বুনো ওল বাঘা তেঁতুল পর্ব ৯

বুনো ওল বাঘা তেঁতুল পর্ব ৯
রোজা রহমান

ভোর ছয়’টা। ড্রয়িং রুমে বসে জাকির মালিথা, জাহিদ মালিথা সহ বাড়ি কিছু ছোট সদস্যরা চা,কফি খাচ্ছে। টুকটাক গল্প করছে। জাহিদ মালিথা বললেন,
” তুষার..! কাজ কেমন চলছে থানায়? কোনো সমস্যা হচ্ছে?”
” না চাচু সমস্যা হচ্ছে না। ভালো চলছে। একটা নতুন কেচ হাতে এসেছে। কুমারখালি থেকে। সেটার তদন্ত চলছে৷ একটু জটিল তবে চেষ্টা করছি জলদি শেষ করার। ”
” আচ্ছা বেস্ট অফ লাক৷ আমি জানি তুমি পারবে। ”
” থ্যাঙ্কিউ চাচু। ইনশাআল্লাহ সর্বশেষ চেষ্টা করব। এছাড়া আমি তোমার-ই তো ছেলে!”
উত্তরে জাহিদ মালিথা পাশ থেকে তুষারের কাঁধ চাপড়ে মুচকি হাসলেন। তুষারও হাসল। জাকির মালিথাও দেখে সন্তুষ্টির হাসি হাসলেন। ছেলেগুলো সব দায়িত্ববান হয়েছে।

সকালে খাবার টেবিলে মালিথা বাড়ির সকলে খাবার খাচ্ছে। তিন জা পরিবেশন কাজে আছে। বাড়ির বউ বৃষ্টিও সকলের বসেই খায়। শাশুড়ীরা-ই নির্দেশ দিয়েছিলেন শুরু থেকে সকলের সাথে খাবার জন্য। তাই সে-ও বাড়ির মেয়েদের মতোই সকলের সাথে বসে খায়।
আজ এখন অবধি খাবার নিরবেই খাচ্ছে বাড়ির দু’টো হাম সেপাই। এই জন্য পরিবেশ একটু নিরবই আছে বটে। তবে নীরবতা কি এদের মাঝে বেশি ক্ষণ থাকে? উহু কখনো থাকে না। এদের দেখলেই নীরবতা উস্কানী দেয়। তাই খাবার খেতে খেতে শিশির লক্ষ্য করল কুয়াশা ঘুমে ঢুলছে আর খাবার চিবচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে ফেলল৷ রাতে কি করেছে এই এ? যে এখন ঢুলছে? অবশ্য ঈশাদের ওখান থেকে আসতে আসতে এগারটা বেজেছিল তবুও ততটাও তো দেরি হয় নি যার জন্য ঢুলতে হবে! রাত জেগে বয়ফ্রেন্ডের সাথে গল্প করেছে নাকি? এই বয়ফ্রেন্ড শব্দটা মাথায় আসতেই রাগ উঠল তার। কতত বড় সাহস! এতটুকুকালে বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে তার সাথে আবার রাত জেগে গল্প করে এখন ঢুলছে! খাবার চিবিয়ে রূঢ় কন্ঠে শিশির বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” রাতে কার বাড়ি চুরি করতে গেছিলি? যে এখন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে খাচ্ছিস? ”
সবাই তাকাল শিশিরের কথায়। কথাটা কাকে বলল বুঝতে উৎস খুঁজল। দেখল কুয়াশার উদ্দেশ্যে বলেছে। খেয়াল করে দেখল সবাই যে কুয়াশার চোখ লাল হয়ে আছে আর ঘুম যে চোখে এটাও বোঝা যাচ্ছে। কুয়াশা কিছুটা অপ্রস্তত হলো তবে শিশিরের কথায় রাগ হলো। আচানকই রাগ হলো। এ ছেলে যা-ই বলে তাতের রাগ উঠে তার। সব সময় লাগার জন্য ওকেই নোটিশ করবে। অসহ্যকর একটা৷ উত্তর দিতে বলল,
” চুরি কেন করতে যাব? রাতে ঘুমতে একটু লেট হয়েছিল। ”
এই পর্যন্ত বলে এবার একটু আঁটকে আঁটকে কন্ঠে বলল,

