মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ২

মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ২
মির্জা সূচনা

মেহরিন হঠাৎই হুঁশ ফিরে পায়।
কথা বলা, চোখে চোখ রাখা—সবটাই যেন হয়ে গেছে নিজের অজান্তে।
মনের এক কোণায় ঝড় উঠল।
“আমি এটা করলাম কীভাবে? ও তো আমার সিনিয়র! যদি রেগে যায়?!”
এত খনে চুমকি এসে দারাই মেহরিনের পাশে!
মুহূর্তেই বুক ধকধক করতে লাগল তার।
চোখ বড় বড় করে চুমকির দিকে তাকিয়ে বলে,
“চুমকি রে , আমি এটা কী করলাম রে?! যদি ও আমাকে কিছু বলে?!”
চুমকি এবার ঠোঁট চেপে হাসে—
“তোকে কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু যদি থাপ্পড় মারে, তখন আমি ভিডিও করে রাখব!”
মেহরিন কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,
“ধুর বা*ল! এটা নিয়ে মজা করিস না! আমি সিরিয়াস… ওর মুখের ভাব দেখলি না? দেখেই মনে হচ্ছে আস্তা খবিশ ”

মানলাম দেখতে একটু ভালে তাই বলে এমন করতে হবে! আমি এত কিউট একটা বাচ্চা নাহয় ভুলে আর এই বজ্জাত খবিশ সিনিয়রদের পাল্লায় পড়ে বলেই ফেলছি তাই বলে এমন লুক দিবে, শালা খবিশ, দেখে মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই আমাকে খেয়ে করে ফেলবে!?
চুমকি একটু গম্ভীর হয়ে যায়।
“আচ্ছা আচ্ছা, দ্যাখ, আমি পাশে আছি। কিছু বললে আমিই মুখের উপর জবাব দিব।
তুই ভয়ের কিছু দেখিস না।”
কিন্তু মেহরিনের মনে তখনো ঝড় বইছে।
সে চুপচাপ পেছনে তাকিয়ে দেখে—
রিদ তখনো কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে, মুখে অদ্ভুত এক অভিব্যক্তি।
ভয়, লজ্জা আর কৌতূহলের এক মিশ্র অনুভব নিয়ে মেহরিন চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটা শুরু করে।
তার মনে তখন একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“সে কি কিছু বলবে?
না কি চুপচাপ নিজের মতো করে হারিয়ে যাবে, ঠিক যেমনভাবে এসেছিল?
মেহরিন আর চুমকি কথা বলতেছিলো,
পেছন থেকে সেই ভারী, গভীর গলা—
“এই মেয়ে, নাম কী তোমার?”
চুমকি আঁতকে ওঠে, মেহরিন যেন জমে যায়।
ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায়, গলা শুকিয়ে এসেছে।
রিদ তালুকদার তখনো তাকিয়ে আছে—চোখে কোনো অনুভূতি নেই, কেবল একধরনের বিরক্তি।
“সিনিয়রের দিকে এভাবে তাকিয়ে কথা বলার সাহস কোথা থেকে পেলো?”
তার কণ্ঠে ছিল না উচ্চস্বরে রাগ, কিন্তু ঠান্ডা সেই রুক্ষ ভঙ্গিটাই গা শিউরে উঠবার মতো।
মেহরিন কিছু বলতে চায়, কিন্তু শব্দ আটকে যায় গলায়।
চুমকি একটু এগিয়ে এসে বলল—

“ভাইয়া, ও ইচ্ছে করে এমন তো করেনি সিনিয়ররা আমাদের র*্যাগ দিচ্ছিল ও বুঝতে পারেনি—”
রিদ কটমট করে চুমকির দিকে তাকায়—
“তুমি না বললেও চলবে। যার ভুল, সে বলুক।”
মেহরিন চোখ নামিয়ে ফিসফিস করে বলে,
“সরি…”
রিদ ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“সরি বলে সব ঠিক হয়ে যায় না। নিজের সীমা বোঝা শিখো।”
তারপর আর এক মুহূর্ত দাঁড়ায় না—চলে যেতে নেয় নিজের পথে, গম্ভীর সেই ভঙ্গিতে।
মেহরিন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
চুমকি আস্তে করে বলে,

