মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ৪৩+৪৪

মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ৪৩+৪৪
ইশরাত জাহান

সকালবেলা মায়া কাগজপত্র নিয়ে রাজের সাথে কথা বলে।মায়া সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে রাজের সামনে ধরে দেখিয়ে দেখিয়ে একেকটা বিষয় উপস্থাপন করে।রাজ সে কি আর তার সুন্দরী বউ রেখে এই কাগজের দিকে বেশিক্ষণ তাকাতে পারে?তার দৃষ্টি আছে মায়ার দিকে।মায়া কাগজগুলো পাশে রেখে রাজের দিকে ফিরে বলে,”আমার মুখে কি ইনফরমেশন লেখা আছে মন্ত্রী মশাই?”

“তোমার ঠোঁটে আছে মায়াবতী।”
“কিভাবে?”
“তোমার ঠোঁটের নাড়াচাড়া দেখে আমি বুঝে নিচ্ছি ওখানে কি লেখা।”
“লুচু মন্ত্রী মশাই।”
“কাছে আসো একটু চুম্বন বিলাস করে নেই।”
“আমি চেঞ্জ করতে যাবো।সংসদে যেতে হবে।”
“যাওয়ার আগে স্বামীর দোয়া নিয়ে যাও।”
“দোয়া করবেন স্বামী আমার জন্য।”
“এভাবে দোয়া চাইলে তো দোয়া দিবো না।আমার ওষ্ঠে চুম্বনের অভাব বোধ করছি।এটা পরিপূর্ণ করে এই ওষ্ঠ থেকে নিজের জন্য দোয়া নিয়ে যাও।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মায়া চোখ ছোট ছোট করে চাইলো।রাজ তার চাওয়া পূর্ণ করতে স্থির।ডানহাত দিয়ে মায়ার আঁচল টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে বলে,”ব্যথাটা আমার বক্ষে ভাগ্যিস হাতে না।তাহলে চুম্বন বিলাস করতে তোমাকে কাছে পাওয়া সম্ভব হতো না।”
মায়ার ওষ্ঠ নিজের দখলে করে নেয় রাজ।মায়া চোখ বন্ধ রেখে রাজের ভালোবাসা আদায় করছে।
দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হতেই মায়া উঠে দাড়ায়।রাজ গলা উঁচিয়ে বলে,”আব্বে কে রে?”
মাহমুদ সরদার দরজাটা একটু খুলে মাথা দিয়ে উকি মেরে বলেন,”তোমাকে ভুল করে পয়দা করা বাপ রে।”
“আসলে আমারই মিসটেক হয়েছে।ভুল করে তোমার বউয়ের পেটে এসে জায়গা নিয়েছিলাম।নাহলে বাবার থেকে এই শাস্তি আমাকে পেতে হয়না।”

“তোমার কপাল ভালো আমার মত বাবা পেয়েছো।অন্য কারো সন্তান হলে তোমার স্থান হতো কবরস্থানে।”
রাজ সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে বলে,”আমার কপাল অতটাও ভালো না যে তুমি এত গর্ববোধ করে কথা বলছো।যে বাবা ছেলে আর বউমাকে একা থাকতেই দেয়না সেই বাবা সন্তানকে কবরে না পাঠিয়েও দেয় আলাদা সাজা।”
“বেয়াদপ!আমি তোমাকে সাজা দেই?”

“আচ্ছা ধরো তুমি আর তোমার বউ দুজনে আলাপ আলোচনা করছো।আমি গিয়ে তোমাদের মধ্যে কাবাব মে হাড্ডি হচ্ছি।তোমার মধ্যে তখন কেমন কাজ করবে আমাকে নিয়ে?মন চাইবে না আমাকে খুন করতে?”
মায়া রাজের কপালে আলতো চাপড় মেরে চলে যায় শাড়ি নিয়ে।শাড়ি রাতের বেলাতেই এনেছিল।এখন গেলো ওয়াশরুমে।মাহমুদ সরদার পাশে বসে কিছুটা আহত সরে বলেন,”তারমানে তুমি আমাকে খুন করতে চাও?”
“কথা পাল্টাতে খুব ভালো শিখেছো কিন্তু আসল কথাটা বুঝতে শিখলে না।বুঝেছি আমি এভাবে হবেনা।একটু সুস্থ হয়ে নেই। রাত বারোটা,ভোর ছয়টা এমন এমন সময় গিয়ে তোমার ঘরের দরজায় কড়া নাড়ব।”

“এতে করে কি হবে?”
“আমার দুঃখটা তুমি উপলব্ধি করবে।”
মায়া শাড়ি পাল্টে এসে মাহমুদ সরদারের উদ্দেশ্য করে বলে,”পাগলের সাথে কথা বাড়াবেন না বাবা।গুলিটা ওনার বুকে লাগলেও গুলির কাজ করছে ব্রেনে।”
“ওর ব্রেন কবে ঠিক ছিল আমি তো এটাই জানি না।”
মায়া পাশে এসে দাড়িয়ে বলে,”আপনি এখানেই থাকবেন?”
“নার্স আসলে তো তুমি আমার ছেলেসহ নার্সকেও হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে মা।”

