বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৭
shanta moni
″ঘড়ির কাটা বিকেল ৫:০০ টা ঘরে, রুহি মন খারাপ করে ছাদে যায়। ছাদে গিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রোমান ছাদের এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে,হাতে গিটার নিয়ে,গিটারে টুংটাং সুর তুলছে ফর্সা গায়ে কালো র্টি-শার্টে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। রোমানকে এমন ভাবে দেখে গলা শুকিয়ে আসছে রুহি। রুহি পর পর
ঢোগ গিলে ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে থাকে রোমানের দিকে। রোমান এখনো খেয়াল করেনি, রুহিকে। রুহি দু পা পিছিয়ে ছাদ থেকে দৌড়ে আসে নিচে। রোমান গিটার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় রুহিকে করেনি। রুহি নিজের রুমে এসে দরজা লাগায়। জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে। বুকে থু থু দেয়। একটুর জন্য হার্ট অ্যাটাক হয়নি তার। কিরকম ভয়ংকর সুন্দর দেখাচ্ছে,
রাত ৮:০৫ রোদ রুহির রুমে বসে আছে। রুহি কেমন যেনো অস্বাভাবিক আচরণ করছে রোদ কিছুই বুঝতে পারছেনা।
ট্রুরের কথা যেনো ভুলেই গেছে। এইদিকে নীলা কয়েক বার ফোন দেওয়া হয়ে গেছে। ট্রুরে যাবে ট্রুরে যাবে করে। রোদ রুহিকে ট্রুরে যাওয়ার কথা বলতে আবার রুহি মন খারাপ করে ফেলে। রোমানের চিন্তা করতে করতে ট্রুরের কথা ভুলেই গেছিলো। হটাৎ নিলয় রুহির রুমে কাছে এসে দাঁড়ায় রোদের দিকে তাকিয়ে রোদকে উদ্দেশ্য করে বলে।
নিলয় : ভাবি চলো, তোমার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।
রোদ নিলয়ের কথায় ভেবাচেকা খেয়ে যায়। মনে মনে বলে উঠে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আবার কি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে।
রুহি নিলয়কে বলে উঠে,,
রুহি: কি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ভাইয়া?
নিলয়: তোকে বলা যাবে নাহ।
রুহি: কেনো বলা যাবে নাহ।
নিলয়: কারন বোনের কাছে ভাই ভুল করলে সেটা তুই কখনো বলবি না যে তোর ভাই ভুল করছে। তাই তোকে বলা যাবে না।
রুহি ভ্রু কুচকে বলে,,
রুহি: কি ভুল করছে ভাইয়া, আর যদি সত্যি ভুল করে থাকে, তো তার শাস্তি অবশ্যই পাবে।
নিলয় খুঁশি খুঁশি মনে বলে উঠে,,
নিলয়: সত্যি বলছিস।
রুহি: হুম সত্যি বলছি। এখন বলো ভাইয়া কি ভুল করছে।
নিলয় একটু সিরিয়াস হয়ে, বলে উঠে
নিলয়: তোর প্রান প্রিয় ভাই, পরকীয়া করে বেড়ায়, তার খবর কি রাখিস।
রুহি অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকায়, নিলয়ের দিকে রুহি অবিশ্বাস চোখে তাকিয়ে বলে উঠে,,,
