদ্দিক কালুর বাপকে বলেছে প্রেমের ওপর নজর রাখতে। নাতিকে একবার হাতে না হাতে কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখলেই এবার কট দিয়ে বিয়ে পড়িয়ে দেবে। সিদ্দিক নাতিকে দেখিয়ে দেবে সে যদি ডালে চলে তাহলে তার দাদুও চলে পাতায়। কালুর বাপ কাল যাবে ভার্সিটি। এবার হাতে না হাতে নেওয়াজ বাড়ির ছেলেকে ধরতে না পারলে সে নিজেই নার্গিসের গানে নাচা ছেড়ে দেবে। হুহ!
সারারাত তৃষার ঘুম আসেনি। বারবার ওইযে ওই গলিতে যেই ছেলেটি তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল তাকেই মনে পড়ছে। তৃষা ভেবেছিল ওই হিন্দি গানটা হয়তো তার মনে বেজে উঠেছে। কিন্তু বাজল পাশ দিয়ে যাওয়া ব্যক্তির ফোনে। এমন রিংটোন কেউ ব্যবহার করে? তবে প্রত্যুষ ওই লোকের সামনে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে তৃষাকে টুপ করে ছেড়ে দিয়েছিল। ওমনেই সে ও মাগো বলে চিৎকার করে উঠে। যা লেগেছে না মাইরি! জখমটা ব্যথা দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেই সুন্দর ছেলেটা তাকে বাঁচিয়েছিল—ভাবলেই ব্যথা কোথায় যেন মিলিয়ে যাচ্ছিল। রাতে শিমলা মলম লাগিয়ে দিয়েছিল, তবু পরদিন ভার্সিটিতে এসে তৃষা আধোঘুমে ক্লাস কাটাল। তবে আজকে একটা মানুষকে সে কোথাও দেখেনি। ওই হাইব্রিড করলাটা কী মরে টরে গেল নাকি? অভিশাপ লেগে গেল না তো? ক্লাস শেষে বের হতেই অঙ্কুুরের সঙ্গে দেখা হতেই সে বলল, ‘আরে ভাবী আপনি?’
তৃষা ভ্রু কুঁচকে বলল,’ভাবী?’
অঙ্কুর ছাড়বার পাত্র নয়, ‘আরে ভাবী নয় তো কী? আপনার যার সাথে বিয়ে হবে সে তো ছেলে মানুষই হবে? মেয়েকে তো আর বিয়ে করছেন না? তাই সেই হিসেবে আপনার স্বামী তো আমার ভাই। আর আপনি ভাবী।’
‘কিন্তু ছেলেকে বিয়ে না করে যদি তার নানাকে বিয়ে করি? তখন তো নানি হব? তাই না জেনে অগ্রিম দুই লাইন বেশি বলবেন না। যেমন বস যেমন তার চামচিকা। দুটোই পুষ্টি ছাড়া সবজি।’
বেচারা আলাভোলা অঙ্কুরটার মাথার ওপর দিয়ে গেল সব। এসেছিল এই মেয়ের সঙ্গে একটু সম্পর্ক ভালো করতে উল্টো কথা শুনিয়ে চলে গেল। এই প্রেম ভাইয়ের জন্য সব মেয়েরা তাকে এমন অবহেলা করে। প্রেম, ভালেবাসা হচ্ছে অক্সিজেনের মতো। ওইসব না করলে যে একটা প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষের শ্বাসকষ্ট হয় তা ওই প্রেমহীন প্রেম ভাই কেমন করে বুঝবে? ওনার নাম করণটা যে কে করেছে? সামনে পেলে তীর্থযাত্রায় পাঠাত তাকে।
