মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ২৬+২৭
ইশরাত জাহান
অফিসে বসে কিছু কাগজপত্র দেখছে মায়া।ড্রেস ডিজাইন দেখা এছাড়া কিছু হিসাবনিকাশ তো দেখা আছেই।এরমাঝে শিবচরের শোরুমের খোঁজ নিতে কল দিলো রুবিকে।ওপাশ থেকে কল রিসিভ করলো রুবি।কল রিসিভ করেই সালাম দিল।মায়ার কাছে কন্ঠ শুনে খটকা লাগলো যেনো।মায়া সালামের উত্তর দিয়ে বলে,”R you okay Rubi?”
রুবি চোখটা মুছে নাক টেনে বলে,”I am okay mam.”
“আমাকে সব ডিটেইলস পাঠাও।আমি চেক করব।অন্যদিন তো আমাকে বলা লাগে না।তুমি লাঞ্চের পর আমাকে পাঠিয়ে দেও।আজকে কেন বলতে হচ্ছে?”
“আসলে ম্যাম আজকে লাঞ্চ টাইমেই বাসায় আসতে হয়েছে।আপনাকে মেইল করেছিলাম আসার কথাটা হয়তো দেখেননি।”
মায়া মেইল চেক করে বলে,”হঠাৎ?”
“হুম হঠাৎ মা জানালো আমাকে দেখতে আসবে আজ।তাই দেরি হচ্ছে।”
“তোমার তো বিএফ আছে।তবুও কেন আজ দেখতে আসবে?”
“তার তো খোঁজ নেই ম্যাম।সেই যে বাইরে গেছে আজ অব্দি আমার একটা কল রিসিভ করল না।”
“সে তোমাকে ভালোবাসে তো রুবি?”
“একটা সময় তো খুব ভালোবাসত।এখন তাকে বুঝে উঠতে পারছি না।”
“তার ব্যাপারে খোঁজ নেও।যদি কখনও তোমাকে চিট করে তাহলে আমাকে জানাবে। আই হেইট চিটার।কখনও দূর্বল হবে না।আমি আছি তোমার পাশে।ওই চিটারকে আমি উচিত শিক্ষা দিয়ে দিবো।”
কথা বলার সময় মায়া ওর হাতের কলমটা টেবিলে জোরে চেপে ধরে রাখে।রুবি আলতো হাসে শুধু।পিছন থেকে কারো ডাক শুনে বলে,”মা ডাকছে ম্যাম।”
“আচ্ছা তাহলে রাখছি।আর হ্যাঁ তোমার স্বাধীনতা তোমার কাছে।কাউকে ভালো না লাগলে মনের বাইরে তাকে বিয়ে করবে না।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলেই মায়া কল কেটে দিলো।রুবির কাছে তার মা এসে বলে,”একি অবস্থা!শুধু শাড়ি পরে আছিস কেন?একটু সাজগোজ কর।ছেলেপক্ষ তো চলে এসেছে।”
“বিরক্ত করো না তো মা।তোমার কথামত শাড়ি পরেছি।আর কিছু পারব না।”
রুবির মা চলে যেতেই রুবি আবারও ফোন হাতে নিয়ে কল দেয় তার ভালোবাসার ব্যক্তিকে।আজকে সে কল ধরলো।খুশি হলো রুবি।মুখটা হাসিহাসি করে বলে,”কেমন আছো জান?”
বিরক্তির সাথে মিহির বলে,”এভাবে বারবার কল করে জ্বালাও কেন?কাটছি মানে বুঝে নিতে পারো না আমি ব্যাস্ত?”
“অন্যদিন তো এত বিরক্ত করিনা।আজকে খুব মনে পড়ছে তোমার কথা।তোমাকে হারানোর ভয় হচ্ছে যে।”
“এসব মেলোড্রামা বন্ধ করো রুবি।”
“তুমি সেই আগের মিহির নেই।”
“তাহলে জ্বালাবে না।”
বলেই কল কেটে দিলো মিহির।রুবি জানালার বাইরে চোখটা রাখলো।একটু পর সন্ধ্যা হবে।সূর্য ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে।সেই সাথে মনটা বিষিয়ে দিচ্ছে রুবির।চোখের পানি ফেলতে থাকে।মডার্ন জেনারেশনের প্রেমের কারণে তাদের মধ্যে অনেকবার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হয়েছে।বিশেষ করে কাজের কারণে বিদেশে যাওয়ার সময়।চার বছরের প্রেম কি না এখন অবহেলায় পরিণত।এমন তো করেনা মিহির।কতগুলো মাস তার পিছনে ঘুরেছে।প্রেম নিবেদন করেছে।রুবির মন জয় করতে কি না করেছে তার ঠিক নেই।এখন কেন এমন হলো?
লন্ডনের একটি বড় নাইট ক্লাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অহরণ যুবক যুবতী।সেই ক্লাবের এক কোনায় বসে আছে মিহির ও তার বন্ধুরা।তারা বসে বসে মদের গ্লাস হাতে কয়েক পেগ নিয়ে সামনে থাকা ছোট পোশাক পরিহিতা যুবতীদের নাচ দেখছে আর ইনজয় করছে।ক্লাবে থাকা কিছু শর্ট ড্রেস পরা যুবতী এসে একেকজন যুবকের উপরে বসলো।মিহিরের কোলেও এক যুবতী এসে বসলো।নাম তার এলাচ।খ্রিস্টান মেয়েটি বর্তমানে মিহিরের প্রেমিকা।প্রেমিকা বললে ভুল হবে বেড পার্টনার।মিহিরের টাইটা আঙুলে পেঁচিয়ে এলাচ বলে,”Do you like this parfum baby?It’s new.”
মিহির ওর মুখটা এলাচের দিকে এগিয়ে দিলো।গা থেকে যেনো মিহিরকে বস করার মত একটা ঘ্রাণ আসছে।মিহির তার শরীরের ঘ্রাণ শুকে চোখটা বন্ধ করে নেয়।কিছুক্ষণ শুঁকে বলে,”It’s feeling attractive baby.”
“Then let’s go.”