রুহি: তুমি কি বলছো ভাইয়া, সত্যি কি শুভ্র ভাইয়া পরকীয়া করে বেড়ায়।
নিলয় মুখে সিরিয়াস ভাব নিয়ে বলে উঠে,,
নিলয়: হ্যা সত্যি বলছি,,আমি নিজ চোখে অন্য মেয়ের সাথে দেখছি।
রুহি: কি বলছো ভাইয়া, শুভ্র ভাই এই রকম আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না।
নিলয় : আমি সত্যি বলছি, ভাইয়া পরকীয়া করে। রোদের মতো সুন্দরী বউ রেখে পরকীয় করে ছিহ ছিহ, তুই নিজে ভেবে দেখ৷ আমি কি এমনি এমনি মিথ্যা বলবো তোকে৷
রুহি: তোমার কথা যদি সত্যি হয়, তো ভাইয়া এর শাস্তি পাবেই। পরকীয়া খু্বই খারাপ
নিলয় খুঁশি খুঁশি মনে বলে উঠে
নিলয়: আমরা রোদের সাথে অন্যায় হতে দেব না। কোনো মতেই,,,
রুহিও নিলয়ের কথায় সায় জানায়, আর রোদ মাথা নিচু করে আছে। হাঁসবে না কাঁদবে বুঝে উঠে পারছে না।
রুহি রোদের দিকে তাকায় রোদ মাথা নিচু করে আছে।
রুহি রোদের মাথায় হাত ভুলিয়ে বলে উঠে,,
রুহি: কষ্ট পেওনা ভাবি, তোমার এই ননদী থাকতে, ভাই কোনো ভাবেই পার পাবে না। ভাইয়ার পরকীয়া শাস্তি পাবেই পাবে। আমার ভাবিকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে রং তামাশা করা এটা তো হবে না।
কথা গুলো বলেই, রুহি নিলয় বেড়িয়ে যায়।
রোদের অবস্থা এমন হয়েছে যে
ছেড়ে দে মা কেন্দে বাঁচি…
রোদ চেয়েও কিছু বলতে পারছে না,
আর এই রুহিটাও হয়েছে, নিলয়ের কথায় নাচতে আছে।
রোদ বিরক্তিতে নাক মুখ কুচকে ফেলে।
এদের সবাইকে বিরক্ত লাগছে খুব।
রাত ১০:০০
সারাদিন ব্যস্ততা কাটিয়ে ক্লান্ত শরীরে বাড়ির ভিতরে ডুকে শুভ্র, চোখ মুখ ফেকাসে, রোদ নিজের রুমেই আছে। খাবার খেয়ে নিজের রুমে ঘাপটি মেরে বসে আছে। না জানি আজ নিলয় রুহির উপর দিয়ে কোন সুনামি যায়৷ রোদের ভাবতেই ভয়ে শরীর কাটা দিচ্ছে।
নিলয় রুহি পুড়ো বাড়ি ঢোল পিটিয়ে জানানো শেষ যে শুভ্র ভাই পরকীয়া করে ঘরে বউ রেখে। নিলয় তো পারে না, পুড়ো এলাকায় জানাবে। হেনা বেগম কাছে বিচার দিছে, আর রুহি এই দিকে কোনো কিছু না যেনে বুঝে নিলয়ের সাথে তাল মিলাচ্ছে, না দেখেই বলছে সেও দেখেছে তার ভাই অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়া করে। আসল কথা হচ্ছে তার ভাই ট্রুরে যেতে দেইনি, তাকে ধমক দিয়েছে ট্রুরে যাওয়ার কথা বলকে, সেই জন্য মূলত নিলয়ের সাথে তাল মিলানো। সত্যি না জেনেই,হেনা বেগম ভিষন চিন্তুিত
কারন সে শুভ্রকে ভালো করেই চেনে, শুভ্র এই রকম ছেলে না। কখনো মেয়েলি বিষয় তার চোখে পড়েনি। বলতে গেলে মেয়েদের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমান দুরত্ব বজায় রেখে চলে। তাহলে এই গাঁধা গুলো কি বলছে। হেনা বেগম রুহি নিলয়
