বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ১
ইশরাত জাহান
চার বছর মানুষের জীবন কিভাবে যেন কেটে যায়।অথচ সময় থমকে আছে শোভার জন্য।দুপুরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।টিনের ঘরে সেই তাপ আরো বেশি।ঘাম ভেজা শরীরে শোভা রান্নাঘরে মৌলির জন্য খাবার গুছাচ্ছিল।মৌলি হলো শোভার ভাই শামীমের আদরের কন্যা বয়স তার চার।এর মাঝেই হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল।স্ক্রিনে নামটা দেখে বুকটা ধক করে উঠল।বহুদিন পর নামটা দেখলো দিজা যে শোভার আদরের ননদ।রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে ডাক শুনতে পায়, “ভাবি,কেমন আছো?”
“আলহামদুলিল্লাহ,তুমি?”
“আলহামদুলিল্লাহ,একটা কথা বলি?”
“হুম,বলো।”
“ভাইয়া এসেছে আজ।”
একটা ছোট বাক্য কিন্তু যেন আকাশ ভেঙে পড়ল শোভার উপর।হাতের চামচটা পড়ে গেল মেঝেতে। কিছুক্ষণ নিঃশব্দ।দিজা যে শোভার ননদ ওপাশ থেকে অপেক্ষা করছে কিছু একটা শোনার জন্য।কিন্তু উত্তর পাচ্ছে না।
দর্শন ফরাজি শোভার স্বামী।শুধুমাত্র নামেই স্বামী।যাকে সে বিয়ের পর আর দেখেনি।বিয়ের পরের দিনই চলে গিয়েছিল চট্টগ্রাম তারপর খোঁজ নিয়ে শোনা যায় বাইরের দেশে।কোথায় জানেনা শোভা।না কোনো কথা,না কোনো মাফচাওয়া।শুধু বলে গিয়েছিল,“এই বিয়ে আমার ইচ্ছার ছিল না।একটা ভুল বুঝাবুঝি থেকে হয়ে গেছে।যদি আমি এই বাড়িতে না আসতাম তাহলে এতকিছু ঘটত না।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
শোভা তখন চতুর্দশী কন্যা।ছোট থেকে শিখেছে বিয়ে মেয়েদের জিবনে একবারই হয়।স্বামী হলেন মহান ব্যক্তি।অনেকে তো এটাও বলে স্বামীর পায়ের নিচে নাকি বেহেশত।শোভা এগুলো মানে মনে প্রাণে মানে।তবে বিয়ের দিনই দর্শনের থেকে এসব শুনে কিছুই বুঝতে পারেনি সে।শুধু জানত তার স্বামী তাকে এক নজরও দেখেনি।সমাজের লোকের দৃষ্টিতে ভুল বুঝাবুঝি থেকে বড় এক কাণ্ড ঘটিয়ে তাদের বিয়ে।তাই বলে তার সাথে কথা না বলে শুধুমাত্র ভুল বুঝাবুঝির কারণে চলে গেলো!অভিমান জমে আছে শোভার মাঝেও কিন্তু মূল্যায়ন করার কেউ নেই।তখনকার শোভা এখন আর নেই।বোকা,চুপচাপ আর একটুতেই কান্না করে দেওয়া।
শোভার ভাবনায় আসলো চার বছর আগের সেই রাত…
শোভা ঘরে একা ছিল।মা নাম শামীমা ক্যান্সারে আক্রান্ত ও ভাবী মিতু তখন অন্তঃসত্ত্বা।দুজনেই একঘরে গল্প করছিলেন।পারুল বেগম দর্শনের মা এসেছিল বান্ধবীর এই রোগের ব্যাপারে জানতে পেড়ে দেখা করতে।শোভা কোচিং করে ফিরেছে মাগরিবের একটু আগ দিয়ে।ক্লান্ত শরীর নিয়েও ঢুকতে হয় রান্নাঘরে।কিছু করার নেই।ভাবীকে তো এই অবস্থায় রান্না করতে দেওয়া যায়না।মিতু বলেছিলো,“আমি রান্না করি।”
