মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব ২৫

মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব ২৫
মুশফিকা রহমান মৈথি

ঐন্দ্রিলা মুখখানা তুলতেই ঘুমচোখে দেখলো অভ্র তার দিকে তাকিয়ে আছে। বাঁকা হেসে বললো,
“এখন কে কার ইজ্জত লুটছে!”
অভ্রের টিটকারিমূলক কথায় নির্বাক হয়ে চেয়ে রইলো ঐন্দ্রিলা। অভ্রের শান্ত দৃষ্টি তার উপর নিবিদ্ধ। ঐন্দ্রিলা চোখ নামিয়ে নিলো। থমথমে স্বরে বলল,
“আমি কিভাবে এখানে আসলাম?”
“আমি কি জানি! আমি তো এক বিন্দু সরি নি”

অভ্রের উত্তরে ঐন্দ্রিলার মুখখানা রক্তিম হয়ে উঠলো যেন। লজ্জায় মুখ থেকে তর্ক বের হলো না। ফলে সে সরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলো। ঐন্দ্রিলা উঠতে নিলেই কোমড়ের অস্থি চেপে ধরলো অভ্র। ফলে মুখ থুবড়ে পড়লো সে অভ্রের বুকে। অভ্র তার মুখের উপর আসা এলোমেলো চুলগুলোকে আলতো হাতে সরিয়ে দিলো। গালে রুক্ষ্ণ আঙ্গুল ঘুরাতে ঘুরাতে বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“পালাচ্ছিস কোথায়! খারাপ ছেলের বুকের উপর শুয়ে ভস ভস ঘুমানোর সময় তো একবারও মনে পড়ে নি, এই ছেলেটা যেকোনো সময় তোর ইজ্জত লুটে নিবে!”
ঐন্দ্রিলা চুপ করে রইলো। বিব্রতবোধ হচ্ছে। মুখখানা লাজে রক্তিম। অভ্র হাসলো নিঃশব্দে। তার রুক্ষ আঙ্গুল তখন বিচরণ করছে ঐন্দ্রিলার গালে। গাঢ় স্বরে বললো,
“তুই আমার স্ত্রী, আমার তোর উপর অধিকার আছে। তোকে ছুতে হলে আমার মদ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। তোকে চুমু আমি যখন তখন খেতে পারবো।”
বলেই ঐন্দ্রিলার ঠোঁটের খতকে চুমু খেলো অভ্র। ঐন্দ্রিলা চমকালো। অভ্রের গাঢ় চুম্বনে শরীর কাঁপলো। বিহ্বল হলো দৃষ্টি। অভ্র তার গাল ছুয়ে গাঢ় স্বরে বললো,

“তোর শরীরের খাঁজে নিজের অধিকার জমাতে আমার একমিনিটও সময় লাগবে না ঐন্দ্রি। কারণ পুরোদস্তর আমার। শুধু আমার। তুই জানিস তুই আমাকে কতটা যন্ত্রণা দিস! আমি ভালো হতে চেয়েছি। আমি তোকে সময় দিয়েছি। ধৈর্য ধরেছি। আমার জানোয়ার সত্ত্বা তোকে দেখাই নি। অথচ আমি খারাপ। বেশ! আমি খারাপ ই সই। লাগবে না আমার তোর ভালোবাসা। লাগবে না আমার সংসার। এখন থেকে আমি তোর কাছে তখন আসবো, যখন তুই চাইবি। এই সংসার, এই সংসার খেলা এখন থেকে বন্ধ। এই সম্পর্ক এখন থেকে স্থগিত। যেদিন তুই মনশহরে নিমন্ত্রণ দিবি সেদিন ই এই মাহাবুল হক অভ্র তোর মনশহরে প্রবেশ করবে। নিজ থেকে আমি চেষ্টা করবো না। আজ থেকে আমার পুতুল মুক্ত”

