মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ২৫
নওরিন কবির তিশা
সকাল প্রায় সাড়ে আটটা। ভার্সিটি ক্যাম্পাসে অপেক্ষা করছে সবাই। কিন্তু এখনো আসেনি আনায়া। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে না পেরে সাইফ বলল—
— “কি হলো রে শিশির? আনায়া কি আসবে না, নাকি? আর কতক্ষণ অপেক্ষা করব? সবাই তো বোর হচ্ছে, না কি?”
শিশির দুশ্চিন্তায় বলল—
— “আরে, আসবে না কেন? কালকে রাতেই তো আমাদের কথা হলো। আর আঙ্কেল-আন্টিও রাজি।”
সাইফ — “তাহলে আবার কি সমস্যা?”
শিশির — “কি জানি, হয়তো গাড়ি পাচ্ছে না…”
তাদের কথার মাঝে হঠাৎ একটা বাইক এসে থামে তাদের সামনে। বাইক থেকে নেমে আসে আনায়া।আরও অবাক করা বিষয় হলো—একজন অপরিচিত ছেলের সাথে সে এক বাইকে এসেছে। সবাই অবাক চোখে সেদিকে তাকায়। সাইফ বলে—
— “এটা কে রে আনায়া? আগে তো কোনদিন তোর সাথে দেখিনি।”
আনায়া কিছু বলে না, শুধু মুখ থ মেরে দাঁড়িয়ে থাকে। সবাই অবাক হলেও শিশির বুঝতে পারে যে এটা রিদিত। রিদিত বাইক থেকে নেমে হেলমেট খুলে বাইকের উপর রাখতেই পাশ থেকে একটা ছেলে বলে—
— “আরে এটা তো রিদিত ভাই!”
সাইফ উচ্ছ্বসিত হয়ে জিজ্ঞাসা করে—
— “রিদিত ভাই মানে?”
সজল — “আরে তুই রিদিত ভাইকে চিনিস না? The Delicious Café, তারপর The Delicious Restaurant—সবগুলোরই ওনার উনি।”
সাইফ — “কি! ইনিই সেই রিদিত খান?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সজল — “আরেহ, হ্যাঁ! কিন্তু সে সব কথা বাদ দে, আমি আগে ভাইয়ের সাথে একটু কথা বলে আসি। আমি পরবর্তীতে ওই রেস্টুরেন্টটাতেই ব্লগ করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু এখানকার যে পলিসি—ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতেই দেবে না। বাট রেস্টুরেন্টটা মারাত্মক সুন্দর। তাই দেখি, ভাইয়ের সাথে কথা বলে যদি একটু অনুমতি পাই।”
সজল এগিয়ে গিয়ে রিদিতের সাথে হ্যান্ডশেক করে আলিঙ্গন করলো। রিদিতও মুচকি হেসে তার সাথে কথা বলতে লাগলো। তখন আনায়ার পাশে থাকা আশা বলল,,
— “কি ব্যাপার আনায়া? এত বিখ্যাত রেস্টুরেন্টের ওনার তোর সাথে? ব্যাপার কি? কি হয় উনি তোর?”
আনায়া কিছু বলবে, তার আগেই রিদিত জবাব দিয়ে বসে
— “Fiancée, fiancée আমি ওর।”
চারপাশে বিস্ময়ের হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে। সবাই অবাক হয়ে বলল,,
— “মানে?”
রিদিত মুচকি হেসে বলল—
— “Fiancée মানে বোঝেন না? বাগ্দত্তা। বাগ্দত্তা ও আমার। সামনে মাসেই আমাদের বিয়ে। সবাই আসবেন কিন্তু!”
এমন কথা শুনে সবাই অবাকের চূড়ায় পৌঁছে যায়। আনায়া কটমট করে তাকায় রিদিতের দিকে। এত মানুষের ভিতরে সে না তো কিছু বলতে পারছে, আর না তো রিদিতের এমন উল্টোপাল্টা কথা সহ্য করতে পারছে। অন্যদিকে আনায়ার এমন অস্বস্তি উপভোগ করে রিদিত—হাসি পায় তার। সে কোনো মতে ঠোঁট চেপে হাসি সামলে বলে—
— “আচ্ছা আয়নিন, তাহলে তোমরা যাও হ্যাঁ। আমি আজ আসছি, একটা মিটিং আছে। আর হ্যাঁ, কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই ফোন দেবে—লজ্জা পাবে না কিন্তু! যতই হোক, কিছুদিন পরেই তো আমরা স্বামী-স্ত্রী হবো।”
কথাটা বলেই রিদিত দ্রুত হেলমেটটা মাথায় দেয়। তারপর বাইক স্টার্ট করে, এক চিলতে দুষ্টু হাসি ঠোঁটের কোণে রেখে চলে যায়—ছেড়ে যায় একরাশ ধোঁয়াটে দ্বন্দ্ব আর মুগ্ধতা। আনায়া তখনও তার যাওয়ার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। চোখে যেন হাজার প্রশ্ন, মুখে চাপা ক্ষোভ। অন্যদিকে শিশির আর নিজেকে সামলে রাখতে পারে না। সশব্দে হেসে ওঠে সে। তাকে এমন হাসতে দেখে আনায়া রেগে গিয়ে বলে—
— “একদম হাসবি না শিশির। হাসলে চলে যাব কিন্তু আমি।”
শিশির নিজেকে সামলে বলে—
— “আচ্ছা বাবা, হাসবো না। এবার চল। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।”
পাশ থেকে আশা বলল—
— “আরে যাই বলিস আনায়া, যিজু কিন্তু সেই! কি বলিস তোরা?”