কিন্তু শোভার বিবেকে জানায় ভাইয়ের অল্প টাকায় সচেতন থাকা জরুরি।এই রান্না করতে গিয়ে যদি দুর্ঘটনা ঘটে তখন হাসপাতালে গিয়ে আরো খরচ বাড়বে।এগুলো পারিবারিক শিক্ষা শোভার।কিভাবে হিসেবী হওয়া যায় এগুলো জানে ছোট থেকেই।তাই নিজের মত রান্না করে।রান্না শেষ করেই সবাইকে খাবার দিয়ে ঘাম ভেজা শরীর পরিষ্কার করার তাড়াহুড়ো জাগে।বাইরের গোসলখানা থেকে গোসল করেই ঘরে দৌড়ে আসে।যদিও জানে এই সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই তাও সে নিজের ঘরের দরজায় ছিটকিনি দিয়ে রাখে কিন্তু তাড়াহুড়ো করে ঠিকভাবে দেয়নি।উপর দিয়ে ছিটকিনি দিলেও জংধরা দরজায় ভালোভাবে না লাগানোর জন্যই নিচে নেমে আসে।আচমকা খুলে যায় কিন্তু শব্দ হয়না।সন্ধ্যায় বাড়িতে আসে দর্শন।তার মা পারুল বেগমকে নিয়ে যেতে হবে।দর্শনের জানামতে সোজা ঘরটায় শামীমা বেগম থাকেন।আগে থাকতেন কিন্তু এখন একটু বাতাসের জন্য কোনার ঘরে চলে গেছে।কোনার ঘরটায় গাছের ডাল দিয়ে টিনের উপরে ঢেকে রাখা।ঘরটা এজন্য ঠান্ডা থাকে।শোভা এখন মাঝের ঘরটাতে থাকে।তাই ভুল করে দর্শন,“মা আছেন?”
বলেই দরজার ফাঁকা স্থানে দাঁড়িয়ে থাকে পারুল বেগমের অনুমতির জন্য।ঠিক তখনই যখন শোভা জামা বদলাচ্ছিল।আচমকা পুরুষ কণ্ঠে ভয় পেয়ে শোভা চিৎকার দেয়।ওড়না ছিলো না গায়ে।পিছনের চেন খোলা ছিল।দরজার কোণায় জামা বদলানোর জন্য যখন ঘাবড়ে যায় সাথে সাথে টিনের গা ঘেসে দাঁড়িয়ে রইলো।কিন্তু অন্ধকার ঘর হবার কারণে কিছুই দেখেনি দর্শন বরং ভাবলো তার মা শুনতে পায়নি।কানে একটু সমস্যা আছে তার।তাই দরজাটা হাত দিয়ে একটু সরাতেই ভিতরটা অন্ধকার দেখে।দর্শন মাথা উঁচিয়ে বলে,“মা চলুন।”
শোভা ভয়তে কাপতে কাপতে পিছনে হাত দিয়ে চেন লাগিয়ে মাথায় দ্রুত কাপড় পেচায় কিন্তু কাপড় থাকে এলোমেলো।কোনমতে বলে ওঠে,“আপনি যাদের খুঁজতে এসেছেন ওরা এই ঘরে থাকেনা।এখন কোনার ঘরে থাকে।”
দর্শন এই কন্ঠ চেনে না।এই বাড়িতে এসেছে উঠান থেকেই পারুল বেগমকে নিয়ে গেছে।সন্ধ্যা করে আসা হয়না।এমনি শামীমা বেগম জানান এই ঘরটা তার।আজকে উঠানে কাউকে না দেখে ভাবলো এই ঘরের দুয়ারে এসেই ডাক দিবে।অচেনা কন্ঠ পেয়ে গরমে ঘামভেজা শরীরে বিরক্ত প্রকাশ করে বলে,“দুঃখিত আমি আপনাদের বাড়ির কোনো ঘর চিনি না।এটাই আমাকে আন্টি দেখিয়েছিল।ঘরটা কি দেখানো যাবে?”
