মেহেরজান পর্ব ২৪
লেখনীতে- সোহা
বাড়িতে ফিরে সকলের সামনে পড়ে গেলো মেহরান আর রাউশি।মাহতাব খান মুখ টিপে হাসলেন।মাহতাব খানের উর্মিলা বেগমের সাথে প্রেমের বিয়ে ছিলো।তার বড় ছেলেও যে তারই অস্তিত্ব রক্ষা করছে এই ভেবে যেন গর্বিত হলেন তিনি।উর্মিলা বেগমও মুচকি মুচকি হাসছেন।ছেলের বউ হিসেবে রাউশিকে পছন্দ করতেন তিনি অনেক আগে থেকেই।তবে রূপা বেগম মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার পর উনারও মনক্ষুণ্ণ হয়েছে।কিন্তু এখন মেয়েটা আবারও ফিরে এসেছে এই নিয়ে উনি সন্তুষ্ট।
স্বামীকে বলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ের ব্যবস্থা করবেন বলে ভেবে রেখেছেন।
মাহমুদ খান মেয়ে আর বড় ভাইয়ের ছেলেকে দেখছেন শুধু।মেয়ে যে লজ্জা পাচ্ছে তা তিনি বুঝে গেলেন।এটাও বুঝে গেলেন এই দুজনের মাঝে কিছু একটা চলছে।রূপা বেগমের দিকে তাকালেন। রূপা বেগম বিস্মিত চোখে চেয়ে আছে। মাহমুদ খান বড় ভাইয়ের দিকে তাকাতেই দুজনের চোখাচোখি হয়ে গেলো।মাহমুদ খান কেমন অস্বস্তিতে পড়লেন আজ।হাওলাদার বাড়ির বড়রাও ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আর ছেলেমেয়েরা মুখ টিপে হাসছে।উজান বাহানা খুঁজছে কখন একটু মুখ খুলতে পারবে। নুজাইশ শান্তচোখে তাকিয়ে আছে। রাউশির মুখটা দেখে হাসি পাচ্ছে তার।তবে মেহরান দেখলে কেলাবে ভেবে হাসিটা পেটেই চেপে রাখলো।
এদিকে মেহরানের ভাবমূর্তি গম্ভীর হলেও রাউশি লজ্জা পাচ্ছে।সবার সামনে এ কি এক অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হলো। রাউশি মিন মিন করে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আমি ওপরে যাচ্ছি,রুমে।”
বলেই হাঁটা ধরলো।কেউ কিছু বললো না। মাহতাব খানও ছেলেমেয়ে দুজনকে স্বাভাবিক করতে বাকিদের সাথে কথা বলা শুরু করলেন।তবে তার আগে মেহরানকে বললেন,
“রাতে আমার সাথে দেখা করিও তুমি।”
মেহরান পকেটে দু হাত গুজে মাথা নেড়ে চলে যেতে নিতেই উজান তানজিম শিহাব নুজাইশ এসে ধরলো তাকে।নুজাইশ বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে গান ধরলো,
“তোর কুন কুন জায়গায় ব্যাথা লো বন্ধু মেহরান_”
বাকিটুকু গাওয়ার আগেই শিহাব নুজাইশের মুখ চেপে ধরলো।শিহাবও থতমত খেয়ে থেমে গেলো।মেহরান কপাল কুঁচকে তাকালো।রাউশি সিড়ি বেয়ে ওঠার সময় স্পষ্ট শুনতে পেলো সেই গান।বিস্মিত চোখ জোড়া ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো গান গাওয়া সেই মানুষটিকে। এদিকে বাড়ির বড়রাও তাকালো কেমন করে। আর ছোটটা হাসছে।নুজাইশ সবার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো।
