মধ্য রাতের চাঁদ পর্ব ৪৩
মুসতারিন মুসাররাত
জীবনের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নয়। তবুও নিভান হাল ছাড়েনি। দু’দিন ধরে এক ডক্টরের পর আরেক ডক্টরের কাছে ছুটে গেছে। অনুরোধ করেছে–
‘কোনোভাবে কি ইউটেরাস না কে”টে শুধু টিউমারটা ফেলা যায়?’
প্রতিটি ডক্টরের একই উত্তর,
-” দেখুন মিস্টার নিভান, আপনার স্ত্রীর জরায়ুতে ইতিমধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এই অবস্থায় যদি টিউমার রেখে দেওয়া হয়, ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। যেখানে জীবন হুমকির মুখে, সেখানে ভবিষ্যতের সন্তান নেওয়ার আশা ধরে রাখা ঠিক হবে না। আমরা শুধু একটা পথই দেখছি জরায়ু কে’টে টিউমার অপসারণ।”
অবশেষে অপারেশন করা হয়। সময় গড়িয়েছে। এর মধ্যে কেটে গেছে দুই সপ্তাহ। পাঁচ-ছ’দিন হলো নীলাশাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হয়েছে। মেয়েটার মুখে এক ফোঁটা হাসি নেই। সারাক্ষণ রুমে বিষণ্ণ চিত্তে বসে থাকে। কেউ কথা বললে দুএকটা বলে, এছাড়া সবসময় পাথর বনে থাকে। মেয়েটা ভেতরে ভেতরে একদম ভেঙে পড়েছে।
বাইরে গোধূলির ম্লান আলো থাকলেও রুমের ভেতরটা অন্ধকারে ঢাকা। বিছানার হেডে হেলান দিয়ে নীলা আধশোয়া হয়ে চোখবুঁজে ছিল। এমন সময় রুমে আলো জ্বলে উঠতেই চোখের পাতা কুঁচকে এল। হাতের অফিশিয়াল ব্যাগটা সোফায় নামাতে নামাতে স্ত্রীর দিকে তাকাল নিভান। আর তাকাতেই বুকের ভেতরটা হুহু করে উঠল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে শার্টের হাতার বোতাম খুলতে খুলতে মৃদুস্বরে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-” লাইট না দিয়ে অন্ধকারে বসে আছো যে এই ভর সন্ধ্যায়।”
নীলার শুকনো খরখরে ঠোঁটজোড়া কেঁপে উঠল। নিঃসাড় গলায় উত্তর দিল,
-” যার গোটা জীবনটাই অন্ধকারে ঢেকে গেছে, তার জীবনে আলো জ্বালিয়েই বা কী হবে।”
-” নীলাশা বাচ্চাই জীবনের সব নয়। তুমি এত ভেঙে পড়ছো কেনো?”
কয়েক মূহুর্ত নিরুত্তর থেকে পরমূহুর্তেই আকস্মিক প্রশ্ন করে ওঠে নীলা,
-” তুমি কী আবার বিয়ে করবে নিভান?”
নিভান থমকে গেল। চমকে তাকাল স্ত্রীর দিকে। নীলা ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি টেনে বলল,
-” শুধু শুধু আমার জন্য তুমি কেনো বাবা হওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে? আমি কোনোদিন তোমাকে সন্তান দিতে পারব না। তোমাকে নিজের সন্তানের খুশি দিতে পারব না। সমস্যা তো আমার। আমার জন্য তুমিই বা কেনো সাফার করবে?”
