ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ১৮
মিথুবুড়ি
“আপনিও আমাকে ঠকালেন ?”
‘ তাকবীর সকাল সকালই এলিজাবেথের মুখ থেকে এমন কথা শুনবে মোটেও আশা করেনি। কপালে ভাঁজ সংকুচিত হল, জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। ঘন ঢোক গিলে বিস্মিত নজরে চেয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল,”মানে! সকাল সকালই কি বলছো এসব?
‘এলিজাবেথের চোখ ভেজা। ঠৌঁটের সাথে তাল মিলিয়ে কাঁপছে চোখের পাতা । ঠিক মনের সবথেকে নরম জায়গায় আঘাত লাগলে যেমনটা অনুভূত হয় ঠিক তেমন ভাবে পুড়ছে অন্তকঃকরণ। মুখে কোনো প্রত্যুত্তর করল না। হাতে থাকা খামটি ছুঁড়ে মারে তাকবীরের মুখের উপর। খামের ভিতর থেকে পিন্ট করা কয়েকটি ছবি বৃষ্টির মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে মেঝেতে। ছবি গুলোর দিকে তাকাতেই চোখমুখ থেকে সকল উদ্বিগ্নতা বিলীন হয়ে যায়। আঁটকে রাখা নিশ্বাস এক দমে ছাড়ে, ফোঁস শব্দ করে। হাঁটু মুড়ে বসে ছবিগুলো কুড়িয়ে হাতে নিল তাকবীর।
“কষ্ট এজন্য লাগেনি যে আপনার জীবনে অন্য কেউ আছে। ব্যাথা এজন্য লেগেছে যে আমাদের বন্ধুত্বের প্রথম শর্তই ভেঙে দিয়েছেন আপনি। আমরা কথা দিয়েছিলাম কেউ কারোর কাছে কিছু লুকাবো না। আপনি কথা রাখেননি ভালো মানুষ।”
‘তপ্ত শ্বাস ফেলে ওঠে দাঁড়ায় তাকবীর। এলিজাবেথের দিকে এগিয়ে যেতে নিলে পিছিয়ে যায় এলিজাবেথ। বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠল তাকবীরের। রক্তশূণ্য হয়ে যায় কৃষ্ণগহ্বর। ঠৌঁট ফাঁক করে কিছু বলার আগেই শোনা যায় এলিজাবেথের কান্নায় জর্জরিত কন্ঠস্বর,
“যারা হৃদয়ে থাকে, তাদের আঘাতই হৃদয় ভেঙে দেয়।”
“তবে কি হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছিলাম ? নইলে আঘাত এতো গভীর হতো কেন?”
“যদি বন্ধুত্ব একটি মহাকাব্য হতো, তবে তার সবচেয়ে হৃদয়স্পর্শী অধ্যায় আপনি হতেন। ”
“আমাদের মধ্যে শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্ক নয় এলোকেশী। ”
” আপনি প্রসঙ্গ পাল্টাতে চাচ্ছেন।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘কাতর চোখ দু’টোতে ব্যর্থতার নিশানা । বুক চিঁড়ে বেরিয়ে এলো পাহাড় সমপরিমাণ দীর্ঘশ্বাস। বিষন্ন অনুভূতির মিলনে চুপসে গেল নিগূঢ় অনুভূতি। জ্বলে ওঠা এক টুকরো আশার আলো নিভে গিয়ে অন্ধকারে হারিয়ে যায়, এক শূন্যতা, এক তীব্র ক্ষোভ ও দুঃখে ভরে ওঠে মন। পরপরই নিজেকে নিজেই শান্তনা দিল তাকবীর, ” এতো তাড়া কিসের! মেয়েটাকে আর একটু সময় দে। ভালোবেসে যা, একদিন না একদিন ফলাফল ঠিকই আসবে। বিষন্ন মন ভরে যাবে পরিপূর্ণতায়। ঠিক তোর নিশি রাতের স্বপ্নের মতো।
