প্রেমসুধা সিজন ২ পর্ব ১২ (২)
সাইয়্যারা খান
নিচে যথেষ্ট হইচই হচ্ছে। পৌষ গোল্লা চোখে তাকিয়ে বিরবির করতে করতে খাটে এসে বসলো। তৌসিফ তালুকদার এখানে কি করছে? তার কি আসার কথা ছিলো? তার থেকে বড় প্রশ্ন, তালুকদার বাড়ী থেকে যে বিয়ের প্রস্তাব এলো তার কি হলো? সেই প্রস্তাব কি মুরগী ঠুকরে খেলো নাকি মাছ গিলে ফেললো? হঠাৎ এলো আবার হঠাৎই উধাও হলো। আচমকা কান খাড়া হলো পৌষ’র। ধুপ ধাপ পা ফেলে কেউ আসছে। তারাতাড়ি বিছানায় উল্টো হয়ে শুয়ে রইলো পৌষ। এই পায়ের শব্দ হেমন্তের। এখন আসলেই আগে পৌষ’র কান গরম করবে। দরজায় ঠকঠক করেও যখন হেমন্ত দেখলো দরজা খোলা হচ্ছে না তখনই বাইরে থেকে ধমক দিলো,
“দরজা খোল!”
এতই সোজা? পৌষ খুলবে না। সেধে সেধে চর থাপ্পড় কে খায়? পৌষ ভাবলো হেমন্ত হয়তো চলে যাবে এখন কিন্তু না ও যাচ্ছে না। জালালি দোয়া ভুলে গেলো পৌষ। না পেরে উঠে দরজা খুলে তরতর করে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো পৌষ, সাথে সাথেই হেমন্তের গর্জনরত কণ্ঠ কানে ধাক্কা খেলো যেন। পুরো ঘরটায় শব্দগুলো ঘুরপাক খেলো।
“জা’নো’য়ারপানা অন্য জায়গায় দেখাবি। সোজা হয়ে বস!”
এক লাফে উঠে বসে পৌষ। হেমন্ত তেড়ে আসে। পৌষ তাকিয়ে রয় ভাইয়ের পানে। ক্রিম রঙের একটা পাঞ্জাবি হেমন্তের পরণে যেটা পৌষই পছন্দ করেছিলো। বড় চাচির নিষেধ মেনে পৌষ আর আগায় নি ওখানে। হেমন্তের শপিং ও দেখা হয় নি। পৌষকে চুপ দেখে হেমন্তের রাগ তরতরিয়ে বাড়ে বৈ কমে না। রাগ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করে বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“শাড়ী কোথায় তোর?”
“শাড়ী পরব না হেমু ভাই।”
হেমন্ত খেঁকিয়ে উঠলো। রাগে গজগজ করতে করতে বললো,
“অ্যই তুই কি পেয়েছিস আমাকে? কি পেয়েছিসটা কি? তোদের জন্য চারটা শাড়ী আনি নি আমি? এনেছি তো। তোদের পছন্দ করাটাই এনেছি। তোদের পছন্দ মতোই নিজেরটাও কিনেছি। তোর যেমন যেমন ইচ্ছে তেমন তেমন আয়োজন করেছি তাহলে তুই অন্য জনের কথা কানে তুলে কেন সব নষ্ট করবি? তুই আমাকে এত কেন জ্বালাস পৌষ? আমি কি ক্লান্ত হই না? তোর কি মায়া হয় না?”
