বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৫

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৫
shanta moni

′′রাত প্রায় ১:০০ টার কাছাকাছি রোদ এখনো শুভ্রের শরীরে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, হুসে আছে কিন্তু পুড়ো শরীর নেতিয়ে আছে। শরীরে কোনো শক্তি পাচ্ছে না। শুভ্র রোদকে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে আছে। রোদ যতই চেষ্টা করছে শুভ্রের কাছ থেকে দূড়ে রাখতে ততই যেনো বার বার দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতো নিষ্ঠুর কঠোর মনে মানুষকে, কেনো ভালোবাসলো। রোদ নড়েচড়ে উঠে শুভ্রের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে চায়, কিন্তু শুভ্র আরো শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে। রোদের ছোটাছুটি থেমে যায়, আগের নেয়, পড়ে থাকে শুভ্রের বুকে, ডুকরে কেঁদে উঠে রোদ, রোদ এইভাবে কাঁদতে দেখে, শুভ্রের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠে। মুখে কিছু বলতে পারেনা৷ আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রোদকে, রোদ কাঁদতে কাঁদতে শুভ্রের পিছনের গেঞ্জি খামচে ধরে, কান্না ভেজা কন্ঠে রোদ বলে উঠে…..

‘রোদ: আপনি খুব খারাপ শুভ্র ভাই, খুব খারাপ আপনি যে আঘাত আমাকে করেছেন। তার জন্য আমি আপনাকে কখনোই মাফ করবো না। আপনি জোর করে নিজের কাছে আমাকে রাখতে পারবেন, কিন্তু আপনি কখনোই রোদকে নিজের করে পাবেন না, কখনোই না..
বড্ড অভিমানে কন্ঠে কথা গুলো বলে উঠে রোদ, পুনরায় আবার ফুপিয়ে কেঁদে উঠে…
শুভ্রের বুকের ভিতর চিনচিন করে ব্যথা শুরু হয়। শুভ্র রোদকে নিজের বুক থেকে তুলে, দুই গালে হাত রেখে রোদের কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে শ্বাস ফেলে। রোদের সর্ব অঙ্গ কেঁপে ওঠে।
শুভ্রের দৃষ্টি স্থির রোদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে…..

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

শুভ্র: আমার তোকে মাফ করতে হবে না। তুই যে রকম আছিস, সেরকম থাক, তবে হ্যা আমার থেকে দূড়ে যাওয়ার চিন্তা মাথায় আনিস না। ভুলেও আমার কথার অবাধ্য হোস না। তাহলে তার বিপরীত তোকে ভয়ংকর কিছু মুখোমুখি হতে হবে। কথাটা মাথায় রাখিস। আর আমি তোকে ভালোবাসি না, ঘৃণা করি, আর তোকে এই ঘৃণা নিয়েই সারাজীবন আমার সাথে কাটাতে হবে, মাথায় ডুকিয়ে নে।

শুভ্রের মুখে ভালোবাসি না, কথাটা শুনে ঠোঁট কেঁপে কান্না আসে রোদের, ঠোঁট কামড়ে নিজের কান্না আটকানো বৃথা চেষ্টা করে। আচ্ছা যে মানুষটা আমাকে ভালোবাসে না, তার পিছনে কেনো সে পড়ে থাকবে, সে শুভ্রের কাছে থাকবে না। কোনো মতেই থাকবে না সে। রোদ কথা গুলো মনে মনে বলে। শুভ্র হুট করে রোদকে কোলে নিয়ে হাঁটা দেয়। আকষ্মিক এমন হওয়াতে, রোদ ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে। শুভ্র রোদকে ভয় দেখাতে হাতের বাঁধন একটু হালকা করে, রোদ ভয়ে শুভ্রের গলা জড়িয়ে ধরে। রোদকে গলা জড়িয়ে ধরতে দেখে শুভ্র মুচকি হাঁসে হাঁটা দেয়, নিচে নিজের রুমে উদ্দেশ্য, রোদকে রুমে এনে বেডে শুয়ে দিয়ে বলে উঠে,

