প্রেমের নীলকাব্য পর্ব ৬

প্রেমের নীলকাব্য পর্ব ৬
নওরিন কবির তিশা

কানাডায়……
আঁধারাচ্ছন্ন এক গভীর নিশুতি,ঘড়ির কাঁটায় রাত বারোটা বেজে ৩৫ মিনিট।নাইট ক্লাব আর বার ব্যাতিত ঘুমন্ত সমগ্র ‌টরন্টোর শহর । শহরের ঠিক বক্ষস্থলে দাঁড়ানো নিজের সুবিশাল বিলাসবহুল অট্টালিকার মাঝে বসে আছে এক সুঠাম দেহি পুরুষ। কিছুটা ইউরোপিয়ানদের মত দেখতে,পুরুষটির মুখে হালকা চাপদাড়ি। চোখ দুটি অত্যন্ত তীক্ষ্ণ,তবে মুখে কিসের যেন এক মলিনতা।নাম ‌মাহমুদুল হক রাওফিন-কানাডিয়ান নামকরা কোম্পানি গ্রুপস অফ এমএইচআর-এর সিইও।

একেবারে অত্যাধুনিক ধাঁচের বিলাসবহুল তার এপার্টমেন্টির প্রত্যেকটা রুম সজ্জিত নানা দামী আসবাবপত্রে । তবে বর্তমানে সে যে রুমটাতে বসে আছে তার বিশেষত্ব হচ্ছে সেখানে নেই কোনো কৃত্রিমতার ছোঁয়া,সেটা শুধুই সজ্জিত এক শ্যাম কন্যার ছবিতে। সমগ্র রুমটার প্রত্যেকটা দেওয়াল জুড়ে শুধুমাত্র একটা মেয়েরই ছবি।
রাওফিন তীক্ষ্ণ তবে অত্যন্ত মায়ার দৃষ্টি মেলে চেয়ে আছে হাস্যোজ্জ্বল সেই শ্যাম কন্যাটির দিকে। শ্যামাঙ্গিণীটির হাসিতে যেন মিশে আছে এক সঙ্গাহীন সৌন্দর্য । রাওফিন এক দৃষ্টে চেয়ে আছে ,সেদিকে ।তার মুখে মলিন হাসি, হৃদয়ে এক নাম না জানা ব্যাকুলতা।সারাদিন যান্ত্রিকতার মাঝে ডুবে থাকলেও রাতে তার হৃদয় আনচান করে ওঠে এক শ্যাম কন্যার জন্য।এই সেই শ্যাম কন্যা যে কিছু বছর পূর্বে তার হৃদয়ে তুলেছিল প্রেম নামক এক গতিহারা ঘূর্ণিঝড়,যার বেগে এখনো প্রতিমুহূর্তে গভীর সমুদ্রের পালতোলা ডিঙি নৌকার ন্যায় বেগ হারায় রাওফিন।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

শ্যাম কন্যাটির ফ্রেমে বাঁধানো একখানা ছবি হাতে নিয়ে, অতি যত্নে তাতে হাত বুলালো রাওফিন।এক দীর্ঘনিঃশ্বাস বেরিয়ে আসলো তার বুক চিরে, খুব ইচ্ছা করছে তার শ্যামাঙ্গিণীকে সামনাসামনি দেখতে, একবার তার ঐ নরম কোমল ত্বকে ‌আদুরে স্পর্শ করতে। কিন্তু সেটা কি আর কোনোদিন সম্ভব? সে যে হারিয়ে ফেলেছে তার মায়াবিনীকে। হৃদয়ের যাতনাগুলো যেন মুখে ভেসে উঠল তার,গভীর পৌরুষ কন্ঠটা গুন গুনিয়ে গেয়ে উঠল,,,
🎶 ভালো আর লাগেনা এত কেন মায়া…..
যত কাছে আমি লাগে শুধু শান্তনা…
অবুঝ ভালোবাসা জানি এ নয় খেলা…..
তবু এ মনে হয় ছাড়া তোমায় বাঁচবোনা……🎶
রাওফিন ছবিটা নিজের বুকের সাথে সবেগে চেপে ধরল। ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো,,,
———“আমি ফিরব মায়াবিনী। শুধুমাত্র তোমার জন্য হলেও ফিরব। ফিরব তোমাকে নিজের করে পেতে, আমার একান্তই ব্যক্তিগত করে নিতে।”
রুমের বাতাস যেন হঠাৎই থমকে গেল। প্রত্যেকটা নিশ্বাস প্রশ্বাসের সঞ্চালন সাক্ষী হল রাওফিনের এমন দৃঢ় প্রেম প্রতিজ্ঞার।