“মায়ার মতো খারাপ জিনিস এই পৃথিবীতে দুটো নেই বুঝলে। এই মায়া মানুষকে খাটের পানিতে ডুবিয়ে মা’রে, মন চাইলে টেনে তুলে অতঃপর আবার মে’রে দেয়।”
ছোট্ট জীবনের গভীর এক সত্য পৌষ বলে দিলো অনায়াসে অথচ মুখে সেই ভাবখানা নেই। হেমন্তের মাঝেমধ্যে মনে হয় পৌষ’র মধ্য থেকে দুঃখের যে অনুভূতি সেটা ডিলিট হয়ে গিয়েছে। দুঃখ বাদে বাকি অনুভূতি গুলো আছে। সবচাইতে বেশি যেটা কাজ করে সেটা ওর জেদ আর উদাসীনতা। অভিমান জিনিসটার ছিটেফোঁটাও বাকি রয় নি ওর মাঝে। আবেগ কাজ করে না। যতটুকু যা আছে তা ও নিজেকে টিকিয়ে রাখতে তুলে রেখেছে। এক শক্ত খোলসে আবৃত হওয়া যুবতী ওর বোনটা যাকে বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না।
হেমন্ত ক্ষুদ্র শ্বাস ফেলে পৌষ’র আলমারি খুলে একদম সামনে থেকে কমলা আর গোলাপি রঙের মিশ্রণের শাড়ীটা বের করে। পৌষ’র মাথায় শাড়ি দিয়ে আঘাত করে আদেশের স্বরে বলে,
“পেঁচিয়ে আয়।”
পৌষ কথা বলে না। হেমন্ত এক পলক বাইরে তাকায়। ত্রাণ দিলে যেমন উৎসুক হয়ে মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে ঠিক ওমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটা প্রাণী। মানুষ রূপী প্রাণীগুলোকে হেমন্ত ডেকে বললো,
“ওর গাজরা কই?”
পিহা হাতের রজনীর মাঝে গোলাপ দেওয়া গাজরা এগিয়ে দিলো। হেমন্ত তা টেবিলে রেখে নিজের পকেট থেকে চিকন এক বেলীফুলের মালা বের করলো। পকেটে থাকায় একটু নষ্ট হয়েছে। এগিয়ে এসে পৌষ’র হাতে দিয়ে শুধু বললো,
“বেণী, খোঁপা যাই করিস না কেন, এটা পেঁচাবি।”
পৌষ মাথা নাড়ে। ওকে বাথরুমে পাঠিয়ে বাইরে থেকে হেমন্ত বলে,
“ওদের নিয়ে যাচ্ছি। দশ মিনিটের মধ্যে নিচে নামবি পৌষ নাহয় আমার হাত আর তোর গাল।”
” আমার গাল দুটো তোমার দাদা তোমার নামে লিখেছিলো নাকি হেমু ভাই?”
“লিখে দিলে সারাদিনে যথেষ্ট চড় খেতি তুই। তারাতাড়ি বের হবি। গেলাম।”
হেমন্ত সবগুলোকে নিয়ে বাইরে এলো। তৌসিফ’কে বসিয়ে গিয়েছে ওদের ড্রয়িং রুমে। এত বড় মানুষ তো বাইরে বসানো যায় না। এসেছে তাই বেশি। হেমন্ত নামতেই তৌসিফ বললো,
“এখন উঠছি তাহলে।”
এতক্ষণ হেমন্তের চাচা-বাবার সাথে কথা বলছিলো তৌসিফ। হেমন্ত নাকচ করলো। তৌসিফের নজর গেলো হেমন্তের হাঁটুর দিকে। কমলা রঙের শাড়ীতে গোলাপি পাড় দেওয়া। টুকটুকে দুটো পরী দাঁড়িয়ে। একই মুখের আদল। পাশাপাশি হেমন্তের কাঁধ ছুঁইছুঁই এক মুখেরই দুটো তরুণ বালক। একটু জোর দিলে পার্থক্য বুঝা যায়। মাঝে বেসাইজ একটা। এর জোড়া নেই। তৌসিফের কাছে মজা লাগলো। হেমন্তের দিকে তাকিয়ে বললো,
” জমজ দুটোই নাকি আরো আছে?”
হেমন্ত সহ বাকিরাও হেসে ফেললো। হেমন্ত জানালো,
“আর নেই।”
তৌসিফ হাত বাড়ালো ইনি, মিনিকে ধরতে কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার ওরা লুকিয়ে গেলো। তৌসিফ ডাক দিলো আদুরে গলায়,
” পরী গুলো লুকাচুরি খেলছে কেন?”
