বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪৭
shanta moni
“সন্ধ্যা সাতটা ত্রিশ মিনিট’
‘রুহি কিছুক্ষণ আগেই বাসায় ফিরেছে।
মুখে তার হাঁসি বার বার নিজের পায়ে থাকা নুপুর দিকে তাকাচ্ছে!
রোমান নিজেই রুহিকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে গেছে। রুহি নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে বসে আছে। আর আজকে রোমানের সাথে ঘটে যাওয়া কথা ভাবছে।
এইদিকে রোদ মাগরিবের নামাজ পড়ে নিজের রুমে বসে আছে। আজকে দিনটা ঘুমিয়ে কাটিয়েছে। “যার জন্য শরীর কেমন যেনো লাগছে‚ রোদ নিজের রুম থেকে বেড় হয়। দরজা খুলে করিডর দিয়ে হেঁটে নিচে দিকে যায়। তখনি সামনে পড়ে একটা অচেনা মেয়ে‚ রোদকে দেখে মেয়েটি মিষ্টি হাঁসে রোদের দিকে এগিয়ে এসে রোদকে উদ্দেশ্য করে বলে।
জুই: কেমন আছিস রোদ?
রোদ ভ্রু কুচকে তাকায় তারপর বলে?
রোদ: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপু। আপনি কেমন আছেন?
“জুই মিষ্টি হাঁসে তাঁরপর বলে…!
জুঁই: আমিও ভালো’ তুই আমাকে আপু ডাকছিস? এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি!
রোদ সামনে থাকা মেয়েটির কথা শুনে অবাক হয়। আসলে সে চিন্তে পারছে না।
জুই: তুই আমাকে চিনতে পারছিস না? আচ্ছা বল তো কে আমি?
রোদ জুইয়ের দিকে তাকায় একটু একটু চেনা চেনা লাগলেও বলতে পারে নাহ।
রোদ ঠোঁট উল্টে বলে..!
রোদ: খুব চেনা চেনা লাগছে কিন্তু এখন মনে করতে পারছি না।
জুই দাঁত বেড় করে খিলখিল করে হাঁসে
তাঁরপর বলে…!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জুঁই: আমি জুঁই! শুভ্র ভাইয়ের খালাতো বোন। আরো বলতে হবে?
রোদ হাঁসি মুখে জুঁইয়ের দিকে এগিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে..!”
রোদ: জুই তুই‚ কতোটা চেঞ্জ হয়ে গেছিস। আর আমি তোকে চিনতে পারছি না।
জুঁই মিষ্টি হাঁসে রোদকে জড়িয়ে ধরে বলে..!”
জুঁই: তুইও তো কতো কিউট হয়ে গেছিস।
ছোট বেলার থেকে এখন আরো বেশি সুন্দর হয়ে গেছিস।
রোদ জুঁইয়ের কথায় হাঁসে, জুঁই মেয়টা একেবারে অন্যরকম চলা ফেরা সব দিক দিয়ে অনেক টাই ভালো। বিদেশ বড় হলেও পোশাক দেখে কেউ বলবে না” যে জুঁই বিদেশ বড় হয়েছে। রোদের মামনি থাকতে জুঁইয়ের সাথে অনেক বার দেখা হয়েছে। দুইজন এক সাথে খেলেছে। বলতে গেলে তারা দুইজন ছোট বেলার খেলার সাথী।
রোদ জুঁইকে নিয়ে” নিজের রুমে যায়।দুইজন মিলে অনেক’টা সময় গল্প পড়ে।
রুহি নিজের রুমে বসে আছে। লজ্জা ভয় নিজের রুম থেকে বেড় হচ্ছে না। যদি কেউ পায়ে থাকা নুপুর দেখে ফেলে তাহলে সে কি বলবে। রুহি নিজের রুমে ঘাপটি মেরে বসে আছে। আর রোমানের কথা ভাবছে, রোমান কেমন করে তাকিয়ে ছিল’ রুহির দিকে রুহি লজ্জা নিজের মুখ ডাকে দুই হাত দিয়ে।
“আজ দুই দিন পর নিলয় বাড়িতে ফিরে,
কানে সমস্যা জন্য চট্টগ্রাম গিয়েছিল ডক্টর দেখাতে। কি একটা অবস্থা হয়েছিল। ডক্টর না দেখালে তো সে সত্যি কানা হয়ে যেতো। ভাবতেই নিলয় বুকে হাত দেয়। তার ক্রাশ মেয়ে গুলো যদি একটা বার জেনে যেতো, তাহলে তার কি মান সম্মান থাকতো। নিলয় মনে মনে কিছু একটা ভেবে
হাতে ফোন নিয়ে নতুন সিমের নাম্বার থেকে কল দেয়’ নিলাকে আজ অনেক দিন হয়ে গেছে। নিলাকে জ্বালাতে পারছে না। তাই আজকে আবার জ্বালানোর জন্য কল দেয়।
“দুই তিনবার রিং বাজতেই ফোনের অপর পাশ থেকে কল রিসিভ হয়। নিলয় নিজের কান থেকে ফোন দূরে সরিয়ে ভয়েজ চেঞ্জ করে মেয়েদের মতো করে বলে..!
