যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৮

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৮
মম সাহা

জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহই শুরু হলো বৃষ্টি দিয়ে। জলে ভরে গেছে রাস্তা। শাহাবাগের মোড় থেকে টিএসসি আসতে হয় জলভর্তি রাস্তা পেরিয়ে। স্যাঁতস্যাঁতে রাস্তাটায় এক মাত্র শান্তি হলো রঙবেরঙের ফুলের দোকান। আজ অহি আপা আসবে বাড়িতে তাই চিত্রা ভাইয়ের সাথে ফুল কিনতে এসেছে। অহি আপার গোলাপ পছন্দ ভীষণ। তাই রঙবেরঙের গোলাপ দিবে সে।
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পরছে। ইতিমধ্যে চিত্রাদের ফুল কেনা প্রায় শেষের দিকে। তন্মধ্যেই উপস্থিত হলো নিরু আপু। আচমকাই তার উপস্থিতিতে চমকে গেলো দুই ভাইবোনই। তুহিন তো বিস্ময় ভরা কণ্ঠে বলল,

“তুমি এখানে?”
নিরু হাসল। মাথা নাড়িয়ে বলল, “এই তো টিএসসিতে এসেছিলাম ফ্রেন্ডস কিছু নোটস্ দিবে সেটা নিতে।”
“ওহ্।” তুহিনের ছোটো উত্তর। বার বার চোরা চোখে চিত্রাকে দেখছে। মনে তার সংশয়, আতঙ্ক। চিত্রা যদি রেগে যায়!
তুহিনের আতঙ্ক অনুযায়ী কিছুই ঘটল না। চিত্রা রেগে গেলো না। বরং তার বিস্তৃত হাসিটা অফুরন্ত করে বলল,
“নিরু আপু, আজ বাসায় আসবে। ছোটো আপা আসবে।”
চিত্রার আগ বাড়ানো এই আন্তরিকতায় ভীষণ খুশি হলো নিরু। তুহিনকে কপট রাগ দেখিয়ে বলল, “অহি আসবে বললে না যে! বাড়িতেও আসতে বললে না।”
তুহিন কিছুটা আমতা-আমতা করে উত্তর দিলো, “খেয়াল ছিলো না।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নিরুর হাসিটার স্বচ্ছতায় কিছুটা ভাঁটা পড়লো যা মোটেও চিত্রার চোখ এড়ালো না। তাছাড়া ভাইজানের আজকালের আচরণও সে সুক্ষ্ম ভাবে খেয়াল করছে। ভাইজান যেন নিরু আপুকে দেখলে পালাই পালাই করে। যেন দূরে গেলে বাঁচে। বিশেষ করে তার সামনে ভাইজান নিরু আপুর সাথে সবচেয়ে বেশি সংকোচ বোধ করে। তবে কি তার আচরণের জন্যই এমন প্রভাব পড়েছে এই সম্পর্কটাতে?
চিত্রা প্রাণ ভরে শ্বাস নিলো। আবেগের বশে যেসব ভুল সে করে ফেলেছিলো সেগুলো নাহয় এখন শুধরেই নিবে!
চিত্রা চটপট একটা রিকশা ডেকে নিলো। উঠেও গেলো সেকেন্ড ব্যয় করে। আচমকা চিত্রার কান্ডে ভ্যাবাচেকা খেলো বাকি দু’জন। তুহিন এসে রিকশায় উঠার আগেই চিত্রা বিরাট বারণ জারি করলো। বিজ্ঞদের মতন বলল,
“বোকার মতন রিকশায় উঠে আসছো কেন, ভাইজান? নিরু আপুকে বাড়ি অব্দি পৌঁছে দিয়ে আসো। আমি এখান থেকে এখানে একাই যেতে পারবো।”

তুহিন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো বোনের দিকে৷ চিত্রা রিকশা তাড়াতাড়ি চালাতে বলে মুহূর্তেই দৃষ্টি সীমানার বাহিরে চলে গেলো।
চিত্রা যেতেই যেন নিরুর সুবিধা হলো। কিছুটা পাশ ঘেঁষে এসে বলল, “দেখলে, চিত্রাও চায় আমরা যেন একটু সময় কাটাই। তুমিই বুঝলে না।”
নিরুর চোখে-মুখে খুশি দেখা গেলেও তুহিন রইলো গম্ভীর। মুখ চোখ কালো করেই বলল, “দেখেছিলেই তো চিত্রা আমার পাশে ছিলো। কী দরকার ছিলো ছুটে এসে কথা বলার? চিত্রা তোমাকে হয়তো ভালো চোখে নেয় না তুমি জানোই।”
তুহিনের আচরণের এতক্ষণের আনন্দে চকচক করা নিরুর মুখ মলিন হয়ে এলো। কণ্ঠ খাঁদে নামিয়ে বলল, “চিত্রা আমায় পছন্দ করে না তার দায় ভার কি আমার?”