‘ টাউজারের পকেট থেকে মোবাইল টি বের করল তাকবীর। পরপর গ্যালারিতে ঢুকে কিছু ছবি তুলে ধরল এলিজাবেথের সামনে। এলিজাবেথ সন্দেহভাজন দৃষ্টিতে একবার ফোনে তো আরেকবার নিচে পরে থাকা ছবিগুলোর দিকে তাকাচ্ছে। জায়গা এবং পরণের জামা একই। তবে পার্থক্য পিন্ট করা ছবিগুলোতে তাকবীর একটা মেয়ের সাথে রেস্টুরেন্টে বসে একা কফি খাচ্ছিল। আর ফোনে থাকা সেলফিতে তাকবীর আর ঐ মেয়েটি, সাথে একজন পুরুষও রয়েছে। দু’জনে খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এলিজাবেথের চোখেমুখে বিস্ময়।
“ওরা হাসবেন্ড ওয়াইফ। ”
“কিন্তু এখানে যে,,,,
“ওর হাসবেন্ড তখন ওয়াশরুমে গিয়েছিল। তখনই বাইরে থেকে এই ছবিটি তুলা হয়। ওরা আমার বিজনেস পার্টনার। একটা ডিল নিয়ে আলোচনা করছিলাম আমরা। তাই কাল তোমাকে নিয়ে কোথাও বের হতে পারিনি। ~ ‘ এলিজাবেথের কথা সম্পূর্ণ হতে না দিয়েই একদমে কথাগুলো বলে দিল তাকবীর। মিইয়ে যায় এলিজাবেথ। লজ্জায় স্তম্ভিত সে।
“যদি আমি পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টও হই, তবুও তোমার কাছে আমি নিষ্পাপ। আমার সব ভুল বৃষ্টি হয়ে তোমার পায়ে এসে স্নান করে। তোমার এক দৃষ্টিতে আমার সমস্ত খারাপি মেঘের মতো তোমার হাতের মুঠোয় ভেসে চলে যায়।”
“এভাবে কথার জালে ফেলে আমাকে দূর্বল করে দিবেন না। দুঃখিত আমি প্রথমে ওগুলো দেখে সত্যি সত্যি ভেবে নিয়ে রিয়েক্ট করে ফেলেছি। ”
‘ তাকবীর তেরছা ভাবে তাকায় এলিজাবেথের দিকে। ওপাশের কথার সমাপ্তি ঘটার সাথে সাথে খৈয় হারিয়ে তড়িঘড়ি করে বললো, ” কি ভেবেছিলে ওগুলো দেখে? তোমার থেকে আমাকে কেউ আলাদা করে ফেলছে?
‘ তাকবীরের স্বরে উত্তেজনা। দৃষ্টি নিবিড়। জানার আগ্রহবোধ অসীম। এলিজাবেথ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল তাকবীরের কাতর চোখদুটোতে। স্নান হাসল, হেসে জবাবে উত্তর দিল,” ভেবেছিলাম ভালো মানুষ আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে। পরে আমি মমতাজের মতো গান ধরবো,- বন্ধু যখন বউ লইয়া আমার বাড়ির সামনে দিয়া রঙ্গ কইরা হাঁইটা যায়। ফাইট্টা যায় ও বুকটা ফাইট্টা যায়। ”
‘বলে খিলখিলিয়ে হাসতে লাগল এলিজাবেথ। তাকবীরের ব্যাথতুর কণ্ঠে গুরুতর কথাটাকেও হেসে উড়িয়ে দিল এলিজাবেথ। তবুও ঘাঁটল না তাকবীর। এই হাসি গুলোতেই তার প্রাপ্তি। ওর গভীর চোখ দুটো আশ্লেষে জরিয়ে এলিজাবেথের রেখেছে পা থেকে মাথা পর্যন্ত। একগুঁয়ে দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখতে থাকে তার শখের নারীকে। তার অন্দরমহলের রাজকুমারীকে। তার ছোট্ট এক হৃদয় প্রবালের মতো কোমল অনুভূতির জোয়ারে ভেসে যায় এই মেয়ের একটুখানি সান্নিধ্যে। হঠাৎই বুকের ভিতর খুব চাপ অনুভব করে তাকবীর। আপনমনে বিড়বিড় করে _
~যখন ঐ রূপের সরণ ঘটে,
চোখের সামনে ভেসে আসে নিজের ধ্বংসের নিরব প্রতিচ্ছবি~
