ভালোবাসার সীমানা পেরিয়ে পর্ব ২১

ভালোবাসার সীমানা পেরিয়ে পর্ব ২১
প্রিয়স্মিতা তেহজীব রাই

আচমকা এহেন কাণ্ডে ঘাবড়ে গেল প্রিয়তা। চোখ-মুখ কুঁচকে ভূত ভূত করে চেঁচিয়ে উঠল। এহেন চেঁচামেচি বোধহয় সামনের ভূতটার উপর কোনো প্রভাব ফেলল না, কিন্তু গাড়ির সঙ্গে মৃদু ধাক্কা খেয়ে প্রিয়তা অনুভব করল—তার কোমর চেপে ধরে কেউ একজন তাকে খুব কাছে টেনে নিল। এতটাই কাছে যে সামনের মানুষটার গরম নিশ্বাস-প্রশ্বাস প্রিয়তার চোখে-মুখে আঁচড়ে পড়ছে।

অন্ধকার এতটাই ঘন যে কিছুই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না বা বোঝা যাচ্ছে না, তবে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির অবয়ব কিছুটা বোঝা যাচ্ছে। প্রিয়তা পিটপিট করে চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করল। সে দেখল, তার অতি নিকটে দাঁড়িয়ে থাকা ভূত বা ব্যক্তি যাই হোক না কেন, সে প্রিয়তার চেয়ে অনেকটাই লম্বা। তার বাহুবন্ধনে থেকে প্রিয়তা অনুভব করল—সে শুধু লম্বাই নয়, বরং অনেকটাই সুদেহি ও বলবান।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ভয়ে প্রিয়তার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের সৃষ্টি হল। সে মনে মনে আল্লাহর নাম নিয়ে ভাবল—ভূতের নাম নিতেই কি ভূত এসে গেছে? আল্লাহ গো, বাঁচাও! এখনই নিশ্চয়ই ঘাড় মটকে রক্ত পান করবে!
কিন্তু এই কথা ভাবার সঙ্গেই হঠাৎ তার মনে একটা প্রশ্ন জাগল—ভূত কি নিশ্বাস নেয়?
ভয়ে ভয়ে সে মাথা উঁচু করে সামনের ব্যক্তির মুখের দিকে তাকানোর চেষ্টা করল, কিন্তু চারপাশের ঘন ঘটার অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখতে পেল না। আতঙ্কে কয়েকবার শুকনো ঢোক গিলে সে কাপতে থাকা হাতটা সামনের মানুষটার বুকের ওপর রাখতেই চমকে উঠল! বুঝতে পারল—এটা কোনো ভূত নয়, বরং জলজ্যান্ত মানুষ!
কিন্তু সেই ব্যক্তি কোনো কথা বলছে না, আর না-ই বা কোনো নড়াচড়া করছে। প্রিয়তার মনে ভয় জেঁকে বসলো। সে কাঁপা গলায় বলল, “কে… কে?”

লোকটি এবারও কোনো উত্তর দিল না। প্রিয়তার মন থেকে ভূতের ভয় উবে গিয়ে অন্য এক আতঙ্ক বুকের ভেতর শেকড় গেড়ে বসতে শুরু করল। সামনের ব্যক্তিটা কোনো রকম বাক্যালাপ না করেই তাদের মধ্যে থাকা সামান্য সেন্টিমিটারের দূরত্ব ঘুচিয়ে দিল। প্রিয়তার দুই পাশে হাত রেখে তাকে নিজের বাহুর মধ্যে আবদ্ধ করল।
প্রিয়তার ভয়ে আত্মা বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম! লোকটির বাহুবন্দনে থেকেই সে তিরতির করে কাঁপছিল। লোকটি বোধহয় সেটা বুঝতে পারল, কিন্তু কী প্রতিক্রিয়া দিল, সেটা অন্ধকারে বোঝা গেল না।
প্রিয়তা চোখ বন্ধ করে একবার প্রণয়কে, আর একবার আল্লাহকে ডাকছে।
লোকটা ঝুঁকে নিজের মুখ প্রিয়তার মুখের কাছাকাছি নিয়ে এলো, অতপর হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে প্রিয়তার নরম গাল স্পর্শ করল। ভয়ে প্রিয়তার কাঁপুনি আরও বেড়ে গেল।
এরপর লোকটা একটানে প্রিয়তাকে ঘুরিয়ে দিল! প্রিয়তার পিঠ ঠেকল লোকটির বুকের কিছুটা নিচে। ভয়ে ছটফট করলেও তার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছিল না। আর সে জানে, এখানে চিৎকার দিয়েও কোনো লাভ নেই—কেউ শুনতে পাবে না!

