মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২৫
ইশরাত জাহান
সোনালীর ঘরে বসে আছে জারা।ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অশ্রু মোছা টিস্যু।এই সবকিছু জারার ব্যাবহার করা টিস্যু।ঘণ্টা তিন ধরে তার কান্না শুরু হলো তো থামার নাম নেই।সোনালী শান্তনা দিয়ে বলেন,”লিসেন ডোন্ট বী পেনিক।রাজ শুধুমাত্র তোমার হবে।আমরা ওই মেয়েকে রাজের জীবন থেকে সরিয়ে দিবো।”
জারা টিস্যুতে নাক মুছে বলে,”কিন্তু খালামণি।রাজ বেইবী এখন তার ফার্স্ট ওয়াইফের সাথে ফার্স্ট নাইট স্পেন্ড করছে।আমার কত সপ্ন ছিলো।আমি আর আমার বেইবী ক্যান্ডেল লাইট বাসর করবো।লন্ডন হানিমুন করবো। বাট মাই বেইবী…”
বলেই কান্না শুরু করে জারা।সোনালীর মাথা এবার খারাপ হয়ে গেছে। কাল থেকে নিজের বরের খোঁজ পাচ্ছে না এখন আবার আরেকজনের বরকে ছাড়ানোর প্লান করছে।
মায়া এসেছে তার ফ্যাক্টরির সিক্রেট রুমে।সেখানে দুজনকে বেধে রাখা হয়েছে।একজন বয়স্ক লোক আরেকজন যুবক।দুজনেই অজ্ঞান হয়ে চেয়ারে হেলিয়ে আছে।মায়া ইশারা করতেই মায়ার গার্ড ওদের মুখে এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে চলে যায়।দুজনে ধড়ফড়িয়ে উঠে।যুবকটি মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”তুই সেই না যে আমাকে জেলে পাঠিয়েছিলি?তোকে তো আমি…”
“আব্বে এই।কি মনে করিস নিজেকে?মায়া কাচা খেলোয়াড়। নো নো নেভার।আসলে মায়া তোদেরকে একটা সুযোগ দিয়েছিলো।কেনো জানিস?”
ওরা দুজন মাথা নাড়ালো।মায়া ওদের দিকে রক্তচক্ষু করে বলে,”তোদেরকে কেনো বলবো?আমি আমার সিক্রেট আমার ভালোবাসার মানুষকেই বলিনা।তোরা কিভাবে ভাবলি যে তোদের বলবো?তারপর বল!কেনো মারতে চেয়েছিলি আমাকে আর আমার মন্ত্রী মশাইকে?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বয়স্ক লোকটি বলে,”আমার ছেলেকে অ্যারেস্ট করা হয়েছিলো তোর কারণে।তাহলে কি তোকে ছেড়ে দিবো?”
“আরে বাহ!কুলাঙ্গার ছেলে জন্ম দিবেন আপনি আর খুন করবেন যারা কুলাঙ্গারকে শাস্তি দিবে তাদের।”
“আমি যাই করি তাতে তোর কি? তোকে তো রে**প করিনি। তুই কেনো বাঁ হাত ঢোকাস?নাকি তোরও ইচ্ছা আছে চরিত্রে দাগ লাগানোর?”
