মি মাফিয়া পর্ব ২৫
সুমাইয়া সাবিহা
আরিয়া ভয়ে কাপছে ,নিশ্চয়ই আজকে তার জিবনের শেষ দিন মেরেই ফেলবে একদম ,
আরিয়া : আ.. আমি থেকে কি করবো ? আমিও যাই বলে দুকদম সামনে রাখতেই আফরান আরিয়ার দিকে পা বাড়ায় ,আরিয়া দেখেই আ আ আ চিৎকার করে উপরে না উঠে ভো দৌড় বাগানে । আফরান আরিয়ার আচরনে ভ্যাবাচাকা খায় ,এ মেয়ে টা উদ্ভট একদম , ,ভেবেই নিজেও আরিয়ার পিছে ছোটে,
-দাড়া বলছি
আরিয়া:আমি দাড়াই আর আপনি আমায় মারুন আমি কি এতোই বোকা দাড়িয়ে দাড়িয়ে মার খাবো।
আয়শ ভেতর থেকে দেখছে এদের কাহিনি ,ঠোটের কোনে এক চিলতে হাসি জমে। ক্ষনিক পর সেও রুমে চলে যায় ।
আফরান: না দাড়ালে মার খাবে পরে বলে দিলাম ,দাড়াও বলছি ,এমনিতেও আমার সাথে পারবেনা ,
আরিয়া সুইমিংপুলের অপর প্রান্তে গিয়ে নিজ হাটু ধরে হাপাতে হাপাতে বললো,এখন দাড়ালেও মার খাবো, না দাড়ালেও পরে মার খাবো আর পরে মানে প্রতিদিনই আপনার হাতে মার খাই আপাতত আমার এখন মার খাওয়ার ইচ্ছে নেই বলে আবার আফরান কে দেখে নিয়ে দৌড়াতে লাগলো।
আফরান বুঝলো এই মেয়ে নিজে থেকে দাড়াবার নয় ,তাই এবার নিজের মতো করে দৌড়িয়ে আরিয়া কে পেছন থেকে দুহাতে ধরলো জড়িয়ে ,আরিয়া এই মুহুর্তে হাওয়ায় ভাসছে ,,আফরানের হাত দুটো আরিয়ার বুকের নিচে পেট বরাবর ,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আরিয়া:আ আ ছাড়ুন বলছি ,,
আফরান : এভাবে দৌড়ে পালিয়ে কতক্ষন লুকাবে নিজেকে?
আরিয়া: যতক্ষন পারবো ।
আফরান : কানের নিচে দিবো একটা ,বজ্জাত মেয়ে কথাকার ,সব সময় দুই লাইন বেশি না বুজলে হয়না
আরিয়া : আহ ব্যাথা পাচ্ছি তো পেটে ,ছাড়ুন না ,সত্যি বলছি কাটা জায়গায় ব্যাথা পাচ্ছি ।
আফরান আরিয়া কে এবার নিচে নামিয়ে নিজের দিকে ফিরায়,:
একদম ঠিক হয়েছে ,সাহস কিভাবে হয় এমন ভাবে শাড়ী পড়ে অন্য ছেলেকে দেখানোর ,
আরিয়া: সামিরা পরিয়ে দিয়েছিলো ,আমি কি জানি ।
আফরান: তা তোমার চোখ কি অন্ধ ছিলো তখন ? যে দেখোনি।
আরিয়া : আপনার কি হুম ,, আমি যেভাবে ইচ্ছা ঐভাবে পড়বো দরকার পরলে একদম কিছু না পরে থাকবো আপনার প্রবলেম কি ? আপনার তো অন্য কেউ আছে তাকে গিয়ে নিষেধ করুন।
আফরান: কিছু না পরে থাকলে অবশ্য আমার কিছু হবেনা কিন্তু তোমার অনেক কিছুই হবে ।
আরিয়া : ছিহ আপনি অনেক খারাপ ভাইয়া ।
আফরান: তোমার সাথে খারাপ থাকতে আমার কোনো প্রবলেম নেই
আরিয়া : আমাকে যেতে দিন নাহলে কিন্তু …
আফরান আরিয়ার কোমড় জড়িয়ে হেচকা টানে নিজের একদম কাছে এনে বললো ,,কিন্ত? কিন্তু কি?