নিলয়: কি হতিনের ঘরে হতিন লো’ আমার স্বামীরে তাবিজ করে নিজের বসে রাখছিস” আরে হতিন তুই আমার জামাইয়ের ছাইড়া দে।
নীলা: এই কে আপনি? কার কাছে ফোন দিছেন?
নিলয় ন্যাকা কান্না জুঁড়ে দিয়ে বলে
নিলয়: আরে সতিন তুই মোর জামাই নিয়া কই লুকাইছো। আমার জামাইরে দে হতিন।
নীলা: আরে আপু আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে! আমি আপনার স্বামীকে কেনো লুকাবো।
নিলয় ফোর দূরে নিয়ে হাঁসে, তারপর আবার বলে..!
নিলয়: আরে হতিন লো মিথ্যা কইস না।
আমার জামাইরে দিয়া দে? নইলে তোর নামে মামলা দিব।
নীলা এবার রেগে যায়। রাগে তেতে উঠে বলে..!”
নীলা: দূর মিয়া গাঁজা খাইয়া ফোন দিছেন হ্যা! কে আপনার স্বামি কে নিছে?“আর কে আপনার সতীন?
নীলার কথা শুনে নিলয় ফিক করে হেঁসে দেয়। নীলা হাঁসির শব্দ শুনতেই কন্ঠ চিনে ফেলে।
রাগে তেতে উঠে কিছু বলতে যাবে।
এমন সময় নিলয় ফোন কেটে দেয়।
নীলা শক্ত হাতে নিজের ফোন চেঁপে ধরে।
রাগে রি রি করতে বলে উঠে..!
নীলা: হাঁদারামের বাচ্চা তুই এ-তো দিন তাহলে আমাকে ফোন দিয়ে এই রকম জ্বালিয়েছিস। তোকে তো আমি শেষ করে ফেলবো! রেডি থাকিস গাঁধা।
“রোদ জুঁই পুড়ো বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখছিল। সেই ছোট বেলায় এই বাড়ি দেখছিল। এখন পুড়ো পুড়ি কিছু মনে নেই। রোদকে হেনা বেগম ডাক দেওয়ায়।
রোদ হেনা বেগমের কাছে চলে যান। জুঁইকে পাঁচ মিনিটের কথা বলে।
জুঁই সম্মতি জানায়” জুঁই বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে এতটা রুমের কাছে এসে দাঁড়ায়।
দরজা হালকা খোলা” জুঁই দরজা একটু ফাঁক করে উকি মারে। রুম’টা সুন্দর করে সাজানো গোঁছানো খুব সুন্দর পরিপাটি
জুঁই কৌতুহাল বসত রুমের ভিতরে ডুকে
রুমের চার পাশ ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে।
হটাৎ দরজা খোলার শব্দ সামনে তাকাতেই হা হয়ে যায়। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে সামনের দিকে।
