বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪৫
shanta moni
শুভ্র রাগে দাঁতে দাঁত চেঁপে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হেনা বেগম রুহি সবাই অবাক রোদ বেডের উপর কম্বল গায়ে দিয়ে কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে। এইদিকে যে তার জন্য বাড়ির সবাই গলা ফাটিয়ে ডাকতে ডাকতে শেষ। তার তো সে দিকে কোনো খেয়াল নেই। শুভ্র রাগে জোরে শ্বাস ফেলে। ধপ ধপ পা ফেলে নিজের রুমে চলে যায়। আর কতোক্ষন এইখানে থাকলে এই মেয়েকে তুলে আছার মারবে। হেনা বেগম রোদকে ডেকে তুলে রোদ ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আবার পুনরায় ঘুমিয়ে পড়ে। সারা রাত কেঁদে কেঁদে কাটিয়েছে। ফজরের আগে আগে ঘুমিয়েছে, আর এতোটাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো, যে বাহিরে সবাই যে এতো ডেকেছে, তা তার কানে আসেনি। হেনা বেগম রোদকে বার বার ডাকছে আর জিজ্ঞেস করছে সব ঠিক আছে কিনা। রোদ ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসে হাত দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে তাকায়, হেনা বেগম কে দেখে বলে।
রোদ: নানু এতো সকালে তুমি?
হেনা বেগম : এখনো তোর কাছে সকাল দেখছিস কয়টা বাজে।
রোদ দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকায় সকাল ১০:০০ টা বাজে। রোদ জিব কাটে হেনা বেগমের দিকে তাকিয়ে মিনমিন করে বলে।
রোদ: সরি নানু, আসলে আমি এতো বেলা পযন্ত কিভাবে ঘুমিয়ে আছি, জানিনা।
হেনা বেগম মিষ্টি হাঁসে রোদের মাথায় হাত ভুলিয়ে বলে।
হেনা বেগম: তুই দেরি করে ঘুম থেকে উঠিস তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কি ঘুম ঘুমাইছিস বাহির থেকে ডাকলাম তোর কোনো সারা শব্দ নেই। দরজা বন্ধ ছিলো। পরে শুভ্র এসে দরজা খুলে তারপর রুমে ডুকে দেখি, তুই ঘুমিয়ে আছিস। জানিস কতো ভয় পেয়েছিলাম।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
শুভ্র কথা বলতেই রোদের চোখে মুখে অন্ধকার নেমে আসে। হেনা বেগম রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে যেতে বলেন।
হেনা বেগম: রোদ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে খেতে আয়।
রোদ বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়, খেতে! সিঁড়ি দিয়ে ধীর পায়ে নামছে সারা রাত কান্নার জন্য চোখ মুখ ফুলে আছে। গালে হালকা থাপ্পড়ের দাগ কাছ থেকে দেখলেই বুজা যায়। রোদ খাবার টেবিলে বসে। প্লেট থেকে রুটি ছিড়ে মুখে দিতেই, পাশ থেকে হাঁসি বেগম রাগে ফুসতে ফুসতে বলে।
হাঁসি বেগম : নবারের বেটি এতো বেলা পযন্ত ঘুমিয়ে এখন আসছে সকালের নাস্তা করতে। লজ্জা সরম কি কিছু নেই, এই ভাবে বসে বসে গিলতে।