প্রিয়তা অনুনয়ের সুরে বলল, “প্লিজ, আমাকে ছেড়ে দিন!”
লোকটা এবারও কোনো কথা বলল না। সে নিজের নাক-মুখ ডুবিয়ে দিল প্রিয়তার দীঘল কালো কেশরাশিতে।
প্রিয়তা ভয়ে চোখ-মুখ শক্ত করে বন্ধ করে নিল। প্রাণভয় আর মান হারানোর ভয় দুটোই তাকে জেঁকে ধরেছে।
লোকটা প্রাণভরে কয়েকটা বড় বড় নিশ্বাস নিল। বোধহয় ভীষণ মানসিক শান্তি পেল! সে আবারও কয়েকবার একইভাবে চুলের মাদকীয় সুগন্ধ নিজের ফুসফুসে টেনে নিল।
অতঃপর পুনরায় সামনের দিকে ঘুরিয়ে, আচমকাই প্রিয়তার ছোট্ট তুলতুলে দেহখানা নিজের প্রশস্ত, পুরুষালী বুকে চেপে ধরল…

তার এক হাত প্রিয়তার চুলের ভাঁজে, আর এক হাত প্রিয়তার পিঠে। পুরুষটির তুলনায় প্রিয়তা নিঃসন্দেহে একটি ছোট্ট পুতুল। এমন অপরিচিত লোকের অযাচিত স্পর্শে প্রিয়তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম! ভয়, গলা শুকিয়ে কাঠ। সে খুব করে প্রণয়কে স্মরণ করছে। ছোট থেকে বড় হওয়া অবধি প্রণয় তো তাকে কোনো বিপদেই পড়তে দেয়নি, ডিমের খোলসের মতো আবরণ দিয়ে আগলে রেখেছে সর্বক্ষণ। সে মনে মনে বলল, “প্লিজ, প্রণয় ভাই! আসুন, আপনি প্লিজ!”
সে এবার ছটফট করতে শুরু করল।

লোকটা প্রিয়তাকে আরেকটু আষ্টেপৃষ্টে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিল। প্রিয়তার মাথা গিয়ে ঠেকল একদম লোকটার বুক বরাবর। প্রিয়তার নাকে ছুটে এল তীব্র, ম্যানলি পারফিউমের গাঢ় সুঘ্রাণ।
না, কেবল পারফিউমের ঘ্রাণ নয়। পারফিউমের ঘ্রাণের সাথে ঘর্মাক্ত, পুরুষালী দেহের গন্ধ মিশে এক অন্যরকম মাদকীয় সুবাসের সৃষ্টি করেছে, যা প্রিয়তার নাক দিয়ে ঢুকে সোজা মস্তিষ্কের সকল সিস্টেম গুলিয়ে দিচ্ছে।
প্রিয়তা লোকটির ঠেলা-ধাক্কা দিতে দিতে কান্না মিশ্রিত গলায় বলল,
—“কে আপনি? প্লিজ, ছাড়ুন আমাকে! কে আপনি?”

কিন্তু সে সব কথা বোধ হয় লোকটির কান পর্যন্ত পৌঁছাল না। সে প্রিয়তাকে এক চুলও ছাড়ল না। বরং মাথা নিচু করে কপালে চুমু দিয়ে আরও নিবিড়ভাবে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। ভাবখানা এমন, যেন হাজার বছরের পিপাসার্ত ব্যক্তি পানির সন্ধান পেয়েছে!
লোকটা ভাবলো, ‘এই মেয়েটা কি জানে, তাকে একটু ছুঁয়ে দেওয়ার জন্য আমার বুকটা কতখানি পুড়ে? এই মেয়েটি কি বোঝে? না, বুঝে না!’
লোকটার এমন অদ্ভুত আচরণে প্রিয়তা বিস্মিত, আতঙ্কিত। সে কিছুই বুঝতে পারছে না।
সে তো কেবল এটুকুই টের পাচ্ছে—একটা অপরিচিত লোকের দেহের সঙ্গে সে চিপকে আছে! এটা ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে!
সে এবার একটু জোরেই বলল,