অয়ন সামনে একটা মেয়ে দেখে অবাক হয়। জুঁই নিজের হুসে আসতেই, দেয় জোরে চিৎকার। অয়ন কোমরে তোয়ালে পেঁচানো। এই একটু আগে বাসায় আসছে। এসেই সাওয়ারে ডুকে লম্বা সাওয়ার নিয়ে বেড় হয়েছে। কিন্তু তার রুমে তো সচর আচর কেউ আসে না তাহলে এই মেয়েকে। অয়ন এখন বেশি ভাগ সময় কাজে ব্যস্ত থাকে। বাসায় অনেক কম আসে। তার কারন হচ্ছে রোদ” কারন সে রোদকে দেখলেই দুর্বল হয়ে পড়ে। বার বার ইচ্ছে করে রোদের কাছে জুটে যেতে। আর সেই জন্য নিজেকে ব্যস্ত রেখে রোদকে ভুলে থাকার বৃথা চেষ্টা। তবে সেই চেষ্টা সে সফল হতে পেরেছে কি না জানা নেই। এতো বছরের ভালোবাসা কি এতো সহজে ভুলে যাওয়া যায়।
অয়ন চিৎকার শুনে সাথে সাথে ওয়াশরুমে ডুকে দরজা লাগায়।
এই মেয়ে যে ভাবে চিৎকার করছে, তাতে মনে হয় না! “যে তার মান ইজ্জত রক্ষে থাকবে কিছু।
জুই অয়নে ওয়াশরুমে ডুকে যেতে দেখে জুঁই অয়নের রুম থেকে দৌড়ে বেড়িয়ে যায়।
রুমের বাহিরে এসে বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে।
রোদকে হেনা বেগম নিচে ডেকেছে।
মিসেস রিনা খান ড্রয়িং রুমের সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে।
চোখ মুখে কেমন যেনো গম্ভীরতা!
“রোদ ড্রয়িং রুম পেরিয়ে হেনা বেগমের কাছে কিচেনে যেতে নেয়। আড় চোখে একবার সোফায় বসে থাকা রিনা বেগমকে দেখেন।
রিনা খান পিছন থেকে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে…!”
রিনা খান: চৌধুরী বাড়ির বউ তুমি সারা দিন শুয়ে বসে থাকলে তো হবে না। বাড়িতে মেহমান আছে! তাদের দিকে তো খেয়াল রাগবে। চৌধুরী বাড়ির বড় বউদের দায়িত্ব কিন্তু অনেক বেশি।
“রোদের পা থেমে যায়। রিনা খান আবার বলে উঠে
রিনা খান: তুমি আবার আমার কথায় কিছু মনে করোনা। এখন কার মেয়ে গুলো আদব কায়দা কিছু নেই। আমি তোমার খালা শাশুড়ী এসেছে আজ দুইদিন হয়ে গেলো। এখন পযন্ত সালাম টুকু করলো না। কেমন মেয়ে পছন্দ করে নিজের ছেলের গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে গেছে’ আপা আদব কায়দা বলকে কিছু নেই।
“রোদ কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারে না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সেই যায়গায়। রিনা খান আর খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অনেক কথা বলে রোদকে।
রিনা খান রোদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