বলেই দুজনে চলে গেলো একটি আলাদা রুমে।সেখানেই দুজনে নোংরা মুহূর্তের সময় কাটাচ্ছে।এদিকে মিহিরের ভালোবাসায় অন্য এক নারী কান্না করতে ব্যাস্ত।একজনের হৃদয় ঝলসে দিয়ে আরেকজনের সাথে সুখের রাজ্যে ভেসে আছে মিহির।
মায়ার কাছে আসলো এক স্পাইম্যান।যাকে মায়া ভাড়া করেছিলো।লোকটি এসে মায়াকে বলে,”শাহমীর রাজ সরদার যাকে নিয়ে তদন্ত করতে বলেছিলেন তার বিষয়ে ইনফরমেশন পেয়েছি ম্যাম।”
“বলতে থাকো।”
“আজ থেকে ঠিক উনিশ বছর আগে তিনি চলে যান লন্ডন।মামার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করেন তিনি।মামাতো ভাই যে একজন মাফিয়া নাম আরহাম খান বীর তিনি আর মন্ত্রী শাহমীর রাজ সরদার এনারা সমবয়সী।একসাথে পড়াশোনা করলেও দুজনের দুই রকম স্বপ্ন বুনতে থাকে।আরহাম খান বীর সবসময় মাফিয়া হতে চেয়েছেন কারণ তার বাবাও একজন মাফিয়া।তাই তিনি তার নানার রাজনীতি ছাড়াও যে ব্যাবসা ছিলো ওটার সাথে মাফিয়া জগতে পা রাখেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শাহমীর রাজ সরদার বিদেশ যাওয়ার ঠিক চার বছর পর বাংলাদেশে ব্যাক করেন।উনি একা ছিলেন না।ওনার সাথে ছিলো ওনার মামাতো ভাই মানে আরহাম খান বীর।এন্ড তারা ঢাকাতে ছিলেন না।ছিলেন চট্টগ্রামে।এরপর তাদের কোনো ইনফরমেশন পাওয়া যায়নি।বলা চলে শাহমীর রাজ সরদার এর কিছুদিন পরেই চলে যান লন্ডনে।থেকে যান আরহাম খান বীর।আমি এগুলো ওনাদের আইডেন্টিটি নিয়ে এয়ারপোর্টে খোঁজ নিয়েছি প্লাস হ্যাকিং সিস্টেমে পুরোনো কিছু ইনফরমেশন কালেক্ট করেছি।যেহেতু আপনার থেকে কিছু তথ্য নিয়েছিলাম তাই এগুলো জোগাড় করতে তেমন বেগ পেতে হয়নি।আরহাম খান বীর কেন বাংলাদেশে থেকে গেলেন এটা তো আপনি নিজেও জানেন যেহেতু সে বর্তমানে আপনার ভাই।শাহমীর রাজ সরদার কেন চলে গেলেন এটা এখনও জানা যায়নি।”
“খোঁজ নিয়ে তাহলে জানাও।”
“অবশ্যই ম্যাম তবে আমার মনে হয় এই খোঁজ আপনি বেশি ভালো করে করতে পারবেন।”
“মানে?”
“শাহমীর রাজের পাসপোর্ট ভিসা তো ওনার ঘরেই আছে।ওগুলো একটু চেক করবেন।আমি তো অনলাইনে প্লাটফর্ম থেকে জেনেছি।আর আজকে সকালে তাজের ওখানে গিয়েছিলাম।মাহমুদ সরদার ওখানে ছিলো বেশ কিছু সময় ধরে।বাবা তো।তাই ছেলেকে দেখছিল অপলক দৃষ্টিতে।”
“তাজকে দেখে তোমার কি মনে হলো?”
“সে তার সেন্সে থাকে না।শাহমীর রাজ সরদার ও মাহমুদ সরদার প্রতিদিন তাকে দেখতে যায়।খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম তাজ যখন চিনতে পারে বাবা আর ভাই এসেছে তখন গল্প করে যখন চিনতে পারে না তখন এড়িয়ে চলে।ওহ তাজ সরদারের আবার ব্রেনে আঘাত লাগে জন্মের সময়ই।একটুতেই মাথা ব্যাথা করে।সে কিছুই মনে রাখতে পারেনা।”
মায়া এবার তাকে বলে,”আমি বাসায় গিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।তুমি এটা জানাও তাজকে কখনও ছুটিতে রাখা হয়েছিল কি না।আর সেই ছুটির ডেট কবে কতটুকু সময়ের জন্য ছিলো।”
“ওকে ম্যাম।”
বলেই লোকটি চলে গেলো।মায়া আর অপেক্ষা করতে পারল না।হাতঘড়ি দেখে নিলো।সেই সকাল থেকে কাজ করেছে।লাঞ্চ করে আবারও কাজে বসেছিল।এখন তার আর কাজে মন নেই।দ্রুত চেয়ার থেকে উঠে চলে গেলো বাসায়।বাকি কাজের দায়িত্ব তারেককে দিয়ে গেল।
হিয়া মন খারাপ করে বসে আছে ক্যান্টিনে।ওর সামনে এসে বসলো একটি মেয়ে।হিয়ার ফ্রেন্ড মানহা।হিয়াকে দেখে বলে,”মন খারাপ কেন তোর?”
হিয়া মানহার দিকে তাকিয়ে বলে,”এমনি।”
“কি হয়েছে বল?”
“কিছু হয়নি দোস্ত।ভালো লাগছে না কিছু।”
“তোর সেই ভাই দেখলাম কলেজে এসেছে। কোন এক মেয়ের সাথে কথা বলছে।মনে হলো প্রেমে পড়েছে দুজনে।প্রেম করছে নাকি রে?”
ভ্রু কুঁচকে হিয়া বলে,”আমার কোন ভাইয়ের কথা বলছিস তুই?”
“ওই যে রৌদ্রদীপ রুদ্র।”
হিয়ার বুকের মাঝে ধক করে ওঠে।মানহার দিকে তাকিয়ে বলে,”কোথায় দেখেছিস তুই তাকে?”
“কলেজের পিছনেই।মেয়বি রেস্টুরেন্টে যাচ্ছে ওরা।”
“ওহ।”
বলেই হিয়া উঠে বলে,”আজ আসি রে।”
বিদায় জানিয়ে চলে যায়।বাইরে এসে ভাবলো একবার রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা যাক।সত্যি কি রুদ্র ওখানে আছে।রেস্টুরেন্টে এসে হিয়া এদিক ওদিক তাকালো।কিছুদূর তাকাতেই দেখতে পেলো একটি টেবিলে বসে আছে রুদ্র ও একটি মেয়ে।মেয়েটি হাসিহাসি মুখে কথা বলছে রুদ্রের সাথে।রুদ্র কি সুন্দর তাকে সায় দিচ্ছে।এক সময়ে মেয়েটি রুদ্রকে চামচ দিয়ে খাবার খাইয়ে দিতে নেয়।রুদ্র কি সুন্দর সেই খাবার খেয়ে নিলো।দেখেই হিয়ার মাথা গরম হয়ে গেলো।হিয়া দ্রুত গতিতে নিশ্বাস নিচ্ছে।রুদ্র খাবারটা মুখে নিয়ে পাশে তাকাতেই দেখতে পেল হিয়াকে।হিয়াকে দেখা মাত্রই রুদ্রের মুখের খাবার সব বেরিয়ে আসলো।হিয়া অশ্রুসিক্ত নয়নে চলে গেলো সেখান থেকে।সামনে থাকা মেয়েটি রুদ্রকে বলে,”Are you okay baby?”
