প্রেম ও অসুখ পর্ব ১৮
নবনীতা শেখ
-“ম্যাডাম, বেশিই দেরি করছেন না?”
সাঁঝের নিঃশ্বাস গলার কাছে আটকে। ওপর-নিচ মাথা নাড়ল সে। তবে মুখে কিছু বলতে পারল না। হৃদ তা বুঝে নিয়ে বলল,
-“ফ্ল্যাটে আসতে পারবেন আগামীকাল সকালে? একটু প্রয়োজন আছে।”
সাঁঝ ত্বরিতে উঠে দাঁড়াল। টালমাটাল অবস্থায় পা সোজা ফেলতে পারছে না। কোনোমতে দু’কদম এগিয়ে দেয়াল ধরে দাঁড়িয়ে পড়ল। শান্ত কণ্ঠে বলল,
-“এখন আসলে সমস্যা?”
ওপাশে গম্ভীর পুরুষটির ঠোঁটের কার্ণিশে ফুটে উঠল মুচকি হাসি,
-“যা কিছু.. সব আপনারই। দ্রুত আসুন।”
সাঁঝের নিজের অনুভূতির নিশ্চয়তায় হ্যাঁ/না-তে পেতে অনেকটা সময় লেগে গেছে। আর দেরি করা চলবে না। হয়তো এখনই হ্যাঁ, নয়তো কখনোই না। এমন চিন্তা ধারা নিয়ে সাঁঝ এই রাতের সাড়ে বারোটা নাগাদ রুমের লাইট জ্বালিয়ে ফেলল।
বিছানায় বিনিদ্র রজনীর আশায় পড়ে থাকা নিষ্পাপ বান্দাকে জাগ্রত অবস্থায় তাকিয়ে থাকতে থেকে সাঁঝ থতমত খেয়ে গেল। মুখে দুটো বন্ধুজাতীয় শব্দ ব্যবহার করে বলে উঠল,
-“ঘুমাস নাই কিল্লাই?”
অনুভূতিহীন গলায় অদিতি জানাল,
-“বুকে ব্যথা, মনা। ঘুম আসে না।”
-“কী খাইছো রাতে?”
-“ভাজা মুরগী।”
-“আর ঘুমাইছো কখন?”
-“বিকালে।”
অতিষ্ঠ ভঙ্গিমায় মাথা নাড়ল সাঁঝ,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-“আর তুমি শালী এখন ঘুমের আশা করো? যাহ! এন্টাসিড খা একটা।”
অদিতি উঠে বসল রোবটের ন্যায়। আধবোজা চোখে তাকিয়ে ঢুলতে লাগল। কাঠকাঠ গলায় বলল,
-“সাঞ্জিনা? তুমি ঘুরতেছো কেন, আপু? তুমি ঘুরো, দুনিয়া ঘুরে..”
-“নেশা করছিস অদি? খাঁটি নেশাখোর লাগতেছে তোরে।”
-“নেশার পিনিক আমারে কাবু করতে পারে না, আফু। ছ্যাকা খাইছি।”
অদিতির দুঃখী দুঃখী কণ্ঠ। সাঁঝ ওষুধ আর পানি ওর হাতে দিয়ে ওয়ারড্রব থেকে একটা শাড়ি বের করল। অদিতি কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলল,
-“ছ্যাকা আমি খাইছি। পাগল তুমি হইছো। কেন বন্ধু?”
