যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১১
মম সাহা
আষাঢ়ের দিন গুনতে গুনতে তুমুল বর্ষায় প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। সারাদিন ভর ভারি বর্ষণের কোনো কমতি নেই। খামতি নেই গম্ভীর বজ্রপাতেরও।
এই ভারি বৃষ্টির মাঝেও আজ অহি বেরিয়েছে মায়ের সাথে। সে হলো ঘুরে বেড়ানো মানুষ। তার কি আর মন টিকে থাকে ঘরের ভেতর? অহি, অবনী বেগম ও চেরি এই তিনজনই বের হয়েছে। চিত্রা বাসায় ছিলো না বলে চিত্রাকে আনতে পারেনি। আকাশের অবস্থা বেশ মলিন। কিছুক্ষণ আগেও অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিলো। এখন কিছুটা কমেছে। বৃষ্টি না থাকলেও কাঁদায় বিশ্রী হয়ে আছে রাস্তাটা। যেকোনো মুহূর্তে বৃষ্টিও হতে পারে।
অবনী বেগম হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করলেন, “তা অহি, পরের ট্যুরটা কোথায় দেওয়ার প্ল্যান আছে?”
অহি আনমনে হাঁটছিল এবং নিজের শহরাটার সৌন্দর্য আবার এত গুলো দিন পর অনুভব করছিলো। তাই আচমকা মায়ের প্রশ্নে তার অনুভবে বিঘ্ন ঘটায়। সে প্রশ্নটা ঠিক ঠাহর করতে না পেরে শুধায়, “কিছু বললেন?”
“বললাম, পরের ট্যুরটা কোথায় দিবে ভাবছো?”
অহি কিছুটা থেমে যায়। চোখ নামিয়ে এনে তাকায় মায়ের পানে। মনে পড়ে যায় নিজের জন্মদাত্রীর কথা। সেই মহিলা উঠতে-বসতে কেবল ক্যারিয়ার ক্যারিয়ার করে হেদিয়ে মরেন। উনার কাছে মোটা অর্থের একটা চাকরি কিংবা হাইলাইট করা একটি জবনেমই যেন জীবনের স্বার্থকতা। অপর দিকে এই মানুষটা আসার পর একবারও জিজ্ঞেসও করলো না ভবিষ্যৎ নিয়ে অহি কী ভেবেছে। বরং সে আরও জানতে চাচ্ছে অহি ট্যুর দিতে যাবে কি-না। মানুষটা এত অদ্ভুত বলেই হয়তো অহি এত পছন্দ করে।
অহি প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বিপরীতে নিজেই ছুঁড়ল প্রশ্ন, “ট্যুর দেওয়ার কথা বলছেন, জিজ্ঞেস করবেন না ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবলাম? গ্রাজুয়েশন তো শেষ করে বসে আছি আরও ছ’মাস আগেই।”
অহির প্রশ্নটি অবনী বেগম নিতান্তই স্বাভাবিক ভাবে নিলেন। হাঁটতে হাঁটতে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, “ক্যারিয়ার নিয়ে তোমাকে বলতে হবে না-কি! তুমি হলে আমার লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে। জীবনে ঠিক তুমি কিছু একটা করে নিবেই। তাই আমি চাই সেই কিছু একটার বাঁধনে আটকানোর আগে নিজের শখ পূরণ করো। ইচ্ছে মতন দুনিয়া ঘুরো।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অহি মুগ্ধ হলো। মা হিসেবে অবনী বেগম মারাত্মক পার্ফেক্ট। মাত্র আট বছরের পার্থক্য মানুষটার সাথে তার! অথচ কী পরিপক্ব ভাবেই না মা হয়ে উঠেছিলেন!
