বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ১২

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ১২
ইশরাত জাহান

সকালবেলা ফজরের নামাজ পড়ে এসে দর্শন সোফায় গিয়ে বসল।সঙ্গে বসেছেন দাদাজান এবং বাড়ির অন্য পুরুষেরা।চারপাশে নীরবতা শুধু দেয়ালঘড়ির কাঁটার টিকটিক শব্দ।দর্শন দুই হাত এক করে বসে রইল।মনে মনে ভাবছে কীভাবে শুরু করবে কথা।কিছুক্ষণ চিন্তা করে অবশেষে সরাসরি বলেই ফেলল,“আমি দুদিন পর ঢাকায় যাচ্ছি।”

দাদাজান কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,“এত তাড়াতাড়ি?কী এমন কাজ পড়ল?”
দর্শন শান্ত গলায় উত্তর দিল,“ব্যবসার কাজে যেতে হচ্ছে এছাড়া দিজার পরীক্ষাটাও তার পরদিন।যেতে তো হবেই।”
দাদাজান কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন,“তাহলে শোভাকেও নিয়ে যাও সঙ্গে।ওরও তো পড়ালেখা আছে।”
দর্শন কপাল কুঁচকে বলে,“আমি ওকে ঢাকায় নিয়ে যাবো কেন?একমাস হয়ে গেলে যেখানে আমাদের মধ্যে আর সম্পর্ক থাকবে না,সেখানে ওকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার প্রশ্নই আসেনা।ওর দেখভাল আমি করতে পারব না।”
“যতদিন কাগজে কলমে তোমরা স্বামী স্ত্রী,ততদিন তোমাদের একে অপরের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য স্থির।মেয়েটা তোমার আমানত।তিন কবুল বলে যাকে জীবনসঙ্গী করা হয় তার দায়িত্ব বহন করতে হয়। কারা মুখ ফিরিয়ে নেয় জানো?যারা কাপুরুষ তারা।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“দাদাজান!”
“চিৎকার করবে না।গলা আমারও আছে।আমি হইলাম ফরাজি বংশের ছোটপুত্র।আদর যেমন পেয়েছি দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতাও রেখেছি।পুরুষ মানুষ হয়ে কিভাবে পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় এটা আমার মধ্যে বজায় আছে।তুমি প্রত্যেকবার সম্পর্ক এড়াতে পালাবে আমি চুপ করে দেখে যাবো এটা হবেনা।”
“একটু ভেবে দেখো দাদাজান।ওই মেয়েটা..
“শোভা বলো নাহলে আমার মতো করে ডাকতে পারো।আমি যেমন তোমার দাদীজানকে ডাকতাম ওগো গিন্নি আমার বলে।”

হেসে দিল দিদার।তবে এবার দাদাজান সিরিয়াস মুখে আছেন।গাম্ভীর্য তার মধ্যেও ফুটে উঠেছে।দর্শন বিরক্তিতে বসে থাকতে পারলো না।উঠে যেতে নিবে দাদাজান তার হাতের লাঠিটা দিয়ে দর্শনের সামনে রাখেন।দর্শন কিছু বলতে নিবে দাদাজান বলেন,“আমার বন্দুক আনতে হবেনা নিশ্চয়ই।”
“ওটা তুমি শুধু দেখাতেই পারবে ব্যাবহার করতে পারবে না।অযথা ব্ল্যাকমেইল করো না।”
দাদাজান একটু বিব্রত হলেন তবুও নিজেকে সামলে বলেন,“তো যেটা বলছিলাম।পুরুষ হয়েছো জেন্টেলম্যান দেখতে মাশাআল্লাহ সব ঠিক কিন্তু বউকে দেখে রাখার বেলায় একটু কমতি রাখছো।বিষয়টা দুঃখজনক একজন স্বামী তার বউকে যত্নে রাখতে পারেনা।নিজের মানসম্মান না খেয়ে মেয়েটাকে নিয়ে সংসারে মনোযোগী হও।নিজের বউকে সম্মান দেও আল্লাহর রহমতে নাতির ঘরে পুতি দেখার সুযোগটা আমাকে করে দেও।আর….
বলতে পারলো না।শোভার হাত ফসকে চায়ের কাপ পড়ে গেছে।

