প্রেমসুধা সিজন ২ পর্ব ২৯ (২)
সাইয়্যারা খান
পল্লবের কেইসটা এখনও সমাধান হয় নি। সাফিন হত্যা মামলায় এখনও জেলে ও। এটা কোন ভাবেই মানতে পারছে না তার বাপ-চাচারা। শেখ জুনায়েদ কেস লড়ছেন। তৌসিফ যথাযথ সাহায্য করছে। আজ সরাসরি উপস্থিত হয়েছে উমায়ের শিকদারের কাছে। তাকে তলব করছে উমায়ের অনেকদিন ধরে। কার্গোর কাছে বাইরে থাকায় তৌসিফ আসতে পারে নি। আজ সরাসরি এখানে এসেছে। এসব উটকো ঝামেলা তার বিরক্ত লাগে। নতুন বিয়ে করেছে। সময়টা বউকে দেওয়া দরকার তার। বউয়ের মাথার তারছিড়া, তৌসিফ তা জানে। না করা জিনিস মেয়েটা আগ বাড়িয়ে করে এমনকি করছেও। উমায়ের শিকদার আগে থেকেই অপেক্ষারত ছিলো। তৌসিফকে দেখে উঠে এসে হাত মিলালো। বসিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“ঠান্ডা না গরম কোনটা নিবে?”
“কোনটাই না। কাজের কথা বলি।”
“কাজ তো হবেই। সেই আমাকে চেয়ারম্যান বানিয়ে তুমি হাওয়া হয়ে গেলে।”
“ভুল বললে উমায়ের। হাওয়া তৌসিফ তালুকদার হয় না। হাওয়া হয় উড়ে আসা জিনিস। আমার বাপ,দাদা চৌদ্দ গুষ্টি এখানে জন্ম এখানে মৃত। হাওয়া হই কিভাবে বলো?”
উমায়ের একটু দাঁড়ি হাতালো। বললো,
“পল্লবকে তো ছাড়ানো যাচ্ছে না।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“শেখ জুনায়েদ লড়ছে। আমি নিজে তাকে হায়ার করে দিয়েছি। নিউজ মিডিয়া সব মুখ বন্ধ করা হয়েছে। শুধু দুই একটা সংবাদ পত্রে খবর ছেপেছে। এটা নিশ্চিত আমার দায়িত্ব ছিলো না আটকানোর।”
“প্রতিমন্ত্রী রেগে গিয়েছে তৌসিফ। দলের নাম বদনাম হচ্ছে। আমি নতুন ভাবে ছেলেপুলে নিয়েছি। কিন্তু পল্লব যা করেছে তা ঢাকা যাচ্ছে না। ওর গোডাউনে আর্মি ঢুকেছিলো গতকাল।”
তৌসিফ সূক্ষ্ম ভাবে হাসলো। একটু দাঁড়ি চুলকে বললো,
“ওটা মেইন গোডাউন না। ওখান থেকে তেমন কিছু পেয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। মেইনটার সুরক্ষা করো আগে।”
উমায়ের ভাবনার মাঝেই বললো,
“মেইন আবার কি, সেল একটা পেলেই সর্বনাশ হবে।”
তৌসিফের কান খাঁড়া হলো। সেল? এতদিন ও জানতো এদের মেইন গোডাউন আছে, ওখানেই সব। এখন শুনে চমকালো যেন। এদের সেল আছে? ঐ সেলেই কি তাহলে সব কাজ করে? নিশ্চিত উমায়ের মনের ভুলে বলে ফেলেছে। তৌসিফ এখন এড়িয়ে গেলো বিষয়টা। বললো,
“প্রতিমন্ত্রীকে বলো আমি শেখ জুনায়েদের সাথে কথা বলেছি। মাত্র বন্দর থেকে ফিরলাম। বাসায় যাব এখন৷ আমি দেখছি বিষয়টা তবে হ্যাঁ পল্লবের কেস সামলানো ততটাও সহজ হবে না কারণ অলরেডি সাফিন হত্যা মামলা সম্পর্কে অবগত সবাই।”