রিনা খান: হইছে আর নেকা কান্না করতে হবে না। আমি তোমার খালা শাশুড়ী আমাকে সালাম করলে কি তোমার সব কিছু কি কমে যেতো। কোনো শিক্ষা আদব কায়দা মা-বাবা শেখায়নি।
রিনা খান আবার বলে উঠে
রিনা খান: মা-বাবা কি করে শিখাবে,মা- বাবাকে তো জন্ম হয়েই খেয়েছে। অলক্ষি মেয়ে। মা- বাবাকে খেয়ে মন ভরেনি। তাই তো আমার বোন’টাকে খেলো। এই মেয়েটা রাক্ষস একট’ দেখবে আস্তে আস্তে বাড়ির সব গুলো মানুষকে খাবে হুম।
শুভ্র: আমার বউ যদি রাক্ষস হয়! খালা তাহলে এইবার সবার আগে তোমাকে খেতে বলবো।
শুভ্রের কথা সামনে দরজা দিকে তাকায় রিনা খান। শুভ্রের এমন কথায় থতমত খেয়ে যায়। শুভ্র এতোক্ষণ দরজা সামনে দাড়িয়ে সব শুনছিল। রোদ মাথা তুলে একবার শুভ্রের দিকে তাকায়।
শুভ্র ড্রয়িং রুমে রিনা খানের দিকে এগিয়ে হাঁসি মুখে বলে উঠে,,
শুভ্র: আর শুনে রাখো খালা আমার বউকে আদব কায়দা তোমাকে সেখাতে হবে না। আমার বউ যেই রকম আছে, তাতেই হবে। তবে তোমাকে আদব কায়দা শেখাতে হবে” আমার বউ তোমাকে সালাম করেনি, সেই টা নিয়ে তো প্রবলেম। আজকে সারা রাত তোমাকে সালাম করবে।
শুভ্র একটু থেমে আবার বলে উঠে
শুভ্র: আজকে রোদ না, বাড়ির সবাই তোমাকে সালাম করবে। আর খালা শাশুড়ী হিসেবে সালাম করলে সালামি তো অবশ্যই পাবে।
রিনা খান শুভ্রের দিকে কেমন বোকার মতো তাকিয়ে আছে..!
সে আসলে বুঝতে পারছে না। শুভ্র তাকে অপমান করছে নাকি সম্মান করে বলছে, সারা রাত সালাম করবে সবাই।
শুভ্র রোদের দিকে তাকায় তাঁরপর বলে
শুভ্র: রোদ এইদিকে আয়।
রোদ মাথা তুলে তাকায় শুভ্রের দিকে
তাঁরপর ধীর পায়ে এগিয়ে আসে শুভ্রের দিকে।
শুভ্র রোদের দিকে তাকায়, তাঁরপর বাড়ির সবাইকে জোরে ডাকে রুহি, নিলয় অহনা, টিনা, জুঁই, সবাই নিচে আসে। অয়ন বাদে, সবাই নিচে আসতেই শুভ্র বাঁকা হাঁসে, রিনা খান হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। সে আসলে বোঝার চেষ্টা করছে, শুভ্র কি করতে চাইছে।
“শুভ্র সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে..!
শুভ্র: আজকে সালামি দিবস। খালা’কে যে যতবার পায়ে ধরে সালাম করবি। সে আনলিমিটেড সালামি পাবি। দেরি করিস না সবাই,
নিলয় চোখ চকচক করে উঠে, অবিশ্বাস চোখে তাকায় শুভ্রের দিকে’ তাঁরপর বলে
নিলয়: সত্যি বলছো ব্রো? এই কিপটা দিবে আনলিমিটেড সালামি?