শুভ্র: এইখানে চুপচাপ শুয়ে ঘুমিয়ে পড়। এখান থেকে এক পা নড়লে, ঠ্যাং ভেঙে বসিয়ে রাখবো মনে রাখিস।
রোদ শুভ্রের শান্ত কন্ঠে ধমকে ভয়ে তাড়াতাড়ি চোখ বুঝে। শুভ্র রোদের দিকে এক নজর তাকিয়ে ছাদে রাখা প্যাকেট আনতে যায়। অনেক বড় একটা ডেইরি মিল্ক চকলেট, শুভ্র রুমে এসে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে, বেডের কাছে যায়। রোদ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, শুভ্র আস্তে করে রোদের হাত ধরে বেডের পাশে বসে পড়ে৷ শুভ্রের দৃষ্টি স্থির এক ধ্যানে তার ছোট ফুলকে দেখছে, কতোটাই না নিষ্পাপ তার ছোট ফুল। আর সে কিনা, তার ছোট পরিটাকে এতোদিন এইভাবে আঘাত করেছিল। শুভ্রের চোখ দুটো অসম্ভব লাল, ছেলে না হলে, মেয়ে হলে এতোক্ষণে বাচ্চাদের মতো কেঁদে দিত। এতো শক্ত মনের মানুষের দুর্বল যায়গা আছে। ভাবলে,হাঁসি পায় শুভ্রের, হ্যা তার দুর্বলতা আছে আর এই তার সব থেকে দুর্বলতা, তার সামনে কতো শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে। আচ্ছা তার ছোট ফুল কি জানে, তার যন্ত্রণায়, একজনে কত রাত নির্ঘুম কেটেছে। শুভ্র রোদের হাতে আলতো চুমু খেয়ে, রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। অনেক কাজ বাকি, তাকে তার মা বাবা, রোদের প্রতি হওয়া প্রতিটা অন্যায়ের শোধ নিতে হবে। খুঁজে বেড় করতে হবে, কারা আছে এতো বড় ষড়যন্ত্র পিছনে
সকাল ৭:০০ টা ফজরের নামাজ পড়ে নিজের রুমে বসে আছে, রোদ ফজরে আজান ধ্বনি কানে আসতেই ঘুম ভেঙে যায় রোদের, আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে। বেডে নিজেকে একা শুয়ে থাকতে দেখে, আসে পাশে চোখ ভুলায় মনে মনে বলে উঠে
উনি (শুভ্র) কি তাহলে সারারাত রুমে আসেনি।
রোদ বেড থেকে উঠে দাঁড়ায়, ওয়াশরুম থেকে অজু করে বেড় হয়ে। দরজা খুলে হাঁটা দেয়, নিজের রুমে নামাজ পড়ে তখন থেকে বিছানার উপর বসে আছে।
কিছুক্ষণ আগে নিলা ফোন করেছিল। কালকে রাতে নাকি এসেছে, আজকে কলেজ যাবে, তাই রোদকে রেডি হয়ে আসতে বললো। সাথে রুহিকে নিয়েও,

রোদ নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে ড্রংয়িং রুমে যায়৷ বাড়ির সবাই নাস্তা করছে, এখন সকাল ৮:০০ কি ৮:৩০ হবে, রোদ সকালের নাস্তা করে, রুহিকে কলেজের জন্য রেডি হতে বলে উপরে চলে আসে।
রুহি খাবার টেবিল খাচ্ছে, আর রোমানের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রোমান সব কিছু দেখেও না দেখার বান করে, নিচের দিকে তাকিয়ে খেতে থাকে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে খাবার খাওয়া ছাড়া আসে পাশে তার কোনো নজর নেই৷ রুহি অর্ধেক খাবার খেয়ে,, খাবার টেবিল থেকে উঠে পড়ে।
রুহি রোদ রেডি হয়ে, কলেজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়, হেনা বেগমকে বলে।

