প্রেমসুধা পর্ব ১০
সাইয়্যারা খান
আজ চারদিন পরলো তৌসিফের বউ হয়ে তালুকদার বাড়ীতে আছে পৌষ। ছটফট করা দূরন্ত পৌষ এই চারদিন ধরে ঘর বন্দী হয়ে কাটিয়ে দিলো। তাকে রুমের বাইরে অবদি পা রাখতে দেখা গেলো না। তৌসিফের ও তেমন কোন আতাপাতা নেই। দিনে এক কি দুই বার ওর দেখা মিলে। মন মরা ভাব নিয়ে পৌষ তাকালো বাড়ির আঙিনায়। পুকুর পাড়টা দেখা যাচ্ছে। সেখানেই উঁচু করে সিমেন্টের বাঁধাই করা জায়গা। আদিত্য বসে ফোনে কারো সাথে কথা বলছে হয়তো।
নজর সরিয়ে নিলো পৌষ। তার ফোনটা বেজে যাচ্ছে। রুমে এসেই দেখলো হেমন্ত কল করেছে। ওদের কারো সাথেই এই চারদিন কথা হয় নি। যেখানে ভাগ্য ই সাথ দিলো না সেখানে রেগে থাকার তেমন কোন কারণ দেখলো না পৌষ। ফোনটা রিসিভ করে ই সালাম জানালো অতি নম্র স্বরে। ওপাশ থেকে সালামের জবাব দিয়ে ই হেমন্ত বলতে লাগলো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— কেমন আছিস পৌষ?
— জানি না তো হেমু ভাই।
হেমন্ত’র বুকটা ভেঙে কান্না পায়। তবুও কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলে,
— এমন না আমি জানি না পৌষ। আমি সবটা জানি। নিজের অস্তিত্বের সত্যি টা তুই এখন অবদি জানিস না। আমার হাত-পা বাঁধা সোনা নাহলে তোকে এতটা সাফার করতে দিতো না তোর হেমু ভাই। শুধু এতটুকু মনে রাখ যেমনটা তুই জানিস বিষয়গুলো তেমন না। তোর অতীত তোকে ওখানে নিয়ে গিয়েছে পৌষ। জানি তুই রেগে আছিস। নিজের বাবা’র সাফাই গাইছি না শুধু বলব একদিন সত্যি গুলো তুই জানবি। জানি না কিভাবে সামনে এগুবি তবে সবসময় মনে রাখিস পৌষ তোর হেমু ভাই আছে তোর সাথে। তুই আমার বোন, তোকে এই বাড়ীর প্রতিটা মানুষ ভালোবাসে সোনা।
অতীত কারো পিছু ছাড়ে না, তোকে ও ছাড়ে নি। সুযোগ দে নিজেকে। তুই পারবি সবটা গুছিয়ে নিতে। জানি তোর মনে প্রশ্ন জাগছে অনেক তবে ঐ যে বললাম চাইলেও কিছু বলতে পারব না আমি এখন।
— একটা প্রশ্নের উত্তর দিবে?
— হু।
— আমি কি জারজ সন্তান?
উত্তর টা শোনা হলো না। পেছন থেকে তৌসিফ ওর ফোনটা নিয়ে কেটে দিয়ে তাকালো পৌষ’র দিকে। মেয়েটার চোখের ভাষা ও বুঝে না। মাঝে মধ্যে বুঝে তবে আবার মনে হয় না বুঝে না। এতটুকু একটা মেয়ে চারদিনের ব্যাবধানে কেমন মূর্ছে গেলো। তৌসিফ সাধারণ ভাবেই বললো,
— এতদিন পর বাসার কথা মনে পরলো?
— না। হেমু ভাই কল দিয়েছিলো।
— ওহ। তোমার সাথে কিছু ছিলো পৌষরাত। এখন বাইরে যাচ্ছি। রাতে কথা হবে। তোমার কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবে রাতে।
ওর মাথায় হাত দিয়ে চলে গেল তৌসিফ। বারান্দায় দাঁড়িয়ে তৌসিফের গাড়িটা যেতে দেখে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে পৌষ।
রুমে এসে ওরনাটা মাথায় দিয়ে পা বাড়ায় বাইরের দিকে। দরজার কাছে যেতেই মিনু বলে উঠলো,
— কই যান ছোট ভাবী?