“রিদ ভাইয়া যদি না হতো এমন চমৎকার দেখতে… তাহলে আমি তোকে এখনই টেনে নিয়ে যেতাম!”
মেহরিন তবুও চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
তার চোখে যেন অজানা এক ভয়, আর খানিকটা… কৌতূহল?
রিদ তালুকদার ঘুরে চলে যাচ্ছিল।
ঠিক তখনই— মেহরিন , চোখে একরাশ রাগ নিয়ে বলে উঠে।
“এই যে মিস্টার!”
তার গলা কাঁপছিল না, ছিল দৃঢ় আর জোরালো।
রিদ থেমে দাঁড়ায়। আস্তে ঘুরে তাকায় মেহরিনের দিকে—
চোখে অবাক, আর একটা অসহিষ্ণু আগুন।
“আমাকে সীমা না শিখিয়ে, ওদের বলুন জুনিয়রদের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয়!”
মেহরিনের আঙুল তর্জনীর মতো তুলে ইশারা করে পাশ থেকে সিনিয়রদের গ্রুপটার দিকে।
চারপাশে একটা নিঃস্তব্ধতা।
রিদ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। তারপর ঠোঁটের কোণে একরকম বাঁকা হাসি খেলে যায়।

“ছোটো মুখে বড় কথা বলো”
সে ঠান্ডা গলায় বলল,
“এখানকার নিয়ম– বেয়াদবিতে কাউকে ছাড় দেয়া হয় না।”
মেহরিন এবার আর চুপ করল না।
“অথচ আপনি নিজেই এখন বেয়াদবির সংজ্ঞা দিয়ে গেলেন! সিনিয়র হওয়া মানে ছোটদের অপমান করার লাইসেন্স পাওয়া না!”
রিদ এক মুহূর্ত মেহরিনের চোখে চোখ রাখে।
চোখে সেই চিরচেনা শীতলতা, কিন্তু এবার তাতে যেন অদ্ভুত এক আগ্রহ।
“তোমার সাহস আছে। দেখি কতদিন থাকে।”
বলেই সে আবার ঘুরে চলে গেল—
কোনো শব্দ ছাড়াই, যেন কিছুই হয়নি।
চুমকি এতক্ষণ হাঁ করে তাকিয়ে ছিল।
তারপর ফিসফিস করে বলল—

“তুই তো ভাই… ঝড়!”
আর মেহরিন দাঁড়িয়ে থাকে, বুক ধকধক করতে করতে।
কিন্তু চোখে এবার ভয় না,
বরং… জেদ।
কি বলিস?
এখন রিদ কি সত্যিই বিরক্ত হয়ে গেল,
না কি মেয়েটার সেই জেদের চাহনি কিছু একটা ছুঁয়ে গেল ওর ভিতরেও?
রিদ তালুকদার ঘুরে যাচ্ছিল আবার।
পেছন থেকে মেহরিনের কণ্ঠ থেমে দিল তার পা।
“আমি সাহস দেখিয়েছি, কারণ আমি ভুল করিনি!”
তার গলা কাঁপছে না, চোখ দুটো টনটন করছে জেদে।
রিদ আবার ধীরে ঘুরে তাকায়।
সবার চোখ মেহরিনের দিকে।

“আপনার এত দেমাগ কিসের?”
মেহরিন নিঃশঙ্ক ভাবে এগিয়ে যায় কয়েক পা।
“আমি তো জাস্ট একটা সত্যি কথা বলছিলাম, ওরা সেটা শুনে ব্যঙ্গ করছিল— আমি রিদ তালুকদারকে ছন্দ শোনাতে যাইনি!” ওরা আমাকে বাধ্য করছে!?
তার চোখ দুটো এখন সরাসরি রিদের চোখে আটকানো।
“ওগুলো সব আমার রাজকুমারের জন্য ছিল, বুজলেন?
আপনাদের মতো গম্ভীর ‘আবেগের বাইরে থাকা’ মানুষদের জন্য না!”
রিদ থমকে যায়। এমন প্রত্যুত্তরের অভ্যাস নেই তার।
চারপাশে নিস্তব্ধতা— যেন সবাই নিঃশ্বাস বন্ধ করে আছে।
তার ঠোঁটে আবার সেই অদ্ভুত এক মুচকি হাসি।
“তাহলে সেই রাজকুমারকে সাবধানে রেখো।
এই পৃথিবীটা ছন্দে বা আবেগে চলে না, বাস্তবতার সাথে চলে।”
বলেই সে ফিরে যায়।
চুমকি হাঁ করে তাকিয়ে বলে,