আরিয়া কি যেনো একটু ভেবে আফরানের হাত টা কোমড় থেকে নিজের কাছে এনে বললো ,নাহলে কিন্তু….বলেই এক ধাক্কায় আফরান কে পানিতে ফেলে দিয়ে হাসতে লাগলো ,
আফরান মুখ থেকে হাত দিয়ে পানি সরিয়ে বললো ,এটা কি করলে তুমি?
মার খাবার শখ হয়েছে আবার?
আরিয়া : আগে নিজে ফ্রেশ হয়ে এসুন পরে নাহয় মারবেন আমি গেলাম । বলে আরিয়া হাসতে হাসতে হাটতে লাগলো ,
আফরান: খুব হাসি পাচ্ছেনা?
আরিয়া: কেনো পাবেনা? আপনাকে এভাবে ফেলে আমি যে কতো শান্তি পাচ্ছি কিভাবে বুঝাবো, হায়🥱 ,,বলে আবারো খিলখিল করে হাসতে লাগলো।
আফরান এবার একদম সাইডে এসে আরিয়ার এক হাত ধরে বললো ,,এবার কি হবে বলো ?
আরিয়া: আহ কি করছেন ,ছাড়ুন বলছি ।
আফরান: কেনো? আমাকে ভিজিয়ে নিজে এভাবে থাকবে আর আমি সেটা দেখবো? বলে আরিয়া কে এক টানে পানিতে ফেলে দিলো ।
আরিয়া : ছিহ কি করেছেন হ্যা? আমার জ্বর উঠবেনা? এই সন্ধা বেলা পানিতে ফেলেছেন।আমি চাচাকে বলে দিবো দেখবেন।এ্যা এ্যা ..ন্যাকা কান্না জুড়ে দিলো আরিয়া।
আফরান : আরে হচ্ছে টা কি? তুমিও তো আমায় ফেললে আমি কি তোমার মতো এমন কান্না জুড়েছি?
আরিয়া: উম পিঠে কোমড়ে পায়ে ঠান্ডা পানি লাগছে কাটা জায়গা গুলো জলছে ,আপনি অনেক পচা ভাইয়া ,বলে অভীমানী ভঙ্গিতে অন্য দিক ফিরলো।
আফরান আরিয়ার পিঠের উপর থেকে আলতো হাতে চুল গুলো সরিয়ে কাটা জায়গায় হাত রখলো , আরিয়া ব্যাথায় কেপে উঠলো নাকি কারো ছুয়ায় সেটা বুঝা গেলো না।
আফরান: খুব জলছে ?
আরিয়া:হুম, (ন্যাকা কন্ঠে বললো)
আফরান:ঠিক আছে ওষুধ লাগিয়ে দিবো ,
আরিয়া: লাগবেনা ,
আফরান মৃদু হেসে আরিয়াকে নিজের দিকে ফিরানোর চেষ্টা করলো আরিয়া ফিরলো না,তাই নিজেই আরিয়ার সমনে গিয়ে বললো,রাগ করেছো?
আরিয়া:উহুম
আফরান:অভিমান করেছো?
আরিয়া কথা বললো না।
আফরান আবারো হেসে আরিয়ার বাহু ধরে নিজের বুকে আরিয়ার মাথা রেখে এক হাত মাথায় অন্য হাতে জড়িয়ে ধরলো।
আরিয়া কোনো শব্দ করলো না হয়তো এখানেই তার সব ব্যাথার প্রশান্তি ।
আফরান: আর ব্যাথা দেবো না ,তুমি শুধু আমার কথা শুনো দেখবে সব ঠিক থাকবে ।
আরিয়া কোনো কথা বললো না ।
আফরান : কোনো কিছু হলে প্রথমে আমাকে জানাবে ,তারপর আমার উত্তর শুনে যদি কোনো ডাউট থাকে আমাকে সেটাও বলবে, শুধু শুধু ভূল বুঝে লাভ আছে? তাহলে উল্টা পাল্টা চিন্তা বাদ দাও ,,
আরিয়া কিছু বলছে না
আফরান আড়িয়াকে ছেড়ে। আফরান একটু ঝুকে আরিয়া কে বললো ,কি বলেছি বুজেছো?
