মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ৫৩
ইশরাত জাহান
হাসিকে কবর দেওয়া হলো মাত্র।মায়া শাহানা পারভীনকে খুঁজতে লোক পাঠিয়েছে।মিহির চুপ করে বসে থাকে কিছুক্ষণ।মায়ার দিকে ফিরে মায়াকে উদ্দেশ্য করে বলে,”আমার মায়ের মৃত্যুর বদলা আমি চাই।এটা তুমি করবে কি না আমি জানি না।তুমি না পারলে আমি নিবো।”
মায়ার চোখ লাল হয়ে আছে।কিছু একটা ভেবে বলে ওঠে,”চলো মিহির ভাই।হাসি মায়ের খুনিকে শেষ করে দিবো।”
বলেই উঠে দাড়ায় মায়া।একটি কালো ব্লেজার সাথে গুলি নিয়ে পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটতে থাকে।মিহির আসে মায়ার পিছনে।গাড়িতে উঠে বসতেই মায়া ড্রাইভিং শুরু করে।
সিয়া বসে আছে চুপচাপ।কিছু ভালো লাগছে না তার।আদ্র তাকে সকালের খাবার দিয়ে গেছে।কিন্তু না খেয়ে পাশে রেখে চুপচাপ বসে আছে সিয়া।সকাল গড়িয়ে দুপুর তারপর দুপুর গড়িয়ে এখন বিকাল।কিন্তু একটা দানা মুখে উঠায়নি সিয়া।বারবার মাথায় আসছে তার পরিবারের কিছু হলো না তো।
“না খেয়ে এভাবে খাবার জমিয়ে রেখেছো কেনো?টাকা আর ভালোবাসা জমিয়ে রাখলে তা বাসি হবে না কিন্তু খাবার জমিয়ে রাখলে বাসি হবে আর তা থেকে ব্যাকটেরিয়া হবে।”
বলতে বলতে সিয়ার পাশে বসে আদ্র।সিয়া তাকালো না আদ্রর দিকে।সোজা তাকিয়ে থেকে বলে,”কবে মুক্তি পাবো আমি এই জেল থেকে?”
“যেটাকে তুমি জেল বলছো একদিন এটাই তোমার জন্য ফুলের সজ্জায়িত স্থান মনে হবে।”
“মিথ্যা আশা নিয়ে বাঁচতে চাই না আমি।”
“আচ্ছা সেসব কথা ছাড়ো।কিছু খেয়ে নেও।ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখো আর নিজে না খেয়ে বসে আছো এটা কি উচিৎ?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এবার সিয়া তাকালো আদ্রর দিকে।বলে,”আপনি কি আদৌ হতে দিবেন আমাকে ডাক্তার?”
সিয়ার মুখে হাত রাখতে যায় আদ্র কিন্তু সিয়া দূরে সরে যায়।আলতো হেসে আদ্র বলে,”কেনো দিবো না ডাক্তার হতে?তোমার সপ্ন পূরণ করতে আমি তোমাকে বাধা দিবো না।”
“তাহলে আটকে রেখেছেন কেনো?আমার পরিবারের ক্ষতি করছেন কেনো?”
“কে বলেছে আমি তোমার পরিবারের ক্ষতি করছি?আমি তো শুধু আমার বাবা মায়ের খুনিকে শাস্তি দিতে এসেছি।আমার চোখের সামনে বাবা মাকে পুড়ে মরতে দেখেছি আমি।পূরন্ত বাড়ির চারপাশে ছোটাছুটি করেও নিজেকে বাঁচানোর সুযোগ পায়নি আমার বাবা মা।যে এসবের জন্য দায়ী আমি কেনো তাকে শাস্তি দিবো না?”
সিয়ার মাথা ঘুরছে।না খাওয়া শরীর।বলতে গেলে দুইদিন না খাওয়া সে।আদ্রর মা বাবাকে কেউ খুন করেছে।পুড়িয়ে মেরেছে তাদেরকে।অদ্রকে প্রশ্ন করে,”কে মেরেছে আপনার মা বাবাকে?”
“মিসেস সোনালী তোমাদের কাকি।”
“প্রমাণ কি?”