তুহিন জবাব দিলো না। হু হু করে বৈরি হাওয়া বয়ে গেলো তাদের গা ঘেঁষে। এত কোলাহলেও নিজেকে বড়ো একা মনে হলো নিরুর। সবচেয়ে কাছের মানুষটার পাশে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েও মনে হলো তারা দু’জন আজকাল দুই মেরুর প্রাণী। অপরিচিত দু’টো আলাদা রাস্তার পথিক ওরা। অথচ একসময় কতই না নৈকট্য ছিলো তাদের! একসময় একশো কিলোমিটার দূরে থাকলেও মনে হতো দু’জনে কতটা কাছাকাছি, পাশাপাশি আছে। আর আজ?
নিরু গোপনেই লুকিয়ে ফেললো হতাশার শ্বাসটা। মেঘমন্দ্র স্বরে বলল, “আচ্ছা, আমি যাই তাহলে।”
“ঠিক আছে।” ব্যস্ এতটুকু বলেই তুহিন নিরুকে রিকশা ঠিক করে দিলো। নিরু ব্যথিত নয়নে সবটাই অবলোকন করল। আজকাল তার অভিমানী গলার স্বর, তার দুঃখী চোখ কি চিনতে পারছে না তুহিন? আজকাল তুহিন কি আর তার মনের খবর রাখছে না?

নিরু রিকশায় চেপে বসলো। তবুও শেষবার সম্পর্কটাকে আগের মতন করার প্রচেষ্টায় বলে উঠল, “তুমি যাবে সাথে?”
তুহিন চোখে চোখ রাখলো না। কী এক অন্য ধ্যানে যেন তার মন, মস্তিষ্ক ব্যস্ত। কেবল আনমনে বলল, “না, তুমি যাও।”
নিরু হাসলো। হাতের মুঠোয় থাকা তুহিনের সবচেয়ে পছন্দের কাঠগোলাপটা আর এগিয়ে দিলো না তুহিনের দিকে। বরং রিকশা ছাড়ার আগ মুহূর্তে বলে উঠল,
“লোক বলে, অতি প্রেম একসময় ফুরিয়ে আসে। তখন প্রেম আর মুগ্ধতা তৈরি করতে পারে না। আমি তখন খুব রেগে যেতাম এই কথা শুনে। প্রেম আবার ফুরিয়ে যাওয়ার জিনিস না-কি! অনুভূতি কখনো ফুরায় নাকি? এমন হাজার খানেক প্রশ্নই আমায় রাগিয়ে দিতো। আজ বুঝলাম, সত্যিই প্রেম ফুরিয়ে যায়। সত্যিই প্রেম একসময় পুরোনো, আটপৌরে হয়ে পড়ে থাকে পৃথিবীর এক কোণায়। প্রেম যতটাই অতিরঞ্জিত ততটাই ব্যথাময়। তবে দুঃখ কি জানো? সম্পর্কে থাকা দু’জনের কাছে আসলে প্রেম পুরোনো হয় না। পুরোনো হয় একজনের কাছে। তাই সে ছুঁড়ে ফেলতে পারে নির্দ্বিধায়। কিন্তু ঐ যে দ্বিতীয় পক্ষ, যে প্রেমকে তখনও মুগ্ধতা ভাবে, কষ্টটা মূলত তার হয়। সে কেবল এই একটা জিনিস ভেবেই জীবন পার করবে যে, এত প্রেম কীভাবে কীভাবে ফুরিয়ে যায়!”

নিরু কথা শেষ করেই তাড়া দেখালো রিকশাচালককে। তুহিন তখনও কাঠের পুতুলটার মতন দাঁড়িয়ে আছে। নিরুর কথার পরিবর্তে তার বলা বাকি ছিলো কত কিছুই কিন্তু মুখ ফুটে বলার ইচ্ছে হলো না আর। নিরুর অভিমান আয়েস করে ভাঙাতেও গেলো না। কেবল তাকিয়ে রইলো নিরুর যাওয়ার পানে।
সবার জীবনেই এমন অনেক সময় আসে যখন বসন্ত কেবল হৃদয় তোলপাড় করা ব্যথা হয়ে থাকে। প্রেমের ফুল নেতিয়ে যায়৷ গোলাপের ডালের কাঁটাটাই হয় প্রেমের সারাংশ। তুহিনের হয়তো এমন সময়টাই চলছে!
চিত্রার রিকশা তখন কেবল শাহবাগ ছেড়েছে। এর মাঝেই তুমুল বৃষ্টির তোপে সে ভিজে জড়োসড়ো হয়ে গেছে ঠান্ডায়। নিউ মার্কেটের রোডটায় জল উঠেছে হাঁটু সমান। কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই যেন ঢাকা ডুবে যাচ্ছে অবস্থা। জলের জন্য রিকশা এগিয়ে যাচ্ছে না। রিকশাচালক বেশ ক্লান্ত হয়ে অতঃপর থামিয়ে দিলেন রিকশাটি। ঘাড় ঘুরিয়ে চিত্রার দিকে তাকিয়ে যুদ্ধে হেরে যাওয়া অপরাধীর ন্যায় বললেন,