সাইফ — “আরে সে কথা পরে হবে। কিন্তু আগে আমার আনায়ার সাথে বোঝাপড়া আছে। এতদিনের ফ্রেন্ডশিপ আমাদের, ও কখনো বলল না যে ওর বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তাও আবার ওত বড় রেস্টুরেন্টের মালিকের সাথে! তোর সাথে তো কথাই বলা উচিত না রে আনায়া!”
শিশির — “শুধু কি তোকে সাইফ? আমি তো ওর প্রাইমারি লেভেলের বেস্ট ফ্রেন্ড, ও তো আমাকেও বলেনি।”
সাইফ — “তাহলেই বোঝ! কত বড় বেইমান ও! ভাগ্যিস আজকে রিদিত ভাই এসেছিল। না হলে তো মনে হয় ও আমাদের না বলেই বিয়ে করে নিত।”
আনায়া বেশ রেগে গিয়ে বলল—
— “তোরা কি এখানেই দাঁড়িয়ে আলোচনা করবি, নাকি যাবি?”
শিশির মুচকি হেসে বলল—
— “হ্যাঁ চল।”
যেই তোমার হাওয়া আমাকে ছুঁলো..
উড়ে গেল…মন পায়রা গুলো
তাও কেন…দেখেও দেখনি?
নেহা:ফারু এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।
ফারিন দুষ্টু হাসি গেছে বলল,,
কেন? কি বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে?
নেহা খানিকটা নিয়ে রেগে গিয়ে বলল,,
এক থাপ্পর খাবি আমার কাছে। আর তখন বুঝবি কি বেশি হচ্ছে?
ফারিন আগের মতই দুষ্টু হাসি হাসি বলল,,
কেন জান? বাংলা গানটা পছন্দ হচ্ছে না হিন্দি গাইতে হবে?
নেহা:ফারুউউ…
ফারিন:”চিল্লাচ্ছিস কেন? রিয়াদ ভাইয়ের কথা মনে পড়ছে? ডেকে দেবো?উফফফ… আজকে সকালের সিনটা যা ছিল না পুরাই রোমান্টিক! কিভাবে বলল,,
তোমার লেগেছে কোথাও? মায়রা…??উফফফ.. পুরাই দিল গার্ডেন গার্ডেন!! কি বলিস তোরা?”
ক্লাস শেষে কলেজ ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত মাঠটার উপর বসে গল্প করছিল ফারিন, ইমন, লিসা,নিরা আর নেহা। ফারিনের কথায় তারা সবাই একযোগে বললো,,
—”হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই”
নেহা এবার ভীষণ রেগে গিয়ে বলল,,
“দেখ তোরা এরকম ইয়ার্কি করলে কিন্তু আমি উঠে যাব। আরে আমি সিঁড়িতে ওঠার সময় পড়ে যাচ্ছিলাম একটা মানুষ আমাকে ধরল,আমাকে বাঁচালো আর তাকে নিয়ে তোর এসব বলছিস ছিঃ।”
ফারিন: “হ্যাঁ বুঝেছি, বাঁচাইছে নাকি? কেন আমরা কি বাঁচাতে পারতাম না?পড়ে যেতে দিতাম তোকে? কিন্তু না আমরা আসার আগেই তো তোর হিরো চলে এসেছিল। এসে ধরেই কিভাবে বলল,,
“মায়রা লেগেছে?”
ভাই বিশ্বাস কর, আমার তো মনে হচ্ছিল তোর মনে তখন ওই একটাই গান বাজতে ছিল,,
chuya Jo
tune to
dill ne mare…sitti
বল বল বাঁজতেছিল না বল??”
নেহা:ফারু…
ফারিন:” কেন এখন ভীষণ গায়ে লাগছে?আগের দিন যখন বললাম আমাকে কিছু বলিস না বিশেষ করে এই হিটলারটাকে নিয়ে।তারপরও তোরা বলতেছিলি। বোঝ তখন আমার কেমন লাগতেছিল?”