পৌষ তাকালো একপলক। এমনি সময় হয়তো দুটো কড়া কথা বলতো তবে এখন কিছুই বললো না। গটগট পায়ে বেরিয়ে এলো সদর দরজা থেকে। মিনু পেছন থেকে ডাকলেও শুনলো না।
তিন তলা থেকে নেমে পৌষ সোজা পুকুর পাড়ে এলো। আদিত্য’র কাছে মাফ চাইতে হবে তার। কোন বাবা ই চাইবে না তার ছেলের বিয়ে কোন জারজ সন্তানের সাথে হোক। তেমন ই ভাবে হয়তো তৌফিক তালুকদার ও চায় নি। এটাই তো স্বাভাবিক। জীবনের সবচাইতে বড় সত্যি কি না পৌষ জানে না তবে দুই দিন পূর্বে যখন তৌসিফ ওর বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলছিলো তখন পৌষ’র কানে শুধু একটা কথাই ঢুকেছিলো যা তৌফিক তালুকদার বলেছিলেন চিৎকার করে, “আমার ছেলে’র সাথে জারজ কারো সম্পর্ক গড়ুক তা কোনদিন আমি মেনে নিতাম না”।
ব্যাস পৌষ সেদিন একটা উত্তর পেয়ে গিয়েছিলো। এটাই একমাত্র কারণ যার দরুন তৌফিক তালুকদার ছেলেকে সরিয়েছিলেন পৌষ থেকে। কিন্তু কেন তৌসিফের সাথে তার বিয়ে হলো ওটা পৌষ জানে না। তবে ও ধরে নিয়েছে যেহেতু ও জারজ সন্তান আর তৌসিফের বউ ও ভেগে গিয়েছে। এছাড়াও তৌসিফের চরিত্র ঠিক নেই সেই সুবাদে হয়তো জারজ পৌষ’র সাথে চরিত্রহীন পুরুষ তৌসিফের বিয়ে হলো।
হঠাৎ কানে কিছু কথা আসতেই স্তম্ভিত ফিরে পায় পৌষ। কখন যে ভাবনায় ডুবেছিলো খেয়াল ই নেই। আদিত্য হেসে হেসে ফোনে কথা বলছে কারো সাথে,
— আরে না কি যে বলিস। এই মাস পরই চলে যাচ্ছি দেশের বাইরে। প্রেম-ট্রেম করার সময় নেই। এতদিন টাইম পাস করেছি অনেক। তোদের চক্করে পরে বেট ধরে অনেকটা সময় ও অপচয় করেছি। নাও ইটস টাইম টু রিলাক্স। দেশী মেয়ে দিয়ে আমার পোষাবে না ডুড। আই ওয়ান্ট এ উমমম ইউ নো…..
আর কিছু শুনার অপেক্ষা করলো না পৌষ। ধীরে ধীরে পা ফেলে যেভাবে এসেছিলো ঠিক সেভাবেই চলে গেল। ও যেতেই কান থেকে ফোনটা সরালো আদিত্য। পুকুরের পানিতে এতক্ষণ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো পুষির অবয়ব যা ধীরে ধীরে নাই হয়ে গেলো৷ আদিত্য’র বা চোখ দিয়ে আচমকা এক ফোঁটা গরম তরল পরলো। গাল বেয়ে না পরে তা টুপ করে পরলো পুকুরের পানিতে। এত এত মিষ্টি পানির মধ্যে মিলে নিজের অস্তিত্ব হারালো সেই নোনা পানি। ঠিক যেমন ভাবে সম্পর্কের বেড়া জালে নিজেকে হারালো আদিত্য।
চলমান গাড়িতে বসে মুচকি হাসলো তৌসিফ। জীবনে এক ভুল মানুষ কয়বার করে? একবার ই তো। তাহলে তৌসিফ কেন দু’বার করবে? “ন্যাড়া বেল তলায় একবার ই যায়” প্রবাদটা মনে পরলো তৌসিফের। এর কারণ আছে অবশ্য। বেল তলায় ন্যাড়া মাথায় একবার যাওয়ার পর তো আর ন্যাড়া বেঁচে থাকে না। দ্বিতীয় বার যাওয়ার সুযোগ টা কোথায় কিন্তু তৌসিফের তো সুযোগ আছে। সে কেন কাজে লাগাবে না তাহলে সেই সুযোগ।
সিড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠে ভেতরে ঢুকে পৌষ। এলোমেলো মস্তিষ্ক তো কাজ করে না আজ দুই দিন ধরে। যার বাবা মায়ের ই ঠিক নেই সেসব সন্তানদের রাগ, অভিমান মানায় না তাই তো পৌষ কারো প্রতি কোন রাগ রাখলো না মনে। পুষে রাখলো না কোন অভিযোগ। ছেড়ে দিলো ভাগ্য’র উপর।
ওকে ঢুকতে দেখেই হেলেদুলে ওর সামনে এলো মিনু। বাদাম বুট চিবুতে চিবুতে রসিয়ে রসিয়ে বললো,
— কি গো ছোট ভাবী তোমার মুখটা ওমন দেখায় কেন? মামা বুঝি আজকাল আদর সোহাগ কম দিচ্ছে?