তৃষা চারপাশে প্রেমকে খুঁজতে খুঁজতে আর মনে মনে গালি দিতে দিতে গেইট থেকে বের হওয়ার জন্য এগিয়ে চলল। জীবনে কোনোদিন কাজ না করা মেয়েটিকে দিয়ে শেষে হলের কার না কার রুম সাফ করিয়েছে। ইশরে এত মোলায়েম হাতগুলো গেল। এই হাত তৈরি হয়েছে মেকআপ করার জন্য। ওইসব সাফ করার জন্য নাকি? মনে মনে আবার অভিশাপ দিল প্রেমকে, ‘দেখিস হাইব্রিড করলা তোর কপালে একটা তাড় ছিঁড়া, বানরের মতো দেখতে শাঁকচুন্নি বউ জুটবে।’
গেইটের কাছে আসতেই কে যেন পেছন থেকে শিস বাজিয়ে বলল, ‘এই যে টিউবলাইট। কাম হিয়ার।’
তৃষার সেই কণ্ঠ শুনে বুঝতে বাকি রইল না প্রেম ভাই যে তাকে ডাকছে। সে পেছন ফিরে একটা লম্বা সালাম দিয়ে বলল, ‘সিনিয়র ভাইয়া কিছু চাই আপনার? বান্দা হাজির।’
প্রেম ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল, ‘এই তো চাকরানীর ফর্মে এসেছো। আর ওটা বান্দা নয় বান্দী হবে। ছেলে হতে গেলে কত কী লাগে? সবার তো আর সব চাইলেই হয় না।’
তৃষা আশপাশে থাকালো। এই লোকের লজ্জা নেই। জন্মের সময় মনে হয় তার চোখের নিচে কাগজ দেওয়া হয়নি। ছ্যাহ! তৃষা চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই প্রেম বাইকের ওপর থেকে নেমে তার ওড়না ধরে টান দিতেই তৃষা ক্ষেপে বলল, ‘কোন হনুমান রে আমার ওড়না ধরে টানাটানি করিস?’ ভার্সিটির সবাই তখন অবাক। এত মানুষের সামনে এই মেয়ে প্রেমকে হনুমান বলল? এমন ডাইরেক্টলি? প্রেম চারপাশে একবার তাকাতেই তৃষা পেছন ফিরে বলল, ‘ওহ আচ্ছা আপনি ছিলেন সিনিয়র ভাইয়া? আমি ভাবলাম কে না কে? মাইন্ড করবেন না। যাই হোক আমার ওড়না পছন্দ হয়েছে? আপনি আপনার ঠিকানাটা দিয়েন জামা-সেলোয়ারটাও পাঠিয়ে দেব। সব জিনিস তো আবার সবাই চাইতে পারে না মুখে। থাক আমি না হয় বুঝেই নিলাম।’ বলেই মুখটা বাঁকাল তৃষা। প্রেম তা দেখে ভ্রু কুঁচকে বলল,’এই যে মুখটা বাঁকালে? আমার না জুনিয়র তোমার প্রতি একটুও রাগ করতে মন চাইছে না।’
তৃষা চোখ দু’টো সরু করে জিজ্ঞেস করল, ‘কেন?’