ঐন্দ্রিলা বিভ্রান্ত চোখে তাকিয়ে রইলো। অভ্র তাকে বুকে থেকে নামিয়ে দিলো। পকেটে হাত দিয়ে হনহন করে বাথরুমে চলে গেলো সে। ঐন্দ্রিলা সেখানে ঠায় বসে রইলো। এমনটাই কি সে চাইছিলো না? তাহলে হুট করে কেনো শেষ কথাটা কানে বাজছে। সংসার সংসার খেলাটা কি তাহলে সত্যি সত্যি শেষ? তার দগ্ধ করবে না কেউ! অবশেষে কি শান্তির দেখা মিলবে? যদি তাই হয় তাহলে খুশি হতে এতো কিসের দ্বিধা? ঐন্দ্রিলার মনে হলো কোথাও একটা শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। সে নিজেও জানে না সেই শুন্যতাটা কিসের! ঐন্দ্রিলা এখনো বসে রয়েছে। ফাঁকা মস্তিষ্ক। যেনো বিকারহীন কোনো জলছবি।

দোকানের সব থেকে ভেতরের ঘরে বসে রয়েছে অভ্র। বেশি বড় নয় এই রুমটি। ছোট রুম। এসি লাগানোর উপায় নেই। কারেন্টের লাইনে বেশি লোড দেওয়া যাবে না। মাথার উপরে একটা ফ্যান চলছে। তাও খুব ক্ষীণ গতিতে। কত পুরোনো হবে তা জানা নেই। ক্যাপাসিটর পাল্টাতে হবে। জানালাগুলো খোলা। বৃষ্টি হচ্ছে ঝমঝম করে। এই সময়ের এক দোষ। কথা নেই বার্তা নেই ধুমধাম মন পরিবর্তন। এই যে একটু আগের কথা কি ঝলমলে স্বর্ণালী রোদ ছিলো। অথচ এখনই মেঘেরা বিদ্রোহ করেছে। বৃষ্টি হলেও গরম কমছে না। ভ্যাপসা ভাবটা কাটছে না। গতমাসের বিলগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে টেবিলে। সেগুলো দেখতে হবে।

পাশে চায়ের কাপ। থেকে থেকে ঠান্ডা হয়ে গেছে। আজকের চা বোধ করি অভ্রের খাওয়া শ্রেষ্ঠ অখাদ্য চায়ের লিষ্টে নাম লিখিয়েছে। চিনির স্তুপে এক মুঠো চায়ের কষ পাতা। চুমুকে জিহবা থেকে শুরু করে অন্তরের ভেতরটাও তিতকুটে বিশ্রী স্বাদে ছেয়ে গেছে। এর উপরে চাপ সৃষ্টিকারী নতুন সমস্যা এই মাসে খরচাটা বেশি হয়েছে। মাসের শেষে নতুন দোকানের এডভান্স করার কথা ছিলো। ছিলো তবে ব্যাটারটা এখন কতদূর আগাবে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ এখন হাতে কোনো টাকা নেই। ব্যাপারটা খুব চিন্তার। কিন্তু অভ্র খুব একটা চিন্তা করছে না। কারণ সে মোটামোটি আত্মবিশ্বাসী দাদাকে একটু নাকানী চুবানি সে খাওয়াতে পারবে। দাদার স্বৈচারিতা স্বভাব আর দম্ভকে চুরমার করতে পারবে সে। এতোটুকু বিশ্বাস আছে।

বিল্লালের যদিও চিন্তার শেষ নেই। সে প্রতিদিন টাকার জন্য স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তার চিন্তার শেষ নেই। অবশ্য অভ্রের চিন্তা হচ্ছে না সেটা নয়। চিন্তা হচ্ছে। চিন্তাটা টাকার নয়। চিন্তার নাম ঐন্দ্রিলা। ছোটবেলা থেকেই এই একটি চিন্তা তার মস্তিষ্ককে গ্রাস করে রেখেছে। অভ্র, একজন আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, জেদি, দাম্ভীক ছেলে। তার জেদ, দম্ভ তাকে সবার থেকে আলাদা করেছে। কোনোকিছুর প্রতি তার আগ্রহ ছিলো না। ছিল না বলাটা অতিরঞ্জিত। ছিলো তবে কম। শখের খেলনা কিনে দিলেও তা এক ঝটকায় ভেঙ্গে ফেলতো সে। অথবা কখনো দশ মিনিট খেলতেই বিরক্তি চলে আসত। সেই খেলনা তখন পড়ে থাকতো ধুলোর আস্তরণে। সেই আস্তরণ কখনো ফিরেও দেখতো না অভ্র। তার আগ্রহ নেই। সমবয়সীদের সাথেও খুব একটা মিশতো না।