নিলয় কথা একটু জোড়ে বলে, রিনা খান কটমট করে নিলয়ের দিকে তাকায়, নিলয় মেকি হাঁসে, শুভ্র হাঁসি মুখে রিনা খানের দিকে তাকিয়ে বলে,
শুভ্র: আরে খালা আপনি শুধু রোদকে সালামি দিবেন কেনো? ওদের সবাইকে দেন। আর নিলয় সত্যি খালা সালামি দিবে সবাইকে তোরা সালাম কর।
তোদের সবার সালাম করা হয়ে গেলে।
বাড়ির সব সার্ভেন্ট দিয়ে খালাকে সালাম করাবি। আজকে খালা বাড়ির সবাইকে সালামি দিবে।
শুভ্রের কথা শুনে রিনা খান চোখ বড় বড় করে তাকায়।
শুভ্র নিলয়ের দিকে তাকিয়ে পুনরায় বলে উঠে
শুভ্র: নিলয় তুই লাইভ কর। আজকে আমাদের খালা বাড়ির সবাইকে আনলিমিটেড সালামি দিবে, সেটা সবাই দেখাতে হবে তো।
শুভ্রের বলতে দেরি হলেও নিলয়ের ফেইবুকে ডুকে লাইভ চালু করতে দেরি হলো না। শুভ্র বাঁকা হাঁসে রোদ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে শুভ্রের দিকে।
“শুভ্র ধীর পায়ে এগিয়ে যায়, রিনা খানের দিকে একটু তার দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বলে উঠে,,
শুভ্র: এটা চৌধুরী বাড়ি খালা, এখানে ভিক্ষারী কে ভিক্ষা দিলেও ৫০ হাজারের নিচে কেউ দেয় না। সো সেখানে আপনি আজ সবাইকে সালামি দিবে, সেটাও আবার ক্যাশ। তাই এতো যখন চৌধুরী বাড়ির নিয়ম আমার বউকে শিখিয়ে ছিলেন। তো এই নিয়ম টাও ঠিক রাখবেন।
“কথা গুলো বলেই শুভ্র সিঁড়ি দিকে যায়।
রোদের হাত ধরে রোদকে নিয়ে চলে যেতে যেতে বলে।
শুভ্র: নিলয় যতক্ষণ না সালামি দেওয়া শেষ হবে। ততক্ষণে লাইভ বন্ধ করবি না। লাইভ চলতে থাকবে।
নিলয় জোরে চিৎকার করে বলে
নিলয়: ওকে ব্রো!”
শুভ্র রোদের হাত ধরে এক রকম টানতে টানতে উপরে নিয়ে যায়। রোদ অবাক হয়ে শুভ্রের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
রোদ মনে মনে “এই মহিলা যে পরিমাণ কিপটা সে দিবে আনলিমিটেড সালামি হাঁস্যকর বেপার। হাতের ফাক দিয়ে পানি পড়েনা। এতো কিপটা…!”
“রোদের হাত শক্ত করে ধরে আছে। মনে হচ্ছে হাতের হাড় গোড় গুরো করে ফেলবে।
“শুভ্র রুমে আসতেই রোদের হাত ছেড়ে দেয়। রোদ নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে বলে।
রোদ: কি করছেন আমার হাত? আমার হাত তো ভেঙে ফেললেন।
শুভ্র কিছু বলে না! শান্ত দৃষ্টিতে রোদের হাতের দিকে তাকায় ফর্সা হাতে লাল দাগ পড়ে গেছে।
রোদ মাথা নিচু করে নিজের হাতে দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্র গায়ে থাকা শার্ট খুলে সোফায় খুলে মারে।
রোদ এখনো খেয়াল করেনি, শুভ্র শার্ট খুলে ফেলেছে। সে নিজের হাত দেখতে ব্যস্ত। শুভ্র গায়ে এখন একটা প্যান্ট আর সাদা গেঞ্জি! শুভ্র রোদের কাছে গিয়ে রোদকে কোলে তুলে নেয়। সোজা গিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে যায়। ঘটনা এতো দ্রুত ঘটে যে রোদের মাথার উপর দিয়ে যায়।
যখনি বুঝতে পারে তার গায়ে পানি পড়ছে, তখনি ছটফট করতে থাকে। শুভ্রের থেকে ছোটার জন্য, শুভ্র বিরক্ত হয়ে” রোদের দিকে তাকিয়ে বলে
শুভ্র: ব্যাঙের মতো লাফালাফি না করে। চুপ করে এখানে দাঁড়া..!
রোদ বিচিলিত হয়ে বলে
রোদ: আপনি আমাকে এতো রাতে এভাবে ভিজিয়ে দিচ্ছেন কেনো?
ছাড়ুন আমায় আমার শীত লাগছে!
শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে রোদকে শক্ত করে চেঁপে ধরে বলে
শুভ্র: এই রকম হাঁসের মত প্যাক প্যাক না করে! চুপ করে এখানে দাঁড়িয়ে থাক!
তা না হলে এমন কিছু করবো, যার জন্য তোকে সারা রাত গোসল করে পাড় করতে হবে।
‘শুভ্রের কথা বুঝতে পেড়েই রোদ চুপ করে যায়!
