বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৬
shanta moni
“রোদ রেগে শুভ্রের রুম থেকে বেড়িয়ে নিলা রুহির কাছে যায়। রোদের রাগে নাকের ডগা লাল হয়ে আছে। নিলা রোদকে দেখে বলে উঠে,,,,
নিলা: কি হয়েছে জানু? এভাবে রেগে যাচ্ছিস কেনো।
রোদ রাগে ফুসতে ফুসতে রুহির দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
রোদ: তোর ওই লুচ্চা ভাইয়ের রুমে কেনো আমায় পাঠিয়েছিস হ্যা,
রুহি ভ্রু কুচকে রোদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
রুহি: কি হয়েছে, ভাইয়া রাজি হয়েছে,,
আর ভাইয়াকে লুচ্চা কেনো বলছিস। কি লুচ্চামি করলো ভাইয়া তোর সাথে,,
রোদ জোরে শ্বাস ফেলে বলে উঠে,,
রোদ: আস্ত একটা অসভ্য লোক, সামন্য একটু অনুমতি দিবে, তার জন্য নিজের লাভ ক্ষতি খুচ্ছে।
রুহি নিলা কোনো কিছু বুঝতে পারছেনা। সব যেনো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,
নীলা রোদকে বলে উঠে,,
নীলা: কিসের লাভ ক্ষতি, কিছুই তো বুঝতে পারছি না, কি বলিস,,
নীলার কথায় রুহির সায় জানায়,,
রোদ রুহি নিলার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসে উঠে বলে,,,
রোদ: তোর ভাই রাজি হবে, তবে শর্ত আছে, সেই শর্ত মানলে রাজি হবে।
রুহি নীলার মুখে খুঁশির ঝলক, রুহি খুঁশিতে গদ গদ হয়ে বলে উঠে,,
রুহি: আমি সব শর্তে রাজি,,এখন বল ভাইয়া কি শর্ত দিছে,,
রোদ মাথা নিচু করে কাচুমাচু করতে থাকে,,রুহি নীলা ভ্রু কুচকে তাকায়, রোদকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু রোদ কোনো কিছুই বলছে না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অনেক জোড়াজুড়ি করার পর রোদ সবটা বলে,,শুভ্র তাকে কি শর্ত দিয়েছে, নিলা রুহি খুঁশি হলেও,,রোদের মুখে কোনো হাঁসি নেই। সে কোনো ভাবেই শুভ্রের সাথে এই সব করতে পারবেনা।
রুহি নীলা রোদকে অনেক বুঝায় একটা চুমু তো দিলে কি সমস্যা,, আর সে তো কোনো পরপুরুষ না,, তোর স্বামি তাহলে এতো ভয় কিসের, রোদকে নীলা রুহি মিলে অনেক জোড়াজুড়ি করে সারারাত, শেষ মেষ কোনো উপায় না পেয়ে রোদ রাজি হয়৷
সকাল ৮:১০
রুহি রোদ নিলা অনেক আগেই ঘুম থেকে উঠেছে, মূলত রোদকে রুহি নীলা মিলে শুভ্রের রুমে পাঠাবে,,কিন্তু রোদ বার বার না করছে। রোদকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করিয়ে শুভ্রের রুমে পাঠায়,,রোদ কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা খুলে, ভিতরে ডুকে, শুভ্র অফিস যাবে। তার জন্য রেডি হচ্ছিল, মিররের সামনে দাঁড়িয়ে, হটাৎ চোখ পড়ে আয়নায়, রোদ পিছনে দাঁড়িয়ে আছে, শুভ্র পিছন ফিরে তাকাতেই, রোদ দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে শুভ্রের গলা। হাইটে ছোট হওয়া শুভ্রের গাল পযন্ত নিজের ঠোঁট যায়না। শুভ্র রোদকে শক্ত করে ধরে, উপরে তোলে, রোদ টুপ করে চুমু খায় শুভ্রের গালে।