রাজ এবার হাহা করে হেসে দিলো।মাহমুদ সরদারের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।ছেলের লাগামহীন কথা তো তাও হজমের মত কিন্তু বউমার যে একেক সময় অ্যাটাক করার স্বভাব আছে এটা তো ভয়ংকর।লোকটা এই বয়সে এসেও বউমার হিংস্র রূপ দেখে আতঙ্কে থাকে।মায়া হাতঘড়ি পরে বলে,”তাহলে থাকুন এখানে আর ছেলের পাগলামি সহ্য করুন।আমার একটু কানের পোকাগুলো থেকে ছুটি মিললো।”
“আমাকে না ফাঁসালেও চলতো মা।”
“ওনাকে পৃথিবীর আলো দেখিয়ে ফেঁসে আপনি আগেই গেছেন বাবা।”
রাজ এবারও হেসে দেয়।মাহমুদ সরদারের মুখটা দেখার মত।লোকটা লজ্জা পেতে পেতে শেষ।শেষমেষ কিনা বৌমাও তাকে খোচা মারল এমন ছেলেকে জন্ম দেওয়ার জন্য!তারেক আসতেই মায়া সবাইকে বিদায় দিয়ে চলে যায়।

সংসদে এসেছে মায়া।গাড়ি থেকে নামতেই মিডিয়ার লোকেরা হাজির।লাইভ হচ্ছে সেখানে।হাসপাতালের কেবিনে টিভি আছে।সেখানে লাইভ দেখছে মাহমুদ সরদার,রাজ,আদ্র,সিয়া আর হিয়া।মায়া বের হতেই সবাই মায়াকে ঘেরাও করে ধরে।মায়া চোখের সানগ্লাস হাত দিয়ে ঠিক করে সবার দিকে চোখ রাখে।হাত উঁচিয়ে সবাইকে হাসিমুখে জানান দিলো সে সবার পাশে আছে।পারফেক্ট নেতৃর মতই লাগছে মায়াকে।রাজ বলে ওঠে,”নেতার বউ পারফেক্ট নেত্রী।”
মায়ার গাড়ির সামনের সিটে থেকে বের হয় রুদ্র। রুদ্রকে দেখে অবাক হলো হিয়া।ভ্রু কুঁচকে বিরক্তির সাথে বলে,”ভাবীর সেফটির প্রয়োজন ছিল।উনি গেলো কোন দুঃখে?তাও আবার একা।”

“তোর কি তোর ওনার জন্য খুব চিন্তা হিয়া?”
“তুই চুপ থাক।আমার ভাবীর জন্য চিন্তা হচ্ছে।ভাবীকে যদি বিরোধী দল বাধা দিতে আসে এই লোকটা কি করতে পারবে শুনি?মেয়েদের সাথে ড্যান্স করা ছাড়া তার কি বিশেষ গুণ আছে?”
আদ্র গলা খাঁকারি দিয়ে বলে,”আমার ভাইয়ের ভালো ভালো গুণ আছে।যদি একটু পরখ করো তাহলে দেখতে পাবে।”

“আপনারা ভাইয়ের ওই গুণ দেখার ইচ্ছা নেই আমার।”
“তাহলে চুপ থাক।রুদ্র ভাই গিয়ে ভালোই হয়েছে।যেভাবে জিম করে সকালবেলা।একদম পারফেক্ট ফাইট পারবে।”
“তুই খেয়াল করে দেখিস?”
“না দেখার কি আছে?”
আদ্র ভ্রুকুটি করে চাইলো সিয়ার দিকে।মনে মনে বলল,”আজ থেকে গ্যারেজের পাশে জিমের ব্যাবস্থা করবো।একজনকে পটাতে গিয়ে আরেকজনের নজরে চলে যাচ্ছে ভাই আমার।”
“তুই তোর হবু বরকে দেখ না।”
“আমার হবু দেবরকে দেখলে তোর সমস্যা কি?”
“কেন দেখবি তাকে?”
“আমার জা আনতে হবে তাই।”
“কোনোদিন তো তোর হবু দুলাভাই নিয়ে ভাবিসনি।জা নিয়ে এত চিন্তা?”
“তুই জেলাস কেন?”
“কারণ ভুলবশত তুই আমার বোন।”

মাহমুদ সরদার মাথায় হাত দিলেন মেয়েদের তর্ক দেখে।রাজ মিটিমিটি হেসে বলে,”তোমার ভুলবশত সন্তানগুলো তোমাকে সব জায়গায় টানবে বাবা।”
“তোমার খুব ভালো লাগছে তাই না?”
“তুমি যেমন আফসোস করো তোমার ছেলে হয়ে আমার জন্মানোটা তোমার ছোট মেয়েও আফসোস করে তোমার বড় মেয়ে জন্মানোটা।”
“তোমার বউ বিপদে আছে।সেদিকে একটু তাকাও।”
“আমার বউ বিপদে না বরং অন্যদের বিপদে রাখে।”
“তোমার শালাকে নিয়ে ভাবছো না?”

