মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব ৩৯
মুশফিকা রহমান মৈথি
“মরে গেলে আসিস”
এই বাক্যটাই যেন যথেষ্ট ছিলো অভ্রকে নাস্তানাবুদ করতে। একপ্রকার ছুটে এলো সে। উন্মাদের মত জড়িয়ে ধরলো ঐন্দ্রিলাকে। মুহূর্তবাদে ঐন্দ্রিলা অনুভব করলো তার কাঁধে উষ্ণতরলের উপস্থিতি। অভ্র কাঁদছে? মুখখানা ঐন্দ্রিলার গলার কাছটায় মিশিয়ে রেখেছে অভ্র। তার উষ্ণ নিঃশ্বাস চিরে যাচ্ছে শুষ্ক চামড়া। হাতের বাধন শক্ত কিন্তু নমনীয়, পাছে মেয়েটি ব্যাথা করে। এতো আগলে কাচের পুতুলকেও কেউ রাখে না। গরম নোনাজলে ভিজতে লাগলো ঐন্দ্রিলার গলা, কাঁধ। কেউ কোনো কথা বলছে না। একইভাবে বসে রয়েছে তারা। ঐন্দ্রিলা তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। ফলে হাতের বাঁধন আরোও শক্ত হলো। ঐন্দ্রিলার শুষ্ক, ফাঁটা ঠোঁটের কোনায় উঁকি দিলো হাসি। মনশহরে বৃষ্টি হচ্ছে; শীতল, স্নিগ্ধ বর্ষণে ধুয়ে যাচ্ছে অভিমানের ধুলো। সাবেরার উদ্দেশ্যে কানন কন্ঠ খাদে নিয়ে বললো,
“বলেছিলাম না, আমার ছেলেকে ছাড়া তোমার মেয়েও ভালো নেই। বিশ্বাস তো করলে না”
সাবেরা উত্তর দিলো না। রুদ্রমূর্তিতে বেরিয়ে গেলো। কাননও বিরহের আগুনে দগ্ধ মানবমানবীকে একা ছেড়ে দিলো। তাদের বিশেষ মুহূর্তে কাবাবে হাড্ডি হবার ইচ্ছে নেই তার। রুমে শুধু অভ্র, ঐন্দ্রিলা এবং তাদের না বলা মহাকাব্যের দীর্ঘশ্বাস।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সময় গড়ালো কতখানি জানা নেই। অভ্র এখনো জড়িয়ে ধরে রেখেছে ঐন্দ্রিলাকে। পিপাসা মনের ঐন্দ্রিলা নামক তৃষ্ণা মেটাচ্ছে সে। গত এক সপ্তাহে তিল তিল করে জমানো তৃষ্ণাটা এখন প্রবলভাবে জানান দিচ্ছে। ঐন্দ্রিলাকে ছেড়ে দিলে সে পিপাসায় কাতর হয়ে হয়তো মরেই যাবে। ঐন্দ্রিলা অভ্র চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে খুব ক্ষীন ভাবে। শরীরে শক্তি নেই। তবুও ভালো লাগছে। তখন দরজায় টোকা পড়লো। কর্কশ নারী কন্ঠ শোনা গেলো,
“আসছি?”