আরিয়া : আমার ঠান্ডা লাগছে আমি উঠবো ।
আফরান: ঠিক আছে যাও
আরিয়ার সাথে আফরান ও পানি থেকে উঠলো ,,
আফরানের গায়ে শাদা শার্ট থাকায় ভিজে শরীরের গঠন আকৃতি সব টা বুঝা যাচ্ছে ।
আরিয়াও পাতলা শাড়ী পড়নে থাকায় সব টা শরীরের সাথে লেপ্টে আছে । নাভী থেকে পেট পিঠ কোমরের কিছু অংশ সব কিছু দৃশ্যমান।
আফরান খেয়াল করে কপাল কুচকায় ,আরিরা দু কদম সামনে যেতেই আফরান আরিয়া কে দুহাত উল্টে কোলে তুলে নিয়ে বলে ,আর কখনো যেনো এমন শাড়ী পরতে না দেখি।
আরিয়া: কেন? আমার তো পাতলা সিল্কী শাড়ী পছন্দ ।
আফরান : পড়ার ইচ্ছে হলে আমার রুমে আমার সামনে বসে পড়ে থাকবে সারাদিন কিন্তু এমন শাড়ি পরে বাইরে আসতে যেনো না দেখি
আরিয়া:কেনো? আপনার সামনে কেনো পরবো শুধু?
আফরান:তোমাকে এমন ভাবে দেখার অধিকার টা শুধু আমার আছে কার কারো নেই আরু,
আরিয়া: কেমন ভাবে?
আফরান: এখন একটা কানের নিচে থাপ্পড় পড়লে বুঝে যাবে কেমন ভাবে ।
আরিয়া লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে আফরানের বুকে মুখ গুজে।
আফরান : তোমাকে এভাবে আমি ভেতরে নিয়ে যেতে পারবোনা ,,আমার তোমাকে এখন থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে হচ্ছে,(ধমকিয়ে)
আরিয়া: আমার দোষ নাকি আপনি তো আমায় পানিতে ফেল্লেন
আফরান:আমি কি জানতাম নাকি এমন হবে।
আরিয়া : ভালো,,এখন আপনি নিয়ে যাবেন ভেতরে ।
আফরান বিরক্তি মূখ নিয়ে হাটা ধরে । গেইটের সামনে গিয়ে একবার দেখে নেয় কেউ আছে কিনা ড্রয়িংরুমে। কেউ না থাকায় স্বস্থীর নিশ্বাস ছাড়ে।
আরিয়া কে নিয়ে নিজের রুমে দিয়ে বলে ,চেন্জ করে নাও ।
আরিয়াও বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নেড়ে শায় দেয় ।
আফরান নিজের রুমে চলে যায়।
আয়শ সোফায় চোখ বন্ধ করে হাতের উপর মাথা রেকে শুয়ে আছে
সামিরা: একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
আয়শ কোনো কথা বললো না।
সামিরা : ভাইয়া কি এমন ছবি দেখিয়ে ব্লেকমেইল করেছিলো আপনাকে?
আয়শ এতেও কোনো উত্তর দিলো না
সামিরা: একটু কথা তো বলতে পারেন? আমি এই বাড়িতে এতো দিন আছি কখনো একটু ভালোভাবে কথা বললে কি হয় ?
আমি তো শুধু একটু কারন টা জানতে চাইলাম । বলুন না।
আয়শ: জেনে কি করবে?
