বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১৭

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১৭
shanta moni

এখন সময় বিকাল ৪:০০ টা, সারাদিন শুভ্র বাসায় আসেনি। রোদ রান্না করে খাবার খেয়ে শুয়ে আছে, এমন সময় শুভ্র রুমে ডুকে শুভ্রকে রুমে ডুকতে দেখে, রোদ চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান ধরে আছে। শুভ্র এক নজর বিছানার উপর তাকিয়ে ওয়াশরুম চলে যায়। গোসল করে ফ্রেশ হয়ে বের হয়। কোমরে তোয়ালে পেঁচিয়ে, আবার চোখ পড়ে রোদের ঘুমান্ত মুখের দিকে। যতই সে চেষ্টা করুক না কেনো। এই মেয়ের কাছ থেকে নিজেকে দূড়ে রাখতে। কিন্তু সে পারে’না, বেহায়া চোখ এই মেয়ের দিকে যাবেই। শুভ্র শার্ট পড়ে রেডি হয়ে ঘুমান্ত রোদকে কোলে তুলে নেয়। আস্তে করে রুম থেকে বেড়িয়ে আসে।

এইদিকে রোদ ঘুমের ভান ধরতে গিয়ে সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে গেছে।
শুভ্র রোদকে কোলে নিয়ে ড্ররাইবিং সিটে বসে। সারা রাস্তা রোদকে কোলে নিয়েই গাড়ি চালিয়ে চৌধুরী বাড়ি আসে। রোদ এখনো ঘুমিয়ে আছে।
শুভ্র রোদকে কোলে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ডুকে।
এইদিকে নিলয় গার্ডেন ঘুরে ঘুরে ভিডিও করেছিল। নিলাকে বাড়ির ভিতরে ডুকতে দেখে নিলার দিকে দৌড়ে যায়৷ নিলা কিছুটা অবাক হয়। নিলার সামনে এসে দাঁড়ায় নিলয়। তার পর বলতে থাকে
নিলয়: এই যে খালাম্মা আপনি কখন আসলেন।
নিলা রাগে কটমট করতে করতে বলে, অসভ্য লোক নিজেই দেখলো যে এই মাত্র বাড়িতে ডুকলাম৷ আবার জিজ্ঞেস করছে কখন আসলাম।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নিলা: এই তো বছর খানিক হবে আসছি,
নিলয় : এই মাত্র তো আসলেন খালাম্মা৷ তাহলে মিথ্যা কেনো বলছেন,
নিলা: দেখলেন যখন তাহলে আমার জিজ্ঞেস করছেন কেনো আচ্ছা আপনি মনে হয় কোনো ভাবে পাবনা থেকে পালিয়ে এসেছেন। আমি একটা কাজ করি পাবনা ফোন দিয়ে বলি৷ আপনাদের পাগলা গারদ থেকে একজন পাগল পালিয়ে এসেছে।
নিলয় থতমত খেয়ে যায়। নিলার কথায়, মেকি হেসে বলে

নিলয়: আমার কোনো সমস্যা নেই, পাগলা গারদে যেতে, তবে আমি গেলে আপনাকে সাথে নিয়ে যাবো৷
নিলা: আপনি আসলেই একটা হাদারাম, ইচ্ছে তো করছে, ধাক্কা দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দিতে,
নিলা আর নিলয় বাড়ির সামনে দাড়িয়ে ঝগড়া করছে। এমন সময় নিলয় চোখ যায়, বাড়ি গেটের দিকে শুভ্র রোদকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ডুকছে৷ নিলা নিলয়কে ঝগড়া বাদ দিয়ে অন্য দিকে তাকাতে দেখে,নিলাও সেই দিকে তাকায়। নিলা আর নিলয় মুখ হা করে তাকিয়ে আছে। কিছুই মাথায় ডুকছে নাহ। সব যেনো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। দিনের বেলা কি স্বপ্ন দেখছে নাকি, নিলা নিজের গায়ে চিমটি কাটে,,নাহ এটা তো সত্যি
শুভ্র নিলাদের পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বললো।
শুভ্র: নিলা গাঁধা’টাকে বলো মুখটা বন্ধ করতে, তা না হলে মুখের ভিতর হাতি মহিষ ছাগল যা আছে সব ডুকে যাবে।
শুভ্রের কথায় নিলয় মুখ বন্ধ করে কাচুমাচু করে মিন মিনিয়ে বলে।
নিলয়: এতো বড়ো অপমান Bro তা আবার এই খালার সামনে।