এইদিকে নিলয় লাইভ অন করে বলে
নিলয়: হ্যালো গাইস, আজকে আমাদের প্রান প্রিয় কিপটা খালা,,না মানে থুক্কু আমাদের খালামনি আমাদের আনলিমিটেড সালামি দিবে। সো আপনারা সবাই দেখতে থাকুন, আমারা কতো টাকা সালামি পাই!
রিনা খান কটমট চোখে তাকায় নিলয়ের দিকে, নিলয় বুদ্ধি করে ক্যামেরা ঘুরায় রিনা খানের দিকে! রিনা খান হাঁসি হাঁসি মুখে বলে..!
রিনা খান: দিব তো সালামি, টাকা তো রুমে আছে। আমি বরং রুম থেকে টাকা গুলো নিয়ে আসি।
জুঁই নিজের মায়ের মুখে কথা গুলো শুনেই দ্রুত বলে উঠে
জুঁই: আরে আম্মু তুমি কষ্ট করে, সিঁড়ি বেয়ে উঠতে যাবে, কেনো? আমি নিয়ে আসি টাকা গুলো!
জুঁই কথা গুলো বলে আড় দাঁড়ায় না! দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায়।
দুই মিনিট পর হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে চলে আসে। হাঁসি হাঁসি মুখে,
সোফার সামনে থাকা টি-টেবিলের উপর ব্যাগ’টা খুলে সব টাকা রাখে। নিলয়ের চোখ মুখ চকচক করে উঠে।
কমপক্ষে তিন থেকে চার লাখ টাকা হবে।
তবে সেখানে দুই পয়সা থেকে শুরু করে এক টাকা দুই টাকা, এক হাজার নোট পযন্ত আছে।ছিড়া টাকাও আছে।
মনে হচ্ছে এতো বছর কিপটামো করে যে টাকা জমিয়ে ছিলো। সব জুঁই নিয়ে এসেছে। লাইভ চলছে বলে রিনা খান কিছু বলতেও পারছে না। অন্যদিকে বাড়ির সব সার্ভেন্ট এসে হাজির হয়েছে।
সবাইকে দেখে রিনা খান হার্ট অ্যাটাক হবার অবস্থা।
সবাই দৌড়ে গিয়ে রিনা খানকেঘিরে ধরে! রিনা খান ফ্লোরে বসে পড়ে।
নিলয় এসে রিনা খানকে এক পা ধরে সালাম করতেই আছে। আর এক দিকে রুহি, টিনা, জুই, অহনা, আর এক পা ধরে আছে। আর এক হাত দিয়ে টাকা নিচ্ছে। একে একে কেউ সবাই সালাম করছে। কেউ হাত ধরে সালাম করছে।
সবাই টাকা নিতে নিতে সব শেষ হয়ে যায়। রিনা খান ছেড়ে সবাই সরে যায়।
রিনা খান ফ্লোর থেকে উঠে দেখে তার একটাও টাকা নাই।
চিৎকার করে সেন্সলেস হয়ে যায়।
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪৬ (২)
নিলয় ভয়ে ভয়ে তাঁকায়, সবাই কাছে এসে ডাকতে থাকে! চোখে মুখে পানি দিতে থাকে। জুঁই ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে..!
জুঁই: আরে রিল্যাক্স মাম্মাকে এই ভাবে তোরা কেউ জাগাতে পারবি না। তোরা সর আমি দেখছি?
রুহি নিলয় সরে যায়” জুঁই নিজের কাছ থেকে এক হাজার টাকা একটা নোট বেড় করে রিনা খানের নাকের কাছে ধরে।
কিছু সময় যেতেই রিনা খান টাকা শুকতে শুকতে জেগে উঠে বলতে থাকে..!
রিনা খান: টাকা, টাকা আবার সব টাকা নিয়ে গেলো রেহ! রিনা খান উঠতে দেখে সবাই দৌড়ে পালায়!