রুদ্র মন চাইলেও পারছে না হিয়াকে আটকাতে।এটা রুদ্র জানে এখনই হিয়া কান্না করে দিবে।বরাবরের মত এবারও তাকে শুনতে হবে “নষ্ট পুরুষ”।কিন্তু এখান থেকে উঠলে সে পারবে না আসামিকে ধরতে।সামনে থাকা মেয়েটি একটি ক্রাইমের সাথে যুক্ত।যাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই গ্রুপের মেইন লিডারকে ধরার জন্যই কলেজে আসা তার।হিয়াকে দেখাবে না বলেই কলেজের পিছন থেকে মেয়েটিকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে আসলো।তাও কাজ হলো না।যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়।রুদ্রের হয়েছে সেই জ্বালা।মনে মনে রুদ্র বলে,”এই জ্বালায় কবে না আমি জবটাই ছেড়ে দেই।”
বাসায় এসে মায়া নিজের ঘরে চলে গেলো।রাজের বিভিন্ন ডকুমেন্ট যেখানে আছে ওই জায়গার চাবি মায়ার কাছেও আছে।মায়া কাগজপত্র দেখতে থাকে।দেখতে পেলো পুরোনো সেই ভিসা।যেখানে রাজ কবে দেশে এসেছিলো এটা উল্লেখ করা আছে।মায়া ওগুলো দেখে বলে,”এই দিনেই তো আমাকে আর মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।তাহলে মন্ত্রী মশাই এতদিন ছিলেন না?এরমানে আমার ধারণা ঠিক।ওইদিন আমার মন্ত্রী মশাই আমাদের কাছে ছিলো না।ও আমাকে বের করে দেয়নি।ওটা ছিল তাজ।”
মায়ার কাছে আবারও কল আসে।মায়া রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে,”ম্যাম আপনাকে একটি তালিকার ছবি পাঠিয়েছি।ওটা দেখুন।”
মায়া ছবিটি দেখলো।তাজ যেখানে থাকে ওখানকার পুরোনো তথ্য।তাজকে এক সপ্তাহের ছুটিতে বাসায় আনা হয়।গার্জিয়ান সইতে আছে মালিনীর নাম।কাগজটি দেখে মায়া বলে,”তুমি শিওর এটা ওই সময়ের তালিকা?এত তাড়াতাড়ি পেলে কিভাবে?”
“এগুলো এখানে ডকুমেন্ট আকারে থাকে ম্যাম।এক্সট্রা মানি পকেটে গুজে দিয়েছি তাই আপনার বলা সাল অনুসারে আমাকে খোঁজ দিলো।”
“একটা কাজ করো।ওখানে বলো মোহনা সরদার নামে একজন এই খোঁজ নিতে পাঠিয়েছে।আমি তোমার একাউন্টে টাকা পাঠাচ্ছি।”
“ওকে ম্যাম।”
মায়া কল কেটে এবার মৃদু হেসে বলে,”সোনালী আর মালিনী এবার শেষ হয়ে যাবে।”
এরপর আবারও হাতে থাকা কাগজগুলো দেখে আনন্দে হাসতে থাকে।এই কাগজের সাথে কিছু ছবিও ছিলো।মায়া আর রাজের ছোটবেলার ছবি।মায়া ওগুলো দেখে আনন্দে কেঁদে দেয়।চোখ থেকে তার পানি ঝরছে।মুখে হাসি ঝুলিয়েই আছে।ছবিতে থাকা রাজের মুখে হাত বুলিয়ে বলে,”আমার পুতুল বর আমার মন্ত্রী মশাই।আমাকে সে কখনও আঘাত করেনি।বরং আমিই তাকে আঘাত করেছি।আমার মন্ত্রী মশাইকে আমি নিজেই আঘাত করেছি।বারবার কষ্ট দিয়েছি।আমি এতটা নিষ্ঠুর হয়েছি।”
একটু কান্না করে মায়া আবার ভাবে,”ভাই আর মন্ত্রী মশাই তো একই দিনে দেশে আসে।ওইদিন মায়ের এক্সিডেন্ট হয়।আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।আমার সেন্স ফেরে কিছুদিন পর।ভাই আমাকে এসাইলাম পাঠায়।এরপর আমাকে আর বোনকে একসাথে তার বাসায় আশ্রয় দেয়।যেহেতু ওরা একই দিনে দেশে আসে তাহলে এই এক্সিডেন্ট সম্পর্কে ভাই আর মন্ত্রী মশাই দুজনেই তো জানে।মন্ত্রী মশাই আমার সাথে দেখা দিলো না কেন?ভাইকে শুধু আমার কাছে রেখে গেলো কেন?মায়ের মৃত্যুর পর কি তাহলে মন্ত্রী মশাই আমাকে ফেস করতে চায়নি নাকি অন্য কোনো কারণ আছে?আমাকে খোঁজ নিতে হবে সবকিছুর।ভাই আর মন্ত্রী মশাই কি করতে চাইছে আমাকে জানতে হবে।এর আগে আমি আমার মন্ত্রী মশাইকে আমার কাছে চাই।আজকে আমি আর আমার মন্ত্রী মশাই একসাথে সময় কাটাব।ভুল বোঝাবুঝির সমাপ্তি ঘটবে আজ আমাদের।”
মায়া উঠে দাড়ায়।চোখের পানি মুছে কল দিলো রাজকে।প্রথম কল আসায় কেটে দিলো পিয়াশ।কারণ ফোন তার কাছেই আছে।ভাইব্রেট হচ্ছে শুধু।না দেখেই কেটে দেয়।পরবর্তীতে আবারও রিং হয়।পিয়াশ এবার ফোনের দিকে তাকালো।মায়ার কল দেখে রাজের দিকে তাকালো।রাজ সামনে কিছু কাগজ নিয়ে বাকিদের সাথে কথা বলছে।কৃষিমন্ত্রী হওয়ার কারণে রাজকে চাষিদের বিষয়ে বেশি কথা বলতে হয়।পিয়াশ এখন কি করবে বুঝতে পারছে না।গুরুত্বপূর্ণ একটা মিটিংয়ে আছে রাজ।ফসলের বিষয়ে সে মতামত না দিলে এরা এগোতে পারছে না।এদিকে মায়া তাকে কল করেছে।রাজকে বলবে কি বলবে না ভেবে মনে মনে বলে,”এই ব্যাটা যে বউ পাগলা!বলা যায়না ওর বউয়ের কল না ধরার অপরাধে আমাকে শুলে চড়াতে পারে।”
তাই পিয়াশ রাজের কানের কাছে মুখ রেখে বলে,”ম্যাম কল করেছেন বস।”
রাজ হাতে কলম নিয়ে এতক্ষণ কথা বলছিল।পিয়াশের মুখে এহেন কথা শুনে বুঝলো না।তাই মাথা ঘুরিয়ে বলে,”কোন ম্যাম?”