“তুই কি এইমাত্র তালুকদার ভাইকে…!”
মেহরিন ধপ করে বসে পড়ে ঘাসে, নিঃশ্বাস ছেড়ে ফিসফিস করে বলে—
“আমি… কি করলাম রে?”
কি বলিস?
এবার রিদ কি একটু হলেও মুগ্ধ হল?
নাকি ওর মাথায় এখনো শুধু বিরক্তি?
আর মেহরিন… ও কি এবার একটু ভয় পেল, না আরো বেশি করে দাঁতে দাঁত চেপে লড়বে?
চারপাশের গুঞ্জন ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে।
রিদ তালুকদার হেঁটে যাচ্ছে ধীর পায়ে, মাথা একটু নিচু।
চুমকি মৃদু স্বরে বলে,

“তুই কি একটু বেশিই বলে ফেললি?”
কিন্তু মেহরিনের কান তখন আর কিছু শুনছে না—
ওর চোখ আটকে আছে রিদের চলে যাওয়া পথে।
ঠিক তখনই রিদ থামে।
সে একটুও ঘাড় না ঘুরিয়ে, নিজের সামনে তাকিয়েই বলে—
“রাজকুমার… ইন্টারেস্টিং তো।”
শব্দটা হাওয়ায় ভেসে আসে।
না চড়া গলায়, না একেবারে ফিসফিস—

একটা মধ্যবর্তী টোন, যেটা ঠিক মেহরিনের হৃদয়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়।
তারপর রিদ আবার হাঁটা ধরে, আর কিছু না বলে।
মেহরিন স্থির। চোখে ঝলক ধরে রাখা যায় না,
চুমকি পাশে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে,
“যাই বলিস … রিদ ভাইয়া কে দেখতে কিন্তু রাজকুমারের মতোই?”
মেহরিন কিছু বলে না।
কিন্তু মনে মনে, খুব আলতো করে হাসে—
এবার ছন্দটা যেন একটু জোরে বাজে তার বুকের ভেতর।
কি বলিস?
কিছুখন পর
মেহেরিন উঠে বলে চল ক্লাসে যাই!

ধীরে ধীরে হাঁটা ধরে—
চুমকি পাশে পা মেলায়, কিন্তু এবার দুজনেই চুপচাপ।
চারপাশে যেন হঠাৎ করেই শব্দ কমে গেছে।
না কোনো পাখির ডাক, না কারো হাসি—
শুধু ভেতরের এক অজানা অনুভূতির গুঞ্জন।
দুজন চলে যায়—
যে যার গন্তব্যে।
কিন্তু পেছনে রয়ে যায় কয়েকটা না বলা কথা,
একটা ছোট্ট ছন্দ, আর এক ঝলক চাহনি
যেটা কেউ চোখে দেখেনি, কিন্তু মনের আয়নায় গেঁথে গেছে।
ওরা ক্লাসে যাওয়ার পর স্যার আসে,!
পরিচয়পর্ব শেষ হতেই স্যার মুচকি হেসে বলেন,
“আজ আর ক্লাস নেই, তোমরা ঘুরে দেখো ক্যাম্পাস, আর ঘরে ফিরে একটু বিশ্রাম নাও—কাল থেকে নিয়মিত ক্লাস হবে।”

মেহরিন একটু হালকা শ্বাস ফেলে।
চুমকি বলে,
“এই তো, ভার্সিটির প্রথম ক্লাস করেই ফেললাম রে!”
দুজনেই ইউনিভার্সিটির গেট দিয়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে।
রোদটা ততক্ষণে একটু চড়েছে, তবু মনটা একদম ঝকঝকে।
রিকশায় বসে মেহরিন বারবার চোখ বুজে সকালে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মনে করার চেষ্টা করে।
রিদের মুখটা আবার ভেসে ওঠে চোখে।
চুমকি পাশ থেকে বলে,

“কী রে, আবার রাজকুমার ভাবছিস?”
মেহরিন হেসে বলে,
“পাগল! তুই এত বাজে ভাবিস কিভাবে?”
তবু মনে মনে একটু চুপ করে থাকে।
রিকশা চলতে থাকে,
আর নতুন জীবন, নতুন গল্পের প্রথম দিনটা মনে গেঁথে যায়।
ওরা বাড়ি ফিরে যায়—হৃদয়ের মধ্যে একটু শোরগোল, আর চোখে-মনে একরাশ নতুন ভাবনার ছায়া নিয়ে।
মেহরিন দরজার কলিং বেল বাজাতেই ভেতর থেকে মেহবুবার গলা ভেসে আসে—
“আসতেছি!”
দরজা খুলে দেয় মেহবুবা, মেহরিনের ছোট বোন।
চোখে মায়া, মুখে হাসি, আর হাতে একটা চকলেট আইসক্রিম।
ভেতরে ঢুকেই মেহরিন দেখে—
টিভিতে চলছে দেবদাস মভি চলছে, মেহরিন বুঝে মেহবুবা সিনেমা আর আইসক্রিম—দুটোই উপভোগ করছিলো ।
মেহরিন জুতো খুলে ফ্রেশ হতে যাবার আগে জিজ্ঞেস করে,