— “ছাড়ুন আমাকে!”
প্রিয়তার এমন ছটফটানিতে লোকটা মনে হলো খানিকটা বিরক্ত হলো। সে তো তার ‘জান’-কে গভীরভাবে অনুভব করছে, সেটাও কি এই মেয়েটার সহ্য হয় না?
সে এবার প্রিয়তার দুই বাহু চেপে ধরল!
কিন্তু প্রিয়তা শান্ত হলো না, আগের মতোই মুচমুচ করে যাচ্ছিল!
লোকটা এবার মাথা নিচু করে মুখটা প্রিয়তার গলার কাছে নামিয়ে আনল।
ঘোরলাগা, অসহায় কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল—

“Sweetheart, don’t pull away—come closer, my love. Let me feel you, not just in my arms, but in my soul—within every heartbeat, every breath, and every lingering touch. Don’t let anything steal this moment—let me drown in you, completely and endlessly.”
(“প্রিয়তমা, দূরে সরে যেও না—আরও কাছে আসো, আমার ভালোবাসা। শুধু তোমাকে আমার বাহুতে নয়, আমার আত্মার গভীরে অনুভব করতে চাই—প্রতিটি হৃদস্পন্দনে, প্রতিটি শ্বাসে, এবং প্রতিটি গভীর স্পর্শে। কিছুতেই এই মুহূর্তটাকে হারাতে দিতে চাই না—আমাকে তোমার মাঝে সম্পূর্ণভাবে, অনন্তকাল ধরে ডুবতে দাও।”)
এমন ভয়ঙ্কর, কণ্ঠস্বর শুনে প্রিয়তার দেহের সকল রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেল। শরীরের প্রতিটি অঙ্গে কাপুনি ধরে গেল, ভয় ছড়িয়ে পড়ল তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। লোকটার বলা কথাগুলো তার কানে বাজছে, লোকটার কথা বলার তালে তালে তার হিমশীতল ঠোঁট অনবরত প্রিয়তার গলা স্পর্শ করে যাচ্ছে।
সে আরও বেশি ছটফটিয়ে উঠল। ছাড়ানোর জন্য কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে বলল, “কে আপনি? প্লিজ, ছেড়ে দিন! আমাকে যেতে দিন, প্লিজ!”

কিন্তু প্রিয়তার মতো ছোট্ট বিড়ালছানা কি সামর্থ্যবান পুরুষের সঙ্গে দেহের বলে পারবে?! লোকটা প্রিয়তার নড়াচড়া থামাতে আরও নিজেকে সঙ্গে আরও নিভৃতে মিশিয়ে নিল। মেয়েটার যেখানেই একটু শক্ত করে ধরতে যাচ্ছে, সেখানটাই দেবে যাচ্ছে। কী জ্বালা!
শুদ্ধ হাসল । মনে মনে বলল— মোমের পুতুল!
অথচ এই মোমের পুতুলটাকে একদিনে হয় নি কেউ তার সর্বোচ্চ ভালোবাসা দিয়ে আদর-যত্নে ছোট থেকে বড় করেছে, আর সে কিনা এত সহজেই নিয়ে নিতে চায়!

শুদ্ধ প্রিয়তাকে জড়িয়ে ধরে সুখের নিশ্বাস ফেলে বলল, “তীব্র বিচ্ছেদের দহনে পুড়িয়েছ আমায়! বারোটা বছর—একটা রাতও শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি, একটা সেকেন্ডও স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারিনি! একটুখানি দেখার জন্য চাতকের মতো ছটফট করেছি, তীব্র অসহায়তায় জ্বলে মরেছি। আর এত কষ্টের পর একটুখানি স্বস্তি চাইছি, সেটাও তোমার সহ্য হচ্ছে না! কিন্তু কোনো ব্যাপার না, একবার যদি তোমাকে আমার করতে পারি, তখন সব পুষিয়ে নেব! আমি আবার কারও ধার-দেনা রাখি না!”
কিছু একটা মনে পড়তেই শুদ্ধর কেমন যেন গলা শুকিয়ে এল। সে চোখ বন্ধ করে প্রণয়ের উদ্দেশে বলল, “আমাকে ক্ষমা করে দিস… তোকে তোর রক্তজবার থেকে আলাদা করে দেওয়ার জন্য। আমি জানি, তুই ওকে কতটা ভালোবাসিস। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই… আমাকে এ তো বাঁচতে হবে!”