হাঁসি বেগমের কথায় রোদের চোখে পানিতে টইটুম্বুর, মুখে দেওয়া খাবার টা যেনো গিলতে পারছে না। মাথা নিচু করে আছে। কালকে বাসায় আশা অতিথি গুলো ড্রয়িং রুমের সোফায় বসা। হাঁসি বেগম কথা গুলো জোরে বলেন। আর তাদের কারে পৌঁছায় হাঁসি বেগমের কড়া কথা গুলো। হেনা বেগম কিছু বলতে যাবে। কিন্তু শুভ্রকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসতে দেখে, চুপ করে যান। হাঁসি বেগম আবার দাঁত কিড়মিড় করে বলেন।
হাঁসি বেগম: অপয়া অলক্ষী মেয়ে কোথাকার পারিস তো শুধু বসে বসে গিলতে তা ছাড়া তো আর কোনো মুরত নেই। দূরে গিয়ে মরতে পারিস না।
রোদের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে
পারছে না, মাটি ফাঁক করে ডুকে যেতে
লজ্জা ঘৃণা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সামান্য একটু খাবারের জন্য এতো কথা শুনতে হচ্ছে। রোদ মাথা তুলে দাঁড়ায়, উঠে দাঁড়াতেই চোখ পড়ে সিঁড়িতে দাঁড়ারো শুভ্রের দিকে। রোদ চলে যেতে নিলেই হাঁসি বেগম রাগে তেতে উঠে বলেন।
হাঁসি বেগম: খাবার টা, তোর বাপের টাকার না, যে এই ভাবে নষ্ট করবি। দু টাকা রোজকার করার মুরোদ নেই। আসছে খাবার নষ্ট করতে।
রোদ মুখে ওড়না দিয়ে ফুঁপিয়ে উঠে, এতোক্ষণ ঠিক ছিল। কিন্তু আজ তার মৃত্যু বাবাকে নিয়ে বাজে কথা বলছে।
রোদ অশ্রু ভেজা চোখে শুভ্রের দিকে তাকায়, শুভ্র কেনো কিছু বলছে না। পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে।
রোদের কষ্ট,টা যেনো আরো দ্বিগুন বেড়ে যায়। কোনো কিছু না বলেই দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে শুভ্রের পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
হাসি বেগম এতোক্ষণ খেয়াল করেনি শুভ্র তার পিছনে হটাৎ কিছুর বির্কট শব্দে পিছন ফিরে তাকায়, সিঁড়ি পাশে থাকা ফুলদানি ফ্লোরে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে আছে।
শুভ্রের এমন করাতে সবাই ভরকে যায়।
হেনা বেগম এক পাশে দাঁড়ানো সেও শুভ্রকে কিচ্ছু বলছে না। চুপচাপ নিরব দর্শকের মতো দেখছে। হাঁসি বেগম হেনা বেগমের দিকে তাকায় কিন্তু হেনা বেগমের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। শুভ্র খাবার টেবিলে রাখা সব খাবার এক এক করে ফ্লোরে ফেলতে থাকে। হাঁসি বেগমের পায়ের কাছে। হাঁসি বেগম ভয়ে চোখ বন্ধ করে চিৎকার করে বলে।
হাঁসি বেগম : কি করছিস শুভ্র? থাম! শুভ্র কি করছিস তুই খাবার গুলো নষ্ট করছিস কেনো?
শুভ্র থামে রাগে ফুসতে ফুসতে বলে
শুভ্র: তুমি কাকে খাবারের খোঁটা দিচ্ছো মেজো মা!
হাঁসি বেগম আমতা আমতা করে বলে
হাঁসি বেগম: মানে কি বলছিস?
শুভ্র : বাহহহ এখন দেখছি কিছুই জানো নাহ।
হাঁসি বেগম চুপ করে আছেন। কোনো কিছু বলছে না।
শুভ্র রাগে নিজের চুল গুলো শক্ত করে চেঁপে ধরে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে নিজেকে স্বাভাবিক করতে চায়। পুনরায় বলে উঠে
শুভ্র: কি বলছিলে দু টাকা রোজকার করার মুরোদ নেই, এই শুভ্র চৌধুরীর যে টাকা আছে, সেই টাকা দিয়ে তোমার মতো কাজের লোক হাজার জন রাখা যাবে, রোদের জন্য!
