মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৭

মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৭
সাদিয়া

সকল বিষাদময় চিন্তায় ইহামের ভেতর তিক্ততায় হাসপাস করে উঠছে। নিঃসন্দেহে মায়রা মেয়েটা আগুন সুন্দরি। তার অষ্টাদশী লতানো অঙ্গ বড্ড আকর্ষণীয়। দৃঢ় মনোবল আর কড়া ব্যক্তিত্বে ভরপুর ইহামের পক্ষেও নিজেকে ধাতস্থ করা কঠিন প্রায়। তবে মেয়েটার বেয়াদবি পানা আর অভদ্রতা তার শক্ত আবরণে বেষ্টিত হৃদয় ও তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক কোনোটাই মেনে নিতে পারে না। আকারে ইঙ্গিতে বাবা মা কে খানিক বলে আসলেও পুরোপুরি কিছু জানায়নি। জীবনের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ নিয়ে এখন প্রখর দুটানায় দোদুল্যমান হচ্ছে তার কঠিন হৃদয়। ধূর্ত বিচক্ষণ মস্তিষ্ক টা বারবার ইঙ্গিত দিচ্ছে সম্পর্ক এভাবে বললেই শেষ করা যায় না। হৃদয় যখন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে তখন অপরিচিত নাম্বারটা স্কিনে ভাসতেই কপাল কুঁচকে নিল সে।

ক্ষণে ফোন রিসিভ করতেই অপরপাশ থেকে খুব মিষ্টি সুরেলা কন্ঠে সালাম এলো। সেকেন্ড কয়েক সময় নিয়ে ইহাম সালামের জবাব নিয়েই থম ধরল। কন্ঠটা পরিচিত মনে হয়েও হতে পারল না। ফোনের ওপাশ থেকেও শুনশান নীরবতা বিরাজ করছে। অপর মানুষটার নিস্তব্ধতায় তার কপাল আরো কুঁচকে মনে কিছু ঠাউর করার চেষ্টা করল। সময় অতিক্রম হবার সাথে সাথে নিস্তব্ধতা বাড়ায় অনুমান এবার প্রগাঢ় হলো। হাসপাস হৃদয়টা স্থির শান্ত রইল।কিন্তু ওই অসভ্য প্রজাতির ইতর মেয়েটার ভণ্ড হৃদয় মনে হয় সেটা সহ্য করতে পারল না। নিচু মন মানসিকতার চিহ্ন বহন করার মাধ্যমে নিজের উদ্ধতপনা প্রকাশ করল। হঠাৎ নীরবতা ঢেঙ্গিয়ে বলে উঠল মেয়েটা,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আমাকে বলে গেলে কি আপনার পিত্তি জ্বলে যেত? যাবার আগে একবার ডাকলে তো আপনার গোঁয়ার ভাব কমত না। তাহলে চুরের মতো কেন চলে যেতে হলো আপনার?”
নিমিষে শান্ত মেজাজ টা একদম চড়ে গেল তার। চোখ গুলি হঠাৎই সলতের মতো জ্বলে উঠল। চোয়াল দৃঢ় করে দাঁতে দাঁত পিষল। আস্তেধীরে চোখ বন্ধ করে নিজের ক্রোধ দমানোর চেষ্টা করল সে। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“বেয়াদব ম্যানারলেস মেয়ে। এখুনি কল কাটো। আর কখনো আমায় কল দিবে না তুমি।”
তেজস্বী মেয়ে বুঝি দমল না ইহামের কথায়। রাগ দর্প নিয়ে মেয়েটা বলল,