বাংলাদেশ………
ঘড়ির কাঁটায় বেলা দুইটা বেজে ৩৫ মিনিট। মাথার উপর সূর্যি মামা উত্তপ্ত রৌদ্র কিরণ ছড়াচ্ছে আপন খেয়ালে। ভার্সিটি থেকে সামান্য দূরে একটা নির্জন ফুটপাত দিয়ে হাঁটছিল তিহু। আজকে মাহা অনুপস্থিত। গতকাল রাতে বাড়ি থেকে জরুরি তলপ আসায় সকাল সকাল গ্রামে ফিরেছে সে।
তাই তিহু আজ একা। রিশাদটাও কি একটা কারণে ভার্সিটি আসেনি আজ, কারণটা জানা নয় তার। চলতি পথে হঠাৎই সে ভাবলো বাসায় গিয়েই একবার মেসেজ করবে তাকে। কল্পলোকে ডুবে আপন খেয়ালে হাঁটছিল তিহু। হঠাৎই সে অনুভব করে তার পিছন পিছন আসছে কেউ। ঘুরে পিছনে তাকায় সে। কই কেউ তো নেই? রাস্তাটা প্রায় জনমানবহীন।

যারা আছে তারা আপন গতিতে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে ব্যস্ত, ফের হাঁটতে শুরু করলে তিহু।এবার সত্যি সত্যিই খুব কাছাকাছি কারো অস্তিত্ব অনুভূত হচ্ছে । ঘুরে তাকাতেই তিহু দেখতে পায় একটা ছেলে অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছে তার। ভ্রুদ্বয় সামান্য কুঁচকে সে বলে,,,
———“কি হলো আমার পিছনে কি?”
ছেলেটি একটা ঢোক গেলে ‌। ভয়ার্ত কণ্ঠে আমতা আমতা করে কিছু বলতে যেতেই তিহু এক ধমকে বলে,,,
———“এই আপনি কি নতুন বউ? আর আমরা কি বাসর ঘরে বসে আছি নাকি? এত লজ্জা পাচ্ছেন কেন হ্যাঁ?প্রেম করবেন আমার সাথে?”
তিহুর এমন কথায় কিছুটা বোকা বনে যায়, ছেলেটি। হাতে থাকা লেডিস পার্সটা তার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,,,

———“সরি আপু কিন্তু আপনার, পার্সটা পড়ে গিয়েছিল।”
তিহু ভ্রু কুটি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় তার হাতের দিকে। তীব্র বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে,,,
———“এটা আমার নয়।”
ছেলেটি যেন হাপ ছেড়ে বাঁচে। দীর্ঘনিশ্বাস নিয়ে বলে,,,
———“ও আচ্ছা আমি ভেবেছিলাম আপনার।”
তিহু ছেলেটিকে তার বোকামির জন্য ফের গালাগাল দিতে গিয়েও থমকায়। তারপর যেই না সে পিছন ঘোরে অমনি কেউ একজন একটা রুমাল চেপে ধরে তার মুখে। তিহু মুখ দিয়ে সাহায্য সূচক শব্দ করতে গিয়েও কিছু বলতে পারেনা। চারিপাশে ধোঁয়ায় ঢেকে যায় তার। অদৃশ্যমানতা ঘিরে ধরে চারিধার।

নীলের রুমের কিং সাইজ বিছানায়,নীলের একটা ফ্রেমে বাঁধানো ছবি হাতে শুয়ে আছে মুন্নি।‌ ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসির ঝলক। সযত্নে ছবিটাতে হাত বুলাতে বুলাতে এক অচিন কল্পলোকে ডুবেছে সে । হঠাৎই খুবই ধীর পায়ে রুমে প্রবেশ করল নাহা। মুন্নি কে ওভাবে শুয়ে থাকতে দেখে খানিক মুচকি হাসলো সে। অতঃপর চুপিসারে তার অতি সন্নিকটে এসে কিছুটা জোরে চিৎকারের ভঙ্গিমায় বলে উঠলো,,,
———“হ্যাপি বার্থডে মুন্নিপু। মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দা ডে।”
নাহার এমন কাণ্ডে কিছুটা হকচকিয়ে উঠলো মুন্নি। নাহার দিকে ফিরে সে বলল,,
———“ আমার কি মারার প্ল্যান করেছিলি নাকি? যাইহোক থ্যাংকস।”
নাহা বিছানায় তার পাশে বসতে বসতে বলল,,,
———“একদমই না। এখনো তোমার বিয়ে খাওয়া বাকি আছে না। বাই দ্যা ওয়ে প্ল্যান কি তোমার? ঘুরতে যাবা না ?”
মুন্নি উঠে বসতে বসতে বলল,,,