বাড়ির বাহিরে রাস্তায় এসে দাঁড়ায় রুহি রোদ রিকশা ডেকে উঠে পড়ে রিকশায়,, সামনে নিলার বাসা, নিলা পথ থেকে তুলে নিবে। রোদ আশে পাশে তাকিয়ে দেখছে, রুহি নিজের ফোনে কি যেনো করছে খুব মনোযোগ দিয়ে, পথ থেকে নিলাকে রিকশা তুলে,, এতো,দিন পর প্রান প্রিয় বন্ধুকে দেখে সব দুঃখ যেনো এক নিমিষেই ভুলে যায়৷ তিন জন এক রিকশায়, বসে চিকন হওয়ার সুবিধায় সেরকম সমস্যা হয়না। রিকশা এসে থামে কলেজ গেটে,,তিনজনে রিকশা থেকে নেমে। কলেজের ভিতরে যায়, দুপুর ১২ টা বাহিরে সূর্যের তাপ প্রক্ষর, ফেপসা গরমে হাসফাস করছে রোদ, রুহি নিলা প্রচন্ড খুশি, কলেজ থেকে সবাইকে ট্রুরে রাঙা মাটি নিয়ে যাবে। রোদ এই সব ট্রুর নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। সে আনমনে রাস্তা পাশ দিয়ে হাঁটছে। রুহির চিন্তা হচ্ছে তার ভাইয়া কি যেতে দিবে, রোদ আর তাকে এতো দূরে একা একা। শুভ্রের কথা মাথায় আসতে মুখ চুপসে যায়,, রুহির
ভাইয়াকে কিভাবে রাজি করাবে, সেই চিন্তায় মাথা ধরে যাচ্ছে। তিনজন রিকশা নিয়ে বাড়ি চলে আসে।
বিকাল ৩:০৫ রোদ নিজের রুমে বসে আছে,, কলেজ থেকে এসে খাবার খাওয়ার জন্য একবার রুম থেকে বেড় হয়েছিল। তারপর আর রুম থেকে বেড় হয়নি। হেনা বেগম ট্রুরে যাওয়ার কথা শুনে সাথে সাথে না করে দিছে, কোনো ভাবেই তার নাতনিদের এতো দূরে একা পাঠাবে না। রুহি অনেক বুঝিয়েছে, কিন্তু কোনো ভাবেই হেনা বেগম রাজি নয়৷

তারজন্য দুপুর থেকে রুহি না খেয়ে নিজের রুমে দরজা আটকে বসে আছে৷ তার জেদ একটাই, সে আর রোদ ট্রুরে যাবে মানে যাবেই। রোদ সকাল থেকে শুভ্রকে কোথাও দেখেনি। হয়তো কোনো কাজে আটকে আছে, তার মতো এতো বড় নাম করা বিজনেস ম্যানের তো বাড়িতে বসে থাকা কাজ নয়। গালে হাত দিয়ে এই সব কিছুই ভাবতে ছিল, রোদ
এমন সময় নিলা দরজা সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠে,,
নিলা: তা মহারানি কি এতো ভাবছে গালে হাত দিয়ে,,,, হুমমম
রোদ রুহিকে দেখে, গাল থেকে হাত সরিয়ে মুচকি হাঁসে, নিলাও হেঁসে রুমে ডুকে, রোদের বেডের পাশে বসে পড়ে,

এমন সময় রুহি রোদের রুমে এসে পড়ে, মুখ তার হাঁসি নেই,, মনে হচ্ছে আমাবর্ষা অন্ধকারে ডেকে আছে। রোদ রুহির দিকে তাকি তপ্ত নিশ্বাস ফেলে। রুহিকে হাতে ইশারায় নিজের কাছে ডাকে, রুহি এখনো কিছু খায়নি, আসলে যতক্ষণে তাদের ট্রুরে যেতে না দিবে, তখনে সে কিছুই মুখে দিবে না। এই রুহিটাও হয়েছে বড্ড জেদি। নিলা রোদ রুহি উদ্দেশ্য করে বলে,,,
নিলা: তোদের কি ট্রুরে যেতে দিবে। রাজি হয়েছে,
রোদ রুহির দিকে তাকিয়ে দুপুরে ঘটে যাওয়া সব কিছু বলে,,এটাও বলে রুহি এখনো কিছু খায়নি।
নিলা চোখ মুখ ছোট ছোট করে বলে,,
নিলা: তোদের না যেতে দিলে, আমাকে যেতে দিবে না, কোনো মতেই,
নিলা একটু থেমে আবার বলে উঠে
নিলা: এতো সহজে হার মেলে নিলে তো চলবে না। তার আগে খেয়ে গায়ে শক্তি সঞ্চয় করে, তারপর সবাই রাজি করাতে হবে।
নিলা রোদ রুহি বুঝিয়ে খাবার খাওয়াই, যে করেই হোক বাসা থেকে অনুমতি নিবে, এবং তারা ট্রুরে যাবে। রুহিও খাবার খেয়ে নেয়।

রুহি খাওয়া শেষ হতেই তিনজন মিলে চলে যায়, হেনা বেগমের রুমে অনেক বুঝায়, কিন্তু হেনা বেগম নাছড় বান্দা, রোদ বলাতে মত দেয়। তবে শুভ্রের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে যেতে বলছে। শুভ্র যদি যেতে দেয়, তো তারা যেনো যায়, তা কোনো আপত্তি নেই। সবাই হেনা বেগমের কথায় চুপ হয়ে যায়।
হেনা বেগম আর কথা বাড়ায় না, রোদ রুহি নিলা রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। এখন সবার চিন্তা হচ্ছে শুভ্রের কাছ থেকে অনুমতি কে নিবে৷