শুভ্র অবাকের চরম পর্যায়ে সে কখনোই ভাবতে পারেনি রোদ এমন কিছু করবে, পুড়ো শরীর বেয়ে শিতল হাওয়া বইছে। রোদ এই রকম একটা কাজ করবে সে বুঝতে পারেনি।অবাকের রেশ কাটিয়ে রোদকে আরো শক্ত করে নিজের সাথে চেঁপে ধরে, রোদের মুখ তুলে নিজের দিকে করে। শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাঁসে, মনে মনে বলে উঠে,
পাখি তার নিজ থেকে বন্দি হতে আসছে খাঁচায়।
শুভ্র রোদের গালে এক হাত রেখে রোদের দিকে অপলক দৃষ্টি তাকিয়ে আছে। রোদের চোখ নিচের দিকে পুড়ো শরীরে হালকা কাঁপুনি দিচ্ছে। শুভ্র রোদের দিকে আগাতেই, চিৎকার আসে কারো। শুভ্র রোদ ওই অবস্থা ধরে দরজা দিকে তাকায়, নিলয় ফ্লোরে পড়ে আছে।
রাগে মূহুর্তেই চেহারার ভাব ভঙ্গি চেঞ্জ হয়ে যায়। রাগে দাঁতে দাঁত পিষে বলে,
শুভ্র: শালা আসার আর সময় পায়না,,সব সময় আমার রোমান্স মধ্যে আসতে হবে।
রোদ ছুটাছুটি করে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য, কিন্তু শুভ্র আরো শক্ত করে চেঁপে ধরে। শুভ্র রোদকে কোলে নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। এই নিলয় গাঁধাটার জন্য এতো সুন্দর একটা সময় নষ্ট করতে চায় না। অজ্ঞান হয়েছে, অজ্ঞান হয়ে থাক। রোদকে নিয়ে বেলকনিতে গ্রিলের পাশে দাঁড়ায়,,রোদের ছোটাছুটি আরো বেড়ে যায়। শুভ্র বিরক্ততে নাক মুখ কুচকে ফেলে। গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,,
শুভ্র : আর একটু নড়াচড়া করলে৷ একে বারে এখান থেকে নিচে ফেলে দিব।
রোদের ছোটাছুটি বন্ধ হয়ে যায়। রেগে গিয়ে বলে উঠে
রোদ: অসভ্য লোক, ছাড়ুন বলছি।
শুভ্র রোদকে দাঁড় করিয়ে কোমর চেঁপে ধরে বলে উঠে
শুভ্র: আমি তো তোমাকে আসতে বলিনি৷ তুমি নিজ ইচ্ছে আসছো। কিন্তু যাবে আমার ইচ্ছে,,কোনো ছাড়াছাড়ি হবে নাহ।
রোদ: আপনি আসলেই একটা বাজে লোক, কোন দুঃখে যে আপনার রুমে আসতে গিয়েছিলাম।
শুভ্র: যে দুঃখেই আসো, এসেছো তো এখন শুরু করো ফাস্ট,
রোদ ভ্রু কুচকে তাকায় শুভ্রের দিকে , তারপর বলে উঠে
রোদ: মানে কি শুরু করবো,
শুভ্র: একটু আগে যে ব্যঙ এর মতো এসে লাফিয়ে পড়ে ছিলে, তারপর যা শুরু করেছিলে, সেই টা শুরু করো ফাস্ট।
রোদ রেগে গিয়ে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে উঠে
রোদ: অসভ্য লোক যেতে দিন আমায়,
শুভ্র রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত পিষে বলে,
শুভ্র: চুপ থাক বেডি, কথায় কথায় অসভ্য ছাড়ুন বলছি, এই রকম হাঁসের মতো প্যাক প্যাক করিস কেনো হ্যা৷ আমি তো বিয়া করা একমাত্র জামাই লাগি, সম্মান দিয়ে কথা বলবি, ৪০০ গ্রাম,,
রোদ: আপনি আমাকে ৪০০ গ্রাম কেনো বলছেন হ্যা।
শুভ্র কিছু না বলেই রোদকে এক হাত দিয়ে কোমড় পেচিয়ে উপরে তুলে, তারপর বলে উঠে….