“আম্মু কই?”
মেহবুবা বলে,
“ঘুমায়। দুপুরে মাথাব্যথা হইছিল… ঘুমাইছে এখনো।”
মেহরিন ঘরের মধ্যে হালকা একটা প্রশান্তি টের পায়।
বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নতুন উত্তেজনা, সিনিয়রদের কড়া মুখ, ছন্দ, রাজকুমার—সব মিলিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, সেটা যেন একটু শান্ত হয়ে আসে এই চেনা পরিবেশে ফিরে।
ও ধীরে ধীরে নিজের রুমে চলে যায়,
ব্যাগটা নামিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে।
চোখের সামনে আবারও ভেসে ওঠে সেই একজোড়া চোখ—
রিদ তালুকদার।
চোখের সামনে ভেসে উঠতেই সেই মুখ…

গম্ভীর, , আত্মবিশ্বাসী একজোড়া চোখ।
মেহরিন সাথে সাথে চোখ খুলে ফেলে।
“আউউউ! আমি আবার কেন সেই বজ্জাত, খবিশ, গোমড়া, রাগি, অহংকারী লোকটাকে মনে করছি?”
নিজের চুল নিজেরই টেনে ধরে বলে,
“রিদ তালুকদার! ছিঃ, ছিঃ, ছিঃ! এতটা রুচিহীন হলাম আমি?”
তারপর মনে মনে হাজার খানি গালি দিতে থাকে—
ওয়াশরুমে ঢুকতে ঢুকতে বিড়বিড় করতে থাকে
“এক নম্বর বদমেজাজি!”
“দুই নম্বর অহংকারী!”
“তিন নম্বর আবেগহীন!”
“চার নম্বর… হ্যাঁ, চার নম্বর আমার রাজকুমার না!”

এরপর আর দাঁড়ায় না।
পেটের মধ্যে তখন পুরো প্রাণী জগৎ বাসা বেঁধেছে।
ব্যাঙ লাফাচ্ছে, ইঁদুর দৌড়াচ্ছে, গুবরেপোকা যেন ড্রাম বাজাচ্ছে।
ও ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে,
মুখটা এমন ভাব—যেন সদ্য যুদ্ধে হেরে গেছে।
মেহবুবা তখনো টিভির সামনে, এবার সম্ভবত কোনো রোমান্টিক গানের সিন চলছে।
মেহরিন বলে,
“তুই কি সারাদিন প্রেমই দেখবি টিভিতে? একটু খাবার দিবি নাকি চাচ্ছিস আমি তোর আইসক্রিম কেড়ে খাই?”
মেহবুবা হেসে বলে,
“তুই তোর রাজকুমাররে নিয়েই ভাব, আমি আইসক্রিম নিয়েই সুখে আছি!”
মেহরিন চট করে বলে,
“তুইও গেছিস ওই লোকটার দলে? ফিনিশড!”

এরপর রাগে, ক্ষুধায়, আর হালকা অভিমানে ফ্রিজ খুলে খাবার খুঁজতে থাকে।
মেহেরিন খাবার টেবিলে বসে প্লেটে খাবার বাড়তে থাকে মেহবুবা অবাক চোখে তাকিয়ে বলে,
— “আমি আবার কার দলে গেলাম? কি বললি তুই? আবোল-তাবোল!”
মেহরিন তখন হাফাতে হাফাতে বলে,
— “তুই… তুই ওই রাগি খচ্চর রিদ তালুকদারের দলে… আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিস!”
মেহবুবা এবার একদম থেমে যায়।
আইসক্রিমের কাপটা মুখ থেকে নামিয়ে গম্ভীরভাবে বলে,
— “ কে এই রিদ তালুকদার ? তোর কী খিদেতে মাথা খারাপ হয়ে গেছে?”
মেহরিন এবার নিজেই থমকে যায়।
এক সেকেন্ড, দুই সেকেন্ড…
তারপর ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,