এই সময় মায়া তাকে কল দিবে এটা ভাবা সম্ভব না।তাই এই প্রশ্ন করা তার।পিয়াশ ফোনটা দেখিয়ে বলে,”আপনার বউ।”
রাজের হার্টবিট যেনো দ্রুত গতিতে চলাচল করছে।পিয়াশের থেকে ফোন নিয়ে কানে নেয়।ওপাশ থেকে মায়া কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে বলে,”মন্ত্রী মশাই।”
রাজ যেন দুনিয়া হারালো।মায়া কান্না করছে।চেয়ারে বসা অবস্থায় আরো শক্ত করে চেয়ার ধরে রেখেই বলে,”কি হয়েছে মায়াবতী?”
মায়া এবার দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখটা মুছতে মুছতে বলে,”আজকে আমার বাসায় আসতে পারবে?ওখানে থাকব আজকে আমরা।”
রাজ ভ্রুকুটি করে বলে,”কেন?”
মায়া এবার কাপা কাপা ঠোটে বলেই দিলো,”I miss you,মন্ত্রী মশাই.I miss you so much.”
রাজ চোখ বন্ধ করে নেয়।ঠোঁটে প্রাণবন্ত হাসি ফুটিয়ে বলে,”আবারও বলো মায়াবতী।”
“I miss you so much.আপনাকে খুব খুব খুব মিস করছি।”
“আমি আসছি মায়াবতী।”
বলেই রাজ কল কেটে দেয়।মিটিংয়ের সকলের সামনে থেকে চেয়ার পিছিয়ে উঠে দাড়ায়।পিয়াশ কিছু বলার আগেই রাজ বলে,”ফুলের দোকানে চলো পিয়ু বেবী।”
অন্য একজন লোক পাশ থেকে বলে,”আজকের মিটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ মিস্টার শাহমীর রাজ সরদার।”
রাজ টেবিলে দুইহাত ভর দিয়ে লোকটার দিকে চেয়ে বলে,”মিটিং যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমন আমার মায়াবতীর ইচ্ছা পূরণ করাটাও আমার জন্য গুরুত্বপুর্ন।আফটার অল সি মিস মি আফটার ফিউ ইয়ার্স লেটার।সরি এভরিওয়ান আই হ্যাভ টু স্পয়েল দিস মিটিং।”
রাজ চলে গেলো।পিছনে চলে গেলো পিয়াশ।চেয়ারে বসে থাকা অন্য একজন রাজনৈতিক লোক আলতো হেসে বলেন,”আমাদের SRS তার বউকে খুব ভালোবাসে।ব্রেভ অফ হিম।হি ক্যান ম্যানেজ অল সাইড।”
ফুলের দোকানে এসে মায়ার প্রিয় নীল রঙের ফুলের পাশ দিয়ে সাদা গোলাপ দিয়ে সাজিয়ে একটি তোরা বানালো রাজ।আলাদাভাবে একটি লাল গোলাপ নিলো।এগুলো নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে গাড়ির দিকে এগোতে নিলেই দূর থেকে একটি গুলি এসে রাজের বাম হাতের পাশ দিয়ে চলে যায়।বাম হাতের কোণা দিয়ে রক্ত ঝরছে। পিয়াশ এতক্ষণ গাড়িতেই ছিলো।এমন দৃশ্য দেখে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে রাজের হাত ধরে।রাজ একটু ঝুঁকে বসে সামনে তাকালো।একজন লোককে দেখলো দৌড়ে যেতে।রাজের বডিগার্ড ওই লোকটাকে তারা করছে।পিয়াশ রাজকে নিয়ে গাড়িতে বসালো।ড্রাইভারকে বলে,”হাসপাতালে চলো।”
রাজ বাধা দিয়ে বলে,”না,মায়াবতীর বাড়িতে চলো।”
“বস আপনার হাত থেকে রক্ত ঝরছে।এটা তো বন্ধ করতে হবে।”
“আমার শখের নারীর মন থেকে দূরে থেকে যে হৃদয়হরণে ভুগছি ওটা আগে বন্ধ করতে চাই।আমি এই ক্ষত পরে সারাবো আগে আমার বউয়ের মায়াবী মুখটা দেখে সুখের রাজ্যে পাড়ি দিবো।”
“আপনি একজন মন্ত্রী বস।একটু বুদ্ধি খাটান।”
“মন্ত্রী বলে কি বউকে নিয়ে ভাবার সময় রাখতে পারিনা?”
পিয়াশ আর কি বলবে?চুপ করে আছে শুধু।ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে।মায়া অপেক্ষা করছে তার জন্য।আজকের রাতে দুজনের মনের মিলন হতে চলেছে যে।
নিজের বাসায় আজ অনেকদিন পর এসেছে মায়া।ঘরের চারপাশ দেখছে পরখ করে।এরমাঝেই একজন মহিলা এসে বলে,”ম্যাম আপনার কথামত ফুলগুলোর পাপড়ি ছাড়ানো হয়েছে।আর এই যে ব্লু শাড়ি।আর এটা…”
বলার আগেই মায়া ওর হাত উচু করে থামিয়ে দেয়।মায়া জানে ওটায় কি আছে।তাই মুচকি হেসে বলে,”ওগুলো কাউচে রেখে দেও।আর হ্যাঁ টেবিলের উপরে বড় থেকে ছোট পরপর তিনটি ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড রাখো।ওগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে তুমি চলে যাও।”
মায়ার কথামত মহিলাটি তাই করল।যাওয়ার সময় মহিলাটি পা থামিয়ে মায়ার দিকে একবার চাইলো।মায়া ভ্রু কুঁচকে বলে,”কিছু বলবে?”
“বলছিলাম একটা বেলি ফুলের গাজরা মাথায় লাগালে ভালো হতো না?না মানে আজকাল অবশ্য সেই প্রেম নেই।তবে মেয়েদের সাজের সাথে যদি বেলি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে তাহলে নাকি স্বামীর ভালবাসা আরো গভীর হয় তাই বললাম।”
“আমি যদি বেলি ফুলের গাজরা মাথায় দেই তাহলে স্বামীর ভালোবাসা গভীরভাবে পাব?”
মহিলা কোনো কথা না বলে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে।একেবারে ভালোবাসা পাবে এটা শিওর হয়ে বলা কি আদৌ যায়?এটা তো নারীর ভাগ্যের ব্যাপার।মায়া মৃদু হেসে বলে,”গাজরা পাবে কোথায় এত রাতে?”
