বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ২২
shanta moni
রুহি অনেক ভেবেছে, এই একদিন অনেক কান্না কাটি করছে শুভ্রকে ফোন দিয়ে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তার এখন একটাই জেদ সে এখানে থাকবে না। যে করে হোক সে তার পরিবারের কাছে যাবেই। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোস্টেল থেকে পালিয়ে বাড়িতে যাবে। তাঁরপর যা হবার হবে। তাই কিছু ফ্রেন্ডের হেল্প নিয়ে হোস্টেল থেকে পালিয়ে সকাল সকাল বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে রিকশা থামায় রুহি। রিকশা থেকে নেমে ট্রলি ব্যাগ টা নিয়ে হেঁটে আসে, বাড়ির সামনে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে এমন সময় কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে যায়৷ হাতও অনেকটা ছিলে গেছে রাস্তায় পড়ার কারনে মনে হয়। রুহি রেগে সামনের দিকে তাকায় একটা ছেলে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে উঠার জন্য রেগে হাত জামটা দিয়ে সরিয়ে দেয়। রাগটা যেনো তার মাথায় চেঁপে বসেছে। রুহি ছেলেটার সামনে দাঁড়িয়ে আঙ্গুল উচিয়ে বলে।
রুহি: এই আপনি কি আপনার চোখ বাসায় রেখে আসছেন হ্যা। দিন কানা আপনি হ্যা কথা বলছেন না কেনো হুমম
রুহির কথায় রোমানের কোনো হেল দোল নেই। সে একমনে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে। শ্যামবর্ন চেহারা, পুড়ো চেহারায় মনে হয় মায়ায় ভরপুর। চোখের পাঁপড়ি গুলো বড়ো বড়ো তাতে যেনো আরো বেশি আবেদন ময়ী লাগছে। রোমানের বুকের ভিতর ধক করে উঠে, ২৭ বছর বয়সে অনেক মেয়ে দেখেছে তবে এতটা মুগ্ধ হয়নি কাউকে দেখে।
রোমান রুহির কথা শুনে মুচকি হাঁসে। রুহি মনে মনে বলে– নির্ঘাত এই লোক পাগল হবে। আমি বাবা পালাই এই সব পাগলের পাল্লায় আমি পড়তে চাই না। রুহি পাশে,ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে সামনের দিকে যায়। হটাৎ মেয়েটাকে দৌড়াতে দেখে কিছুটা অবাক হয়’ রোমান। নিজ মনেই হেঁসে দেয়। মেয়েটার পাগলামো দেখে।
রুহি বাড়ির গেটের সামনে এসে জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রুহি: বড়জোর বাঁচা বেঁচেছি, তা না হলে ওই পাগল ছেলেটা মেরে ফেলতো আমায়।
রুহি আস্তে গেট খুলে বাড়ির ভিতরে ডুকে।
বুকেন ভিতর যেনো ঝড় বইছে। এতো বছর পর নিজ বাড়িতে খুশি ভয় সবটা তাকে ঘিরে ধরেছে।
বাড়ির বিশাল গেট, গার্ডেন পেরিয়ে। বাড়ির ভিতরে ডুকে,রুহি আসে পাশে চোখ বুলাই।
