বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ২৬
shanta moni
রোদ কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠে,
রোদ: ঠিক আছিস তুই নিলা, এভাবে কাঁদছিস কেনো? ঠিক আছিস তুই?
নিলা কাঁদতে কাঁদতে বলে,
নিলা: আমি ঠিক আছি, কিন্ত আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিছে রোদ।
রোদ: আবার কি আকাম ঘটিয়েছিস তুই হ্যা।
নিলা: আমার কোনো দোষ নেই রোদ,
রোদ: এমনি এমনি তো আর আঙ্কেল আন্টি তোকে বাসা থেকে বের করে দিবেনা, আগে বল কি আকাম ঘটিয়েছিস।
নিলা কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে উঠে,
নিলা: আমাকে দেখতে আসছিলো কালকে,
রোদ: তোকে দেখতে আসছে আর আমাকেই বলিসনি।
নিলা: কি করে বলবো আমার মাথা হ্যা৷ আমি নিজেও জানতাম না, যে আমায় দেখতে আসবে। হুট করে আম্মু এসে বলে আমাকে নাকি দেখতে আসছে, আমি প্রথমে না বলি, কিন্তু তারা কেউ আমার কথা শুনেনি, জোর করেছে, আর আমাকে জোর করলে যা হবার তাই হইছে।
রোদ: বিয়ে করে নে, সমস্যা কি
নিলা: রোদ তুই চাস, আমার মতো একটা সুন্দরী মেয়ে, ওই সরকারি বুইড়া টাকলা কে বিয়ে করি হ্যা,
রোদ: এই তুই কি করেছিস, মাত্র পক্ষে সঙ্গে,
নিলা: আসলে বাসায় ডুকার আগে, ছাদ থেকে পচা ডিম ছেলে আর ছেলে আর ছেলের মা বাবাদের গায়ে মেরেছি, আমি আর আমার ভাই মিলে।
রোদ: তাঁরপর কি হয়েছে?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নিলা : পাত্র পক্ষ বাড়িতে ডুকার আগেই পালিয়েছে।
রোদ হাঁসতে হাঁসতে বলে,
রোদ: তুই এটা ঠিক করিসনি,, নিলু,
নিলা: থাম তো তুই, পাত্র পক্ষ আব্বুর সাথে অনেক রাগারাগি করেছে, বিয়ে ভেঙে দিছে,,আব্বু আমার উপর সন্দেহ করে, আমার ছোট ভাইকে ধমক দিছে, তারপর আমার ভাই সব বলে দিয়েছে।আব্বু আম্মু রাগ করে বাসা থেকে বের করে দিছে, এখন আমি কোথায় যাবো রোদ।
রোদ: তুই আমাদের বাসায় আয়। আঙ্কেল আন্টি রাগ কমলে তোকে নিয়ে যাবে।
নিলা: আচ্ছা ঠিক আছে, আমি আসছি,
কথা বলে রোদ ফোন রেখে, দেয়।
আজকে সকাল সকাল ঘুম ভেঙে রোদের নিজেকে শুভ্রের বিছানায় দেখে কিছু অবাক হয়। কারন সে কালকে রাতে
ফ্লোরে কাঁদতে কাঁদতে শুয়ে পড়ে ছিলো। কিন্তু সে বিছানায় আসলো কি করে। রোদ আসে পাশে তাকায় কিন্তু শুভ্রকে কোথাও দেখতে পায় না। শুভ্রের রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়।
এখন সময় বিকাল পাঁচটা, নিলা অনেক আগেই এসেছে দুপুরে দিকে, তবে নিলয় গাঁধাটার সাথে দেখা হয়নি৷ রোদ নিলা রুহি মিলে অনেকক্ষন গল্প করে৷
অহনা টিনা নিলয় এরা তাদের নানু বাড়িতে গেছে। আরাফ চৌধুরী বাড়িতে নেই৷ হাঁসি বেগম হটাৎ উদাও, সে সবাইকে বলে গেছে যে সে,, তার বাবার বাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু সে সেখানে যায়নি।