সে গভীর ভালোবাসায় প্রিয়তার নাকের ডগায় চুমু খেয়ে মনে মনে বলল, “আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও নিঃশ্বাস নিতে পারি না, সুইটহার্ট! গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করতে থাকি। আমার বেঁচে থাকার মূলধন তুমিই। তাহলে তোমাকে কীভাবে অন্যের হতে দিই? এই আবদ্ধ চৌধুরী কখনোই তোমাকে অন্যের হতে দেবে না!
এই শুদ্ধ চৌধুরীর নিঃশ্বাস যতদিন চলবে, তুমি শুধু আমার! তুমি চাও বা না চাও, তোমাকে আমার হয়েই থাকতে হবে। যদি অন্যের হতে চাও, তবে তোমাকে আমার হাতে মরতে হবে! নাহলে আমাকে তোমার নিজের হাতে শেষ করতে হবে। আমার নিঃশ্বাস চলছে মানে, তুমি অন্য কারো নও। পৃথিবীর কেউ এই শুদ্ধ চৌধুরীকে মারার ক্ষমতা রাখে না। তবে যদি তুমি চাও, তাহলে আমি হাসতে হাসতে বুক পেতে দেব তোমার জন্য!”

প্রিয়তা ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তার শক্তি সামনের ব্যক্তিকে এক চুল পরিমাণ নড়াতেও সামর্থ্য হয়নি, তাই অসহায় সে, তার কান্না ছাড়া আর কোনো গতি নেই।
প্রিয়তার কান্না শুনে শুদ্ধ দীর্ঘশ্বাস ফেলল…
বুকের বাঁধন একটু হালকা করল। অন্ধকারে যদিও কিছু দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু তার সুইটহার্টকে অনুভব করতে পারছে সে। দুই হাতের আজলায় প্রিয়তার মুখ তুলে নিয়ে, চোখের ভারী পল্লবে সময় নিয়ে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল। তারপর কপালে ভালোবাসার গভীর স্পর্শ এঁকে দিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে গভীর হাস্কি টোনে বলল—

“সুইটহার্ট, কাঁদছো কেন? এখনো তো কিছুই করলাম না! এতটুকুতেই কেঁদে দিলে, তাহলে পরে যখন তোমাকে ভালোবাসার সাগরে চুবানি দেব, তখন তোমাকে খুঁজে পাব তো? প্রথমবারেই হারিয়ে যাবে না তো?”
অপরিচিত লোকের এমন লাগামছাড়া কথা শুনে প্রিয়তার কান্না আপনা-আপনিই বন্ধ হয়ে গেল। মুখ হাঁ হয়ে গেল তার! মনে মনে বলল, “ছিঃ! কি কথা-বার্তার ছিরি!” কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারল না।
বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বুকে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে কাঁপা গলায় প্রশ্ন ছুড়ল—
“কে… কে আপনি?”
“আমাকে ধরে রাখছেন কেন?
শুদ্ধ ঠোঁট কামড়ে হাসলো, মাথা নিচু করে প্রিয়তার গলায় নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো। সাথে সাথেই প্রিয়তার প্রশ্নবাণ থেমে গেল। অজানা কম্পন ছড়িয়ে পড়ল সারা দেহে। সে শুদ্ধের মাথার চুল টেনে ধরল, কিন্তু ছাড়াতে পারল না—যেন অদৃশ্য চুম্বকীয় আকর্ষণ!

প্র্যাকটিক্যালি, কোনো রকম সম্পর্ক ছাড়াই কোনো অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে এমন স্পর্শ কাম্য নয়। এটাকে ‘বেড টাচ’ বলে।
প্রিয়তার চোখে পানি চলে এলো।
প্রিয়তা গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে করুন কণ্ঠে বলল, “প্লিজ… দয়া করে ছেড়ে দিন আমাকে… যেতে দিন!”
শুদ্ধ এক হাত প্রিয়তার পাশের দেয়ালে রেখে, অন্য হাত দিয়ে প্রিয়তার নরম গালে কিছুক্ষণ স্লাইড করল। তারপর সেখানে গভীর ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দিল। কানের কাছে মুখ নিয়ে গভির স্বরে বললো—
“আমি না চাইলে, তুমি কোথাও যেতে পারবে না, সুইটহার্ট!”
প্রিয়তা বুঝল, সে বিশাল বিপদে পড়ে গেছে! চোখ বন্ধ করে মনে মনে বলল-

“প্রণয় ভাই… বাঁচান আমাকে!”
সে কাঁপা গলায় শুদ্ধকে মিনতি করল—
“দয়া করে এভাবে ছুঁবেন না… প্লিজ, আমার খারাপ লাগছে।”
শুদ্ধর মনে হয়, কথাটা মোটেও পছন্দ হয়নি! মুহূর্তেই তার মস্তিষ্কে হলহল করে রাগ ছড়িয়ে পড়ল। সে আচমকা শক্ত করে প্রিয়তার বাহু চেপে ধরল। হয়তো তার চোখ-মুখও ভয়ংকর হয়ে গেছে, কিন্তু অন্ধকারের জন্য সেটা বোঝা গেল না। সে মুখটা প্রিয়তার আরও কাছে এনে দাঁতে দাঁত চেপে বলল—
“আমার স্পর্শে তোর খারাপ লাগে?”