শুভ্র: এই জন্য বলছি ৪০০ গ্রাম। শরীরে তো পুঁটি মাছের থেকেও শক্তি কম, তাকে ৪০০ গ্রাম বলবো না তো কি করবো।
রোদ ভয়ে জোড়ে চেচিয়ে বলে উঠে
রোদ: ছেড়ে দিন আমায় আমি পড়ে যাব তো ..
শুভ্র হেঁসে বলে উঠে,
শুভ্র: ওকে ছেড়ে দিব, কিন্তু শর্ত আছে,,
রোদ রেগে গিয়ে বলে উঠে
রোদ: ভারি স্বার্থপর লোক তো আপনি কথায় কথায় শর্ত রাখেন,,,
শুভ্র: হুম আমি স্বার্থপর, এখন বলো রাজি হবে নাকি এখান থেকে নিচে ফেলে দিব।
রোদ ভয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে বলে উঠে,,
রোদ: নাহ প্লিজ ছেড়ে দিন। আমি সব শর্তে রাজি,,
শুভ্র হেঁসে রোদকে নিচে নামায়,
নিজের মুখ বরাবর দাঁড় করায়, রোদের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাঁসে তাঁরপর বলে উঠে,,
শুভ্র: যতক্ষণে আমি থামতে না বলবো,,ততক্ষণ কিসস করে যাবে। থামা যাবে না, বলে দিচ্ছি তাহলে আরো শাস্তি বাড়বে।
রোদ বিরক্তিতে নাক মুখ কুচকে ফেলে।
এ কোন মহা ঝামেলা পড়রো। যেনে শুনে বাঘের খাঁচায় কেনো ডুকলো।
রোদ চোখ মুখ বন্ধ করে শুভ্রের দিকে নিজের ঠোঁট এগিয়ে নেয়। শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে আছে, অপলক দৃষ্টিতে,
রোদ শুভ্রের গালে আস্তে করে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ করে, শুভ্রের শরীর অজানা অনুভূতিতে কেঁপে উঠে, জোরে শ্বাস ফেলে। রোদকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়ে বলে উঠে,,
শুভ্র: স্টপ,,
রোদ থেমে যায়, ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে তাকায় শুভ্র অন্য দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করে, রোদের দিকে তাকায়, রোদ মাথা নিচু করে আছে। শুভ্র রোদের কাছে গিয়ে গালে এক হাত রেখে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠে,,
শুভ্র: প্রয়োজনের চেয়ে তুমি বেশি সুন্দরী, অনেকটাই বেশি। কিছুক্ষণ এই মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলে বুকের বা পাশে ব্যাথা হয়।
রোদ শুভ্রের কথা শুনে আর দাঁড়ায় না,,দৌড়ে বেড়িয়ে যায়। শুভ্রের রুম থেকে শুভ্র কিছু বলে না,রোদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাঁসে,,
শুভ্র রুমে আসে,,বউয়ের সাথে রোমাঞ্চ করতে গিয়ে দেরি হয়ে গেলো। রুমে ডুকে চোখ পড়ে নিলয়ের দিকে,,নিলয় এখনো ফ্লোরে পড়ে আছে,শুভ্র বিরক্ততে নাক মুখ কুচকে ফেলে,, রেগে গিয়ে নিলয়ের পাশে দাঁড়ায় নিলয় নাক ডাকছে,মনে হচ্ছে না, যে সেন্সলেস হইছে,,যে ভাবে নাক ডাকছে মনে তো হচ্ছে রাতে কোথাও চুরি করতে গিয়েছিল। এখন শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে নাক ডেকে। শুভ্র রেগে বিড়বিড় করে বলে উঠে,,
ফ্লোর কি ঘুমানোর যায়গা, যে এই রকম গাঁধার মতো নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে,,
শুভ্র কয়েক বার নিলয়কে ডাকে,,কিন্তু নিলয়ের কোনো সারা শব্দ নেই। শুভ্র রেগে গিয়ে বেড সাইড টেবিলে পানির জগ পুড়ো পানি নিলয়ের মুখে ঢেলে দেয়। নিলয় লাফ দিয়ে চিল্লাতে চিল্লাতে বলে উঠে,,