“দাদাজান এগুলো কি বলছেন?”
ভেবেই থমকে দাঁড়িয়ে আছে শোভা।মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।কেউ দেখতে পাবেনা অবশ্য। লাজুকতার সাথে চলে গেলো রান্নাঘরের ভিতর।দর্শন বিকট শব্দ করে লাথি দিলো সোফায়।দাদাজান একটু কেঁপে উঠলেন তবুও বলেন,“ভয় পাইনা আমি এসবের।তোমার বাবার বাবা আমি।আমার দম সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণা নেই।”
“আমার তোমার দম নিয়ে ধারণা করার ইচ্ছা নেই।যে সম্পর্ক এগোনোর চেষ্টায় আমি নেই সেই সম্পর্ক তুমি জোর করে একেকরূপ দেও।বিরক্ত লাগছে আমার।”

“ভালো লাগার অনুভূতিটা আনলে কিন্তু বিরক্ত লাগেনা।”
“দাদাজান প্লীজ আমাকে বোঝার চেষ্টা করো না।”
“তোমাকেও বুঝি সাথে তোমার ভবিষ্যৎ।অতকিছু জানিনা আমার নাতবউ তোমার সাথে একমাস সংসার করবে এটাই জানি শুধু।তার জন্য তুমি তাকে ঢাকায় নিয়ে যাও নাকি তার জন্য তুমি যশোরে থাকো এটা তোমার ব্যাপার।”
“ওকে ফাইন।মেয়েটাকে রেডি থাকতে বলো।দুদিন পর ট্যাব।”
“আরো একটা কথা ছিল।”
“আবার কি?’’

“দিদারের জন্য মেয়ে দেখতে যাচ্ছি।তুমি কি যাবে সাথে?”
দর্শন চোখ বড়বড় করে বলে,“বয়স কত ওর?”
“বিয়ের বয়স ছাড়িয়েছে।তাছাড়া পাত্র রাজি তুমি বড় ভাই হয়ে দ্বিমত করবে না।”
“ওর ক্যারিয়ার?”
“ঘাস কাটবে ক্যারিয়ার দিয়ে।তুমি দুটো কোম্পানি খুলে কি উদ্ধার করলে শুনি?আমাদের পারিবারিক ব্যবসা তো এখন ওর।ওই নাহয় বউ আর পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে দিন কাটাক।”
“বউ আসার পর ছেলেদের লাইফ যে কেমন যায় এটা তো আমি বুঝতে পারছি।তাই বড় ভাই হিসেবে আমি সাজেস্ট করবো সুখে থাকতে কপাল না পুড়ানো উত্তম।”

“তোমার সঙ্গে থেকে তো তার কপাল পোড়ানোর কথা।তোমার পুড়লো কেন?”
দর্শন আর বাক্য ব্যয় না করে হাটা শুরু করে।শোভা রান্নাঘর থেকে দেখে দিজাকে উদ্দেশ্য করে চায়ের কাপ দেখিয়ে বলে,“তোমার ভাইকে এটা দিয়ে আসো।”
দিজা তাকালো পারুল বেগমের দিকে।পারুল বেগম ইশারায় না করলেন।দিজা হামি তুলে বলে,“আমি নিজেই তো চা খেতে পারলাম না।তুমি ভাইকে দিয়ে আসো।আমার ঘুমঘুম ভাব কাটছে না।”
বাধ্য হয়ে শোভা চলে যায়।সিঁড়ি দিয়ে উঠবার সময় দুরুদ শরীফ ও আয়াতুল কুরসী পাঠ করে।বলা তো যায়না আবারও কোন শয়তানে ভর করে।
ঘরের মধ্যে এসে শোভা দেখলো দর্শন ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে।শোভা চায়ের কাপটা পাশে রেখে বলে,“আমি বানাইনি।আম্মা বানিয়ে দিয়েছে।”