“কেন কল করব না আপনায়? একশোবার করব হাজার বার করব। ভালো না লাগলে বিয়ে করেছিলেন কেন?”
ক্রোধে হিঁসপিঁস করে ইহাম ঘনঘন শ্বাস টানল। এই মুহূর্তে চোখ দিয়ে তার আগুন বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে মেয়েটাকে সামনে পেলে একদম পিষে ফেলত। ঝাঁঝটা কমাতে বিরবির করে একটা গালি ছুড়ে কলটা কেটে দিল। রাগে ভেতরটা কটমট করে উঠছে তার। মেয়েটার মূর্খতা তাকে যেন আরো ক্ষেপিয়ে তুলছে। ওই মেয়েটার কি একটুও কমনসেন্স নেই? ভদ্র সাবলীল ভাষায় কি কথা বলতে পারে না সে? কোথায় কখন কিভাবে কথা বলতে হয় তার ন্যূনতম জ্ঞান টুক কি নেই ওই নির্বোধ গাধা মেয়েটার? এত নিরেট মূর্থ এক মেয়ে কি করে তার উপর এসে বর্তালো? এই মেয়েকে নিয়ে সংসার নামক বেড়াজালে কি করে জড়াবে সে? তার উপর বাবা মা জোর করছে ওই গাধা মেয়ে টা কে নাকি তার সাথে নিয়ে যেতে।

মায়রা চুপচাপ নিভৃতে বসে আছে। চেনা নেই সম্পর্ক নেই, সামান্য ভালো করে কথাটুক বলার সুযোগ যার সাথে নেই সেই কঠিন পাষাণ মানুষটার প্রতি অগাধ না হলেও ক্ষীণ কৃশ এক টান অনুভব করে সে। যখনই ফোনের স্কিনে ওই মানুষটার ছবি দেখে তার হৃদয় অশান্ত হয়। ভেতরটা অদ্ভুত শিহরনে দুলে যায়। দিনদুনিয়া সমস্ত টা ভুলে সে মগ্ন হয়ে যায় ওই কঠিন হৃদয়ের মানুষটায়। কিন্তু ওই লোকটার নিদারুণ রূপে এড়িয়ে যাওয়া আর হৃদয়ে সুচের মতো আঘাত করা কঠিন কথা গুলি তাকে ব্যথায় জর্জরিত করে তুলে। কেন এমন একটা সম্পর্কে নিজেকে জড়িয়ে নিল? যার কোনো অন্ত নেই। না আছে কোনো ভিত্তি। তপ্ত শ্বাসে ভেতরটা ছারখার হয়ে যাচ্ছে মেয়েটার।
হন্তদন্ত হয়ে ফাতেমা বেগম এগিয়ে এলেন। তখন বোধহয় বেলা ১২ টার উপরে। তিনি এসেই ব্যস্ত ভঙ্গিতে বললেন,

“কি রে মায়রা এখনো তোর কোনো হেলদোল নেই? বসে আছিস কেন?”
মায়ের প্রশ্ন আর ব্যস্ততায় কপালে ভাঁজ পড়ে মায়রার। সন্দিহানি চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে,
“কি বলছো আম্মু? কিসের হেলদোলের কথা বলছ?”

“ওমা সেকি কথা? কি বলছে এই মেয়ে? তুই কি কিছু জানিস না নাকি? ইহাম বাবা তোকে কিছুই বলেনি?”
মায়ের কথায় বুক মুচড়ে উঠল তার। কি করে বলবে প্রথমবার কল দেওয়ার পর ওই লোকটা কথা না বলে দম্ভ নিয়ে কল কেটে দিয়েছিল। আর কথা হয়নি তাদের আর না ওই লোকটা একবার কল দিয়েছে তাকে। সেই সন্ধ্যা পেরিয়েছে আজ ২ দিন তবুও ওই মানুষটার থেকে কোনো কল এলো না। আপাদত মায়ের কাছে সেটা গোপন করে ভাবতে বসল কি বলতে চাইছে তার মা? লোকটার কিছু হলো নাকি? কি জানানোর কথা বলছে তার মা? ভেতরে এত ভয় কেন হচ্ছে? সংশয় শঙ্কা তার গলার আওয়াজ অদ্ভুত ভাবে নিভিয়ে দিয়েছে। একটুখানি সাহস সঞ্চয় করে যে বলবে কি হয়েছে তাও তার অসাড় শরীরে জোগাড় হচ্ছে না। মায়ের দিকে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে সে।
“মনে হচ্ছে ইহাম বাবা তোর সাথে কিছু বলেনি। হয়তো সুযোগ হয়নি তার। সেসব রাখ তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে মা এখনি আমাদের ইহাম বাবার বাসায় যেতে হবে।”