-“কারণ আমার স্বামী ডাকে। তুমি রাতভর কান্দার জন্য স্পেস দিলাম।”
-“লাইট বন্ধ করে দিয়ে যাস, মনা।”
-“আচ্চা।”
সাঁঝ একটা সবুজ পাড়ের ম্যাজেন্টা রঙের শাড়ি পরল। চুলগুলো সাংসারিক গিন্নিদের মতো খোঁপায় আটকাল। হাতে দুটো চুড়ি, নাকে নাকফুল আর তারপর দৌড়ে ওপরতলায়। লাইট বন্ধ করতে ভুলে গেছে মেয়েটা। অদিতি ওঠার আলসেমি করল না। এই গরমের মধ্যেও পা দিয়ে কাঁথা টেনে চোখ অবধি ঢেকে নিল। ঘুমানোর আগে বিড়বিড় করে বলল,
-“আমার কইলজ্যার বন্ধু উপমা আর জান-এ-জিগার অর্ণব ভাইয়া আমারে নমুনা বানায় ছাড়ল। দুইজনরে ত্যাজ্য করে দিলাম। চ্যাহ।”
সাঁঝ দরজার সামনে দাঁড়াল। কলিং বেল বাজানোর প্রয়োজন হলো না। দরজা কিঞ্চিৎ হা করা। সাঁঝ সেই খোলা জায়গা দিয়ে একচোখ ঢুকিয়ে দিলো। তবে ভেতরের কিছু দেখতে পেল না। সমগ্রটায় কালো রঙের আন্ধার। সাঁঝ আন্ধারের গভীরতা খুঁজতে গিয়ে থেমে গেল। কী এক অদ্ভুত পরিচিত সুবাস না? তার স্বামীর পারফিউম এটা। এখানে অদ্ভুত কী হলো? তার স্বামীর বাসা থেকে তো আর পড়শীর বাড়ির খোরগোশের গন্ধ আসবে না, তাই না? তবে এটা প্রগাঢ় বেশ।
সাঁঝের ভাবুক মুখটা আচমকাই থম মেরে গেল। কপালে ফুটে উঠল দুটো ভাঁজ। ধীরে ধীরে অল্প খুলে রাখা দরজাটা পুরোপুরি খুলে গেল। একদম সামনে, একহাতের দূরত্বে বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে হৃদ। পরনে কালো টিশার্ট।
সাঁঝ মেকি হাসল। দাঁত কেলিয়ে বলল,
-“হ্যালো!”
হৃদ হেসে উঠল আনমনে,
-“ওয়েলকাম ব্যাক টু ইওয়োর হোম, ম্যাডাম।”
-“থ্যাংক ইউ।”
সাঁঝ অপ্রস্তুত হলো। অস্বস্তি নিয়ে ফ্যালফ্যালে চোখে তাকিয়ে রইল। সদ্য শাওয়ার নেওয়া হৃদকে কি তুলনামূলক একটু বেশিই স্নিগ্ধ ও আকর্ষণীয় লাগছে না? আচ্ছা.. এভাবে হাভাতের মতো তাকিয়ে থাকলে কি পাপ লাগবে? লাগবে না। তারই স্বামী। সম্পূর্ণ অধিকার আছে এভাবে তাকিয়ে থাকার।
-“ভেতরে আসবে না?”
হৃদের প্রশ্নে চিন্তায় বিঘ্ন ঘটল। সাঁঝ চকিতে বলে উঠল,
-“না! আরেনাহ! হ্যাঁ।”
-“এসো।”
ভেতরে প্রবেশ করল সাঁঝ। হৃদ তাকে জানাল, আগামীকাল ডাক্তার দেখাতে হৃদের বাবা রওশন সাহেব উদয়কে সাথে নিয়ে ঢাকা আসবেন। তিনি একটু কঠোর হৃদয়ের মানুষ। ছেলে ও ছেলের বউয়ের আলাদা থাকাটা ভালো চোখে দেখবেন না।
সেবার সাঁঝের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পর আফিয়া বেগম বাদে সকলের ধারণা, সাঁঝ আর হৃদ একসাথেই থাকছে। হৃদও বিশেষ কৈফিয়ত দেওয়ার অনিচ্ছায় কাউকে সত্যটা জানায়নি। এখন রওশন সাহেব বাসায় এলে যদি দেখেন এই অবস্থা, তিনি রুষ্ট হবেন।
সাঁঝ সবটা শুনে বলল,
-“ওনারা কয়দিন থাকবেন?”