আদ্র ফিচেল হেসে বলে,”প্রমাণ আমার একাকিত্ত জীবন।আর বাস্তব প্রমাণ দেখাচ্ছি।”
বলেই আদ্র উঠে যায়।কিছুক্ষণ পর ফিরে আসে হাতে কিছু ছবি নিয়ে।যেগুলোতে দেখা যাচ্ছে সোনালীর কিছু কর্মকান্ড।সিয়া এখন পুরো নিঃস্তব্ধ হয়ে আছে।কি বলবে বুঝতে পারছে না।এই সময়ে কাউকে কিছু বলা যায় না।খানিক চুপ থেকে সিয়া বলে ওঠে,”তাহলে রুদ্র ভাইকে কেনো বদনাম করলেন?শুধু কাকিয়াকে নিয়ে যা খুশি করতেন।কাকাই কি দোষ করেছে?”
“তোমার কাকার চাহিদা আর তার ট্র্যাপ রুদ্র তাই দুজনকে ফেস করতে হয়েছে।এছাড়াও আরো একজন চায় মোহন সরদার ও সোনালীর পতন।বলতে গেলে আমাদের কাজ আমাদের উদ্দেশ্য সব এক।”
“কে?”
“মেহেরুন জাহান মায়া।”
“ভাবী!”
“হুম।জীবনে অনেক কিছু সহ্য করে এসেছে বেচারি।আমি তো তাও বাবা মাকে হারালেও সমাজের মুখে অপমানিত হইনি।আমার মাথার উপর আমার সপরিবার ছিলো।আমি আজ সফল হয়েছি আমার দাদীর ভালোবাসা পেয়ে।বাবা মা না থাকলেও আমি জীবনে কোনো কিছুর অভাব বোধ করিনি।অন্তত এটুকু বলতে পারি আমার বাবা মা আমাকে তাদের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে।কিন্তু ওই বেচারি তার বাবার প্রত্যাখ্যাত পেয়েছে।শুধু তাই না মাকে নিয়ে ফেস করতে হয়েছে অনেক কিছু।একা দুই মেয়ে মানুষ কত শত শেয়াল কুকুরের হামলার শিকার হয়েও বেচে গেছে।নিজেদের অনেক কষ্টে রক্ষা করেছে।”
“আপনি এতকিছু কিভাবে জানেন?”
“আমার মা আর আণ্টি মানে মায়ার মা দুই বান্ধবী ছিলেন।খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল না।ওই একসাথে এক কলেজে পড়তেন তারা।আমার মায়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো ওই সোনালীর বড় বোন।”
“জারা আপুর আম্মু?”
মাথা নাড়ালো আদ্র।যার অর্থ না।সিয়া বলে ওঠে,”কিন্তু কাকিয়ার বোন তো জারা আপুর আম্মু।”
হালকা হেসে আদ্র বলে,”পাপের ভার বেশি হয়ে গেছে ওই সোনালীর।নিজের আপন বড় বোনকে খুন করেছে।তাই তো তাকে চেনো না তোমরা।সেই বড় বোন আমার মায়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো।সোনালী যখন আমার মায়ের পথের কাটা হয়ে আসে তখন মা কোনোভাবে জেনে যায় মায়ার ব্যাপারে।ওই যে তোমার কাকা মায়ার মাকে ঠকিয়েছে তাই।খোঁজ নিয়ে যখন মা জানতে পারে যে সোনালী যাকে বিয়ে করেছে তার বউ শাহানা পারভীন তখন মা আণ্টির সাথে কথা বলে।তারপর ঘটে যায় অনেক কিছু।মরে যেতে হয় আমার বাবা মাকে।”
কথাগুলো বলতে বলতে আদ্রর চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে।যেনো সে এখন পুরনো অতীতগুলো কল্পনা করছে।সিয়া এবার নিজ দায়িত্বে আদ্রর কাধে হাত রাখে।চোখ মুছে আদ্র তাকালো সিয়ার দিকে।সিয়া বলে ওঠে,”আমাকে এগুলো আগে বললে তো এত সমস্যা হতো না।আগে কেনো বলেননি?”