কন্ঠটা নার্সের। অভ্র না চাইতেও ছেড়ে দিল ঐন্দ্রিলাকে। মহিলা অনুমতির অপেক্ষা করলো না। ঢুকে পরলো। এসেই খ্যাকিয়ে উঠলো,
“আপনি রোগীর বেডে কেনো বসেছেন, সরেন”
প্রায় রুক্ষ্ণভাবেই সরিয়ে দিলো অভ্রকে। অভ্র বিনাবাক্যে সরে গেলো। ভুলে গিয়েছিলো তার স্ত্রী এখনো সুস্থ নয়। এখনো অনেকক্ষণ বসে থাকতে পারে না ঐন্দ্রিলা, শরীরে একটুও জোর নেই। নিজে নিজে উঠতে পারে না। হাসপাতালের সেমি ইলেক্ট্রিক বেডটাই ভরসা। প্রযুক্তি কত এগিয়ে তাই না? একটা বাটন চিপলেই খাট উঠে যায়। যাক গে, এতে সুবিধা হয়েছে। কসরত করে উঠে বসতে হয় না। মহিলা বাটন চেপে একটু তুললো বেডটা। হাতের ক্যানোলাতে একটা নল প্রবেশ করালো, স্যালাইনে মিশিয়ে এন্টিবায়োটিকের প্যাকেট ঝুলিয়ে দিলো। অভ্রকে বলল,
“একঘন্টা পর আমাকে ডাকবেন। আমি খাবারের আগের ঔষধ দিয়ে যাবো”
অভ্র মাথা নাড়ালো। নার্স চলে গেলে গাল ফুলিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়লো ঐন্দ্রিলা। তারপর হাতের ইশারা করলো। নিজের পাশের জায়গা দেখিয়ে বুঝালো বসতো। অভ্র বসলো। এতোসময় পর ছেলেটিকে দেখলো সে। অভ্র শুকিয়ে গেছে। গায়ে ময়লা একটা শার্ট। চুলের ঝট মাথায় হাত দিয়েই টের পেয়েছিলো। চোখের নিচে কালো হয়ে গেছে। চোখজোড়া কেমন বিষন্ন। নারীর মনে দামামা বাজানো পুরুষকে বিরহের উপন্যাসের ছ্যাকা খাওয়া নায়ক মনে হচ্ছে। ঐন্দ্রিলা বিদ্রুপ টেনে বলল,
“আইসিউতে এলি না কেনো? একবার নিজের থোবড়াটা তো দেখাতেই পারতি”
অভ্র কাতর নয়নে চাইলো। উত্তর দিলো না। সেই আঁখিজোড়ার অব্যক্ত বেদনা ঠিক টের পেলো ঐন্দ্রিলা। সদা আত্মদম্ভ, আত্মবিশ্বাস, জেদে দগ্ধ পাহাড়ের মত অটল পুরুষকে ভঙ্গুর, দূর্বল, অসহায়রুপে দেখতে খুব মায়া হলো ঐন্দ্রিলার। এই পুরুষটিকে ভালো না বাসলে কাকে ভালোবাসবে? তীক্ষ্ণ, প্রখর চোখজোড়াতে কি তীব্র বিষাদ, অসহায়ত্ব। ঐন্দ্রিলার নিজেকে অভ্রের অ্যাকিলিস হিল মনে হলো। যে দূর্বলতা কেউ জেনে গেলে এই পুরুষকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে। অভ্র এখনো নিশ্চুপ। ঐন্দ্রিলা অধৈর্য্য স্বরে বলল,
“কি হলো? কথা বলিস না কেনো? টেকো বউয়ের সাথে বুঝি কথা বলা যায় না! আমাকে দেখতে আর ভালো লাগছে না তাই না?”
“কে বলেছে তোকে?”
এবার মুখ খুললো অভ্র, রুঢ় স্বরে শুধালো। ঐন্দ্রিলা হাসলো। ম্লান স্বরে বলল,
“কারো বলতে হবে কেনো? আমি নিজেই জানি। মাথা ভর্তি চুলগুলোকে ওরা কেটে দিলো। যে চুলের গন্ধ নিতি মাঝরাতের আধোঘুমে, সেই চুল এখন নেই। চুলছাড়া মেয়েদের ভালো লাগে? ধ্যাত, টেকো ভুতের মত লাগছে আমাকে। উপর থেকে শুনেছি নাকি ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ব্রেইন নাকি নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। হাটতে চলতে পারি কি না কে জানে? তখন আরেক জ্বালা। এমনেই কত খরচা হলো!”