কি হলো তা বুঝা গেলো না তবে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো মিনু। পৌষ ওর গালে ঠাটিয়ে এক থাপ্পড় মে’রে হিসহিসিয়ে বললো,
— কাজের মেয়ে যোগ্যতা বুঝে কথা বলবি। মুখ এত ছুটলে জিহ্বা গোড়া থেকে উপড়ে ফেলব। চিনিস নি এখনও পৌষ’কে।
বলেই ধুপ ধাপ পা ফেলে রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয় পৌষ। রান্না ঘরে থাকা বিজলির মা মুখ টিপে হাসছেন। পাশের মেয়েটাকে বললেন,
— এবার কোন নোংরা খেলার ইতি ঘটবে বলে মনে হচ্ছে। যোগ্য মেয়ে এসেছে বাড়িতে।
মেয়েটা সায় জানালো। মিনু’কে তার সহ্য হয় না। নিজে কাজের মেয়ে হয়েও ঢপ দেখায় এমন যেন সে নিজেই মালিক।
জীবন মানুষ’কে বিভিন্ন ভাবে শিক্ষা দেয়। ঠোকরা খেতে খেতে ই তো একদিন মানুষ বড় হয়। বুঝ আসে তার মাঝে। পৌষ’র আজ কেন জানি কান্না আসছে না। সে খুব করে চাইলো হাউ মাউ করে কান্না করতে তবে হচ্ছে ই না। কান্না আসছে না। চোখে জ্বালা ধরে একদম তবুও কান্না এলো না।
এমনটা না আদিত্য’কে সে অনেক বেশি ভালোবাসত বা খুব গভীর কোন সম্পর্ক ছিলো তাদের মাঝে। কথাটা হলো ফাস্ট লাভ অব টিনএজ। কিশোরী’র প্রথম মন বিনিময় ঘটেছিলো। কোন রুপ স্পর্শ ছাড়া এক সম্পর্ক যার কোন মারপ্যাঁচ পৌষ বুঝে নি। মনের উপর জোড় চলে না। কখনোই না। যদি ততটা গভীর সম্পর্ক হতো তাহলে হয়তো পৌষ কোনদিন বিয়েতে মত দিতেই পারতো না। পছন্দ ছিলো দুজন দুজনকে। সেদিন আবেগ সামলাতে পারি নি পৌষ তাই তো আদিত্য যখন আলিঙ্গন করলো তখন বেহায়া তার হাত দুটো হঠাৎ ই আদিত্যে’র পিঠ ছুঁয়ে দেয়। কোনরুপ কামনায় পরে পৌষ হাত বাড়ায় নি। আদিত্য তার ভালো বন্ধু ছিলো প্রথম। পরেই না সম্পর্ক একটু বাড়লো যা পৌষ তৌসিফের নামে কবুল পড়ে নিজ পায়ে পিষ্ট করেছে।
আজ আদিত্য’র সত্যি জানতে পেরে কেন জানি খারাপ লাগলো না। শুধু মনে হলো যা হলো ভালোই হলো। একজন জারজ সন্তান থেকে বেঁচে গেলো আদিত্য। ওর দেয়া ধোঁকা পৌষ’র মেনে নিতে একটুও খারাপ লাগে নি। অভিমানে বুকটা ফেটে গেলেও নিজেকে বুঝ দেয় পৌষ। জারজদের অভিমান মানায় না। তারা শুধু হেলায় খেলায় মানুষের প্রয়োজন মিটায়।
কি মনে করে আলমারি খুলে পৌষ। তৌসিফ তার বউয়ের জন্য অসংখ্য দামি কাপড়ে আলমারি ভরেছে। বেছে বেছে ফিনফিনে এক পাতলা শাড়ী টেনে বের করে ও। আজ পৌষ সাজবে। নিজেকে সাজাবে। তৌসিফের জন্য। আদিত্য’র সাথে তার শেষ সম্পর্কটুকু ছিলো ক্ষমা চাওয়ার যার আর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না পৌষ। বন্ধুদের সাথে বেট ধরেই যেহেতু আদিত্য এসব করেছে তাহলে কেন পৌষ মাফ চাইবে?
