মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২২
ইশরাত জাহান
মায়া ভ্রু কুচকে বলে,”ফিসফিস করে কি বলছেন?”
রাজ মায়ার পাশে এসে দাড়িয়ে বলে,”তোমার আমার বিয়ে নিয়ে ভাবছে। চলো লক্ষ্মী মেয়ের মতো করে বিয়ে করে ফেলো।”
“বিয়ে কি হাতের ময়লা?যে ফু দিবো আর হয়ে যাবে।”
“নাহ,বিয়ে ময়লা হবে কেনো?বিয়ে হলো তোমার আমার সংসারের সূচনা।”
“শাট আপ।”
“ওকে অনেক হয়েছে।এই কাজী বিয়ে পড়াও।নাহলে পিছনে আমার লোকেরা তো আছেই।”
“আরে এই কাজী।পিছনে লোক আছে তো কি হয়েছে?সামনে কিন্তু আমিও আছি।”
কাজীর দিকে গুলি তাক করে বলে মায়া।রেজিষ্টার বেচে গেছে।বিয়েতে কবুল না বললে তো আর শুধু শুধু রেজিষ্টার হবে না।তাই কিছু হলে আগে কাজীর উপর দিয়ে যাবে।কাজী হাসফাস করে বলে,”এটা কেমন বিচার?বিয়ে দিলে পাত্রী আমাকে খুন করবে আর বিয়ে না দিলে পাত্র আমাকে খুন করবে।বলি আমি কি অপরাধ করেছি?”
রাজ নিজের থুতনিতে হাত দিয়ে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,”আসলেই তো।তুমি কাজী হলে একটা পাজী।তিনটে বিয়ে করেও বেঁচে থাকার আগ্রহ আছে তোমার।তোমার বউ তো মনে হয় না এখনও তোমার সম্পত্তি তার নামে করেছে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আজ্ঞে না।আমি মৃত্যুর আগে আমার সম্পত্তি আমার সন্তান ও স্ত্রীর নামে করে দিতে চাই।”
“আচ্ছা তাহলে আমার টার্গেট আপনি না।আমার টার্গেট অন্যকেউ।”
রেজিষ্টার ভয় পেয়ে যায়।শুকনো ঢোক গিলে বলে,”আমার ছেলে বিদেশে পড়তে চায়।তার অনেক স্বপ্ন।বউ আমার এমনি রাগ করে বাপের বাড়ি যাইতে থাকে।এখন যদি মরে যাই ছেলেটা অনাথ হয়ে যাবে।”
রাজ দাবর দিয়ে বলে,”আরে ধুর!আমি কি আপনাদের কথা বলেছি।আমি তো বলছি অন্য কারো কথা। যাকে নিজের কব্জায় রাখলে মায়াবতী আমাকে বিয়ে করবে।”
মায়া তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে। কার কথা বলছে রাজ?রাজ হালকা হেসে তার ফোন বের করে ভিডিও কল দেয়।ওপাশ থেকে ভাল রিসিভ করতেই ভেসে আসে হাসির মুখ।হাসিকে বেধে রাখা হয়েছে।হাসির পাশে দুজন গার্ড গুলি ধরে আছে।হাসির গায়ের দিকে তাকিয়ে আতকে ওঠে মায়া।হাসির গায়ে বোম জড়ানো।মায়া সাথে সাথে রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”এটা কি ধরনের কাজ?আপনি আমার মাকে কেনো আটকে রেখেছেন?”
“বেশি কিছু না।বিয়ে করার জন্য।বউ না করছে তো তাই তাকে রাজী করানোর একটা কৌশল।”
“বাড়াবাড়ি করছেন আপনি।মায়ের যদি কিছু হয়ে যায় আমি আপনাকে ছাড়বো না।”
“রিলাক্স মায়াবতী।আমি আমার শাশুড়িকে কিছু করবো না।কিন্তু যে আমার শাশুড়ি হতে পারছে না তাকে বাঁচিয়ে কেনো রাখবো?”