এত জোরে চেপে ধরায় প্রিয়তা ভীষণ ব্যথা পাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেও যে লোকটা আদুরে সুরে কথা বলছিল, সে-ই এখন চেপে ধরে ব্যথা দিচ্ছে!
শুদ্ধ আবার চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, “কত বড় কলিজা তোর! আমার স্পর্শ তোর ভালো লাগে না? আর যখন একটা বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে ঢলাঢলি করিস, তখন তোর খারাপ লাগে না, তাই না? কী হলো? কথা বল! চুপ করে আছিস কেন?”

জোর গলায় ধমক দিয়ে কথাগুলো বলল শুদ্ধ।
এত নোংরা নোংরা কথা শুনে ঘৃণায় প্রিয়তার গা গুলিয়ে উঠল। লোকটার স্পর্শে ঘৃণা না লাগলেও, তার বিষাক্ত কথায় তীব্র ঘৃণায় প্রিয়তার ছোট্ট মন বিষিয়ে উঠল।
কই, প্রণয় ভাই তো তার সাথে কোনোদিন এভাবে কথা বলেননি! সে যত বড়ই অন্যায় করুক না কেন, সব সময় আদর করে বুঝিয়েছেন…
প্রিয়তার কান্নার বাঁধ ভাঙল।
সে কাঁদতে কাঁদতে বলল, “আমার খুব ভয় করছে! প্লিজ, আমাকে প্রণয় ভাইয়ের কাছে যেতে দিন… প্লিজ, আমাকে যেতে দিন!”

শুদ্ধ অল্পতেই রেগে যায়, আর তার সুইটহার্ট কিনা বলছে—তার ছোঁয়া নাকি ভালো লাগে না! রাগে জ্বলতে থাকা শুদ্ধের মাথা এবার প্রণয়ের নাম শুনে পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেল। তার রাগের পারদ গলিত লাভার ন্যায় উত্তাপ ছড়াতে লাগল। সে ভুলবাল কিছু করতে চায় না, তাই দাঁতে দাঁত পিষে রাগটা হজম করার চেষ্টা করল, কিন্তু কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারছে না।
লোকটার এমন আচরণে ভয়ে প্রিয়তার দেহে কাঁপন ধরে গেল। শুদ্ধ স্পষ্টই সেই কম্পন অনুভব করল।
তারপর আর এক সেকেন্ডও দেরি না করে প্রিয়তাকে পাজাকোলে তুলে নিল। ভয়ে লাফিয়ে উঠল প্রিয়তা। এলোপাতাড়ি ঘুষি দিতে লাগল শুদ্ধের বুকে, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হলো না।

শুদ্ধ গাড়ির ব্যাকসিটের দরজা খুলে প্রিয়তাকে ভেতরে ছুড়ে মারল। নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রিয়তার প্রাণটা ধরফরিয়ে উঠল, দম যেন গলার কাছে আটকে গেল। সে মুখ চেপে জোরে কেঁদে উঠল।
গাড়ির সামনের সিটে জ্বলতে থাকা টিমটিমে জাপসা আলোর কিছুটা ব্যাকসিটেও এসে পড়ছে। তবে সিটের উপর টাই-ই শুধু দৃশ্যমান, বাকি সব অন্ধকারে ডুবে আছে। প্রিয়তার মনে হলো, এই অন্ধকারের মতোই তার জীবনেও ঘন অন্ধকার নেমে আসতে চলেছে।