———“না আজকে আমার অন্য একটা প্ল্যান আছে।”
নাহা:“কি প্ল্যান?”
মুন্নি আনমনে কিছু ভাবল। অতঃপর লাজুক হেসে বলল,,
———“নীল ভাই তো কারো জন্মদিনের দিন তাকে কিছু বলে না তাই না?”
নাহা বোকা দৃষ্টিতে বলল,,,
———“না। কিন্তু এখানে আবার নীল ভাইয়ের কথা আসলো কোত্থেকে?”
মুন্নি:“তোর মাথায় যদি একটু বুদ্ধি থাকে? গেস হোয়াট আজকে আমি কি করতে পারি?”
হঠাৎই কিছু মনে পড়ায় চোখ মুখ চিকচিক করে উঠলো নাহার । উৎসুক কন্ঠে সে বলল,,,

———“তুমি ভাইয়াকে প্রপোজ করবা?”
ফের খানিক লাজুক হাসলো মুন্নি।
———“আমি শুধু তাকে নিজের মনের কথাটা জানাবো।”
নাহা মুন্নির গলা জড়িয়ে বলল,,
———“ও মুন্নিপু আ’ম সো এক্সাইটেড।”
মুন্নি পাশে রাখার নীলের গুরুগম্ভীর ছবিটার দিকে চেয়ে বলল,,,
———“আমিও!”

কেটেছে হয়তো ঘন্টাখানেক। তিহুকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায়, বন্দি করে রাখা হয়েছে এক আঁধার ঘেরা কক্ষের মাঝে। দিনের বেলাতেও ঘোর অমাবস্যার ন্যায় আঁধার সেথায়।এমনকি বেঁধে রাখা তার সুদীর্ঘ অক্ষিপল্লব বিশিষ্ট চোখ দুইটাও।তিহু বেঁধে রাখা মুখ দিয়ে সাহায্যের জন্য বিভিন্ন শব্দ করছে।হঠাৎ এই শব্দের ঝংকার তুলে লোহার ফটক খোলার আওয়াজ হলো। তিহুর বেঁধে রাখা মুখ দিয়ে সাহায্যের শব্দ যেন বাড়তে থাকলো । তিহুর অনুভূতি শক্তি বরবরই খুব তুখোড়।
মুহূর্ত কয়েকের মাঝেই তার অনুভূত হলো তার ঠিক সম্মুখে অত্যন্ত কাছাকাছি কেউ একজন । হঠাৎই তিহুর চোখ খুলে দিলো ব্যক্তিটি। অতিবাহিত হলো কয়েক ন্যানো সেকেন্ড হয়তো, চারিধারে ধোঁয়াশা কাটতেই তিহু সামনের বিশাল আকৃতির পুরুষটাকে দেখে কিছু বলার জন্য ছটফটালো। পুরুষটি বাঁকা হেঁসে বলল,,,

———“আরে এ তো নেহাতই বেবি গার্ল, আমাদের প্রিয় নেতা সাহেব কি না এখন এসব বাচ্চা মেয়ের প্রেমে পড়ছে? ছ্যা!”
তিহু নিজের কর্মকাণ্ড বহাল রেখেছে । পুরুষটি ফের বলল,,
———“যাইহোক, মেয়েটা ঝাক্কাস। আই রিয়েলি ওয়ান্ট টু টেস্ট হার। কি বলিস তোরা?”
পাশের ছেলেগুলো শয়তানি হেসে বলল,,,
———“কেন নয় ভাই?”
পুরুষটির এমন নোংরা ইঙ্গিতে চোখ দিয়ে যেন অগ্নি ঝরছে তীহুর। পা বাঁধা থাকলেও সেটা দিয়ে নিজের সর্বশক্তিতে মাটিতে আঘাত করলো সে। পুরুষটি সেদিকে চেয়ে বলল,,,
———“ওহ মেয়ের তেজ আছে মাইরি। এই ওর মুখ খোল। এই তেজি কন্যার কণ্ঠস্বর শুনে একবার নিজেকে ধন্য করি।”
পাশ থেকে একটা ছেলে তিহুর মুখ খুলতে যেতেই পুরুষটি তাকে থামিয়ে বলল,,,

