মন ফাগুন পর্ব ২৬
তাইয়্যেবা বিনতে কেয়া
মিহি নিহানের রাগ দেখে বুঝতে পারে তার কপালে দুঃখ আছে কিন্তু সে কি করবে আম্মু যখন বলেছে তখন সেই ছেলের সাথে দেখা করতে হবে। না হলে আবার ওকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে না দিয়ে দেয় এইটার কোনো বিশ্বাস নাই। তখন মিহির ফোনে একটা মেসেজ আসে মিহি চেক করে দেখে ওর আম্মু সেই ছেলের ছবি পাঠিয়েছে। মিহি বলে –
“- ওয়াও এই ছেলেকে দেখতে কি সুন্দর পুরো কিউটের ডিব্বা একদম আমার মতো। ওহ এই ছেলেকে দেখে আমার বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে এর সাথে বিয়ে হলে আমাদের বাচ্চারা কিউব হবে “।
মিহি ছবি দেখে এতো মুগ্ধ হয়ে গেছে যে তার পাশে থাকা নিহানের কথা মনে নাই কিন্তু নিহানের কানে সব কথায় আসছে। নিহান পিছনে তাকিয়ে মিহির দিকে দেখে কতো প্রশংসা করছে ছেলেটার কখনো নিহানের জন্য একটা ভালো কথাও বলে নাই মিহি তাহলে আজকে এতো ভালো ভালো কথা ছেলেটার জন্য কি করে মুখে আসছে। নিহান বলে –
“- মিহি আপনার যদি ছবি দেখা হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে কি আমরা একটু ঘুমাতে পারি। আসলে আমার সকালে অনেক কাজ আছে কালকে মিটিং রয়েছে সো দয়া করে ঘুমাতে দেন “।
মিহি সত্যি ভুলে গিয়েছিলো নিহানের কথা তবে নিহান সব কথা রাগ করে বলে। মিহি নিহানের এইরকম রাগী কণ্ঠ শুনে কিছুটা ভয় পেয়ে ফোন রেখে দেয় বিছানায় আর বলে –
“- ওকে ঘুমিয়ে পড়ছি। আচ্ছা শুনুন আপনি কি কালকে আমার সাথে রেস্টুরেন্টে যাবেন সেই ছেলের সাথে দেখা করতে। না মানে একা একা যেতে আমার খুব ভয় করছে “।
নিহান মিহির দিকে পিছনে ফিরে তাকায় আর বলে _
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” সেখানে যদি আমি যায় আপনার সাথে তাহলে আপনার হবু জামাই যখন জিজ্ঞেস করবে তোমার সাথে এই ছেলেটা কে? তখন কি উত্তর দিবেন আমি আপনার খালাতো ভাই হয়?
“- খালাতো ভাই বলবো কোনো আপনি কি আমার ভাই হন?
“- তাহলে কি হয় আমি আপনার। বলুন এই নিহান নেহাল শিকদার কে হয় আপনার? এই কথার কোনো উত্তর কি আছে আপনার কাছে মিহি “।
মিহি কি বলবে সে সত্যি জানে না কারণ নিহানের প্রতির তার মনে কি ফিলিংস কাজ করছে সেটা মিহি নিজে ও জানে না আসলে কি সত্যি কোনো ফিলিংস আছে। মিহি বলে –
“- আমার অনেক ঘুম পেয়েছে নিহান ঘুমাবো আমি “।
মিহি কোনো কথা না বলে ঘুমিয়ে পড়ে কিন্তু নিহানের চোখে ঘুম নাই নিহান মনে মনে বলে –
“- মিহি সেইদিন বউভাতের দিন পুরো শহরের সামনে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি এই নিহান শিকদারের বউ হিসাবে। কিন্তু আজকে আপনি একজনের সামনে বলতে পারে না আমি কে হয় আপনার। ঠিক আছে মিহি যদি আপনার অন্য কোনো ছেলেকে পছন্দ করে তাকে বিয়ে করতে পারেন তাহলে আমার কোনো সমস্যা নাই। দেখা যাক আমার জন্য আপনার মনে কোনো ফিলিংস আছে কি না “।
নিহান মনে মনে কথাটা ভাবে কোনো জানি তার রাগ আর কষ্ট দুটোই হচ্ছে তাই ঘুম আসছে না তার চোখে। নিহান উঠে চলে যায় কাজ করার সেই রুমে আজকে সে সেখানেই থাকবে। নিহান যে অন্য রুমে চলে গেছে সেটা মিহি বুঝতে পারে না কারণ সে ঘুমে রয়েছে।
সকাল হয়ে গেছে বাহির থেকে আসা এক মুঠো রোদ যখন মিহির মুখে পড়ে তখন মিহির ঘুম ভেঙে যায়। মিহি চোখ খুলে দেখে নিহান পাশে নাই সে মনে করেছে ওয়াশরুমে গেছে কিন্তু ওয়াশরুমের দরজা লাগানো ছিলো। মিহি বলে –
“- কি হলো নিহান কোথায় চলে গেলো? এতো সকালে ওনি ঘুম থেকে উঠেন না তাহলে কি রাতে কোথাও গেছে। নিহান কি আমার সেই ছেলের সাথে ডেটে যাওয়ার কথায় অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছে “।
মিহির কথা বলার মধ্যে নিহান রুমে আসে মিহি নিহানকে দেখে একটু খুশি হয়। নিহান কোনো কথা না বলে ওয়াশরুমে চলে যায় সেখান থেকে ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে ফোন টিপতে থাকে। মিহি যে বেডে বসে রয়েছে তার কোনো খেয়াল নাই সে একটা কথাও বলে না। মিহি একটু কষ্ট পেয়ে আলমারি থেকে একটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুম চলে যায়।
নিহান মিহির সব কাজ খেয়াল করতে থাকে মিহি যখন শাড়ি পড়ে বাহিরে বের হয় তখন নিহান ওর দিকে হা হয়ে তাকিয়ে থাকে। কি সুন্দর লাগছে মিহিকে কিন্তু হঠাৎ করে মিহি আজকে শাড়ি কোনো পড়লো সেটা নিহান বুঝতে পারে না। নিহান বলে –
মন ফাগুন পর্ব ২৫
“- মিহি আজকে হঠাৎ শাড়ি পড়লেন কোনো? আপনি তো শাড়ি পড়ে থাকতে পারেন না তাহলে কোনো পড়তে গেলেন “।
“- ওহ আজকে রেস্টুরেন্টে যাবো আর নিজের হবু জামাইয়ের সাথে দেখা করতে গেলে শাড়ি পড়ে যেতে হয়। আর শাড়ি পড়লে আমাকে অনেক সুন্দর লাগে তাই পড়েছি পাএের যাতে পছন্দ হয় সেইরকম করে সেজে যেতে হবে তো। তাহলে বলুন আমাকে কেমন লাগছে?
!- হুম খুব সুন্দর লাগছে আশা করি ছেলে আপনাকে পছন্দ করবে। আর নিবার্নের বেশি দেরি নাই টেনশন করবেন না ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিবো আমি “।