তৌসিফ উঠে চলে গেলো। উমায়ের ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। বিপক্ষ, বিপরীত দল তবুও তৌসিফ এত সাহায্য কেন করছে? সেই নির্বাচন থেকে এখন পর্যন্ত। ওর স্বার্থটা ঠিক কোথায়? মাঝেমধ্যে মনে হয় তৌসিফ তালুকদার গভীর জলের মাছ আবার মনে হয় ওদের দল ক্ষমতা হারিয়েছে বহু আগে তাই হয়তো এই দলে সাহায্য করছে কিন্তু কোন পদ দিতে চাইলেও কেন তৌসিফ তা গ্রহণ করছে না? কিন্তু একটা রয়েই যাচ্ছে বারবার।
পৌষ বেরিয়েছে আজ একা একা। আজ এদিক ওদিক না গিয়ে সোজা গিয়েছে বাড়ীর পেছন দিকে। আজকে অবশ্য তৌসিফ আসবে পৌষ শুনেছে। বুয়া একবার বললো আসতে নাকি রাত হয় ওর। সেই হিসেবে ভাত বাদে বাকি সব রান্না করে রেখেছে পৌষ। বুয়া বললো চর্বি ছাড়া গোস্ত তার প্রিয়। বেছে বেছে চাকা চাকা গোস্ত নিয়ে ভুনা করেছে পৌষ। ভর্তা করেছে কয়েক পদের। কাজ গুলো শেষ করেই এদিকে এসেছে ও। ঘাটের অপর পাশে প্রায়সময় গরু দেখেছে পৌষ। ওখানে ঘাস খায়। ছাড়া গরু। ওগুলো যে তৌসিফদের তা জানতো না৷ আজ দেখলো এখানেও কয়েকটা গরু। আঠারো-উনিশ বছরের একটা ছেলে ওগুলো বাঁধছে। পৌষ এগিয়ে এসে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“এগুলো এখানে কেন? ঘাটপাড়ে না থাকে?”
“জি মামি। এখানে ঘাস খাওয়াতেই আনি৷”
“ওখানে কি ঘাসের কমতি?”
“না আসলে আমাকে বলা হয়েছে রোজ এখান থেকে ঘাস খাওয়াতে।”
“ওহ। এগুলো কার গরু?”
“এই বাড়ীরই। আমি কয়েকমাস ধরে আসছি। ততটা জানি না। শুধু সকালে দুধ পানাই আর সবার ঘরে দিয়ে আসি। বিকেলে এখানে ঘাস খাওয়াই।”
“অহ।”
পৌষ আর ততটা ভাবলো না কিন্তু এইদিকে ঘাস খাওয়ানোর কাহিনীটাও বুঝলো না। কিছুদিন আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে ঘাস। জ্বালিয়ে ফেলেছিলো সব। সামান্য নতুন উঠছে, বাকিসব জংলী গাছপালা। ওগুলো গরু খায়? পৌষ মাথা থেকে সব ঝেড়ে তারাতাড়ি সামনে এগিয়ে গেলো। এখানে কচু ক্ষেতও আছে। পৌষ টেনে দুটো কচু তুললো। আজ রান্না করে রাখবে। কচু তুলে সাথে না নিয়ে পৌষ রেখে দিলো বড় আম গাছটার সাথে। এখান থেকে বাগান বাড়ীটা দেখা যাচ্ছে। পৌষের বুকের ভেতর হাতুড়িপিটা হচ্ছে। পুকুরের সামনে এসে কিছুক্ষণ ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো ও। এখানে ল্যাদার লাশ ছিলো। ওনার মায়ের সাথে পৌষের খুব ঝাঁঝালো সম্পর্ক। না জানি কেমন আছে ছেলে হারিয়ে? পৌষ ওনাকে কত না করতো যাতে ওসব শাকপাতা না দেয় কিন্তু নাহ শাকি খালা দিবেই। তার স্বভাবই ওমন। আপাতত সেসব বাদ দিয়ে পৌষ তারাতাড়ি সামনে বাড়লো। কিছুটা হাঁপিয়ে উঠছে ও। যতটা সামনে দেখা যায় জায়গাটা ততটাও সামনে না। বেশ বড় এই তালুকদার বাড়ী। তখন থেকে হাঁটছে পৌষ এখনও পৌঁছাতে পারে নি। হাঁটুতে দুই হাত দিয়ে কিছুক্ষণ হাঁপানো ও। মুখ খারাপ করে গালি দিলো দুটো। খিটমিট করে বললো,
