বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ১৯

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ১৯
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

আদ্রিয়ান আজ একটু রাত করেই বাড়িতে এলো। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। ড্রয়িং রুমে এসে দেখল অভ্র সোফায় শুয়ে শুয়ে গান শুনছে। আদ্রিয়ান আশেপাশে চোখ বুলিয়ে আবার অভ্রর দিকে তাকালো। অাদ্রিয়ানের আসার আওয়াজ পেয়ে অভ্র তাড়াতাড়ি হেডফোন কান থেকে নামিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
” স্যার চলে এসছেন?”
আদ্রিয়ান আবার চারপাশে চোখ বুলিয়ে বলল,
” বাকি সবাই কোথায়?”

অভ্র বুঝতে পারল যে আদ্রিয়ান অনিমাকেই খুঁজছে তবুও একটু দুষ্টুমি করে বলল,
” জাবিন তো নিজের রুমেই ঘুমোচ্ছে। আর সার্ভেন্টরা সবাই আছে, আপনি বললেই চলে আসবে।”
” আর সবাই?”
অভ্র বুঝতে পারেনি এমন একটা ভাব করে বলল,
” আর কে?”
আদ্রিয়ান বুঝতে পারল যে অভ্র দুষ্টুমি করছে। তাই চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই অভ্র একটু হকচকিয়ে গিয়ে বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” রুমে, হ্যাঁ রুমেই আছেন ম্যাম। ঘুমোচ্ছে মনে হয়।”
আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে ওপরের দিকে তাকিয়ে আবার অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল,
” সবাই খেয়েছে?”
” জি স্যার, আমি আর আপনি বাদে।”
আদ্রিয়ান এবার একটু বেশিই অবাক হলো। যত রাতই হোক অনিমা ও ফেরার আগে রাতে খায়না আর ওপরেও যায়না। আজ কী হল? শরীর খারাপ না-কি? নানারকম ভাবনা ভাবতে ভাবতে আদ্রিয়ান অভ্রকে বলল,

” তুমি খাবার সার্ভ করতে বলে টেবিলে বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”
অভ্র মাথা নেড়ে চলে গেল। অভ্র একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল। এই লোকটা যেমন ভয়ানক তার বোনটাও তেমন। কিছুক্ষণ আগেই জাবিন যেচে পরে ঝগড়া করেছে এসে ওর সাথে। আসলে ও সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল আর জাবিন নামছিল। জাবিনকে নামতে দেখে অভ্র সাইড দিয়েই যাচ্ছিল কিন্তু কীকরে জাবিনের সাথে ধাক্কা লাগলো নিজেই বুঝে উঠতে পারল না। আর তখনই জাবিনের বিখ্যাত হুমকি ধমকি শুরু হয়ে গেল। রাগী গলায় বলল,

” কী সমস্যা হ্যাঁ? সুন্দরী মেয়ে দেখলেই খালি গায়ে পরতে ইচ্ছে করে না?”
অভ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল জাবিনের দিকে। মেয়েটা সুন্দরী সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু কেউ যে সেটা এতো দম্ভের সাথে বলে বেড়াতে পারে সেটা ভাবেনি। অভ্র একটু গলা ঝেড়ে বলল,
” ইচ্ছে করে দেই নি লেগে গেছে।”

” বললেই হল হ্যাঁ? আপনি ইচ্ছে করেই দিয়েছেন। এসব বলে এখন আমায় বোকা বানাতে আসবেন না ঠিকাছে? আপনাদের মত ছেলেদের চেনা আছে। হুহ।”
অভ্রর এবার সত্যিই একটু রাগ হলো। তাই ও জাবিনের দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর কোমরে স্লাইড করে হাত রেখে একটানে নিজের দিকে এনে বলল,
” যদি ইচ্ছে করে ছোঁয়ার হত তো এভাবে ছুঁয়ে দিতাম। ওভাবে নয়।”

বলে জাবিনকে ছেড়ে দিয়ে ওপরে চলে গেছিল। জাবিনও বোকার মত কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল ওখানে। এই প্রথম কোন অন্য ছেলে ওকে এভাবে টাচ করেছে। যদিও নামার সময় ধাক্কাটা ও ইচ্ছে করেই দিয়েছিল। কারণ অভ্র ডোন্ট কেয়ার ভাবটা। মানছে ছেলেটা একটু সুন্দর টাইপ ছেলেদের দলেই পরে তাই বলে এতো ভাব নেওয়ার কী আছে? কিন্তু ওর চালটা যে অভ্র ওর দিকেই এভাবে ঘুরিয়ে দেবে সেটা ভাবতে পারেনি ও।