“আম্মা, রিকশা তো আর আগায় না।”
রিকশা চালকের চেয়েও বেশি অসহায় স্বরে চিত্রা শুধালো, “আর কি একটুও যাওয়া যাবে না, মামা?”
“না, আম্মা। কষ্ট কইরা আপনে পেছনের গলি দিয়া হাঁইট্টা চইল্যা যান। মেইন রোডে তো অনেক পানি। ঐ গলিতে এত পানি উডে নাই।”
আর কী করার! এক রাশ বিরক্তি নিয়ে রিকশা থেকে নামলো চিত্রা। তখনও ভারি বর্ষণ হচ্ছে। কোনো মতে টাকা দিয়েই গলির পথ ধরলো। এত পছন্দের বৃষ্টিকেও এখন অসহ্য ঠেকলো। কী দরকার ছিলো আজই এত বৃষ্টি আসার? আজকের দিনটা অন্তত না আসতো।
মনের ভেতর নানান ভাবনা নিয়ে এত সাবধানে পা ফেলতে ফেলতেও শেষ রক্ষা হলো না। গলি পার হয়ে নিজের এলাকায় ঢুকতেই মুখ থুবড়ে পড়লো সে। হাতে থাকা রঙবেরঙে গোলাপের তোড়াটা হাতের চাপে চ্যাপটা হয়ে গেলো। হালকা হলদেটে রঙের জামাটা কাঁদায় মেখে অদ্ভুত রঙ তৈরি হলো। পড়ে যাওয়ার দুঃখ তার মোটেও হলো না। দুঃখ হলো ফুলগুলোর জন্য। এত কষ্ট করে, এত যুদ্ধ করে আনা ফুল গুলো শেষমেশ এখানে এসেই নষ্ট হতে হলো? এতটা পথ আসার পরই!

ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। এখনের আকাশ ঘুটঘুটে কালো হয়ে গিয়েছে। চিত্রা কোনো রকমে উঠার চেষ্টা করল। একে তো বৃষ্টি তার উপর কাঁদা। নাজেহাল অবস্থা যেন হয়ে গেলো মেয়েটার। তখনই একটি পুরুষালী হাত এগিয়ে এলো তার দিকে। সাথে রাশভারি কণ্ঠ,
“হাতটা ধরো। উঠে আসো।”
মাঝ রাস্তায় পরিচিত কণ্ঠ পেতেই চিত্রা চোখ তুলে তাকাল। বাহার ভাইয়ের কোঁকড়া চুল বেয়ে চল পড়ছে টুপটাপ। মনে হচ্ছে ভোরের সদ্য শিশির। চিত্রা কিয়ৎক্ষণ এক ধ্যানেই তাকিয়ে কাটিয়ে দিলো।
বাহার ভাই আবার ব্যস্ত কণ্ঠে বলল, “হাত ধরো, উঠে আসো। ঠান্ডাটা লাগাবে না-কি?”
চিত্রার মুগ্ধতার সুতো কেটে গেলো। বাড়িয়ে রাখা হাতটার দিকে একবার তিল পরিমাণ তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। কষ্ট করে নিজে নিজেই উঠে দাঁড়ালো। কঠিন স্বরে বলল,