“আমাকে মেরে ফেলুন আপনি।কিন্তু আমার মাকে ছেড়ে দিন।আমি আপনাকে অনুরোধ করছি।”
“অনুরোধ না বিয়ে।বিয়ে করো আমাকে ছেড়ে দিবো আমার শাশুড়ি মাকে।”
মায়া হাসির শরীরে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে।এটা নকল বোম না।কারণ বোমের গায়ে রেড লাইট স্পষ্ট।যদি রাজ একবার রিমোট ক্লিক করে বোম ব্লাস্ট হবে।বাধ্য হয়ে মায়া বলে,”আমি রাজি বিয়ে করতে।”
রাজ ফিচেল হেসে বলে,”আব্বে কাজী হয়ে গেছে আমার বউ রাজী।”
কাজী মায়া ও রাজ দুজনের দিকে তাকিয়ে বলে,”কন্যাকে সাজিয়ে আনবেন না!এভাবে গেঞ্জি আর জিন্স পরে বিয়ে করবে?”
“আমার মায়াবতী বলে কথা।একটু ভিন্ন স্টাইলে বিয়েটা তো করবেই।বউ সাজ পরে হবে।কেনো আপনার আপত্তি আছে নাকি আমার বউ বউ সাজেনি বলে।”
“না বাবা।আমার আর কি।আমি শুধু তোমাদের বিয়ে দিয়ে বিদায় নিবো।”
অবশেষে মায়ার সম্মতি পেয়ে ভিডিও কল থাকা অবস্থায় রাজ ও মায়া কবুল বলে বিয়ে করে নেয়।তারপর রেজিষ্টার তার কাগজপত্র নিয়ে বলে,”সই করে দিন।”
মায়া তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।বলে,”এক রাতে কাগজ রেডি কিভাবে?”
“কাগজ আগেই রেডি ছিলো।শুধু সময়টা এমন হওয়ার কথা ছিলো না।কিন্তু তুমি তো দুষ্টু।কথা শুনতে চাওনা।তাই বাধ্য হয়ে মর্নিং ম্যারেজ করে ফেললাম।”
মায়া সই করে দেয় রেজিস্ট্রি কাগজে।পরিপূর্ণ হয় মায়া ও রাজের বিয়ে। পিয়াশ এসে জড়িয়ে ধরে রাজকে।বলে,”কংগ্রাচুলেশন বস।”
বলেই মিষ্টি খাইয়ে দিতে থাকে সবাইকে।সবাই মিষ্টি মুখ করছে।কাজীর হাতেও মিষ্টি দেওয়া হয়।মিষ্টি হাতে নিয়ে কাজী বলে,”যাক শেষমেশ গোলাগুলির থেকে রক্ষা পেয়ে মিষ্টি পাচ্ছি।”
মায়ার বাড়িতে এসেছে মায়া ও রাজ।মৌকেও নিয়ে এসেছে পিয়াশ।মায়াকে বউ সাজিয়ে দেওয়া হবে।।মায়ার ঘরে বসে মায়াকে তৈরি করে দিচ্ছে হাসি ও মৌ।হাসিকে সাথে সাথেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।বউ সাজাতে সাজাতে হাসি বলে ওঠে,”তো এখন কি করবে?তোমার প্লান তো সাকসেস হলো।”
বউ সাজে লাল লেহেঙ্গা পরা মায়া আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকে।সাথে সাথে মুখে ফুটিয়ে ওঠে ডেভিল হাসি।বলে,”সরদার বাড়ির বড় মেয়ে আজ এন্ট্রি নিবে সরদার বাড়ির বড় বউ হয়ে।সরদার বাড়ির বউ হওয়ার নেশা আমার একটা কারণেই লেগে আছে। আর তা হলো আমার মন্ত্রী মশাই।এই মায়া যা চায় তাই পায়।আজ মন্ত্রী মশাইকেও হাসিল করেছি।”
মৌ মায়ার কাধে হাত রেখে বলে,”তোমার ভালোবাসাকে তোমার করেছো।আমি তো আগেই বুঝতে পেরেছিলাম তুমি রাজ ভাই সরি জিজুকে ভালোবাসো।কিন্তু তুমি যে হার্ড আমি ভাবছিলাম আমি ভুল।এখন দেখি না আমি আমার বোনকে চিনতে পেরেছি।”