শুভ্রের চাচা আরিফ চৌধুরী আরাফাত চৌধুরী এরা ব্যাবসার জন্য চট্টগ্রাম থাকে, ৬, মাস ৮ মাস পর পর কয় একদিনের জন্য বাড়িতে আসে। সে রকম তাদের আসা হয়না চৌধুরী বাড়িতে।
চৌধুরী বাড়িতে এখন রোমান অয়ন শুভ্র হেনা বেগম, রোদ নিলা, রুহি আর রিয়া আছে, রিয়াকে রেখে গেছে হাঁসি বেগম।
সবার উপর নজর রাখতে।
রুহি করিডোর দিয়ে নাচতে নাচতে যাচ্ছিল রোদ আর নিলার কাছে, এমন সময় কারো শক্ত হাতে কেউ টান দেয়।
রুহি ভরকে যায়। রোমান রুহির হাত ধরে টেনে নিজের সামনে দাঁড় করায়।
রুহি রোমানকে সামনে দেখে রাগি রাগি ভাব নিয়ে বলে,,
রুহি: এই আপনি হাত ধরে আছেন কেনো, হাত ছাড়ুন তো।
রোমান রুহির দিকে তাকিয়ে আছে, ঘোর লাগা দৃষ্টিতে,
রুহি হাত মোচড়াতে মোচড়াতে বলে।
রুহি: ভারি অভদ্র লোক তো আপনি, হাত ছাড়তে বলছি, কিন্তু ছাড়ছেন নাহ।
রোমান ঠোঁট কাঁমড়ে হাঁসে, তারপর বলে,
রোমান: ওহ তাই নাকি, আমি অভদ্র।
রুহি: হ্যা আপনি একটা অভদ্র লোক,
রোমান রুহির হাত ধরে টেনে, নিজের সাথে মিশিয়ে, কোমর চেঁপে ধরে দুষ্ট হেঁসে বলে।
~ অভদ্র হয়েছি আমি তোমারি প্রেমে~
~কাছে আসোনা আরো কাছে আসোনা~
রুহি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। যখনি কিছু বলতে যাবে, রোমান রুহির ঠোঁট আঙুল দিয়ে বলে..”
রোমান: ইস কথা বলোনা, কোনো কথা বলোনা। সুইটহার্ট
রুহি রেগে গিয়ে রোমানের ঠোঁটে রাখা আঙুলে, কামর বসায় জোড়ে, রোমান আহহ বলে চিৎকার করে, রুহিকে ছেড়ে দেয়।
রুহি রোমানের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে
রাগান্বিত হয়ে বলে,
রুহি: কোথাও শুনে ছিলাম। সুন্দর ছেলেরা নাকি লুচ্চা হয়। আজকে তার প্রমানও পেলাম। অভদ্র লোক,
কথা গুলো বলেই রুহি চলে যায়।
রোমান মুচকি হাঁসে, মনে মনে বলে
রোমান: অভদ্র তো তোমার সাথেই হবো, হে আমার শ্যামাবতী, তুমি আমার রাতের ঘুম কেরে নিছো, আর আমি তোমার রাতের ঘুম হারাম করে ছাড়বো।
রুহি নিলা আর রোদের কাছে আসে, তিনজন মিলে অনেক টা সময় গল্প করে কাটায়, মাগরিবের আজান দিতেই সবাই উঠে নামাজের জন্য যায়।
রোদ নামাজ পড়ে ডয়িং রুমে আসে, হালকা পাতলা কিছু নাস্তা বানিয়ে নিবে সবার খাবার জন্য, রিয়া রোদকে দেখে রাগে ফুসতে থাকে, কারন এই মেয়ে তাকে সেদিন গলায় ছুড়ি ধরেছিল। কিন্তু তার খালামনি বিশ্বাস করলো না। বাসা একদম ফাঁকা যে করেই হোক এই রোদকে একটা শিক্ষা দিতেই হবে। মনে মনে সয়তানি ফন্দি আটে রিয়া,
রোদ নাস্তা বানিয়ে নিজের রুমের দিকে যায়। সবাই নাস্তা করে অনেকটা সময় গল্প করেও কাটায়,
রাত : ১০:০০ টা
❝কালকে রাতে শুভ্র যে বাসা থেকে বেড়িয়েছে, আর আজকে সারাদিনেও বাড়িতে আসেনি, এই মাত্র বাড়ি ডুকছে,ক্লান্ত শরীর নিয়ে, রোদ ডয়িং রুমে ছিলো, হেনা বেগমের সাথে, শুভ্র ডয়িং পেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে যাবে। তখনি হাঁসির শব্দ পায়, পিছন ফিরে তাকায় রোদ আর হেনা বেগম কিছু একটা নিয়ে হাঁসছেন। শুভ্র রোদকে উদ্দেশ্য করে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,
