মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ৭
ইশরাত জাহান
জারার নিকটে এসে হাঁটু গেঁড়ে বসে বীর।জারার পায়ের থেকে রক্ত বের হতে থাকে। বীর ড্রাইভারের দিকে তাকাতেই ড্রাইভার গাড়িতে থাকা মেডিসিন বক্স নিয়ে আসে। জারার পায়ে ঔষধ দিয়ে রক্ত পড়া থামিয়ে দেয়।এরপর যখনই জারাকে ধরতে যাবে বীরের হাতটা ঝাটকা দিয়ে সরিয়ে দেয় জারা।অনেক হয়েছে শান্ত হয়ে এড়িয়ে যাওয়া।ভেবেছিলো মাফিয়া আর খুনি ব্যাক্তির সাথে তর্কে জড়ালে নিজেকেই পরপারে পাঠাতে হবে।এখন তো তাকে আঘাত করেই দিলো।তাই তেজী কণ্ঠে বলে,”ধরবেন না আপনি আমাকে।আপনি একজন খুনি।আপনার সাথে থাকার কোনো ইচ্ছা নেই আমার।”
পারলে তো জারা এটাও বলে দেয় যে সুযোগ পেলে সে বীরকে জেলে ঢুকিয়ে দিবে।কিন্তু এটা বলা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।দেখা গেলো বীর ঠিকই জেলে যাবে না উল্টো সে বীরের খাজানায় বন্দী হয়ে থাকবে।যে ছেলে পুলিশকে টিস্যু পেপারের মত ব্যবহার করে সেই ছেলের আবার এসবের ভয় দেখানো বেমানান।বীর ঠোটটা প্রসারিত করে নেয়।চোখ দেখে তাকে হিংস্র লাগে।জারার কথার পাত্তা না দিয়ে সে উল্টো জারার অতি নিকটে চলে আসে।ড্রাইভার চলে যেতে নেয়।বাকি গার্ডস চলে গেছে অনেক আগেই।বীর ইশারা করেছিলো তাদের।সবাই যেহেতু এদিকে মনোনিবেশ রাখছে না তাই বীর জারার থুতনি শক্ত করে ধরে।বীরের হাতের গুলি জারার সমস্ত মুখে বিচরণ করে বলে,”তোর এত বড় সাহস তুই এই আরহাম খান বীরের থেকে পালাতে চাস?এই আরহাম খান বীরের মনে রাজত্ব করেছিস তুই।রাজ করতে এসে পালালে তো হবেনা জানেমান।এখানেই তোর রাজত্ব চালিয়ে যেতে হবে।মাথায় এটা ভালোকরে সেট করে নে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আপনার মনে রাজত্ব করতে আমার ঘৃণা লাগে।খুনীর মনে রাজত্ব করার ইচ্ছা আমার নেই।”
“তাই বুঝি?তো কিভাবে পালাবি শুনি?এই খুনি তোকে পালাতে দিবেই না।”
জারা বীরের হাত ধরেছে।থুতনি ব্যাথা করছে তার।এভাবে ধরে রাখলে তো ওবাশ হয়ে যাবে।এত চেষ্টা করেও ছাড়াতে পারছে না জারা।বীর অবশেষে হাত সরিয়ে জারার গালের দুই পাশে কোমলভাবে স্পর্শ করে।ব্যাথা লাগা স্থানে মানে থুতনিতে বীর তার ঠোঁটের স্পর্শ দিতে থাকে।জারা তার হাত দিয়ে থামাতে থাকে আর বলে,”আমাকে ছাড়ুন বীর।আমার অসস্তি লাগছে।”
বীর থেমে জারার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,”কানাডাতে কে যেনো আমাকে ডেয়ার পূরণ করার জন্য আমাকে কিস করেছিলো জানেমান?”