“তার একমাত্র কারণ তোমাকে এখানে আটকে রাখা।এই সময়টা সরদার বাড়ির উপর দিয়ে ঝড় যাবে।”
“মানে?”
“সোনালী দেখতে যেমন ও আসলে তেমন না।ওর নিজেরও আলাদা পাওয়ার আছে।ও হলো ড্রাগ সাপ্লাইকারি ও নারী পাচারের সাথে যুক্ত।”
হাত পা কাপতে থাকে সিয়ার।এতদিন খারাপ এক মহিলার সাথে এক ছাদের নিচে ছিলো ওরা।সিয়া বলে ওঠে,”তাহলে তো তাকে পুলিশে দিতে হবে।এভাবে বসে আছি কেনো আমরা?”
“এতই কি সোজা?জেলে দিলে উনি নিজের ক্ষমতায় বেড়িয়ে আসবে।কারণ সোনালীর সাথে আছে আরও এক গ্যাং।যার দ্বারা সোনালী সকল দুই নাম্বার কাজ ও নোংরামি করতে থাকে।আর তাকে হাতে নাতে ধরতেই আমাদের এত নাটক।বলা চলে চিনি ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে এখন পিঁপড়া নিজে থেকে আসবে।আর তখনই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো আমরা।”
“এত নিকৃষ্ট এক মহিলা কোন স্বার্থে আমাদের পরিবারে আসতে গেলো?কেনো আমাদের ক্ষতি করতে চায় সে?”
“তোমাদের বাসায় একটি সিক্রেট রুম আছে।যেটা কেউ জানে না।আমিও জানতাম না।জেনেছি কারণ মায়া আমাকে বলেছিলো।ওখানে একটি লকার আছে।যেটাতে আছে অর্গানিক ফুড প্রসেসিংয়ের ফর্মুলা।যেটা তৈরি করতে লাগবে বছরের পর বছর।এমনকি এটার পিছনে অনেক টাকা খরচ করতে হয়।যেগুলো সবকিছু কমপ্লিট করত সক্ষম হয় মিসেস রোহিণী মানে শাহমীর রাজের মা।”
সিয়া অবাক হয়ে বলে,”ভাইয়ার মা মানে?”
“মিসেস মালিনী তোমার আর হিয়ার মা হলেও মিসেস রোহিণী শুধু শাহমীর রাজের মা।তোমার মায়ের যমজ বোন মিসেস রোহিণী।তিনি ছিলেন একজন কৃষি বৈজ্ঞানিক।যার সপ্ন ছিলো দেশের মানুষ যতটুকু খাদ্য গ্রহণ করবে তা যেনো ফ্রেশ রোগমুক্ত খাবার হয় এটার ব্যাবস্থা করা।দিন রাত পরিশ্রম করে তিনি একটি ফর্মুলা তৈরি করেন।যেটা সার হিসেবে ব্যাবহার করলে খাবারগুলোতে কোনো পোকামাকড় তৈরি হবে না।আবার খাবার খেয়ে কোনো রোগের সৃষ্টি হবে না।কিন্তু ওই ফর্মুলা পাবলিক হওয়ার আগে দেশে ড্রাগ সাপ্লাই বৃদ্ধি হয়।সেই ড্রাগ বিভিন্ন খাদ্যে মিশিয়ে দেন সোনালী।গোপন সূত্রে খোঁজ পায় রোহিণী একটি ফর্মুলা তৈরি করে। যেটার মূল্য কোটি টাকার সমান।বিদেশে এটা বিক্রি করতে পারলে সে হবে কোটি টাকার মালিক।
কিন্তু মিসেস রোহিণী চান ওই ফর্মুলা দেশের মানুষের কাজে লাগাতে।নিজেকে নিয়ে ভাবেন নি তিনি।তিনি চাইলে সবার সামনে ফর্মুলা নিয়ে বলে আগে থেকেই জনপ্রিয় হতে পারতেন।কিন্তু না তিনি চান ফর্মুলা দিয়ে দেশের সবার ভালো করতে।আর ওটা তিনি মারা যাওয়ার আগে তোমার দাদুকে দিয়ে যান।তোমার দাদু নিজে থেকে সুরক্ষিত রাখেন।লকারের পাসওয়ার্ড মায়াকে ও আণ্টি(শাহানা পারভীনকে) বলে রেখেছেন।রাজ তখন দেশে ছিলেন না।তাই রাজকে কিছু বলে নি।দূর্ভাগ্য বশত তোমার দাদুকে এর জন্য জীবন দিতে হয়।শুধু তাই না তোমার নানুকেও জীবন দিতে হয়।কিন্তু তাদের কে খুন করেছে এটা আমরা জানি না।আমাদের ধারণা এটা যেই করুক সোনালীর সাথে জড়িত।তাই আমরা এখনও সোনালীর কিছু করিনি।”
সিয়া এবার নিজেই কান্না করে দেয়।আদ্র সিয়াকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে,”কান্না করছো কেনো?”