হেনা বেগম সোফায় বসে চা খাচ্ছে, আর বাড়ির বাকি সদস্যরা সবাই সকালের নাস্তা করছে। রুহি কোথাও শুভ্রকে দেখে না, মনে মনে শস্তির নিশ্বাস ফেলে। ভাইয়া হয়তো তার গেস্ট হাউজ আছে। রুহি দৌড়ে হেনা বেগমের কাছে যায়। গিয়ে জড়িয়ে ধরে, হেনা বেগম কিছুটা অবাক হয়। নিজের থেকে সরিয়ে ভালো মতন চোখ পড়ে রুহির দিকে হেনা বেগমের চোখে পানি টলমল করে। কতোদিন পর তার আদরের নাতনি কে দেখছে। কতোটুকু দেখেছিল এখন কত বড় হয়ে গেছে। হেনা বেগম রুহিকে জড়িয়ে ধরে সবাই চিৎকার করে ডাকতে থাকে। খাবার টেবিল থেকে সবাই উঠে হেনা বেগমের কাছে যায়।
সবাই রুহিকে দেখে খুশি হয়। তবে হাঁসি বেগমের মুখ দেখে কিছুই বোঝা গেলো না। সে খুশি নাকি অখুঁশি।
শুভ্র রুম থেকে হেনা বেগম চিৎকার শুনে, অফিসের জন্য রেডি হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো শুভ্র সবার এই ভাবে এক যায়গা ভীর দেখে কিছুটা অবাক হয়। শুভ্র সামনের দিকে তাকিয়ে রাগে চোয়াল শক্ত করে ফেলে রুহিকে দেখে।রুহি শুভ্রকে দেখে হেনা বেগমের পিছনে লুকায়। শুভ্র হেনা বেগমের সামনে এসে রুহিকে উদ্দেশ্য করে বলে।
শুভ্র: রুহি তোকে আমি কি বলেছিলাম। যে এই বাড়িতে তুই আসবি না। তাহলে একা একা আসলি কেনো হুম। আয় তোকে আমি আবার হোস্টেল রেখে আসবো।
রুহি শুভ্রের কথা শুনে হেনা বেগমকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। কাঁদতে কাঁদতে বলে।
রুহি: আমি আমার পরিবার ছেড়ে হোস্টেল থাকবো না ভাইয়া। দাদি তুই ভাইকে বলোনা। আমি কোথাও যাব না।
শুভ্র: আমি তোকে এই খুনি বাড়িতে রাখবো না রুহি চল এখান থেকে।
হেনা বেগম রাগান্বিত হয়ে বলে উঠে।
হেনা বেগম : ব্যাস শুভ্র অনেক হ’য়েছে৷এতোদিন তোমার ইচ্ছে মতোই রুহি হোস্টেল ছিল। কিন্তু এখন আর না, এই বাড়িতে থাকার অধিকার রুহির আছে। আর যেখানে তুমি থাকছো এই বাড়িতে রুহি থাকলে সমস্যা কি। তুমি তো এখন আর বিদেশ নয়। যে বোনের খেয়াল রাখতে পারবে না। তাই হোস্টেল রাখতে হবে,,তো রুহি এইখানে থাকবে।
হেনা বেগমের কথার পিঠে শুভ্র আর কোনো কথাই খুঁজে পায় না। শুভ্র ধব ধব পা ফেলে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়।
রোমান বাহির থেকে এই মাত্র আসলো। শুভ্র আর হেনা বেগমের কথা সবই শুনলো।
সামনে এসে রাস্তায় থাকা সেই মেয়েটাকে দেখেই অবাক। তাহলে এই সেই ছোট রুহি যাকে সে ছোট বেলার দেখেছিল। কতো টুকু ছিলো এখন কতো বড় হয়ে গেছে।
রোমান নিজে নিজে হাঁসে কিছু একটা ভেবে। নিজের রুমে চলে যায়।
রুহি রোমানকে খেয়াল করেনি। রুহি সে তো বেজায় খুশি, সে এখন তার পরিবারের কাছে থাকতে পারবে। রুহি হেনা বেগম কে জড়িয়ে ধরে। তাঁরপর বলে
রুহি: Thanks you so much দাদি।
হেনা বেগম রুহির মাথায় হাত ভুলায়।
রুহি হেনা বেগম কে ছেড়ে তার দিকে তাকিয়ে বলে।
রুহি: দাদি রোদ কোথায়?