শুভ্র: রোদ এক কাপ গরম গরম কফি নিয়ে পাঁচ মিনিট মধ্যে আমার রুমে আয়।
হেনা বেগম আর রোদ শুভ্রের কন্ঠ পেয়ে সিঁড়ি দিকে তাকায়, শুভ্র কথা গুলো বলে আর দাঁড়ায় না, চলে যায় নিজের রুমে, এই সব কিছুই উপরে দাঁড়িয়ে শুনেছিলো রিয়া, রাগে ফুসতে থাকে।
হেনা বেগম মুচকি হাঁসে তাঁরপর রোদকে বলে উঠে।
হেনা বেগম : যাহ আমার নাতির জন্য কফি নিয়ে যাহ, তাড়াতাড়ি
কথা গুলো বলেই, হেনা বেগম নিজের রুমের যায়।
রোদ কিছুক্ষণ সেই একই যায়গা বসে থাকে, সে যত চাইছে এই লোকের কাছ থেকে দূড়ে থাকতে, কিন্তু না তাকে ঘুরে ফিরে এই লোকের কাছে যেতে হবে।
রোদ বসা থেকে উঠে, কিচেনে যায়। কফি বানিয়ে নিয়ে আসতে যাবে, তখনি হেনা বেগম ডাক আসে। হেনা বেগম তার ওষুধ খুঁজে পাচ্ছেন না।তাই রোদকে ডাকে, রোদ কফি টেবিলের কফির মগ রেগে হেনা বেগমকে ওষুধ খুঁজে দিয়ে আসে।
এইদিকে রিয়া কফির মগে একঘাধা লবন দিয়ে দেয়। যখনি লবণ দিয়ে ডয়িং দিকে আসতে নেয়৷ তখন রোদের সামনে পড়ে রোদ ভ্রু কুচকে তাকায়, এ এখানে কি করছে, হাতে পানির বোতল দেখে কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়েও আর করে না।
রোদ কফির মগ নিয়ে শুভ্রের রুমে যায়, শুভ্র ফ্রেশ হয়ে, ওয়াশরুম থেকে বেড় হয়। ট্রি টেবিলের উপর কফির মগ রেখে যেতে নেয়৷ শুভ্র কফির মগ হাতে নিয়ে রোদকে ডাক দেয়।
শুভ্র: রোদ,
রোদের পা থেমে যায়, শুভ্রের কফি মুখে দিতেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। এটা কি কফি নাকি নুনে পোড়া, রেগে রোদের দিকে ছুড়ে মারে। সব গিয়ে পরে রোদের গায়ে, গরম কফি গায়ে পড়তেই রোদ, আহহহ বলে চিৎকার দেয়,
শুভ্র রাগি চোখে তাকিয়ে বলে,
শুভ্র: এই রকম জখন্য কফি খায়িয়ে, আমাকে মারতে চাস নাহ।
রোদ টলমল চোখে তাকিয়ে আছে শুভ্রের দিকে, শুভ্র রোদের দিকে যখনি এগিয়ে আসতে নেয়। রোদ দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রোদ নিজের রুমে গিয়ে , ওয়াশ রুমে গিয়ে ঝড়না ছেড়ে দিয়ে কাঁদতে থাকে,
রোদ জামা খুলতেই ফর্সা পেট লাল হয়ে আছে, হাতেও কিছু পড়ছে, সেই সব যায়গা জ্বলছে, সেদিন রাতের ব্লেটের আঘাত গুলোও এখনো কালছে হয়ে আছে। এক এক যায়গা দাগ হয়ে আছে।
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ২৫
আমি আপনার করা বাজে ব্যবহার অত্যাচার গুলো ভুলতে চাইলেও, আপনার দেওয়া আঘাত গুলো বারবার মনে করিয়ে দেয়, আমায়, চাইলেও আমি ভুলতে পারিনা।
শুভ্র বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে, হটাৎ ফোনে কল আসতেই, রিসিভ করে কানে ধরে, শুভ্র ফোন কেটে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে যায় বাড়ি থেকে,