শোভা পুরুষ মানুষের সামনে যায়না।শোভার ভাবী মিতুও যায়না।বাড়িতে দাওয়াত থাকলে ওরা রান্না করে দেয় শামীম গিয়ে পুরুষদের সাথে একসাথে খায়।অন্য ঘরে মেয়েরা একসাথে খায়।শোভা হুট করে পুরুষ মানুষ আসায় অনেকটা ঘাবড়ে যায়।উত্তর দিতে গিয়েও গলা কাপছে।স্কুল বা কোচিং শিক্ষকদের সাথেই মানিয়ে নিতে সময় লেগেছে তার।বান্ধবীরা বেশি সাহায্য করত।শামীম তো গার্জিয়ান হিসেবে গিয়ে জানিয়ে এসেছে শোভা কতটা ভীতু।তাই স্কুলে সমস্যা হয়না।এমনিতেও এক বখাটের বাজেভাবে উত্যক্ততার শিকার হয়ে আরো ঘাবড়ে যায়।তাই বড় বড় নিশ্বাস নিয়ে চতুর্দশী শোভা কথা বলতে নেয় কিন্তু পায়ের শব্দ পেয়ে ভাবছে,“লোকটা কি চলে গেলো?”
কারণ অনেকক্ষণ হলো শোভা উত্তর দেয়না।আসলেই চলে যায় দর্শন।শোভা উত্তর দেয়না দেখে রেগে নিজেই হাটা দিলো।কিন্তু কোনার ঘর যেদিক হিসাবে শোভা বলেছে সেদিক না উল্টো দিকে।দর্শন যে কোনার দিকে যায় ওটা রান্নাঘর।দরজার সামনে এসে কাউকে না পেয়ে নিজেকে শান্ত করে বের হয়ে চলে যায় রান্নাঘরের দিকে।দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে কিছু খায়নি।মিতু নামায পড়ছিল শোভা দেখে শামীমা বেগম না খেয়ে আছে।তাকে খাইয়ে দিতেই সময় পার হয়।স্কুল ছুটির ত্রিশ মিনিট সময় পরেই শোভার কোচিং।হাতে সময় নেই দেখেই দ্রুত চলে যায়।এখন ক্ষুধায় গা কাপছে।
দর্শন এই রান্নাঘরেই আছে।ফোনের আলো জ্বালিয়ে আসার কারণে বুঝতে পারে সে রান্নাঘরে এসেছে।রান্নাঘর ফাঁকা।পিছনে ঘুরতে নিবে কিন্তু কল আসায় নাম্বার দেখে রিসিভ করে।এটা দর্শনের ইম্পর্ট্যান্ট কল।নিজের ক্যারিয়ার শুরু করছে মাত্র।বিদেশী একটা কোম্পানি নিজেদের দেশে খুলতে চায় তাই কিন্তু সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল।আজ সেই সুযোগ হলো।কথা বলার জন্য ঢুকলো ফাঁকা রান্নাঘরটাতে।কথা বলা শেষ করে ঘাম মুছলো কপালে হাত রেখে।বিরক্তিতে শোভার উপর রাগ প্রকাশ করে কর্কশ কন্ঠে বলে,“ইডিয়ট মেয়ে একটা।ম্যানার্স জানেনা ঠিকমত।বাড়িতে কেউ নতুন আসলে তাকে তো ঘর দেখিয়ে দিতে হয় এই মেয়ে উল্টো চুপ থাকে।থাপরে গাল লাল করতে ইচ্ছা করে এগুলোকে।”
রান্নাঘরে ঢুকে এমন কিছু শুনে শোভা ঘাবড়ে যায়।দর্শন রান্নাঘরের এক কোনায় ফোনের আলো জ্বালিয়ে বকছে পিছনে একবারও তাকালো না।তাকালে দেখতো মেয়েটা তার পিছনেই আছে। শোভা কিছু বলতে নিবে দর্শন কল করে পারুল বেগমকে।কথা বলে যখন জানতে পারে ঘর কোনদিকে তখনই পিছনে ঘুরে হাঁটতে নেয় ওমনি শোভার পায়ের উপর পারা দিয়ে চলে যেতে নেয়।কিন্তু হঠাৎ উচু কিছুতে পা দেওয়ায় দর্শন নিজেই ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলে।শোভা পায়ে ব্যথা পেয়ে নিচু হতে নিলেই দর্শনের বুকের সাথে বারি খায়।একহাত দর্শনের কলার চেপে ধরে।কথা বলার সময় ফোনের লাইট বন্ধ হয়ে যায়।হঠাৎ কিছুতে পারা লাগার কারণে লাইট অন করতে নিবে নিজের বুকে ভারি কিছু পায়।লাইট জ্বালিয়ে দ্রুত সরে যায় দর্শন।
কিন্তু অনাকাঙ্খিত ঘটনার বাজে সাক্ষী দুজন প্রতিবেশী।তারা শেষ দৃশ্য দেখে ফেলে।তারাও এসেছিলেন এই বাড়িতে।হঠাৎ অচেনা পুরুষ মানুষ বাড়িতে এসেছে দেখে ওদেরও ব্যাপারটা জানার কৌতূহল জাগে।এসে এমন পরিস্থিতি দেখে ওরা নিকৃষ্ট কিছু ধরে নেয়।তারপর রটে যায়,“মেয়েটা তাহলে এমন!তাই তো বলি চুপচাপ শান্ত হয়ে চলাফেরা করে বোরখা পড়ে চলে আমাদের দেখলে মাথা নিচু করে কেন হাটে?ভিতরে ভিতরে এসব!”