লম্বা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এলো পৌষ। সাদা’র মাঝে লাল রঙা শাড়ীটা অদক্ষ হাতে পরলো ও। একা অবশ্য পারলো না। ফোনের সাহায্য প্রয়োজন হলো। ঠিক মাঝ বরাবর সিঁথি কেটে ঠোঁটে গাঢ় লাল রঙের লিপস্টিক লাগালো। বলা হয় পুরুষ নাকি নারীর লাল রঙা ঠোঁট দেখেই সবার আগে আকর্ষণ বোঁধ করে। আয়নায় নিজেকে দেখেই চমকালো বটে। তার এহেন রুপ নিজের কাছেই অজানা। অচেনা। কখনো এই রুপে নিজেকে আবিষ্কার করা হয় নি তার।
অপেক্ষার প্রহর শেষ করে তৌসিফ ফিরলো রাত বারোটা নাগাদ। মিনু ঘুমিয়ে যাওয়াতে তেমন তান্ডব ঘটলো না। নাহয় তাকে চড় মারার মশগুল সে পৌষ’কে গুনাতো।
অন্ধকার রুমে ঢুকে তৌসিফ ভাবলো পৌষ হয়তো ঘুম। তাই হাত ঘড়ি খুলে সোজা ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ফিরে এসে পৌষ’কে খেতে আসতে বলবে বলে যেই না লাইট অন করলো ওমনিই চমকালো ও। খাটে পা ঝুলিয়ে বসে আছে এক অপসরী। তৌসিফের বুকে দুটো ধাক্কা লাগলো। পৌষ’র এহেন রুপ তার দেখা হয় নি। বিবাহের রাতে ও মেয়েটাকে এত সুন্দর লাগে নি। চোখ বুজে নিজের প্রথম নারীটির চেহারা মনে করতে চাইলো তৌসিফ। পারলো না। কোন ভাবেই তার চেহারাটা কল্পনায় এলো না। তার ঐ ফর্সা মুখটা আজ পৌষ’র শ্যামারঙা মুখের সামনে হার মানলো। বড্ড অসহায় অনুভব করে তৌসিফ। ফাঁকা ঢোক গিলে পৌষ’র সামনে দাঁড়িয়ে ডাকে,
— পৌষরাত?
— জ্বি।
আজকাল মেয়েটা এক ডাকেই উত্তর দেয়। তৌসিফ দুই আঙুল পৌষ’র চিবুকে ছুঁয়ে দিয়ে ওর মুখটা তুলে চেহারাটা দেখেই বললো,
— মাশা আল্লাহ।
পৌষ জানে না কেন তবে মৃদু লজ্জা এসে ভর করেছে তার মাঝে। তৌসিফ এবার ওর মাথায় হাত রেখে বললো,
— এভাবে শাড়ী পরলে যে আজ?
— ভালো হয় নি?
প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন পাওয়া তৌসিফের পছন্দ নয় তবে আজ খারাপ লাগলো না। পৌষ’র পাশে বসে হাতটা ধরে বললো,
— অনেক ভালো হয়েছে পৌষরাত। তোমাকে সাদা এক পরী দেখাচ্ছে।
মাথাটা নামিয়ে নেয় পৌষ। তৌসিফ ওর হাতের ভাজে নিজের হাত রেখে মোহনীয় কণ্ঠে বলে,
— আই ক্যান রিড ইউর আইস পৌষরাত। এ’ম আই থিংকিং রাইট?
পৌষ মাথা ঝাকালো। তৌসিফের বুঝতে মিনিট ও লাগে নি পৌষ কি চায়৷ তার চোখের চাহনিতে সবটা স্পষ্ট। তৌসিফ ধীরে ধীরে ওর কোমড়ের দিকে হাত রাখতেই মুচড়ে উঠে পৌষ। তৌসিফ আরেক হাত ওর বুকের দিকে রেখে মুখটা একদম সামনে এনে ফিসফিস করে বললো,
— আ’ম সরি ফট দ্যাট জান দো আই ওয়াজ নট রং।
পৌষ’র দেহে কাঁপন ধরলো। তৌসিফের ঘ্রাণ ওর নাসারন্ধ্রে ধাক্কা খাচ্ছে। তৌসিফ পুণরায় ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
— জীবনে প্রথম কারো কাছে মাফ চেয়েছি পৌষরাত।
— আমাকে মাফ করে দিন।
— দিলাম।
প্রেমসুধা পর্ব ৯
বলেই তৌসিফ ওর মাথায় চুলে চুমু খায়। সম্মুখে বসে থেকে এক গোছা চুল সামনে এনে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ টেনে বলে,
— আজ ঘ্রাণ টা আরো সুন্দর পৌষরাত।
কথাটা বলেই ওকে কোলে তুলে তৌসিফ। সারা রুমে তখন জ্বলছে গোল্ডেন রঙের বাতিটা যা পৌষ’র কাছে চারশত চল্লিশ বোল্ডের লাইট।