” পড়তে ছিলাম ”
ডাহা মিছা কথা এটা৷ আসলে সে পড়তে বসে নি। কাল রাতে বাড়িতে আসার পর অয়ন কল করে জোর দিয়ে রাত দু’টো অবধি কথা বলেছে। যদিও সে বলতে চায় নি। অয়ন ছেলেটা খুবই জোর করছিল। উপায় না পেয়ে শেষ অবধি বলতে হয়েছে।
শিশির ওর বেঁধে যাওয়া কন্ঠ ধরতে পারল। সন্দেহ তাহলে ঠিক!! খবর করবে একটু পর। বাবারা আগে যেয়ে নিক। ভাবল কথাগুলো শিশির।
কুয়াশা আজমিরাকে বলল,

” আম্মু আমি আজ কলেজে যাব না। খুব ঘুম পাচ্ছে ঘুমোব৷ ”
আজমিরা তেমন কিছু বললেন না। এমনিতে কলেজ বেশি মিস দেয় না কুয়াশা আর পড়াশোনায়ও ফাঁকি দেয় না কখনো। এ দিক দিয়ে সে খুবই আগ্রহী। পড়াশোনার ব্যাপারে সে খুব হুশিয়ারি।
শিশির কুয়াশার কথা শুনে বলল,
” আমিও যাব না ”
কুয়াশার ভ্রু কুঁচকে গেল। মেজাজটাই সব সময় চড়িয়ে দেয় এটা। লেজ ধরে থাকবে সব সময়। তার না যাবার কারণ কি? নিশ্চয়ই সে যাবে না বলে যাবে না! যাতে আজ সারাদিন পিছে লাগতে পারে। মনে মনে কথাগুলো ভেবে নিয়ে বিড়বিড়াল,

” মনটাই চায়! আসিস লাগতে পিছে। সেদিনের অপমান এখনো ভুলি নি আমি ”
বিড়বিড় করতে করতে বৃষ্টিকে বলল,
” ভাবি আলু ভাজির বাটিটা দাও তো ”
যেটা শিশিরের সামনে ছিল আর বৃষ্টি শিশির মুখোমুখি বসা৷ তার ডান পাশে চেয়ারে কুয়াশা। শিশির তা শুনে আলু ভাজির বাটিটা এক প্রকার কেঁড়ে নেবার মতো করে নিয়ে নিল। এরপর বাটিতে যা ছিল সব একবারে ঢেলে নিল পাতের উপর। যদিও অল্পই ছিল কিন্তু তবুও ওতগুলো ভাজির প্রয়োজন ছিল না ওর। বিষয়টা বড়রা দেখেও না দেখার ভাব ধরল৷ তারা আপন মনে খাচ্ছে। জাকিয়া ছেলের কাণ্ডে বিরক্ত হলো। আর কুয়াশা রাগে ফেটে পরল। কিরকম বেহায়া!! রাগ নিয়ে বলল,
” এটা কি হলো? সব ঢেলে নিলে কেন? আমি নিব বলে চাইলাম তুমি দেখলে না? ”
” আমার লাগবে তুই দেখছিস না? ”
শিশিরের কথায় ওর পাতে নজর দিল। দেখল কখনো অত ভাজির প্রয়োজন ছিল না। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,

” অতটার প্রয়োজন ছিল তোমার? ”
শিশির কিছু বলতে যাবে জাকির মালিথা বিরক্ত হয়ে বললেন,
” কি হচ্ছে কি? এমন ব্যবহার কেন তোমাদের। খাবার সময় কি শুরু করেছ?”
শিশিরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
” আর তুমি সবসময় ওকে নাড়ো কেন? এসব কি ধরণের অভ্যাস? ”
শিশির আপন মনে খাচ্ছে কোনো প্রত্যুত্তর করল না বাবার কথায়। বৃষ্টি বলল,
” কুশু অপেক্ষা করো আমি এনে দিচ্ছি ”
আজমিরা বৃষ্টিকে বললেন,
“তুমি বসো মা, আমি এনে দিচ্ছি ”
আজমিরা যেতেই কুয়াশা শিশিরের দিকে তাকাল আর বিড়বিড় করতে করতে ওর চোদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করতে লাগল। শিশির ওর বিড়বিড়ানো খেতে খেতে দেখল। তা দেখে নিয়ে খেতে খেতেই হাসল মিটিমিটি করে।
জ্বালাতে পেরে শান্তি শান্তি লাগছে তার। এর মাঝে আজমিরা ভাজি এনে দিল কুয়াশাকে। সে নিয়ে আবার খাওয়া ধরল।
খেতে খেতে জাহিদ মালিথা সবার উদ্দেশ্যে বললেন,