“*লটা, এত দূর কেন? হাড়ে ব্যথা হয়ে গেলো। মনটা চায় দুইটা জুতা ফিক্কা এক্কেবারে চাপা ভচকে দেই।”
কাকে গালি দিলো কেন দিলো পৌষ জানে না। মন চাইলো তাই দিলো। কলোনিতে ঝগড়া লাগলেই তারা নানান ভাষায় গালিগালাজ করে। পৌষ খুব যত্নে শিখেছে সেগুলো। খুব মেজাজ খারাপে সেগুলো দিলেই মনটা হালকা হয়, ক্লান্তি তার দূর হয়। নতুন উদ্যমে পৌষ এগিয়ে গেলো। বুক ভরে শ্বাস টানলো। বিভিন্ন ঝোপঝাড় এখানে। পায়ে চুলকাচ্ছে কিছুটা। কামড় দিলো কিছুতে কিনা কে জানে। একটু ঝুঁকে পা চুলকে পৌষ উঠলো। গলা চুলকাতে চুলকাতে ততক্ষণে লাল হয়ে গিয়েছে। গালে বড় মশা কামড় দিয়েছে। পৌষ এবারে খুব গালি দিলো। তার মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছে। বাড়ীর সামনে এসে উপরে তাকাতেই দেখলো লিখা সম্রাটের নাম। খোদাই করা একটা লিখা। বেশ পুরাতন দেখেই বুঝা যায়। পৌষ হাসলো সামান্য। খুব কষ্টে পৌঁছেছে এখানে। ভেতরে ঢুকার দরজা খুঁজতে গিয়ে মুখের হাসি উড়ে গেলো ওর। এই মাথা থেকে ওইমাথা সব খুঁজেও মূল ফটক পৌষ পেলো না। ইটের দেওয়াল গুলো হাতড়ে হাতড়ে দেখলো। নাহ, লাভ হলো না। আবার উপরে তাকালো। বাজখাঁই গলায় বললো,
“কুত্তার বাড়ী বানিয়েছে। শালার কুত্তার বাসায়ও তো ঢুকার গেট থাকে। একটা ফোকাও দেয় নি। ঢুকব কিভাবে? মাথা বানিয়েছে একটা।”
রাগে দেওয়াতে লাথি মারলো পৌষ। ব্যাথাটা পেলো নিজেই। পা ধরে বসলো ওখানে। মুখে যা আসছে তা বলে গালি দিতে দিতে পৌষ উঠলো। ডান পা টনটন করছে। কপাল কুঁচকে পৌষ তাকিয়ে আছে এই দেয়ালটার দিকে। এটা একটু ভিন্ন ঠেকছে ওর নিকট। কিছুটা আলাদা। পৌষের চোখ তা ধরছে পারছে না কিন্তু এটা ঠিক বুঝতে পারছে এই দেওয়ালে একটু কিছু ঝামেলা আছে। পৌষ রাগে ক্ষোভে ভাঙা পা দিয়ে আবারও লাথি দিলো তবে এবারে আস্তে দিয়েছে। ও বেরিয়ে এলো সেখান থেকে। পা সেচড়ে কোনমতে আসতে আসতে পৌষের মনে পরলো কচুর কথা। কাজের কাজ কিছু হলো না, পৌষ পেলো একটা কচু। আম গাছের নিচে গিয়ে কচু দুটো নিয়ে যেই না দাঁড়াবে তখনই ধুপধাপ শব্দ শুনে ও তাকাতে নিলো। তার অবশ্য সুযোগ মিললো না। তৌসিফ খুব জোরে ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“এখানে কি করছো তুমি?”
পৌষ এই মূহুর্তে তৌসিফকে দেখে খানিকটা অবাক হয়ে পাল্টা জিজ্ঞেস করলো,
“আপনি এই সময় চলে এলেন?”
“তোমাকে কি বলছি আমি পৌষরাত? ওয়াট আর ইউ ডুয়িং হ্যায়ার?”