মৌকে জড়িয়ে ধরে মায়া বলে,”মন্ত্রীর প্রেমে তো আমি সেই আগেই পড়েছিলাম।যখন সে বাংলাদেশে ব্যাক করে।কিন্তু বোন আমার আমি ওই বাড়ির বউ হয়ে যেতে চাইনি এত তাড়াতাড়ি।আমি ভেবেছিলাম মোহন সরদার আর মালিনী সরদারকে প্রাপ্য শাস্তি দিয়ে তারপর আমার মন্ত্রী মশাইকে আমার করে নিবো।সে না চাইলেও সে মায়ার সাথে জড়িয়ে যাবে।কিন্তু ভাগ্য আমার যে অন্যকিছু ছিলো।মন্ত্রী মশাই নিজেও আমাতে ফেসে আছে। আর ওদিকে দূরে থেকে আমি ওদের বরবাদ করতে পারছি না।
কিছু একটা করতে গেলেই আমার ভালোবাসা আমার পথের কাটা হয়ে আসছিলো।এখন আমি আমার ভালোবাসাকে আমার হাতের মুঠোয় রেখে সরদার বাড়িতে আমার কাজ হাসিল করবো।তাই তো আমি মিহির ভাইকে নিয়ে অভিনয় করেছি। যাতে আমাদের বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়।ওই মোহন সরদার এদিক ওদিক আইয়াশি করবে আর আমি দূরে থেকে দেখবো?এটা তো হতে পারে না।আমি এবার ক্লান্ত।ওদিকে জারা তো আছেই।পথের এই কাটা কিছু করার আগে মন্ত্রীর জীবনে নিজের জায়গা ছলে বলে করে নিলাম।কেউ বুঝতেও পারবে না আমি কে আর কি চাই।সবাই জানবে আমি হাসি মায়ের মেয়ে। আর আমাকে মন্ত্রী মশাই জোর করে বিয়ে করেছে।”
মৌ কিছু একটা ভেবে বলে,”কিন্তু আপু!জিজু যখন জানতে পারবে যে তোমার উদ্দেশ্য তাকে পাওয়া। আর তার সাথে তুমি প্রতিশোধ নিতে এসব নাটক করেছো।এই কক্স বাজার টুর প্লানিং আবার সেখানে যাওয়ার আগে ওই রেপিস্টদের ইনফর্ম করে রাখা।এগুলো জানলে তো জিজু তোমাকে সন্দেহ করবে।”
“জানতে দিবো না আমি তাকে।যে আসবে আমার পথের কাটা হতে আমি তাকে উপ্রে ফেলে দিবো। রেপিস্টের বাবা আমাকে এমনিতেই খুঁজছিলো আমার ক্ষতি করার জন্য।শুধু আমি টেকনিক্যালি আমার লোকদের দ্বারা ওদের কাছে ইনফর্ম করে দেই।নিজে এমন ভাবে চলি যাতে ওরা জানতে না পারে যে আমি জানি ওরা আমাদের ফলো করে। আর সে ফিরে এসেছে বোন।এবার কোনো অঘটন করার আগে আমি নিজে থেকে প্রস্তুত থাকবো।তাছাড়া আমি তো আমার বরকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছি।এখানে ভুল তো কিছু নেই। এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার।”
বলেই হেসে দেয় মায়া মৌ ও হাসি। হ্যা মায়ার সাথে রাজের আগেও একবার বিয়ে হয়।এটা মায়া জানতে পারে তার আঠারো বছর বয়সের দিকে।
এদিকে,
মায়ার বাড়ির বড় হলরুমে বসে আছে পিয়াশ ও রাজ।মাহমুদ সরদারকে কল করছে রাজ।মাহমুদ সরদার রিসিভ করতেই রাজ ডেভিল হেসে বলে,”তোমার বউমা এখন প্রপার আমার হয়েছে বাবা।”