দু’জনের কথোপকথনের মাঝেই আকাশ ভয়ঙ্কর ভাবে গর্জন করে উঠলো। কাঁপিয়ে দিলো চারিধার। তার মিনিটের মাঝেই আচমকাই গগণ চিরে বৃষ্টির ফোঁটারা নিজ মনে তীব্র বেগে ছুটে আসতে লাগলো ধরণীর বুকে। ভিজিয়ে দিলো চারপাশটা বড়োই আকাঙ্ক্ষার বৃষ্টি হয়ে। অহি ছুটে ছাউনির নিচে যেতে নিলেই হাত ধরে থামিয়ে দিলেন অবনী বেগম। অহি বিস্ময় ভরা চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নাত্মক স্বরে জিজ্ঞেস করল, “কী হয়েছে, মা?”
অবনী বেগমের চোখের কোণায় অশ্রু দেখা গেল নিরবে নিভৃতে। বৃষ্টির জল আর নয়নের জলে রঙের তফাত না থাকলেও অহি বেশ ধরে ফেললো। বৃষ্টির জলের সাথে মিলেমিশে একাকার হওয়া অশ্রুর দিকে তাকিয়ে বিমূঢ় হয়ে বলল, “কাঁদছেন কেন?”
অবনী বেগম জাপ্টে ধরলেন মেয়েকে সাথে সাথেই। ক্রন্দনরত স্বরে বললেন,
“তুমি বলেছিলে আমাদের কোনো এক বিষণ্ণ ঋতুতে দেখা হবে। সেদিন আমাদের গল্প হবে নিকটের। এই যে দেখো অহি, আজকের ঋতুটা ভীষণ বিষণ্ণ। চারপাশে কেমন দেখো মলিনতা। আমাদের দেখো কাছাকাছি আসা হয়েছে। তোমাকে সন্তান হিসেবে পেয়ে আমি চির জীবন নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করি, চন্দনকাঠ।”
দূরে দাঁড়িয়ে থাকা চেরি হেসে দিলো। ছুটে এসে মা-বোনের মাঝে জায়গা করে নিতে নিতে বলে, “ওমা, আমার কী দোষ? তোমরা একটু আমাকেও দেখো! নিজেরা নিজেরা সব আদর করে নিচ্ছো যে!”
বোনের কথায় অহি তুমুল আহ্লাদে বোনকেও জড়িয়ে ধরল।
জীবনে সুখী হতে আর কী লাগে?
চুলোর খিচুড়িতে বুদবুদ উঠছে। বাহিরের বৃষ্টির ছাঁট এসে একটু একটু চোখে-মুখে লাগছে রোজা সওদাগরের। আজ বড়ো নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ছে। মেয়েটা তার খিচুড়ি পছন্দ করতো ভীষণ। একটু আচার আর মুরগীর মাংস হলেই বার বার মায়ের রান্নার প্রশংসা করতো! আজ এতগুলো বছর ধরে মেয়েটা দূরে। কী জানি কী খাচ্ছে! কেমন আছে? একটু ভালো করে কথাও বলে না মেয়েটা তার সাথে। সবসময় এমন করে যেন মা নামক মানুষটা ওর চির শত্রু। ওর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিটা যেন মা’ই করে। কিন্তু মেয়েটাকে কীভাবে বোঝাবে যে, মায়েরা কখনো সন্তানের ক্ষতি চায় না!
রোজা সওদাগর আর কিছু না ভেবে চুলোর আঁচটা কমিয়ে দিয়ে ছুটলেন স্বামীর কাছে। স্বামী আজ বাড়িতে আছেন। লোকটাকে দিয়ে যদি মেয়েটাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে একটু দেশে আনা যায় সেটাও বা কম কীসে? মেয়েটাকে দেশে এনে যদি একটা বিয়ে-শাদি দিয়ে গতি করা যায় তাহলেই তার বুকের পাথর নেমে যেতো! একটা মাত্র মেয়ে, একা একাই কি জীবন কাটিয়ে দিবে? মা হিসেবে এটা তার সহ্য হবে আদৌ?