অভ্রর মুখোভঙ্গি বদলে গেলো। তীব্র যন্ত্রণা প্রকাশ পেলো মুখবিবরে। খুব ক্ষীন স্বরে বললো,
“আমি বেঁচে থাকতে তোর কিছু হতে দিবো না দেখিস। দরকার হলে আরোও ভালো চিকিৎসার করাবো। বিদেশ নিইয়ে যাবো। কিন্তু তোর কিচ্ছু হবে না”
ঐন্দ্রিলা নিরবে হাসলো। কিন্তু হাসি লুকিয়ে বললো,
“বাবাহ, টেকো বউয়ের জন্য এতো দরদ? তুই তো শাহজাহানকে টেক্কা দিবি। অবশ্য এগুলো তোর মুখের কথা। আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিস। রুপ না থাকলে মায়াও থাকে না, আমি জানি”
“কচু জানিস তুই”
“জানি না বলছিস?”
“হ্যা, জানিস না। তোর চুল কেনো, সব রুপ খসে গেলেও আমার চোখে তুই ধরণীর সবথেকে সুন্দরী ললনা”
দৃঢ় স্বরে বললো অভ্র। ঐন্দ্রিলা একরাশ কৌতুহল নিয়ে শুধালো,
“দাঁত পড়ে গেলেও?”
“হু”
“চামড়া কুচকে গেলেও?”
“হু”
“যদি কেঁচো হয়ে যাই তাও?”
“হু?”
ঐন্দ্রিলা সশব্দে হেসে উঠলো। অভ্র দু চোখ মুদে তার হাসি দেখলো। মোহনীয় হাসি। চোখের তৃষ্ণা নিবারণের একমাত্র মাধ্যম যেন এই হাসি। তীব্র গরমে একমুঠো শীতল দমকা হাওয়া যা মুহূর্তেই শীতল করে দেয় চিত্ত। এই হাসির মাঝে মরতেও শান্তি।
আশ্বিনের শেষ সপ্তাহ। তীব্র গরমে খা খা করছে ধরণী। বাহিরের তৃষ্ণার্ত কাকটাও নিরিবিলি বসে আছে কেবিনের বারান্দার রেলিং এ। হয়তো ডাকার ইচ্ছে হচ্ছে না। বিষন্ন চোখে দেখছে পৃথিবীকে। ঐন্দ্রিলা বিছানায় বসে বসে দেখছে একা কাকের কাজকর্ম। এই কাকটিকে সে চিনে। কাকটির গায়ে একটা লাল দাগ আছে। কালো গায়ে লাল দাগটা খুব বেশি বোঝা যায় না। কিন্তু ঐন্দ্রিলা সেটা খেয়াল করে দেখেছে। হয়তো কাকটির কোনো সঙ্গী নেই। তার কোনো বন্ধু নেই। তাই সে প্রতিদিন এগারোটা বাজলেই এখানে চলে আসে। যেনো ব্যাপারটা একটা প্রোগ্রামের মতো তার সিস্টেমে বেধে দেওয়া হয়েছে। ঠিক এগারোটায় তাকে হাসপাতালের আটতালার চার নম্বর কেবিনের বারান্দাতেই এসে বসতে হবে। আচ্ছা কাকরা কি ঘড়ি চেনে? পাখি সমাজে কি তাদের ঘড়ি চেনানো হয়?