নীলার সামনে বসল নিভান। নীলার হিম শীতল হাত দুটো নিজের হাতে নিয়ে গম্ভীর স্বরে বলল,
-” নীলা, আজ যা বলেছো আর কখনো বলবে না। আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি সুস্থ আছো, আমার পাশে আছো এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমার বাচ্চা চাই না।”
এতক্ষণ শক্ত হয়ে থাকা নীলার ঠোঁট ফেটে কান্না বেরিয়ে এল। ফুঁপিয়ে উঠল,
-” নিভান, আমার মনে হচ্ছে এবারে আমি বোধহয় তোমাকে হারিয়ে ফেলব।”
এক ঝটকায় নীলাকে বুকে টেনে নেয় নিভান। মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করতে বলল,
-” নীলাশা, তুমি আমাকে এই চিনো? আমার বাচ্চার প্রয়োজন নেই। আমি তোমাকে চাই, শুধু তোমাকেই। আমি তোমাকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চাই। আর বাচ্চা আমরা এডপ্ট নিবো। তাহলেই তো সমস্যা সলভ হয়ে যাবে।”
নীলা মাথা নাড়ল। কান্না ভেজা গলায় বলল,
-” তা হয় না নিভান। তা হয় না। নিজের রক্তের সন্তান, নিজের শরীরের বাচ্চার সাথে যে অনুভূতি জড়িয়ে থাকে, সেটা অন্যের বাচ্চাকে মানুষ করে পাওয়া যায় কী? নিজের র*ক্ত বলেও একটা কথা আছে।”
নীলা ঝরঝরিয়ে কেঁদে উঠল। ফাপর নিয়ে বলে ওঠে,
-” নিভান এ কোন পাপের শাস্তি আমি পাচ্ছি? নিয়তি কেনো এতটা নিষ্ঠুর হলো। একটা বাচ্চা হওয়ার পরে এই অসুখটা হলেও তো আমি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। নিভান তুমি তো জানো আমি শুরু থেকেই একটা বাচ্চা চাইতাম। ছোট্ট একটা বাচ্চা, যে তোমার আর আমার ভালোবাসায় এই পৃথিবীতে আসবে। আমাকে মা বলে ডাকবে। আমি কত আদর করব! আমি একটা বাচ্চা নিয়ে কত কী ভেবে রেখেছিলাম। একটা অসুখ, একটা অসুখ, আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল। আমি এই কষ্ট সহ্য করতে পারছি না নিভান। পারছি না।”
নীলার আহাজারিতে রুমের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। এদিকে নোনতা জলে নিভানের খোঁচা খোঁচা দাড়ি ভিজে গেল। আজকাল চোখের পানি বেঈমানি করছে। তারও কী কম কষ্ট হচ্ছে নাকি? ছেলে মানুষ বলতে পারে না, প্রকাশ করতে পারে না। সেও যে ভেতরে ভেতরে গুমরে ম’রছে। ইসলামী ব্যাংকে অফিসার পোস্টে ভালো অ্যামাউন্টের বেতনের চাকুরী করে সে। এ বাড়িতে সবার থেকে মাস গেলে সেই বেশি টাকা পায়। আল্লাহর রহমতে অর্থের অভাব কোনোদিন হবে না। তবে সারাজীবনের জন্য একটা বড় অপূর্ণতা রয়ে যাবে। নিভান নিজেকে সামলে বলল,
-” নীলাশা শান্ত হও। নীলাশা তুমি নিজেকে কেনো দায়ী ভাবছো? আজ যদি আমার কোনো সমস্যা হতো। এমনও তো হতে পারত। আর অনেক মানুষ আছে যাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই কোনো সমস্যা নেই, অথচ তাদের সন্তান হয় না, হয়নি। আল্লাহ কাউকে ছেলে দিয়ে , কাউকে মেয়ে দিয়ে, কাউকে বা উভয়ই দিয়ে, আবার কাউকে সন্তান না দিয়ে পরীক্ষা করেন। এটা আমাদের জন্য পরীক্ষা। ধৈর্য্য ধরো। সন্তান সন্ততিই জীবনের একমাত্র টার্গেট নয়।”
নিভানের পিঠের শার্ট আঁকড়ে ধরে বুকে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে উঠছে নীলা। নীলার মাথাটা বুকে চেপে ধরে বলল নিভান,
-” নীলা আমার উপর ভরসা রাখো, আমি তোমাকে ভালোবাসি, সারাজীবন এভাবেই ভালোবেসে যাবো। ভুলেও আর উল্টাপাল্টা কথা মাথায় আনবে না।”
এক মূহুর্ত থেমে নরম কোমল স্বরে ফের বলল,
-” আমার কাছে বাবা হওয়ার স্বপ্নের চেয়েও বড় তুমি। তুমি থাকলেই আমার পৃথিবী পরিপূর্ণ। তোমাকে নিয়েই আমি বাকিটা জীবন পার করতে চাই। আমার বাচ্চা দরকার নেই। আমার সুখ, আমার স্বপ্ন সবকিছুই শুধু তোমাকে নিয়েই।”
সারাদিন অফিসেই থাকে প্রীতি। সন্ধ্যা থেকে সকালটুকু বাড়িতে কা”টে তার। সবার সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ শো করে চলছে। তবে সত্যি বলতে তার দম আঁটকে আসছে। আর একটা সপ্তাহই আছে সে। এদিকে এই এক সপ্তাহের মধ্যেই সে প্রত্যাশার ব্যাপারটা যেভাবেই হোক সবার সামনে আনবে। আনবে মানে আনবেই। এদিকে বাড়ির সবাই এ ক’দিন নীলাশাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। তাই সুযোগ পেয়ে উঠেনি প্রীতি। এ কদিনে শাশুড়ির মনও বেশ বুঝে ফেলেছে। শাশুড়ি যে বিষয়টা পজিটিভলি নিবে না তা সুচতুর প্রীতি নিশ্চিত। নীলাশার সাথে প্রত্যাশার সম্পর্কও সুমধুর নয়। এখানেও প্লাস পয়েন্ট। সে যেহেতু সুখী হয়নি। অন্যের সুখ তার সহ্য হচ্ছে না। যে করেই হোক সেই সুখে আ”গুন ধরলেই যেন একটু শান্তি মিলবে। মনেমনে প্রীতি ছক কষছে। কীভাবে বিষয়টা সবার সামনে উপস্থাপন করবে?