-“বলতে পারি না।”
-“আচ্ছা। আমি সকালে নিচে গিয়ে আমার জামা-কাপড় সব নিয়ে আসব।”
-“ঠিক আছে।”
তারপর দুইজনেই চুপ হয়ে রইল। হৃদ কিছু বলতে চাইছে না আর সাঁঝ কী বলবে তা ভেবে পাচ্ছে না। এমতাবস্থায় অনেকটা সময় সাঁঝকে দিয়ে হৃদ বলল,
-“তো আজ থাকবে?”
সাঁঝের বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। দৃষ্টি বিক্ষিপ্ত, এদিক-ওদিক, অশান্ত। সে থেমে থেমে বলল,
-“আজ.. থাকব? থাকি.. কাল তবে সুবিধা হবে। কী বলেন? থাকি?”
-“থাকো।”
-“আচ্ছা.. কোনরুমে থাকব?”
-“তোমার ইচ্ছা।”
-“ওনারা এলে কোথায় থাকবেন?”
হৃদের এই ফ্ল্যাটে তিনটা রুম। একটা স্টাডিরুম, একটা বেডরুম, আরেকটা গেস্টরুম। হৃদ গেস্টরুমটা দেখিয়ে বলল,
-“গোছাতে হেল্প করো, সাঁঝ। সারাদিন কাজের খুব প্রেশার ছিল। এখন এসব একা হাতে করা লাগবে ভাবতেই হাঁপাচ্ছিলাম। তুমি এসে সুবিধাই করলে।”
-“আপনার হেল্পিং হ্যান্ড কী করে?”
হৃদ অসহায়ের মতো হাসল,
-“আমাকে নিরিহ ব্যাচেলর পেয়ে বুয়া একদিন আসেন, তিনদিন আসেন না। এ নিয়ে কিছু বললে তিনি গর্বের সাথে বলেন, ‘তুমি একা মানুষ, তিনবেলা ডিমপোচ খেয়ে কাটায় দিতে পারবা। তাছাড়া যা রেন্দে ফ্রিজে রেখে দিছি, একমাস কাটায় দিবা’। ওনার কথা শুনে ভাবি, মন্দ বলেননি। তাই করা যায়। তারপর পড়ে যাই ফ্যাঁসাদে।”
-“তারপরও ওনাকে কাজে রেখেছেন কেন?”
-“বিয়ের আজকে কয়মাস, বলো তো?”
-“চারমাস এগারো দিন।”
-“ম্যাডাম শোনেন, বিয়ের আগে তো বুয়া মাসে একদিন ব্যাচেলর বলে ক্ষেপাতেন আমাকে। আর এই বিয়ের চারমাস এগারোদিনে যতদিন ওনার সাথে দেখা হয়েছে, ততদিনই আমাকে ব্যাচেলর বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেন বলুন তো?”
সাঁঝ ভাবুক হলো,
-“কেন?”
-“কারণ.. হাজারো মেয়েদের মন ভাঙা ডাঃ অনয় আহমেদ হৃদ তার নিজের তিন কবুল বলা বউয়ের কাছে প্রতিনিয়ত নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। তো ম্যাডাম, সাংসারিক হয়ে আমাকে উদ্ধার করতে চান কবে, বলুন।”
সাঁঝ উদাসীন হয়ে বলল,
-“চলুন, সংসার করি। চলুন, প্রেম করি। চলুন, ঘর গোছাই।”
হৃদ হাসতে হাসতে বলল,
-“চলুন।”
স্বামীর বাড়িতে শ্বশুর ও দেওরের পা ফেলার আগেই সাঁঝ আবেগে বিবেক হারানো কাজকাম করা শুরু করে দিলো। তখন সকালের একটা সময়। গৃহিনী বেশে থাকার জন্য যত রকমের ছলাকলা প্রয়োজন, সাঁঝ সারারাত ড্রয়িং রুমে বসে ইউটিউব দেখে শিখে নিয়েছে। হৃদ যতবার তাকে ডেকেছে, ততবারই গম্ভীরমুখে সাঁঝ চশমা নাকের ডগায় ও দৃষ্টি ফোনের স্ক্রিনে আবদ্ধ রেখে বলেছে,
-“ডোন্ট ডিস্টার্ব মি, ডক্টর। আমি ব্যস্ত আছি।”
অবাক হয়ে হৃদ জিজ্ঞেস করে,
-“কী কাজে ব্যস্ত?”