হাঁসি বেগম লজ্জায় অপমানে মাথা নিচু করে ফেলে। রোদ হাঁসি বেগমের দিকে দুকদম এগিয়ে তার দিকে ঝুকে আস্তে করে বলে উঠে
শুভ্র: আপনার তো না জানার কথা না! মিসেস হাঁসি বেগম।আপনার মতো হাজার টা হাঁসি বেগমকে রোদ কিনতে পারবে। এতো তাড়াতাড়ি নিজের অবস্থান ভুলে গেলেন। আপনার যে যোগ্যতা আছে, তা দিয়ে তো চৌধুরী বাড়ির চাকর হতে পারবেনা।
শুভ্র বাঁকা হাঁসে পুনরায় দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে
শুভ্র : ফাস্ট এ্যান্ড লাস্ট ওয়ার্নিং, আজকে যা করলেন ভুলেও কখনো এই সব করার সাহস করবেন না। আমার বউ সকালের নাস্তা সকাল দশ-টা না, দুপুর ১২ টায় করবে। তাতে আপনি মাথা ঘামাবেনা। আপনার যায়গা যদি অন্য কেউ হতো তাহলে তাকে আমি এইখানে পুঁতে ফেলতাম।
শুভ্র কথা গুলো বলে আর দাঁড়ায় না! বেড়িয়ে যায়! বাড়ি থেকে! শুভ্রের এমন কথায় এবং হাঁসি বেগমকে শাসাতে দেখে হেনা বেগম, ও মীরা বেগমের মুখে হাঁসি।
হাঁসি বেগম রাগে ফুসছেন। অপমানে লজ্জায়, সেখান থেকে সরে নিজের রুমে চলে যায়।
দুপুর প্রায় ১১:০০ টা দিকে, রোদকে হেনা বেগম খাওয়ার জন্য ডেকে গেছে। এমন কি খাবার নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু রোদ রুমের দরজা খুলেনি।
হেনা বেগম অনেক খুঁশি কারন শুভ্র রোদের হয়ে প্রতিবাদ করছে। আর উনি ভালো করেই জানেন শুভ্রের উপর কথার উপর কথা বলার সাহস কারো নেই। শুভ্রের রাগ সম্পর্কে বাড়ির সবাই জানে। শুভ্র রেগে গেলে কি তান্ডব শুরু হয়। হেনা বেগম তিন চার বার ডাকে কিন্তু কেনো সারা শব্দ নেই। হতাশ হয়ে খাবার ট্রেরে নিয়ে চলে যান।
রোদ রুমের দরজা আটকে কাঁদছে বার বার নিজের ভাগ্যকে দোষ অরফ করে। কেনো তাকে এমন জীবন দিলো। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে দূরে কোথাও চলে যেতে। কিন্তু সে কোথায় যাবে, তার যাওয়ার মতো তো কোনো যায়গা নেই।
রোদ বিছানায় মুখ গুজে ফুঁপিয়ে উঠে।
আল্লাহ কাছে বার বার বলে তাকে যেনো তার আব্বু আম্মু মামনির কাছে নিয়ে যায়। এই যন্ত্ররা ময় জীবন তার ভালো লাগে না। দরজা খুলে রোদের রুমে ডুকে শুভ্র। হাত থেকে দুটো বিরয়ানি পেকেট রটি-টেবিলে রাখে!বেডের দিকে চোখ পড়তে দেখে রোদ শুয়ে আছে। দেখেই মনে হচ্ছে কাঁদছে শরীর মৃদ কাঁপছে।
শুভ্র জোরে শ্বাস ফেলে। ধীর পায়ে এগিয়ে যায়, বেডের দিকে, রোদ এখনো শুভ্রকে খেয়াল করেনি। শুভ্র কোনো কিছু না বলেই রোদকে কোলে নিয়ে সোফায় বসায়, রোদ শুভ্রকে দেখে প্রথমে অবাক হলেও পর মূহুর্তে নিচে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে পড়তেই চোখে কোনে পানি আসে। উঠে চলে যেতে নেয়! শুভ্র রোদের হাত টেনে নিজের কোলে বসায়!
রোদ ছোটাছুটি করতে থাকে, শুভ্র নিজের সাথে চেঁপে ধরে আস্তে করে বলে!
শুভ্র: স্টপ রোদ, থাপ্পড় না খেতে চাইলে চুপচাপ বসে থাক এখানে…!
রোদ শান্ত হ’য়ে যায়! কিন্তু চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে!
শুভ্র রোদকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে চোখের পানি মুছে দেয়। দুগালে হাত দিয়ে, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, রোদের দিকে! কাঁদতে কাঁদতে চোখ মুখ নাক লাল করে ফেলছে। কিছুক্ষণ পর পর ঠোঁট কেঁপে উঠছে। শুভ্র রোদকে এমন অবস্থায় দেখে হাসফাস করতে থাকে। রোদের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে জোরে শ্বাস ফেলে। তারপর ফিসফিস করে বলে উঠে,,
শুভ্র: আমার ভিটামিনের অভাব হচ্ছে বউ!