শুদ্ধ গাড়ির ভেতর ঢুকে দরজা লক করে দিল। প্রিয়তা মুখ তুলে লোকটার দিকে তাকানোরও সাহস পাচ্ছে না।
শুদ্ধ কয়েক পলক প্রিয়তার ক্রন্দনে রক্তিম মুখশ্রীতে নজর বুলাল। তার মনটা একটু নরম হতে চাইলো, কিন্তু প্রিয়তার বলা কথাগুলো মনে আসতেই রাগ আবার মাথায় চড়ে বসল।
সে প্রিয়তার ডান হাত ধরে নিজের দিকে হ্যাঁচকা টান দিল।
আচমকা এমন টান লাগল যে প্রিয়তা টাল সামলাতে না পেরে বসা থেকে সামনের দিকে ছিটকে এসে ঝড়ের বেগে শুদ্ধের বুকের উপর আছড়ে পড়ল। পুনরায় তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে চোখ বুজল শুদ্ধ।

রাগ তার শিরায় শিরায় প্রবাহিত হচ্ছে। সে মোটেও চায় না মেয়েটার সঙ্গে উল্টো-পাল্টা কিছু করে বসতে।
**এমনি-তেই মেয়েটার স্পর্শ শুদ্ধর শরীরের রক্তপ্রবাহে ড্রাগের নেশার মতো আসক্তি জাগিয়ে তুলছে। মনে নিষিদ্ধ ইচ্ছার জন্ম দিচ্ছে। শুদ্ধ ভীষণ চরিত্রবান পুরুষ—প্রিয়তা ছাড়া অন্য কোনো নারীর দিকে প্রয়োজন ব্যতীত তাকিয়েছে বলে তো মনে পড়ে না। এই যে তুহিনা শুদ্ধর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে, তবুও বিরক্তির দৃষ্টি ছাড়া অন্য কোনো দৃষ্টিতে তাকিয়েছে বলে মনে পড়ে না।
সে কেবলমাত্র তার ‘সুইটহার্ট’ প্রিয়তাতেই আসক্ত। আর এই মেয়েটার সবকিছুই শুদ্ধর বড্ড প্রিয়।
তাই তার প্রিয় নারীর উপস্থিতি কিংবা স্পর্শ তার মন ও শরীরে অদ্ভুত এক নেশা ছড়িয়ে দিচ্ছে। শরীরের রক্তকণিকায় হরমোনগুলো দ্রুত বেগে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

নিজেকে ঠান্ডা করা প্রয়োজন। একটু মানসিক স্বস্তির দরকার, যা শুধুমাত্র এই মেয়েটার থেকেই মিলবে।
শুদ্ধ হঠাৎই প্রিয়তাকে জড়িয়ে ধরে, ক্রুদ্ধ গলায় বলল, “শোনো মেয়ে, আমি নায়ক নই, আমি ভিলেন! আমি মোটেও ভালো মানুষ নই! আমি নিকৃষ্ট, আমি জঘন্য, আমি অত্যন্ত খারাপ মানুষ! তুমি পবিত্র, আমি পাপী! তবুও তোমাকে আমার হয়েই থাকতে হবে! তুমি আমার, শুধুই আমার! আজকের পর যদি তোমাকে অন্য কারও পিছনে ঘুরতে দেখি, তো মেরে হাত-পা খুলে হাতে ধরিয়ে দেব!”
লোকটার কথা শুনে প্রিয়তা আশ্চর্যের সপ্তম আকাশে! বলে কি এই লোক!

সে অনেক চেষ্টা করেও শুদ্ধকে সরাতে পারল না। শেষমেশ বাধ্য হয়ে নিজের দাঁতের ব্যবহার করল। শুদ্ধ এক চুলও নড়তে দিচ্ছে না! সে কোনোভাবে শুদ্ধর গায়ে কামড় দেওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু কিছুতেই মাংস খুঁজে পাচ্ছে না। কারণ, শুদ্ধ স্কিন-টাইট ব্ল্যাক টি-শার্টের ওপর ব্র্যান্ডেড ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট পরছে।
প্রিয়তা আর দু’বার চেষ্টা করেও মাংসের নাগাল না পেয়ে নিরাশ হলো। শুদ্ধ এসব বুঝতে পেরে ভ্রু কুঁচকাল, তারপর ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তুলল। প্রিয়তার দুই হাত নিজের হাতে মুঠো ধরে রেখে, অন্য হাত দিয়ে শরীর থেকে জ্যাকেটটা টেনে খুলে পাশের সিটে ছুড়ে মারল। তারপর আগের মতোই আবার ওকে নিবিড়ভাবে বাহুবন্ধনে বদ্ধ করল। কানের কাছে মুখ নিয়ে মাদকীয় কণ্ঠে বলল,