জারা স্তব্ধ হয়ে আছে।কোনো কথা তার মুখে আসছে না।খাল কেটে কুমির তো সেই এনেছিল।না সে তখন বন্ধুদের সাথে ডেয়ার খেলত আর না বীরের প্রেমে পড়ত।বীর তো তার কাছে আসেনি সেই প্রোপোজ করেছিলো বীরকে আগে।অতঃপর প্রেম হয় দুজনের।এখন যতই সে পালাই পালাই করুক এই মাফিয়া কি আর তাকে ছাড়বে?কখনোই না।বীর বাংলাদেশের নামকরা মাফিয়া।এদিকে সে শাহমীর রাজের মামাতো ভাই।বীরের দাদা অর্থাৎ রাজের নানা ইখতিয়ার খান ছিলেন একজন মন্ত্রী।এরা তো বংশীয় ভাবে ভয়ানক পরিবার।নাম ডাক থাকার কারণে এদের সাথে কেউই পেরে উঠবে না।জারাকে চুপ দেখে বীর আর কোনো কথা না বলে জারাকে কোলে করে নিয়ে যায়।জারা ছুটাছুটি করে আর চিল্লিয়ে বলতে থাকে,”ছাড়ুন আমাকে আমি চলে যাব।আপনি আমাকে ছাড়ুন।আমি আপনার সাথে আর এই সম্পর্কে থাকতে চাই না।আই নীড ব্রেকআপ।”
“ফাও চিল্লিয়ে কান ঝালাপালা করবে না তো।তোমার এই কেওকেও গাছপালা আর আমার ড্রাইভার ছাড়া কেউ শুনছে না।”
বলেই জারাকে গাড়িতে এমনভাবে বসিয়ে দিলো বেচারি বেশ জোরেই ব্যাথা পেয়েছে কোমরে।চোখটা খিচে বন্ধ করে কোমরে হাত রাখে।চোখটা খুলে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে,”খুনি সাইকো উগান্ডা মফিজ।”
“এই এই বিদেশে পড়াশোনা করে এসব শিকেছো তুমি?”
জারা উত্তর না দিয়ে গাড়ি খোলার চেষ্টা করছে।এক পায়ে গুলি লাগলে কি হবে আরেক পা তো আছে।ওটা দিয়ে লাথি মারা শুরু করেছে জানালায়।ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করে।বীর জারার দিকে স্প্রে বোতল দিয়ে বলে,”এটা স্প্রে করো।ব্যাথা কমে যাবে।আর হ্যাঁ জেদ করা বন্ধ করো।অবশ্য এটাকে জেদ বলব নাকি নাটক নিজেও জানি না।”
জারা থেমে যায়।শুকনো ঢোক গিলতে থাকে।মুখে আর কিছু না বলে স্প্রে বোতল নিয়ে কোমরে স্প্রে করে।
হিয়া শাড়ি পাল্টে এসেছে লাইব্রেরির দিকে।তার সবকিছু একদিকে উপন্যাস আরেকদিকে।দশ মিনিটের জন্য হলেও একটু বই পড়তে চায়।তার আগে মাথাটা ফ্রেশ রাখতে চা বানাবে।রান্নাঘরের দিকে এগোতেই দেখলো রুদ্র ভিডিও কলে কারো সাথে কথা বলছে।হিয়া একটু এগোতেই শুনল রুদ্র বলছে,”বাই বেবী গুড নাইট।উম্মাহ।”
বলেই কল কেটে পিছনে ঘুড়লো।হিয়াকে দেখে ফোনটা পকেটে রেখে বলে,”তুই এখানে?”
“প্রশ্নটা আমার আপনাকে করা উচিত রুদ্র ভাই।আপনি আমার বাসায় কেন?”
“এটা তোর একার বাসা না।এটা আমারও দাদার বাসা।”
“প্রসঙ্গ যখন দাদার বাসা তাহলে বলে দেই দাদার সম্পত্তি এখন দুদিকে।আপনার বাবার তরফের জমি ঐদিকে।এখন আপনি আমার বাবার জমির উপর দাঁড়িয়ে আছেন।”
“তোর বাবার তো আমি থাকাতে কোনো এলার্জি নেই।তোর এত কেন এলার্জি শুনি?”
“আপনার মত নষ্ট পুরুষ যেখানে এলার্জি তো সেখানে।আসল কথা হলো এই যে আমার নষ্ট মানুষে এলার্জি আছে।”
বলেই হিয়া চলে যায় রান্নাঘরে।রুদ্র এই কথাগুলো গায়ে মাখলো না।অপেক্ষায় আছে শুধু।হিয়া চায়ের পাতি অল্প দিয়ে চা বানালো।একটু বই পড়ে ঘুমিয়ে যাবে।তাই লিকার কম দিয়ে চা বানিয়ে মাথাটা ফ্রেশ রাখতে চায়।হিয়া চোখ বন্ধ করে কয়েক চায়ে কয়েক চুমুক দিলো।এরপর রুদ্র এসে তড়িৎ গতিতে চায়ের কাপ নিয়ে তাতে চুমুক দিল।হিয়া কোমরে হাত রেখে বলে,”এটা কি করলেন?”