———“এই স্টপ। যেইনা বললাম অমনি জিভ লকলক করে উঠল তাই না?সরে যা। আর কিছুক্ষণের মাঝেই ও আমার বউ হবে। আর তোদের ভাবি। তাই সাবধান।”
পুরুষটির এমন ধমকে থমকালো ছেলে গুলো। অবাক কন্ঠে তারা বলল,,,
———“কিন্তু ভাই আপনি যে বলেছিলেন…”
তাদের মুখের কথা ছিনিয়ে নিয়ে পুরুষটি বলল,,,
——— “যা বলেছিলাম সব ভুলে যা। এমন জিনিস একবার খেয়ে তৃপ্তি আসে না। বারংবার পেতে মন চাইবে।”
পুরুষটির এমন বাজে বাজে ইঙ্গিতে গা গুলিয়ে উঠছে তিহুর। পুরুষটি আর দেরি না করে তার মুখের বাঁধনটি খুলে দিতেই যেন অগ্নি ঝরে পড়ল রুমের মাঝে। নিজের সর্বোচ্চ তেজ নিয়ে তিহু বলে উঠলো,,,

———“শা’লা জলপা’ঠা খুব শখ জেগেছে না? এমন ডোজ দিবোনা, জীবন চলে যাবে বিয়ে হবে না।”
তিহুর এমন সম্বোধন আর উক্তিতে রীতিমতো ভীষম লেগে গেল উপস্থিত সকলের। পুরুষটি রেগে গিয়ে তিহুর চুলের মুঁঠি ধরে টান দিয়ে বলল,,,
———“মুখ সামলে কথা বল মা**! কাকে কি বলছিস খেয়াল আছে?”
চুলে জোর টান লাগার দরুন ব্যথায় সামান্য কুঁকিয়ে উঠল তিহু। তবে সেটা লোক চক্ষুর আড়াল করে, সে বলল,,,
———“জলপা’ঠা বলাটা কম হয়ে গেছে বল,, জা’র’জ? তোকে তো অন্য কিছু বলা উচিত ছিল? কাপুরুষ কোথাকার?”
পুরুষটি:“এই কেউ লেবুর পানি আন। মা**র মনে হয় ক্লোরোফ্রোমের গন্ধে নেশা হয়ে গিয়েছে। মাথার কাজ করছে না? ভুলে গেছে কাকে কি বলতে হয়!”

তিহু:“আমার জন্য লেবর পানি না এনে তোর জন্য এনার্জি ড্রিংকস আনতে বল, গ্লুকোজ হলে ভালো হয়। মনে হয় তোর শরীরে পুষ্টির অভাব আছে, না হলে কেউ একটা মেয়েকে এমন কাপুরুষের মতন অজ্ঞান করে তুলে আনে? বিশ্বাস কর আমি ভাবতেই পারিনি কেউ কোনোদিন আমাকে কিডন্যাপ করবে, আর যদিও করে তাহলে আমার একটা আশা ছিলো কিডন্যাপ করবে মুভির স্টাইলে, প্রথমে আমার সামনে একটা ব্ল্যাক মাইক্রো এসে থামবে, আমার হাত ধরে টানবে, আমি না না করব তারা তুলে নিয়ে চলে আসবে। তা না পুরো আশায় পানি ঢেলে দিলি তুই! ছ্যা, জীবনটাই বৃথা।”
তিহুর কথায় তার চুলের মুঠি ছেড়ে দিয়ে বাঁকা হাসলো পুরুষটি।

———“মাইরি বলছি, তোকেই আমার লাগবে। এমন তেজ এমন কথার বাহার! মেরা দিল মে দিলমে আগ জালদিয়া তুনে ফায়ার কুইন। আই ওয়ান্না ইউ।”
পুরুষটি তার দলীয় লোকগুলোকে ডেকে বলল,,
———“যেখান থেকে পারিস , কাজি ধরে নিয়ে আয়। এক্ষুনি এই মুহূর্তে বিয়ে করবো আমি। তবুও এই মেয়েকেই আমার লাগবে।”
ছেলেগুলো একে অপরের দিকে প্রশ্নাত্নক দৃষ্টিতে তাকালো। এটা কি আসলেও তাদের ভাই? সে কোনদিন বিয়ে করতে পারে? যার কাছে মেয়ে মানে ভোগ ভিন্ন অন্য কিছু নয়, সেই পুরুষই বলছে বিয়ে করবে? বিশ্বাস হলো না ছেলেগুলোর.! অপরদিকে তাদেরকে এমন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাড়া দিয়ে পুরুষটি বলল,,,

প্রেমের নীলকাব্য পর্ব ৫

———“কি বললাম কথা কানে যাচ্ছে না? এক্ষুনি মানে এক্ষুনি!”
ছেলেগুলো আচ্ছা ভাই বলে বাইরের দিকে পা বাড়ালো। পুরুষটি অদ্ভুত দৃষ্টি মেলে চেয়ে রইল তিহুর পানে, কে জানে তাতে কি আছ? হিংস্রতা নাকি মুগ্ধতা?

প্রেমের নীলকাব্য পর্ব ৬ (২)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here