রাত ১১:০০ টা কাছাকাছি শুভ্র রাত ১০:০০ টা বাড়িতে আসে। রোদ রুহি নিলা সবাই একসাথে আছে,, নিলাও বাড়িতে যাইনি। এখন তাদের চিন্তা হচ্ছে যে শুভ্রকে রাজি করাবে কে। রুহি শুভ্রের কাছে গিয়ে ছিল। ট্রুরে যাওয়ার কথা বলতে ধমক দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে বলে। রুহি মুখ ভার করে শুভ্রের রুম থেকে বেড়িয়ে আছে। সেই বেশ কিছুক্ষণ ধরে রুহি মাথায় হাত দিয়ে কিছু একটা ভেবে যাচ্ছে। কি করে তার ভাইয়াকে রাজি করানো যায়। দুইদিন মাত্র বাকি আছে৷ এর মধ্যে তার ভাইকে যে করে হোক রাজি করাতে হবেই। রুহি কিছু একটা ভেবে হেঁসে উঠে,,

রোদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে…..
রুহি: রোদ তুই যাবি, ভাইয়া রাজি করাতে,, তুই বললে ভাইয়া ঠিকই শুনবে।
রোদ বিষময় চোখে তাকিয়ে আছে, রুহি দিকে,,রুহিকে বলে উঠে,,,
রোদ: তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে, হ্যা
যেখানে তোর কথায় রাজি হয়নি,সেখানে আমি বললে রাজি হয়ে যাবে।
রুহি রোদের দিকে তাকিয়ে করুন কন্ঠে বলে উঠে,,
রুহি : রোদ প্লিজ একবার বলে দেখনা,গিয়ে ভাইয়াকে প্লিজ প্লিজ।
রুহির কথায় নিলা সায় জানায়, রোদ রাজি হয়, রুহি আর নিলার চাঁপে বিছানা থেকে উঠে, তিনজন মিলে রোদকে নিয়ে শুভ্রের রুমে সামনে যায়। রোদ হাতে ওড়না পেঁচাচ্ছে কেমন যেনো ভয় লাগছে।
শুভ্রের দরজা হাত দিতেই খুলে যায়। দরজা হালকা চাপানো ছিলো। রোদ বুকে সাহস নিয়ে রুমে ডুকে,,
রুমের আশে পাশে তাকাতেই কাউকে দেখতে পায়না। পা বাড়ায় বেলকনিতে,

এইদিকে রুহি নিলা বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিল৷ নিলার চোখ পড়ে শুভ্র তার রুমের দিকে আসছে। রুহি নিলা শুভ্রকে দূর থেকে আসতে দেখে,,সেখান থেকে লুকিয়ে নিজেদের রুমে চলে আসে। শুভ্র নিজের রুমে ডুকে কারো উপস্থিতি টের পায়। ধীর পায়ে হেঁটে যায়। বেলকনিতে রোদকে পিছন থেকে দেখেই চিনে ফেলে রোদ। ঠোঁট কামড়ে হাঁসে, কিছুটা দুষ্টমি স্বরে বলে উঠে,,
শুভ্র: আজ দেখি, পাখি নিজ থেকেই শিকারি কাছে ধরা দিতে আসছে। পাখি কি জানে, শিকারি কিন্তু মোটেও ভালো মানুষ নয়।

শুভ্রের কথা শুনে সাথে সাথে পিছন ফিরে তাকায় রোদ,
শুভ্রকে সামনে দেখে কিছুটা অস্থিতে পড়ে যায় রোদ৷ আস্তে করে বলে উঠে,
রোদ: সে রকম কিছু না,,,
শুভ্র রোদের দিকে দুকদম এগিয়ে রোদের নত হওয়া মাথার দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বলে উঠে….
শুভ্র: তাহলে কি ম্যাডাম, আচ্ছা ম্যাডাম কি চাচ্ছেন, আমি আপনার কাছে যাই,,আমার কিন্তু কোনো সমস্যা নেই।
রোদ দ্রুতে কন্ঠে বলে উঠে,,
রোদ: নাহ,,,আমি আসলে একটা কথা বলতে এসেছিলাম।
শুভ্র ভ্রু কুচকে তাকায় রোদের দিকে,, শান্ত কন্ঠে বলে উঠে,,
শুভ্র: কি কথা?
রোদ আমতা আমতা করে বলে উঠে,,