হেনা বেগম হেঁসে বলে।
হেনা বেগম : রোদ নিজের রুমেই আছে।
রুহি কিছু না বলেই দৌড় লাগায় রোদের রুমের দিকে,
দৌড়ে রোদের রুমে ডুকে যায়।
এতোদিন পর তার ভাবিকে দেখবে, সে তো বেজায় খুশি।
রোদ বেলকনিতে বসে একটা গল্পের বই পড়ছে মনোযোগ দিয়ে।
রুহি আস্তে আস্তে পা ফেলে রোদের পিছন থেকে চোখ চেঁপে ধরে, রোদ কিছুটা ভরকে যায়। কিন্তু নিলা হবে ভেবে বলে।
রোদ: নিলা ছাড় না,
রুহি মুখ ফুলিয়ে রোদের চোখ ছেড়ে দিতে দিতে বলে,
রুহি: বাহ ভালোই তো আমাকে ভুলে গেছো। চিনতেও পারলে না।
রোদ পিছন ফিরে তাকায় সামনে রুহিকে দেখে কি করবে বুঝে পায় না।সে কি সত্যি দেখছে,, রুহি কি সত্যি এসেছে, এতদিন পর রুহিকে দেখে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে রোদ।
রুহির চোখেও পানি, শুভ্র বিদেশ যাওয়ার আগে যখন রুহিকে হোস্টেল রেখে যেতে চায়। কিন্তু তার কথায় সবাই অমত জানায়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়না। শুভ্র এক রকম রুহিকে জোর করেই হোস্টেল নিয়ে যায়। ও-ই দিন রোদ আর রুহি অনেক কেঁদেছিলো। কিন্তু শুভ্র কারো কথায় শুনেনি।
রোদ আর রুহি নিলা সমবয়সী এই এক দু মাসের ডিফারেন্স হবে হয়তো। রুহিও রোদের সাথেই পড়ে।
রোদ কাঁদতে কাঁদতে বলে
রোদ: সত্যি রুহি তুই এসেছিস। আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না।
রুহি রোদকে ছেড়ে, রোদের চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বলে।
রুহি: হ্যা ভাবিজি আপনার ননদ এসে গেছে। আপনাকে জ্বালাতে।
রোদ রুহির কথা শুনে হেঁসে দেয়৷
রুহি রোদকে উদ্দেশ্য করে বলে
রুহি: ব্যাস এই ভাবে হাঁসবি সব সময়। এই হাঁসিতেই তোকে মানায়।
রোদ রুহিকে আবার জড়িয়ে ধরে।
রোদ আজ অনেক খুশি,, এতোদিন পর তার প্রান প্রিয় বোন টাকে দেখতে পেল।
চৌধুরী বাড়িতে মনে হচ্ছে আগের সেই আনন্দ ফিরে এসেছে। রুহি বাড়ি আসাতে, রুহি যে বাড়ি এসেছে আরাফ চৌধুরী এখনো জানেনা ওনি অফিসের কাজে দেশের বাহিরে আছেন এখনো ফিরেনি।
অহনা আর টিনা ও বাড়িতে আসে। তাদের পরিক্ষা শেষ। তাঁর জন্য বাড়িতে আসে। বাড়িতে এসেই রুহি আসার কথা শুনে খুশি হয়৷ দুইজনে,
নীরাও আসে তার শশুর বাড়ি থেকে, রুহিকে দেখতে, চৌধুরী বাড়িটা যেনো আজ পরিপূর্ণ।
এখন সময় বিকেল ৪:০০
নিলা চৌধুরী বাড়ির গেট থেকে মুখ ডেকে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে দেখছে কোথাও নিলয় হাদারাম টা আছে কিনা। দেখলেই খালাম্মা বলবে আস্ত একটা খবিস। নিলা রোদের রুমের সামনে আসে চুপি চুপি মনে মনে বলে -উফ বাঁচা গেল৷ গাঁধাটার হাত থেকে বাঁচলো সে আজকে। নিলা তাড়াতাড়ি রোদের রুমে ডুকে যায়৷ রোদ রুহি অহনা মীরা বিছানায় বসে গল্প করছে। নিলা সবার সাথে কুসল বিনিময় করে। নিরা তার বরের কাছে চলে যায়। রুহি রোদ নিলা মিলে ছাদে যায়। রোমান ছাদে বসে হাতে গিটার নিয়ে টুংটাং শব্দ তুলেছিল। রুহি আর রোদ রোমানকে দেখে কিছুটা ভরকে যায়।
রুহি জোরে চিল্লিয়ে বলে।
রুহি: এই পাগল লোকটা আমাদের বাড়িতে ডুকলো কিভাবে।
রুহির চিৎকার আর তাকে পাগল বলায় চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে রোমান, এদিক ওদিক তাকাই রোমান কথাটা কি তাকেই বলছে। হ্যা তাকেই তো বলছে আসে পাশে সে ছাড়া তো কেউ নেই।