“আমি তো বলব তুমি তোমার ভাইকে নিয়ে চিন্তা করো বাবা।আমার যে শালা,সে হলো আরেক জ্বালা।তোমার ভাইকে দ্বিতীয়বার না করে দেয় বউ হারা।”
“আমার হয়েছে যত জ্বালা!”
মায়া শুনানি দিতে ফ্লোরে এসে উপস্থিত হয়।মায়াকে দুজন মহিলা এসে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগতম জানায়।সবাই সামনে দাঁড়িয়ে হাত উঁচিয়ে মায়ার হয়ে জয় জয় করতে থাকে।বিশেষ করে মন্ত্রীর বউ বলে এছাড়া ব্যক্তি মায়াকেও অনেকে খুব ভালো করেই চেনে। মিডিয়ায় মায়ার অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই দেখেছে সবাই।মায়া মাইকের সামনে মুখ রেখে বলে,”আসসালামু আলাইকুম সবাইকে।আমি মন্ত্রী শাহমীর রাজ সরদারের একমাত্র বউ মিসেস মেহেরুন জাহান মায়া।”

সম্বোধন শুনেই রাজ বুকে হাত দিয়ে বলে,”হায় মেরা বিবি।”
“এমনভাবে বলছো যেনো পৃথিবীতে আর কারো বিবি নেই।”
“তোমার হিংসে হয় নাকি আমি আমার বউকে নিয়ে গর্ববোধ করলে?”
“কোনোদিন বাবাকে নিয়ে গর্ববোধ করেছো?”
“যেদিন দাদু হবে সেদিন গর্ব করে বলব পৃথিবীর বেস্ট দাদু হলো আমার বাবা।”
আদ্র রাজের এই লাগামহীন কথা শুনে এক পলক সিয়ার দিকে চাইলো। ওরা দুই বোন টিভির দিকেই চোখ রেখেছে।এমনভাবে চোখ স্থির যে এদিকটার বাবা ছেলে কি বলছে ওরা জানেই না।মাহমুদ সরদার ভেবেছিলেন ছেলে হয়তো বাবার দুঃখটা বুঝবে।কিন্তু নাহ!ছেলে তো তার সেই একই রয়ে গেলো।এই ছেলে পরিবর্তন হবার না।তাই কথা না বাড়িয়ে টিভিতে চোখ স্থির রাখলেন।

মায়া আবারও বলে,”কিছুদিন আগেই আমার স্বামী মানে আপনাদের মন্ত্রী মশাইয়ের বুকে গুলি লাগে।আল্লাহ রহমতে তিনি এখন সুস্থ কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি।আজকের দিনে আপনাদের শুনানি দেওয়ার একটা কথা ছিল।যেটা তার অসুস্থতার জন্য সফল হচ্ছিল না।কিন্তু আমি তাকে সফলতা থেকে আটকাতে পারিনা।তাই আমি আজ তার জায়গা নিয়ে আপনাদের কাছে উপস্থিত হয়েছি।আশা আপনারা কেউ নারাজ হবেন না?”
সবাই হাততালি দিয়ে বলে,”মন্ত্রীর বউ যদি আমাদের দেশের কথা ভেবে মন্ত্রীকে সহায়তা করে আর সরকার সম্মতি দেয় আমরা না করবো না।”

মায়া সহানুভূতির হাসি দিয়ে বলে,”ধন্যবাদ আপনাদের।তো শুরু করি আজকের ঘোষণা।”
মায়ার কাছে কাগজ এগিয়ে দিলো পিয়াশ।মায়া কাগজগুলো পাতা উল্টে বলতে শুরু করে,”আমাদের দেশের উন্নয়ন ব্যবস্থার দিক থেকে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে।যেখানে বাইরের দেশে চিকিৎসা,খাদ্য,বস্ত্র ও চলাফেরা আধুনিক ও উন্নত।আমরা এর ত্রিশ শতাংশ লাভবান পাইনি।চিকিৎসা ক্ষেত্রে আজকাল যে এমাউন্ট আমরা ব্যয় করি সেই তুলনায় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি দেখা যায়না।খাদ্যের ঘাটতি দিনদিন বেড়েই চলেছে।আমাদের কৃষি ব্যবস্থার কারণেই আমাদের দেহের ঘাটতি।যদি আমরা একটু ভালো স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শারীরিক অসুস্থতা বা যে দুর্বলতা দিনদিন দেখা দেয় এতটাও খারাপ আশা করি হবেনা।সেই সাথে বাজারের যে অধিক মূল্য সেটাও একটা বিবৃতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।দেশে অনেক পরিবার আছে যারা শিক্ষা,চিকিৎসা,বস্ত্র এতকিছুর অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে সঠিক খাদ্যের জোগাড় করতে পারেনা।আবার চাহিদা অনুসারে যোগানের অনেক ঘাটতি থাকে।সেই যোগান ঘাটতি যেনো না থাকে তার একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থা আমাদের মন্ত্রী শাহমীর রাজ আপনাদের জন্য রেখেছেন।”