সামিরা : এমনি জানতে চাইলাম ,,কি এমন ছবি ছিলো যে ,বিয়ে করতে বাধ্য হলেন ।
আয়শ :চুপ থাকো ভালো লাগছে না।
সামিরা : আমি তো আগেই জানতাম আফরান ভাইয়া যাই করুক নিজের ফ্যামিলি তার কাছে সবার আগে ।
আয়শ: বললাম তো চুপ থাকো
সামিরা: ওকে ,
একটু চুপ থেকে সামিরা আবার বললো ,আরেকটা কথা বলতাম,
আমি কলেজ যাবো কাল থেকে
আয়শ: বলার কি আছে
সামিরা : শুনেছি সব কিছুতে স্বামীর পারমিশন লাগে।
আয়শ: একদম বাজে কথা বলবেনা ,কখনো ওয়াইফের চোখে দেখিনি ,আর কখনো হবেও না ,শুনে রাখো তুমি স্বাধীন ,নিজের মতো চলতে পারো ,আগে যেমন চলতে এমন চলতে পারো ।আমাকে কখনো জিজ্ঞেস করবেনা কিছু।
সামিরা আয়শের কথা গুলোতে বোধয় কষ্ট পেলো।কিন্তু সহ্য করে নিলো।
খাবার টেবিলে সবাই বসে চুপচাপ খাচ্ছে কারো মুখে কোনো কথা নেই ,,
রহিমা বেগম নিরবতা কাটিয়ে বললেন: ভাই সাব অনুমতি পেলে একটা কথা বলতাম
জাফর : অনুমতির কি আছে বলো
রহিমা : যাওয়ার সময় আমরা আমাদের মেয়েকে নিয়ে যেতে চাই
জাফর এর উত্তর কি দেবেন তার জানা নেই ,,যেকোনো মা বাবাই এমন পরিস্থিতে তার মেয়েকে অবশ্যই রেখে যেতে চাইবে না।
খলিল : হুম ভাইজান,আমিও এবার বলছি আমার মেয়েকে নিয়ে যেতে চাই।
জাফর: আমি কি বলবো ,আমার তো নিজের মেয়ে না যে চাইলেই আটকাতে পারবো ,তবে আমি চাই তোমরা আরিয়া কে জিজ্ঞেস করে দেখে নাও আগে।
রহিমা: আরিয়া যাবেনা?
আরিয়া কি বলবে বুজতে পারছেনা ,কিভাবে বলবে সে যেতে চায়না তার মি,মাফিয়ার কাছে থাকতে চায় ।
-মা আমি এক্সাম টা আগে শেষ করি?
খলিল: আমি তো ভূলেই গিয়েছিলাম ,ঠিক আছে তুমি এক্সাম টা দিয়ে নাও ,,তবে তুমি ঐ আফরানের আশে পাশে কখনো যাবেনা। সেই থেকে আর কতো অত্যাচারিত হবে তার কাছে? আজ তো নিজের চোখেই দেখলাম কেমন পাষন্ড মন তার,,কিভাবে তোমার উপর ছুরি ছালালো।
জাফর সাহেবের বোধয় খলিল সাহেবের কথায় খারাপ লাগলো কিন্তু আগ বাড়িয়ে কিছু বললো না কি বা বলবে যেটা দেখেছে সেটাই তো সত্য।
আরিয়া: বাবা তোমরা ভূল বুজছো ,আসলে ভাইয়া এমন নয়
রহিমা : সেটা আমরা নিজেই দেখলাম এতো বছর শুনে এসেছি আজ তো দেখলাম কি বলবে আর?
আরিয়া ব্যর্থ প্রকাশ করলো মায়ের কথায়, বুঝাবার মতো কিছু নেই তার হাতে।
আয়শ:এমন ও তো হতে পারে কাকীমা আমরা মূলতো যেমন টা দেখি তেমন টা না
রহিমা: কি বুঝাতে চাইছো আয়শ তুমি?
আয়শ : সরি কাকিমা ,কথার সাথে সাথে বলা উচিৎ হয়নি ।
রহিমা :ঠিক আছে কিন্তু তুমি কি বুঝাতে চাইলে সেটা বলো ।
আরিয়া: হুম ভাইয়া বলো না ,কখনো মানুষ যা দেখে সেটা সত্যি নয় পেছনেও অনেক কিছু হয়।
আরিয়ার কথায় আয়শ হাসি লুকাবার চেষ্টা করে বললো ,আসলে কাকীমা তেমন কিছুনা । ধরো এমন ও তো হতে পারে আফরান আরায়াকে এতো মারধোর করে এর পেছনে কোনো কারন আছে ,,কারন ছাড়া কেনো মারবে কেউ কাউকে? আরিয়া নিশ্চয়ই কোনো অন্যায় করে । তাইনা?