“আবার আপনার হাত ধরার ভুল করবো ভাবছেন? আবারও জেনে শুনে মুখ থুবড়ে কে পড়তে চাইবে বলুন! আপনার ভরসার চেয়ে আপনার বেইমানি ভয়ঙ্কর। এখন মিনিটের জন্য হাত ধরে বছরের জন্য ফেলে দিয়ে যাবেন। আর এই ভুল চিত্রা করবে না।”
বাহার খুলে রাখা হাতের মুঠো গুটিয়ে নিলো। অন্তরে হলো তার তুমুল ভাঙন। তবুও বাহিরে রইলো হিমালয়ের মতন শক্ত। ঠোঁটে জোর পূর্বক হাসি ঝুলিয়ে বলল, “আজ খিচুড়ি খাওয়ার মতন আবহাওয়া তাই না বলো, রঙ্গনা?”
নিজের এমন শক্ত কথার বিপরীতে বাহার ভাইয়ের এহেন অযৌক্তিক কথার মানে খুঁজে পেলো না চিত্রা। জবাব দেওয়ার ইচ্ছেটাও প্রকাশ করলো না তাই। পড়ে থাকা ফুলের তোড়াটা পলিথিনসহ তুলে নিলো।
বাহার ভাই পেছন থেকে বলল, “চলো, খিচুড়ি খাওয়াবো।”
চিত্রা তীর্যক চোখে তাকাল। যন্ত্রের মতন বলল, “আমি খিচুড়ি খাই না।”
“সকালে যে তোমার মা’কে চেঁচিয়ে রাঁধতে বললে!”

চিত্রা এবার তাজ্জব বনে গেলো। চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে বলল, “তো?”
“সেজন্যই তো রাঁধলাম। আমি রাঁধতে জানি না। কেমন হয়েছে খেতে সেটাও জানি না। চলো আগে, বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমাদের বাড়ি এসো। না-কি আমি বাটিতে করে দিয়ে যাবো?”
চিত্রা ভাষা খুঁজে পেলো না আর। যেই বাহার ভাই ইহজীবনেও কারো ইচ্ছের তোয়াক্কা করল না সে বাহার ভাই কি-না খিচুড়ি রান্না করেছে তার জন্য! চিত্রা কতক্ষণ থম মেরে রইল। সময়ের চাঁকা যেন ঘুরে গিয়েছে। এক সময় যে মেয়েটা বাহার ভাইয়ের পছন্দের খাবার রান্না করতো, পছন্দের রঙের পোশাক পরতো আজ সেই মেয়েটা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অথচ বিপরীত দিকের মানুষটা যেন চিত্রা হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে! লোকটা জানে না? এমন পাগলামো করা ভালোবাসা দেখলে চিত্রার আবেগ মরিয়া হয়ে উঠে আবারও ভালোবাসতে। আবারও বেহায়া হতে!
বহু কষ্টে নিজেকে সংবরণ করলো চিত্রা। কথা বাড়ালেই হয়তো সে আরও গলে যাবে তাই সে আর কথা বাড়ালো না। পা ফেলল বাড়ির দিকে। কিন্তু শক্ত পুরুষালী হাত তার ছোট্টো হাতটি মুঠোয় ভরে নিলো বিনা অনুমতিতে। গাঢ় স্বরে বলল, “খিচুড়ি তুমি খাবে না?”

চিত্রা ধরে রাখা মুঠোর দিকে তাকিয়ে রাগী স্বরে বলল, “হাত ছাড়ুন।”
বাহারের একরোখা উত্তর, “ছাড়বো না।”
“কী শুরু করেছেন আপনি? অসভ্যের মতন হাত টানছেন কখনো, কখনো বা ওড়না টানছেন! এসব কেমন স্বভাব?”
বাহার এসকল কথা-ই এমন ভাবে নিলো যেন সে শুনতেই পারেনি। গা-ছাড়া ভাবে বলল, “তুমি যখন আমার গেঞ্জি টানতে তখন কি আমি তোমায় অসভ্য বলেছিলাম? বলিনি তো। তাহলে তুমি বলছো কেন?”
চিত্রার রাগী মুখ নিমিষেই থতমত খেয়ে গেলো। হতবিহ্বল স্বরে বলল, “তাই বলে আপনি হাত ধরে টানাটানি করবেন?”

“তো কি পা ধরে টানতে বলছো?”
বাহার ভাইয়ের এরকম ঠাট্টায় গা জ্বলে গেলো চিত্রার। জোর করলো হাত ছাড়ানোর। কিন্তু পুরুষালি শক্তির কাছে সে নেহাৎ বাচ্চাটি।
বাহার হেসে উঠল এবার শব্দ করেই। বা’হাতে চিত্রার মাথায় আদুরে স্নেহ করে বলল,

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৭

“রঙ্গনা, প্রেমিকের বিপরীতে বৃথা যুদ্ধ ঘোষণা করো না। প্রেমিক বড়োই অসভ্য জাত। তুমি যুদ্ধ ঘোষণা করলে সে তোমার পায়ের কাছে বসে বিনা যুদ্ধেই হার মেনে নিবে। আর তুমি অনশন ঘোষণা করলে তোমার উপোস ভাঙাবে নির্লজ্জ চুমুতে। এবার বলো খিচুড়ি খাবে না চুমু?”

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৯