শুভ্র যেতেই নিলা হু হা করে হেসে দেয়। তাঁরপর চলে যায়। বাড়ির ভিতরে, শুভ্র রোদকে নিজের রুমে শুয়ে দিয়ে নিচে আসে, এমন সময় আরাফ চৌধুরী গম্ভীর কন্ঠ ভেসে উঠে,
আরাফ চৌধুরী : শুভ্র এতো দিন কই ছিলে, আর রোদকে কেনো নিয়ে গেছো, কাউকে কিছু না বলে, তুমি চাচ্ছো টা কি শুভ্র?
শুভ্র পা থেমে যায়। পিছন ফিরে আরাফ চৌধুরী সামনে দিকে তাকায় তাঁরপর বলে।
শুভ্র : আমি আমার বউকে যেখানে ইচ্ছে নিয়ে যাব। তাতে কারো অনুমতি বা জানানোর প্রয়জোন মনে করি না আমি।
আরাফ চৌধুরী রাগান্বিত হয়ে বলেন।
আরাফ চৌধুরী : ওহ রিয়েলি, রোদ তোমার বউ সেটা তোমার এতদিন পরে মনে পড়লো,
বাহহ বাহহ খুব সুন্দর,

শুভ্র: আমি আমার কাজে কাউকে কৈফিয়ত কাউকে দেইনি কখনো দিব না৷
বলেই রাগে ধব ধব পা ফেলে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়।
নিলা দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে রোদের রুমে যায়, কিন্তু রোদকে নিজের রুমে কোথাও দেখে না, কিছু একটা ভেবে শুভ্রের রুমে দরজা খুলে উকি দেয়। রোদ বেডের উপর শুয়ে আছে। নিলা চিন্তিত হয়ে রোদের গায়ে গলায় হাত দেয়, মনে মনে বলে, সব তো ঠিকই আছে, তাহলে এই ভাবে কোলে করে নিয়ে আসলো কেনো, নিলা রোদকে আস্তে করে ডাকে, রোদ গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে৷ নিলা রোদকে ধাক্কা দেয়, রোদের ঘুম হালকা হয়ে আসে, পিটপিট করে চোখ খুলে সামনে নিলাকে দেখে লাফ দিয়ে উঠে বসে, চোখ ডলে আবার তাকায় হ্যা সত্যি নিলা তার সামনে, রোদ নিলাকে জড়িয়ে ধরে। কিছুটা শান্ত হয়ে রোদ আসে পাশে তাকায়, অবাক হয় সে, এখানে আসলো কিভাবে,আর সে তো এখন নিজের রুমে নেই, শুভ্রের রুমে কি করে আসলো, নিলার দিকে তাকেই নিলা সবটা বলে, রোদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, তাঁরপর নিলা বলে,

নিলা: রোদ তোকে হয়তো, শুভ্র ভাই ভালোবাসে, তা না হলে এই ভাবে বিয়ের আগে তোকে তুলে নিয়ে যেত না,
রোদ তাচ্ছিল্য হাঁসে মনে মনে বলে» সে আমাকে কোনোদিন ভালোবাসবে না রে নিলা, আমাকে আঘাত করার জন্যই বিয়ে করেছে,যাতে আমাকে সারাজীবন কষ্ট দিতে পারে,
রোদ আস্তে করে বলে
রোদ: বাদ দে নিলা এই সব কথা,
নিলা কিছু বলতে যাবে এমন সময় হেনা বেগম হন্তদন্ত হয়ে রুমে প্রবেশ করে, রোদকে জড়িয়ে ধরে সারা মুখে চুমু দিতে থাকে, পুড়ো শরীর দেখতে থাকে শুভ্র কিছু করছে কিনা,
রোদ : নানু প্লিজ থামো, আমি ঠিক আছি, হেনা বেগম রোদের গালে হাত দিয়ে বলে,
হেনা বেগম : রোদ ঠিক আছিস, তুই
রোদ শান্ত হয়ে, বলে