” আমি ঈদের আগে আর আসব না। একেবারে ঈদের ছুটি নিয়ে চলে আসব। এমনিতেও দেরি নেই বেশি। তোমরা সবাই মিলে সব কিছুর আয়োজন করে নিয়ো। ”
এরপর একটু থেমে বড় ভাইকে বললেন,
” ভাই কোরবানিও কিনে ফেলো। তুষার, তুহিনকে সাথে নিয়ে। ”
উত্তরে জাকির মালিথা বললেন,
” আচ্ছা দেখা যাবে। দেখে শুনে থাকিস, নিজের খেয়াল রাখিস ”
মুচকি হাসলেন জাহিদ মালিথা। ভাই তার এখনো সেই আগের মতোই আছে৷ সেই ছোট থেকে আগলে রাখে এখনো তেমনি। ভাবে তার ভাই এখনো সেই ছোট্টটি আছে। অথচ দিন আস্তে আস্তে ফুরিয়ে আসছে সেসবের খেয়াল নেই। কথাগুলো আপন মনে ভেবে দীর্ঘ একটা শ্বাস নিলেন। খাবার মুখে নিতে নিতে উত্তর দিলেন,

” আচ্ছা ভাই থাকব আর নিজের খেয়ালও রাখব। ”
মুখের খাবার চিবিয়ে আবেগ মাখা কন্ঠে আবার বললেন,
” ভাই..! আমি কি এখনো সেই তোমার ছোট্ট জাহিদ আর আছি? ”
জাহিদ মালিথার কথায় জাকির মালিথা সহ সবাই-ই থমকে গেল। জাকির মালিথা ভাইয়ের দিকে অসহায় নজরে তাকালেন। ভাই যে তার ছোট নেই আর তিনিও যে আর সেই আগের বয়সে নেই খেয়ালে এলো। কম তো আর হলো না বয়স৷ অর্ধেকের বেশি বয়স চলে গেছে৷ সেই বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে দুই ভাইকে আগলে রাখতেন। একটা ভাইকে তো অকালেই হারালেন দুর্ঘটনায়। যেদিন ছোট ভাইটা চলে গেল সেদিনের কথা মনে উঠলে এখনো দম আঁটকে আসে৷ পুরোনো ঘা তাজা হতেই চোখটা ভিজে এলো সাথে বুকে ব্যথা অনুভব হলো। জাকির মালিথা বললেন,

” তোরা কেউ-ই আমার কাছে বড় হবি না। সেই আগের মতোই থাকবি৷ যতদিন বাঁচব আগলে রাখব তোদের। শুধু আমার দূর্ভাগ্য জাহিনটাকে আমি আগলে রাখতে পারলাম না। আমার ছোট ভাইটা অভিমান বুকে করেই বোধহয় চলে গেছে।”
জাকির মালিথার কথায় সেখানে পিনপতন নীরবতায় ছেয়ে গেল। আজমিরা বেগমের চোখে পানি টলমল করতে দেখা গেল। আর কুয়াশার বাবার কথা শুনতেই বাবার কথা মনে উঠে জোরে জোরে কেঁদে দিল খাবার মাঝেই। সকলকেই বিচলিত হতে দেখা গেল। জাকির মালিথা, জাহিদ মালিথা বুঝলেন ভুল সময় ভুল কথা তুলে ফেলেছেন৷ অন্তত খাবার সময় পুরোনো কথা তোলা উচিত হয় নি। কুয়াশার কান্না দেখে সকলে ওকে থামাতে ব্যস্ত হয়ে গেল৷ হিমেল যদিও বাবার সঙ্গ বেশি পায় নি তবুও তারও প্রচুর কান্না পেল বোনের কান্নাতে আরো বেশি কষ্ট হতে লাগল।