পাশ থেকে লিসা বললো,,
“আহাহাহা, ফারু অত ঢং করো না সোনা, আগের দিন যে তোমাকে নির্ঝর স্যার কিভাবে জড়িয়ে ধরে ছিল সেটা কিন্তু আমি দেখেছি।”
লিসার এমন কথায় সবাই অবাক হয়ে বলল,,
—”জড়িয়ে ধরেছিল মানে!!”
লিসার এমন আকস্মিক কথায় ফারিন থতমত খেয়ে বলল,,
—”ক..ক..কি সব উল্টাপাল্টা কথা বলছিস? জড়িয়ে ধরেছিল এটা আবার কি?
লিসা দুষ্ট হাসি হেসে বলল,,
—”এতক্ষণ তো নেহার ভীষণ খিল্লি ওড়াচ্ছিলি। এখন নিজের কথাও কিছু বল আগের দিন তুই হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলি আর নির্ঝর স্যার কিভাবে তোকে ধরল উফ.. পুরো বুকে গিয়ে পড়ছিলি রে ফারু।”
সবাই অবাক দৃষ্টিতে ফারিনের দিকে তাকালো। ফারিন কথার প্রসঙ্গ পাল্টে বলল,,
“আরে ওসব বাদ দে, আগের দিন পড়ে যাচ্ছিলাম তাই জাস্ট ধরেছিল।”
নেহা এবার চোখ সরু করে বলল,,
“কেন?কেন?কেন? এবার বাদ দেবো কেন? এতক্ষণ ধরে তো আমার বহুৎ খেল্লি উড়াচ্ছিলি। এবার নিজের কথাও কিছু বল।” নেহা এবার সবার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“তোরা কি জানিস?আমাদের ফারু যখন অসুস্থ হয়েছিল তখন নির্ঝর স্যার আমাকে ডেকে পার্সোনালি ফারিনের খোঁজ নিয়েছিল। আবার ফারিন কে ওষুধসহ ফলও কিনে দিয়ে এসেছিল।”
সবাই অবাক হয়ে ফারিনের দিকে তাকালো। আরা বললো,,
“ও তার মানে আমাদের ফারু তলে তলে টেম্পু চালাচ্ছে।”
ফারিন:”আরে ধ্যাত তোরা কি সব বলছিস? ওরকম কিছুই না।”
ইমন: “ঐরকম কিছু না মানে? সত্যি কথা বলো। আমারো পরানো যাহা চায় তুমি তাই তুমি তাই গো, ওগো।”
সবাই শব্দ করে হেসে উঠলো। ফারিন এবার ইমনের মাথায় জোরে একটা থাপ্পর মেরে বলল,,
“এই একদম উল্টোপাল্টা কথা বলবি না। আর তোরা কাকে নিয়ে ক্ষ্যাপাছিস ভাই? মানুষের তো একটু বিবেক-বিবেচনা বলে কিছু থাকে নাকি? তোদের কি তাও নেই?”
আরা: “কিসের বিবেচনা? আমরা অবিবেচকের মতন কি বললাম? নির্ঝর স্যার পুরো কলেজের মেয়েদের ক্রাশ!”
ফারিন মুখ বাঁকিয়ে বলল,,
“আইছে সারা কলেজের ক্রাশ। ভাই আমার ক্রাশ না ওইরকম হিটলার। উনি আবার কারো ক্রাশ হতে পারে নাকি? শা*লা হিটলারের জমজ ভাই। রক্তচোষা বাদুর কোথাকার? কে বলেছিল ওনাকে টিচার হতে? উনার হওয়ার কথা ছিল রক্তচোষা বাদুর। ক্লাসে এসেই পুরো ক্লাস দাড় করে রাখবে খোচা মেরে মেরে কথা বলবে শা*লা। বাংলায় কথা বলবে কম ইংলিশে বলবে বেশি উনি নিজেকে কি মনে করে হ্যাঁ? প্রফেসর গণিতের কথা বলবে ইংরেজিতে! কেন ভাই উনার যদি এতই ইংলিশে কথা বলার শখ থাকে তাহলে ওনাকে গণিতের, প্রফেসর কে হতে বলল? ইংলিশেরই হতে পারতো। বাঙালি কত কষ্ট করে জীবন দিয়ে বাংলা ভাষা অর্জন করছে সে সম্পর্কে অন্য কোন ধারণা আছে?”
সামনে থেকে সবাই ফারিনকে ইশারায় পিছনে তাকাতে বলছে। তা দেখে ফারিন পিছন ঘুরতে ঘুরতে বলল,,
—”আরে কি সেই সময় থেকে পিছনে ঘুরতে বলছিস? হিটলারের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য শোন…….”