“আমি তো দুটো বড় বড় বেলি গাছ লাগিয়েছি।ছাদেই আছে।রাতে ফুটেছিল কতগুলো।সকালে পানি দিতে গিয়ে নিয়েছিলাম।যদিও জানতাম না কাজে লাগবে তাও এনেছি।নিজের জন্যই শখের বসে আনা আর কি।”
“তাহলে নিয়ে আসো।”
মহিলাটি বেলি ফুল দিয়ে গাজরা বানালো।নিজের হাতে।সুইয়ের মাঝে সুতো দিয়ে ফুলগুলো ঢুকিয়ে দিলো।মায়া তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।মহিলাটি এবার মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”শাড়িটা পরে আসো।আমি সাজিয়ে দিবো তোমাকে।”
“আচ্ছা,তাহলে আমি যাচ্ছি।”
মায়া চলে গেলো বাথরুমে।মায়ার কাছে থাকা মহিলাটি ভাবছে তার বৈবাহিক জীবনের কথা।তার খুব পছন্দের ফুল এই বেলি।বিয়ের পর স্বামী প্রায় ছুটির দিনগুলো এই গাজরা নিয়ে সাজতে বলতো।কত ঘুরে বেড়াতো তারা।অল্প আয়ের সংসার যেনো হাটি হাটি পায়ে খুব সুন্দর যেতো।এক ছেলে ও এক মেয়ে হলো।তারা বড় হওয়ার আগেই স্বামী চলে গেলো আল্লাহর কাছে।একা হয়ে গেলো মহিলাটি।ছেলের যে কিছুই নেই তাও না।একজন সার্ভেন্ট হয়েও ছেলেকে সরকারি স্কুল কলেজে পড়িয়ে মধ্যবিত্ত পর্যায়ে রেখেছে।নিজের যোগ্যতায় ছেলে তার চাকরি করছে।বউ বাচ্চা নিয়ে কত সুখে আছে।এদিকে যে ছেলেটার জন্য বিয়ে করেনি সেই ছেলে বউ পেয়ে তাকে ভুলে গেলো।মেয়েটার বিয়ে হয়েছে সাথে নাতি হয়েছে কয়েকমাস হলো।
মেয়েটা টুকটাক দেখলেও তা আড়ালেই রাখে।স্বামীর ভয়ে সবকিছু দিতে পারেনা।তবুও যেনো মহিলাটির খাওয়া দাওয়ার বা থাকার অভাব নেই।মায়ার কাছে তো সে বেশ আলিশান জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে।এতকিছু পেলেও নিজের স্বামী আর সন্তানের সাথে থাকার সুখ যেনো তাকে খুব টানে।পুরোনো স্মৃতি ভাবতেই চোখদুটো জ্বলে উঠলো তার।ভিজে আসলো চোখ।মায়া ওয়াশরুমের দরজা খুলল।শব্দে হুশ ফিরতেই মায়ার দিকে তাকালো।মায়াকে দেখে চোখের পানি মুছে হালকা হাসলো।স্লিভলেস ব্লাউজ আর নেটের শাড়ি।গাঢ় নীল হওয়ার কারণে ধবধবে ফর্সা মায়ার গায়ে যেনো বেশ আকর্ষণীয় লাগছে।মায়ার চুলগুলো ছোট হওয়ায় দুইপাশে চুল নিলে মায়াকে আরো বেশি সুন্দর লাগে।অতিরিক্ত ছোট না।ওই কাধের একটু নিচে পিঠ বরাবর ইউ করে কাটা।মহিলাটি এবার দাড়িয়ে মায়াকে বলে,”আসো আমি তোমাকে আজ সুন্দর করে সাজিয়ে দেই।”
মায়া তার সামনে গেলো।মায়াকে বসিয়ে দিয়ে মায়ার চোখে চিকুন করে কাজল দিয়ে দিলো।ঠোঁটে গাঢ় গোলাপি লিপস্টিক দিয়ে দিলো।মায়ার চুলগুলো নিচ দিয়ে একটু কোকড়া করে দেয়।মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,”তোমাকে আজ গহনা পড়তে হবে না।এমনিতেও তোমার এই সাজেই মায়াবী লাগছে।”
মায়া সম্মতি জানালো।খোপা না করে গাজরাটা চুলের দুইপ্রান্তে ক্লিপ দিয়ে লাগিয়ে দিল।এবার মায়াকে দেখে নিয়ে বলে,”বিছানাটা নিজের মতো করে সাজাও।খাবারগুলো ঢেকে রাখা আছে।গরম আছে আর হটপটে রেখেছি তাই চিন্তার কিছু নেই।এবার আমি আসি।”
মহিলাটি চলে গেলেই মায়া আয়নার সামনে দাড়ালো।নিজেকে দেখে নিয়ে মুখে আনন্দের হাসি ফুটিয়ে তুলল।অতঃপর ঘুরে ঘুরে নিজেকে দেখছে।পাশে থাকা ডালা নিয়ে গোলাপের পাপড়িগুলো বিছানায় ছিটিয়ে দিলো।পাশে টেবিলে থাকা মোমবাতিগুলো নিজের হাতে নিয়ে দেখছিল।এরমাঝেই মায়ার কানে ভেসে আসে,
“মায়াবতী।”
রাজের মুখে উচ্চস্বরে নিজের নাম শুনে হাত থেকে মোমবাতিটা টেবিলের উপর রেখে দরজার কাছে এলো মায়া।সিঁড়ির রেলিং ধরে দেখলো রাজ নিচে দাঁড়িয়ে আছে।সাদা পাঞ্জাবির সাথে গায়ে কালো চাদর জড়ানো।রাজ যে তাকে গুলিবিদ্ধ হাতটা দেখাতে চাইছে না।মায়া রাজকে দেখে চোখের পানি মুছে দৌড় দেয়।শাড়ির কুচি বাম হাতে ধরে সিঁড়ির কাছে এগোতে নেয়।মায়ার দৌড়ের গতি জানান দিচ্ছে আজ মায়া তার স্বামীকে মনভরে আলিঙ্গন করতে প্রস্তুত।রাজ আলতো হেসে আশেপাশে তাকিয়ে সকল বডিগার্ডের উদ্দেশ্যে বলে,”বাচ্চারা চোখ বন্ধ কর।তোমাদের মন্ত্রী মশাই এখন প্রেম করবে।”
আশেপাশের সবাই চোখ বন্ধ করে নিলো।মায়া সিঁড়ির শেষ চার পাঁচ প্রান্তের কাছে এসে একটু দাড়িয়ে রাজকে অপলক নয়নে দেখতে থাকে।রাজ তার ডান হাত এগিয়ে দিয়ে বলে,”আমার বক্ষে তোমাকে স্বাগতম, মায়াবতী।”
মায়া এবার দৌড়ে এসে জাপটে জড়িয়ে ধরে রাজকে।দুইহাত দিয়ে রাজকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।রাজের বামহাতে বেশ ব্যাথা পায়।ব্যথায় চোখ খিচে নেয় রাজ।তবুও বারণ করলো না মায়াকে।যেন এই ব্যাথা তার কাছে কিছুই না।মায়া রাজের মুখটায় আজ নিজের মত করে চুমু দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছে।এতটা রাজ আশা করেনি।সবকিছু যেনো তার কাছে স্বপ্নের মত লাগছে।রাজ না পেরে বলেই দেয়,”আমি কি স্বপ্ন দেখছি মায়াবতী?”
“কেন আপনি স্বপ্ন দেখবেন কেন?”