“Now, eat me!”
প্রিয়তা হতবাক! মনে মনে ভাবল, ‘লোকটা কি বোকা নাকি?’ কিন্তু লোকটা বোকা হলেও প্রিয়তা মোটেও বোকা নয়! সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করল—তার দুই হাতের ধারালো নখ বসিয়ে দিল শুদ্ধর পিঠে। ধারালো নখ সহজেই টি-শার্ট বেঁধে চামড়া পর্যন্ত পৌঁছে গেল।
শুদ্ধ হাসল। এতটা জোরে আঁচড়ানোতেও কাজ হলো না দেখে প্রিয়তা বিরক্ত হলো, কিন্তু হাল ছাড়ল না। এবার সে বড় একটা হাঁ করে শুদ্ধর বুকের বাঁ পাশের মাংসে কামড়ে ধরল!
বাইট ফোর্সটা হয়তো একটু বেশিই ছিল। শুদ্ধ দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করল। ভারসাম্য বজায় রাখতে সে প্রিয়তাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। বাঁধন শিথিল হওয়ার বদলে আরও দৃঢ় হতে দেখে অবাক হলো প্রিয়তা।

অবাকত্ব ধরে রেখেই ভাবল, ‘কেউ এতটা ব্যথা কীভাবে সহ্য করতে পারে!’
যাই হোক, তার প্ল্যান সফল হলো না। কিন্তু লোকটা অনেক ব্যথা পাচ্ছে দেখে প্রিয়তার একটু মায়া হলো। আর কিছুক্ষণ কামড়ে রাখলে হয়তো মাংসই উঠে আসবে! তাই ছেড়ে দিল।
শুদ্ধ এবার ঠোঁট কামড়ে হাসল, কয়েকটা গভীর শ্বাস নিয়ে, ব্যথাটা হজম করে নিল। তারপর প্রিয়তার গলার কাছে মুখ এনে গভীর শ্বাস নিয়ে বলল,

“উফফ্! সুইটহার্ট, এভাবে আঁচড়ালে, কামড়ালে আমি কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব না। তোমার যেমন আমাকে খেতে ইচ্ছে করছে, আমারও তোমাকে খেতে ইচ্ছে করবে! কিন্তু সুইটহার্ট, বিশ্বাস কর, আমি ভীষণ ভদ্র ছেলে। বিয়ের আগে বাসর টাসর সাড়ার কোনো ধান্দা আমার নেই। তবে তুমি যদি চাও, সেটা অন্য ব্যাপার!”
এমন অশালীন কথাবার্তা শুনে প্রিয়তা প্রায় বেহুঁশ হওয়ার উপক্রম! মনে মনে বলল, “ছিহ! কী কথাবার্তার ছিরি!” লোকটাকে এখন ভীষণ ভয় করছে প্রিয়তার। সেকেন্ডে সেকেন্ডেই রং পাল্টে ফেলছে লোকটা। সত্যিই তার সাথে উল্টোপাল্টা কিছু করে দেবে না তো? আতঙ্কে সে মনে প্রাণে ডাকছে প্রণয়কে।
প্রিয়তা মনে মনে বলল, “প্রণয়, আপনি তো আমাকে সবসময় বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। প্লিজ, এবারও আমাকে এই লোকটার হাত থেকে বাঁচান!”

ভাবতে ভাবতেই তার চোখ পানিতে ঝাপসা গেল।
শুদ্ধর মনে হয় একটু দয়া হলো। সে প্রিয়তাকে ছেড়ে দিল। প্রিয়তা মনে মনে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
অন্ধকারে হাতড়ে গাড়ির দরজায় হাত রাখতেই তার উপর ভারী কিছু একটা অনুভব করল। শুদ্ধ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে প্রিয়তার বুকের কাছে মাথা রাখল।
প্রিয়তা আতঙ্কে লাফিয়ে উঠল। কাঁপা গলায় বলল, “কি… কী করছেন?”
শুদ্ধর কণ্ঠ শীতল। সে জড়ানো গলায় ধীরে ধীরে বলল, “এবার ডিস্টার্ব করলে, I swear, তোমার খবর করে ছাড়ব!”