আম্বিয়া , জাকিয়া তড়িঘড়ি করে কুয়াশার কাছে এগিয়ে এসে ওকে থামাতে লাগল। আজমিরা বেগমের চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি পড়ছে৷ আজকের সকালটা খারাপ হয়ে গেল পুরোনো স্মৃতি সরণে এসে। বৃষ্টি খাবার রেখে উঠে এলো কুয়াশার কাছে। তুষার, তুহিন, নীহার একের পর এক বলে যাচ্ছে শান্ত হতে।
আর শিশির? সে চোখ লাল করে শুধু চেয়ে আছে। ছোট চাচুকে সে বেশি ভালোবাসত। ছোট চাচুও তাকে অনেক আদর করত। কত আবদার পূরণ করত। যেদিন চাচু লা-শ হয়ে এলো সেদিন বাঁধ ভাঙা কান্না করেছিল। তাকে আঁটকে রাখা দায় হয়ে গেছিল।
জাহিদ মালিথা নিজের ভুল টা বুঝতে পেরে কুয়াশাকে থামাতে একটু কড়া কন্ঠে-ই বললেন,

” আহ কুয়াশা মামনি..! খাবার সময় কাঁদছ কেন? কান্না থামাও। ”
কুয়াশা একটু শান্ত হলো চাচুর কথায়। জাকির মালিথা বললেন,
” কুহেলি মা, কাঁদে না। আমারই ভুল হলো এ সময়ে এসব কথা বলে। মা আমার বড় চাচুর কাছে এসো। আমরা আছি তো তোমার জন্য। ”

বড় চাচু গম্ভীর মানুষ হলেও কথা বলেন খুব মিষ্টি করে। কুয়াশাকে নিজের ছেলেদের থেকে বোধহয় বেশি ভালোবাসেন। মেয়ে তো নেই। এই মেয়েটাই সব। কুয়াশা বড় চাচুর ডাকে উঠে গেল। জাকির মালিথা আদর করে পাশের চেয়ারে বসিয়ে আলত করে মাথাটা বুকে নিলেন। তারপর শান্ত করতে নানান কথা বলে শান্ত করলেন। কুয়াশা শান্ত হয়ে এলে নিজের পাত থেকে খাবার তুলে মুখের সামনে ধরলেন। কুয়াশা কান্নার জের ধরে এখনো ফুঁপাচ্ছে। ফুঁপাতে ফুঁপাতে খাবার মুখে নিল। জাহিদ মালিথা আর খেলন না৷ উঠে পরলেন৷ খাবার মুখে গেল না আর। উঠে তিনি হাত মুখ ধুয়ে কুয়াশার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে কিছু সান্ত্বনাবাণী দিলেন। তারপর কুয়াশার কপালে একটা চুমু দিয়ে বললেন,

” মন খারাপ করো বা মামনি আমরা সবাই তোমার ছাঁয়া৷ ”
এরপর সকলের উদ্দেশ্যে বললেন,
” আসছি আমি। দেখে শুনে থেকো সবাই। ঈদের ছুটি পেলে চলে আসব। ততদিন সব কিছু গুছিয়ে নিয়ো ”
সবাই সম্মতি দিলে তিনি বেড়িয়ে গেলেন৷ আম্বিয়া বেগম পিছনে গেলেন গেইট অবধি এগিয়ে দিতে স্বামীকে।
জাহিদ মালিথা চলে গেলে তুষারও উঠে কুয়াশার মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেল ডিউটিতে। একে একে সবারই খাওয়া হয়ে এলে উঠে পরল।