আদ্রিয়ান ওপরে গিয়ে আগে চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে নিল। এরপর অনিমার রুমে গিয়ে হালকা করে দুবার নক করল। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে চাবি বের করে দরজাটা আর্ধেক খুলে উঁকি দেখল অনিমা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে, ঘুমিয়ে পরেছে নিশ্চয়ই? আদ্রিয়ান ভেতরে ঢুকে অনিমার কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত রেখে দেখল জ্বর এসছে কি-না। কিন্তু সবটা স্বাভাবিক দেখে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল। মনটা খারাপ হয়ে গেল হঠাৎই। কালরাতের পর থেকে মেয়েটার সাথে ভালোভাবে কথাও বলতে পারছেনা।

আর মেয়েটাও কেমন পালাই পালাই করছে। সমস্যা কী হল সেটাই বুঝতে পারছেনা। ঔষধের বক্সটা চেক করে দেখল যে ঔষধ খেয়েছে। অনিমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আলতো করে দুবার ‘অনি’ বলে ডেকেছিল কিন্তু অনিমা কোন রেসপন্স করেনি। কিছুক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে ছোট্ট একটা শ্বাস নিয়ে উঠে চলে গেল আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ান চলে যেতেই অনিমা চোখ খুলে তাকাল। ইচ্ছে করেই ঘুমের ভান করছিল। খুব বেশি দরকার না থাকলে যাবেইনা ও আর আদ্রিয়ানের কাছে, কথাও বলবেনা।

মনের ভেতরে কিছু অন্যায় অনুভূতিতে জায়গা দিয়ে ফেলেছে, সেগুলো আগে মেটাতে হবে। বেশি বেশি ভেবে নিয়েছিল ও। তাই হয়তো এভাবে ধাক্কাটা খেতে হলো। উনি যখন স্মৃতিকেই ভালোবাসে তো ওর কাছে কেন আসে? থাকুক না স্মৃতিকে নিয়েই। ও আর যাই হোক কারো লাভ স্টোরির ভিলেন হতে পারবেনা। এরকম সব চিন্তা করতে করতে ঘুমোনোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে শুরু করল।

নিজের কেবিনে টেবিলে হাত রেখে গভীর ভাবনাতে মজে আছেন রঞ্জিত চৌধুরী। নিজের অতীত বর্তমানের হিসেব মেলাচ্ছেন উনি। যেখানে দেশের এত বড় বড় মাথারা ওনার কাছে কিছুই না। সেখানে ঐ পিচ্ছি একটা মেয়ের ভয়ে থাকতে হচ্ছে ওনাকে। কখন কী করে বসে ঠিক নেই। ও যদি এখন ঠিক থাকে আর কোনভাবে ঐ মহিলার কাছে পৌঁছে যায়। তাহলে খুব বড় ক্ষতি হয়ে যাবে ওনার। ঐ মহিলাটাও কোথায় লুকিয়ে আছে সেটাও তো জানেনা। এরমধ্যেই কবির শেখ এসে বসল রঞ্জিত চৌধুরীর সামনের চেয়ারে। ফলের ঝুড়ি থেকে একটা আপেল নিয়ে সেটাতে কামড় বসিয়ে বলল,

” কী এতো ভাবছেন?”
রঞ্জিত চৌধুরী দুইহাতের একত্রিত আঙ্গুলগুলো নাড়াতে নাড়াতে বলল,
” মেয়েটা কী হাওয়ায় মিলিয়ে গেল না-কি?”
” এমনও হতে পারে বেঁচেই নেই।”
রঞ্জিত চৌধুরী চমকে তাকাল কবির শেখের দিকে। কবির শেখ বললেন,
” দেখ। দিনকাল খারাপ। ওর যাওয়ারও জায়গা নেই। এমনিতেও একটা মেয়েকে এরকম একা পেয়ে ছেড়ে দেবে? এতো ভালো মানুষ আছে না-কি?”

” যদি সেটা হয় তাহলেতো বেশ ভালোই।”
রঞ্জিত চৌধুরী চিন্তিত মুখ করে বললেন,
” কিন্তু যদি সেটা না হয়? তাহলে কী হবে?”
” কী না হলে কী হবে?”
দুজনেই চমকে তাকিয়ে দেখে দরজার কাছে রিক দাঁড়িয়ে আছে। ওনারা নিজেদের সামলে নিয়ে একটু ঠিকঠাক হয়ে বসল। রঞ্জিত চৌধুরী কথা ঘুরিয়ে বললেন,

” যাক অবশেষে এলে তুমি?”
রিক চেয়ার টেনে বসে বলল,
” শর্ত একটাই ড্যাড। অনিকে আমি খুঁজে আনার পর ওর সাথে পাবলিকলি আমাদের বিয়ে হবে এন্ড তুমিও কোন ঝামেলা ছাড়াই সেটা মেনে নেবে। এন্ড ওকেও নরমালি নিজের পুত্রবধু হিসেবে মেনে নেবে।”