এই বলে প্রিয়তার হাত ধরে নিজের চুলের ভাঁজে রাখল। একইভাবে বলল, “চুপচাপ চুলগুলো টেনে দাও, আর একদম চালাকি করার চেষ্টা করবে না!”
প্রিয়তা ভয়ে চুপসে গেলো।
শুদ্ধ বিড়বিড় করে বলল, “ওই বালিশ আর থ্রিপিস থেকে তোমাকে পরিপূর্ণভাবে অনুভব করা যায় না, প্রিয়তমা। তাই তো এত প্ল্যান-প্রোগ্রাম করা, যাতে তোমাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও নিজের কাছে রাখতে পারি, নিজের রুহকে একটু স্বস্তি দিতে পারি। আমি যে বড় তৃষ্ণার্ত, প্রিয়তমা!
তোমার তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে গেছে, তোমার প্রতি আসক্তি আমাকে মানুষ থেকে পশু বানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু, sweetheart, এগুলো তো কিছুই না!

তোমাকে পাওয়ার জন্য যদি আমাকে আরও নিচে নামতে হয়, আমি তাতেও রাজি।
তোমাকে পাওয়ার জন্য যদি আমাকে আরও খারাপ হতে হয়, আমি তাতেও রাজি।
তোমাকে পাওয়ার জন্য যদি আমাকে খান দশেক লাশ ফেলতে হয়, আমি তাতেও রাজি।
তোমাকে পাওয়ার জন্য যদি আমাকে নিজেকেই কুরবান করতে হয়, আমি তাতেও রাজি।
যেকোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও আমি তোমাকে চাই, চাইই! তাই তোমাকে না পেলে, এই শুদ্ধ চৌধুরী একা মরবে না—সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েই তবে মরবে!”
প্রিয়তার গলার নিচে নাক ঘষতে ঘষতে জড়ানো কণ্ঠে বলল,

“I love you more than words could ever capture, my sweetheart. You are the very breath in my lungs, the heartbeat in my chest, and the soul that completes mine. My love for you is boundless—deeper than the deepest ocean, endless like the sky, and eternal like the stars. No force in this world could measure or contain what I feel for you. You are my forever, my always, my everything.”

(আমি তোমাকে এমন ভালোবাসি যা কোনো শব্দেই পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব নয়, আমার প্রাণপ্রিয়। তুমি আমার ফুসফুসের শ্বাস, আমার বুকে ধুকপুক করা হৃদস্পন্দন, আর আমার আত্মার সেই অংশ যা আমাকে সম্পূর্ণ করে। আমার ভালোবাসা সীমাহীন—সবচেয়ে গভীর সাগরের চেয়েও গভীর, আকাশের মতো অসীম, আর তারার মতো চিরন্তন। এই পৃথিবীর কোনো শক্তিই আমার অনুভূতিকে মাপতে বা ধারণ করতে পারবে না। তুমি আমার চিরকাল, আমার অনন্ত, আমার সবকিছু।)

বিড়বিড় করতে করতেই কিছুক্ষণের মধ্যেই গভীর তন্দ্রায় তলিয়ে গেল শুদ্ধ—যাকে বলে সুখের নিদ্রা। এতগুলো বছরে একটা রাতও সে ঠিকমতো শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। তার ঘুম মানেই হাই-পাওয়ারের দুটো স্লিপিং পিল, তবু ঘুম হতো না! অথচ আজ স্বাভাবিকভাবেই মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল সে, ভারী নিশ্বাস পড়ছে তার।
প্রিয়তা আর বসে থাকতে পারছে না! যেভাবেই হোক, এখান থেকে পালাতে হবে। কিন্তু কীভাবে? যেভাবে শুদ্ধ তাকে পেঁচিয়ে ধরে রেখেছে, এই জীবনে সে নিজেকে ছাড়াতে পারবে না, যদি লোকটা তাকে না ছাড়ে। নড়তেও ভয় করছে সে—যদি জেগে যায়, তাহলে পালানোর শেষ রাস্তা টাও বন্ধ হয়ে যাবে!
প্রায় তিরিশ মিনিট হয়ে গেছে, সে এই জায়গায় এসেছে। প্রণয় ভাই নিশ্চয়ই খুঁজছে! প্রণয়ের কথা পুনরায় মনে আসতেই কলিজাটা খা খা করে উঠল!
হোক না নিষিদ্ধ—তবু প্রিয়তার সকল ভালোবাসা তার জন্যই! সে কিনা অন্য একটা পুরুষকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে? ছি!

ভালোবাসার সীমানা পেরিয়ে পর্ব ২০

কিন্তু এখন এসব ভাবার সময় নয়! তাকে পালাতে হবে!
তার ফোনটার কথা মনে পড়তেই আবারও নিরাশ হলো সে। ফোন সে এখানে আসার পূর্বে কোথায় ফেলে এসেছে, তার মনে নেই!

ভালোবাসার সীমানা পেরিয়ে পর্ব ২২