আফজাল সওদাগর আরামকেদারায় বসে ঝিমুনি কাটছিলেন। খুব গভীর ধ্যানে যেন সে মগ্ন। ঘরের আলো নেভানো। বাহিরের আকাশও যথেষ্ট অন্ধকার বলে ঘরে তেমন আলোর ছিঁটেফোঁটা নেই বললেই চলে।
রোজা সওদাগর বেশ ধীর গতিতেই প্রবেশ করলেন ঘরে। এসে বসলেন স্বামীর পাশে। ধীর গতিতে ডাকলেন,
“শুনছেন?”
আফজাল সওদাগর চোখ মেলে তাকালেন। স্ত্রী’কে নিজের পায়ের কাছটায় দেখে নড়েচড়ে বসলেন, “কী?”
“আপনারে একটা কথা বলার ছিলো।”
“এত টালবাহানা না করে বলো।”
রোজা সওদাগর বড়ো করে শ্বাস নিলেন। নিজের স্বামীর কাছেও মেয়ের কথাটা বলতে ঠিক ভরসা পাচ্ছেন না। লোকটাও তো মেয়ের কথায় সর্বশেষ কথা হিসেবে নেন। মায়ের মনের চিন্তা কি আর বুঝেন? তবুও মেয়ের একটা গতির কথা ভেবেই গাঁইগুঁই করে বললেন,
“মেয়েটা আর কতদিন বিদেশ বিভূঁইয়ে পড়ে থাকবে? দেশে কি আসবে না?”
মেয়ের কথা শুনেই তিনি মাথা নাড়ালেন। তিনিও যে মেয়ের কথা ভাবছিলেন তা বুঝা গেলো। রোজা সওদাগর এবার একটু সুযোগ পেলেন যেন। তাই এবার আরেকটু সাহস করে বললেন,
“বলেন না ওরে একটু দেশে আসতে। বয়সও তো হচ্ছে মেয়েটার। বিয়ে-শাদিও তো দিতে হবে না-কি! আমাদের যদি ভালো-মন্দ হয়ে যায় কে দেখবে মেয়েটাকে? মরেও শান্তি পাবো আমরা?”
আফজাল সওদাগর স্ত্রীর দিকে তাকালেন স্থির দৃষ্টিতে, “বিয়ে-শাদি করার কোনো ইচ্ছে তুমি মেয়ের ভিতরে দেখেছো?”
স্বামীর এই কথাটিতে মেয়ের বেপরোয়া চালচলনে যেন পুরো সম্মতি টের পেলেন রোজা সওদাগর। তাই তিনি একটু বিরক্ত হলেন, “আপনিও কি ওর মতন ছেলেমানুষ হয়ে গেলেন? আর কত মেয়েটারে হাতের বাহিরে রাখবেন? মেয়ে মানুষ ও! এত ছাড় দিলে সমাজ কি বলবে?”
“তোমার সমাজ আমার মেয়েরে ভরণপোষণ করে বড়ো করেছে?”
স্বামীর প্রশ্ন বুঝলেন না ঠিক রোজা সওদাগর। তাই অস্পষ্ট স্বরে বললেন, “হ্যাঁ?”
“এত যে সমাজের কথা চিন্তা করছো তা তোমার সমাজ কি আমার মেয়ে পেলেপুষে বড়ো করেছে? না আমার মেয়ের কোনো কিছুতে পাশে ছিলো?”