“পাগল হয়েছিস? এসব কেমন গান? ছি।”
মেহরান কথাটা বললে নুজাইশ সাথে সাথে জবাব দিলো,
“গানটা তোর জন্যই গাচ্ছিলাম।”
মেহরান দাতে দাত চেপে বলল,
“একটা মাইক এনে দি।পুরো গ্রামকেই শুনিয়ে দে।”
“তোর আনার কি দরকার? আমি নিজেই তো গিয়ে নিয়ে আনতে পারবো।”
মেহরান চোখ বুজে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে রাগটা গিলে নিলো। সামনে হাঁটা ধরলো। রাউশি মেহরানকে আসতে দেখে দৌঁড়ে উপরে উঠে যেতে নিতেই কারও সাথে ধাক্কা খেলো।সামনে তাকিয়ে দেখলো দুপুরের সেই যুবক।
“ধীরে হাঁটুন।পড়ে যাবেন তো।”
রাউশি মাথায় হাত দিয়ে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই আবির থামিয়ে দিয়ে বলল,
“রাউশি আপনাকে আজ সুন্দর লাগছে।”
মেহরান স্পষ্ট শুনলো কথাটা।ধীরে সুস্থে এগিয়ে এলো।রাউশি মেকি হাসার চেষ্টা করলো।আবির আবারও আগে থেকেই বলল,
“আমায় তো চেনেনই না।আ’ম আবির হাওলাদার।”
বলে নিজের ডান বাড়িয়ে দিলো হ্যান্ডশেক এর জন্য।রাউশি হাতের দিকে তাকালো। তখনই মেহরান উঠে এসে রাউশির বদলে নিজেই আবিরের সাথে হ্যান্ডশেক করার সময় বলল,
“শি ইজ মিসেস মেহরান খান।নাইস টু মিট ইয়্যু।”
বড়রা তাদের দেখতে না পেলেও নিচে থেকে নুজাইশ,শিহাব,উজান,তানজিম ওরা দেখতে পেলো।বাকিদের কপাল কুঁচকানো থাকলেও শিহাবের মুখায়ব কেমন চিন্তিত দেখালো তখন।
আবির হাসার চেষ্টা করলো।রাউশির দিকে একপলক তাকিয়ে নিচে নেমে গেলো।রাউশি চলে যেতে নিলে পেছন থেকে মেহরান হাত চেপে ধরলো রাউশির।রাউশির চলন থেমে গেলো।মেহরানই রাউশির আগে গিয়ে রাউশিকে টেনে নিয়ে গেলো।রাউশিও বাধ্য হয়ে গেলো।মেহরান রাউশিকে টেনে রাউশির রুমেই নিয়ে গেলো।মুখের ভাবসাব স্বাভাবিকই রয়েছে।দরজা ভেতর থেকে লক করে দিলো মেহরান।রাউশি চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে মেহরানের দিকে। মেহরান রাউশিকে পাত্তা না দিয়ে রাউশির বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লো।রাউশি মুখ কুঁচকে বলল,
“এভাবে নোংরা ভাবে আমার বিছানায় শুয়ে পড়লেন কেন?আপনার শাওয়ার নেওয়া উচিত।”
“চল দুজনে একসাথে শাওয়ার নেই।”
মেহরান বোমা ফেলে দিলো যেন এই রুমটিতে।রাউশি চোখ বড় বড় করে বলল,
“আপনি কি অসভ্য মানুষ। ছি ছি!”