আয়শের কথায় আরিয়া ভ্যাবাচাকা খায় ,কি বলতে বললো আর কি বললো এই ভাইয়া ,,এভাবে কেউ ফাসাতে পারে কাউকে ।
রহিমা কিছু বলতে যাবে তার আগেই জাফর বললো ,আজ এতো ভাইয়ার পক্ষ পাতিত্ব করছো যে?
আয়শ: যেটা ঠিক সেটাই বললাম ।
জাফর: তোমার ভাই কেমন সেটা আমাদের সবার জানা আছে।
আয়শ: জানা থাকলেই ভালো ,বলে মুখে খাবার তুললো।
সামিরা খেতে খেতে বললো ,তা আরিয়া তোর গলার নিচে কাটা জায়গায় ওয়ানটাইম দেওয়া তার মানে যেখানে যেখানে কাটা জায়গা আছে মানে কোমরে পিঠে পায়ে সব জায়গায় ওয়ান টাইম বাধা তাইনা?
আরিয়া না ভেবেই উত্তর দেয় ,হুম
সামিরা: তা এই সেবা টুকু কে করে দিয়েছে ?
আরিয়া সামিরার কথা শুনে কাশতে লাগলো ,,আয়শ আরিয়া কে এক গ্লাস পানি দিয়ে বললো ,এসব মুহুর্তে সবারই কাশি পায় ।
আরিয়া ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলো।
রহিমা: হা রে মা আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম এসবের মধ্যে ,
কে এমন করে মনে রেখে তোকে এগুলো করে দিলো।
আরিয়া: মা আসলে কেউ করেনি তো । ঐ আর কি
সামিরা : গুছিয়ে বল ,কেউ তো অবশ্যই করে দিয়েছে ,নিজে থেকে তো কখনো এসব করবি বলে মনে হয়না।
আরিয়া : আসলে হয়েছে কি …
কথার রেশ টেনে কেউ বলে উঠলো ,,কারো কথার উত্তর দিতে তোকে বাধ্য করেছি আমি?
আরিয়া হাতের খাবার টা প্লেটে রেখে চোখ খিচে হতাশ হয়ে আস্তে করে নিজেই বললো ,যখন তখন যেখানে সেখানে আমার কথার রেশ না টানলে উনার হয় না 😮💨(নিম্ন আওয়াজে)
সবাই পেছনে তাকিয়ে আফরান কে দেখে নিলো
জাফর বললো ,তোমার কি কাজ নেই ? ওর পেছনে লাগা ছাড়া
আফরান: আমি কার পিছে লাগবো কার পিছে লাগবোনা আমার ব্যাপার ,কারো সহ্য না হলে সে শুনবেনা বা দেখবেনা সেটার তার ইচ্ছা।
জাফর : তোমার সাহস দেখে অবাক হই ,এতো গুলো মানুষের সামনে কিভাবে কথা বলতে হয় জানা নেই তোমার
আফরান: কারো জন্য নিজের ক্যারেক্টর পাল্টানোর অভ্যেস আমার নেই।
বলে আরিয়ার পাশের খালি চেয়ার টা টেনে বসলো ।
জাফর : আজ কি একসাথে খাবে ?
আফরান: তা বসেছি কি কারা কারা খাচ্ছে সেটা দেখার জন্য?
আফরানের কথায় জাফর থতমত খেয়ে যায়।
আয়শ মুচকি হাসে । আজ আফরানের উপর তার বিন্দু মাত্র রাগ বা অভিযোগ নেই ,মনে হচ্ছে আফরানই ঠিক সব কিছুতে ।
লতা কাপা কন্ঠে বলে ,স্যার কি খাবেন?
আফরান : আমার জন্য কি এখন আলাদা খাবার বানানোর সময় আছে?