মাহমুদ সরদার গাড়িতে ছিলেন।ঢাকার দিকেই রওনা দিয়েছেন।গাড়িতে থাকতেই খুশির খবর পেয়ে লাফিয়ে উঠে বলেন,”ইয়েস।আমার ঘরের লক্ষ্মী আসতে চলেছে।এটাই তো আমার চাওয়া। এট লাস্ট আমার আর শাহানার সপ্ন পূরণ হবে।সাথে পাবে তুমি তোমার ভালোবাসার মায়াবতীকে।”
রাজ ফিচেল হেসে বলে,”যদিও বুঝতে পারছি না মায়াবতী তাড়াহুড়া করলো কেনো?তবে ওর পাতানো ফাঁদ বুঝতে পেরেই আমি ওর ইচ্ছাকে পূরণ করলাম।কারণ আমিই তো পুরণ করতে চাই আমার মায়াবতীর ইচ্ছা।”
মাহমুদ সরদার বলেন,”আমি ঢাকা আসছি।তুমি মোহ মা না না মায়া মাকে নিয়ে আসো।বাকি রহস্যের ভেদ পরে করা যাবে।এখন তোমাদের সুখের দিন আসতে চলেছে।আমার ছোট বোন রুপি মানুষটির পাশে থাকতে পারিনি।কিন্তু আড়ালে তো মায়াকে আগলে রেখেছি।মেয়েটা নাই জানুক যে তার বড় বাবা তার আড়ালে তার খোঁজ রেখেছে।কিন্তু আমি তো জানি আমরা ওদের জন্য পথ চেয়েছিলাম।”
“রাখছি বাবা।তোমার রাগিণী বউমার ওয়েলকাম করে রাখো।”
“বাই।”
বলেই কল কেটে দিলো মাহমুদ সরদার।আজ তার খুব আনন্দ।তার বাবা মানে মায়া ও রাজের দাদা চেয়েছিলো মায়া রাজের বিয়ে দিতে।ওই সময় মায়ার জন্মের পর পরই বিয়ে দিয়ে দেয় মায়া ও রাজকে।রাজ তখন এগারো বছরের আর মায়া কোলের শিশু।শাহানা পারভীন ও মাহমুদ সরদার সাক্ষী থেকে দিয়েছিলেন এই বিয়ে।মাহমুদ সরদারের বাবা তখন বলেছিলেন,”আমার মায়া ও রাজ এই দুজনের জুটি হবে মায়ারাজ।সরদার বংশে পরবর্তী রাজত্ব চালাবে এই মায়ারাজ।”
মাহমুদ সরদার বলতেন,”কিন্তু বাবা ওর নাম তো মোহনা সরদার।মায়া কেনো বলো?”
“কারণ আমার মোহ দিদিভাইয়ের ভিতর মায়া দেখতে পাই।তোমরা ওকে মোহনা বলেই ডেকো আমার আপত্তি নেই।কিন্তু আমার কাছে ও মায়া।”
রাজ নিজেও তখন তাকিয়ে থাকে মায়ার মুখের দিকে।শাহানা পারভীন একবার মায়াকে কোলে নিয়ে বলছেনিলেন,”আমার মায়াবতী মা।”
রাজের মনে ভালো লাগতে থাকে এই নাম।সেও সাথে সাথে আওড়ায়,”মায়াবতী মায়াবতী মায়াবতী।”
ওদের বাল্যবিবাহের কিছুদিন পরই রাজ চলে যায় বিদেশে।কিন্তু রাজ যাওয়ার আগে মাহমুদ সরদার ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতেন,”তোমার অর্ধাঙ্গিনী কিন্তু এখানে আছে বাবা।জানি ছোট বয়সে বিয়ে দিয়েছি তোমাকে।কিন্তু বাবার মৃত্যুশয্যায় আমি বিয়ে না দিয়ে পারলাম না।তুমি পড়াশোনা করে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করে এসো।বাবাকে যদি মন থেকে ভালোবেসে থাকো তো মাথায় রাখবে তোমার জীবনের সাথে একটি সম্পর্ক জড়িত। মোহ মাকে আমরা দেখে রাখবো।কিন্তু তুমি নিজেকে ঠিক রাখবে।”
রাজ আশ্বস্ত করে বলে,”আমি কোনো খারাপ কাজ করবো না বাবা।আমি পড়াশোনা করে অনেক বড় হবো।তারপর আবার মায়াবতীকে আমার করে নিবো।”