সবাই হাতের শক্তি দিয়ে তালি দিলো।মায়া মৃদু হেসে বলে,”একজন কৃষিমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশের খাদ্য উন্নয়ন নিয়ে যেমন ভেবেছেন ঠিক তেমনই ভেবেছেন কৃষকদের নিয়েও।কৃষক নিজের পরিশ্রম দিয়ে সঠিক মূল্য পেলে বাজারের খাদ্যের মূল্য তালিকা গড়ে ওঠে।এটা নিয়ে কিছু তালিকা আপনাদের হাতে আমরা দিয়ে দিবো।সেই সাথে আমাদের দেশের জন্য ভেবে রাখা একজন কৃষি বৈজ্ঞানিক যিনি এখন আমাদের মাঝে নেই তার তৈরি সার এবং ফর্মুলা আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো।এই সারের বিশেষ গুণ হলো এটি ফসলের বৃদ্ধির সাথে ফরমালিনের যে বিষাক্ত প্রভাব থেকে রক্ষা করে।আশা করা যায় ফল পাকাতে যে ফরমালিন অতি মাত্রায় ব্যবহৃত হয় সেটি এখন আর দরকার হবে না।আমাদের দেশের গরীব ভাই বোনেরাও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবে।”

কৃষকরা সবাই হাততালি দিলো।এছাড়া আরো কিছু ভাষণ দিলো মায়া।তারপর পিয়াশের দিকে তাকাতেই পিয়াশ ও তারেক এসে কৃষকদের যে দায়িত্বে থাকে তার হাতে কিছু তালিকা দিলো।যেগুলো দেখে তিনি বলেন,”আপনারা তাহলে সার আর ফর্মুলা পরীক্ষা করে আমাদের দিবেন।আমরা তাহলে উন্নত মাটি দিয়েই ফসলের চাষ করবো।”
“ধন্যবাদ সবাইকে আমাদের সাথে থাকার জন্য।”
মায়া নিচে নামতে নিলে কিছু মানুষ এসে মায়ার সামনে ভিড় জমায়।মায়ার হাত ধরে কিছু মহিলা যেনো খুশিতে আত্মহারা। কান্নাও করছে তারা।অনেকে আছে সেলফি নিতে চাইছে।এরা যেনো একটা সেলফি নিয়ে ফেসবুকে দিতে পারলেই খুশি।মায়া সবার মন রক্ষার্থে কিছু সেলফি তুলেও নেয়।

পার্লারের মেয়েরা এসে সাজিয়ে দিলো জারাকে।আয়নার সামনে বসে আছে জারা।নিজেকে দেখছে আয়নায়।সোনালী এসে দাড়ালো জারার পাশে।
“আমার নেকলেস কোথায় জারা?”
“আমি হারিয়েছি খালামণি।”
“ওটা কত টাকার তুই জানিস?”
“একচুয়ালি তখন আমার বাইরে ঘোড়ার অনেক ইচ্ছা ছিল।তুমি যেতে দেওনি তাই আমি ওটা নিয়ে পালাই।কোথায় হারিয়ে গেছে জানিনা।”
সোনালী হুংকার দিয়ে বলে,”একদম মনগড়া বানিয়ে বলবি না।খুব ভালো করে চিনেছি আমি তোকে।রাজকে বিয়ে করবি না বলেই পালিয়েছিলি তুই।”

জারা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে হাতের ব্রেসলেট ঠিক করতে করতে বলে,”মায়া মেয়েটাকে দেখেও তোমার মনে আমার জন্য সন্দেহ জাগে?আমাকে রাজ বেইবীর কাছেই ঘেঁষতে দিতো না।”
“সে নাহয় হলো না কিন্তু আজকে তো আমার পছন্দের ছেলেকেই বিয়ে করতে হবে তোকে।”
“দেখা যাক।”
“কোনো সন্দেহ আছে নাকি?”
“তা অবশ্য আছে।”
“সন্দেহ থাকলেও রেখো না।চারপাশ গার্ডে ভরা।তোমার হ্যান্ডসাম আসতেও পারবে না।”
“তুমি তাকে চেনোই না খালামণি।আমার হ্যান্ডসাম ওয়ান পিচ।যে তোমাকে কোন দিক দিয়ে এসে হারিয়ে দিবে তুমি নিজেও জানো না।”