লতা না মানে আফনে কি খান কিছুই তো জানিনা
লতার মুখে শুদ্ধ অসুদ্ধ শুনে সামিরা মিটিমিটি হাসছে।
আফরান: সবাই যা খাচ্ছে তাই দাও কিন্তু নতুন প্লেট দেবে ,,
লতা : আইচ্ছা স্যার এখনি আনতাছি । বলে লতা চলে গেলো
সবাই খাচ্ছে আফরান আসার পর কেউ কোনো কথা বাড়ায়নি ।আরিয়া দ্রুত খানা শেষ করে উঠে যেতে নিলেই আফরান বলে উঠে ,খাওয়া শেষ?
আরিয়া: হ্যা এইতো কমপ্লেট, বলে চেয়ার সরিয়ে যেতে নিলেই আফরান আরিয়া কে বাম হাতে হেচকা টানে নিজের উরুর উপর বসিয়ে দেয় ,।
আরিয়া কাপছে ,লোকটা কি পাগল নাকি ? মা বাবা চাচাজান আয়শ ভাইয়া সবাই আছে এখানে দেখছে না নাকি ?আজব তো ।(মনে মনে)মুখে আরিয়ার বিরক্তির আভা ।
আকস্মিক এমন হওয়ায় সবাই হা হয়ে তাকিয়ে থাকে ,,সামিরা আয়শ এদের কাহিনি দেকে মিটিমিটি হাসতে থাকে ।
আফরান কারো দিকে না তাকিয়েই আরিয়া কে উরুতে বসিয়ে বাম হাতে জড়িয়ে ধরে রাখে ।
আরিয়া এই মুহুর্তে কিছু বলতেও পারছে না বসে থাকতেও পারছে না । কি করবে সেটাও বুজতে পারছে না।
জাফর কেশে উঠে আয়শ পানি দেয় ,পানি খেয়ে নিজের খাবারের দিকে তাকিয়ে আফরান কে ধমকিয়ে বলে ,আফরান হচ্ছে টা কি এখানে? বড়দের কে চোখে পড়ছেনা?
আফরান: তুমি কি বলতে চাচ্ছো যে,পারসোনাল ভাবে এসব হতে?
আফরানের কথায় রহিমা বেগম ,খলিল সাহেব কাশতে থাকে বিরক্ত আভা তাদের চেহারায় ।
জাফর কপাল কুচকে এবার আফরানের দিকে তাকিয়ে বলে,লজ্জার ছিটেফুটাও আছে কিনা তোমার সন্দেহ আছে । আরিয়া কে ছাড়ো বলছি ,,এটা কেমন অভদ্রতামি ?
আফরান কোনো কথা বললো না ,ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাচ্ছে, ।
রহিমা বেগম: ভাই সাহেব এসব কি হচ্ছে এখানে ? আমার মেয়ের কি মান সম্মান টুকুও আমরা পাবোনা ? সম্মান নিয়ে কেমন মজা এসব?
জাফর কি বলবেন বুজতে পারছেন না
আফরান: এখানে সম্মান অসম্মানের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?
আমি কি আপনার মেয়ে কে রেপ করে ছেড়ে দিয়েছি?
আফরানের এমন দিধা ছাড়া কথায় এবার আয়শ সামিরা দুইজনেই কেশে উঠে ।
জাফর সাহেব এবার খাবার অফ করে দিয়ে উঠে দাড়িয়ে বললেন , আরিয়া কে তোমরা তোমাদের সঙ্গেই নিয়ে যেও আমি পরিক্ষার ব্যাবস্থা করে দিবো।বলে জায়গা ছাড়ার জন্য পা বাড়ালে আফরান বললো ,এমনি এমনি টেবিলে বসিনি ,কিছু কথা সবার জানা দরকার । কেউ না চাইলে না শুনতেই পারে ।
মি মাফিয়া পর্ব ২৪
জাফর : কি বলার মতো আরো কিছু আছে তোমার ?
আফরান: খাবার শেষ করে নেই । শুনার হলে ওয়েট করো ।
জাফর: নিজেকে কি ভাবো তুমি আফরান?