‘তখনও মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে ছিল তাকবীর। অজানা কারনে চোখ ভিজে আসে তাকবীরের। কাঁপতে থাকে গলা। থেমে যায় এলিজাবেথের হাসির ঝলকানি তাকবীরের ব্যাথতুর কণ্ঠে,
“তুমি যদি চলে যাও, এই অন্তরের শূন্যতাকে আমি কী দিয়ে পূর্ণ করব? ভিতরে ভিতরে যে আমি নিঃশেষিত, নির্জন। তুমি ছাড়া আমি কতটা অসহায় তা তুমি জানো মেয়ে ? যদি তুমি চাও আমি রাজনীতির মোহ ছেড়ে দেব। ফিরে গিয়েই সবকিছুর ইতি টানব। তবু প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি তোমার কাছে কোনো অধিকার দাবি করছি না, শুধু পাশে থাকতে চাই। ভালোবাসতে না পারলেও আমার সাথেই থেকো। ভুলে যাও সমস্ত কালো অতীত। যা ছিল কেবল মরিচীকার মতো ক্ষণস্থায়ী। তুমি আছ বলেই এই জীবন পূর্ণ। তুমি না থাকলে আমি শুধুই শূন্য।”
‘এলিজাবেথ বুঝতে পারে না আকস্মিক তাকবীরের এই কথাগুলো বলার কারণ। এলিজাবেথ এগিয়ে যায় তাকবীরের নিকট। ভিতরে অনুশোচনা । ধরে নেয় তখনের আচরণের জন্য বোধহয় কষ্ট পেয়ে এগুলো বলছে তাকবীর। খারাপ লাগতে শুরু হয় এলিজাবেথের। কাঁপা হাতে হাত রাখল তাকবীরের বাহুতে। তাকবীর খপ করে দু’হাতের আজলায় চেপে ধরে এলিজাবেথের হাত। কেঁপে ওঠে এলিজাবেথ তাকবীরের এহেন আচরণে। ক্ষীণ স্বরে বলল তাকবীর,
“যদিও জীবন আমাকে বহু শ্রেষ্ঠ বিকল্পের দিকে ধাবিত করতে পারে, তবুও আমি সেদিকে এক পলকও তাকাবো না। কারণ আমি তুমি লোভী খুব। তোমার ভালোবাসায় ডুবে যেতে চাই। তোমাকে পাওয়ার যে অমোঘ আকাঙ্ক্ষা আমার হৃদয়ে পুঞ্জীভূত, তা ভাষায় ফুটিয়ে তোলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তুমি আমার কাছে শুধু জীবনই নয়, মৃত্যুরও বিকল্প এলোকেশী।”
‘থেমে, ঘন শ্বাস ফেলে আবারও বলল,
“ভিতরে ভিতরে আমি খুবই একা এলোকেশী। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। শূন্যে হারিয়ে যাব। ”
কথাগুলো শেষ করে এক প্রকার হাঁপাতে থাকে তাকবীর। চোখের জল গড়িয়ে পরার আগেই ঘাড় ঘুরিয়ে মুছে নেয়। পুরুষ মানুষ কাঁধে, তবে কখনো কারোর সামনে তা প্রকাশ করতে সাচ্ছন্দ্যবাদী নয় তারা। শত কষ্ট ভিতরে চাপা রেখে নিজেদের শক্ত খোলসে আবদ্ধ করে রাখে । কারণ তারা পুরুষ মানুষের। এই সমাজে পুরুষ মানুষদের কষ্টের ঠাঁই নেই। এলিজাবেথের গলাও ভিজে আসে। অপর হাত রাখল তাকবীরের হাতের উপর। নিদারুণ কোমল স্বরে আশ্বাস দিল, ” যাব না কক্ষনো ! পাশে থাকব সবসময়।
‘নিজের করা প্রতিশ্রুতির কথা মনে হতেই দূরে সরে আসে তাকবীর। মূহুর্তের মধ্যেই চোখমুখের রং পরিবর্তন হয়ে গেল। চোখে সন্দেহ সংকুচিত হলো। বলল, “তুমি ছবিগুলো পেলে কীভাবে? আমি তো এখানেই ছিলাম।”
‘এলিজাবেথ এতোক্ষণে ঠিক ভাবে তাকাল তাকবীরের অবয়বে। তাকবীরের চোখ দু’টি অসম্ভব লাল হয়ে আছে। চোখের নিচটাও কিছুটা ফুলে গিয়েছে।
” ঘুমাননি আপনি?”