তরাসে গলা চিড়ে ঢোক নামল মায়রার। আধুত চিত্রটায় ঘন কালো মেঘের মতো নেমে এলো বিহ্বলতা। মায়ের কৌতূহলের কোনো মানে খুঁজে পাচ্ছে না সে। কি হয়েছে মা কেন এই প্রথম এত তোরজোড় করে ও বাসায় যেতে বলছে তা কিচ্ছু বোধগম্যতায় আসছে না তার। এক মিশ্র অনুভূতি তে তার ভেতর ছটফট করছে।
“কিরে মেয়ে বললাম তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে তা না করে তুই বসে আছিস?”

মায়ের কোনো কথায় যেন মায়রার কানে ঢুকছে না। তার মস্তিষ্কে বারবার খুরপাক খাচ্ছে তাকে কোনো এক কারণে ইহামের বাসায় যেতে হবে। কেন? কোন কারণ তা তার জানা নেই। আচ্ছা ওই কঠিন পাষাণ মানুষটা কি তার বাড়িতে আছে? নাকি এখনো নিজের কাজে মজে আছে? ওই মানুষটার কথা মনে হতেই হঠাৎ তার ভেতরটা ফেঁপে উঠল। গলায় বুঝি কিছু একটা দলা পাকিয়ে বিঁধছে প্রবল ভাবে। আচমকা ফাতেমা বেগম আবার বলে উঠেন,
“কিরে মায়রা তোর কানে কি আমার কথা ঢুকছে না? ও বাড়ি থেকে খবর এসেছে দ্রুত যেতে হবে আর তুই এখনো নির্দ্বিধায় বসে আছিস? তোকে নিয়ে কি করব আমি? কি করে সংসার করবি তুই?”
সংসার শব্দটা শুনতেই বিষণ্ণ হয়ে উঠল তার চিত্ত। মলিন মুখটা চুপসে গেল তার আরো। ওই মানুষটা কি তার সাথে সংসার করবে? সংসার করার কোনো লক্ষণই তো তাদের দুজনের মাঝে নেই। এক দৃষ্টে ভাসমানে তাকিয়ে থাকা চোখ গুলি অকস্মাৎ ছলছল করে উঠল তার। তবুও নিজের স্থবিরতা টেনে ক্ষীণ কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,

“ও বাসায় কেন যেতে হবে আম্মু?”
“আরে বোকা মেয়ে তোর শ্বশুর ভীষণ অসুস্থ। তোকে দেখতে চাইছে। ঢিলেমি না করে তাড়াতাড়ি কর মা। আর শুন একটু সুন্দর জামাটা পরিস। একটু ভদ্র পরিপাটি হয়ে থাকিস মা। প্রথমবার শ্বশুর বাসায় যাচ্ছিস একটু সাজগোছ করিস কিন্তু। আর হ্যাঁ বাড়তি একটা কাপড় নিস।”
মায়ের কথা সম্পূর্ণ শুনার ধৈর্য ধীরতা কোনোটাই হলো না তার। এর আগেই তুঙ্গ কন্ঠে চটপট বলে উঠল,
“কাপড় কেন নিতে হবে আম্মু? তুমি কি থাকবে নাকি?”
ফাতেমা বেগম স্নেহপূর্ণ নয়নে তাকালেন মেয়ের দিকে। কাছে এসে বেদনা মিশ্রিত হাসলেন তিনি। যেন উনার হাসির মাঝেই এত বছরের সকল আদর যত্ন দুঃখ কষ্ট ভেসে উঠছে। প্রচলিত এক ত্যাগে দগ্ধ হলো উনার কোমল হৃদয়। তিনি এগিয়ে এসে মেয়ের গালে হাত ছুঁয়ে দিয়ে আবার নিজের ঠোঁটের কাছে এনে চুমু খেলেন। চোখ ভর্তি পানি থাকলেও নিজেকে প্রকৃতিস্থ করার চেষ্টা করলেন। মলিন মুখে কৃশ কন্ঠে বললেন,