নীলা-নিভান রুমে বাকিরা ড্রয়িংরুমে। নীরব অফিসে। প্রত্যাশা চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে অন্যহাতে ফোন স্ক্রল করছে। এক প্রতিবেশী এসেছে। হঠাৎ বলে উঠলেন,
-” নিভানের মা বউমা গুলান দারুণ পেয়েছে। মাশাআল্লাহ মেজো বউ তো দেখছি খুবই সুন্দরী। বড় বউও সুন্দরী। তবে সেই হিসেবে ছোট বউটা একটু..”
এতটুকু বলে থামলেন মহিলা। প্রত্যাশা কানে শুনেও না শোনার ভান ধরে রইল। নীহারিকা বিরক্ত চোখে তাকালেন। মহিলা হাসার চেষ্টা করে বললেন,
-” না মানে ছোট ছেলেটা যত সুন্দর, সেই হিসেবে একটু কম আরকি। তবে মন্দ না।”
নীহারিকা প্রত্যুত্তরে বলেন,
-” কারো সৌন্দর্য চোখে মাপা যায় না। আপনার চোখে হয়তো কম বেশি লাগে, কিন্তু আমাদের চোখে তিনজনই সমান। আসল সৌন্দর্য চরিত্রে, মনের ভেতরে। সেটা হয়তো চোখে ধরা পড়ে না।”
মহিলা সুর মিলিয়ে বললেন,
-” হ্যাঁ, হ্যাঁ তা তো ঠিকই।”
আরও কয়েকটা কথা বলে এবারে একটু ফিসফিসিয়ে বললেন,
-” ভাবী আপনার বড় বউমার কথা শুনলাম। শুনে তো খুব খারাপ লাগলো। বেশি খারাপ লাগছে নিভানের জন্য। তা ভাবী ছেলেকে আর বিয়েশাদী দিবেন না? ছেলে তো সুস্থ-সক্ষম বউয়ের জন্য ছেলে কেনো নির্বংশ থাকবে। এই ব্যাপারে আপনি কী বলেন? আপনার মতামত কী?”
প্রত্যাশার জিভের আগায় কথা চলে আসে। তবে ভাবে দেখি শাশুড়ি কী উত্তর দেয়? অবশেষে কথাগুলো পেটেই চালান করে নেয় প্রত্যাশা। নীহারিকা মুখটা গম্ভীর করলেন। এই হয়েছে প্রতিবেশীরা সমবেদনা জানানো তো নয়, আরো যেন মজা নেয়। বিকেলে একবার একজন তো নীলার সামনেই নিভানের বিয়ে নিয়ে কথা বলছে। সেই থেকে নীলার মুখটা বেশি বিষণ্ণ ঠেকছে। নীহারিকা অসন্তুষ্ট চাহনিতে চেয়ে বললেন,
-” আজ যদি নীলাশা আমার মেয়ে হতো তাহলে আমি কী করতাম ভাবি? উত্তরটুকু আপনার কাছেই রাখলাম। অসুখ-বিসুখ আল্লাহর দেয়া, আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করেন। এতে তো নীলাশার হাত নেই। নীলাশা সুস্থ আছে এই অনেক। আমার ছেলের জীবন, বাকিটা সে যা ভালো বুঝে করবে। আমি একজন মা যেমন তেমন একটা মেয়েও ছিলাম। আজ না হয় প্রৌঢ়া হয়েছি। এই সময় একটা মেয়ের মানসিক অবস্থা কেমন থাকে এতটুকু বুঝতে পারি। আর আপনারা এই মূহুর্তে কীভাবে এসকল কথা তোলেন? তাও আবার কেউ কেউ ওর সামনেই বলে।”
কথাগুলো শুনে প্রত্যাশার ভেতর শাশুড়ির জন্য শ্রদ্ধা কগুন বেড়ে গেল। মহিলা মুখটা থমথমে করে দ্রুত চলে যায়। মহিলা যাওয়ার পর শর্মিলা ঝাড়লেন খানিক।
ড্রয়িংরুমের দেয়ালে টানানো ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে মনেমনে কিছু হিসাব করছে প্রত্যাশা। ডেট দেখে কপালে চিন্তার ছাপ পড়ে। ঠোঁট কামড়ে ভাবতে থাকে। এরমধ্যে ভাবনার সুতো ছিঁড়ে ইচ্ছের ধাক্কায়। ছোট্ট প্রজাপতি ক্লিপটা প্রত্যাশার সামনে ধরে অন্যহাতে প্রত্যাশার হাত নাড়িয়ে বলল,
-” এই এই এটা লাগিয়ে দাও তো। খুলে গেছে।”
প্রত্যাশা মিষ্টি হেসে চুলে লাগিয়ে দিতে থাকে। শর্মিলা ফোড়ন কাটলেন,
-” এই যে ইচ্ছে আপি, এই এই আবার কেমন, হ্যাঁ? আমি কিন্তু লক্ষ্য করেছি তুমি প্রত্যাশাকে এভাবেই ডাকো। কাকিমণি বলো না কেনো? মাম্মা শেখায়নি?”