“তাহলে দেখাই যাক কে জেতে আজকে।”
“ওকে।”
“বরযাত্রী এসেছে।”
পিছন থেকে এমন কথা শুনে সোনালী শয়তানি হাসি দিয়ে বলে,”কাজী?”
“এসেছে।”
সোনালী এবার জারার দিকে চেয়ে মৃদু হেসে বলে,”বর এসেছে কাজীও এসেছে।এবার উঠে পড় তাহলে।”
জারা গা ঝাড়া ভাব দিয়ে উঠে দাড়ালো।সোনালীর দিকে না তাকিয়ে চলে গেলো বরপক্ষের সামনে। বরকে দেখে জারা ওর হাত দিয়ে ফ্লাইং কিস দেখিয়ে বলে,”ওয়েলকাম ফর গো টু হেল।”
রুবি ফিক করে হেসে দেয়। এমনও বিয়ে হয় নাকি যেখানে বউ এসে বরকে চুমু দেখিয়ে বলে হেল হতে!এই মানুষদের চক্করে পড়ে এগুলো তাকে দেখতে হয়।বরের মুখ দেখে রুবি আরো বেশি হেসে দিলো।
কাজী বিয়ে পড়াতে ব্যাস্ত।সবকিছু পড়ে তিনি বলেন,”বলো মা কবুল।”

“না বললে কি করবেন?”
কাজী হকচকিয়ে বলেন,”কনে কি বিয়েতে রাজি না?”
“মেয়ের ভাব দেখে কি মনে হয়?”
“নাচতে নাচতে বিয়ে করতে এসে কবুল বলতে চাইছে না কেন?”
বরপক্ষের ধারণা জারা একটা পাগল।নাহলে বিয়েতে এমন ব্যবহার কেউ করে?সোনালী কোনমতে সবাইকে সামাল দিলো।জারাকে রাগ দেখিয়ে বলে,”কবুল বল।”

জারা মুখ ভেংচি দেয়।এর মাঝেই হেলিকপ্টারের শব্দ কানে আসে সবার।জারা এবার মৃদু হাসে।সোনালীর দিকে তাকালো মাথা উঁচিয়ে।সোনালী ভ্রুকুটি করে।জারা বলে,”বুঝোনাই কে এসেছে? হি ইজ মাই হ্যান্ডসাম।”
সোনালী বাইরে চলে আসে।সেই সাথে আসে অনেকেই। জারাও এসে দাড়ালো সিঁড়ির কাছে।মাথার উপর ফাঁকা আকাশ।চোখ সেদিকেই স্থির।হেলিকপ্টারের দিকে তাকাতেও বীরের একপাশ দেখা যায়।জারা তো খুশিতে লাফিয়ে উঠে বলে,”দিস ইজ কল্ড মাফিয়াস ম্যারেড।”
সোনালী তাকালো জারার দিকে।বীরের হেলিকপ্টার নিচে নামতেই চারপাশ ধুলাবালিতে ভরে গেলো।কিছু গার্ড বন্দুক নিয়ে হাজির হয়।কিন্তু তাদের আর কিছুই করতে হয়না।তার আগে বীর ক্রস ফায়ার চালু করে।জারা এই দৃশ্য দেখে সিটি বজায়।

বীর সিঁড়ির কাছে এসে এক পা সিঁড়ির উপর রেখে হাঁটু দ আকারে করে দাড়ালো।অতঃপর হ্যাঁচকা টানে জারাকে নিজের হাঁটুর উপর বসিয়ে সোনালীর দিকে তাকিয়ে বলে,”আমার বন্দী খাঁচার পাখিকে আরেক শিকারী কি এতই সহজে নিজের করে নিতে পারে খালাশাশুড়ি?”
জারার কোমড়ে জোরে চাপ দিয়ে দাঁত খিঁচে রাগ দেখিয়ে বলে,”সাহস তাহলে দেখিয়েই দিলে আমার থেকে দূরে যাওয়ার!”
জারা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,”আমি তো বিয়ে করতে আসিনি।আমাকে আনা হয়েছে।”
“বাধ্য মেয়ে হয়েছো দেখছি।”

সোনালীর কথা শুনে দুজনে সোনালীর দিকে চোখ রাখে।সোনালী বীরের চাহনি দেখে ঘাবড়ে যায়।এতটা ভয় রাজকেও পায়না।কোনমতে সাহস যুগিয়ে বলে,”তোমার বাবা মা কখনোই জারাকে মানবে না।”
“আমি কাকে আমার বউ বানাবো নাকি না এটা দেখার জন্য কি আমি আপনাকে আমার পার্সোনাল চাকর বানিয়েছি?”
সোনালী আশেপাশে তাকালো।সবগুলো গার্ডকে বীর মাটিতে মিশিয়ে রেখেছে।ধুলোমাখা মাটিতে এখন রক্ত আর লাশ।সোনালীর হয়ে বলার জন্য কেউ নেই।বীর ভিতরের দিকে চোখ রাখতেই দেখে রুবি দাড়িয়ে।আরেকটু ভিতর থেকে বরপক্ষ থেকে অনেকেই বের হয়।সেই সাথে বের হয় বর নিজেই।বীর তাকে দেখলো।দেখতে বেশ হ্যান্ডসাম আছে।মানায় জারার পাশে খুব সুন্দরভাবে।কিন্তু বীর থাকতে এই হ্যান্ডসাম কি জারার পাশে জায়গা পাবে?কখনোই না।বর নিজে কিছু বলার আগে বীর বলে ওঠে,”ওয়!যেই যাত্রী নিয়ে এসেছিলি সব কয়টাকে নিয়ে এখান থেকে কেটে পর।তোর কোনো বিয়ে হবেনা এখানে।কারণ এই বউ একমাত্র আমার।”