“কচু নিতে এসেছি।”
“কিহ?”
তৌসিফ চমকে গিয়েছে যেন। তার বউ তাকে দফায় দফায় চমকে দিচ্ছে। এই মেয়ে কচু নিতে এসেছে।
“ফাইজলামি করছো তুমি আমার সাথে?”
“বেয়াই হন আপনি আমার?”
থতমত খেয়ে তৌসিফ বললো,
“এই বিকেল বেলা তুমি এখানে এসেছো। তাও একা একা। ভয় লাগে নি?”
“ভয় সেটা আবার কি? পৌষরাত হক কাউকে ভয় পায় না।”
“তালুকদার। পৌষরাত তালুকদার তুমি।”
“আমার মাথা। ছাই। রাতে না আসার কথা ছিলো?”
“নতুন বউ আমার। টানে টানে চলে এলাম।”
“কে দিলো টান? আমি তো দেই নি।”
“তারাতাড়ি বাসায় চলো। গেট থেকে দারোয়ান বললো তুমি বাইরে এসেছো। বলেছিলাম বাড়ীর বাইরে না যেতে।”
“এটা বাড়ীর বাইরে না। মেইন গেট পার হই নি।”
“খুব কথা জানো তুমি পৌষরাত। কাম ফাস্ট।”
তৌসিফ পৌষের হাত ধরবে তার আগেই পৌষ হাঁটা দিলো। তৌসিফ আসতে নিলেই বললো,
“কচু নিন। ওগুলো নিতেই তো এলাম।”
তৌসিফ কচু তুললো হাতে। কি দিন কাল এলো তার? কচু হাতে নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ দেখলেও হাসবে। তৌসিফ একবার পেছনে ঘুরে তাকালো। সম্রাটের বাগান বাড়ী আবছা দেখা যাচ্ছে। পরক্ষণেই সামনে হাঁটা দিলো। পৌষের দিকে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটা খুব ধীরে ধীরে হাঁটছে। তৌসিফ তাড়া দিলো,
“কাম ফাস্ট হানি।”
“আজ নতুন রেসিপি বানাব। হানি কচু।”
তৌসিফের মুখ গোমড়া হলো। বউ কি মজা নিলো? পৌষ তখন গান গাইছে,
“কেমন আছেন বেয়াইন সাব?বুকে বড় জ্বালা।”
তৌসিফ গোসল করতে ঢুকেছে ঘন্টা পেরিয়ে গিয়েছে। পৌষ জানতো সময় লাগবে। কচু রান্না শেষ। বেশ মজা করে ইলিশ কচু রেঁধেছে ও। তৌসিফ ঘর থেকে ডাক দিলো,
“হানি, একটু এখানে এসো তো।”
পৌষ নিজের ভাঙা পা নিয়ে এগিয়ে গেলো। তৌসিফ ওকে এভাবে তারাতাড়ি আসতে দেখে ঘাবড়ে গেলো। নিজেও দুই পা এগিয়ে এসে ওকে ধরে নিলো। বসালো কাউচে। পৌষ মুখ কুঁচকে বললো,
“ডাকলেন কেন?”
“তোমার পায়ে কি হয়েছে?”
“কিছুই হয় নি।”
“কিছুই হয় নি? আমি দেখতে পাচ্ছি পৌষরাত। হাঁটতে পারছো না তুমি।”
“আরে ওসব ব্যাপার না৷”
“কিসের ব্যাপার না। কিভাবে ব্যথা পেলে তুমি?”
“আগে বলুন ডাকলেন কেন? খাবেন না? ইলিশ মাছ দিয়ে কচু রেঁধেছি।”
“খাব। হানি, তুমি না ভালো। বলো কি কোথায় লেগেছে।”
বলেই পা টেনে দেখতে চায় তৌসিফ। পৌষ তারাতাড়ি পা সরিয়ে নিলো। দাঁড়িয়ে গেলো চট করে। তৌসিফ ধরে জোর করে বসিয়ে চিন্তিত হয়ে বললো,
“সত্যি করে বলো তুমি বাড়ীর পেছনে কি করতে গিয়েছিলে?”