“যদি এক রাত থাকতে হয় তোর।”
বুক ধক করে উঠল মায়রার। কোমল হৃয়টা বারবার করে আরোহণ করছে কোনো নাম না জানা এক স্থানে। লম্বালম্বা শ্বাস টানার ফলে নিজ উদ্যোগে আর কোনো প্রশ্ন করার সক্ষমতা তৈরি হলো না। দাঁত খিঁচে যেন ভেতরের উচাটন আর ব্যাকুলতার লাগাম টানার প্রচেষ্টা করল নিজ মনে। ফাতেমা বেগম মেয়ের অস্থিরতা নীরবে নিশ্চুপে বুঝে নিলেন। ঈষৎ হেসে তিনি জানালেন,
“চিন্তা করিস না মা ইহাম বাবা বাসায় নেই। সে রাঙ্গামাটি আছে।”
ফোঁস করে দম ছাড়ল যেন মায়রা। তৃপ্তিতে ঢোক গিলে মায়ের পানে কেবলই শান্ত স্থির চাউনিতে তাকাল। তাড়া দেখিয়ে ফাতেমা বেগম বললেন,

“তাড়াতাড়ি কর মা। তোর বাবা অফিসেই আছে। হয়তো আমাদের একাই যেতে হবে।”
পিছন থেকে হেলেদোলে মায়রার রুমে আসতে থাকা ভরাট কন্ঠে প্রশ্ন করল তুহিন,
“কোথায় যাবার কথা বলছো আম্মা?”
ফাতেমা বেগম ও মায়রা চকিতে তাকাল তুহিনের দিকে। সে এসেই বিছানার চাদর কুঁচকে ধড়াম করে শুয়ে পড়ল সেখানে। মায়রার দিকে তাকিয়ে মন ভুলানো হেসে মাকে প্রশ্ন করল,
“কোথায় যাবে? এই ভেটকিও কি যাবে?”
দুই ভাই বোন কে কথা কাটাকাটির সুযোগ না দিয়ে ফাতেমা বেগম নিজ থেকে মায়রার আগেই ঝটপট জবাব দিলেন,
“ইহামের বাবা অসুস্থ। উনাকে দেখতেই ও বাসায় যাবো।”
সোনার ডিম পারা হাস পাবার মতো চোখ গুলি চকচক করে উঠল তুহিনের। কয়েক পল ভেবেই চঞ্চল কন্ঠে জবাব দিল,

“আমিও যাবো। আঙ্কেল কে দেখে আসা আমারও দায়িত্ব তাই না আম্মা?”
হাস্যোজ্জ্বল মুখে তুহিন মায়রার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে আবারও হাসল। মা মেয়ে দুজনেই হতবাকে তাকিয়ে রইল ছেলেটার দিকে। আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে চলে গেল। যেতে যেতে ঠোঁটের কোণায় দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে মনে মনে বিড়বিড় করল,
“রেডি থাকো কালনাগিনী তোমাকে রাগাতে তোমার সাপুড়ে আসছে।”

পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার একটা কটেজের ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে ইহাম। চোখ মুখে তার গভীর শান্ত ভাব ফুটে উঠেছে। দৃষ্টি অদূরে কোথাও গ্রথিত। কায়া অবিচল স্থির হলেও হৃদয় খানিক ব্যাকুল হাওয়ায় লঘু দুলছে। অন্তঃস্থলে বারংবার স্ফুটিত হচ্ছে মায়ারা মেয়েটার লালিত্যপূর্ণ মাধুর্যতা। ওই মাধুরী মুখের স্নিগ্ধতা নিঃসন্দেহে হৃদয় ঘায়েল করার ন্যায়। শান্ত হৃদয়টা মুহূর্তে তোলপাড় করার মতো ওই মোহনিয়া মায়রাই অবতরণিকা। খোদাতায়ালা কেন ওই ঈপ্সিত দুহিতাকে তার রুচির বিপরীত করে সৃষ্টি করল?