বলেই বিশ্রী হেসে দিলো।ঘরে মায়া একা আছে।গার্ড ওদের মুখে পানি ঢেলে চলে যায় তাই ওদের কাউকে এই বাবা ছেলে দেখতে পায়নি। আর ঘরে তাদেরকে বেধে রাখা ছিলো না।তাই ভেবেছে মায়া কিছুই করতে পারবে না।মায়া ওদের বাবা ছেলের বিশ্রী হাসি দেখে রেগে যায়।সাথে সাথে তেড়ে এসে ছেলেটির চুল ধরে হেঁচকা টান দিয়ে বলে,”কি ভাবিস তোরা?মেয়েরা দুর্বল তাই মায়াও দুর্বল?আসলে এমন না।এই মায়া তোদের মতো নষ্ট লোকদের জম।হাসছিস মন খুলে তাই না।এবার কান্না করবি ভিক্ষা চাইবি।”
বলেই মায়া লেহেঙ্গা হালকা উচু করে জুতার নিচ থেকে ছুরি বের করে।ছুরিটি আকারে ছোট হলেও ধারালো ছিলো।বাবার সামনেই ছেলের গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে দিলো এক টান।ছেলেটির গলা দিয়ে গড়গড় করে পড়তে থাকে রক্ত।গলার শিরা কেটে ফেলেছে মায়া।বাবার সামনেই ছেলেটি ছটফট করতে থাকে।মায়া এখনও ছেলেটির চুল নিজের মুঠে রেখেছে।মুরগি জবাই দিলে যেমন মুরগির পা নিজের হাতে থাকে আর মুরগি লাফাতে থাকে যুবকটিও ঠিক তেমন করতে থাকে।ছেলেটির গলা থেকে রক্তগুলো তার শার্ট ভিজিয়ে দিতে থাকে।এসব কিছু এক নিমিষে হওয়াতে টাল সামলাতে পারেনি যুবকটির বাবা।তিনি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন।ছেলেকে বাঁচানোর সুযোগ সামনে থেকেও সে পেলো না।মায়া তো সেই সুযোগ দিলই না। আস্তে আস্তে লাফাতে লাফাতে হঠাৎ করেই শেষ হয়ে গেলো যুবকটির নিঃশ্বাসের গতি।একদম নিস্তেজ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস নিয়ে ওখানেই মারা গেলো সে।
মায়া রক্ত মাখা ছুরি হাতে নিয়ে হাসতে থাকে।ঘর কাঁপিয়ে হাসছে সে।বউ সাজেও মায়ার ভয়ংকর রূপ দেখা যাচ্ছে।লোকটি এবার কাপছে ভয়তে।মায়া একা একটি মেয়ে হয়েও তার সামনে তার ছেলেকে এভাবে হত্যা করলো।ভয়তে কাপলেও সে আশেপাশে তাকিয়ে একটি লোহার রড দেখলো।যেটা দেখে সাথে সাথে হাতে নিয়ে মায়ার দিকে আঘাত করতে যায়।কিন্তু মায়া সাথে সাথে ধরে ফেলে রড।লোকটির হাত থেকে টান দিয়ে মায়া নিজের কাছে নিয়ে এলো রডটি। রডটি ডান হাত দিয়ে ঘুরিয়ে গোলগোল করতে থাকে মায়া।লোকটির দিকে রক্ত চোখে তাকিয়ে বলে,”তাকিয়ে দেখ ছেলেকে। তোর ছেলে আমার চরিত্র হরণ করতে চেয়েছিলো না?আমি তোর ছেলেকেই দুনিয়া থেকে বিদায় দিয়ে দিয়েছি।এখন তোর পালা।তবে ছেলের শোকে একটু তো শোক পালন করতে হবে তোকে।সময় দিলাম তোকে। যাহ ছেলের কাছে যা।একটু ছেলের জন্য কান্নাকাটি করে নে।তোদের মত নষ্ট পুরুষ মানুষদের আবার বেশি সুযোগ মায়া দেয় না।”
লোকটি মায়ার বাম হাতের ইশারার দিকে তাকিয়ে থাকে।সেখানে তার ছেলের লাশ।এই মাত্র খুন করেছে তাকে।ছেলের লাশ দেখে বুক কাঁপতে থাকে তার।মায়া এখনও হাতের রডটি চরকির মত করে ঘুরাচ্ছে।এটা যেনো এখন তার নেশা।কিছুক্ষণ ছেলের দিকে তাকিয়ে কান্না করতে থাকে লোকটি।হঠাৎ করেই মাথায় অনেক জোরে আঘাত পায় সে।মাথায় হাত দিয়ে দেখে রক্ত।পিছনে তাকিয়ে দেখতে পায় মায়া রক্তচোখে হাসছে।লোকটির দিকে তাকিয়ে মায়া বলে,”বলেছিলাম না বেশি সময় দিবো না।বরকে রেখে এসেছি যে।তোদের জন্য বাসর ছেড়ে এখানে আসতে হয়েছে।ছার দিতে দিতে এতটাই পেয়ে বসেছিলি যে আমার বিয়ের দিনটাই তোরা টার্গেট করলি আমাকে খুন করার।নে এবার মর তোরা।”