মাহমুদ সরদার খুশি হন ছেলের কথায়।মাহমুদ সরদারের বাবা তিনবার স্ট্রোক করেছিলেন।তাই তাকে কষ্ট না দেওয়ার জন্যএই বিয়ে।লাস্ট স্ট্রোক করলে তিনি মারা যাবেন এমনটা ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছেন।তাছাড়া মাহমুদ সরদার ও শাহানা পারভীন এই বিয়েতে খুশি ছিলেন।দাদা ও বাবার প্রতি অঢেল ভালোবাসা থাকায় রাজ তখন খুশি খুশি মেনে নেয় বিয়ে।রাজ তার দাদা ও বাবার প্রতি আলাদাভাবে দুর্বল।মাহমুদ সরদার যা বলেন তাই করে রাজ আবার রাজ যা চায় মাহমুদ সরদার পূরণ করতেন।এছাড়া রাজের ছোটবেলায় মায়ের কোল কম পেয়েছে বরং শাহানা পারভীনের কোল বেশি পেয়েছে।শাহানা পারভীন রাজের জন্য টিফিন করে দেওয়া রাজকে হোম ওয়ার্ক করে দেওয়া আরো ভিন্ন বিষয়ে যত্ন নিতেন। ছোট মা বলতে অজ্ঞান ছিলো রাজ।
পিয়াশ রাজের কাছে এগিয়ে এসে বলে,”কিন্তু বস ম্যাম তো আপনাকে বিয়ে করেছে প্রতিশোধ পূরণ করতে।তাহলে আপনি কি পেলেন এই ভালোবাসায়?”
“মায়াবতীর জীবনে ভালোবাসার জায়গা আমি গড়ে নিবো পিয়াশ।আমার মায়াবতীর জীবনে একটাই নাম।সে হলো শাহমীর রাজ।আমার মায়াবতী জানতে পারবে না তার মন্ত্রী মশাই তার সবকিছুই জানে। আর সেই সবকিছু ঠিক করে দিবে।”
“কিন্তু আপনার ছোট মা।উনি কোথায়?”
“এটা একমাত্র মায়াবতী জানে।মৌ নিজেও জানে না কিছু।শুধু সময়ের অপেক্ষা।কি হয়েছিলো সেই রাতে?জানতে হবে আমাদের।”
“কিন্তু বস ম্যাম তো প্রতিশোধ অন্যভাবে নিতে থাকে।ওনার প্ল্যান মোতাবেক আপনি বলেছিলেন আমরা আপাতত বিয়ের বিষয়টা স্কিপ রাখবো।তাহলে ম্যাম এখন কেনোই বা বিয়েটা করতে চাইলো।মোহন সরদারকে বরবাদ করতে তো আপনি নিজেই ম্যামকে হেল্প করতে চান।তাহলে আর কি হতে পারে?”
“জানি না পিয়াশ।কিছু একটা তো গভীরে আছে।যেটা মায়াবতী একা জানে।কেনো এই বিয়ে করার তাড়াহুড়া এটা জানতে চাই আমিও।কিন্তু মায়াবতী কখনই নিজে থেকে আমাকে কিছু বলবে না।সে তো তার মর্জিতে চলে।একা লড়াই করতে চায়।”
বলেই একটু দীর্ঘশ্বাস নিলো রাজ।সাথে সাথে উপর থেকে হাসির আওয়াজ আসতে থাকে।মৌ হাসতে হাসতে নিয়ে আসছে মায়াকে।রাজ সিড়ির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তার মায়াবতী আজ লাল রঙের লেহেঙ্গা পরেছে। গলায় একটি বড় নেকলেস কপালে টিপ হাতে রুলীসহ কিছু চুরি।কোনো মেকআপের চিহ্ন নেই।মায়া নিজেই সাজতে পছন্দ করে না।সে এতটাই ফর্সা যে সে নিজেই কষ্ট পায়।কেনো সে তার মায়ের চামড়ার রং পেলো না।মোহন সরদারের রং পাওয়াতে মায়ার মধ্যে ক্ষোভ কাজ করে।
মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২১
মায়া নিচে নামতে থাকে।রাজ এসে এক হাত বাড়িয়ে দেয় মায়ার দিকে।মায়া রাজের হাতের উপর হাত রেখে বের হতে থাকে সরদার বাড়ির উদ্দেশ্যে।