সময়টা এখন বিকেল। বৃষ্টি, আর কুয়াশা মুড়ি মাখিয়ে খাচ্ছে আর গল্প করছে। সারাদিন বেশ ভালোই ঘুম দিয়েছে সে। ফুরফুরে লাগছে৷ গল্পের মাঝে নীহার এলো এসে কুয়াশার পাশে বসে সেও মুড়ি খেতে লাগল। তিন জা নেই সেখানে ঘরে তারা বিশ্রাম করছেন। নীহার আসার কিছুক্ষণ পর শিশির এলো।
এই যে এটাকেই মিসিং মনে হচ্ছিল এতক্ষণ সেখানে। তিনি আজ ক্যাম্পাসে যাবেন না বলেও গেছিলেন। তারপর এসে ঘুমিয়েছিলেন। এখন উঠে নিচে আসলেন। বাইরে যাবে বোধহয় আবার। তেমনি গেটআপে নামল। পরনে এ্যাস কালার টি-শার্ট আর ব্লাক প্যান্ট। ফোন টিপতে টিপতে নামছে। পরক্ষণেই ফোন প্যান্টে ভরে নামতে নামতে দেখল কুয়াশারা গল্প করছে আর মুড়ি মাখানো খাচ্ছে। সে-ও গিয়ে এক মুঠো মুড়ি তুলে নিয়ে খাওয়া ধরল৷ কুয়াশা তা দেখে ভেঙচাল। লক্ষ্য করল শিশির। কুয়াশার মাথার উপর দিল একটা চা’টি। বলল,

” সমস্যা কি তোর? মুখ ওমন করলি কেন? তোর কম পড়বে গিলায়? ”
কুয়াশা ফুঁসে উঠে বলল,
” আমি বলেছি আমার কম পড়বে? তোমার গিলতে মন চাইছে গিলো না! আমার পিছে পড়ছ কেন? আর, বাই দ্যা ওয়ে যাচ্ছ তো গার্লফ্রেন্ডের কাছে, সেখানেই যাও না এখানে কি তোমার? ”
বৃষ্টি তা শুনে হা হয়ে বলল,
” সত্যি দেবরজী? ”
শিশির বৃষ্টির কথার উত্তর না দিয়ে কুয়াশাকে বলল,
” আমি যেখানেই যাই সেটা তোর দেখার বিষয় না। নিজের চরকায় তেল দে৷ আর হ্যাঁ রাত জেগে কার সাথে প্রেমালাপ করিস যে সকালে খাবার টেবিলেও তোর ঢুলতে হয়? ”
কুয়াশার ভ্রু কুঁচকে চোখ ছোট ছোট করে তাকাল শিশিরের দিকে। কাটকাট ভাবে বলল,
” তোমায় কব ক্যা? আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলেছি। দেখার আছে তোমার?”
কথাটায় বৃষ্টি, নীহার অবাক হলো। নীহার একটু কঠিন স্বরে বলল,

” কুশু..! কি বলছিস? ”
কুয়াশা ভড়কে গেল। শিশির বলল,
” দেখেছিস? দেখ কতটা বাড় বেড়েছে৷ অকাম করে আবার গলাবাজি করে বলছে তোদের আদুুরীনি ”
নীহার এখনো উত্তরের আশায়। কুয়াশা বলল,
” ভাইয়া সেসব না, এমনি বললাম। ও বলল বলেই বললাম। আমি প্রেম টেম করছি না ”
উপস্থিত থাকা বৃষ্টি, নীহার বিশ্বাস করলেও শিশির ওর কথা বিশ্বাস করল কিনা বোঝা গেল না। সে আরেক মুঠো মুড়ি নিয়ে বসে থাকা কুয়াশা মাথা ধরে উপরে তুলে ওর মুখের মধ্যে মুঠো ভর্তি মুড়ি ঠুসে দিল মুখ ভরে। কুয়াশা মুখে তখন উমম, উমম শব্দ করছিল। শিশির মুড়ি ঠুসে দিয়ে বলল,

বুনো ওল বাঘা তেঁতুল পর্ব ৮

” বেশি করে গেলেক। তোর হচ্ছে না। ”
বলে হাঁটা দিল এক মুঠ মুড়ি তুলে নিয়ে খেতে খেতে। আর কুয়াশা? মুড়িতে তো মুখ তার ভর্তি করাই তার সাথে জোর দিয়ে মুড়ি ঠেলে দেওয়ার জন্য মুখে ব্যথাও পেয়েছে৷ সে উঠতে যাবে নীহার ধরে আটকে দিল আর শিশির ইতোমধ্যে সেই স্থান থেকে পগারপার।
বসে বসে ফুঁসা ছাড়া উপায় নেই।

বুনো ওল বাঘা তেঁতুল পর্ব ১০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here