তোতলানো স্বরে উত্তর এলো,
“আপা বলেতে কালো কাতে না দেতে।”
তৌসিফ চোখে হাসলো। নিজে উঠে ওদের কাছে এলো। মাথায় হাত দিয়ে আদর করে দিতেই হেমন্ত বললো,
“ভাই, একটু পরে যাবেন। খাবার তৈরী। এখানেই আনা হচ্ছে।”
” আমি ফ্রেশ হব হেমন্ত। তোমার সাথে দেখা করতে এলাম।”
“আপনি এসেছেন তাতেই আমি খুশি ভাই। একটু মেহমানদারী করার সুযোগ দিন।”
তৌসিফ না করলো না। চৈত্র’কে ইশারা দিয়ে হেমন্ত তৌসিফ’কে বললো,
“ভাই, আপনি উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন।”
তৌসিফ চৈত্র’র কাঁধে হাত দিলো। এত বড় মানুষ অথচ অহংকারের বালাই নেই। হেমন্ত খাবার দেখতে গেলো। চৈত্র ইশারা যতটুকু বুঝেছে তাকে তৌসিফকে বাথরুম দেখানো তার কাজ। যেতে যেতে তৌসিফ নানান কথা জিজ্ঞেস করলো। এত স্বল্প ভাষী মানুষ যথেষ্ট মেপে মেপে কথা বলছে। চৈত্র অবাক হয়। তখনই পিহা ডাক দিলো ওকে পেছন থেকে। চৈত্র তৌসিফকে আঙুল দিয়ে রুম দেখিয়ে বললো,
“আপনার জন্য টাওয়াল নিয়ে আসছি।”
তৌসিফ পা বাড়ালো। পিহা টাওয়াল দিতেই তার পেছন থেকে জৈষ্ঠ্য চাপা ধমক দিলো,
“কিরে তোরা এই পুরাতন টাওয়াল নিচ্ছিস কেন? গাঁধার দল! হেমু ভাই ঝাড়ু পেটা করবে।”
সবগুলো ছুটলো নতুন তয়লা খুঁজতে। বিয়ে বাড়ীতে নতুন তয়লা খোঁজা মহা মুশকিল হলো।
তৌসিফ অন্ধকার ঘরটায় ঢুকেই রজনীগন্ধার ঘ্রাণ পেলো। বুক ভরে শ্বাস টানলো ও। সুইচ খোঁজার প্রয়োজন বোধ করলো না কিন্তু হঠাৎই কানে লাগলো বিদঘুটে এক কণ্ঠের জঘন্য গান।
“আউলা প্রেমের বাউলা বাতাস
লাগাইয়ো না গায়ে ও বন্ধু,
লাগাইয়ো না গায়ে।”
খট করে এক শব্দ হতেই তৌসিফ পেছন তাকাবে তার আগেই পৌষ দেখলো অন্ধকার ঘরে এক হৃষ্টপুষ্ট মানব ছায়া। হেমন্তরা ওকে বলে গিয়েছে তাহলে এটা কে? বিয়ে বাড়ীতে চোর ছেঁচ্চর আর অদমাইয় ব’দমাইস থাকাটা অতটাই সাধারণ যতটা সাধারণ আমাদের দেশে ভাইরাল হওয়া। শাড়ীর আঁচল কোমড়ে গুঁজে বাথরুমের মগটা আলগোছে নিয়ে পৌষ হামলে পড়লো তৌসিফের উপর। তৌসিফ ততক্ষণে পেছন থেকে ওর হাত মুচড়ে এক ঝটকায় সামনে এনে অন্ধকারেই গলা চেপে ধরেছে। বাথরুম থেকে আসা আলোয় তৌসিফ দেখলো এই অতর্কিত হামলা করেছে এক মেয়ে। তারাতাড়ি ছেড়ে দিতে না দিতেই ভেজা প্লাস্টিকের মগ দিয়ে ওর বাহুতে আঘাত করলো পৌষ। জোরে বলতে লাগলো,
“চোর, চোর!”