জারা অকপটে নিজের হাতজোড়া বীরের গলায় রাখে।আঁকড়ে ধরে মিষ্টি হাসে জারা।বরের দিকে তাকিয়ে আফসোস ভঙ্গিতে বলে,”ব্যাড লাক হানি।”
জারার কোমড়ে এবার খামচির ব্যাথা অনুভব হলো।আস্তে করে “আউচ” বলে বীরের দিকে ফিরে তাকায়।বীর অগ্নি দৃষ্টি দেখিয়ে বলে,”একজন বেইবী তো আরেকজন হানি!তোর এই হানি আমি করে দিবো নর্দমার পানি।”
“হাউ জেলাস মাই হ্যান্ডসাম।”

বলেই বীরের নাকে আঙুল দিয়ে স্লাইট করে।বরের বাবা এসে সোনালীর কাছে বলে,”এগুলোর মানে কি?এটাই যদি হয়ে থাকে তাহলে আমাদের বিজনেস ডিলের কি হবে? আর ওদিকে মাস্টার কিন্তু রেগে যাবে।”
সোনালী একবার লোকটার দিকে তাকিয়ে বীর জারার দিকে তাকালো।মাস্টারের কথা ভাবতেই হাতের ফোনটা নিয়ে ঘাটতে শুরু করে।বীর ওর গার্ডকে ইশারা করে।গার্ড এসে সোনালীর থেকে ফোনটা ছো মেরে নেয়।সোনালী রাগ দেখিয়ে বলে,”যেটা করছো তার ফল কিন্তু ভালো হবেনা।”
“আপাতত বিয়ে করতে যাচ্ছি।আর বিয়ের ফল হিসেবে আমি হবো বাবা আপনি হবেন খালাতো নানী।এটা খারাপ কোনো ফল হিসেবে আমি দেখছি না।”
বীরের এমন কথা যেনো আজ রাজের আভাস পেলো।জারা বীরকে রাগাতে বলে,”ওয়াও হ্যান্ডসাম।তুমি তো বেইবীর মত লুচু কথা বলো।”

“তোর বেইবীর পাপ্পা লাগি নাকি এত বেইবী বেইবী করিস!”
“উমমম!”
জারা মুখটা বিড়ালের মত করে বোঝালো সে কষ্ট পেয়েছে।বীর জারাকে কোলে নিয়ে ভিতরে গেলো।ভিডিও করছে রুবি।মায়াকে পাঠাবে তাই।ভিতরে এসে বীর জারার দিকে চেয়ে বলে,”এই লেহেঙ্গা কে দিয়েছে?”
“তোমার আর আমার জীবনের ওয়ান এন্ড ওনলি ভিলেন।”
“ওই কটকটি শাশুড়ি?”
“ইয়াহ।”
“আমি এর থেকেও দামী ব্রাইডাল ড্রেস এনেছি।ওটা পরে আসো।”
“কোথায়?”
বীর তুড়ি বাজাতেই একে একে ড্রেস জুয়েলারি চলে আসে।সবকিছু জারার সামনে এসে দেখানো হয়।জারা খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে দাড়ায়।দুইগালে হাত রেখে অবাকের সাথে বলে,”এগুলো আমার জন্য?”

“হুম।”
“আমি এখনই চেঞ্জ করে আসছি।তুমি দশ মিনিট অপেক্ষা করো।আমি দুই মিনিটে যাবো বিশ মিনিটে চেঞ্জ করে পাঁচ মিনিটে ফিরে আসবো।”
জারা দৌড়ে চলে গেলো।হাত গুণে কাউন্ট করতে থাকে বীরের গার্ড।হতবম্ব চাহনি দিলো সে।বীর প্রশ্ন করে,”কি?”
“ম্যাম আপনাকে দশ মিনিট অপেক্ষা করতে বলে সাতাশ মিনিট পর আসবে বোঝালো স্যার।”
বীর হেসে দিয়ে বলে,”তাড়ছেরা মেয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছি বলে কথা।”
বীরের ঠোঁটে হাসি দেখে গার্ড খুশি হলো।অন্তত বীর হাসছে।বীরকে এভাবে খুব কম দেখা যায়।
জারা এসেছে বীরের দেওয়া ড্রেস আর জুয়েলারি পরে।জারার মুখে এখন মন প্রফুল্ল হাসি।যেনো এখন সে যেটা করতে যাচ্ছে সেটা সে মনে মনেও চাচ্ছে।সোনালী রাগী দৃষ্টি দিয়ে আছে এখনও।জারা সেদিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে বলে,”এখন কিছু করছো না কেন?”