“আপনারা এত ভালো কাজ করছেন আর আমি আপনাকে ভুল বুঝেছি। আর কাকিয়া যদি কোনো ক্ষতি করে দেয়।আমার তো ভয় করছে এসব শুনে।”
“আরে পাগলী ভয় নেই।মায়া নিজে আছে তো।সে ঠিক করে দিবে সব।সবকিছুর মাস্টার মাইন্ড যে সে।আর মায়ার ঢাল হয়ে আছে শাহমীর রাজ যে পূরণ করবে তার মায়াবতীর ইচ্ছা।তাছাড়া ভাই হিসেবে আমরা তো আছি।এবার কিছু খেয়ে নেও।”
মাথা নাড়িয়ে খাবার খেতে বসলো সিয়া।
রাজের খোঁজ পেয়ে সেখানে হাজির হলো মায়া ও মিহির।চোখমুখে হিংস্রতা প্রকাশ পেয়েছে।একভাবে নিজের মতো করে হেঁটে যাচ্ছে মায়া।পিছনে মায়াকে ফলো করে হাঁটতে থাকে মিহির।এক লাথি দিয়ে রাজের রুমের দরজা খুলে দেয় মায়া।রুমে ঢুকে দেখতে পেলো ল্যাপটপে কাজ করছে রাজ।সোফা থেকে উঠে এগিয়ে আসে মায়ার কাছে।মায়ার পাশে মিহিরকে দেখে রগ ফুলে এলো রাজের।বলে ওঠে,”এই ইডিয়েট টা এখানে কি করছে?”
বলেই মিহিরকে মারতে গেলে মায়া আটকে দেয় রাজের হাত।রাজকে ধাক্কা দিয়ে বলে,”ভুলেও ওর দিকে হাত বাড়াবেন না।”
“কেনো গায়ে লাগছে তোমার?”
“আমার মা কোথায়?”
“তোমার মাকে কল করে দেখো।”
“হেয়ালি করবেন না।আমার মাকে আপনি আটকে রেখেছেন।ভালোয় ভালোয় আমার মাকে ছেড়ে দিন নাহলে ওপারে পাঠিয়ে দিবো আপনাকে।”
“রিয়েলী!তুমি আমাকে ওপারে পাঠিয়ে দিবে?দেও দেখি।”
রাজের দিকে তেড়ে আসে মিহির।রাজের মুখে ঘুষি দিয়ে বলে,”আমার মাকে খুন করছিস তুই।তোকে আজ খুন করে ফেলবো।”
মিহিরকে আটকিয়ে মায়া বলে ওঠে,”ওকে ছেড়ে দেও মিহির ভাই।হাসির খুনিকে শাস্তি আমি দিবো।অন্য কেউ না।হাসির জীবন আমার জন্য গেছে।আমাকে বাঁচাতে হাসির জীবন চলে গেছে।আমি কিভাবে ছেড়ে দেই তাকে।”
বলেই শুট করে দেয় মায়া।কথাগুলো বলে অপেক্ষা করেনি সে।হাত উচু করেই শুট করে দেয়।যার কারণে দিশেহারা হয়ে যায় রাজ ও মিহির।এ যেনো কথার চেয়ে কাজে করে দেখিয়ে দিলো।গুলি ছোড়ার কারণে কিছু রক্ত এসে ছিটে লাগলো মায়ার চোখমুখে।কষ্ট হতে থাকে মায়ার।চোখ দিয়ে পড়তে থাকে পানি।বলে ওঠে,”কখনও ভাবতে পারিনি আমি এই দিনটা আমার জীবনে আসবে।সম্পর্কের মূল্য এভাবে না দিলেও পারতে।”
বলেই চোখ বন্ধ করে শুট করে দেয় মায়া।রাজ নির্লিপ্ত হয়ে আছে।কোন কথা আসছে না তার মুখ থেকে।শুধু মুখে ফুটে ওঠে এক মায়াবী হাসি।মুখ থুবড়ে নিচে পড়ে যায় মিহির।বুক দিয়ে তার গড়গড় করে রক্ত পড়ছে।মায়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