“একটু ফ্রেশ হলাম।”
“আমার চায়ের কাপে চুমুক দিলেন কেন?”
“ওই ছেড়ি!চায়ের কাপে কি তোর নাম লেখা আছে?”
“নাম লেখা নাই কিন্তু আমার চুমুক দেওয়া ছিলো।”
“এমনভাবে বলছিস যেনো কাজের বেটি রহিমার চুমুকে চুমুক দিয়েছি।”
“আপনি আসলেই নষ্ট পুরুষ রুদ্র ভাই।”
বলেই হিয়া চলে যায় নিজের লাইব্রেরিতে।যেতে যেতে বলে,”খবরদার আমার লাইব্রেরিতে আসবেন না।আমি বই পড়ে একটু ঘুমাবো।”
রুদ্র চায়ের কাপের দিকে তাকালো।হিয়ার ঠোঁটের হালকা গোলাপি লিপস্টিক এর দাগ লেগে আছে তাতে।রুদ্র হেসে দিয়ে বলে,”অন্য প্রেমিক পুরুষ কিভাবে তার ভালোবাসার ব্যাক্তির অভিমান ভাঙায় জানিনা কিন্তু আমার কাছে তোর অভিমানটাই আস্ত এক ভালোবাসা।ইচ্ছাই করেনা এই রাগ ভাঙিয়ে দিতে।তোর এই তেজী স্বভাবটাই যে আমাকে তোর দিকে আরো টানে হিয়াপাখি।”
সকালে ঘুম থেকে উঠে গলায় সুড়সুড়ি অনুভব করে মায়া।এতদিন ঘুমিয়েছে বিনা সুড়সুড়িতে।তাই হঠাৎ কেন এমন সুড়সুড়ি লাগছে বুঝতে পারছে না।চোখটা পিটপিট করে পিছনে ঘুরতে নিলেই রাজ মায়ার গলার মাঝেই ঘুমন্ত মুখটা রেখে বলে,”এখন উঠতে হবেনা মায়াবতী।নতুন বউ এত সকাল সকাল উঠলে লোকে মন্ত্রীর গায়ে কলঙ্কের দাগ লাগাবে।বলবে এই মন্ত্রী অক্ষম তাই বউকে এত সকালে ছেড়ে দিয়েছে।”
মায়া তার গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে উঠে বসে।রাজ তার বালিশের উপর মাথা রাখলো।মায়া কাঠিন্য হয়ে বলে,”লোক দেখানো পীড়িত আমি করিনা মন্ত্রী মশাই।”
রাজ আশেপাশে তাকিয়ে বলে,”এখানে তো তুমি আমি ব্যতীত কোনো লোক নেই মায়াবতী।আসো একটু পীড়িত করি।”
“দূরে সরুন আমার থেকে।”
“তুমি নিজের কথার খেলাপ করলে কিন্তু।”
“কোন কথাটা?”
“এই যে লোক দেখানো পীড়িত করো না।এখানে লোক নেই তবুও তুমি আমার কাছে আসলে না।একটু লোক না দেখানো পীড়িত করার সুযোগ করে তো দিলাম।”
“অসহ্যকর লোক।”
বলেই মায়া উঠে যায়।গোসল করে একটি নীল রঙের শাড়ি পরে নেয়।রাজ গোসল করে সাদা পাঞ্জাবি পরে।মায়া ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে হাতে গোলাপী চুরি ঢুকাতে থাকে।রাজ পাঞ্জাবির কলার ঠিক করে মায়ার দিকে তাকালো।ভেজা চুলগুলো কিছুটা শুকিয়ে গেছে।হালকা হালকা ভেজা আছে এখনও।হাতে চুড়ি ঢোকানোর জন্য হাত উচু করেছে মায়া।তাই তার পেটের দিকে কিছুটা জায়গা ফাকা হয়ে এসেছে।সাদা চামড়ার অংশটা দেখে রাজ মায়ার দিকে এগিয়ে আসে।মায়া চুড়িগুলো হাতে ঢুকিয়ে আয়নায় তাকালো।রাজকে এভাবে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে বলে,”কি হয়েছে আপনার?”