নিলয় : বাঁচাও বাঁচাও বউ বাঁচাও ঘূর্ণিঝড় বন্যা,,, বাঁচাও,,,
শুভ্র রেগে গিয়ে জোরে চিৎকার করে বলে উঠে,,
শুভ্র: স্টপ নিলয়, থামবি নাকি, নিজের প্রানটা হারাবি,
নিলয় সাথে সাথে থেমে যায়, সামনে শুভ্রকে দেখে, তখন কার কথা মনে পড়ে,, ঘুম ঘুম চোখে ডাকতে আসছিল, শুভ্র আরাফ চৌধুরী শুভ্রকে কোন কাজের জন্য নাকি ডাকছে,,তার জন্য শুভ্রের রুমে আসে, কিন্তু শুভ্র কোন মেয়ের সাথে জানি দেখেছিল, কিসব করতে, কিন্তু মেয়েটা কই, নিলয় আসে পাশে উকি দেয়। কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না। ভালো করে তখন ফেইজ দেখতে পারেনি৷ নিলয়ের কিছু একটা মনে পড়তেই শুভ্রকে বলে উঠে,,
নিলয়: আমি তো ভেবেছিলাম। তোমার সিস্টেম অনেক দুর্বল, কিন্তু না তুমি তো দেখছি খুব চালু,,বউ রেখে পরকীয়া করো ছিহ ভাই ছিহ,,
শুভ্র এতোক্ষণ ধরে নিলয়ের গতি বিধি লক্ষ করেছিল। কিন্তু এখন কি বলছে, তার সিস্টেম দুর্বল, আর সে কিসের পরকীয়া করছে,, কি বলছে এই গাঁধা,,
শুভ্র রাগে দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে,,
শুভ্র: হোয়াট? কিসের পরকীয়া..
নিলয়: চোর চুরি করার পর ধরা পরলে এই রকম বলে,,
শুভ্র: হোয়াট দ্যা
শুভ্রকে আর কিছু না বলতে দিয়ে নিলয় শুভ্রকে বলে উঠে
নিলয়: এই রকম কথায় কথায় ইংরেজি বললে সত্যি টা মিথ্যা হয়ে যাবে না। আর হ্যা আমি সবাইকে বলে দিব,,তুমি পরকীয়া করে বেড়াও, তাও আবার দিনে দুপুরে,,
শুভ্র রাগি চোখে তাকিয়ে আছে নিলয়ের দিকে, দাঁতে দাঁত পিষে বলে উঠে,
শুভ্র: এই মূহুর্তে বেড় হ,, আমার রুম থেকে তা না হলে তোর কপালে শনি আছে,, এইখানে মেরে পুঁতে ফেলবো।
নিলয় মুখ ভেঙিয়ে বলে উঠে
নিলয় : মেরে ফেলবে জানি, তবে তার আগে এই সত্যিটা বাড়ির সবাইকে জানানো দরকার, বাড়ির সবাইকে জানিয়ে মরবো,,
নিলয় কথা গুলো বলে আর দাঁড়ায় না,, নিলয় দৌড়ে বেড়িয়ে যায়, শুভ্র নিলয়ের কথায় তেমন পাত্তা দেয়না। অফিসের জন্য লেট হচ্ছে, যার জন্য বেড়িয়ে যায়, বাসা থেকে।
রোদ সেই অনেকক্ষণ হয়ে গেছে, রুমে এসেছে,,নিলা রুহি অনেকক্ষণ ধরে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে। রাজি হয়েছে কিনা, কিন্তু রোদ কিছুই বলছে না। লজ্জা ভয় সব কিছু তাকে ঘিরে ধরেছে।
বিকেল ৪:০৮
আজকে কেউ কলেজ যায়নি। সবাই ট্রুরে যাওয়ার আশা ছেড়েই দিছে। রুহি মুখ ফুলিয়ে নিজের রুমে বসে আছে। নিলা দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে বাড়ি চলে গেছে,,
রোদ দুপুরে খাবার খেয়ে, নিজের রুম থেকে আর বেড় হয়নি। এখন রুহির রুমে যাচ্ছে। রুহিটা মন খারাপ করে বসে আছে। রোদ নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে করিডোর পেড়িয়ে রুহির রুমির দিকে যাচ্ছিল। এমন সময় পিছন থেকে কারো ডাক আসে। পিছন ফিরে তাকায় রোদ, নিলয়কে দেখে সকালে কথা মনে পড়ে যায়। কিছুটা লজ্জা আর অস্থতিতে পড়ে যায় রোদ। হাতে থাকা নিজের ওড়না আঙুলে পেঁচাতে থাকে। নিলয় এসে রোদের সামনে দাঁড়ায়, হাঁসি হাঁসি মুখটা অন্ধকার করে বলে উঠে,,
নিলয় : ভাবি তোমাকে একটা কথা বলবো খুব জরুরি?