রোজা সওদাগর এবার আমতা-আমতা করে বললেন, “তবুও তো…”
“কোনো তবুও এখানে নাই, চাঁদরীর মা। যদি মেয়ের চিন্তা তোমার মা হিসেবে মায়ের মন থেকে আসে তাহলে কেবল মেয়ের চিন্তাই করো। সমাজ কী বললো তা নিয়ে মেয়ের চিন্তা করতে এসো না। ভুলে যেও না, তোমার সমাজের জন্যই আমার মেয়েটা দেশ ছাড়া হয়েছে। অকারণে আমার মেয়েটাকে কালী ছিটিয়েছে তোমার সমাজ। চাঁদনীর মা, চিরজীবন তো সমাজের চিন্তাই করলা। এবার মেয়ের চিন্তা করো। মেয়েটা কত দুঃখ নিয়ে বেঁচে আছে সেই চিন্তা করো! আর লোকে কী ভাবলো চিন্তা করো না। আমরা বাবা-মায়েরাই যদি লোকের ভাবনা ভাবতে গিয়ে সন্তানের ভাবনা ভাবতে ভুলে যাই তাহলে সন্তান গুলো কই যাবে ভেবেছো? মরা ছাড়া গতি আছে ওদের? চিত্রাটাকে দেখেও শিখলে না? একটাবার মেয়েটার কী হয়েছে না জেনেই ওর বাবা-মা কত বড়ো ভুল করেছিলো! মেয়েটা মরতে মরতে বেঁচেছে। নিজের মেয়েরও কি এই ভবিষ্যত চাও?”
চিত্রার উপমা আসতেই রোজা সওদাগর থিতিয়ে গেলেন। আঁতকে উঠলেন ভয়ে। না, না, কোনো ভাবেই সে ঐ রকম স্মৃতি আর ফিরিয়ে আনতে চায় না। থাক তবে মেয়ে বিদেশের মাটিতে। তবুও তো বেঁচে আছে বলে জানবে!
রোজা সওদাগর আর রা করলেন না। যেমন নিবিড়ে এসেছিলেন তেমন নিবিড়েই বেরিয়ে গেলেন। আফজাল সওদাগর স্ত্রীকে আর কিছু বললেনও না। ইদানিং তারও যে মেয়ের জন্য প্রাণ কাঁদছে। একটু দেখতে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় মনটা হাঁসফাঁস করছে। তার কলিজা যে মেয়েটা! কে জানে কোন দুঃস্বপ্নের মতন ঝড় এসে মেয়েটাকে একেবারে শেষ করে দিয়ে গেলো!
•
ভার্সিটির অডিটোরিয়াম পেরিয়ে চিত্রা তখন কেবল বেরিয়েছে। ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে অনবরত। কী এক আষাঢ় এলো! বৃষ্টিই যেন শেষ হচ্ছে না। চিত্রা কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রিকশার খোঁজ করল। আশেপাশে তেমন রিকশা খুঁজে পেলো না। যা-ও পাচ্ছে তা ঐ রাস্তায় যাবে না। চিত্রার বাড়াবাড়ি রকমের বিরক্ত লাগলো। ভাবলো হেঁটেই যাবে পথটা। সামনে যদি রিকশা পায়! এমনিতেও জামা ভিজে গিয়েছে সাথে শরীরও। তা-ই আর দাঁড়িয়ে থেকে লাভ নেই।
শাহবাগের মোড় ঘুরতেই চিত্রা অবাক হয়ে গেলো। বাহার ভাই দাঁড়িয়ে আছেন কোণার একটি ছাউনিতে। এক মনে সিগারেট ফুঁকে যাচ্ছেন। আজকাল লোকটা টি-শার্ট ছেড়ে শার্ট পরছেন। বুকের দিকে দু একটা শার্টের বোতাম খোলা রাখছেন অবলীলায়। কেন খোলা রাখছেন? নিশ্চয় মেয়ে পটাতে! মেয়েরা তার দিকে ঘুরে ঘুরে তাকাবে, ভালোবাসার কথা বলবে, এরপর না পেলে পাগলামি করবে এটাই তো চায় লোকটা! এছাড়া উনার জীবনে আছেও বা কী?
চিত্রা মুখ ভেংচি দিয়ে গটগট করে হেঁটে ছাউনির কাছটাতে যাওয়ার আগেই বাহার ভাই ছুটে এলেন। সিগারেটটা ফেলে দিয়েছেন কাছে এসেই! চিত্রার সামনেও আজকাল এত ভদ্রতা দেখাচ্ছেন ভেবে চিত্রার মনে মনে বেশ হাসি পেলো।
“কী ব্যাপার? ভার্সিটি গিয়ে ছিলে না-কি?”