বলেই লোকটির বুক বরাবর দিলো এক লাথি।ছেলের লাশের পাশে ছিটে পড়লো সে।মায়ার দিকে তাকিয়ে দেখলো অগ্নিমূর্তি রূপে এক রমণী।যে দমন করছে সকল পাপকে।লোকটি হাত জোড় করে বলতে থাকে,”আমাকে মাফ করে দেও মা।আমি ভুল করেছি। আর কখনও এমন করবো না।আমাকে দয়া করে ছেড়ে দেও।”
মায়া তেড়ে এসে বলে,”সেদিন তোর ছেলে যখন রিমুকে আক্রমণ করে।তখন রিমুও হয়তো বলেছিলো তাকে ছেড়ে দিতে।শুধু রিমু একা না এই পৃথিবীতে এমন অনেক রিমুর জীবন তুই আর তোর ছেলে নষ্ট করেছিস।অনেক সপ্ন দেখে বিয়ের কেনাকাটা করেছিলো রিমু ও তার পরিবার।প্রতিটি মেয়ের ছোটবেলা থেকে সপ্ন থাকে বড় হয়ে পুতুলের মত করে বউ সাজবে।কিন্তু তোদের মত নরপশু সেই সপ্ন মুহূর্তেই নষ্ট করে দিস।তোর ছেলে কি ছার দিয়েছিলো রিমুকে?রিমু তো নষ্ট মেয়ে ছিলো না।ওকে নষ্ট করেছিস তোরা।তোরা ভালো ভালো মেয়েদের কেনো টার্গেট করিস বলতো?আমি তো তোদেরকে তোদের কাজের প্রাপ্য শাস্তি দিয়েছিলাম।কিন্তু তোরা উল্টো আক্রমণ করলি আমাকে।তোর ছেলে কিভাবে ছাড়া পেলো?নিশ্চয়ই তোদের সেই পাওয়ার আছে।তাই তোদের মতো নষ্ট লোকদের ছার দিয়ে দুনিয়া ধ্বংস করতে চাই না।এই দেশে প্রত্যেকটি ভালো মেয়ে তাদের সপ্ন পূরণ করার অধিকার পাবে।বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবি না তোরা।কোনো মেয়ের চরিত্রে কলঙ্কের দাগ লাগাতে পারবি না আর।সেই সুযোগ দিবে না তোকে মায়া। হ্যাপি ডেথ ডে।”
বলেই মায়া তার হাতের রড দিয়ে লোকটির বুক বরাবর আঘাত করে।ঘর কাঁপানো চিৎকার দিয়ে ওঠে লোকটি।মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করছে সে।মায়া বলে ওঠে,”তোদেরকে আইনি শাস্তি দিয়েও খান্ত হওয়া যায় না।তোরা আইনকে নিজের আঙ্গুলে ঘুরিয়ে নারীদের অপহরণ করে দিস।তাই আজ দেখ অন্যায় করলে কেমন কষ্ট লাগে।একজন বাবা মায়ের সন্তান যখন কলঙ্কিত হয় সেই বাবা মা পারে না আশেপাশে মাথা উচু করে চলতে।এর একমাত্র কারণ তোরা।আজ ভোগ কর সেই পাপের শাস্তিগুলো।”
বলেই মায়া রড দিয়ে আবার তার বুকে আঘাত করে। রড লোকটির বুকের ভিতর থেকে ভেদ করে পিছনে চলে যায়।লোকটির শরীরের রক্তগুলো ছিটকে আসে মায়ার মুখে।লোকটি আবারও চিল্লিয়ে ওঠে। ছটফট করতে করতে সেখানেই নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো লোকটি।মায়া তাকিয়ে আছে লাশ দুটির দিকে।জোরে চিৎকার করে ডাকলো,”তারেক।”