“আমার মায়াবতী তো আমাকে এত ভালো কখনও বাসেনি।তাই মনে হলো স্বপ্ন দেখছি।”
“এগুলো স্বপ্ন না মন্ত্রী মশাই।এগুলো বাস্তব।”
“তারমানে আমার আজ নিজের বউ দ্বারা ইজ্জত হরণ হচ্ছে তাই তো।”
মায়া হাত দিয়ে আলতো চাপড় মারল রাজের বুকের উপর।রাজ মায়াকে আপাদমস্তক দেখে নিলো।মায়ার পেটের কাছে চোখ রাখতেই যেন চোখটা আটকে গেলো।সাদা মাংসপেশি স্পষ্ট প্রকাশ পেয়েছে।রাজ পাশে থাকা গার্ডদের ও পিয়াশকে উদ্দেশ্য করে বলে,”পিয়ু বেবী,তোমরা এখন চোখটা বন্ধ রেখেই এখান থেকে বিদায় নেও।”
পিয়াশ চোখ বন্ধ অবস্থায় কপাল কুঁচকে বলে,”এটা কেমন কথা?এতগুলো জায়গা দিয়ে চোখ বন্ধ করে হাটা কি সম্ভব?”
“সবকিছুই সম্ভব।তুমি চাইলেই আমার বউকে না দেখে সোজা অন্যদিক দিয়ে চলে যেতে পারো।যদি আমার বউকে দেখার চেষ্টা করো তাহলে তোমার ঐ দুটি চোখ খুচে আমি আমার বউকে দেখার অপরাধে তোমার বউয়ের হাতে দিয়ে আসব।”
“একটা কাজ করলেই তো হয় বস।আপনার বউকে নিয়ে ঘরে চলে যান।এরপর আমরা চোখ খুলে বাইরে চলে যাই।”
“আইডিয়াটা মন্দ বলনি।”
“তাহলে আইডিয়া কাজে লাগিয়ে আমাদের রেহায় দিন।”
রাজ দুষ্টু হেসে মায়াকে নিজের কোলে নিয়ে চলে যায় উপরে।মায়া রাজের কাধে একহাত রেখে রাজের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।মায়াকে ঘরে এনে নিজের পা দিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিল।দরজায় শব্দ হতেই পিয়াশ চোখ খুলে বলে,”ব্যাটা বউ পাগলা মন্ত্রী চলে গেছে।এবার তোমাদের চোখকে স্বাধীনচিত্তে এদিক ওদিক ঘোরাতে পারো।”
পিয়াশ চলে গেলো।তার পিছে চলে গেলো বাকি গার্ড।রাজ মায়াকে নিয়ে সোফায় বসলো।এরপর মায়ার গালে রাত রেখে মায়ার চোখের দিকে চোখ রেখে বলে,”আজ তোমার কি হয়েছে মায়াবতী?”
মায়া রাজের কাছে এগিয়ে এসে বলে,”বরকে নিজের করে পেতে চাই।তাই এসব করেছি।”
রাজ ঘরের চারপাশ দেখলো।বিছানায় ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে আছে।কিছু কিছু ফার্নিচারের উপরে ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড রাখা।রাজ এবার মায়ার খুব কাছে আসলো।মায়ার কাছে আসতেই বেলি ফুলের ঘ্রাণ পেলো।এই ঘ্রাণে ঘায়েল হয়ে গেলো রাজ।মায়ার মুখটা এগিয়ে নিয়ে সোজা মায়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।কিছুক্ষণ ঠোঁটের উপর কাজ চালিয়ে এবার মায়ার গালটাকেই ঠোঁট দিয়ে স্লাইট করতে থাকে।মায়া চোখ বন্ধ করে সাই জানাল।রাজের ইচ্ছামত তাকে আজ প্রেম নিবেদন করতে দিচ্ছে মায়া।রাজ চোখ বন্ধ রেখেই মায়ার চুলের কাছে নাক নিয়ে নিশ্বাস নিয়ে মায়ার কানে দিলো এক কামড়।মায়া একটু কেঁপে উঠল।রাজ চোখ বন্ধ অবস্থায় হেসে দিল।মায়ার কানে বিড়বিড় করে বলে,”দুষ্টুমি করবে না মায়াবতী।”
মায়া এবার রাজকে একটু সরিয়ে দিয়ে বলে,”এত জোড়ে কামড় দিয়ে বলছেন দুষ্টুমি করব না?”
“তুমি না নড়লে বলতাম নাকি!”
“আচ্ছা চলুন ডিনার তো করে নিন।নাহলে রোমান্সের জন্য রাতে না খেয়ে থাকতে হবে।”
রাজ মায়ার কোমড়টা নিজের কাছে এনে বলে,”তাহলে ডিনারের পরেই তোমার হটি নটি লুকস নিয়ে আমার সামনে আসতে।আজ রাতে তো আমার খাবার না খেয়ে তোমাকেই খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে মায়াবতী।”
“লুচ্চা মন্ত্রী মশাই।এগুলো ছাড়া কিছুই বুঝে না।”
“এগুলো কোনগুলো মায়াবতী?”
“এই এই যে রোমান্সের পোকা।”
“রোমান্স করতে দিচ্ছই বা কই?সবসময় বাধা দেও তুমি।”
“আজকে দিবো না বাধা।একটু কিছু খেয়ে নিন।”
“খাবো না পেট ভরে আছে।”
“কি খেয়েছেন আপনি যে পেট ভরে গেছে?”
“তোমার ঠোঁটের টেস্ট নিয়ে পেট ভরিয়েছি।কাছে আসো আরেকটু পেট ভরাই।”
“ধুর!”
বলেই মায়া উঠে দাড়ালো।পাশে থাকা খাবারগুলো নিয়ে রাজের সামনে রাখলো।রাজ সোফায় বসে থেকে দেখছে।পাশে যে একটি প্যাকেট আছে এটাও অনুভব করল।কিন্তু খুলে দেখলো না।মায়া প্লেটে খাবার বাড়তেই রাজ প্লেট নিয়ে নিলো।মায়া অন্য প্লেটে খাবার নিতে চাইলে রাজ বলে,”ওটা রেখে দেও।”
“আমি খাবো না?”
“খাবে আমার সাথেই।আজকে এক প্লেটেই দুজনে খাবো।”
মায়া মিষ্টি হাসি উপহার দিলো।রাজ একটি চিকেন ব্রেস্ট ফ্রাইয়ের পিচ নিজের মুখে নিয়ে মায়ার দিকে এগিয়ে এলো।মায়া বুঝে নিলো তাকে কি করতে হবে।ফ্রাইয়ের শেষদিকে সেও কিছু বাইট দিতে থাকে।একসাথে দুজনে ফ্রাইটা বাইট দিয়ে একবারে দুজনের ঠোঁট আবারও একত্রিত করে নিলো।একটু ছোঁয়া লাগার সাথে সাথেই মায়া সরে এসে চামচে করে রাইস নিয়ে রাজের দিকে ইঙ্গিত করে।রাজ খাবারটুকু মুখে নিয়ে মায়াকেও চামচের সাহায্যে খাইয়ে দেয়।দুজনে খাওয়া শেষ করে পানি পান করতেই রাজ এবার উঠে দাড়ায়।বিছানার দিকে তাকিয়ে মায়ার দিকে ঘুরে বলে,”Do you want to spend special time with me?”