দর্শন চোখ তুলে চাইলো।শোভা সুতির হিজাব পরে আছে।কোনো কথা না বলে চুপ করে কাপ হাতে নিয়ে চুমুক দিলো।শোভা গোসলের জন্য যেতে নেয়।দর্শন ল্যাপটপের দিকেই চোখ রেখে বলে,“তুমি কোন বিভাগে ইন্টার করেছো আর রেজাল্ট কি?”
শোভা কাপড় হাতে নিয়ে দর্শনের দিকে ফিরল।প্রশ্ন করে,“এসব দিয়ে কি করবেন?”
“কেন তুমি শোনোনি দাদাজান কি বলল?”
“না।”
“হাত থেকে চায়ের কাপ পড়েছিল তখনই তো বলেছিলো।”

“আমি তো ওখানে গিয়েই ওমন কথা শুনে দৌড়ে আসি।বাকি কিছু তো শুনিনি।”
দর্শন হাঁফ ছেড়ে বলে,“তোমাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।দিজাও যাবে তাই তুমি আশা করি আনকমফোর্ট ফিল করবেনা।আমিও তোমাকে ভার্সিটিতে ভর্তি করিয়ে দিব কিন্তু কথা হলো একমাস আমার দায়িত্বে থাকলেও এরপর কি করবে?”

শোভা দর্শনের চোখের দিকে চেয়ে আছে।মনে মনে ভাবছে,“নারীদের এতটাই ঘৃণা করেন যে নারীদের কোন কথাতে আঘাত লাগে এটা মাথায় নেই।তবে আমিও হার মানব না।এই নারীই আপনার বিশ্বাস ফিরিয়ে দিবে।”
গলা ঝেড়ে বলে,“আগে দায়িত্ব ঠিকমত পালন করুন।সময় শেষ হলে তখন ব্যাপারটা আমার একার হয়ে যাবে।আমি নাহয় তখন ভেবে দেখব কি করা যায়।এখন আপনার হেফাজতে থাকতে চাই শুধু।”
বলেই গোসলের জন্য চলে গেলো।দর্শন শেষ কথাটুকু শুনে থমকে গেলো।“এখন আপনার হেফাজতে থাকতে চাই শুধু।”কথাটার মধ্যে অধিকারবোধ ছিলো।দর্শন চেয়ে আছে দরজাটার দিকে।ভাবছে শোভার মধ্যে আলাদা গুণ আছে।আর চার পাঁচটা আধুনিক মেয়েদের মত সে না।

গোসল সেরে শোভা বাইরে আসে।দর্শন শব্দ পেয়ে চোখ তুলে তাকায়।শোভাকে দেখতে মন চাইছে হঠাৎ। কাল শোভাকে স্নিগ্ধ রূপে দেখে চেয়ে ছিলো খানিক সময় ধরে।আজকেও চায় দেখতে কিন্তু মস্তিষ্ক অন্যকিছু জানান দেয়।না করে দেয় এই মস্তিষ্ক।শোভাকে দেখার জন্য মন টানলেও মস্তিষ্ক বাঁধা সৃষ্টি করে।শোভা কাপড় নাড়তে নাড়তে বলে,“আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্লাই করেছি।দাদাজান আগেই বলেছিলেন তাই।বইগুলো দাদাজান আপনার কোন বন্ধুর সাথে কথা বলে কিনে দেয়।দিজা আপুর সাথে আমারও ভর্তি পরীক্ষা আছে।
দর্শন চুপ করে শুনল।হাতে মোবাইল নিয়ে ব্যালকনিতে যায় শোভা।কল দেয় শামীমের কাছে।শামীম ধরতেই শোভা সালাম দেয়,“আসসালামু আলাইকুম, ভাইয়া।”