“ক্ষমতা থাকলে এই বিয়ে তোমার হতনা।”
“তোমার উচিত ছিল শত্রু পক্ষের সমতুল্য ক্ষমতা অর্জন করা।তাহলে আজ তুমি জিতলেও জিততে পারতে।”
“বীর আমার শত্রু না।কিন্তু এখন যেটা করছে তাতে বীরের শত্রু ওর কাছের কেউই হতে চলেছে।”
মনে মনে জারা বলে ওঠে,”এটাই তো আমি চাই।রক্ত যখন রক্তের শত্রু হবে আমাকে আর কি আলাদা প্রতিশোধ নিতে হবে!প্রতিশোধ খুন ব্যতীত হয়।যেটা আমি করে দেখাবো।”
জারা এসে বীরের পাশে বসে।গার্ড কাজীর দিকে তাকিয়ে বলে,”বিয়ের সব নিয়ম এক থাকলেও বরের নাম পাল্টাবে।সেভাবেই বিয়ে দিন।”

কাজী মাথা উপর নিচ করে এবার বিয়ে পড়ায়।সবশেষে জারার দিকে ফিরে কিছু ভেবে বলে,”এবার কি কবুল বলবে মা?”
বীর জারার দিকে ফিরে আবার কাজীর দিকে ফিরে বলে,”কোন দিক থেকে মনে হয় মেয়ে কবুল বলবে না?”
“আগেরবারও মুখে হাসি রেখে বিয়েতে বসেছিল মেয়েটি।কবুল বলার সময় বলতে নারাজ ছিলো তাই জিজ্ঞাসা করা।”
বীর এবার জারার দিকে নরম চাহনি দিলো।জারা তারমানে তার অপেক্ষায় ছিলো।ফিচেল হেসে বলে,”পাত্রী এবার বিয়েতে রাজি।”

কাজী বলেন,”তাহলে মা বলো কবুল।”
জারা মুখে হাসি রেখেই একেবারে বলে দেয়,”কবুল কবুল কবুল।”
কাজী হা হয়ে বলে ওঠে,”প্রথমে তো বলেইনি এবার হুরহুর করে বলে দিলো।এ কেমন বিয়ে?”
“ইউনিক বিয়ে।বউ অনেক এক্সাইটেড তাই।”
“এই বউকে দেখলে বোঝা যায়না সে কখন এক্সাইটেড আর কখন এক্সাইটেড না।”
বীর টেবিলের উপর বাড়ি দিয়ে বলে,”আপনাকে বুঝতেও হবে না।”

কাজী কেঁপে উঠেলো ভয়তে।কারণ হুংকারের সাথে সবার হাতে বন্দুক আছে।বন্দুক না থাকলে কাজী তার গলা উঁচিয়ে রাখতো।এই বন্দুক তার গলাটা নেতিয়ে রেখেছে।অনেক কষ্টে দুজনের মুখ থেকে কবুল শুনলো।এমন না যে বীর জারা কবুল বলতে নারাজ।কাজী নিজেই ঘেমে উঠছে কেঁপে উঠছে।
বিয়ে শেষ হতেই গার্ডস মিষ্টির প্যাকেট আনে।প্রথম মিষ্টি সোনালীর সামনে রাখে।বীরের ইশারা পেয়েই রাখে।সোনালী রেগে থাকলেও জীবনের দয়া মায়া করে খায়।বীর মৃদু হাসে শুধু।এর মধ্যেই বীরের ফোনে কল আসে।বীর একটু দূরে গিয়ে কল ধরতেই ওপাশ থেকে জানায়,”ম্যামের সেন্স ফিরেছে স্যার।উঠেই মোহ নাম নিলেন।আমি চিনতে পারছি না এই নামে কাউকে।”

বীর খুশি হয়।পিছনে ঘুরে সোনালীর দিকে তাকায়।সতীন জেগে উঠেছে এবার।সোনালীর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো।তারপর বলে,”আদ্রর সাথে কথা বলে আলাদা সেফটিতে রাখতে হবে।এতদিন আমি নিজের কন্ট্রোলে রাখলেও এখন আমিও এই সোনালীর নজরে এসেছি।দূরে থেকে যতটুকু সুরক্ষিত রেখেছি এখন এটা সম্ভব না।আপাতত আদ্র আর রুদ্র কারো শিকার না।তাই ওদের সাথেই কন্টাক্ট করো।”
“ওকে স্যার,আরেকটা ইনফরমেশন পেয়েছি।”
“কি?”
“মিসেস সোনালীর ছেলে মিহির আজ দেশে ফিরছেন।সে এসেই ফর্মুলা নিয়ে ইনভেস্টিগেশন শুরু করবে।”
বীর মৃদু হেসে বলে,”ওকে।”
কল কাটলো বীর।রুদ্রকে সমস্ত ইনফর্মেশন জানালো।রুদ্রের দিক থেকে ম্যাসেজ আসে,”ডোন্ট ওরি ব্রো।এভরিথিং উইল বি ইন আওয়ার কন্ট্রোল।”