ওরা আরো কিছু বলে যার কারণে দর্শন রেগে গিয়ে বলে,“মাথায় সমস্যা থাকলে ডাক্তার দেখাবেন কিন্তু হুট করে দেখে বাজে মন্তব্য করবেন না।আপনাদের মত মানুষদের জন্য মানুষের বদনাম হয়।”
মহিলা দুজন রেগে গিয়ে আরো কথা শুনালো।চিল্লিয়ে উঠে একজন।চিল্লাচিল্লি শুনে মিতু কোনমতে দৌড়ে রান্নাঘরের এসে শোভার উদ্দেশে বলে,“কি হলো তোমার?”
দর্শন অনেক আগেই বাইরে এসেছে।অন্ধকার বাইরের পরিবেশ থাকার কারণে একটা লম্বা চওড়া দেহ ছাড়া কিছুই বুঝতে পারল না মিতু।সেও চিৎকার দিয়ে বলে,“আপনি কে?’’
ওদিক থেকে শামীমা বেগম ঘর থেকেই জিজ্ঞাসা করেন,“কি হয়েছে বউমা?”
“বাড়িতে পরপুরুষ আম্মা।”
মিতু মাথায় কাপড় ভালো করে দেয়।মিতুর চিৎকার শুনে ছুটে আসে পারুল বেগম।ছেলের দেহের গঠন দেখে চিনে ফেলে কিন্তু কিছু বলার আগেই মহিলা দুজন আরো লোকজন এনে বাড়িতে জড়ো করে।তারা অর্ধেক দৃশ্য দেখেই লোক জানাজানি শুরু করে দিলো।বিশেষ করে শোভা জড়িয়ে ধরেছিল দেখে।সবাই এসে দেখলো একটা সুঠাম দেহের যুবক দাড়িয়ে আছে যে কিনা মিতুর সাথে কথা বলছে।মিতু এতক্ষণে জানতে পারল দর্শন কেন এসেছে কিন্তু এটা এলাকার লোকজন শুনতে পায়নি।শোভা গা মাথায় ভালোভাবে ওড়না পেচিয়ে বাইরে এসে মিতুকে জড়িয়ে ধরে ধীর কণ্ঠে বলে,“উনি কে ভাবী?”