ড্রয়িং রুমে বসে ছিলেন। হাঁসি বেগম রিয়া বাড়ির বাকি সদস্য কেউ বাসায় নেই। রোমান হয়তো বাড়িতে আছে,,উপরে নিজের রুমে,,
শুভ্র ড্রয়িং রুমে পা রাখতে সবাই কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে। বিশেষ করে হেনা বেগম মুখে রাগ স্পষ্ট, প্রথমে অবাক হলেও, পড়ে এ সবে পাত্তা না দিয়ে উপরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়, এমন সময় হেনা বেগম বলে উঠে,,
হেনা বেগম : দাঁড়া শুভ্র,
শুভ্রের পা থেমে যায়, ভ্রু কুচকে তাকায় সবার দিকে,,তাকে এইভাবে দেখছে কেনো সবাই,সে কি এলিয়েন নাকি।
শুভ্রের চোখ মুখে বিরক্তির ছাঁপ। শুভ্র গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,,
শুভ্র: দাদি আমি অনেকটা টায়াড,,তোমার সাথে পরে কথা বলি।
শুভ্র আবার যেতে নিতেই হেনা বেগম চেচিয়ে বলে উঠে,,
হেনা বেগম: এখনি শুনতে হবে,,এইদিকে আয়।
শুভ্রের এখন প্রচুর পরিমাণ বিরক্ত লাগছে। হেনা বেগমের কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়ায় হেনা বেগমের কাছে, শুভ্র বলে উঠে।
শুভ্র: হুম কি বলবে বলো।
হেনা বেগম: কি করছিস, তুই এগুলো হ্যা,,
শুভ্র বিরক্তিতে জোরে শ্বাস ফেলে হেনা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,,
শুভ্র: কিছুই করিনি, আর তোমরা করতে আর দিলা কই,, তার আগেই তো ভিলেন হয়ে এসে পড়ো।
হেনা বেগম শুভ্রের এমন কথায় থতমত খেয়ে যায়। আমতা আমতা করে বলে উঠে,,
হেনা বেগম: মানে কি সব বলছিস তুই,,
শুভ্র: কিছুনা, তুমি কি বলতে চাচ্ছো,,সেটা বলো, তা না হলে আমি রুমে যাই।
হেনা বেগম রাগে ফুসে উঠে বলে
হেনা বেগম: এতো তাড়াহুড়ো করছিস, কেনো রুমে যাওয়ার জন্য রুমে কি বউ রেখে আসছিস।
শুভ্র: হুম বউ রেখে আসছি, আর কিছু
হেনা বেগম রাগে পান চিবাতে চিবাতে বলে উঠে
হেনা বেগম: অনেক কিছু বলার আছে। আমি কি শুনছি, নিলয় যা বলছে তা কি সত্যি,,
শুভ্র নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
শুভ্র: কি বলেছে এই গাঁধা।
নিলয়ের মুখ ছোট ছোট হয়ে যায়। পিছনে লুকিয়ে থাকা ঝাঁড়ুটা শক্ত করে ধরে। হেনা বেগম বিরক্ত হয়ে বলে উঠে,,
হেনা বেগম: তুই কি কিছুই জানিস না।
শুভ্র: না বললে জানবো কি করে?
হেনা বেগম নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
হেনা বেগম: তুই নাকি পরকীয়া করে বেড়াস,,,
শুভ্র: হোয়াট? কিসের পরকীয়া,,
হেনা বেগম: আজকে সকালে নাকি তোকে নিজের রুমে একটা মেয়ের সাথে দেখছে নিলয়। কথাটা কি সত্যি,,, তুই কি পরকীয়া করিস।
শুভ্র চলে যেতে যেতে বলে উঠে,,
শুভ্র: হুম করিতো পরকীয়া। তবে সেটা হালাল পরকীয়া।