“কচু আনতে।”
সরাসরি মিথ্যা বললো পৌষরাত। তৌসিফ ওর পা দেখতে চাইলেই পৌষ বিরক্ত হয়ে গেলো,
“কি ভাই, আমার লুলা পা নিয়ে আপনি টানাটানি করছেন কেন?”
“ব্যথা কিভাবে পেয়েছো?”
দৃঢ় গলায় তৌসিফ জিজ্ঞেস করে। পৌষ ততটাই স্বাভাবিক ভাবে উত্তর করে,
“দেওয়ালে লাথি মেরেছিলাম।”
“কোন দেওয়ালে?”
“বাগান বাড়ীর দেওয়ালে।”
তৌসিফের বুক ছ্যাঁত করে উঠলো। পৌষের দিকে তাকিয়ে জানা কথাটাই জিজ্ঞেস করলো,
“কোন বাগান বাড়ী?”
লজ্জা লজ্জা মুখে পৌষ উত্তর দিলো,
“সম্রাটের বাগান বাড়ী।”
“হোয়াট!”
বলেই পা রেখে তৌসিফ ওর হাত দেখতে লাগলো। পৌষ বিরক্ত হয়ে গেলো। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে গিয়ে পৌষ নড়াচড়া যখন নড়াচড়া করছিলো তখনই ওর মাথা থেকে ওরনা পড়ে গেলো। তৌসিফের নজর আটকালো ওর গলায়৷ লাল ছোপ ছোপ দাগ দেখেই তৌসিফের আত্মা শুকিয়ে গেলো যেন। আস্তে করে সেখানে হাত বুলিয়ে দিলেই পৌষের কায়া কাঁপলো। তৌসিফ ঢোক গিলে আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,
“কাউকে দেখেছিলে?”
“কাকে দেখব?”
“এই দাগ গুলো?”
“চুলকে হয়েছে।”
তৌসিফ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো তবুও। নিশ্চিত হতেই শ্বাস নিলো। পৌষ উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
“খাবেন কি না?”
তৌসিফ চোখ তুলে তাকালো। পৌষ দেখলো লাল হওয়া সেই চোখ। অস্বীকার করলেও পৌষ জানে কিছুটা ভয় ও তৌসিফকে পায়। মুখে পটরপটর ওর স্বভাব শুধু। তৌসিফ চাপা স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
“কেন গিয়েছিলে?”
“ওনার বাগান বাড়ী দেখতে।”
“তুমি চেনো তাকে?”
“হুঁ। সম্রাট চেয়ারম্যান।”
“তাতে কি? যেতে হলো কেন?”
“কারণ ওটা তার বাগান বাড়ী।”
এবার রেগে গেলো তৌসিফ। ধমকে উঠলো,
“একই কথা বারবার বলছো তুমি পৌষরাত। সম্রাটের সাথে তোমার কি?”
“ভালোবাসি।”
স্তম্ভিত হয়ে তৌসিফ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
“কাকে?”
“সম্রাট তালুকদারকে।”
তৌসিফের চোয়াল ফাঁকা হয়ে গেলো। অবাক হওয়া স্বরে বললো,
“চেনো তুমি কে সম্রাট তালুকদার?”
“হুঁ।”
“তাকে ভালোবাসো? মাথাটা ঠিক আছে?”
“আছে।”
“পৌষরাত?”
“জি।”
“ভাসুর হয় তোমার।”
“একবার দেখা করাবেন?”
“মোটেও না।”
“প্লিজ।”
প্রেমসুধা সিজন ২ পর্ব ২৯
“উঁহু। বউ পছন্দ করে এমন মানুষের সাথে আমি দেখাব করাব? পাগল আমি পৌষরাত?”
পৌষ ঝট করে ওর হাত ধরলো। অনুনয় করে বললো,
“প্লিজ তুসু ভাই। একবার শুধু দেখব সামনাসামনি। কখনো দেখি নি।”
“তাকে দেখেছো কিভাবে?”
“পোস্টারে। আর সামনাসামনি দেখাবেন আপনি।”
তৌসিফ ফোঁস করে শ্বাস ফেললো। রেগে আছে নাকি ঠান্ডা আছে তা ঠাওর করতে পারছে না পৌষ। একটুও না।