“আপাআআআ!”
একসাথে পাঁচটা ষাঁড় চেঁচিয়ে ওঠে। তৌসিফ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে। আজ পর্যন্ত তাকে কেউ এভাবে মে’রেছে বলে তো মনে পরে না। চৈত্র তয়লা হাতে কাঁদো কাঁদো মুখে বললো,
“আপা, উনি আমাদের মেহমান।”
ঘরের বাতি জ্বলেছে ততক্ষণে। সাদা আলোয় পৌষ দেখলো তার সম্মুখে হতভম্ব মুখে দাঁড়িয়ে এক তালুকদার। তৌসিফ তালুকদার। যাকে মাত্র চোর ডেকে বাথরুমের মগ দিয়ে জোরে এক আঘাত করেছে পৌষ। পৌষ হঠাৎ ই দুই পাটি দাঁত বের করে হাসি দিলো। খুব হালকা করে বিষয়টা না ঘেঁটে বললো,
“আরে আরে কোন ব্যাপার না। অন্ধকারে এমন ভুল হয়ই তবুও মেহমান মানুষ আপনি গলায় নাহয় একটু চাপ দিয়েছেন। ঐকিক নিয়মের অংকের মতো কাটাকাটি। ঠিক আছে? আসুন, এই যে বাথরুম। আসসালামু আলাইকুম।”
এক সালাম দিয়ে টেবিলের উপর থেকে গাজরা নিয়ে ছুটন্ত পায়ে বেরিয়ে গেলো পৌষ। এদিকে ফেঁসে রইলো পাঁচ ভাই-বোন। তৌসিফ গলা খ্যাঁকানি দিলো। বাথরুমে ঢুকলো তয়লা নিয়ে। তার বাম বাহুটা তখনও ভেজা। ঝড়ের বেগে এক মেয়ে তাকে মাইর দিয়ে গেলো। হাহ, বৈচিত্র্যময় জীবনের এক নতুন অভিজ্ঞতা।
হেমন্তের কানে অবশ্য খবর গেলো না। তৌসিফকে খায়িয়ে গাড়িতে তুলে বিদায় দিয়ে স্টেজে বসে হেমন্ত। তাকে ঘিরে তার ভাই-বোন। বড় চাচির আটকানো দমটা ছাড়লেন তিনি। পৌষ না নামলে আজ নাক কাটা যেতো। হেমন্তটা যে কি দেখলো ওর মাঝে। চাইলেও এদের ভাই-বোনের সম্পর্কে কখনো ঢুকতে পারেন নি তিনি। উশৃংখল পৌষ’কে হেমন্ত একসাথে মা,বাবা আর বড় ভাই হিসেবে পালন করেছে। কোথায় গিয়ে কিছু একটা জটিল হয়ে যায়। ফলাফল সরূপ পৌষ’কে দেখতে মন চায় না তার। সেঝ চাচি মুখ বাকিয়ে বললেন,
“এত ঢং করার কি ছিলো? হেমন্তকে বোঝান বড় ভাবি। নতুন বউ আসছে আজ বাদে কাল। এসব দেখলে সংসারে অশান্তি হবে।”
বড় চাচি গভীর ভবানায় পড়লেন। যদি শ্রেয়া ওদের ভাই-বোনদের সম্পর্কটাকে সহজ ভাবে না দেখে। পৌষ ছোট না। বিয়ের বয়স হয়েছে। হেমন্তের মনে পৌষ’র জন্য এত নমনীয়তা যদি শ্রেয়া খারাপ ভাবে দেখে? বিষে ভরা বান সেঝ চাচি দিতেই ছোট চাচি সামান্য প্রতিবাদ করলো কিন্তু বড় চাচির কানে বোধ-হয় তা ততটা ঢুকলো না।
সবার যখন হলদু ছোঁয়ানো শেষ তখন শয়তান গুলো এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো হেমন্তের দিকে। হেমন্ত শাসালো,
“খবরদার ঝামেলা পাকাবি না।”