রোদের মুখে কোনো কথা নেই, শুভ্র আর কোনো কিছু না বলেই, রোদের অধঁরে নিজের অধঁর ঠুবিয়ে দেয়। রোদ কোনো প্রতিক্রিয়া করছে না। শুভ্র রোদের ছোট্ট শরীর’টা নিজের সাথে শক্ত করে চেঁপে ধরে। ১০ মিনিট বেশি সময় হয়ে যায়। শুভ্রের ছাড়ার কোনো নামই নেই! রোদের শ্বাস আটকে আসে! নিশ্বাস নিতে পারছে না। শুভ্র রোদকে ছেড়ে দিতেই, রোদ চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে। শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে শব্দ করে, রোদের ঠোঁটে চুমু খায়।
রোদ এখনো চোখ বন্ধ করে আছে! লজ্জা ভয় সে চোখ খুলতে পারছে না।
শুভ্র রোদকে লজ্জা পেতে দেখে, দুষ্ট হাঁসে, তাঁরপর বলে
শুভ্র: মেডাম! রোমান্স করে মন ভরবে পেট না। তাই আপনার যত লজ্জা আছে, সব এখন তুলে রাখেন। এখন আসেন খেয়ে নিন।
শুভ্রের কথা শুনে রোদ চোখ খুলে মাথা নিচু করে আছে। শুভ্র রোদকে কোল থেকে নামিয়ে পাশে বসায়। হাত বাড়িয়ে টি-টেবিলে রাখা বিরয়ানির পেকেট দুটো হাতে তুলে নেয়। একটা রোদের দিকে বাড়িয়ে দিতেই রোদ অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। শুভ্র কিছু একটা ভেবে নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে, কিছু একটা করে। কিছুক্ষণ পরে দরজার বাহির থেকে আওয়াজ আসে। শুভ্র উঠে গিয়ে দরজা৷ খুলে, রুহি হাঁসি মুখে দরজা সামনে হাতে একটা প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুভ্র প্লেট নিয়ে রুমে আসে!
রোদ এতোক্ষণ দেখছিলো শুভ্র কি করে, শুভ্রকে হাতে প্লেট নিয়ে আসতে দেখে আবার অন্যদিকে নিজের মুখ ফিরিয়ে নেয়। শুভ্র রোদের সব কিছুই খেয়াল করছে, আর আনমনে হাঁসছে’ শুভ্র প্লেট খাবার বেরে, হাতে নিয়ে লোকমা বানিয়ে রোদের মুখের সামনে ধরে। রোদ অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে!
রোদকে হা করতে না দেখে
শুভ্র ভ্রু কুচকে তাকায়, তারপর বলে
শুভ্র: ম্যাডাম আমাকে দেখার অনেক সময় আছে’ এখন প্লিজ আপনি খাবার টা খেয়ে নিন।
রোদ ও আর না করে না, শুভ্র নিজ হাতে যত্ন করে খায়িয়ে দিচ্ছে! আর রোদও চুপচাপ খাচ্ছে। রোদের চোখেরপানি টলমল করছে’ এই যত্ন টুকু তো সে এতোদিন চাইছিল। কিন্তু সে তার বদলে অবহেলা অপমান ছাড়া কিচ্ছু পাইনি।
শুভ্রও খেয়াল করে রোদের চোখে পানি তবে সে কিছু বলে না। সে অনেক অন্যায় করেছে, তার ছোট্ট ফুলের সাথে, আর সে যে ভুল করেছে তার মাফ কখনোই হয়না। শুভ্র দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, জীবনে সব থেকে বড় ভুল করেছে, সে! কিন্তু আর না, এবার তার ফুলকে সে তার সব টুুকু দিয়ে আগলে রাখবে। শুভ্র হাত বাড়িয়ে টি-টেবিল থেকে পানির গ্লাস আনে। সেই সুযোগে রোদ চোখের পানি মুছে ফেলে।
শুভ্র এখন পযন্ত কিছু খাইনি, সকালে নাস্তা করতে নামছিলো নিচে তখনি ওই ঘটনা ঘটে, রেগে তারপর বাসা থেকে বেড় হয়ে যায়। ফিরে আসে বউয়ের জন্য খাবার নিয়ে। রোদের বিরয়ানি খুব পছন্দ, কিন্তু শুভ্র এই সব বাহিরের খাবার খায় না। দুই পেকেট বিরয়ানি আনে রোদের জন্য’ রোদ অনেকক্ষণ থেকে বলতে চেষ্টা করছে, শুভ্রকে খাওয়ার জন্য কিন্তু ভয় অস্থিতে বলতে পারছেনা। রোদ মনে মনে সাহস নিয়ে আস্তে করে বলে
রোদ: আপনি খাবেন না?