রঞ্জিত চৌধুরী কবির শেখের দিকে তাকাতেই সে চোখের ইশারা করল। রঞ্জিত চৌধুরী হেসে বলল,
” আরে সেটা তো অনেক আগেই আমি মেনে নিয়েছি।”
রিক চোখ ছোট ছোট করে তাকাল রঞ্জিত চৌধুরীর দিকে। কবির শেখ ব্যাপারটা সামলাতে বলল,
” পেয়েছো মেয়ে..মানে অনিমাকে?”
” এখনও না। জানিনা কোথায় চলে গেছে। তারচেয়ে বড় কথা ও ঠিক আছে কি-না।”
বলে রিক নিজের ভাবনায় মগ্ন হয় গেল। কবির শেখ আর রঞ্জিত চৌধুরী একে ওপরের চোখের দিকে তাকিয়ে এরপর নিজের কাজে মনোযোগ দিল।

আজকে ক্লাস নেই। অনিমা সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আজ আর আদ্রিয়ানকে কফি দিতে যায়নি। সার্ভেন্ট দিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে রুমে এসে বসে ছিল। অনেক সময় পর নিচে আসার সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখল। আদিব আর রাইমা এসছে। আদ্রিয়ান, অভ্র, জাবিনও বসে আছে সোফাতে। অনিমা নিচে নামতেই জাবিন বলল,

” ঐ তো অনি আপু এসে গেছে।”
এটা শুনে সবাই তাকালো অনিমার দিকে। অনি একটু এগোতেই রাইমা উঠে এসে জড়িয়ে ধরল ওকে, ওও হেসে রাইমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
” কেমন আছো?”
” আমি ভালো। তুমি ভালো আছো আপু?”
” একদম।”

রাইমা অনিমাকে নিয়েই সোফায় বসল। আদ্রিয়া ন সুক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে কিন্তু অনিমা একবারও তাকায় নি। অনিমা আদিবের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,
” ভালো আছেন ভাইয়া?”
” আলহামদুলিল্লাহ্।”
” আশিস ভাইয়া আসেন নি?”
” না ওর আজ একটু কাজ আছে।”
” আচ্ছা।”

” শোনো, সামনের পনেরো তারিখ আমার আর রাইমার বিয়ে। তোমারও ইনভেটেশন রইল কিন্তু। একটা বাংলো বুক করে নিয়েছি, তেরো তারিখে আদ্রিয়ানের সাথে চলে আসবে। যদিও আদ্রিয়ানকে বলা মানেই তো তোমাকে বলা।”
অনিমা মুচকি হেসে বলল,

” না ভাইয়া উনি আর আমি দুজন পুরোটাই আলাদা মানুষ। তাই ওনাকে বলা আর আমায় বলা কোনদিন এক হতে পারেনা। তবুও যখন আপনি আমাকে বলেছেন, অবশ্যই যাবো।”
সবাই একটু অবাক হল অনিমার কথায়। আদ্রিয়ানও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। আদিব একটা মেকি হাসি দিয়ে বলল,

” আর হ্যাঁ। অরু, তীব্র, স্নেহা ওদেরকেও বলতে হবে কিন্তু। তাই ঠিক করেছি একটা ট্রিট এর আয়োজন করব তাড়াতাড়ি ওখানেই ওদের সাথে কথা হয়ে যাবে কী বল?”
” আপনি যেটা ভালো মনে করেন।”

এরপর ওরা সবাই ব্রেকফাস্ট করতে বসল। অনিমা রাইমা ওদের সাথে বিভিন্ন কথা বলছে আর খাচ্ছে। কিন্তু আদ্রিয়ান খাচ্ছে কম অনিমাকেই বেশি দেখছে। এটুকু বুঝতে পেরে গেছে যে অনিমা ইচ্ছে করেই ওকে ইগনোর করে যাচ্ছে। কাল রাতে যে অনিমা জেগে ছিল সেটাও জানে ও আসার সময় ওকে পেছন ঘুরে তাকাতে দেখেছে, সকালে কফিটা অবধি দিতে আসেনি। এভাবে ইগনোর করার কারণটা বুঝতে পারছেনা ও। আদিব বলল,

” জাবিন এখানেই ভর্তি হয়ে যাবে?”
” হ্যাঁ ভাইয়া। এখানেই থাকব এখন থেকে।”
কথাটা শুনে অভ্র বিষম খেল। এই মেয়ে এখানে পার্মানেন্ট হয়ে গেলে ওর কী অবস্থা হবে? খাওয়া দাওয়া শেষে ওদের বিদায় দিয়ে অনিমা কিচেনে গিয়ে সব ঠিক করে দেখল আদ্রিয়ান পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনিমা বলল,
” কিছু লাগবে আপনার?”
” না।”
অনিমা পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই আদ্রিয়ান বলল,
” শোনো।”
” আমার কাজ আছে।”