হেনা বেগম শুভ্রকে ডেকে আবার থামিয়ে দেয়। শুভ্র থামে তবে পিছন ফিরে তাকায় না। হেনা বেগম বলে উঠে,,
হেনা বেগম: পরকীয়া তো পরকীয়া সেটা কি হালাল হারাম আছে হ্যা। কি বলছিস তুই,,
শুভ্র পিছন ফিরে থাকা অবস্থায় বলে উঠে,
শুভ্র: অবশ্যই হালাল পরকীয়া করছিলাম নিজের বউয়ের সাথে,, আর শুনো দাদি ওই গাঁধাটাকে বলে দাও, আমাদের মাঝখানে ভিলেন না হতে, তা না হলে ওর কপালে দুঃখ আছে।
কথা গুলো বলে আর দাঁড়ায় না,, দ্রুতে পায়ে নিজের রুমে চলে যায়। রোমানকে পাশ কাটিয়ে, রোমান এতোক্ষণ সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সব কিছু শুনেছিল। বিকেল থেকে সেও শুনেছিল, পরকীয়া পরকীয়া করছে,,কিন্তু কে পরকীয়া করছে কিছুই জানতো না। এখন সবটা জেনে নিলয় রুহির দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। এদের সাহস আছে বলতে হবে শুভ্রের মতো লোক পরকীয়া অপবাদ দেয়।
হেনা বেগম রাগি চোখে তাকিয়ে আছে নিলয়ের দিকে, রুহি চোরের মতো পালিয়ে যেতে নিলে হেনা বেগম বলে উঠে,
হেনা বেগম: ওইখানে দাঁড়া, কি বলছিলি। আমার সোনার টুকরো নাতিকে নিয়ে পরকীয়া করে সে হ্যা৷
পুড়ো বাড়ি ঢোল পিটিয়ে জানিয়েছিস না। এখন তোদের দুইটাকে ঝাঁড়ু পিটা করবো, সেটা পুড়ো এলাকায় ঢোল পিটিয়ে জানাবো দাঁড়া ওইখানে।
নিলয় পিছনে লুকিয়ে রাখা ঝাঁড়ু ফেলে দৌড় দেয়। হেনা বেগম ফ্লোর থেকে ঝাঁড়ু তুলে নিলয়ের দিকে মারে, ঝাঁড়ু গিয়ে নিলয়ের পিঠে পড়ে নিলয় দৌড়ে নিজের রুমে পালায়, আর মনে মনে বলে উঠে,,
নিলয়: ঝাঁড়ুর বাড়ি কার খাওয়ার কথা, আর খাচ্ছি কিনা আমি। এই জন্যই কারো উপকার করতে নেই।
হেনা বেগম রুহির দিকে তাকায়, রুহি গিয়ে রোমানকে ধরে রোমানের পিছনে লুকায়। হেনা বেগম রেগে গিয়ে বলে উঠে,,
হেনা বেগম: তুইও তো নাচতে ছিলি, ভাই পরকীয়া করে, অন্য মেয়ের সাথে, গাঁধার মতো না জেনে শুনে বক বক করেছিলি। এখন বল তোদের কি করা উচিত।
হেনা বেগম কথা গুলো বলে রান্না ঘরে দিকে চলে যায়।
রুহি খেয়াল আসে এতোক্ষণ সে কাকে ধরে আছে, তাড়াতাড়ি রোমানকে ছেড়ে,
চলে যেতে নেয়। রোমান রুহিকে বলে উঠে,,
রোমান: গাঁধি একটা, কি সব বলছিলে,
তোমাদের জন্য শুভ্র ভালো করে বউয়ের সাথে সময় কাটাতে পারেনা।
রুহি চোখ মুখ ছোট ছোট করে বলে উঠে,,
রুহি: আমি মোটেও গাঁধি না ওকে,,
রোমান মুচকি হেঁসে বলে উঠে
রোমান: তাহলে কি তুমি?
রুহি: বুদ্ধিমতি একটা মেয়ে।
রোমান: কতোটা বুদ্ধিমতি দেখতেই পারছি।
রুহি মুখ ভেঙিয়ে রোমানকে পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বলে উঠে,,
রুহি: আপনার এতো দেখতে হবে না। নিজের চোখ বন্ধ করে রাখেন।
রুহি চলে যেতে যেতে মনে মনে বলে..