উত্তর দক্ষিণ মেরুর মতো কেন তাদের বোঝাপড়া টা? ওই মেয়েটা তার স্বভাবের হলে মন মতো হলে কি এমন ক্ষতি হতো? আচ্ছা মায়রা যদি তার মন মতো হতো একদম ভদ্র, মার্জিত ঠিক যেমনটা সে চায় তেমন হলে কি সে মায়রার সাথে খুব বেশি সহজ হতো? তাদের সম্পর্ক টা কি আর দশটা পাঁচটা দাম্পত্যের মতোই সরল মহব্বতের হতো? এর উত্তর জানা নেই তার। মন মস্তিষ্ক তার সর্বদা শুধু জানান দেয় মায়রা মেয়েটা তার উপযুক্ত কিংবা যোগ্য নয়। সে তার মনের একেবারে বিপরীত একদম কাঙ্ক্ষিতের বাহিরে। তার অভদ্র আচারণ, বেয়াদবি কথা, মুখের উপর তর্ক করা একদম তার রুচির বাহিরে। অথচ মেয়েটা সেটাই করে। আরেকটু গভীর ভাবে চিন্তা করলে বুঝি তার শান্ত মুখশ্রী টা রাগে রঙ্গিম হবে। তবে এই স্নিগ্ধ সতেজ সবুজ প্রকৃতি বুঝি তার এই মুহূর্তে অশান্ত করতে কিংবা রাগিয়ে দিতে চায়না। তাই তো ক্রোধ টা বাঁচিয়ে লেফটেন্যান্ট ইবরাহিম খান এসে হাজির হয়েছে। লম্বা সুঠাম দেহের মানুষটা এসেই ক্ষীণ কন্ঠে ডাকল,

“স্যার?”
মায়রার মাঝে বিমগ্ন থাকা ইহামের তীক্ষ্ণ কানও বুঝি শুনতে পেল না ইবরাহিমের উপস্থিতি। একাগ্রচিত্তে বিরাজ করা ইহাম কে পুনরায় ডাকল ইবরাহিম,
“ক্যাপ্টেন?”
সকচিতে পিছন ফিরল ইহাম। ইবরাহিম কে দেখে মনের সকল চিন্তা বিমগ্নতা কে এক তুড়িতে বিলীন করে দিয়ে মন স্থির ও দৃঢ় করল নিজের দায়িত্বের প্রতি। তার প্রগাঢ় ব্যক্তিত্ব নিয়ে সটান হয়ে দাঁড়াল ইবরাহিমের সামনে। গম্ভীর কন্ঠে প্রশ্ন করল,
“কোনো খবর পেয়েছো ইবরাহিম?”

মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৬

ইবরাহিম রয়েসয়ে জবাব দিল। ছোট্ট একটা মুড়ানো কাগজ ইহামের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে মৃদু আওয়াজে বলল,
“স্যার দুর্বৃত্তদের সাথে মজিদ পাহাড়িও জড়িত আছে। ধারনা করা হচ্ছে মজিদ পাহাড়িই ওই ধ্বংসকদের বীজমন্ত্র। স্থানীয় এক চায়ের দোকানদারের কাছ থেকে আস্তানার ছকটা জোগাড় করলাম।”
ইহাম হাত বাড়িয়ে কাগজটা তুলে নিল। পরদে পরদে ভাঁজ খুলে সেটা বেশ মনোযোগ একাগ্রতার সাথে পর্যবেক্ষণ করল। ঠোঁটের কোণায় অনবদ্য এক ক্রুর হাসি ফুটিয়ে ঈষৎ আওয়াজে নিজ মন কেই যেন প্রশ্নবিদ্ধ করল সে। বিড়বিড় করে বলে উঠল,
“মজিদ পাহাড়ির মেইন টার্গেট কি শুধুই পাহাড় নাকি ক্যাপ্টেন ফাহাদ ইহাম চৌধুরী?”

মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৮