ছুটে চলে আসে তারেক।মায়ার দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় রক্তবতী এক নারী।তারেক খুশি হয় খুব।যেসব মানুষ ধর্ষণ করে আর যেসব মানুষ ধর্ষণকে স্বীকৃতি দেয় তারা সবাই নিকৃষ্ট।তারেক তাদের সহ্য করতে পারে না।মায়া তারেককে দেখে বলে,”লাশ দুটোকে এমন জায়গায় মাটি চাপা দেও যাতে কেউ লাশকে মর্গে নিয়ে টেস্ট না করায়।”
“ওকে ম্যাম।টেনশন করবেন না।লাশ আমরা সেভাবেই মাটি চাপা দিবো।”
মায়া চলে যেতে নেয়।কিন্তু দুই পা এগিয়ে তারেকের দিকে ফিরে তাকিয়ে বলে,”আর হ্যাঁ কবর দেওয়ার আগে একটু জানাজা পড়ে নিও।”
“জি।”
চলে গেলো মায়া গাড়ির দিকে।মায়াকে রক্তমাখা অবস্থায় দেখে থরথর করে কাপছে ড্রাইভার।মায়া দেখলো তাকে।হালকা হেসে বলে,”চিন্তা করবেন না আংকেল।আমি মায়া এতটাও খারাপ না যে কোনো নির্দোষ ব্যাক্তিকে হত্যা করবো।”
লোকটি উত্তর দিলো না।চুপ আছে সে।মায়া সিটের সামনে রাখা পানির বোতল হাতে নিয়ে মুখ ধুয়ে নিলো।তারপর ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে বলে,”সরদার বাড়িতে চলুন আংকেল।”
গাড়ি চলতে শুরু করল।সোজা সরদার বাড়ির সামনে এসে থামলো গাড়ি।মায়া গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়িটির দিকে তাকিয়ে আছে।বাড়ির সামনে বড় বড় করে লেখা ‘সরদার মহল’।মায়া নামটার উপর হাত বুলিয়ে বলে ওঠে,”আমার এক সময়ের প্রিয় মহল এখন আমার ঘৃণার মহল।সব কয়টাকে ভোগ করতে হবে।আমার মায়ের গায়ে আঘাত করা প্রতিটি ব্যাক্তিকে আমি রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দিবো।পথের বাধা হয়ে যদি শাহমীর রাজ আসে তো তাকেও আমি শেষ করে দিবো।”
বলেই চোখের পানি ফেলে মায়া।আবার বলে,”আমি পারবো না আমার রাজাকে মারতে।ভাগ্য যেনো আমাকে সেই দিনে নিয়ে না আসে।আমার পথের কাটা হয়ে না আমার পথের গোলাপ হয়ে চাই আমার মন্ত্রী মশাইকে।
বলেই বাড়ির দিকে ঢুকে যায় মায়া।দেওয়াল টপকেই ঢুকে পড়ে সে।তারপর ব্যালকনির পাইপ বেয়ে উপরে ওঠে।এখন প্রায় ভোর রাত।মায়া ভেবেছিলো রাজ এখনও ঘুমে।কিন্তু নাহ।রাজ বসে আছে খাটে।মায়া ঘরে ঢুকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।মায়ার উপস্থিতি অনুভব করলো রাজ।ঘুরে তাকায় মায়ার দিকে।বসে থেকেই নরম সুরে বলে,”আমাদের প্রথম রাত্রীযাপন কি মধুর হতে পারত না?”
ফিচেল হেসে মায়া বলে,”আজ আমার কর্মে মায়াবতী শব্দটা মুখ থেকে প্রকাশ পাচ্ছে না তাই তো?”
রাজ মায়ার কাছে আসে।মায়ার হাত ধরে উচু করে।পকেট থেকে রুমাল বের করে মায়ার হাত মুছতে মুছতে বলে,”রক্তবতীকে ভালোবেসেছি আমি।কিন্তু তাই বলে আজকের রাত?আজ তো আমাদের জীবনের স্পেশাল রাত ছিলো।”
“ওরা আমাদের মারতে চেয়েছিলো।আপনি জানেন আজ আপনি আমাকে কিডন্যাপ না করলে আজ আমি জীবিত থাকতাম না।আমার গাড়িতে বোম ফিট করে রেখেছিলো।শুধু তাই না রিমুকে সহ আমার ফ্যাক্টরির কয়েকটি মেয়ের দিকে ওদের নজর ছিলো।আমার লোকেরা ওদের ফলো করেছিলো তাই ওদের আটকে রেখেছে।ওদেরকে আইন শাস্তি দিতে পারেনি।তাহলে কেনো আমি তাদেরকে ছেড়ে দিবো?”