এইভাবে নিলয় ভাইয়ের কথা শুনে সাথে সাথে নাচা উচিত হয়নি। কি করতে গেলাম আর কি হয়ে গেলো। এই রোদটাও কিছু বললো না। কতো বড় বজ্জাত মাইয়া। ওর জন্য যুদ্ধে নামলাম আর ওই কিনা, মুখে তালা মেরে বসে ছিল।
রাত ১২:০০
শুভ্র গোসল করে ফ্রেশ হয়ে, রুম থেকে বেড়িয়ে রোদের রুমের দিকে যায়।
এইদিকে রোদের টেনশনে ঘুম আসছে না। আবার রুম থেকেও বেড় হচ্ছে না। কি করবে বুঝতে পারছেনা। রুমে পাইচারি করেছিল রোদ। এমন সময় দরজা খুলে রুমে ডুকে শুভ্র, দরজা খোলার শব্দ পেয়ে, সামনে তাকায় রোদ, সামনে শুভ্রকে দেখে কিছু সেকেন্ড জন্য নজর আটকে যায়। চুল দিয়ে এখনো ফোটা ফোটা পানি পড়ছে, গায়ে কালো রঙের গেঞ্জি,, ফর্সা গায়ে কালো রঙ ফুটে আছে। মারাত্বক সুন্দর লাগছে।
শুভ্র রোদকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে। মুচকি হেঁসে কেঁশে উঠে। রোদ থতমত খেয়ে যায়। শুভ্র ঠোঁট কামড়ে হেঁসে বলে,,,,
শুভ্র: আমার দিকে এমন করে তাকাবেন না ম্যাডাম আমার বউ আছে,,আমি বিবাহিত, আমি আবার বীর পুরুষ এই সব পরকীয়া মধ্যে আমি নেই।
রোদ শুভ্রের এমন কথায় একদিক ওদিক তাকায়। শুভ্র রোদের দিকে এগিয়ে এসে বলে উঠে,,,
শুভ্র: না মানে আপনি যদি চান,, তাহলে আপনার সাথে পরকীয়া করতে পারি। আমার দিক দিয়ে কোনো সমস্যা নেই।
রোদ নাক মুখ কুচকে তাকায় শুভ্রের দিকে,,
কেমন লোকরে বাবা লজ্জা সরম কিচ্ছু নেই। কি রকম নিজের বউকে পরকীয়া প্রস্তাব দিচ্ছে ছিহ..
রোদ: আপনি এখানে?
শুভ্র: কেনো অন্য কাউকে আশা করেছিলেন বুঝি..
রোদ চুপ করে যায়, এই লোকের সাথে কথা বলাই বৃথা,,
শুভ্র হাঁসে মজার ছলে বলে উঠে,
শুভ্র; কি হলো ম্যাডাম কিছু বলছেন না যে,,
রোদ:কি বলবো,,,
শুভ্র: পরকীয়া করবেন। চলেন আমরা দুজন মিলে পরকীয়া করি৷ তবে সেটা হারাম হবে না। হালাল পরকীয়া হবে।
রোদ শুভ্রের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
রোদ: এতো যখন পরকীয়া করার ইচ্ছে তো অন্য মেয়ের কাছে যান।
শুভ্র রোদের দিকে এগিয়ে এসে, ফিসফিস করে বলে উঠে,,,
শুভ্র: ম্যাডাম আপনাকে বললাম না,,যে আমি বীরপুরুষ কোনো কাপুরুষ নই,,যে বউ রেখে অন্য কারো সাথে পরকীয়া লিপ্ত হবো। তবে আপনার সাথে সব কিছুতেই লিপ্ত হতে পারি, যদি আপনি রাজি থাকেন।
রোদ কিছু না বলেই শুভ্রকে পাশ কাটিয়ে যেতে নেয়।
শুভ্র হাত টেনে নিজের কাছে এনে দাঁড় করিয়ে বলে উঠে,,
শুভ্র: জামাই সারাদিন পর বাসায় এসেছে,,তুই জামাই খাতির যত্ন করবি, তা না করে পালাই পালাই করিস কেনো হ্যা।
রোদ: ছাড়ুন আমাকে যেতে দিন।
শুভ্র: এইখানে দাঁড়া,,কথা আছে।
রোদ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে,,
শুভ্র একটা ফোন বেড় করে রোদের হাতে দেয়।
রোদ অবাক হয়ে তাকায় শুভ্রের দিকে, রোদ অবাকের রেশ কেটে বলে উঠে,,,
রোদ: ফোন দিয়ে কি করবো?