রোদ: আমরা আসলে ট্রুরে যেতে চাই। তাই আপনার অনুমতি লাগবে। দাদি বলছে আপনি যদি যেতে দেন। তো যেতে পারবো।
শুভ্র গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে
শুভ্র: কোনো ট্রুরে যাওয়া হবে না।
রোদ মুখ ছোট ছোট করে মাথা তুলে তাকায় শুভ্রের দিকে তাকিয়ে করুন কন্ঠে বলে উঠে,,,
রোদ: প্লিজ যেতে দিন না। রুহি অনেক আশা নিয়ে বসে আছে,ট্রুরে যাবে প্লিজ রাজি হয়ে যান। দুই দিনের তো বেপার,,
শুভ্র চুপচাপ রোদের কথা শুনে,,, আস্তে করে বলে উঠে,,,
শুভ্র: আচ্ছা ঠিক আছে, ম্যাডাম আপনার কথায় না হয় যে অনুমতি দিলাম। কিন্তু তাতে আমার লাভ কি?
রোদ কিছু না বুঝে বলে উঠে,,
রোদ: মানে?
শুভ্র পুনরায় বলে উঠে

শুভ্র: ম্যাডাম আপনাকে অনুমতি দিলে আমি কি পাবো। আমার লাভ কি?
রোদ কিছু না বুঝে তাকিয়ে আছে, শুভ্রের দিকে,, শুভ্র মুচকি হাঁসে,,তারপর আবার বলে উঠে,,,
শুভ্র; যেতে দিব তবে একটা শর্ত আছে।
রোদের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। এ কেমন লোকের পাল্লায় পড়লো। অনুমতি দিবে তাতেও লাভ খুঁজে, শর্ত রাখে,, কেমন লোকরে বাবা।
রোদ আস্তে করে বলে উঠে,,,
রোদ : কি শর্ত…?
শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাঁসে। তারপর রোদের দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বলে উঠে,,,
শুভ্র: kisss me?
‘ রোদ চোখ বড় বড় করে তাকায় রোদের দিকে,,,ছিহ তাহলে এই লুচু লোকের সব সময় লুচ্চামির ধান্দা ছি ছি,,,
রোদ নাক মুখ সিটকে ফেলে,,

রোদকে এই রকম করতে দেখে শুভ্র বলে, উঠে
শুভ্র: যদি ট্রুরে যেতে চাও,,তো আমার শর্ত মানতে হবে৷ তা না হলে কোথাও যাওয়া হবে না।
রোদ রেগে গিয়ে বলে উঠে
রোদ: লজ্জা করেনা, এই সব বলতে,,অসভ্য লোক,,
শুভ্র হাঁসে তাঁরপর বলে
শুভ্র: আমি ফ্রিতে কারো উপকার করিনা। যদি রাজি থাকো বলো,,,যেতে দিব, রাজি না হলে নাই।
রোদ যেনো আরো রেগে যায়। রাগে তেতে উঠে বলে,
রোদ: লাগবে না,, আপনার অনুমতি যাব না,,ট্রুরে অসভ্য লোক।
বলেই গটগট পা ফেলে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। রোদ যেতেই,,শুভ্র শব্দ করে হেঁসে দেয়।
সে আসলে রোদের সাথে এতক্ষণ মজা করছিল। ট্রুরে না যেতে দেওয়ার বাহানা মাত্র, শুভ্র ভালো করেই, জানে এই নারীর ধারা কখনোই নিজ থেকে এই সব হবেনা। রোদ রেগে রুমের বাহিরে এসে,,
নিজের রুমে দিকে যায়৷ শুভ্রকে গালি দিতে দিতে,,,,,

সকাল ৮:১০
শুভ্র সকালে গোসল করে, রেডি হচ্ছিলো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, পেছনে আরো উপস্থিতি দেখে,, পিছন ফিরে তাকায়। রোদকে সকাল সকাল নিজের রুমে দেখে অবাক হয়।
রোদ হুট করে এসে শুভ্রের গলা জড়িয়ে পায়ের উপর পা রাখে,, লম্বা ছোট হওয়াতে শুভ্রের সমান হতে পারে না। শুভ্র এক হাত দিয়ে কোমর শক্ত করে ধরে,, উপর তুলে,,, রোদ টুপ করে চুমু খায়,,

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৪

শুভ্রের গালে,, শুভ্র হতভাগ পুড়ো শরীর বেয়ে শিতল হাওয়া বইছে। তর তর করে কাঁপছে,, শুভ্র রোদ হটাৎ কারো চিৎকারে মাথা ঘুড়িয়ে পিছনে তাকায়। সামনে নিলয়কে ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে,,রাগে চোয়াল শক্ত করে বিড়বিড় করে বলে উঠে
শুভ্র: শালা আসার আর সময় পায় না।

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here