তার মতো একটা স্মার্ট ড্যাসিং ছেলেকে দেখে এই মেয়ের পাগল মনে হচ্ছে। হায়রে কপাল আচ্ছা তার এতো সুন্দর চেহারা দেখে অনেক মেয়েরাই তো ক্রাশ খায়। কিন্তু এই মেয়ে তাকে পাগল বলছে কেনো? তার চেহারা কি সত্যি পাগলের মতো দেখতে।
রোদ ও মনে মনে বলে›› এই লোক তো তাকে সেদিন কি রকম ভাবি ভাবি বলে দাঁত কেলিয়ে ছিলো। পাগলের মতো, তার তো সেই দিন এই লোককে পাগল মনে করছিলো। এখন আবার রুহি বলছে তাহলে নিশ্চিত পাগল হবে।
নিলয় হাঁসতে থাকে, রোদ আর রুহিকে উদ্দেশ্য করে বলে।
নিলয়: আরে তোমরা কি সব বলছো, এতো আমাদের রোমান ভাইয়া। এই ভাবে ভুলে গেলে।
রোদ আর রুহি দুজনে এক সাথে জিব কাটে, রুহি আর রোদ একসাথে বলে উঠে- সরি সরি ভাইয়া।
রোমান ফিক করে হেঁসে দেয়। তাঁরপর সবাই মিলে অনেক গল্প করে,মাগরিবের আজান দেবার সময় হয়ে গেছে। নিলা সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে।
নিলা: আমার বাড়ি ফিরতে হবে। সন্ধ্যা হয়ে আসছে।
রুহি গাল ফুলিয়ে নিলাকে বলে।
রুহি : আজকে কোথাও যেতে দেওয়া হবে না।
নিলা: না রে বাড়িতে কাজ আছে।আর রাতে আম্মু বাহিরে কোথাও থাকতে দিবে না।
রুহি নিলাকে রাগ দেখিয়ে বলে
রুহি: বাড়িতে কি জামাই রেখে এসেছিস রে, যে এখনই যেতে হবে হ্যা। আর আন্টি কিছু বলবে না। দাদিকে দিয়ে কল করিয়ে বলাবো নে, যে আজ তুই এইখানে থাকবি।
নিলা: কিন্তু
রুহি: কোনো কিন্তু না, তোর আজকে রাতে এখানেই থাকতে হবে। আমরা সবাই রাতে একটা গেম খেলবো।
নিলয় নিলা উদ্দেশ্য করে বলে
নিলয়; থেকে যান নাহ, খালাম্মা একটা রাতের তো বেপার।
নিলয়ের কথা শুনে সবাই হেঁসে দেয়।
নিলা নিলয়ের দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসতে থাকে।
মাগরিবের আজান দেওয়াই, সবাই ছাদ থেকে নেমে যায়। সবাই নামাজ পড়ে এক সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
রাত : ১১:০০
বাড়ির বড়রা সবাই ঘুমিয়ে পড়ছে জেগে আছে ছোট সয়তান গুলোতে, রুহি সবাইকে বলে রেখেছে, আজকে রাতে একটা গেইম খেলবে। আর তাতে শুভ্র ভাইও থাকবে তার।
তবে শুভ্র যে থাকবে সেটা রোদ বাদে সবাই জানে। ছাদে সবাই মিলে ছোট খাটো একটা পার্টি আয়োজন করেছে। ছাদে একটা মাধর বিছিয়ে দিয়েছে। সাথে কিছু খবার রেখেছে পাশের টেবিলে।
অয়ন নিলয় অহনা টিনা নীরা, নারীর জামাই আকাশ। আর আকাশের ছোট ভাই, রাজিব। রোদ নিলা
সবাই ছাদে বসে আছে। বাকি আছে রোমান শুভ্র আর রুহি,
রুহি শুভ্র বাসায় আসার সাথে সাথে তার ভাইকে জড়িয়ে ধরে সরি বলে। আদরের ছোট বোনের উপর রাগ করে আর থাকতে পারে না শুভ্র।
রুহি রোমানকে দায়িত্ব দিয়েছে শুভ্রকে ছাদে নিয়ে আসার। কিন্তু শুভ্র ল্যাপটপে কাজ করেই যাচ্ছে। কেনো জানি রোমানের সাহস হচ্ছে না। শুভ্রকে ছাদে যেতে বলতে। রুহি রোমার আর শুভ্রকে আসতে না দেখে, শুভ্রের রুমে আসে,, রোমান বিছানায় বসে নক কামড়াচ্ছে। রুহিকে দেখে রোমান বোকা বোকা হাসি দেয়। রুহি চোখ গরম করে রোমানের দিকে তাকায়।
শুভ্র মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে ল্যাপটপে।
রুহি শুভ্রের সামনের এসে ভাইয়া বলে ডাক দেয়।
শুভ্র রুহির দিকে তাকায় ভ্রু কুচকে বলে
শুভ্র: রুহি এতো রাতে ঘুমাসনি এখনো?