মিতু জানাতে নিবে তার আগেই রটে গেলো মিথ্যা অভিযোগ।ধিক্কার জানালো শামীমা বেগমের শিক্ষার উপর।প্রায় অর্ধেক মানুষ চোখের দেখা মিথ্যাকে সত্যি বানালো।হাতে থাকা টর্চের আলো জ্বালাতেই শোভা মুখ লুকিয়ে দাড়ালো মিতুর পিছনে।সবার নজর দর্শনের দিকে।সেখানে উপস্থিত হয় এক বখাটে।যে একসময় শোভাকে উত্ত্যক্ত করত।সে এই রটনাটাকে আরও উস্কে দেয়।তার উদ্দেশ্য শোভার পরিবারকে হেয় করা।আর শামীমকে অপমান করা।কারণ শোভাকে উত্যক্ত করার কারণে শামীম ওকে একদিন বেধড়ক মারে।অনেক কথা কাটাকাটির পর সমাজ, লোকলজ্জা ও বদনামের ভয়ে এক রাতেই বিয়ে হয়ে যায় দর্শন আর শোভার।
দর্শন রেগে পারুল বেগমকে বলে ওঠে,“আমার জীবনটা যেন সিনেমার মত হয়ে গেলো!আমি এই বিয়ে মানিনা।আপনার জোরাজুরিতে বিয়ে করেছি নাহলে ওদেরকে মুখে থু মারতে আমার সময় লাগত না।আমি কালই চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি।তারপর বিদেশে চলে যাওয়ার জন্য এপ্লাই করবো।বিরক্ত এই সমাজের মিথ্যা অপবাদে।আজকের মত হেনস্থা আমি এই জীবনে হইনি।”
সেই কথা রাখে দর্শন।পরদিনই চলে যায় চট্টগ্রাম।তারপর দেশ ছেড়ে নিজের মত আলাদা ব্যবসা করতে।কিন্তু একা রেখে গেলো চতুর্দশী বধূকে।রাগকে বরাবর মূল্য দেয় দর্শন।এবারেও তার কোন ছাড় দিলো না।
বর্তমান…
চার বছর কেটে গেছে। শোভা এখন ভাই-ভাবীর সংসারে।অনেক শান্ত কিন্তু ভিতরে ভিতরে এক ব্যথা বয়ে বেড়ায়।সে মাত্রই জানতে পারল দর্শন ফিরছে।কিন্তু কি নিয়ে ফিরছে?রাগ?তাচ্ছিল্য?না কি শুধুই দায়িত্ব?আর শোভা?সে কি করবে?তার মনের মধ্যে জমে থাকা অশ্রু,অভিমান আর অবহেলার গল্প এবার নতুনভাবে শুরু হবে?শোভার নীরবতা দেখে দিজা বলে,“ও ভাবী আছো নাকি আবারো তোমার নেট গেলো?”
“উঃ!আছি আমি।তো তোমার ভাই হঠাৎ আসছে যে?”
“আমাদের বলেনি তো।আমি তো ভাইকে দেখেই তোমাকে জানালাম।তুমি আসবে তো এবার শশুর বাড়িতে?”
“মা কি চায়?”
“স্বামী যখন এসেছে মা তো চাইবেই বউমা আসুক।”
“তুমি এসব নিয়ে ভেবো না দিজা।মা নিশ্চয়ই ভালো কিছু চাইবেন।তিনি যেটা জানাবেন আমি তার উপর ভিত্তি করেই চলবো।”
“আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু তুমি কি খুশি না ভাইয়া আসাতে?”
“যাকে চিনিই না তার আসাতে খুশি হওয়া না হওয়ার কি আছে?”
“আচ্ছা আচ্ছা আমি তাহলে মায়ের সাথে কথা বলে দেখি।তোমাকে খুব মিস করি।”
শোভা মৃদু হাসলো।ননদ ভাবী একই বয়সী।যার কারণে দুজনের গল্প জমে বেশ।শোভা কিছুদিন শ্বশুরবাড়িতে ছিলো কিন্তু পারুল বেগম জানান,“তুমি ওই বাড়িতে গিয়ে থাকো।পড়াশোনা করতে থাকো আমি আছি তোমার পাশে।”
মূলত কথাটা দুটো কারণে বলা।স্বামী ছাড়া স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে কোনো নারী শশুরবাড়ি থাকতে পারেনা আর দ্বিতীয় কারণ দর্শনের ছোট ভাই দিদার আছে।পারুল বেগম বুদ্ধিমান মহিলা।তিনি চাননা স্বামী না থাকায় যেখানে দেবর আছে সেখানে বড় বউমা থাকুক।অনেক সময় এতে দৃষ্টিকটু পরিবেশ তৈরি হয়।এগুলো থেকে বাঁচতে নিজেদেরকেই সচেতন হওয়া জরুরী।