রোদ নিলয়ের দিকে তাকায়,,
নিলয় চোখ মুখ ছোট ছোট করে বলে উঠে,,
নিলয় : প্লিজ ভাবি, ঠান্ডা মাথায় শুনবে, বেশি হাইপার হবেনা। আমাকে হয়তো মেরে ফেলবে, তার আগে তোমাকে বলে যেতে চাই সত্যি টা,,
রোদের মুখে চিন্তার ছাপ,,কিছুটা বিচলিত হয়ে বলে উঠে,,,
রোদ: কি কথা ভাইয়া,, আর কে মেরে ফেলবে তোমায়।
নিলয় মুখ কাঁদো কাঁদো করে বলে,
নিলয়: তুমি আমার শুধু ভাবি নও, তার আগে বোন, তাই বোন হিসেবে বলি,,শোনো
রোদ আস্তে করে বলে
রোদ: জ্বী ভাইয়া বলুন।
নিলয় আমতা আমতা করে বলে,,
নিলয়: শুভ্র ভাই পরকীয়া করে ভাবি।
আমি তোমাকে সত্যি টা বলছি, জানতে পারলে হয়তো আমাকে মেরে ফেলবে।
রোদ অবাক হয়ে বলে উঠে,,
রোদ: মানে কি সব বলছো, কিসের পরকীয়া আর কার সাথে পরকীয়া করছে,,,
নিলয়: আমি সত্যি বলছি ভাবি ভাই পরকীয়া করে, আর সেটা আমি নিজ চোখে দেখছি৷
রোদ: তোমার মাথা ঠিক আছে, তো ভাইয়া কার নামে কি বলছো।
নিলয় সিরিয়াস হয়ে বলে,,
নিলয়: আমার মাথা ঠিক আছে, সত্যি ভাইয়া পরকীয়া করে। আজকে সকালে আমি নিজ চোখে দেখছি। সে নিজ রুমে বসেই অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়া লিপ্ত, আর তুমি শুভ্র ভাইয়ের বউ হয়ে জানো না,,
নিলয় সকালের কথা বলতেই, রোদের মনে পড়ে যায়। সকালের কথা সে আর শুভ্র তো ছিল। রোদ জোরে জোরে কাঁশতে থাকে। তার মানে নিলয় ভাইয়া তাকে ভালো করে দেখেনি, তার জন্য অন্য কাউকে ভাবছে,,কি একটা লজ্জা বিষয় এখন সে আক বাড়িয়ে বলতেও পারছে না। যে সকালে সেই ছিল। শুভ্রের রুমে অন্য কেউ না। রোদকে চুপ থাকতে দেখে, নিলয় বলে উঠে,,
নিলয়: কষ্ট পেও না ভাবি, আমি তোমাকে সাহায্য করবো শুভ্র ভাই উচিত শিক্ষা দিতে,, কোনো ভাবেই পরকীয়া সর্ম্পক জিতবে না,,
রোদ নিলয়ের কথায় মাথা নাড়ায়। নিলয়ের আফসোস স্বরে বলে উঠে,
নিলয় : ছিহ ব্রো এতো খারাপ, আগে জানতাম না। এতো সুন্দর আমার বোনটাকে রেখে পরকীয়া করে বেড়ায়।
রোদ চুপচাপ নিলয়ের কথা শুনছে,
রোদ আস্তে করে নিলয়কে বলে উঠে,,
রোদ: ভাইয়া এই বিষয়ে আমরা পড়ে কথা বলবো, এখন আমি আসি।
এই বলে রোদ দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগায়।
নিলয় মনে মনে বলে উঠে,,