— “উফ্! আমি আসলেই গুলিয়ে ফেলছি সব কিছু… এই রাগ, এই খিদে, আর সেই বদমেজাজি লোকটা! মাথার ভেতরে কেমন জানি হইচই লাগিয়ে রেখেছে।”
মেহবুবা হেসে বলে,
— “তোর রাজকুমার তো বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়!”
— “চুপ কর! রাজকুমার না, উনি তো রাক্ষসের দাদা!” — মেহরিন রেগে বলে।
তারপর দু’জনে একসাথে হেসে ফেলে।
মেহবুবা ঠোঁট কামড়ে হাসি চেপে বলে,
— “আচ্ছা, এই রিদ তালুকদারটা আবার কে? তুই কি কারো সাথে ঝগড়া করে আসছিস? হায় রে! তুই প্রথম দিনেই ঝগড়া করে ফিরলি! এখন বুঝি বোঝা যাচ্ছে তুই কাকে পেয়েছিস— আমাকেই!”
মেহরিন এবার রাগে গাল ফুলিয়ে বসে পড়ে সোফার কোণে।
— “আমি কিছু করিনি! ওরা আগে… মানে, ওই সিনিয়ররা আগে ছেলেখেলা শুরু করেছে… আমি তো জাস্ট নিজেকে ডিফেন্ড করছিলাম!”

মেহবুবা এবার সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলে,
— “তাই নাকি? তাইলে এই ‘রাজকুমার’, ‘গম্ভীর’, ‘রিদ’ এসব নাম কোথা থেকে আসলো?”
মেহরিন মুখ ঘুরিয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় ফিসফিস করে বলে,
— “রাজকুমার বলছিল ও… মানে ও বলেছিল, ‘রাজকুমার ইন্টারেস্টিং’…”
মেহবুবা এবার আর থামতে পারে না, হেসে গড়িয়ে পড়ে।
— “বাহ! তো তুই এবার প্রিন্সেস!”
মেহরিন চোখ গোল করে বলে,
— “তোরে আর কখনো কিছু বলব না আমি!”
তবু মনে মনে একটা চিনচিনে অনুভূতি ওর বুকের ভেতর খেলে যায়…
“আসলেই, ও কি আমাকে মনে রাখবে?”
মেহরিন এখন নিজেই নিজের উপর বেশ “রেগে” যাচ্ছে!
নিজেই নিজের গাল ফুলিয়ে বলে,

— “উফ্! আমি কেন এত ভাবছি ওই বজ্জাত লোকটাকে নিয়ে? মনে রাখুক বা না রাখুক, তাতে আমার কিছু যায় আসে না! আমি তো শুধু চাই আমার স্বপ্নের রাজকুমারকে… যে চুপচাপ আসবে… আর বলবে— ‘চলো, আমি তোমার জন্য এসেছি।’”
একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মেহরিন উঠে দাঁড়ায়।
— “রিদ তালুকদার! তোমার মতো রাগি লোক স্বপ্নের রাজকুমার হয় না… কখনো না!”
কিন্তু… মনে মনেই যেন একটা গলা ফিসফিস করে বলে ওঠে,
“তবু তোমার সেই চোখ… সেই ঠান্ডা গলা… কেন জানি আজও কানে বাজে।”
মেহরিন রাগে গাল ফুলিয়ে বলে,
— “উফফ্! আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি?”
তারপর তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে ঢুকে পড়ে।

স্বপ্নের রাজকুমার থাকুক স্বপ্নেই… রিদ তালুকদার যেন ভুলেও না আসে আর!
এগুলো ভাবতে ভাবতে মেহরিন ভাত ঘুম দেয়!
তালুকদার পরিবার—একটা নাম, একটা রেওয়াজ। শহরের ব্যবসায়ী সমাজে যাদের নাম
মানেই শ্রদ্ধা আর প্রভাব।
এই পরিবারের কর্ণধার রেদওয়ান তালুকদার, পরিবারের বড় সন্তান, তালুকদার ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা।
তালুকদার পরিবার
তিন ভাইবোনের এই পরিবার যেন এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা—
রেদওয়ান তালুকদার: তালুকদার পরিবারের বড় সন্তান এবং তালুকদার ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার।
স্ত্রী: সাবিহা তালুকদার, একজন আদর্শ গৃহিণী, যিনি পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে ভালোবাসা ও মমতায় আগলে রাখেন।
সন্তান: এক ছেলে আর এক মেয়ে
রিদ তালুকদার

— বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (BBA) তে শেষ বর্ষের ছাত্র।
— পড়াশোনায় অসাধারণ, খুবই ডেডিকেটেড, আর নিজেই বাবার ব্যবসায়িক উত্তরসূরি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাহি তালুকদার
— কলেজে ২য় বর্ষে পড়ে, সাবজেক্ট হিউম্যানিটিজ।
— পড়াশোনায় বেশ ভালো, তবে ওর মনোযোগ একটু বেশি গান, ছবি আঁকা আর সোশ্যাল মিডিয়াতে।
জাফর তালুকদার: রেদওয়ানের ছোট ভাই। পেশায় একজন আর্মির মেজর — কর্তব্যপরায়ণ, দৃঢ়চেতা এবং সম্মানিত।
স্ত্রী : শামিমা তালুকদার, তিনি একজন চিকিৎসক।
তাঁর তিন সন্তান:

মিলি তালুকদার
— মেডিকেল কলেজে পড়ছে, ৩য় বর্ষে।
— খুব শান্ত স্বভাবের, পরিবারের গর্ব।
নুপুর তালুকদার
— ক্লাস টুয়েলভে পড়ে, একটু আবেগপ্রবণ আর দুষ্টু।
— পড়াশোনা নিয়ে একটু গাফিলতি থাকলেও, নুপুর খুব সৃজনশীল—নাচ, আবৃত্তি, বিতর্কে খুব ভালো।
রামিম তালুকদার
— বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, দ্বিতীয় বর্ষে।
— বুদ্ধিমান তবে মন খোলা মানুষ নিজে হাসতে অন্যকে অন্যকে হাসিটা পছন্দ করে। বড় ভাই রিদ কে সর্বদা অনুসরণ করে ।

রাহেলা তালুকদার ( বর্তমানে রাহেলা খান) দুই ভাইয়ের ছোট বোন।
তাঁর বিয়ে হয়েছে খান পরিবারে। আর তার স্বামী আদিব খান !
তাঁর দুই ছেলে—
আরাফ খান
— ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ছে।
— খুব রোমান্টিক স্বভাবের, কবিতা লেখে।
আরিফ খান
— স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ে।
— দুষ্টু, কিন্তু বুদ্ধিমান। পরিবারের ছোট্ট আদরের সদস্য।
—আর
মেহরিনের পরিবার

ফিরোজ মির্জা — মেহরিনের বাবা, একজন শান্ত স্বভাবের মানুষ, পেশায় একজন সরকারি চাকরিজীবী ।
ফাইজা চৌধুরী — ফিরোজ মির্জার ছোট বোন, মেহরিনের ফুপ্পি।
ফিরোজ মির্জার সন্তান ৩ জন
মেহরিন মির্জা — Honours ১ম বর্ষের ছাত্রী । সাবজেক্ট ইকোনমিক্স।
মেহবুবা মির্জা — মেহরিনের ছোট বোন, কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের স্টুডেন্ট সাবজেক্ট হিউম্যানিটিজ ।
_পড়াশোনায় খুব ভালো , পড়াশোনার পাশাপাশি মায়ের সব কাজে সাহায্য করে!
মাহির মির্জা — মেহরিনের ছোট ভাই, স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ে, বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র । দুষ্টু তবে প্রাণ খোলা সবাইকে মাতিয়ে রাখে,খুব আদরের।
ফাইজা চৌধুরীর
তার স্বামী আকরাম চৌধুরী । পেশাই তিনি একজন ভার্সিটির প্রফেসর।
তাদের ২ সন্তান
আরশ চৌধুরী — বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের।
আরফা চৌধুরী — কলেজে পড়ে, খুব মেধাবী মেহবুবা ক্লাসমেট ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আগ্রহী। আফরা মেহেরিনের খুব ঘনিষ্ঠ
তালুকদার ভিলা, সন্ধ্যা ৭টা।

প্রাসাদের মতো বড় বাড়ির ভিতরটায় নরম আলো জ্বলছে। বাড়িতে একটা লাইব্রেরী আছে! বিশাল লাইব্রেরির এক কোণায় রিদ তালুকদার বসে আছে, পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসাটাও দেখে রিদ, চোখে একটা গম্ভীর ভাব, সামনে কিছু ফাইল… কিন্তু মনটা ঠিক ওখানে নেই।
“দাদাভাই!”—একটা খুশির চিৎকারে রিদ চমকে ওঠে।
রাহি এসে পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর গলায়।
— “আজকে আবার ফাইল নিয়ে বসেছো? আমি এসেছি, এখন কোনো কাজ না!”
রিদ হালকা হাসে, একমাত্র রাহির সামনেই এই হাসি দেখা যায়।
— “তুই এলেই সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়, জানিস তো?”
রাহি গাল ফুলিয়ে বলে,
— “আর বলো না! তুমি নাকি আজকে ইউনিভার্সিটিতে এক মিষ্টি মেয়ের সাথে ঝগড়া করেছো?”
রিদ একটু চমকে যায়।
— “তুই জানলি কোথা থেকে?”
— “শান্ত ভাইয়াদের মুখে শুনেছি। তারা বলছিল… ‘তালুকদার সাহেব আজকে প্রেমে পড়ে গেছে!’”
রাহির খিলখিল হাসির মাঝে রিদ একটু চুপ করে যায়। চোখে সেই মুখটা ভেসে ওঠে—ছন্দে ভরা কণ্ঠ, আগুনে চোখ… আর ঠোঁট ফোলানো অভিমানী মেয়েটা…