কথাটি বলতে বলতেই ফারিন পিছনে ঘুরতেই দেখতে পায় তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে নির্ঝর। নির্ঝর কে দেখে ফারিনের গলা শুকিয়ে যায় সে ঢোক গিলে বলে,
—”স্যার আপনি!!”
—”থামলে কেন বলো? ভালো লাগছিল তো!আমিও শুনি আমার বংশ পরিচয় আমার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে!”
প্রায় সন্ধ্যা ছ’টা বাজতে চলল। গোধূলি আলোয় রাঙা আকাশ যেন রঙ তুলির ছোঁয়ায় আঁকা এক বিশাল ক্যানভাস। সূর্য তার অস্তগামী সোনালি পা মেলে ধীরে ধীরে নামছে নদীর গা ঘেঁষে। শিশির বসে আছে মেঘনা নদীর ঘাটে, একদম চুপচাপ। আশপাশে সহপাঠীরা কেউ গাইছে, কেউ গল্প বলছে, কেউ বা ছবি তুলতে ব্যস্ত—কিন্তু শিশির, যেন এইসব কোলাহলের বাইরে একটা নীরব জগতের বাসিন্দা।তার ভালোবাসা সূর্যাস্ত।
সূর্যের আলো ফিকে হতে হতে যখন একটা ধূসর বিষাদ ছুঁয়ে যায় চারপাশে, তখন তার মনটা যেন অজান্তেই শান্ত হয়ে যায়। সে অপলক তাকিয়ে থাকে ওই ধীরে-নামা আলোটার দিকে। বুকের ভেতরে তখন অদ্ভুত এক প্রশান্তি জমে।ঠিক তখনই হঠাৎ পিছন থেকে একটি নরম স্পর্শ পড়ল তার কাঁধে।
—”কি ব্যাপার? তুই কি এখানেই থাকবি নাকি যাবি না?”
পরিচিত, নরম, একটু শাসনের ছায়া মেশান আনায়ার গলা। শিশির একটু কেঁপে উঠল তার ছোঁয়ায়, তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল—
— “কি?হ্যাঁ যাব তো? ওরা কি যাচ্ছে?
আনায়া: “হ্যাঁ চল”
—”তুই যেতে লাগ আসছি।”
আনায়া:”হ্যাঁ তাড়াতাড়ি আয় আশেপাশে কেউ নেই এই টাইমটাই এই জায়গায় তত একটা কেউ থাকে না বুঝলি তাড়াতাড়ি যা। আমি একটু ওয়াশরুম যাচ্ছি। মুখটা চুলকাচ্ছে, জার্নির ধুলো-বালিতে আবার এলার্জি হয় তা তো জানিসই,একবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখটা ধুব। তুই যা, এই সময়টা ঘাটে মানুষ কম থাকে। দেরি করিস না যেন!দ্রুত যা।”
শিশির তার কথায় ছোট্ট একটা হাসি ছুঁড়ে বলল—
— “আচ্ছা আমার বড় আপু এখন আপনি যান আমি আসতেছি আর ভয় পেয়েন না আমি বাচ্চা না।”
আনায়া তার কথা শুনে মুচকি হেসে তার পিঠে হাত রেখে বলল,
—”হ্যাঁ আয়।”
আনায়া চলে যাওয়ার পর শিশির আবার চোখ রাখে নদীর দিকে। এখন আলোটা একদম ফ্যাকাসে হয়ে এসেছে। জলরেখার ওপরে সূর্যটা কেবলই অর্ধেক, তার রক্তরঙ প্রতিফলিত হচ্ছে জলে—ঠিক যেন কারও ফেলে যাওয়া এক অসমাপ্ত গল্প। আশেপাশেও কেউ নেই।হঠাৎ একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয় তার। বুকের ভেতরে কেমন একটা গুমোট অনুভূতি। যেন কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে পড়ে সে। ধীরে ধীরে পা বাড়াতে যায়…ঠিক সেই মুহূর্তে—
কেউ একজন তার পিছনে এসে নিঃশব্দে দাঁড়ায়।
মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ২৪ (২)
একটা রুমাল শক্ত করে চেপে ধরা হয় তার মুখে। হঠাৎ সবকিছু থমকে যায়।শিশির কেঁপে ওঠে। শরীরটা ছটফট করতে চায়, কিন্তু চোখের সামনে যেন কুয়াশা জমে আসে।
চারপাশে কেউ নেই, কেবল ঢেউয়ের শব্দ আর পাখির ঘরে ফেরার ডানার ছায়া।
তার নিঃশ্বাস ভারী হয়…চোখের পাতা ভার হয়ে আসে…
আর…ধীরে ধীরে মেঘনা নদীর ঘাটে ছায়া নামে।
আর এক দমবন্ধ স্তব্ধতায় হারিয়ে যায় শিশির।