ইচ্ছে ঘাড় নেড়ে বলে,
-” নাহ।”
-” আচ্ছা এবার থেকে প্রত্যাশাকে কাকিমণি ডাকবে, কেমন?”
ইচ্ছে ঘাড় কাত করে ‘আচ্ছা’ বলে। ইচ্ছের গাল টিপে বলে প্রত্যাশা,
-” এইযে পিচ্চি কিউটিপাই আমার বরকে তো পাপা ডাকো। পাশে থাকা আমাকে যখন কাকি ডাকবে তখন তো নিজেকে পরপর লাগবে। মানাবে না। তারচেয়ে আমাকে তুমি মামণি ডাকবে। বুঝেছো?”
-” ওকে।”
বলে ইচ্ছে বায়না করল,
-” মাম্মা পায়েস খাবো।”
প্রীতি ফোন স্ক্রল করছিল। বিরক্ত হয়ে বলল,
-” এখন?”
নীহারিকা বললেন,
-” ফ্রিজে আছে। একটু গরম করে দাও।”
এরমধ্যে নীরব আসে। হাতে আনিশা আর ইচ্ছের জন্য চকলেট থাকে। ওদের দুজনকে দিতে দিতে প্রত্যাশার দিকে একপল তাকায়। মায়ের সাথে দু একটা কথা বলে রুমে যেতে গিয়ে ঘাড় ফিরিয়ে প্রত্যাশার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে। প্রত্যাশাও চোখের ইশারায় উত্তর দিল। বোঝাল— আপনি যান, আমি আসছি।
অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে কফি খাওয়া নীরবের নিত্যদিনের অভ্যাস। প্রত্যাশা উঠে সোজা কিচেনে যায় কফি বানাতে। কফি বানাতে ব্যস্ত প্রত্যাশা। এরমধ্যে প্রীতি মেয়ের জন্য পায়েস গরম করতে আসে।
ধোঁয়া ওঠা কফির মগ নিয়ে যেতে গিয়ে কী মনে করে প্রত্যাশা টেস্ট করতে হঠাৎ ঠোঁট ছোঁয়াল। সাথে সাথে নাকমুখ সিঁটকে বিড়বিড় করে,
-” ইশশ্! কী তেতো। এএসপি সাহেব ব্লাক কফি খায় কী করে! এইজন্য তো মুখের কথাও রষকষহীন তেতো।”
পাশ থেকে প্রীতি সরু চোখে তাকিয়ে হঠাৎ জিজ্ঞেস করল,
-” ওয়েট, কফিটা নীরবের জন্য বানালে, না?”
-” হুঁ।”
প্রীতি ভুরু কুঁচকে বলল,
-” মানে, নিজের ঠোঁট ছোঁয়ানো কফি এখন অন্যকে দিবে, এঁটো করে? বাহ, কী দারুণ আদব-কায়দা তোমার!”
প্রত্যাশা চোখমুখ কুঁচকে বলল,
-” আরে এ আবার এমন কী? যার রোজকারের রুটিনেই আমার থুতু ইনক্লুডেড। তার কাছে একটা চুমুক কি খুব বেশি?”
প্রীতি বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করল,
-” হোয়াট?”
-” বলতে চাচ্ছি, যেখানে এএসপি সাহেব নিজেই রোজ থুতু যুক্ত চুমু খায়। সেখানে তার কফিতে আমার চুমুকে এঁটোর কী আছে? বরং মহব্বত বাড়বে, হুঁ।”
প্রীতি খুকখুক করে কেশে উঠল। প্রত্যাশা ভেংচি কে”টে সামনের চুল এক হাতে উড়িয়ে ভাব নিয়ে চলে গেল, মুচকি মুচকি হেসে। যেতে যেতে বিড়বিড় করল,
মধ্য রাতের চাঁদ পর্ব ৪২
-” শাকচুন্নী একটা। এরজন্য এএসপি সাহেবের কাছে কী বকুনিটাই না খেতে হয়েছিল। ভাই-বোন দু’টো মিলে আমাকে উনার কাছে খাঁটো করেছিল না। এবার দ্যাখ আর জ্বল। সাথে লুচির মতো ফোল।”