কে শুনলো আজ হেমন্তের কথা? কেউ না। চৈত্র আর জৈষ্ঠ্য ভাইকে ঝাপটে ধরতেই চার বোন হলুদ দিয়ে বড় ভাইকে মেখে ভূত বানিয়ে ছাড়লো। পরপরই দুই কলস গোলাপের পানি ঢালা হলো মাথায়। হেমন্তের বন্ধুরা যখন এগিয়ে এলো তখন আলগোছে হেমন্তের চার বোনকে সরিয়ে দিলো। ছোট চাচি ওদের এত আনন্দ দেখে আড়ালে ছলছল চোখে তাকালেন। যেখানে বড় ভাই হেমন্ত সেখানে মানুষ কিভাবে এতটা নিচু মানসিকতা রাখতে পারে? নিজের দুই জা’কে তিনি কখনোই বুঝতে পারেন না৷ পৌষটাকেই বা কেন তারা এতটা অপছন্দ করে? মেয়েটা দিনকেদিন কাঠখোট্টা হয়ে যাচ্ছে। আবেগ অনুভূতি শুধু মাত্র ভাই-বোনদের জন্য। এছাড়া যেন এক জলন্ত অগ্নিকুন্ড।
রাতের আকাশে আজ ছড়ানো ছিটানো তারা। মাঝে সুন্দর একখানা চাঁদ। চাঁদ তারার গল্প পৌষ জানে না৷ কেউ কখনো শোনায় নি। ছাদের মেঝেতে পাটি বিছিয়ে বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে ও। বুকের দু’পাশে ইনি, মিনি। মাথাটায় পিহা বিলি কাটছে। খানিক সময় পরই এক বোল বিরিয়ানি নিয়ে হাজির হলো হেমন্ত সাথে জৈষ্ঠ বোরহানির এক বোতল নিয়ে এসেছে। চৈত্র ছাদের টাংকি খুলে জগ দিয়ে পানি তুললো। গাবাগাবিতে ওদের কারোই খাওয়া হয় নি। তারমধ্যে পৌষ’র আধ রাতে খাওয়ার অভ্যাস। গোল হয়ে বসে সবগুলো হাত দিলো বোলে। এদের মাঝে ছোট হাত দুটোর মালিককে একেকবার একেকজন মুখে তুলে দিচ্ছে। হেমন্তের হাতে যতবার গোস্তের টুকরো আসছে ও ঠেলে দিচ্ছে এদিক ওদিক। মাঝে আস্ত এক পেস্তা পেতেই জৈষ্ঠ্য পৌষ’র মুখে দিলো। সবগুলো আজ যথেষ্ট ভদ্র। হেমন্তের সন্দেহ হলো। খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলো,
“তোরা কি কোন আকাজ করেছিস?”
পৌষ এক ভ্রু উঁচু করে পাল্টা জিজ্ঞেস করে,
“কি বলতে চাও আমরা আকাইমা?”
“মিথ্যা তো না। এত শান্ত যে?”
” গোপাল যতই ভালো করুক না কেন দিনশেষে মন্ত্রীই প্রিয় বুঝলে হেমু ভাই?”
” ওমা! তোরা সবগুলো হলি মন্ত্রী, গোপালটা কে এখানে?”
চৈত্র ফোঁড়ন কাটলো,
“এর মানে আমাদের বুদ্ধি নেই হেমু ভাই?”
“আছে নাকি?”
প্রেমসুধা সিজন ২ পর্ব ১২
“বুদ্ধি না থাকলে এলাকার এত বড় নেতাকে মাইর দিয়ে আমরা ভালো থাকতে পারি?”
একসাথে দু’জনের নাকে মুখে উঠলো। হেমন্ত কাঁশি থামিয়ে কোনমতে জিজ্ঞেস করলো,
“আবার কাকে মা’রলি তোরা?”
পৌষও কাঁশি থামালো। একসাথে সবগুলো সমস্বরে যেন স্লোগান দিয়ে উঠলো,
” তোমার ভাই, আমার ভাই,
তৌসিফ ভাই, তৌসিফ ভাই।”