রাজ চুপ করে মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।মুখে মাত্রই একটা সানস্ক্রিন ক্রিম আর ঠোঁটে গোলাপী লিপস্টিক দিয়েছে মায়া।লিপস্টিকটা মায়ার ঠোঁটে যেনো একটু বেশি নজরকাড়া লাগছে রাজের নজরে।অবশ্য মায়া ব্যতীত অন্য নারীর ঠোঁটের দিকে তার নজর কখনোই যায়নি।সে তো একমাত্র এই মায়াকেই মনোযোগ দিয়ে দেখছে।মায়া রাজের দিকে ফিরে বলে,”এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?”
“গোলাপি ওষ্ঠে ছোট্ট করে একটা চুমু খেলে কি লিপস্টিক নষ্ট হয়ে যাবে মায়াবতী?”
মায় সূক্ষ্ম দৃষ্টি দেয়।রাজ পাত্তা না দিয়ে মায়ার সেই উন্মুক্ত কোমরে হাত রেখে নিজের অতি নিকটে টানলো।ড্রেসিং টেবিলের উপর মায়াকে বসিয়ে দিয়ে মায়ার ওষ্ঠকে নিজের ওষ্ঠে মিলিয়ে দিলো।মায়া এইটুকু সময়ের মধ্যে কিছু বলার বা করার সুযোগ পেলো না।যখনই মায়া তার ডানহাত দ্বারা রাজকে আটকাতে যাবে ওমনি রাত মায়ার সেই হাতটি ধরে নিজের গলার পিছনে ধরে রাখে।মায়া তার ওষ্ঠ ছড়ানোর ব্যার্থ চেষ্টা করতে থাকলে রাজ বলে,”দুষ্টুমি করবে না মায়াবতী।স্বামীর রোমান্সে বাধা সৃষ্টি হয় তো।”
মায়া নির্বাক চেয়ে আছে।রাজ আবারও তার কাজে লেগে পড়ে।নিজের মনের ইচ্ছাটুকু পূরণ করে মায়াকে ছেড়ে দিলো।মায়া বেঘোরে আছে।রাজ দুষ্টু হেসে বলে,”মায়াবতীকে এখন রোমান্সবতী লাগছে অপস হটবউ লাগছে।”
ধীরে ধীরে বন্ধ চোখ খুলে দিলো মায়া।দেখতে পেলো রাজের গলাটা এখনও সে ধরে আছে।হাত ছাড়িয়ে পাশে সরে যেতে নিলেই রাজ কোমরটা ধরে বলে,”আর একটু থেকে গেলে হয়না?”
মায়ার কাছে এই লোকটা এক সময় পুতুল বর ছিলো।আজকে এখনও তাকে সেই রকমই মনে হচ্ছে।রাজের দৃষ্টি ও চাহনি এমনটাই প্রকাশ করছে।মায়া একমনে খুব খুশি হয়।কিছুক্ষণের জন্য ভুলে যায় সবকিছু।তার উদ্দেশ্য তার ইচ্ছা।মায়াকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাজ যেনো একটা সুযোগ পেলো।সে তো চাইছে না তার বউকে এখন ছাড়তে।বউ যখন তারকাছে বেঘোরে আছে তখন এই সুযোগের সৎ ব্যাবহার করাটাই উচিত।রাজ তাই করতে চাইলো।মায়ার গলার কাছে মুখটা যেই ডুবিয়ে দিলো ওমনি চোখটা বন্ধ করে নেয় মায়া।কিন্তু সময় এবং পরিস্থিতি যেনো বাধা দিলো তাদের।এই সাত সকালে রোমান্স করলে তো এমন হবেই।দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ আসে ভিতরে।রাজ যদিও শুনেও না শোনার মত করে নিজের কাজ করতে চাইছে কিন্তু মায়া তাকে ছাড়িয়ে দেয়।ক্ষিপ্ত হলো দরজার ওপাশের ব্যাক্তির উপর।দরজা না খুলেই জোরে চিল্লিয়ে বলে,”এই সাত সকালে তোদের আবার আমার ঘরে কি রে?”