চিত্রা অন্য দিকে তাকিয়ে মিছিমিছি বিরক্তি দেখিয়ে বলল, “আর কোথায় যাবো? আপনার মতন শার্টের বোতাম খুলে মেয়ে দেখতে যাবো?”
বাহার ভাই এবার চোখ বাঁকিয়ে নিজের শার্টের দিকে তাকালো। উপরের দু’টো বোতাম খোলা ছিলো। সে তাড়াতাড়ি হাত বাড়িয়ে একটি বোতাম লাগিয়ে নিলো। এরপর বোকা বোকা ভাবে তাকিয়ে বলল,
“শার্টের বোতাম খুলে মেয়ে দেখি আমি?”
চিত্রা অন্যদিকেই মুখ রেখে বলল, “সেটা আবার আমার মুখ ফুটে বলতে হবে? আপনি জানেন না আপনি কী করেন?”
চিত্রার কথায় এবার লোকটা হেসে উঠল। কী অদ্ভুত! এখানে হাসার কী আছে? আজকাল বড্ড কারণে-অকারণে হাসেন মানুষটা। পাগল হয়ে গিয়েছেন না-কি কে জানে!
“আমি তো জানতাম না আমি কী করি তাই তোমাকেই জিজ্ঞেস করলাম। যেহেতু তুমি জানো। তা শার্টের বোতাম খোলা রেখে মেয়ে দেখলে কী হয়?”
“বখাটেদের মতন লাগে দেখতে।”
কথা শেষ করে চিত্রা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নেয়। বাহার ভাই হাত টেনে ধরে ওর। পুরো বখাটেদের মতন শিষ দিয়ে বলে, “আচ্ছা এভাবে শিষ দিয়ে কি মেয়ে পটায় শার্টের বোতাম খুলে বখাটেরা?”
চিত্রা চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায়। এত অদ্ভুত বাহার ভাইকে তার বেশ নতুন লাগে! এ যেন নতুন মানুষ!
চিত্রাকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বাহার চোখ টিপে। ডান হাতে নিজের ভেজা কোঁকড়া চুল গুলো উল্টে দিতে দিতে বলে,
“বললে না তো শার্টের বোতাম খুলে রাখলে কি সত্যিই মেয়ে পটে?”
বাহারের অঙ্গভঙ্গিতে দাঁত কিড়মিড় করে চিত্রা, “হ্যাঁ, পটে।”
“তাহলে তুমি পটে যাও। দাঁড়াও দু’টোর জায়গায় আরও চারটি বোতাম খুলে দিচ্ছি যেন তাড়াতাড়ি পটো। আমার আগের রঙ্গনাকে আমি মিস করছি। আর কত বৈরাগী বানিয়ে ঘুরাবে বলো? প্রেমের শোকে কি এবার মরতে হবে আমায়? এত শোক সইলাম মরিনি বলে কি তুমি শেষমেশ প্রেমের শোকে মারতে চাইছো?”
বাহারের এই ছন্নছাড়া কথায় চিত্রা কেবল বোবা শ্রোতার মতন তাকিয়ে রইলো। লোকটার এরকম ভুলভাল কথার বিনিময়ে সে প্রতিবারের ন্যায় এবারও উত্তর বিহীন তাকিয়ে রইলো কতক্ষণ। বাহার এবার চিত্রার হাতে কিছুটা উষ্ণ চাপ প্রয়োগ করে বলল, “কী? খুলবো নাকি শার্টের সবগুলো বোতাম? পটবে?”
যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১০
চিত্রা “ছি” বলে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশটায় তাকায়। তখনই কালো রঙের একটি গাড়ি তার সামনে দিয়ে চলে যায়। গাড়ির ভেতর থাকা পরিচিত মুখটি দেখে সে আঁতকে উঠে। বউ সাজে নিরু আপু কোথায় যাচ্ছে! তাও এই বৃষ্টির দিনে! গত কয়েকদিন যাবত মানুষটার দেখা পাওয়া যায়নি! তবে?