মায়া সফট মিউজিক চালিয়ে রাজের কাছে এসে রাজের গলায় দুই হাত রাখলো।তারপর রাজের নাকে নিজের নাক ঘষে বসে,”I need more special.”
রাজ এবার ঠোঁট কামড়ে হেসে মায়ার কোমড় ধরে নিজের বুক বরাবর টেনে আনে।তারপর মায়ার গালে ছোট একটি চুমু দিয়ে বলে,”Then let’s go wife.”
মায়া রাজের কাধে হাত রাখে আর রাজ মায়ার কোমড়ে।এদিকে বাজতে থাকে ইংলিশ গান।সেই গানের তালে দুজনে নাচতে থাকে।নাচের তালে রাজ মায়ার ঠোঁট আবারও নিজের ঠোঁটের আয়ত্তে করে নেয়।এক সময় মায়া কন্ট্রোললেস হয়ে গেলো।দিক বিদিক হারিয়ে রাজের সাথে সঙ্গ দিলো। হঠাৎই রাজের গা থেকে চাদর সরিয়ে নেয়।চাদরটা সরতেই মায়ার নজরে গেলো রাজের সাদা পাঞ্জাবিতে রক্তের দাগ।মায়া এটা দেখেই রাজের থেকে সরে যায়।রাজের বামহাতের ক্ষতস্থানে হাত রেখে বলে,”এখানে কি হয়েছে মন্ত্রী মশাই?”
“গুলি লেগেছিল।”
“আমাকে আগে বলেননি কেন?”
“আমার রোমান্স স্পোয়েল হয়ে যেতো।”
“শাট আপ মন্ত্রী মশাই।শুধু রোমান্স রোমান্স করেন।আপনার হাতের ক্ষতটা দেখেছেন?আমাকে দেখতে দিন তো।”
রাজ এবার চ শব্দ করে বলে,”সামান্য বাইরের ক্ষতটা দেখছো কেন মায়াবতী?এতগুলো বছর ধরে মনের গহীনে জমে থাকা ক্ষতটাও একটু দেখো।হাতের ক্ষত তো সেরে যাবে কিন্তু মনের গহীনের ক্ষতটা সারছে না যে।”
মায়া রাজের ঠোঁটে আলতো করে ঠোঁট ছুয়ে বলে,”সব ক্ষত সারবে মন্ত্রী মশাই।একটু দাড়ান।”
মায়া মেডিসিন বক্স নিয়ে রাজের কাছে আসে।রাজকে পাঞ্জাবির দিকে ইশারা করে বলে,”এটা খুলুন।”
রাজ বুকে হাত রেখে মজা করে বলে,”বউয়ের সামনে সতীত্ব হরণ করতে লজ্জা করে মায়াবতী।”
“ফাজলামি করবেন না মন্ত্রী মশাই।আপনার হাতে ব্যান্ডেজ করতে হবে।”
“তুমি খুলে দেও।”
মায়া এবার রাজের পাঞ্জাবির উপরের বোতাম খুলে পাঞ্জাবি খুলে দেয়।এরপর রাজের বামহাতে জগ থেকে অল্প পানি নিয়ে পরিষ্কার করে মলম লাগিয়ে দিল।রাজের ওই ক্ষত স্থানে একবার স্প্রে করে দিয়েছে পিয়াশ।তাই অত চিন্তার কিছু ছিলো না।মায়া কেমন করে ওঠে এটাই একবার দেখতে চাইলো রাজ।মায়া এবার রাজের ক্ষত স্থানে ফু দিচ্ছে।রাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে।মায়া ফু দিয়ে এবার রাজের মুখের দিকে তাকালো।ভ্রু কুঁচকে বলে,”এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?”
রাজ মায়ার দুই গাল টেনে বলে,”আমার কুট্টুস কুট্টুস বউটাকে দেখছি।”
“কিসব নাম আবিষ্কার করেন আপনি।আমি বাচ্চা নাকি যে আমার মুখ ধরে টানছেন!”
“আমার বউটা তো একটা বাচ্চা।অন্তত আমার কাছে।মন চায় তার গাল ধরে টানি ওলে লে লে।”
মায়া রাজের হাতটা সরিয়ে দিলো।মুখটা বিড়ালের মত করে রাগ দেখালো।এবার রাজ মায়াকে সোফায় হেলিয়ে দিয়ে মায়ার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।কিছুক্ষণ পর নিজে থেকেই উঠে দাড়ালো।মায়া কিছু বুঝতে না পেরে বলে,”কি হলো?”
“নাআআ ব্যাপারটা ভাল্লাগছে না।”
“কেন?”
রাজ মায়ার হাতটা নিয়ে দাড় করিয়ে বলে,”I want something different.”
“Like?”
“বাথরুম বিলাস।”
“ইশ!ছিঃ!না।”
কে শোনে কার কথা?রাজ মায়াকে কোলে নিয়ে বলে,”আজ বাথরুম বিলাস করবো রেএএ…..”
বলেই মায়াকে নিয়ে চলে গেলো বাথরুমে।মায়াকে বাথটাবে ফেলে দিয়ে ওখানে লাফ দিলো রাজ।মায়ার উপরে ঝুকে মায়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,”let’s go for romance wife?”
“আপনার ক্ষত!”
“গুল্লি মারি ক্ষতর।শুরু করি রোমান্স।কাছে আসো মায়াবতী।”
বলেই রাজ শুরু করে দিলো।আজ পূরণ হতে চলল মায়া রাজের বাথরুম বিলাস।রাজের ইচ্ছাকে সইচ্ছায় সমর্থন করে নিচ্ছে মায়া।
অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় ফিরলো বীর।এসেই জারার ঘরের কাছে যায়।জারা একটা ব্ল্যাক নাইট ড্রেস পরে আছে।বিছানায় উপুড় হয়ে দুই পা উচু করে নাড়াচ্ছে আর ফোনে মন স্থির রেখেছে অন্যদিকে ফিরে।দরজার কাছে এসে জারাকে দেখছে বীর।জারা ইংলিশ মুভি দেখছে।একটা সময় মুভিতে কিসিং সীন চলে আসে।যেখানে নায়কটা নায়িকাকে অনেক হার্ড করেই সবকিছু করে।একটু বেশি ওপেন রোমান্স ছিলো।হেডফোন না থাকায় সাউন্ড শুনতে পাচ্ছে বীর নিজেও।জারা এগুলো দেখে যাচ্ছে।এদিকে বীর একবার ফোনের সীন দেখছে তো একবার জারার দিকে তাকাচ্ছে।বীরের মন মস্তিষ্ক এবার যেন বিঘ্ন ঘটায়।বাজে নজর তৈরি হতে থাকে তার।তবুও নিজেকে সংযত করে ঘরের ভিতর এসে জারার থেকে ফোন নিয়ে নিলো।আচমকা ফোন হাত থেকে সরে যাওয়ায় পাশ ফিরে তাকালো জারা।বীরকে দেখে চুপ করে উঠে বসলো।মুখটা শুকনো করে বলে,”মুভিটা দেখতে দিলে না কেন?”