শুভ্র ভাই, আমার ভাই বলে যে অন্যায় করবে, আর পাড় পেয়ে যাবে তা হবে না,
দাদিকে শুভ্র ভাইয়ের বিষয়টি জানাতে হবে। দেরি করলে চলবে না।
নিলয় হেনা বেগমের রুমে আসে। হেনা বেগম নিজের রুমে বসে ছিল৷ নিলয় খুব সিরিয়াস হয়ে, হেনা বেগমের সামনে দাঁড়ায়, হেনা বেগম পান চিবাতে চিবাতে বলে,,
হেনা বেগম : কিরে কিছু বলবি?
নিলয় : অনেক কিছু বলবো।
হেনা বেগম : কি বলবি বল,,,
নিলয়; দাদি তোমার কাছে একটা জরুরি কথা বলতে আসছি।
হেনা বেগম : কি এমন জরুরি কথা বল?
নিলয় : দাদি তোমার নাতি পরকীয়া করে।
হেনা বেগম ভ্রু কুচকে ফেলে, অবাক হয়ে তাকায়,,পুনরায় পান চিবাতে চিবাতে বলে,,
হেনা বেগম : কি বলছিস, কে পরকীয়া করে,,
নিলয় আশে পাশে তাকিয়ে দেখে কেউ শুনছে কিনা,,তারপর বলে উঠে,,
নিলয়: শুভ্র ভাই
হেনা বেগম চোখ বড় বড় করে তাকায়
তাঁরপর রেগে গিয়ে বলে,,
হেনা বেগম : হতচ্ছাড়া কি বলছিস। শুভ্র পরকীয়া করে হ্যা,,তোকে কে বললো।
নিলয় : আমি নিজ চোখে সকালে দেখেছি,,অন্য একটা মেয়ের সাথে,,
হেনা বেগম : কোন মেয়ের সাথে দেখছিস বল।
নিলয় আমতা আমতা করে বলে,,,
নিলয় : আসলে দাদি চেহারা দেখিনি,,
হেনা বেগম : এমনি এমনি তো আর গাঁধা বলি না। আসলেই তুই একটা গাঁধা।
নিলয় চোখ মুখ ছোট ছোট করে বলে উঠে,,
নিলয় : আমি সত্যি বলছি,দাদি আমি রোদকেও বলে়ছিলাম। রোদ কান্না করতে করতে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়েছে।
হেনা বেগম একটু চিন্তিত হয়ে বলে উঠে,,
হেনা বেগম : তোর কথা যদি মিথ্যা হয়, তাহলে ঝাঁড়ু বাড়ি একটাও মাটিতে পড়বো না। তোর পিঠে পড়বে সোজা গিয়ে মনে রাখিস।
নিলয় একটু ভাব নিয়ে বলে,,,
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৫
নিলয় : আমি কোনো মিথ্যা বলছিনা। যে পরকীয়া করছে তার জন্য ঝাঁড়ু রেডি রাখো ওকে,,আর এই পরকীয়া বিচার আমি চাই চাই,,চাই আমার দাবি মানতে হবে,, মানতে হবে
নিলয় কথা গুলো বলে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
রাত ১০:০০
ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ডুকে শুভ্র,,
সামনে তাকাতেই অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,,