“অপদার্থ ছেলে আমি তোমার বাপ রে।”
রাজ ভেবেছিলো এখন হয়ত কোনো সার্ভেন্ট বা সিয়া হিয়া রুদ্র এরা আসবে।এই সকালে বাবা এসে দরজা ধাক্কা দিবে এটা কেই বা ভাবতে পারে?বাবার কমনসেন্স নিয়ে বিরক্ত রাজ।রাতে বউয়ের হাঁপানি বেড়েছিল তাই কিছু না করে ঘুমিয়ে যায় এখন সকালে সুযোগ পেলো আর বাপ এসে বাধা।রাজ কলার ও হাতা ঠিক করে দরজা খুলে মিটিং রুমের দিকে যেতে যেতে বলে,”তোমার এই বয়সে কষ্ট করে উপরে আসার কি দরকার বাবা?বোনদের পাঠালেই তো পারতে।”
মাহমুদ সরদার রাগের সাথে বলেন,”ফোন কোথায় তোমার?”
“কেন ঘরে?”
“কতবার কল করা হয়েছে দেখেছো?”
রাজ বিরক্ত আবারও।বাসর ঘরে কেউ ফোন নিয়ে পড়ে থাকে?মুখে কিছু না বলে হাটা থামিয়ে পিছনে ঘুরে বলে,”কিছু বলতে চাও?”
“বিরোধী দলের লোক যে তোমার পিঠপিছে ষড়যন্ত্র করছে এটা কি জানো?”
“আমি কিভাবে জানবো?তুমি বলো কি করেছে?”
“ওরা সরদার বাড়ির অতীত তুলে ধরতে চাইছে।মোহন সরদারের প্রাক্তন বউ কোথায় এবং তার সেই মেয়ে কোথায় এই নিয়ে নতুন করে মুখ খুলেছে মিডিয়া।”
রাজ ফিচেল হেসে বলে,”কোথায় আমার বিয়ের হেডলাইন হবে তা না উল্টো আমার কালনাগ শশুর আর শান্তশিষ্ট শাশুরির অতীত টেনে আনছে।”
“এটা তোমার কাজে বাধা সৃষ্টি হবে।তুমি কি বুঝতে পারছ না তোমার সম্মান ডোবাতে ওদের এই চক্রান্ত?”
“বড় বড় উপদেষ্টা ও কর্মীদের ডোবাতে এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় উপরে আনতে সবাই চায়।মন্ত্রীর ব্যক্তিত্ব যদি তার পরিবারের লোক দ্বারা বিচার করা হয় তাহলে তো দেশ চলবে না।জনগণ তাকেই মন্ত্রী হিসেবে স্থান দিবে যাকে তাদের প্রয়োজন।এই শাহমীর রাজ সবার প্রয়োজন মেটানোর মত কাজটাই করে বাবা।তাই আমাকে ডোবানো এতটা সহজ না।”
রাজের কথার মাঝে আছে নিজের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস।এই কয়েক বছরে সে যে পরিশ্রম করেছে তাতে নব্বই পার্সেন্ট জনগণ তার ভক্ত।জনগণের জন্য যেটা সঠিক সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ।কখনও অধিক টাকার বিনিময়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি।মাহমুদ সরদার তার ছেলের এই কাজগুলোকে মনে প্রাণে সম্মান করে।রাজ সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলে,”তোমার বউমার চক্রান্তে তুমিও পা দিলে বাবা।বিয়ে করেছি কাল রাতটাও ঠিকভাবে যেতে পারল না তোমরা একেকজন যেনো আমার বৈবাহিক সম্পর্কের বাধা।তোমাদের কি ক্ষতি করেছি যে আমার বিবাহিত জীবন সুখের করতে দিচ্ছো না?”
মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ৬
মাহমুদ সরদার পারলে তো এখানেই সিঁড়ি থেকে এক লাথি মেরে রাজকে ফেলিয়ে দিতেন।কিন্তু রাজের কিছু হলে মন্ত্রীর খুনের কেচে তাকেই ফাসতে হবে।সবথেকে লজ্জাজনক ব্যাপার হবে ছেলেকে খুনটা করেছেন কারণ ছেলে তার লাগামহীন।এটা যদি খবরের কাগজে ছাপানো হয় মান সম্মান আর কিছু থাকে না।কেমন দেখা যায় যদি কাগজের পাতায় লেখা থাকে শ্রদ্ধেয় মন্ত্রী শাহমীর রাজ লাগামহীন হওয়ার কারণে তার শ্রদ্ধেয় পিতা তাকে উষ্টা মেরে সিঁড়ি থেকে ফেলে খুন করেছেন।