“ওয়ালাইকুম আসসালাম, কেমন আছিস বোন?”
“আলহামদুলিল্লাহ,আপনি?”
“আলহামদুলিল্লাহ,কয়েকবার কল দিয়েছিলাম ধরিসনি কেন?”
“মোবাইল ঘরে ছিল।আমি বাইরে ছিলাম ভাইয়া।তোমরা বাসায় এসেছো?”
“না,কালকে যাবো।কিছু হয়েছে কি?”
“হয়নি কিন্তু একটা খবর আছে।”
“কি খবর?”
“আমাকে ঢাকায় নিয়ে যাবেন উনি।ঢাকায় ভার্সিটিতে ভর্তি করাবেন।”

শামীম খুশি হয়।আনন্দে মুখে হাসির রেখা দেখা দেয়।মিতু রুটি বেলে আর দেখে হাসি।মিতুর মাও আছে পাশে।শামীম খুশি হয়েই বলে,“এটা তো আনন্দের কথা।আমার তো খুব ইচ্ছা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো কিন্তু আমার কপাল তো সায় দিলো না।তোর ভাগ্য খুলেছে বোন।তুই সুখে থাক।আমি খুব খুশি তোর জন্য।আমি স্বপ্ন পূরণ না করি আমার বোন তো করবে।”

শোভার চোখ চিকচিক করে।ওপাশ থেকে মিতুও চেয়ে আছে স্বামীর দিকে।এই লোকটার তাহলে স্বপ্ন বলেও কিছু ছিল।মনের মধ্যে চাপিয়ে রেখেছে সবকিছু।বোকা বোকা ভাব নিয়ে চলা এই লোকটার মধ্যেও গেঁথে আছে হাজারও স্বপ্ন।শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছলো।মিতুর মা লক্ষ্য করেও কিছু বললেন না।এগুলো গরিবের ভাগ্য।এগুলোতে তারা আরো বেশি অভ্যস্ত।লোকমুখে বড় বড় অট্টালিকার কথা শুনে নিজেরা থাকবে টিনের নিচে।এগুলো এখন সয়ে যায়।নিজের মত সবজি কুটছেন।শামীম চোখ মুছে বলে,“কবে যাবি?”

“দুইদিন পর যাবো।”
“এত তাড়াতাড়ি!এখনও তো আমরা জামাই আদর করতে পারলাম না।কাল বাড়ি যাবো।তোরা বিকালবেলা আসবি।বোন জামাইকে আদর না করলে তো হয়না।”
শোভা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,“তুমি জানো না ভাইয়া।অট্টালিকায় থাকা পুরুষ মানুষ কি আমাদের ওই ছোট্ট ভিটে পছন্দ করবেন?নাকমুখ কুঁচকে আসতে পারে।”
ঘর থেকে শুনল দর্শন।কপাল কুঁচকে আসলো।শামীম আহত হয়ে বলে,“আসবে না একটা বেলার জন্য?”
শোভা ইচ্ছা করে গলা উঁচিয়ে বলে,“তুমি এক রাতের কথা বলছো?ওনার মত বদমেজাজি যে মানুষকে বুঝেই না খালি ভয়তে পালায় সে আবার শ্বশুরবাড়ি যাবে কিনা একরাত জামাই আদর খেতে!উনি তো ভীতুর ডিম।পারবে খালি পালাতে আরএড়িয়ে যেতে।”

শামীম মুখটা বেকিয়ে বলে,“আমি তো একদিনের কথা বলেছি।”
“আমি জানি ভাইয়া।আমি ইচ্ছা করে বলছি।”
বিড়বিড় করে বলে বুঝিয়ে দিলো শামীমকে।শামীম এখনও কিছু বুঝলো না।শোভা চেঁচিয়ে বলে,“শোনো ভাইয়া আমার একটা ভীতু ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়েছে।পারে তো শুধু রাগ দেখাতে।উনি কোনো পরিবেশের সাথে মিলিয়ে থাকতেই পারেনা।ওনার মধ্যে সেই ধরনের কোনো সাহসিকতা নেই।সাহস যদি থাকতো তাহলে দেশ ছেড়ে পালাত না।সে যাই হোক এই ভীতু ব্যক্তি আমাদের বাসায় যাবেই না।কারণ সে ওখানে থাকতে ভয় পায়।”
খট করে একটা শব্দ হলো।দর্শন উঠে দাড়িয়ে বলে,“মুখ সামলে কথা বলো।”