এড়িয়ে যেতো, একাকীত্ব ভালোবাসত। এর মাঝে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলো ঐন্দ্রিলা। ছোট, গোলগাল মুখ, কিঞ্চিত খাঁড়া নাক আর গোলগোল বিস্ময়ে ভরা চোখ। একেবারে পুতুল। হ্যা পুতুল ই সে। বিশ্বাস করে তার কান্না। দোকানের পুতুলগুলো এভাবে কাঁদতে পারে না। অভ্রের এখনো মনে আছে সে নিষ্ঠুরভাবে ঐন্দ্রির শখের পুতুল ভেঙ্গে দিয়েছিলো। ঐন্দ্রি রেগেমেগে ওর হাত কামড়ে রক্ত বের করে দিয়েছিলো। অথচ অভ্র ছিলো নির্বিকার। তার ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে না। সে শুধু খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে ছিলো। সেই প্রথম তীব্র আগ্রহ জন্মেছিলো এই মেয়েটির প্রতি। তাকে রাগাতে ভালো লাগে, কাঁদাতে ভালো লাগে।

এই কাজে বিরক্তি আসে না, একঘেয়েমি আসে না। মেয়েটি যেন তার একান্ত পুতুল। সেই অধিকারবোধটা কখন তৈরি হলো হয়তো অভ্র খেয়াল করে নি। খেয়াল করতে চায় নি। তবে একটা জিনিস সে জানে ঐন্দ্রিলাকে কাঁদানোর অধিকার শুধু তার। তাই তো যখন সৌরভ তার এই দূর্বলতার সুযোগ নিতে চেয়েছিলো সে মোটেই সহ্য করে নি। তবে তার এই দূর্বলতাকে সবাই প্রেম নামে আখ্যা দিয়েছে বহুবার। প্রেম কি জানে না অভ্র। ঐন্দ্রিলার প্রেমে পড়া হয়তো ফরজ অভ্রের জন্য। রুপবতী মেয়ে, হাসলে যেকোনো পুরুষের হৃদয় নাড়িয়ে দিবে হয়তো। আর কাঁদলে মনে হয় সব কিছু উজার করে দিলেও আফসোস নেই। কিন্তু তার প্রেমে কি এই মাহাবুল হক পড়েছে? যে তার নিজস্ব তার প্রেমে নতুন করে পড়ার কোনো স্বার্থকতা দেখে না অভ্র। বড় হবার সাথে সাথেই দাদার স্বৈচারিতা যেনো মাত্রাতিরিক্ত বাড়লো। ব্যাবসা বড় করার জন্য অভ্র যখন তার কাছে টাকা চাইলো তিনি শর্ত জুটে দিলেন “বিয়ে”।

বিয়ে এই শব্দটার অর্থই বাঁধন। একজনের সাথে সারাটা জীবন কাঁটানো কি সহজ কথা? স্বাধীনচেতা মনকে সাংসারিক একটা কালকুঠুরীতে আটকানো কি সহজ কথা? যে অভ্র কখনো নারী সত্ত্বায় মত্ত হয় নি সে অপরিচিত অজানা একটি মানুষের সাথে কি করে তার জীবন কাটাবে। বিয়ে কি ছেলে খেলা? কোনো আগ্রহ, ইচ্ছে, আকর্ষণ ব্যাতীত কি করে বিয়ে নামক ধাধায় আটকাবে। তখন প্রথম যে নামটা স্মরণ হলো সেটা হলো ঐন্দ্রিলা। টক-ঝাল সম্পর্কটায় মিষ্টতা না থাকলেও তাদের মধ্যে কোনো একঘেয়েমি নেই। অভ্র কখনো ঐন্দ্রিলার থেকে বোর হয় না। সে একটা এডভেঞ্চার যেনো। ফলে অভ্র বিয়েতে রাজী হয়ে গেলো।