মেহরান উঠে এলো।রাউশিও ভয়ে পিছিয়ে গেলো।মেহরান রাউশির কাছে ধীর পায়ে এগিয়ে এলো।রাউশিও ঠিক একই ভাবেই পেছাতে লাগলো।দেয়ালে পিঠ ঠেকার আগেই মেহরান ঝড়ের গতিতে এসে রাউশির কোমড় জড়িয়ে ধরলো।রাউশি চোখ বুজলো একবার।মেহরানের হাত ভীষণ ঠান্ডা সেটা কাপড়ের ওপরেও যেন বোঝা গেলো।এই লোক সাপ নাকি? এত ঠান্ডা কেন? মেহরান ধীর স্বরে ঘোর লাগা কণ্ঠে আওড়ালো,
“সামনের জন যদি রাউশি খান হয় তাহলে এই মেহরান খান অসভ্য, নির্লজ্জ, বেহায়া সব হতে রাজি।”
রাউশি ঠোঁট দুটো চেপে আছে আর বড় বড় শ্বাস ফেলছে।এটা দেখে মেহরান একটু হাসলো।চোখজোড়া গিয়ে পড়লো রাউশির ঠোঁটের ওপর।বড্ড টানছে রাউশির ঠোঁটজোড়া।বহুকষ্টে নিজেকে সামলে নিলো মেহরান।রাউশি মুখ খুললো।খুবই দ্রুত বলল,
“ছাড়ুন আমায়।”
মেহরান ছাড়লো না বরং বাঁকা হেসে বলল,
“আজ বিকেলে আমার গালে কিস করেছিলি না তুই?”
রাউশি এবার চোখ খুললো।আর তখনই মেহরান রাউশির গালে একটা চুমু খেয়ে রাউশিকে ছেড়ে দিলো।রাউশিকে কোনো কথা বলতে না দিয়ে ব্যস্ত পায়ে দরজা খুলে চলে গেলো।রাউশি গালে হাত দিয়ে ড্যাবড্যাব করে মেহরানের যাওয়া দেখলো শুধু।মনে মনে ভাবলো বিয়ের পর কি সারাদিনই চুমু খাবে এই লোক?
রাতে রাউশি আর মেহরান কিছু খেলো না। যেহেতু তারা আগেই খেয়ে এসেছে। তানজিম এসে মেহরানের দরজা ধাক্কালো কয়েকবার।মেহরান ফোনে কথা বলছিলো। তখনই দরজা খুলে দিলো।তানজিম বলল,
“ভাই ছাদে এসো।সবাই মিলে জম্পেশ আড্ডা দেবো আজ।আরুশ ভাইও এসেছে।”
মেহরান কান থেকে ফোন সড়িয়ে বলল,
” যা আমি আসছি।”
তানজিম চলে গেলো।মেহরান আবারও ফোনে কথা বলা শুরু করলো আবারও। অফিসে কিছু একটা কাজে সমস্যা হয়েছিলো তাই ম্যানেজার মেহরানকে কল করেছে।মেহরানকে না চাইতেও আগামীকাল চলে যেতে হবে।মেহরান দম ফেলে গম্ভীর গলায় বলল,
“আমি আগামীকালই ঢাকা ব্যাক করবো।”
রাউশিকে মাইশা এসে ডেকে গেছে একটু আগে।রাউশি যাওয়ার সময় চোখ পড়লো মেহরানের দরজার দিকে।দরজাটা খোলা। তাই এগিয়ে এলো মেহরান কি করছে দেখার জন্য।আর তখনই মেহরান উপরোক্ত কথাটা বলায় সেটা শুনতে পেলো রাউশি।না চাইতেও মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো রাউশির।মেহরান পেছনে ঘুরে দরজার সামনে রাউশিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো। মুখটা কেমন চুপসে গেছে রাউশির।মেহরান বুঝলো রাউশি তার কথা শুনেছে।রাউশির নিকটে এগিয়ে গেলো মেহরান।রাউশির মাথায় ডান হাতটা দিয়ে বলল,
“মন খারাপ করলি যে?”
“আপনি আগামীকাল চলে যাচ্ছেন?”
“আমার অফিসে কাজ আছে ইম্পোর্টেন্ট।”
“তাই বলে এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবেন?”