সাঁঝের আলস্যমাখা প্রত্যুত্তর তখন এ-ই ছিল,
-“সংসার শেখায় ব্যস্ত।”
আর তারপর হৃদ না কিছু জিজ্ঞেস করার অবকাশ পায়, আর না সেখানের দাঁড়িয়ে থাকার সুযোগ। রাত দেড়টা অবধি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্ত্রীকে সংসার শেখায় সঙ্গ দিয়ে গেছে। এরপর ক্লান্তি, ঘুম ও সারাদিনের পরিশ্রমে মন এখানে পড়ে থাকলেও শরীরটা বিছানা খুঁজল। মনের সাথে শরীরের বোঝাপড়ায় হৃদ কখন যে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে গেছে, টের পায়নি।
পরদিন হৃদ ছুটিতে আছে। রওশন সাহেব ও উদয় সকালের বাসে এসেছে, পৌঁছাল নয়টার দিকে। সারারাত জেগে সদ্য সোফায় ঘুমানো সাঁঝ কলিং বেলের শব্দ শুনে জাগ্রত হলো। তবে বেখেয়ালি সে, ঘুমের নেশায় টলমল হয়ে আছে। হৃদ আওয়াজ শুনে ড্রয়িং রুমে এলো। সাঁঝকে দেখে হা হয়ে গেল, বিমূঢ় কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,
-“ঘুমাওনি?”
সাঁঝ দু’ধারে মাথা নাড়ল,
-“না।”
-“রুমে যাও।”
সাঁঝ এলোমেলো পায়ে রুমে গিয়ে উবু হয়ে বিছানায় পড়ে গেল। ওর বিছানায় পড়তে দেরি, ঘুমোতে দেরি হয়নি। তারপর যখন ঘুম ভাঙল, তখন বিকেল চারটায়। এর মধ্যে একবারও ঘুম ভাঙেনি।
ঘুম থেকে উঠে সাঁঝের আধঘন্টা সময় লেগে যায় এটুকুর হিসেব লাগাতেই যে সে কে, কোথায় আছে, তার কে কে আছে, রঙ্গের এই দুনিয়ায় সে কেমন ঢঙ্গের৷
এসব হিসেব করতে করতে সে চোখ খুলল। ঠিক সামনের সোফায় হৃদ বসে বই পড়ছে। সাঁঝ পিটপিট করে তাকিয়ে রইল। ছাইরঙা টিশার্ট, কালো প্যান্ট ও চোখে চিকন ফ্রেমের গ্লাস। ফরসা মুখে ট্রিম করা দাড়ি ও মোচ কেমন অদ্ভুত মানানসই। হাত ও বুকের কাছে টিশার্টটা আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। চওড়া বুক হৃদের। এত আকর্ষণীয় লাগে! ঘুম থেকে উঠে এমন মাখন যদি সবসময় দেখা যায়, সাঁঝ কেবল এটুকুর লোভে সংসার জীবন কবুল করে নিতে রাজি।
তার চোখ দুটো বড়ো বড়ো হয়ে আছে। হৃদের বই পড়ার ফাঁকে একটু পর পর ঘুমন্ত মেয়েটাকে দেখে যাচ্ছে। এবার তাকাতেই সাঁঝ বিড়বিড় করে উঠল,
-“মাশাআল্লাহ! কী সুন্দর ব্যাটালোক!”
সাঁঝ শুধু এটুকু বলেই থেমে থাকল না। তার মুখ দিয়ে আরও মধু বেরোতে লাগল,
-“এমন হ্যান্ডসাম আমার কপালে লেখা আছে, এটা ভাবতেই শিরায় শিরায় নাচ দৌড়াচ্ছে। নিজের কপালে নিজেই চুম্মাইতে মন চাইছে। ইশ!”