কিন্তু এর মাঝে দাদা আবারোও তার স্বৈরাচারিতা দেখাচ্ছে। সেও হার মানবে না। সংসারের মত সংসার করে সে দেখিয়ে দিবে দাদাকে। ঐন্দ্রিলার সাথে সংসার করতে হলে মেয়েটির তাকে ভালোবাসতে হবে। উথাল পাথাল ভালোবাসা। এখানে মার খেলো অভ্র। ভালোবাসা ছাড়াও তো সংসার হয়। জোর করে, মতের বিরুদ্ধে। কিন্তু অভ্র সেটা চায় না। ঐন্দ্রিলা এমন মানুষ যাকে জোর করলে সে কেঁচোর মতো গুটিয়ে যায়। তাই সে ধৈর্য্য ধরেছিলো। ভালো ছেলে হতে চেয়েছে। ঐন্দ্রিলার মন গলাতে চেয়েছে।

অভ্রের খুব ইচ্ছে করে এই মানুষের মুখোশ ছিড়ে নিজের মধ্যের হিংস্র জানোয়ারটাকে বের করে আনতে। ঐন্দ্রিকে নিজের করে নিতে। তার প্রতিটা নিঃশ্বাসে অভ্রের স্পর্শ লিপ্ত করতে। ঐন্দ্রিলার সর্বত্র নিজের আধিপত্য খোদাই করে নিতে। কিন্তু সে তা করে নি। তার বিশ্বাস ছিলো একদিন ঐন্দ্রিলার চুলের গন্ধে অভ্রের সকাল হবে। অভ্রের নামের শক্ত শেকলে তাকে আটকে ফেলবে। ভেবেছিলো মেয়েটির নরম হৃদয়ে দয়া হবে। কিন্তু মেয়েটি সেই সুযোগ দেয় নি। এখন তাই নিজের পরিকল্পনা বদলেছে। এখন ঐন্দ্রিলার কাছে যাবে না সে, তাকে বিরক্ত করবে না। তার প্রতি ভালোবাসা দেখাবে না। কথায় আছে মেয়েদের কৌতুহল তাদের ডুবায়। ঐন্দ্রিলা কৌতুহলপ্রবণ। সে এই জালে পড়বেই। নিশ্চিত। এর মাঝেই প্রায় ছুটে প্রবেশ করলো বিল্লাল। অভ্রের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,

“তুই কি লোন নেবার কথা ভাবছিস?”
অভ্র চোখ তুলে তাকালো। ভ্রু কুঞ্চিত হলো। মেজাজ খারাপ হলো কিঞ্চিত। অভ্রের মেজাজ চট করে খারাপ হয়ে যায়। তাই এটা নতুন নয়। সে নির্বিকার হয়ে বললো,
“হ্যা”
“এত্তোগুলো টাকা তুই কেনো নিচ্ছিস? শোধ দিবো কি করে আমরা?”
“সে চিন্তা আমাকে করতে দে। আমার দাদা আছে কেনো?”
“মানে?”
অভ্র কিছু সময় চুপ থেকে বললো,
“বিয়ে করিস নি তো। তাই এসব বুঝবি না। বাদ দে”
“বুঝিয়ে বল, তাহলে তো বুঝছি”