এমন কি হয় তাদের কোনো স্কুল কলেজ আছে? যেখানে সকাল হলেই খড়খুটো নিয়ে উপস্থিত হতে হয়? নীলাদ্রিকে বলতে হবে। তার বিষদ জ্ঞান প্রকৃতি নিয়ে। সে হয়তো কিছু বলতে পারবে। ঐন্দ্রিলা হাই তুললো। বিছানায় বসে বসে তার মোট তিনটে কাজ; খাওয়া, ঘুমানো আর জগৎ সংসার নিয়ে চিন্তা করা। আজ পনেরোদিন সে কেবিনে শুটকির মতো পড়ে আছে। জগৎ সংসার নিয়ে চিন্তা করার এতো চমৎকার সময় তাকে সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন যে সে এখন কাক নিয়ে গবেষনা করছে। আজ অবশ্য তার মন ভালো। মাথার সাদা জঞ্জাল খুলে দেওয়া হয়েছে। সেলাইয়ে কোনো ঝামেলা হয় নি অভ্রর বিশেষ যত্নের কারণে। ছেলেটা পারেও।
ঐন্দ্রিলার আগে মনে হত জগৎ সংসারে একমাত্র তার বাবাই যত্নশীল। কিন্তু সেই ধারণাকে একেবারে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিয়েছে অভ্র। তার থেকে যত্নশীল কেউ আছে কি না সন্দেহ। এই পনেরোদিন যাবৎ অক্লান্ত শ্রম দিয়ে যাচ্ছে সে। দোকানের ভার বিল্লালের ঘাড়ে সপে নিজেকে ঐন্দ্রিলার চব্বিশ ঘন্টা নার্সরুপে নিযুক্ত করেছে। ঐন্দ্রিলার খাবার, গোসল, ঔষধ, ব্যায়াম, বিনোদন সবকিছুর দায় যেনো কেবল তার। ঐন্দ্রিলার পুরো জীবনের ভারটাই নিজের কাঁধে উঠিয়ে নিয়েছে। অথচ এক চিলতে বিরক্তি নেই।
নারীদের বুঝি জন্ম থেকেই আহ্লাদ পাওয়ার একটা নেশা থাকে। তারা যত আহ্লাদ পায় আরোও আহ্লাদ চায়। মনে মনে তীব্রভাবে চায় তার পুরুষ তাকে রানীর মতো রাখুক। অভ্রর আচারণ ঐন্দ্রিলাকে খুব করে বিষয়গুলো অনুভব করাচ্ছে। এই অনুভূতির মাঝে একটা তিক্ততাও আছে। তা হলো, ঐন্দ্রিলার প্রচন্ড নেতিবাচক চিন্তাভাবনা। এই যে এতো শান্তির মাঝেও তার মস্তিষ্ক মাঝে মাঝে মনকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বলছে, “অভ্র এগুলো করছে অপরাধবোধে”। এই কথাটা স্মরণ হলেই ঐন্দ্রিলা ভালোলাগাগুলো কেমন মিয়ে যায়। মনে হয় সে বালু খাচ্ছে। তাই সে মনে মনে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বজ্রকঠিন সিদ্ধান্ত। বাসায় গেলেই অভ্রকে চিঠিটা ধরিয়ে বলবে,
“ভালোবাসবি আমাকে? বেশি না। অল্প। ক্ষীন। এক বিন্দু হলেও চলবে। তবে সেই বিন্দুখানা যেন স্বচ্ছ হয়। ক্ষুদ্র হলেও সেখানে যেনো আমার প্রতিবিম্ব থাকে। কেবল আমার”
দীর্ঘশ্বাস ফেলল ঐন্দ্রিলা। কবে বাসায় যাবে? আর তো সহ্য হচ্ছে না। এর মাঝেই অভ্র এলো। তার চোখমুখ উজ্জ্বল। এসেই চুলহীন মাথায় চুমু খেলো। উচ্ছ্বাসিত স্বরে বললো,
“আর বসে বসে কাকের পালক গুনতে হবে না। আমরা বাসায় যাচ্ছি”
নীলাদ্রির পড়াশোনার মাত্রা বেড়েছে তীব্রভাবে। ঐন্দ্রিলা বাড়ি এসেছে। এখন আর চিন্তা নেই। রিসার্চ সেন্টারে আবেদন করেছে সে। সে আর ল্যাবে যাবে না। যদিও প্রফেসর বেশ অবাক হলেন এমন সিদ্ধান্তে। কিন্তু নীলাদ্রি সরল হাসি ঠোঁটে লেপ্টে বললো,
“আমি সরকারি জবের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি”
“তুমি মাথায় চোট পেয়েছো নীলাদ্রি? এই শেষ সময়ে তুমি রিসার্চ ছেড়ে সরকারি চাকরি করবে?”