বীর হেসে জারার দিকে এগিয়ে আসতে নেয়।জারা ফোন হাতে কিছু করছে।দেখলো বীর কিন্তু দূরে থাকায় জানতে পারছে না।এদিকে জারা সুযোগ পেয়ে রুবির থেকে ফোন নেয়।মায়াকে ম্যাসেজ দেয়,”আমাদের মাত্র বিয়ে হয়েছে।তোমার ভাইয়ের সাথে ঢাকায় যাচ্ছি।তাকে বলে আমাদের এখন সরদার মহলে রাখার ব্যবস্থা করবে।যে মেজাজ তার থাকতে চাইবে বলে মনে হয় না।তুমিই জোর করবে।আসার সময় আমি খালামণির ফোন থেকে চুরি করে কিছু মেইল কালেক্ট করেছিলাম।আমি সেগুলো তোমার মেইলে দিবো কিন্তু নেট প্রবলেম অনেক।দেরি হবে দিতে।আমাদের স্বপ্ন এবার পূরণ হতে চলেছে।বাকি কথা পরে হবে তোমার ভাই আমার দিকে আসছে।”
কোনরকমে দ্রুত টাইপ করে ম্যাসেজ সেন্ড করেছে।অতঃপর ফোনটা পাশে রেখে বীরের দিকে ফিরে বলে,”ঢাকায় যাচ্ছি কবে?আমাদের ওয়েডিং পার্টি হবে তো।”

বীর জারার চোখমুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো।জারা এখনও হাসছে।যেনো সে খুব খুশি।বীর খুব ভালো করেই জানে জারা ঠিক কেমন খুশি।কিন্তু জারা কেন এমন করছে এটাই বুঝতে পারছে না।
মায়া গাড়িতে উঠতেই জারার ম্যাসেজ পেলো।পড়ে মৃদু হাসলো।রুদ্র ম্যাসেজ দিলো আদ্রকে।এদিকে আদ্র গার্ডের সাথে কথা বলে রাজের কাছে এসে বলে,”সুসংবাদ আছে একটা।তোমার শাশুড়ি ব্যাক করছে দেশে।”
রাজ মাহমুদ সরদারের দিকে ফিরে বলে,”আমার শাশুরি আসছে বাবা।আপ্যায়ন ব্যবস্থায় যেনো কোনো ত্রুটি না থাকে।”

“তোমার বউ জানে না যে তার মা আসছে,আর তুমি শাশুড়ি নিয়ে লাফাচ্ছো।”
“বউকে আপাতত জানিয়ে বিপদের দিকে এগোতে চাইনা।”
“তাছাড়া ওনার সেন্স ফিরলেও ওনাকে এখনও একটা অপারেশন করতে হবে।ইউ নো রাইট আমি কিসের কথা বলছি?”
রাজ ঠোঁট প্রসারিত করে বলে,”দুই শাশুরির মিলন ঘটবে যে।”
“ব্যাপারটা যতটা সহজ ভাবছো ততটা না।ওই সোনালী আর ওর মাস্টারের খোঁজ লাগবে আগে।”
“মাস্টারকে জানার জন্যই তো সোনালী জীবিত আছে।নাহলে আমার মায়ের একজন খুনিকে সামনে পেয়ে ছেড়ে দিতাম নাকি।ওকে কবেই আমি কবরে চাপা দিয়ে রাখতাম।”

মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ৪১+৪২

আদ্র শূন্যে তাকিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখে বলে,”এই একজন মহিলা আমাদের সকলকে মা হারা করে দিলো।আমাদের মাকে তোমার মাকে এমনকি মায়াবতীর শৈশবকে হারাতে হলো।”
“ওকে এমন শাস্তি দেওয়া হবে যেনো এই সমস্ত অন্যায়ের জন্য ও নিজে মাথা ঠুকরে মরে।”
বাইরে থেকে সব শুনে অবাক হলো সিয়া আর হিয়া।সিয়া ড্রিম লাইফে ইন্টার্নি দিচ্ছে।হিয়া বাসায় গিয়ে আবার এসেছে একসাথে সিয়ার সাথে।নিজেদের ছোটমা সম্পর্কে এমন কথা শুনে দুজনেই অবাক।এখন তো ওরাও ভয় পাচ্ছে সোনালীকে।

মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ৪৫+৪৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here