— “রাজকুমার ইন্টারেস্টিং, তাই তো…” — রিদ মনেই বলে ফেলে।
— “কি বললে দাদাভাই?”
রাহি কৌতুহলী হয়ে তাকায়।
রিদ হেসে মাথা নাড়ে,
— “কিছু না। তুই বল, আইসক্রিম খাবি?”
রাহি খুশি হয়ে বলে,
— “তুমি দাদাভাই হও, প্রিন্স নয়, কিং অব হার্টস!”
রাহি চলে যায়, কিন্তু রিদের মনে তখনও একটা ছায়া দোলা দিচ্ছে।
— “এই মেয়েটা… নামটা কী বলেছিল… মেহরিন?”
রাহি আর নুপুর রেডি হয়ে নিচে নামে, কারণ আজ তারা রিদের সাথে বাইরে যাবে আইসক্রিম খেতে। বাড়িতে যতই ফ্রিজ ভর্তি আইসক্রিম থাকুক না কেন , তারা খাবে না এখন তাদের রিদের সাথে বাইরে যাওয়া চাি মানে চাই!
রাহি কখনোই নুপুরকে ছাড়া কোথাও যায় না। আর এই দুই বোন—এক কথায় ভয়ংকর জুটি!
দুইজনেই অসম্ভব দুষ্টু আর চঞ্চল।
তাদের প্রিয় কাজ—রিদ তালুকদারকে জ্বালানো!
রিদ যতই গম্ভীর হোক না কেন, ওদের দুষ্টুমিতে সে মাঝে মাঝে থতমত খেয়ে যায়।
তবে মুখে যতই রাগ দেখাক, মনে মনে ওদের ভালোবাসে পৃথিবীর সব কিছুর চেয়েও বেশি।
দারুণ মোচড়! নিচে গল্পটা এগিয়ে দিলাম—

রিদ ওদের নিয়ে বের হলো, গাড়িতে বসেই রাহি আর নুপুর একে অপরের দিকে চুপি চুপি তাকায়।
নুপুর ফিসফিস করে বলে,
“রাহি, প্ল্যান মতো শুরু কর।”
রাহি গম্ভীর মুখ করে বলল,
“Operation Rajkumar—Start now!”
আসলে আজ আইসক্রিম খাওয়ার নাম করে তারা বের হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মূল উদ্দেশ্য রিদ তালুকদারের ‘গোপন ভালোবাসা’ খুঁজে বের করা!
ওরা বিকেল থেকেই সন্দেহ করছে যে, রিদের মুড একটু অদ্ভুত রকম লাগছে, হটাৎ করে মুচকি হাসছে আবার কেমন যেনো ভাবনায় ঢুকে যাচ্ছে।
আর এই পরিবর্তনের পেছনে কে আছে, সেটা জানতেই আজ গোয়েন্দাগিরিতে বের হয়েছে রাহি আর নুপুর।
রিদ গাড়ি চালাচ্ছে, একেবারে সিরিয়াস মুখে।
রাহি মুখ বানিয়ে বলে,
“ভাইয়া, হঠাৎ করে তুমি এত চুপচাপ কেন? কারো কথা মনে পড়ছে নাকি?”
রিদ ঠাণ্ডা গলায় জবাব দেয়,
“তোমাদের দুষ্টুমি কম হলেই শান্তি লাগে।”
নুপুর একেবারে নাটুকে কণ্ঠে বলে,
“দাদাভাই, বলো না, কোনো প্রিন্সেসকে দেখেছ নাকি?”
রিদ হালকা হাসে। কিন্তু কোনো উত্তর দেয় না।
আর রাহি-নুপুর বুঝে যায়—তাদের সন্দেহ আরও গারো হয় !