‘ পুরোপুরি এড়িয়ে গেল তাকবীর, নিরেট ঠান্ডা গলায় বলে,”আমার প্রশ্নের উত্তর দাও এলোকেশী।”
‘ঠৌঁট কামড়ে কিছু মনে করার চেষ্টা করল এলিজাবেথ। অতঃপর কাইকুঁই করে রিনরিনে আওয়াজে বলে,
” জানি না কিভাবে আসলো। বালিশের নিচে পেলাম । আপনি তো কাল বাইরে থেকে লক করে গিয়েছিলেন। আমি কি বের হয়েছি নাকি কোথাও? ”
‘শেষের কথাটা বলে ভেংচি কাটে এলিজাবেথ। তাকবীরের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কাল রিচার্ডের বলা কথাগুলো খুবই ভাবিয়েছে তাকবীর কে সারারাত। এলিজাবেথের সেফটির কথা ভেবে তাকবীর বাইরে থেকে দরজা লক করে যায়। রিসেপশনেও বলে যায় যদি ওদের খুঁজে কেউ আসে তবে যেন বলে ওরা চেকিং করে ফেলেছে। হঠাৎ করে কিছু মনে হলো তাকবীরের। পরপর চিরায়ত গম্ভীর গলায় এলিজাবেথ কে প্রশ্ন করল,”আমি ঘুমে ছিলাম সময় কোনো হোটেল স্টাফ এসেছিল?”
‘এলিজাবেথ ফটাফট জবাব দিয়ে দিল,” হ্যাঁ! রুম ক্লিনার এসেছিল তো।”
‘সঙ্গে সঙ্গে তাকবীরের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। তবে তা ধরা দিল না এলিজাবেথের চোখে। হঠাৎ করে কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হলো তাকবীরের। জলদগম্ভীর গলায় বললো, “রেডি হয়ে নাও। আমরা এই হোটেল এখনই ছেড়ে দিব। এন্ড প্লিজ নো মোর কোয়েশ্চন।”
‘এলিজাবেথ আর কথা বাড়ায় না। তাকবীরের কথামতো গিয়ে ব্যাগ প্যাক করতে থাকে। তাকবীর নিজের রুমে গেল। ফোন বের করে কাউকে ফোন করে খুব মেজাজ দেখাতে থাকে। এ এক অন্য রূপ।
‘সান ফান্সিসকোর বিশাল বিলাসবহুল হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা কালো বুগাটি। হাত ঘড়িতে সময় দেখে নিল রিচার্ড। ঠৌঁটের কোণায় স্পষ্ট পৈশা/চিক হাসি। চোখে আগুনের দাবানল। লুকাস আর আলাদিন নিশ্চুপ বসে আছে । আজ তাদের সাথে কোনো গার্ড নেই। ন্যাসো সেদিনই বাংলাদেশে ব্যাক করে। কয়েক মিনিটের ব্যবধানেই একটা রোলস রয়েলস হোটেলের পার্কিং লটের দিকে যেতে দেখা যায়। গাড়িটি দৃষ্টিগোচর না হওয়া পর্যন্ত শিকারী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রিচার্ড শক্ত চোয়ালে। অতঃপর পাশের সিটে অবহেলায় পরে থাকা ঔষুধের শিশি কোটের পকেটে ঢুকিয়ে নিল। ঠৌঁটের আগায় ফুটে ওঠে হিংস্রতার ছাপ। নিজ বৈশিষ্ট্য ফিরে গেলো তার চিরাচরিত পৈশাচিক আত্মায়। গাড়িতে থেমে নামে রিচার্ড। লুকাসও নামতে চাইলে বাঁধা দেয়। গুরুগম্ভীর অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় কন্ঠস্বর,
“নো দিস ইজ পার্সোনাল ইস্যু।”
‘কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায় রিচার্ড। লুকাস লম্বা লম্বা শ্বাস ফেলে। তার ব্যর্থতা, আজও পর্যন্ত রিচার্ডের আগাগোড়া কিছুই চিনতে এবং বুঝতে পারল না। অথচ পথ চলা পাঁচ বছরেরও অধিক সময় ধরে। লুকাসের পাশেই চুপসানো মুখ নিয়ে বসে ছিল আলাদিন। তুষ্ট হাসে লুকাস, এন্টারটেন করার জন্য একজন পেয়ে যায়। স্বরে রস মাখিয়ে ডাকল টান দিয়ে,
” আলাাাাাাাাাাাাাাাাা”
‘ বলতে দেরি আলাদিনের গাড়িতে থেকে বেরিয়ে যেতে দেরি হয় না। বোকা বনে যায় লুকাস। পরপর ফিক করে হেসে দেয়। হাসতে হাসতে ফোন বের কল করলো ” সুইটি ” নামে সেভ করা নাম্বারে।
‘অতিরিক্ত মদ খেয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাদের যখন মেয়েটির জামার ফিতে খুলতে যাবে তখনও বিকট শব্দে কেঁপে উঠল পুরো কক্ষ। বাসেদ ঘোলাটে চোখে সামনে তাকায়, ঝাপসা ঝাপসা লাগছে সবকিছু সামনের। আদৌ আদৌ দৃষ্টিতে যা অবলোকন হয় তাতে বুঝতে পারে কেউ ভাঙা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আপাদমস্তক কালোতে ঢাকা। অবয়ব অস্পষ্ট। শোনা যায় পায়ের স্বতঃস্ফূর্ত কদম। ভেসে এলো কারোর কর্কশ গলা,
“প্রস্টিটিউট?”