রুহি : ভাইয়া আসলে একটা কথা।
শুভ্র: কি কথা বল?
রুহি: ভাইয়া একটু ছাদে চল না প্লিজ?
শুভ্র: এতো রাতে ছাদে কেনো?
রুহি: চলো না ভাইয়া। সবাই আছে,,একসাথে সবাই অনেক গল্প করবো, মজা করবো। প্লিজ ভাইয়া না বলবে না।
শুভ্র: আমার কাজ আছে রুহি, তোমরা গল্প করো যাও।
রুহি শুভ্রের হাত টেনে ধরে বাচ্চাদের মতো আবদার করে বলে-
রুহি: প্লিজ ভাইয়া চলো না। সবাই আছে তুমি না গেলে কেমন দেখায়।
শুভ্র বোনের এই ভাবে আবদার আর ফেলতে পারে নাহ।
ল্যাপটপ বন্ধ করে। দাঁড়ায়। তারপর বলে।
শুভ্র: ওকে চল।
রুহি খুশিতে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে বলে
রুহি: Thank you, Thank you ভাইয়া..!
শুভ্র রুহির মাথায় হাত ভুলায়। তারপর তিনজন মিলে ছাদে চলে যায়।
শুভ্র ছাদে এসে চোখ পড়ে রোদের দিকে নিলা পাশে বসে আছে। নিজের বোনের মন রাখতে কিছুই বলে না,, চুপচাপ চারপাশে দেখছে। রুহির কথা শুনতেই সাবাই সামনে তাকায়, শুভ্রকে এইখানে দেখে সবাই কেমন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কেউ কল্পনাও করেনি শুভ্র এখানে আসবে।
রোদ শুভ্রের দিকে তাকায় চোখাচোখি হয়, দুইজনের রোদ কিছুটা অসস্থি ফিল করে, উঠে যেতে নেয়, এমন সময় নিলা রোদের হাত টেনে ধরে। রোদ অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় নিলার দিকে, নিলা চোখ ইশারায় আসস্থ করে।
রোদ মাথা নিচু করে বসে আছে,,শুভ্র সব কিছুই খেয়াল করছে।
অয়ন নিলয় রাজিজ এরা এক পাশে,,আর নিরা রোদ নিলা অহনা টিনা এরা একপাশে,,
রুহি শুভ্রের হাত টেনে ধরে বলে,,চলো ভাইয়া ওইখানে বসবে, শুভ্র গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,
শুভ্র: আমি এইখানে ঠিক আছি,
রুহি : প্লিজ প্লিজ ভাইয়া একটা বার বসো না, শুভ্র বোনের মন রাখতে বসে পড়ে রোদের সামনা সামনি।
রোদ মাথা নিচু করে আছে,,রুহি নীরার পাশে বসে, আর রোমান শুভ্রের পাশে,,,
সবাই গোল হয়ে বসে আছে,,
রুহি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,
রুহি: আমরা সবাই মিলে একটা গেইম খেলবো,, ট্রুথ ডিয়ার,,তাঁরপর একটা বোতল বের করে আবার বলে উঠে… এই বোতলের মুখ যার দিকে ঘুরবে,,তাকে কেউ একজন প্রশ্ন করবে,, ট্রুথ নাকি ডিয়ার,,যে ট্রুথ নিবে,,তাকে একটা প্রশ্ন করতে হবে। এবং তার উত্তর সত্যি বলতে হবে।
আর ডিয়ার নিলে,,, তাকে আমরা যে কাজ দিব সেইটা করতে হবে,,,সো সবাই বুঝতে পারছো তো,,গেইমের নিয়ম।
শুভ্র এতক্ষণ ফোন টিপছিলো। রুহি কথা শুনে রুহির দিকে তাকিয়ে বলে,
শুভ্র: তোর এই ইস্টুপিট গেইম তুই খেল। আমি এই সবে নাই। আমি গেলাম
রুহি: ভাইয়া প্লিজ,,যেও না,,, আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার খেলতে হবে না,,তুমি এইখানে বসে থাকো৷ তাহলেই হবে।
শুভ্র আর কিছু বলে না। মনোযোগ দেয় ফোন টিপার দিকে,,,
রুহি বিসমিল্লাহ বলে বোতল ঘুড়ি দেয়।
বোতলের মুখ গিয়ে পড়ে নিরার হাসবেন্ড দিকে,,, সবাই হেসে উঠে,,,,
রুহি আকাশকে উদ্দেশ্য করে বলে
রুহি: দুলাভাই ট্রুথ নাকি,, ডিয়ার
আকাশ কিছুক্ষণ ভেবে বলে,,,ট্রুথ
অহনা প্রশ্ন করে…
অহনা: ভাইয়া জীবনে প্রথম কার উপর ক্রাশ খান?