“আমার মাথা শতভাগ সুস্থ স্যার। আসলে এটা আমার শ্বশুরের ইচ্ছে”
“তুমি বিবাহ করেছো?”
“জি স্যার। এক মাস হতে চলেছে”
নীলাদ্রির প্রফেসরের মুখখানা কেমন বাংলার পাঁচের মত হয়ে গেলো। অবাক স্বরে শুধালো,
“বুঝে শুনে করেছো নাকি ধরে বেধে করিয়েছে?”
“কি বলছেন স্যার? ধরে বেধে করাবে কেনো? অবশ্য পিউয়ের সাথে কেউ আমাকে ধরে বেধে বিয়ে দিলেও আমি খুশিই হতাম”
প্রফেসর মুখ বাঁকালেন। মনে হল কেউ জোর করে বালু খাইয়ে দিয়েছে তাকে। আফসোসের সুর টেনে বললেন,
“মানুষ দুই, জীবিত এবং বিবাহিত। তুমি এখন আর জীবিত নেই। ব্যাপার না। কিছু বিষ মধুময় হয়। তোমার মধুময় বিষের জন্য শুভেচ্ছা”
নীলাদ্রির ইচ্ছে করলো লোকটিকে কড়া করে দুকথা শুনিয়ে দিতে। কিন্তু অহেতুক বাক্য খরচ করে সময় নষ্ট হবে। কি দরকার? এর চেয়ে দু পাতা বেশি অংক কষলে কাজে দিবে। নীলাদ্রি এখন অংক কষছে। তৈলাক্ত বাশে বাঁদরের নাচন অংক। নীলাদ্রির মনে হয় এই বাঁদরটা একটা চূড়ান্ত পর্যায়ের বেয়াকুব। তেল লাগানোর বাশের প্রতি এতো কিসের আগ্রহ বুঝতে পারে না নীলাদ্রি। এর মাঝেই একজোড়া ঠান্ডা হাতের ছোঁয়া পেলো চোখের উপর। কোমল দুটো হাত তার চোখ চেপে ধরেছে। কিশোরীদের খেলা। অপরজনের জানার ইচ্ছে তাকে মানুষটি চিনতে পেরেছে কি না। নীলাদ্রি জানে মানুষটি কে। কারণ কেবল এই মানুষের থেকেই মিষ্টি একটা গন্ধ পায় সে। তাই কোনো সময় নষ্ট না করেই বললো,
“পিউ”
“ধ্যাত, চিনে গেলে?”
পিউয়ের কন্ঠে মেকি রাগ। কিন্তু নীলাদ্রি জানে সে খুশি হয়েছে। নীলাদ্রি তার হাতখানা টেনে ধরে নিজের সামনে দাড় করালো। কোমড় চেপে ধরে বললো,
“তোমাকে আমি হাজার ক্রোশ দূর থেকেও চিনতে পারি”
“মিথ্যে কথা”
“বিশ্বাস হয় না?”
মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব ৩৮ (২)
“নাহ, হয় না। যে পুরুষের মন বইয়ের পাতাইয় বদ্ধ সে নারীর মন কি করে চিনবে?”
“আংশিক সঠিক। তবে আমার মতে আমার পিউয়ের মন এই বাঁদরের অংক থেকেও সরল”
“কি বাজে উপমা”
বলতে বলতেই হেসে ফেললো পিউ। কিন্তু হাসি বেশি সময় স্থায়ী হলো না। বসার ঘর থেকে সোরগোল শোনা যাচ্ছে। আউওয়াল সাহেবের কঠিন বজ্রকন্ঠ শোনা যাচ্ছে,
“আমার পৌত্রবধু আমার বাসায় থাকবে। তুমি কি বলতে চাও সাবেরা, আমার পৌত্রবধুর যত্নে অবজ্ঞা করছি আমরা?”………………………