রিদ একটু বিরক্ত গলায় বলল,
“তোমরা আইসক্রিম খেতে বেরিয়েছো, নাকি আমাকে জেরা করতে? মনে হচ্ছে তোমরা পুলিশ, আমি আসামি!”
রাহি সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠে,
“আসামি যেহেতু গম্ভীর রাজপুত্র, তাই তো সন্দেহ হচ্ছে!”
নুপুর হেসে গড়াগড়ি খায়,
“তাও আবার রাজপুত্র? বেশি সিরিয়াস রাজপুত্র!”
রিদ ঠোঁটের কোণে একটু হাসি চাপতে চায়, কিন্তু পারে না।
সে গম্ভীর গলায় বলে,
“তোমাদের দিয়ে কিছু গোপন রাখা যাবে না, আমার মনে হয় তালুকদার ভিলাই গুপ্তচর নিয়োগ করা উচিত।”
রাহি চোখ ছোট করে বলে,
“দাদাভাই , আমরা তো আছিই! রেডি গুপ্তচর!”
এই তিন ভাইবোনের এমন খুনসুটি যেন তালুকদার বাড়ির একেবারে প্রতিদিনের রুটিন।
তাদের দুষ্টুমি, ঠাট্টা, আর হাসিতে ভরে থাকে চারপাশ।
তারপর রিদ গম্ভীর মুখে বলে,
“তোমাদের গোয়েন্দাগিরি শেষ হলে এখন আইসক্রিম খাওয়া মনোযোগ দাও । আইসক্রিম গলে যাবে।”
নুপুর মুচকি হেসে বলে,

“মানে তোমার মন গলে গেছে!”
রাহি চোখ গোল করে বলে,
“দাদা ভাই! ওই মেয়েটা দেখতে কেমন? আমাদের তো একটু জানতেই হবে!”
রিদ এবার নিঃশ্বাস ফেলে চোখ সরিয়ে নেয়।
“পুতুলের মতো। চুপচাপ থাকলে মিষ্টি, আর মুখ খুললে ঝড়-বৃষ্টি।”
রাহি আর নুপুর এবার একসাথে বলে ওঠে,
“oh my God! the Great রিদ তালুকদার আমাদের দাদা ভাই প্রেমে পড়ে গেছো!”
রিদ হঠাৎ বুঝতে পারল, সে ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে।
তাড়াতাড়ি বলে,
“মানে… আমি তো… আইসক্রিমের কথা বলছিলাম! পুতুলের মতো দেখতে আইসক্রিম, চুপচাপ থাকলে মিষ্টি, আর মুখে দিলে ঠান্ডা ঝড়-বৃষ্টি!”
রাহি চোখ ছোট করে বলে,
“দাদা ভাই, আইসক্রিমের সঙ্গে মেয়ের তুলনা করছো?”
নুপুর হেসে বলে,

“দাদা ভাই, তোমার মুখে মিষ্টি কথা শুনে মনে হচ্ছে, তুমি সত্যিই প্রেমে পড়ে গেছো!”
রিদ তখন একটু গম্ভীর গলায় রেগে বলল,
“হোয়াট ননসেন্স! এসব যা তা কথা বলছো তোমরা? আমি আর প্রেম? ইম্পসিবল!”
রাহি হেসে বলে,
“আরে দাদাভাই, রাগ করছো কেন? রাগ করলে তো বুঝতে হবে কিছু একটা আছে!”
নুপুর ফিক করে হেসে বলে,
“দেখলে না, মুখে বলছে প্রেম নয়, আর চোখে ঝিলিক!”
রিদ এবার দাঁত চেপে চোখ দুটো বন্ধ করে বলে,
“তোমরা দু’জন যদি এখনই চুপ না করো, তাহলে আইসক্রিম তো দূরের কথা—বাসায় গিয়ে এক সপ্তাহের জন্য করলা খাওয়াব!” I swear!

মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ১

রাহি আর নুপুর মুখ চেপে হাসি আটকে, চোখাচোখি করে আবার ফিসফিসে কন্ঠে বলে,
“তবু মেয়েটার কথা বলো না দাদা, কেমন ছিলো?”
রিদ চোখ ঘুরিয়ে জানালার দিকে তাকায়…
আর তার মনের পর্দায় ভেসে ওঠে ছন্দ বলার সেই মুহূর্ত,
চুলে রোদের ঝিলিক, ঠোঁটে তীব্র যুক্তি… আর সেই চোখ… যেটা রিদকে চুপ করে দিয়েছিল।
রিদ কিছু না বলে শুধু গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেয়…
চুপচাপ গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলে তিন ভাই-বোন।
আর এদিকে মেহরিন!?

মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৩