‘কারণ প্রতিবন্ধীদের মুখ তো বাঁকাই হয়। ওদের ওপর রাগ করলে আল্লাহ পাপ দিবে।’
তৃষার মেজাজ তখন আরোও খারাপ। সে শিমলা টেনে কাছে এনে বলল, ‘শালী ফায়ার সার্ভিসকে কল দে। গায়ে আমার আগুন ধরছে।’
প্রেম বাঁকা হেসে চোখে রোদচশমা লাগিয়ে অঙ্কুরকে বলল, ‘শালা খাটি ঘিয়ের ডিব্বা আন। আগুনে একটু ঘি ঢালি।’
তৃষা মুখ বাঁকিয়ে যেতেই পেছন থেকে আবারও প্রেমের ডাক হলো, ‘সেদিনের চুমুটা কিন্তু পাওনা জুনিয়র।’
তৃষা মনে মনে তেতে উঠল। এই খচ্চর লোক এখনো সেই কথা ভুলেনি। কতবড় জোচ্চুর ভাবা যায়? তৃষা কী করবে না করবে ভাবতে ভাবতে গাছের কোণে খেলতে থাকা ছোট্ট কুকুরছানা গুলোকে দেখে। মাথায় তার বুদ্ধি চলে আসে। সে মনে মনে বলে উঠে, ‘কুকুরের আম্মাজান মনে হয় লাঞ্চ করতে গিয়েছে। যাই এই সুযোগে ছানা-পোনাদের সঙ্গে মিট করে আসা যাক।’
প্রেম আবার বলে উঠল, ‘কী হয়েছে দেও চুমুটা।’
সে মায়াভরা ভঙ্গিতে বলল, ‘প্রেম ভাইয়া আপনি প্লিজ চোখ বন্ধ করেন। আমার না হেব্বি লজ্জা। লজ্জায় মুখ পাতলা ঝলের মতো হয়ে যায়।’
‘সরাসরি বললেই তো পারো ডায়রিয়া রোগীর ইয়ের মতোই কালারটা হয়।’
‘ইশ কী যে বলেন আপনি? লজ্জা করছে। চোখ বন্ধ করুন। আজকে আর বাঁধা আসবে না। আমি পারফিউম মেখে এসেছে। লিকুইডের গন্ধ আর গায়ে নেই।’
তৃষা এগিয়ে আসতেই প্রেম অবাক হয়। ততক্ষণে এদিকটা পুরো ফাঁকা হয়ে গেছে। মানুষ বলতে শিমলা আর অঙ্কুর সহ কিছু মানুষ আছে। তৃষা যত এগিয়ে আসে ততই প্রেম টাসকি খায়। এই মেয়ের নাকি লজ্জা আছে? এই তার লজ্জার নমুনা? সুযোগ পেয়ে প্রেমের ঠোঁট খাওয়ার ধান্দা? এটা কী রাস্তার পাশে বিক্রি করা বেলপুরী পেয়েছে নাকি? একটু না হয় বলছে সে, তাই বলে প্রতিবাধ করার বদলে চলে আসবে? এখন চুমু খেতে না দিলে তো ইজ্জত বলতে সবার সামনে কিছু থাকবে না। প্রেম খোদার নাম নিয়ে দোয়া ইউনূস পড়তে পড়তে চোখটা বন্ধ করতেই বলল, ‘যা করার জলদি করো। কই হলো?’
‘একটু ওয়েট। সুন্দর করে হেঁটে আসতে হবে না?’
‘জলদি আয় বাল। এমনিতেও গান্ধীপোকার চুমুর প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই। না দিতে চাইলে নেই। জোর কিসের? প্রেম ছোটদের সঙ্গে জোর করে না।’
‘আরে না না। চুমু তো দেবই। চোখটা বন্ধ রাখুন না।’
প্রেমতৃষা পর্ব ৩
প্রেম তাই করে। তবে হঠাৎ করে সে আবিষ্কার করল কেমন জানি ভেজা ভেজা একটা ফিল পাচ্ছে গালে। চুমু তো ঠোঁটে দেওয়ার কথা ছিল? গালে দিচ্ছে কেন? কিন্তু চুমু কম চাটাচাটি বেশি লাগছে। প্রেম কী ললিপপ নাকি? প্রেম রাগে চোখ খুলতেই দেখল তৃষা তার গালের সামনে ওই কুকুর ছানাটিকে ধরে রেখেছে। সেই ছানা আবার খাবার ভেবে প্রেমের গালে জিহ্বা ছুঁয়ে দিচ্ছে। এহেন দৃশ্য দেখেই তো প্রেমের গা গুলিয়ে আসে। সে রিয়েকশন দেওয়ার আগেই অঙ্কুর ঠোঁট চেপে এসে গান ধরল,
~’আহা একি ছোঁয়া, নিশিদিন। শিহরণে কাটে এ বেলা।~