শুভ্র: সত্যি তো ফোন দিয়ে কি করে মানুষ,, আপনি জানেন কিছু কি করে।
রোদ শুভ্রের এমন কথায় রাগে ফুসে উঠে বলে,,
রোদ: জানিনা আমি কিকরে,, আর আমার ফোনের দরকার নেই।
শুভ্র: আমি কি তোর অনুমতি চাইছি, যে তুই ফোন রাখবি কি রাখবি না।
আমি দিয়েছি মানে তোর রাখতে হবে।
রোদ শুভ্রের হাতে ফোন দিয়ে বলে উঠে
রোদ: আমার ফোন চাইনা,,নিয়ে যান আপনার ফোন। ফোনে আমার কোনো কাজে দরকার নেই।
শুভ্র রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে,,
শুভ্র: তোর দরকার নেই,আমার আছে, কালকে ট্রুরের জন্য সব কিছু ঠিক করে আসছি, রুহি নিলা আর তুই একসাথে যাবি।
ফোনটা রোদের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে উঠে,,
শুভ্র: আর এই নে ফোন, যদি কোনো সমস্যা হয়৷ আমাকে সাথে সাথে কল করে জানাবি। আমি ফোন দিলে যেনো ফোন সাথে সাথে রিসিভ হয়।
রোম ট্রুরে যাবে কথা শুনে চোখে মুখে খুঁশির ঝিলিক দেখা দেয়। রোদ হাত বাড়িয়ে ফোন নেই৷ অনেক দামি ফোন দেখেই মনে হচ্ছে। আইফোন 16,,
শুভ্র রোদের মুখে হাঁসি দেখতে পেয়ে, নিজেও আনমনে হাঁসে, রোদকে আবার বলে উঠে,,
শুভ্র: ফোনের যদি কিছু না, বুঝিস তাহলে রুহিকে বলিস রুহি বুঝিয়ে দিবে। আর সকাল ১০:০০ টার আগে কলেজ গিয়ে উপস্থিত থাকিস। আমি সব কিছু ঠিকঠাক করে দিয়ে আসছি,,তারপর যদি সমস্যা হয়, তো আমাকে কল করে জানাস।
রোদ শুভ্রের কথায় মাথা নাড়ায়,,
শুভ্র পুনরায় বলে উঠে
শুভ্র রুম থেকে বেড় হয়ে যেতে নিবে, এমন সময় রোদ বলে উঠে,,
রোদ: আপনি কোথায় যাচ্ছেন।
শুভ্র রোদের দিকে তাকায়, দুষ্ট হেঁসে বলে উঠে,
শুভ্র: ম্যাডাম কি চাচ্ছেন।আমি এইখানে থাকি। আমি থাকলে আমাকে সহ্য করতে পারবেন তো ম্যাডাম।
রোদ: না মানে আপনি যা
আর কিছু বলতে দেইনা শুভ্র রোদের ঠোঁটে হাত রাখে। রোদ কেঁপে উঠে,,
শুভ্র রোদের দিকে ঝুঁকে,, ফিসফিস করে বলে উঠে
শুভ্র: আপনারও কি মনে ভিতর জামাই জামাই করে নাকি হুম। আপনি যদি চান আমি কিন্তু থাকতে পারি।
রোদ লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,,
শুভ্র রোদের দিকে তাকায় রোদ কাঁপছে,
শুভ্র: এইভাবে কাঁপা-কাঁপি করবেনা ম্যাডাম, ভয়ংকর কিছু করে ফেলতে ইচ্ছে করে।
রোদ শুভ্রকে নিজের থেকে দূড়ে সরিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠে,,
রোদ: প্লিজ চলে যান। আমার রুম থেকে আমি ঘুমাবো,,
শুভ্র: এখন চলে যাচ্ছি, কিন্তু এরপর আর এইরকম হবেনা। আমি আমার ১৬ আনা ভালো করেই বুঝে নিব।
শুভ্র একটু থেমে পুনরায় আবার বলে উঠে,,
যত ঘুমানোর এখন ঘুমিয়ে নেন। আমার কাছে যখন থাকবেন তখন কিন্তু আর ঘুমাতে পারবেন না।
কথা গুলো বলেই শুভ্র রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
শুভ্র যেতেই রোদ জোরে জোরে শ্বাস ফেলে। কি রকম নির্লজ্জ লোক ছিহ,,মুখে কোনো লাগাম নেই, যা ইচ্ছে তাই বলে যায়।
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৩৬
সকাল ০৯:০০
কলেজ সামনে বাসের কাছে দাঁড়িয়ে আছে, রোদ নিলা রুহি,,কিছুক্ষণ ধরে খেয়াল করছে কিছুলোক অস্বাভাবিক ভাবে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে,,রোদের কেমন যেনো মনটা অস্তির লাগছে,,পাশে রুহি নিলা তো বেজায় খুশি। তাদের খুঁশি দেখে কে।
হটাৎ রোদের পিছন থেকে কেউ বলে উঠে,,