“কিছু করার নেই।”
রাউশি ফোস করে একটা শ্বাস ফেললো। রাউশির সহজে কান্না আসে না।তবে মনটা খারাপ হলো ভীষণ।মেহরান সেটা বুঝে গেলো।তবে তারও কিছু করার নেই।রাউশির হাত ধরে বলল,
“ছাদে চল।”
রাউশির মন খারাপ হলেও কথা বাড়ালো না। মেহরানের সাথে যাওয়া শুরু করলো। ছাদে পৌঁছে বাড়ির সব ছেলেমেয়েদের একটা নির্দিষ্ট স্থানে গোল করে বসতে থাকতে দেখা গেলো।মেহরানরা যেতেই দুজনের জন্য জায়গা করে দিলো তারা।রাউশি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে তার চোখ গিয়ে পড়লো আবিরের ওপর।যে কিনা ছাদের রেলিং ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে।আর দৃষ্টি রাউশির ওপরই।চোখচোখি হতেই তড়িৎ বেগে চোখ সড়িয়ে নিলো রাউশি।এদিকে এটা আবার খেয়াল করলো শিহাব।শিহাব বেজায় চিন্তিত।খারাপ কোনো কিছু আবার না হয়ে যায়।উনারা এখান থেকে ভালোভাবে যেতে পারলেই যেন বাঁচে শিহাব।
রাউশির সামনে বরাবর শায়মা বসে আছে। শায়মার তীক্ষ্ণ চোখজোড়া রাউশির ওপরই নিক্ষিপ্ত।খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে রাউশিকে। মেয়েটা ভীষণ সুন্দর।তার থেকেও কি বেশি সুন্দর? মেয়েটাকে কিছু বলতেও পারছে না মেহরান এখানে থাকায়।
তখনই ছাদের দরজার কাছে এসে দাড়ালো তাজবির।মেহরানকে খুঁজলো।চোখে পড়তেই ডেকে উঠলো।
“মেহরান ভাই!”
মুহুর্তেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো তাজবির।মেহরান তাকাতেই তাজবির আবারও বলল,
“বড় বাবা তোমায় ডাকছে ভাইয়া।তাড়াতাড়ি এসো।”
মেহরান আড়চোখে একবার রাউশিকে দেখে নিয়ে উঠে তাজবিরকে নিয়ে চলে এলো নিচে তার বাবার রুমে।মাহতবা খান, মাহমুদ খান, মাহবুব খান সহ উনাদের গিন্নিরাও বসে রয়েছেন রুমটিতে।মেহরান যেতেই সবাইকে দেখে কিছুটা হলেও আন্দাজ করলো ঠিক কোন বিষয়ে কথা হতে চলেছে এখানে?
মেহরান দুহাত পকেটে গুজে সটান হয়ে দাড়ালো। তাজবির চলে গেলো উপরে। রুমের এই দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে মেহরানের বিচারকার্য অনুষ্ঠিত হবে এখন।মাহতাব খান সিঙ্গেল সোফাটায় মেহরানকে বসতে বললো।মেহরানও বসলো।মাহমুদ খান উঠে এসে মেহরানের পাশে বসলো।মাহতাব খান হালকা কেঁশে যথাসম্ভব কঠোর ভাবে মেহরানকে সোজাসাপটা জিজ্ঞাসা করলেন,
“রাউশিকে পছন্দ করিস?”