শুভ্র হাত থেমে যায়! আস্তে করে বলে
শুভ্র: আমি এই সব বাহিরের খাবার খাইনা। তোমাকে খাওয়াচ্ছি তুমি খাও!
রোদ চোখ মুখ ছোট ছোট করে ফেলে।
আস্তে করে বলে..!
রোদ: আমি খাবো না!
শুভ্র রোদের দিকে তাকায় তপ্ত নিশ্বাস ফেলে, আস্তে করে বলে..!
শুভ্র: আচ্ছা ঠিক আছে! আমি খাচ্ছি।
বলেই দুই লোকমা পরাপর মুখে দেই।
তারপর আবার রোদকে খাওয়াতে থাকে।
রোদ অনেক খেয়েছে শুভ্রের ভয়ে ভয়ে, এখন মুখে নিয়ে বসে আছে। আর গিলতে পারছে না।
শুভ্র ভ্রু কুচকে তাকায়, টি-টেবিল থেকে পানির গ্লাস এনে রোদের হাতে দেয়। রোদ পানি দিয়ে মুখের খাবার টুকু গিলে।
শুভ্র আবার মুখে সামনে লোকমা আনতেই নাক মুখ সিটকে বলে।
শুভ্র: প্লিজ নাহ’ আমি আর খেতে পারছিনা।
শুভ্র কিছু বলতে গিয়ে বলেনা। প্লেটে হাত ধুঁয়ে রোদের মুখ মুছিয়ে দেয়। ওয়াশরুমে গিয়ে নিজের হাত ধুয়ে আসে।
বাহির থেকে আজানের ধ্বনি আসছে! শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে বলে!
শুভ্র: এখন রেস্ট নে, পড়ে গোসল করে ফ্রেশ হয় নিস। রুমে বাহিরে যাওয়ার দরকার নাই।
শুভ্র রোদের কথায় মাথা দুলায়’ শুভ্র রোদের রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে যায়। রুমে ডুকতেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। জেরিন শুভ্রের বিছানার উপর শুয়ে আছে। গায়ে হাটু অবধি একটা প্যান্ট আর পাতলা একটা শার্ট, শুভ্রের দেখেই মাথায় আগুন ধরে যায়। রাগে গর্জে উঠে বলে!
শুভ্র: হোয়াট দ্যা হেল,,
শুভ্রকে আর কিছু না বলতে দিয়ে জেরিন এসে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে। শুভ্র ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজের শার্ট জাড়তে থাকে।
জেরিন কিছু বলতে যাবে, শুভ্র রেগে চেচিয়ে বলে উঠে
শুভ্র: আউট
জেরিন শুভ্রের দিকে এগিয়ে আসতে যায়। শুভ্র হাত বাড়িয়ে থামিয়ে দেয়।
রেগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে।
শুভ্র : রুম থেকে বেড় হ, জেরিন! তা না হলে” ভুলে যাবো তুই আমার খালাতো বোন।
জেরিন শুভ্রকে রাগতে দেখে, রুম থেকে চলে যায়। শুভ্রের রাগে শরীর জলছে এই সব গায়ে পড়া মেয়ে তার একদম পছন্দ না। জড়িয়ে ধরেছে আবার।
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪৪
এখন ভালো করে সাওয়ার নিতে হবে।
শুভ্র ওয়াশরুম যায়, সাওয়ার নিতে, একঘন্টা পর বের হয়। রেডি হয়ে, জুম্মা নামাজের জন্য চলে যায়। শুভ্র অয়ন নিলয়, রোদ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সব দেখছে, এই প্রথম শুভ্র এইবাবে পাঞ্জাবি পড়া অবস্থায় দেখছে। ফর্সা গায়ে, কালো পাঞ্জাবিতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