“এগুলো বাজে সীন।এসব দেখতে হয় নাকি?”
“তাহলে কি দেখবো শুনি?ওই জি বাংলা স্টার জলসায় কিভাবে স্বামী স্ত্রীর সংসার সুন্দরভাবে ভেঙ্গে দিতে হয়?”
“এই না ওগুলো তো আরও বিশ্রী কাজ।”
জারা এবার হেসে দিয়ে বীরের হাত থেকে ফোন নিয়ে বলে,”আমার কাছে মুভিটা বেশ লাগছিল।এভাবে ফোনটা না নিলেই পারতে।”
“আমার সাথে দেখবে?”
“এগুলো?”
“হুম।”
“একদমই না।এখানে এডাল্ট সীন।”
“Am I not adult Janeman?”
জারা এবার চুপ করে বীরকে দেখছে।বীর জারার উপরে উঠে জারার দুইদিকে হাত ভর দিয়ে ঝুঁকে পড়ে।জারা একটু ঘাবড়ে গেলো।তুতলিয়ে বলে ওঠে,”ক কি করতে চাইছো এখন তুমি?”
“যা করতে চাইছি তা কি মুখে বলে দিলে হবে?একটু করে দেখিয়ে দেই।”
“ন না।দূরে যাও।দূর থেকে বসে কথা বল।”
বীর গেলো না দূরে।বরং জারার কানের লতিতে ঠোঁট ছুঁয়ে শব্দ করে চুমু দিল।তারপর জারার ঠোঁটের দিকে চোখ রেখে বলে,”Do you like dark romance?”
“N no.”
“Then why are you looking at them?”
জারা কিছু না বলে বীরকে সরিয়ে দিলো।একবার কল্পনা করলো এই মুভির মত যদি বীর তাকে টর্চার করে রোমান্স করে সে তো আর বেঁচেই থাকবে না।অন্তত জারা তো এত হার্ড না।ভাবতেই গা শিউরে ওঠে জারার।এগুলো দেখতেই আকর্ষণীয় নিজের সাথে ঘটাতে না।আনমনে বলেই দেয়,”যতই এসব রোমান্স দেখি না কেন বাস্তবে তো আমি এগুলো জীবনেও সইতে পারব না।”
বীর হাসতে হাসতে শুয়ে পড়ল বিছানায়।জারা বিরক্ত হলেও যখন বীরের মুখের দিকে তাকালো তখন সে চেয়েই রইলো।বীরের এই হাসিখুশি মুখটা দেখতে তার ভালোই লাগে।বিশেষ করে রাগী গম্ভীর ব্যক্তিটির মুখে হাসি দেখার ভালো লাগাটাই যেনো ভিন্ন কিছু।জারা মনেমনে বলে,”কে বলবে এই লোকটা এভাবে রোমান্টিক কথাও বলতে জানে?যে লোক কি না অন্যদের সাথে কথা বলার আগেই বন্দুক দিয়ে ওপারে পাঠিয়ে দেয় সেই লোক একমাত্র আমার কাছেই তার ভালোবাসা প্রকাশ করে।আমি হয়তো সবথেকে ভাগ্যবতী এক নারী যে এক মাফিয়ার গভীর ভালোবাসা পেয়েছে।”
আজকে মায়ারাজ মিলে বাথরুম বিলাস শেষ করলো।রাজ তার কাজ শেষ করে হ্যান্ড শাওয়ার নিয়ে মায়া ও তাকে পরিষ্কার করে নিলো।এরপর বাথটাব থেকে উঠে মায়াকে একটি তোয়ালে দিলো।মায়া তোয়ালে নিয়ে বলে,”কাউচের কোণায় দেখবেন একটা প্যাকেট আছে।ওটা আমাকে দিয়ে যান।”
রাজ গায়ে তোয়াল পেঁচিয়ে বাইরে গেলো।ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে চেয়ারের উপরে দেখলো একটি প্যাকেট।ওটা হাতে নিয়ে ভিতরে থাকা জিনিসটি দেখতে থাকলো।ডার্ক ব্লু নাইট ড্রেস।যেটা দেখে রাজ ঠোঁট কামড়ে বলে,”অলরেডি বাথরুম বিলাস করেছি এখন কি এই নাইট ড্রেসে মায়াবতী আমার হটিনটি সেজে মেরে ফেলতে চায়?”
রাজ মায়ার কাছে নাইট ড্রেস এগিয়ে দিয়ে বলে,”Ready for again Mayaboti.”
মায়া এবার রাজের মুখে টাওয়াল ছুঁড়ে মারল।রাজ ওটা নিয়ে চলে গেলো ঘরে।মায়া আয়নায় নিজেকে দেখে নিলো।বেলি ফুলের পাপড়িগুলো সব বাথটাবের পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।মায়া এবার ওগুলো দেখে বলে,”এই লোকটা তো একটু বেশি গভীর ভালোবাসা দিয়েছে।”
মায়া নাইট ড্রেস পরে বাইরে আসতেই দেখলো রাজ এখনও তোয়াল প্যাঁচানো অবস্থায় আছে।মায়া ভ্রুকুটি করে বিছানায় বসে অলিভ অয়েল হাত পায়ে মাখতে মাখতে বলে,”চেঞ্জ করুন।ঘুমাবেন না?”
“উহু।”
“কেন?রাত জাগার প্ল্যান আছে নাকি?”
“হুম।”
“এত রাত জাগা ভালো না মন্ত্রী মশাই।শরীরের জন্য ক্ষতিকর।”
রাজ মায়ার গা ঘেষে স্লো ভয়েসে বলে,”বউয়ের সাথে রাত জাগাটা ক্ষতিকর না মায়াবতী।এখন একটু আদর দেও।”
“সব আদর একদিনে পেলে বাকি দিনগুলো কি করবেন?”
“বাকি দিনগুলোতেও আদরে ভরিয়ে দিব।”
মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ২৫
বলেই মায়াকে আর কোনো কথা বলতে না দিয়ে তেলের বোতল নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।মায়ার গলার কাছে জোড়ে কামড় দিলে মায়া চোখ খিচে বলে,”মারবেন নাকি আমাকে?”
“আদরে আদরে আজকে মেরেই ফেলব মায়াবতী।”
বলেই মায়াকে নিয়ে কম্বলের ভিতর ঢুকে গেলো।