মায়া হিংস্র রূপ ধারণ করে বলে,”সন্তান হয়ে নিজের মাকে খুন করেছো তুমি।কি ভেবেছো আমি কিছু বুঝি না।ফর্মুলা পেতে আগে মন্ত্রী মশাইকে আমার মাধ্যমে মারতে চাও তারপর আমাকে জেলে পাঠাতে।কিন্তু এমনটা তো হবার না।”
মিহির এবার হাঁফাতে হাঁফাতে প্রশ্ন করে,”তুমি কিভাবে জানলে এতকিছু?”
“ওহ কাম অন মিহির ভাই!তুমি কৃষি বিষয়ে আগ্রহী। আর আমার শাশুড়ি মা যেটা তৈরি করে গেছে ওটা তো তোমার কাজে খুব ভালো ভাবে লাগবে।শুধু কি তাই?আমার আসল পরিচয় সবাইকে তুমি বলেছো।যেটা আর কারও বলার কথাই না।যেখানে আমার মন্ত্রী মশাই আমার ঢাল হয়ে আছে সেখানে কি করে সে আমার শত্রু হবে?”
রাজ এবার তার দুই হাত দুইদিকে মেলে দিয়ে বলে,”আমার বক্ষে তোমাকে স্বাগতম,মায়াবতী?”
দৌড়ে রাজের বুকে ঝাঁপ দেয় মায়া।রাজকে জড়িয়ে ধরে।রাজ মায়াকে শক্ত করে জড়িয়ে বলে,”টানা দুইদিন বউ ছাড়া বুকটা আমার শূন্যতা পেয়েছিলো।কবে যে এদের সবগুলোকে শেষ করে আমার শূন্যতা দূর হবে অপেক্ষায় আছি।”
বলেই রাজ এবার নিজে শুট করে দেয় মিহিরকে।মিহির ওখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।মায়া সেদিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,”নাও ইউ হেভ টু পেয় সোনালী।”
হিয়াকে কেউ কিডন্যাপ করে নিয়েছে সোনালীর লোক।মায়ার সমস্ত গার্ড অজ্ঞান হয়ে শুয়ে আছে।তাদেরকে অজ্ঞান করে ওখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় হিয়াকে।হিয়া ছট ফট করছে।হামলাকারী হিয়াকে নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারে না।তার আগে গাড়ি থামিয়ে দেয় ড্রাইভার।
মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ৫২
বাইরে উকি দিয়ে দেখে সামনে একটি প্রাইভেট গাড়ি।গাড়ির উপরে হেলান দিয়ে আছে এক যুবক।গাড়ি থেকে কিডন্যাপাররা বের হয়ে যুবকটির দিকে এগিয়ে আসে।তেড়ে এসে বলে,”রাস্তার মাঝখানে এভাবে গাড়ি নিয়ে আছিস কেনো?সরে যা এখান থেকে।”
হিয়া নিজেও গাড়ি থেকে বের হয়।কাপা কাপা হাতে চশমা ঠিক করে নেয়।যুবকটি মাথা উঠিয়ে বসে পড়ে।হিয়া তাকে দেখে হা হয়ে বলে,”রুদ্র ভাই!”