রোদ: আমি ঠিক আছি নানু, তুমি শান্ত হও,
রোদ হেনা বেগম গত দুই দিনে যা যা ঘটেছে সব বলে রোদ।
হেনা বেগম খুশি হলেও শুভ্রের হটাৎ এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারছে না, না জানি আবার কি ঘটায়,
হেনা বেগম শুভ্রে ফোন দিয়ে, অনেক বুঝিয়ে তাঁরপর এই বাড়িতে রোদকে নিয়ে এসেছেন।
হাঁসি বেগম মুখ কালো, সে এতো দিন কি কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না, আজ রাতেই দেখা করতে হবে, তার সাথে কেনো জানি তার মনে হচ্ছে কেউ আবার কিছু যেনে যাইনি তো, রিয়া রাগে ফুসছে শুভ্র এই ভাবে সব খেলা দুলে মিশিয়ে দিবে, ইচ্ছে করছে এই রোদকে খুন করতে।

অয়ন শুভ্রের প্রতিটা কথায় উপরে দাঁড়িয়ে সব শুনে, কিছু একটা হারিয়ে ফেলার তীব্র শুন্যতা কাজ করে তার মনে ভিতরে কি করবে কিছুই মাথায় আসে না,
শুভ্র বাসা থেকে বের হয়।গেট থেকে বের হয়ে যাবে,এমন সময় নিলয় শুভ্রের সামনে এসে দাঁড়ায়।
দাঁত কেলিয়ে হেঁসে বলে
নিলয়: Bro বাসর কেমন হলো,বিড়াল ঠিকঠাক মতো মারতে পেরেছো তো,
শুভ্র রাগে কটমট করতে করতে বলে,
শুভ্র: সামনে থেকে সর নিলয়,
নিলয় হেঁসে বলে উঠে

নিলয়: রেগে যাচ্ছো, কেনো Bro বলনা, বিড়াল মেরেছো তো ঠিকঠাক মতো, আমার তো আর তোমার বাসর রাতের ব্লগ ভিডিও বানানো হলো নাহ,
শুভ্র রাগে চোয়াল শক্ত করে বলে,
শুভ্র: বিড়াল তো মারেনি, তবে তোকে মেরে তোর মুখে নকশা চেঞ্জ করে বিড়ালের মতো করে দিব, তাঁরপর এই মুখ নিয়ে ব্লগ ভিডিও বানাবি গাঁধা,
নিলয় ভয়ে ভয়ে তাকায় শুভ্রের দিকে, তাঁরপর বলে,
নিলয়: আমি তো মজা করে বলছি,
বলেই দৌড় লাগায় বাড়ির দিকে,
শুভ্র চলে যায়,

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১৬

রাত: ১১:০০
শুভ্র রোদের গলা চেপে ধরে বলে
শুভ্র: যদি তুই ভেবে থাকিস। যে আমি তোকে স্ত্রী অধিকার দিব, নিজের কাছে টেনে নিব,তো ভুল,তুই আমার রুমে থাকবি, আমার আসে পাশে থাকবি, কিন্তু তাঁরপরও আমার কাছ থেকে কখনো কোনদিন ভালোবাসা পাবি না। আমি তোকে বিয়ে করেছি, শুধু তোকে যন্ত্রণা দিতে, সারা জীবন তুই শুধু কষ্ট পাবি।

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here