‘ভয়ে খাটের পাশে লুকিয়ে থাকা মেয়েটি কাঁপতে কাঁপতে মাথা নাড়ায়। ‘ ছ্যাৎ’ বলে নাকমুখ কুঁচকে ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলে রিচার্ড। আঙুলের ইশারায় বেরিয়ে যেতে বলল মেয়েটিকে। মেয়েটি দৌঁড়ে বেরিয়ে গেল। বাসেদ ঢলতে ঢলতে চেঁচাল, ” শা*লা তুই কে রে? আমি পাখি উড়িয়ে দিস। ”
“তোর বাপ। ”
‘হুংকারে কেঁপে উঠল বাসেদের ভিতর। ছুটে গেল নেশা। রিচার্ডের ক্রোধে মটমট করতে থাকা ধারালো চোয়াল দেখে ঢোক গিয়ে পিছাতে থাকে। অধল এলিয়ে বাঁকা হাসল রিচার্ড। এক পা এক পা করে এগোতে থাকে বাসেদের দিকে। পিছাতে পিছাতে খাটে পরে যায় কাদের। রিচার্ডের শরীর জুড়ে ভর করে পৈশা/চিক দা/নবীয় আত্মা। জেগে ওঠে ভিতরের নর/খাদক। রিচার্ড কাদেরের পুরু/ষাঙ্গের উপর পা দিয়ে চেপে ধরে ঝুঁকল ওর উপরে।
“কত দিন পালিয়ে থাকতি?”
‘গলা হতে নির্গত কর্কশ গোঙানির শব্দে দূর্বল গলায় উচ্চারণ করল বাসেদ, ” তুই?”
‘গুমোট পরিবেশ শোকে গেয়ে উঠল বাসেদের আর্তনাদে। গলা কাটা মুরগীর মতো কাতরাতে থাকে। রিচার্ড বুট পরিহিত পা দিয়ে মোচড়াতে থাকে বাসেদের পুরু/ষাঙ্গে। বাসেদের প্রতিটা আর্তনাদ শান্তির বহমান স্রোত বইয়ে দিচ্ছে রিচার্ডের ভিতর। রিচার্ড রুক্ষ কর্কশ গলায় অর্নথক হাসি হেসে চাপা স্বরে,”শামসুল কোথায়?”
‘ পঞ্চাশের উর্ধে বয়স্ক লোকের পক্ষে কখনো সম্ভব নয় রিচার্ডের ওজন ধারণ করা। তারউপর সব থেকে সংবেদনশীল জায়গায়। ছটফট করতে থাকে বাসেদ। গৌড়ানির সাথে অস্পষ্ট ভাবে আওড়ায়,
” বাং বাংলাদেশে আছে এখন। ”
‘বিরক্তে চ’ উচ্চারণ করে রিচার্ড। তিরিক্ষি মেজাজ দেখিয়ে বলল, “ধ্যাত !! যতই চাই অন্য দেশে শ্বশুর বাড়ি বানাতে ততই বাংলাদেশ টানে আমাকে।”
‘থেমে, হিং/স্রতা প্রভাবে বিড়বিড়িয়ে ওঠে পৈ/শাচিক আত্মা,”নিজের ফাঁদে নিজেই মর।”
ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ১৭
‘কোটের ভিতর থেকে শিশিটা বের করে বাসেদের চিবুক শক্ত হাতে চেপে ধরে ফাঁক করে মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দিল শিশির ভিতরের বিষাক্ত ঔষুধ। মুহূর্তেই মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বের হতে থাকে। খিচুনি ওঠে ছটফট করে থাকে বাসেদ। হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে নিস্তেজ দেহটা। তৃপ্তির হাসি দিল রিচার্ড। পরপর বাসেদের মুখের উপর এক দলা থুতু মেরে হনহনিয়ে বেরিয়ে যায় রিচার্ড। বুক চিঁড়ে বেরিয়ে গেল এক প্রশান্তিময় দীর্ঘশ্বাস।