আকাশ নীরার দিকে তাকিয়ে বলে।
আকাশ: তোমার নীরা আপুর উপর,,
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,সাথে নীরাও,,, অহনা আবার বলে উঠে,,
অহনা: কবে কখন দুলাভাই, বিয়ের আগে নাকি পড়ে,,,
আকাশ নীরার দিকে তাকিয়ে বলে
আকাশ: প্রথমবার তোমার আপুকে দেখেছিলাম,,হসপিটালের একটা লোক অ্যাসিন্ডেট হয় তাকে নিয়ে আসে,,তখনি প্রথম ক্রাশ খাই,,,পরে ফ্যামেলিকে দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেই।
নীরা কিছুটা লজ্জা পাচ্ছে,,,
রুহি বলে উঠে
রুহি: দুলাভাই আপনি তো বাজিমাৎ করে দিছেন। ক্রাশ খেয়ে সাথে সাথে বিয়ে বাহ বাহ।
সবাই হেসে উঠে
রুহি আবার বোতলে ঘুড়ি দেয়। বোতল ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে পড়ে নিলয়ের দিকে,,,সবাই আবার হেসে উঠে।
রুহি বলে উঠে
রুহি: নিলয় ভাইয়া তুমি ট্রুথ নাকি৷ ডিয়ার,,
নিলয় একটু ভাব নিয়ে বলে,,,
নিলয় : ডিয়ার
রুহি মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে থাকে,, কিছু একটা মাথায় আসতেই বলে উঠে
রুহি: নিলয় ভাই,,,তুমি আমাদের একটা গান শুনাও,,
নিলয় গলা খাকারি দিয়ে সবার দিকে তাকিয়ে হাসে,,
তারপর গান ধরে….
নিলয়…”
~ দেখেছি প্রথম বার ~😎🎵
~ তাল গাছে মুরগীর খামার~🐔🎵
~~ কুত্তা নাচে বিলাই নাচে ~🐕🐻❄️🎵
~~কুত্তা নাচে বিলাই নাচে~~😎🎵
~~গিয়ে ছিলা কক্সবাজার ~~
~~গেয়েছি তেতুল আচার~🥴🥴
~ আহ হা চুক্কা লাগে টক লাগে~~🤧🤧
` ~ চুক্কা লাগে টক লাগে~~🤧🎵
~~গিয়ে ছিলাম শশুর বাড়ি খেয়েছি,,জুতার বারি~~😫😫
~~আহ হা ব্যাথা লাগে ব্যাথা লাগে~~
নিলয় গান শেষ করে সবার দিকে তাকায়।
সবাই কান চেঁপে ধরে আছে,,,
রোমান বলে উঠে…
রোমান : ভাই তুই কি আর গান পাইলি নাহ,,
এতো গান থাকতে এই গান কই পাইলি হ্যা।
তোর জন্য গানের মান সম্মান আর রইলো না।
আকাশ হাঁসতে হাঁসতে বলে উঠে
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ২১
আকাশ: শালা বাবু আমার হিরো আলমের ছোট ভাই,,,গানকে ধর্ষন করে দিল।
নিলয়ের গান শুনে সবাই কোমায় চলে গেছে,,
নিলয় একটু ভাব নিয়ে বলে,, জানি আমি ভালো গান গাই,,তোমরা তো হিংসুটে তাই আমার প্রশংসাহ করবে না।
হটাৎ কারো কথা ভেসে আসে,,,সবাই ছাদের দরজার দিকে তাকায়,,