“লং কথা শর্টে, আমার বাচ্চা হলে দাদা আমাকে টাকা দিবেন। তখন লোন পরিশোধ করে দিব”
ভাবলেশহীন উত্তর। বিল্লালের মেজাজ খারাপ হলো তীব্রভাবে। রোষানলে দগ্ধ স্বরে বললো,
“তুই কি তাহলে এজন্য বিয়ে করেছিস? টাকার জন্য?”
অভ্র উত্তর দিলো না। বিল্লাল তার নিস্তব্ধতায় আরোও রেগে গেলো। হিনহিনে স্বরে বললো,
“আমি তো ভুলে গিয়েছিলাম সে তো তোর পুতুল। তা বলি খেলা শেষে বুঝি এবারো তার স্থান হবে ধুলির স্তুপে? খেলনাই তো কি যায় আসে তার হৃদয় ভাঙ্গলো কি না। হোক সেই মেয়েটা কিন্তু আবেগপ্রবণ”
বিল্লালের কথাগুলো মোটেই ভালো লাগছে না। খুব বিশ্রী ভাবে বাজছে যেনো। অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো সে বিল্লালের দিকে কিন্তু বিল্লালের ভাব পরিবর্তন হলো না। মুরিদ আজ পীরকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এমনটাই তো হবার ছিলো।

রাতের নিরবতা জানান দিচ্ছে তার গভীরতা। খাবার নিয়ে বিসে রয়েছে ঐন্দ্রিলা। অপেক্ষা বেয়াদব ছেলেটির। সে এখনো আসে নি। কেনো যেন সেও ঘুমাতে পারছে না। চিন্তা হচ্ছে। তাই যখন কলিংবেল বাজলো ছুটে গেলো সে। অভ্র ক্লান্ত পায়ে প্রবেশ করতেই প্রশ্ন ছুড়লো,
“এত্তো দেরি করলি কেনো? জানিস কত সময় ধরে বসে আছি”
“কাজ ছিলো”
অভ্রের নির্বিকার উত্তরে ঐন্দ্রিলা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চাইলো। ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো,

“ফ্রেশ হয়ে আয়। আমি খাবার বাড়ছি”
“খাবো না, খিদে নেই”
এবার আর সহ্য হলো না। অভ্রের কথায় গা জ্বলে উঠলো ঐন্দ্রিলার। দাঁতে দাঁত পিষে বললো,
“নাটক কম কর পিও”
ঐন্দ্রিলার এই অধিকারবোধটা মন্দ লাগলো না অভ্রের। কিন্তু তার ভাবমূর্তির পরিবর্তন হলো না। ড্যামকেয়ার ভাব নিয়ে খেলো। তারপর বিনাবাক্যেই শুতে চলে গেলো। দুজনের মাঝের দূরত্বটা বড় নয়। কিন্তু মনজোড়া যেনো বহুদূরে।

পিউ এর ডেঙ্গু এখন সেরে গেছে। বহুদিন পর কলেজ এসেছে। এই কয়দিন আহাশ এবং নীলাদ্রি এই দুটো মানুষের যন্ত্রণায় সে বিরক্ত ছিলো। তাদের অতিরিক্ত যত্ন বিরক্তির কারণ ছিলো যেন। বাধ্য হয়ে দরজায় সাইনবোর্ড ঝুলাতে হলো,
“এখানে পাহাড়ি এবং জার্মানি পাগলের প্রবেশ নিষিদ্ধ”
কলেজে এসেও শান্তি নেই কারণ ঐন্দ্রিলার মন ভালো নেই। সে যেনো নিজের চিন্তায় কোথাও হারিয়ে গেছে। তাই জোরপূর্বক তাকে নিয়ে কলেজ বাঙ্ক করে এসেছে ফুচকা খেতে। অনেকদিন কেনাকাটাও হয় না। নিউমার্কেটের কাছে যেতেই একটা রেস্টুরেন্টের কাচের দিকে তাকাতেই পিউ বিস্মিত হলো। অন্যমনস্ক ঐন্দ্রিলাকে ধাক্কা দিয়ে শুধালো,
“ওটা অভ্র না?”

মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব ২৪

অভ্রের নাম শুনতেই তড়াক করে চাইলো ঐন্দ্রিলা। সাথে সাথেই বিষন্নতা ছেয়ে গেলো হৃদয়। হ্যা সেই রেস্টুরেন্টের কাঁচের ওপারের মানুষটি অভ্র। তার পাশে একজন রমনী। তারা হাসছে…….

মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব ২৬