“ওদের শাস্তি তো কালকেও দিতে পারতে।”
“দেরি যে আমার সহ্য হয় না মন্ত্রী মশাই।দেরি করতে যেয়ে যে আমি আমার সর্বস্ব হারিয়ে ফেলি। আর কিছু হারাতে চাই না আমি।অন্তত অতগুলো মেয়ের পরিবারের হাহাকার সহ্য হতো না আমার।আপনার আমার সুখের মুহূর্ত অনেক হতো কিন্তু আজ রাতে যদি অন্য মেয়ের ধর্ষণ হতো তাহলে যে কাল তাদের পরিবার সমাজের কাঠগোড়ায় দাড়াতো।”
বলেই ডুকরে ওঠে মায়া।রাজ মায়াকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।মায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,”শান্ত হও মায়াবতী।আমি শুধু চেয়েছিলাম আজকের দিনটি তুমি আমার সাথে স্পেশাল ভাবে থাকো।”
“আমি তুমি একসাথে থাকলে তো রিমুর মতো মেয়েরা অশান্তি ভোগ করতো।রাতের আধারে কেনো জালিমরা শান্তি পাবে আমরা কেনো জালিমদের ধ্বংস করবো না?আমি এমন হতে পারবো না।আমি তাদের প্রত্যেককে শাস্তি দিবো যারা একেকটা নরপশু।”
রাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু মায়াবতী!কয়জন জালিমের নিঃশেষ করতে পারবে তুমি?”
“যে কয়জন আমার সামনে আসবে তাদের প্রত্যেককে।”
“পাগলী মায়াবতী।”
বলেই মায়াকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়।মায়ার চোখে পানি।রাজ সেগুলো নিজের ওষ্ঠ দিয়ে শুষে নেয়।তারপর বলে,”আমার মায়াবতীর চোখের পানি আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।মূল্যবান সম্পদ সবসময় নিজের কাছে গোপন রাখতে হয়।এভাবে সব জায়গায় প্রকাশ পেলে তো লোকে মূল্যহীন করে দিবে।”
“রাতের অন্ধকারের সাথে সাথে কি আমার জীবনের অন্ধকার কেটে যাবে?”
“মায়াবতীর অন্ধকার জীবনকে আলোকিত করতেই তো এই মন্ত্রী মশাইয়ের আগমন।”
মায়া এবার খুশি হয়।রাজের গালে হাত দিয়ে রাজের ললাটে ভালোবাসার ছোঁয়া দেয় মায়া।বলে,”আমাকে এভাবেই ভালোবাসবেন মন্ত্রী মশাই।আমাদের জীবনের তৃতীয় ব্যাক্তির আগমন কখনোই হতে দিবো না আমি।”
“নিশ্চিন্তে থাকো মায়াবতী।কেউ আসবে না আমাদের জীবনে।”
“কিন্তু আপনার অতীত?”
“আমার অতীত!”
অবাক হয়ে বলে রাজ।মায়া রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”ওই যে ওইদিন বলেছিলেন ভালোবাসায় দূরত্ব বাড়িয়ে দিলে অনুভূতি বোঝা যায়।ওটা কার জন্য ছিলো?”
রাজ হালকা হেসে মায়ার নাকে তার বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে খোঁচা দিয়ে বলে,”ওটা যেই হোক না কেনো কোনো তৃতীয় ব্যাক্তি না।ওটা আমার নিজের মায়াবতী।”
“মানে?”
মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২৪
“কিছু না।সময় হোক জানতে পারবে।ঘুমও এখন।”
বলেই মায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় রাজ।মনে মনে বলে,”এগারো বছর বয়সে বিয়ে করে তোমার প্রতি বউ বউ ফিলিং নিয়ে চলে গেছিলাম দূর দেশে।ভালোবাসার জন্ম না নিলেও তখন হয়েছিলো ভালোলাগার জন্ম।বাবা আর দাদুর বলা আদেশ নিষেধ মেনেই তোমাকে বউ হিসেবে পেয়েছি আমি।দেশে আমার বউ আছে বলে অন্যদিকে মন না দিয়ে বউয়ের অপেক্ষার সাথে নিজের স্বপ্নকে পূরণ করেছি।কিন্তু বউ আমার জানতেই পারলো না তার মন্ত্রী মশাই তার থেকে দূরত্বে থাকার কথা বলেছে।এই যে পূর্ণ বয়সে এসে ছিলাম যোজন যোজন দূরে এটা আমাকে পুড়িয়েছে ক্ষণে ক্ষণে।”