“সত্যিই বলছি।”
“আমার সাহস নেই তাই না?”
“নেই তো।বিয়ের প্রথমেই বুঝিয়েছেন।”
“তোমার সাহস আছে?”
“আছে বলেই তো আপনার মত একটা বাঘের সাথে সংসার করার নিয়ত রেখেছি।”
“তুমি যদি এটাকে সাহস বলে দাবি করো তাহলে আমিও কাল আমার সাহস দেখিয়ে দিবো।একটা রাতের ব্যাপার তো?কালকে যাবো তোমাদের বাসায়।দেখি কেমন সাহস দেখাতে হয়।”
শোভা মুখ টিপে হেসে শামীমকে আস্তে করে বলে, “কাল বিকালে আমরা যাবো ভাইয়া।”

“আচ্ছা বোন আর শোন!”
“হুমম?”
“স্বামীর সাথে এমন গলা উঁচিয়ে কথা বলতে নেই।মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে কথা ওঠে।”
মিতু হাতের খুন্তি উঁচিয়ে বলে,“আসছে আমার জ্ঞানের স্বামী রে!বোনকে দমিয়ে থাকতে বলো না।স্বামীরা যে একেকটা মাইনকা ওদের জন্য গলা উঁচিয়ে রাখতে হয়।”
শামীম শুকনো ঢোক গেলে।বোনকে পরামর্শ দিতে গিয়ে বউয়ের থেকে উল্টো কথা শুনলো।শোভা মুখ টিপে হেসে বলে,“আচ্ছা ভাইয়া রাখি তাহলে,আল্লাহ হাফেজ।”
“আল্লাহ হাফেজ।”
কল কেটে শোভা বাইরে এসে বলে,“আপনি যাবেন তো নাকি মাঝপথে পালাবেন?”
“আমি মাঝপথে পালাই না।”
“আমার জীবনের চারটা বছর তাহলে কি হলো?”

“পরিস্থিতি এমন ছিলো।এছাড়া আমাকে বাইরে যেতেই হতো।আমার স্বপ্ন পূরণ করতে।”
“আচ্ছা,বুঝলাম।আমি কমার্সের ছাত্রী।রেজাল্ট আল্লাহ রহমতে ভালই এ প্লাস হয়েছে।”
বলেই আয়নার সামনে আসলো।একটু ভেবে পিছনে ফিরে বলে,“আপনি গোসলে যাবেন না?”
“কেন?”
“না,এমনি।”
আসলে শোভা চুল আঁচড়াবে।কখনও কারো সামনে চুল মেলেনি।এখন একটু অসস্তি হচ্ছে।তবুও মনকে বলে,“স্বামী হয় তোর।খুলে ফেল চুল।”

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ১১

বলেই মাথা থেকে কাপড় সরিয়ে চিরুনি হাতে নেয়।দর্শনের চোখ আটকে গেলো।হাঁটু ছাড়িয়ে যাওয়া চুলগুলো দেখলো দর্শন।শোভা নিচের চুলগুলো হাত দিয়ে উচিয়ে জট ছাড়াতে থাকে।দর্শন পিছন থেকে দেখতে থাকে।চুলগুলো জট ছাড়িয়ে যেই পিছনে ঝাড়া দিয়ে ছেড়ে দেয় ওমনি চুলের ভাজে থাকা পানির ছিটা লাগে দর্শনের মুখে।হালকা এক সুবাস পায়।কিন্তু পরক্ষণেই একটা চুল নাকে এসে লাগাতে হাঁচি দিতে শুরু করে।একের পর এক হাঁচি দিয়ে যাচ্ছে।শোভা পিছন ঘুরে বলে,“কি হলো আপনার?”
“তোমার চুল আমার নাক অব্দি এসে ডিস্টার্ব করছে।”
শোভা মুখ বেঁকিয়ে হিজাব পরে চলে গেলো।মনে মনে বলে,“আস্ত এক নিরামিষ।”

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ১৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here