বলে অনিমা দ্রুত পায়ে ওখান থেকে চলে গেল নিজের রুমে। আদ্রিয়ান পেছন থেকে কয়েকবার ডাকার পরেও শোনেনি ও। আদ্রিয়ান রেগে দেয়ালে একটা লাথি মারলো। অনিমা রুমে গিয়ে অরুমিতার সাথে কথা বলল। যদিও বেশিক্ষণ কথা বলেনি। কিন্তু অরুমিতার কন্ঠটা কেমন যেন লাগল ওর কাছে। অরুমিতা ফোন কেটে ম্যাসেঞ্জারে মেসেজ রিকোয়েস্ট চেক করতে গিয়ে দেখে আশিসের আইডি থেকে মেসেজ এসছে ‘কেমন আছো?’ অরুমিতার এবার রাগ হল।

ও কেমন আছে সেটা জেনে ঐ লোকটা কী করবে? সব ভুলে যখন নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে ভালো থাকতে শিখেছে তখনই আসতে হল একে ওর শান্তি নষ্ট করতে? ও একবার ভাবল ব্লক করে দেবে। পরে ভাবল যে যেখানে ঐ মানুটাই ওর কাছে মেটার করেনা। সেখানে এসব কেন করবে? তাই ওভাবেই রেখে দিল। আর ওর সেই প্রথম দিনের কথা মনে পরল। সেদিন আশিস নামক ব্যাক্তিটি এসছিল ওর জীবনে। এরকমই একসময়। রিল্যাক্স মুডে মেসেজ রিকোয়েস্ট চেক করতে গিয়েই চোখে পরেছিল আশিস নামক আইডিটি। আর একটা মেসেজ যেখানে লেখা ছিল শুধু ‘হাই’। যদিও অপরিচিত আইডি বলে অরুমিতা রিপ্লে না করে ওভাবেই রেখে দিয়েছিল। কথাটা ভেবে ছোট্ট শ্বাস ফেলে ফোন স্ক্রোলিং এ মনোযোগ দিল ও।

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ১৮

আরও একটা দিন কেটে গেছে। অনিমা আদ্রিয়ানকে এভাবেই ইগনোর করে যাচ্ছে। ও ওর সময়মত ভার্সিটি থেকে এসে নিজের মত সময় কাটাচ্ছে, জাবিনের সাথে গল্প করছে। নিজের হাতে আদ্রিয়ানকে আর কফি করে দেয়নি। আদ্রিয়ান এতো কথা বলায চেষ্টা করছে কিন্তু অনি শুধু জরুরি কথারই উত্তর দিয়েছে বেশি কথা বলেনি। আদ্রিয়ানের মন মেজাজ সবকিছুই প্রচন্ডরকম খারাপ হয়ে আছে এইজন্য। এতক্ষণ ঠান্ডা মাথায় সামলাতে চাইলেও এবার রাগ হচ্ছে।

রাতের খাবারের পর অনিমা কারো সাথে কথা না বলেই চলে গেল। মন এমনিতেই ভালো নেই ওর। নিজের ওপরই রাগ হয়। কী দরকার ছিল আদ্রিয়ানকে নিয়ে আগে আগেই এতো বেশি চিন্তা করে ফেলা। এখন নিজেই কষ্ট পাচ্ছে। বিষন্ন মনে বিছানাটা গুছিয়ে যেই শুতে যাবে। তখনই দরজা লাগানোর শব্দে একটু চমকে পেছনে তাকালো। তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান অনেকটা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ও আদ্রিয়ানের চোখ মুখ দেখে ভয় পেলেও বালিশটা রেখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে তোতলানো কন্ঠে বলল,

” ক-কিছু বলবেন? এতো রাতে এখানে কেন এসছেন?”
আদ্রিয়ান এগিয়ে আসতে আসতে বলল,
” এটা আমার বাড়ি তাই এই বাড়ির প্রতিটা কর্ণারে যাওয়ার রাইট যেমন আমার আছে তেমনই এ বাড়িতে যারা থাকে তাদের ওপরও অধিকার আছে আমার।”
অনিমা নিজেকে সামলে বালিশ সামলে বালিশ ঠিক করতে করতে বলল,
” আদ্রিয়ান এখন আমার ঘুম পাচ্ছে খুব। পরে কথা বলব।”
হঠাৎ করেই আদ্রিয়ান অনির হাত ধরে টান নিয়ে নিজের কাছে নিয়ে দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরল। চোখে সত্যি এবার লালচে আভা এসছে আদ্রিয়ানের। অনিমা ভীত আর হতভম্ব দৃষ্টিতে দেখছে ওকে।

বর্ষণের সেই রাতে সিজন ২ পর্ব ২০