সাঁঝ কী বলল, হৃদ শুনতে পায়নি। তবে ঘুমপরীর চোখের মুগ্ধতা তার নজর এড়ায়নি। সে সহাস্যমুখে পুনরায় জানতে চাওয়ার তাগিদে বলল,
-“সরি?”
সাঁঝ প্রশস্ত হাসল, ঠোঁট ছড়িয়ে বিশাল এক হাসি, চোখ দুটো ছোট ও বাঁকানো। সে মিনমিনে স্বরে বলল,
-“কিচ্ছু না।”
হৃদ বইটা ভাঁজ করে টেবিলের ওপর রেখে বলল,
-“হুম, বুঝলাম। বলুন তো কয়টা বাজে?”
সাঁঝ ভাবুক হলো, সেই সাথে দুষ্টুমি, ছেলেমানুষী, চাঞ্চল্য..সব যেন মিলেমিশে একাকার,
-“বাতাসে গরম নেই মানে এখনো রোদের তেজ আসেনি। শিওর দশটা। ওয়েট। এক্সাক্ট টাইম বলি। দশটা সাতাশ। তাই না? আমি আবার যা টাইম বলি, কেমনে কেমনে যেন মিলে যায়। মিলেছে না?”
হৃদ মাথা নাড়ল,
-“খুব মিলেছে।”
আর তারপর দক্ষিণের দেয়ালে ঝুলানো ঘড়ির দিকে ইশারা করে বলল,
-“তাকান!”
চারটা আটাশ! সাঁঝ ঠোঁট উলটে বলল,
-“টাইম ঠিক করেননি? কী অলস রে বাবা!”
হৃদ জবাবে কিছুই বলল না। কেবল তাকিয়ে রইল এই আজিব ও জাদুঘরে সংরক্ষণের মতো আধ্যাত্মিক বস্তুটির দিকে। ইউনিক, আনকমন ও ওয়ানপিস শব্দগুলোর প্রতি হৃদের আজন্ম আগ্রহ। তাই বলে যে স্রষ্টা তাকে এমন জিনিস দেবেন, এটা যেন ভাবনাতীত ছিল।
সাঁঝের শেষ কথা বলার সাড়ে তিনমিনিট পেরোল। ঘড়ির কাটা আটাশ থেকে বত্রিশে এসে ঠেকল। বেজে উঠল আসরের আজান। সাঁঝ পুরো বোকার মতো তাকিয়ে রইল। আসলেই এই বেলা সে ঘুমিয়ে কাটাল?
তার অপ্রস্তুত চোখ-মুখে এবার হৃদের কী যে হাসি পেল! কিন্তু সদা গাম্ভীর্যের আলগা ভাবে নিজের রূপ-যৌবনকে অতিমাত্রিক আকর্ষণীয় রাখা চালাক পুরুষটি হাসতে পারল না। স্রেফ জিজ্ঞেস করল,
-“কী?”
সাঁঝ নিজের শাড়ির আঁচলটা গুছিয়ে নিয়ে বলল,
-“আপনার বিছানা অনেক আরামদায়ক ডাক্তার সাহেব, আমি ঘুমিয়ে মজা পেয়েছি। আমি আরও ঘুমাতে চাই।”
হৃদ মেয়েটাকে নাস্তানাবুদ করার তাগিদে ঠাট্টার স্বরে জানতে চাইল,
-“একা?”
-“না, আপনার সাথে। কিং সাইজের বেডে কুইনের একা ঘুমিয়ে মজা কম।”
ডাক্তার সাহেব সম্ভবত মনভুলো মানুষ। মেয়েটা যে তার চেয়ে আরও কয়েক কাঠি বেশি শেয়ানা, তা কী করে ভুলে গেল? হৃদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
প্রেম ও অসুখ পর্ব ১৭
-“মুরগী কোথাকার!”
সাঁঝ স্মিত হাসল। হৃদের বিহ্বলিত অবস্থার দিকে তাকিয়ে নিজের দু’হাত এগিয়ে দিয়ে বলল,
-“আয় তি তি তি! কই রে আমার মোরগ। আয় আয় আয়। চু চু চু…”