মেহরানও ঠিক সেভাবেই সোজাসাপ্টা নিজের গাম্ভীর্য ধরে রেখে বলল,
“ভালোবাসি। আর বিয়েও করতে চাই খুব তাড়াতাড়ি।”
মাহমুদ খান আর মাহবুব খান কেঁশে উঠলেন বড় ছেলের এই সোজাসাপ্টা কথাটা শুনে। উর্মিলা বেগম আর রূপা বেগম খুশি হলেন খুব।রোকসানা বেগম খুশিতে মেহরানকে বললেন,
“বাহ মেহরান বাবা! তুই তো দেখি খুব ফার্স্ট।”
স্ত্রীর এমন বেফাস কথা শুনে মাহবুব খান ধমকে বললেন,
“আহা,এসব কেমন কথা বার্তা।ফার্স্ট মানে কি? বড় ভাইজান, ছোট ভাইজানও তো প্রেম ক_”
চোখ রাঙালেন মাহতাব খান।মাহবুব খান থেমে গেলেন।মুখে কুলুপ আঁটলেন।মেহরান শুনলো সবকিছু।মাহতাব খান ছেলের উত্তর সম্পর্কে সবসময়ই অবগত।এটাও আর অজানা কিছু ছিলো না।ছেলে যে সবকিছু পরিষ্কার করে বলতে পছন্দ করে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।মাহতাব খানের অয়াশ বেয়ে যেন প্রশান্তির শীতল হাওয়া বয়ে গেলো।
“কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছো তাহলে? আমাদের বড়দের কথা শোনার মতো ছেলে তো তুমি না। তবুও আমরা চাই_”
মেহরান কথার মাঝেই বলল,
“যেহেতু জানো তোমাদের কথা শোনার মতো ছেলে আমি নই।তাহলে যেই কথা বলবে সেটাও নিশ্চয় অমান্য করবো তাহলে তার আর বলার প্রয়োজন নেই।সিলেট থেকে ফেরার পরদিনই বিয়ের সব ব্যবস্থা করে ফেলো।”
মাহমুদ খান বিস্মিত নেত্রে কয়েক পলক ফেলে মেহরানকে জিজ্ঞাসা করলেন,
“বাবা তুই কি রাউশিকে সত্যিই বিয়ে করতে চাস?”
মেহরান মাহমুদ খানের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বলল,
“কোনো সন্দেহ আছে মেজো চাচা?আমি কি রাউশির যোগ্য নই?আমাকে মানতে কি তোমাদের নারাজ আছে? ”
রূপা বেগম তৎক্ষনাৎ বলে উঠলেন,
“এসব কি বলছো মেহরান বাবা?আমরা তো অনেক বেশিই খুশি।তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাও।এটা তো আমাদেরই সৌভাগ্য।এমন ছেলে এই সময়কালে পাওয়া যে খুবই মুশকিল।আর এমনিতেও আমার মেয়ে ডিভোর্সী।মেয়েটার তিনটে বছরই তো আমি নষ্ট করে দিয়েছি।আ_”
বাকি কথাটা বলতে দিলো না মেহরান,
“অতীত অতীতই।অতীতকে মনে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য।আমাদের অতীত ভুলে কাজ করতে হবে।জীবন একটাই।”
থামলো মেহরান।পুনরায় খুব সুন্দর করে বলল,
“আর রাউশি।সে তো সোনার হরিণী।ওকে পেলে তো, আমি নিজেই খুব সৌভাগ্যবান হবো।দুষ্প্রাপ্য সেই রাউশিকে আমি বারবার পেতে চাই।”
মাহতাব খান খুশি হলেন ভীষণ।উর্মিলা বেগন রূপাকে ধরলেন খুশিতে।মাহমুদ খানও ভীষণ খুশি হলেন।মাহবুব খান মাথায় হাত দিয়ে আফসোসের সুরে বললেন,
“মেহরানের মতো ছেলের বাবা হতে না পেরে আমার কষ্ট হচ্ছে।আমার হাদারামটা তো গাধার মতো পড়ে আছে।এই ছেলেকে নিয়ে আমি পারি না।”
মেহেরজান পর্ব ২৩
রোকসানা বেগম রেগে গেলেও কিছু বললেন না।আরও কিছুক্ষণ কথা বলে মেহরান রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
উপরে যাওয়ার সময় রাউশির হাসিমাখা মুখটা ভেসে উঠলো।ঠোঁটে একটা চমৎকার হাসি ফুটে উঠলো। মেহরান উপলব্ধি করলো তার এই এক জীবনের ভালোবাসা শুরু হয়েছে রাউশিতে যে ভালোবাসার কোনো অন্ত নেই।তবে নতুন নতুন অনুভুতি আর ভালোবাসার হাজারটা কারণ আছে।মেহরান ছাদের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।রাউশিকে দেখা যাচ্ছে এখান থেকে।মৃদু আলো মুখে পড়ছে মেয়েটার। চুপ করে বসে আছে।মেহরান ভাবলো এই মেয়েটা একান্তই তার হবে আর কিছুদিন পর।